মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বরগুনায় মন্টু চন্দ্র দাসের পরিবারের পাশে বিএনপি

আপডেটেড
১৭ মার্চ, ২০২৫ ১৭:৫৩
প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত
প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০২৫ ১৬:৪১

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনি বলেছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে কুচক্রী মহল নানাবিধ কার্যক্রম করতে পারে। দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা হতে পারে, সেদিকে সবার বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।

আজ সোমবার সকালে বরগুনায় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাড়ি পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন তিনি।
নুরুল ইসলাম মনি বলেন, নির্যাতিত কিশোরী এবং নিহত মন্টু দাসের পরিবারকে সব ধরনের আইনি সহযোগিতা করার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন। মন্টু দাসের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া হবে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। সর্বোপরি বিএনপি এই পরিবারের সঙ্গে আছে এবং থাকবে।
এ সময় তারেক রহমানের পক্ষে নিহত মন্টু দাসের পরিবারকে নগদ এক লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন তিনি। এর আগে তারেক রহমান নিজে লন্ডন থেকে ফোনে মন্টু দাসের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তার সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা, বরগুনা জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. নুরুল আমিন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফয়জুল মালেক সজিব, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রনিসহ দলের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।


এনজিওর গরু কাগজে আছে, গোয়ালে নেই

মান্দার নারী উন্নয়ন ফোরামের ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

#

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় নারী উন্নয়ন ফোরামের নামে বরাদ্দকৃত ১০ লাখ টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়াই আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও ফোরামের সদস্যরা জানেন না বরাদ্দের কথা; কেউ কোনো উপকরণও পাননি। ফলে উপজেলাজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। গত বছর আগস্ট মাসের পর থেকে সভাপতি না থাকার কারণে নারী উন্নয়ন ফোরামের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একের পর এক ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থআত্মসাতের ঘটনা বেড়ে চলেছে। দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরকারি বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের (এডিবি) আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রকল্পে মোট ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়। এর মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণের নামে ৫ লাখ টাকা এবং গবাদিপশু বিতরণের নামে আরও ৫ লাখ টাকা।

প্রকল্প দুটি উপজেলা এলজিইডির তালিকায় যথাক্রমে ১৪৮ ও ১৪৯ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত এবং কাগজপত্র অনুযায়ী ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে উপজেলা পরিষদের সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, নারী উন্নয়ন ফোরামের ৪২ জন সদস্যের কেউই এই দুই প্রকল্প থেকে কোনো উপকরণ পাননি। বরাদ্দের ব্যাপারেও ছিল না তাদের কোনো ধারণা। গত অর্থবছরের বরাদ্দকৃত সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু না পেয়ে (২৪ নভেম্বর ২০২৫) নারী উন্নয়ন ফোরামের সদস্যরা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আখতার জাহান সাথীর কার্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ করে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।

নারী উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও পরানপুর ইউপির সদস্য কমলা বেগম বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে নারী উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে কিছুই দেওয়া হয়নি। বরাদ্দ ছিল কি না, সেটাও আমাদের জানানো হয়নি।’

কসব ইউপির নারী সদস্য আঞ্জুয়ারা ও সানোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর থেকে নারী ফোরামের সভাপতি না থাকায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কোনো বরাদ্দ বা বিতরণ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।

উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ জানান, ‘আমি যোগদানের আগেই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। সেলাই মেশিন ও গবাদিপশু বিতরণ হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে কাজ বাস্তবায়নের কথা। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


কুমিল্লায় হত্যা মামলায় দুজনের ফাঁসির আদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আরও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রাম থানার দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে জুয়েল। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের কারি ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ ও ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণাকালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া ও তার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিলে তারা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পরদিন ২৩ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহতের পিতা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জেলা ডিবির এসআই জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন- অ্যাডভোকেট মুমিনুল হক ভূঁইয়া। মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।


কিশোরগঞ্জে বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে সার্বজনীন মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

বাউল শিল্পী আবুল সরকারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কিশোরগঞ্জে সার্বজনীন মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের সড়কে কিশোরগঞ্জের বাউল ও শিল্পী সমাজের উদ্যোগে সার্বজনীন ও উন্মুক্ত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সারাদেশে ‘তৌহিদী জনতার নামে দরবার শরীফ, মাজার, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। এমনকি পাগল-ফকিরদের শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনাও ঘটছে।

বক্তারা আরও বলেন, বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে নিরাপত্তার কথা বলে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যা অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য। অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তারা।

বক্তারা জানান, ‘আমরা যে আন্দোলন-অভ্যুত্থান চেয়েছিলাম, তা কোনো সংস্কৃতি ধ্বংসের জন্য নয়, মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্যও নয়।’

মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সুফী সংগঠনের নেতারা সংহতি জানান এবং বাউল আবুল সরকারের দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন মধু, বাংলাদেশ জাতীয় বাউল সমিতির কিশোরগঞ্জের সভাপতি বাউল হারিছ, শানে পাঞ্জাতন মহরম জারী দলের পরিচালক বাউল মান্নান, বাউল কিবিরিয়া খোকন, মাসুদুর রহমান মিলন, জেলা যুবদলের সহসভাপতি রকিবুল হাসান ফয়সাল।

এছাড়া ওই মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন তরফীয়া দরবার ও মাজার শরীফের সাজ্জাদনশীন সৈয়দ ইয়াছিন, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার সরকার, উদিচির সাধারণ সম্পাদক বাবুল রেজা, বাপা সভানেত্রী অ্যাড. হামিদা বেগম, মহিলা পরিষদ নেত্রী কামরুন্নাহার।

উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা এলাকায় একটি পালাগানের আসরে বাউল শিল্পী আবুল সরকার ধর্ম অবমাননা করে মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার মন্তব্যের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

এরপরে ২০ নভেম্বর মাদারীপুরে এক অনুষ্ঠানে আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার করে মানিকগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।


ইএমই কোরের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

ইএমই কোরের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন-২০২৫ মঙ্গলবার সৈয়দপুর সেনানিবাসস্থ ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল (ইএমইসিঅ্যান্ডএস)-এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সেনাবাহিনী প্রধান ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল এ পৌঁছালে তাকে জিওসি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, ইএমই কোর এর কর্নেল কমান্ড্যান্ট ও চেয়ারম্যান আরইবি, জিওসি ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া এবং কমান্ড্যান্ট ইএমইসিঅ্যান্ডএস অভ্যর্থনা জানান।

সেনাবাহিনী প্রধান সম্মেলনে উপস্থিত ইএমই কোরের ইউনিটসমূহের অধিনায়করা এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কোরের তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

তিনি ইএমই কোরের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য এবং দেশমাতৃকার সেবায় ইএমই কোরের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।

এ সময় তিনি আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য ইএমই কোরের সকল সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান এবং প্রত্যেক সদস্য আগামী দিনে দেশ সেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে জিওসি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, ইএমই কোরের কর্নেল কমান্ড্যান্ট ও চেয়ারম্যান আরইবি, সেনাবাহিনীর মাস্টার জেনারেল অব দ্য অর্ডন্যান্স, অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল, জিওসি ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া, সেনাসদর ও রংপুর এরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা, কমান্ড্যান্ট ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল ইএমই ইউনিটসমূহের অধিনায়করা এবং গণমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


বিনামূল্যে সাইকেল, নিয়মিত স্কুলে ফিরছে নবীনগরের ছাত্রীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শত বছরের প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণিতে পড়েন নাহিদা আক্তার। রসুল্লাবাদ গ্রামের এই ছাত্রীর বাড়ি স্কুল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। আগে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হতো তাকে। সময়মতো পৌঁছাতে পারতেন না, অনুপস্থিতিও ছিল নিয়মিত। কয়েক মাস আগে স্কুল থেকে বিনামূল্যে সাইকেল পাওয়ার পর সেই চিত্র বদলে গেছে।

নাহিদার মতো আরও অন্তত ১০০ ছাত্রী প্রতিদিন সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। সকাল ৯টার দিকে দল বেঁধে কিংবা একে একে শান্তিপুর, নাছিরাবাদ, নোয়াগ্রাম, শ্রীঘর, রসুল্লাবাদ, বানিয়াচং, কুড়িনালসহ আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ছাত্রীদের সাইকেলে আসার দৃশ্য এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের উপস্থিতির হারও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। শিক্ষকরা বলছেন, আগে দূরত্ব, নিরাপত্তা ও সামাজিক নানা বাধার কারণে অনেক মেয়েই নিয়মিত স্কুলে আসতে পারত না। পরিস্থিতি বদলাতে গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি উদ্যোগ নিয়ে ছাত্রীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ করেন।

অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফাতেমা আক্তার বলে, ‘আমার বাড়ি স্কুল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। প্রথমে সমস্যা হতো, এখন প্রতিদিন সাইকেলেই যাই।’

নবম শ্রেণির ছাত্রী রাশিদা আক্তারের ভাষায়, ‘আগে হেঁটে আসতে অনেক সময় লাগত। এখন তাড়াতাড়ি আসতে পারি। টিফিনে বাড়ি গিয়ে খেয়েও আবার স্কুলে ফেরত আসি।’

পল্লী চিকিৎসক আক্কাছ মিয়া জানান, সাইকেল পাওয়ার পর তার মেয়ে নিয়মিত স্কুলে যায়। ‘কিছু লোক ভালো চোখে না দেখলেও মেয়েকে আমি উৎসাহ দেই,’ বলেন তিনি।

বিদ্যালয়টির ২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে বেশির ভাগই ছাত্রী। অধ্যক্ষ মোস্তাক আহাম্মদ বলেন, ‘এখন গ্রামের মেয়েরা অনেক এগিয়ে। সাইকেল চালিয়ে তারা স্কুলে আসে। এতে সময় নষ্ট হয় না, নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।’ ছাত্রীদের জন্য সাইকেলস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রীদের চলাচলের পথে কেউ কটূক্তি করলে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ‘মেয়েরাও এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছে।’


আগাম লাউ চাষে সাজ্জাদের আয় হতে পারে লাখ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

হেমন্তের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। শীতের হালকা স্পর্শে দিনের শুরুতেই চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের খিতাপচর এলাকায় ঝকঝকে সবুজ লাউয়ে ভরে উঠেছে কৃষক মো. সাজ্জাদ হোসেনের খেত। মাচার ফাঁক গলে আসা রোদে ঝিলমিল করছে ঝুলন্ত লাউগুলো।

উঠে যাওয়া আমন ধানের জমিতে এখন বোয়ালখালীর গ্রামজুড়ে শিম, বরবটি, মরিচ, বেগুন থেকে শুরু করে লাউ পর্যন্ত বিভিন্ন সবজির আবাদ চলছে। তবে সাজ্জাদ আগাম লাউ চাষ করে পাচ্ছেন বাড়তি সুবিধা।

৪০ শতক জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের লাউ লাগিয়েছেন তিনি। প্রতিদিন সকালে খেত পরিচর্যা- মরা পাতা পরিষ্কার, নিড়ানি, রোগবালাই দেখা- এসব নিয়েই তার দৈনন্দিন কাজ। সপ্তাহে তিন দিন তিনি লাউ সংগ্রহ করে হাটে বিক্রি করেন। আকারভেদে প্রতিটি লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাজ্জাদ দৈনিক বাংলাকে জানান, এ মৌসুমে লাউ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। গত এক মাসে লাউ বিক্রি করে পেয়েছেন ২৪ হাজার টাকা। গাছের অবস্থা ভালো থাকলে পরবর্তী দুই মাসেও লাউ বিক্রি করা যাবে বলে আশা তার। সব মিলিয়ে এক লাখ টাকার মতো আয় হতে পারে বলে তিনি জানান।

‘কম খরচে দ্রুত ফলন পাওয়া যায় বলে এবার লাউ চাষ করেছি,’ বলেন সাজ্জাদ। তিনি জানান, আশ্বিন মাসে বীজ থেকে চারা তৈরি করে লাগানোর প্রায় ৬০ দিনের মধ্যেই ফলন পেতে শুরু করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উচ্চফলনশীল জাতের লাউ সারা বছরই চাষযোগ্য এবং বীজ বপনের ৪০–৪৫ দিনের মধ্যে লাউ তোলা যায়। প্রচলিত জাতের তুলনায় এ জাতের ফলন আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কৃষিবিদ কল্পনা রহমান বলেন, ‘বাজারে এখন লাউয়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। কৃষকরাও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিক টন লাউ উৎপাদন সম্ভব।’

সাজ্জাদের হিসাবে, তার খেতের ২৪০টি মাদায় লাউ লাগানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১,২০০টি লাউ বিক্রি করেছেন। আরও ৩০০টি লাউ চারা রয়েছে এবং প্রতিটি গাছে ৩০ থেকে ৪০টি লাউ পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

আগাম চাষ, কম খরচ এবং দ্রুত লাভজনক হওয়ায় এলাকায় লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে।


বেনাপোল বন্দরকে আধুনিকায়ন বন্দর হিসেবে গড়ে তুলব: মফিকুল হাসান তৃপ্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোল স্থল বন্দর থেকে প্রতি বছর সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। অথচ সেই বেনাপোলের মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই এলাকায় হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তারা বেকার থাকায় তাদের পরিবার অভাবের মধ্যে রয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই বন্দরে এই উপজেলার ছেলে-মেয়েরা অগ্রাধীকার ভিত্তিতে চাকরি পাবে এনং বন্দরকে আধুনিকায়ন করে গড়ে তুলব।

গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার সময় বেনাপোল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড (নামাজগ্রাম দুর্গাপুর) আয়োজিত ওই ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে যশোর-১ আসনের সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তি উঠান বৈঠকে এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে বেনাপোলে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। সেই সাথে এই স্থল বন্দরকেও আধুনিকায়ন করা হবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আমি এমপি হলে প্রথমে এই জনপদ থেকে মাদক নির্মূল করা হবে।

এর আগে তিনি লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন বেনাপোল-২নং ওয়ার্ড ও বেনাপোল বাজারে।

বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বেনাপোল পৌর বিএনপির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভারত।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন

শার্শা উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক তাজ উদ্দিনসহ তথ্য গবেষণাবিষয়ক আতাউর রহমান আতা বিএনপি নেতা মফিজর রহমান সজন, পৌর বিএনপিরসহ সভাপতি সাহাবুদ্দিন সহসভাপতি সাহাদুর রহমান খোকন, নাসিমুল গনি বল্টু আব্দার রহমান, ইদ্রিস মালেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম মেহেরুল্লাহ সংগঠন সম্পাদক আব্দুল আহাদ পৌর বিএনপির অর্থ সম্পাদক সামাদ আলি আলী শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান রিপন পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. সহিদুল ইসলাম শহীদ পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইসতিয়াক আহমদ শাওন পৌর যুবদল ছাত্রদল শ্রমিক দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বেসরকারি সংস্থা এফাদ মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। এফাদের নির্বাহী প্রধান সাইদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, পাঁচগাছী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার, এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান, কৃষি কর্মকর্তা নাহিদা আফরিন, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সরকার প্রমুখ।

মাল্টেসার ইন্টারন্যাশনাল বিএমজেড-পিটির সহযোগিতায় বিএমজেড-পি আফাদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে শিক্ষক, কৃষক, কৃষাণি, জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, দলিত সম্প্রদায়, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছিও ঘোগাদহ ইউনিয়নে রেজিলেন্স স্ট্রেংদেনিং অব ভার্নারেবল পপুলেশন ইন নর্দান ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড ইস্টার্ন বাংলাদেশ থ্রো এ নেটওয়ার্ক এপ্রোচ অব ফাইভ পার্টনার অর্গানাইজেসন, বিএম জেড পিটি প্রজেক্টটি ২০২২ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। প্রকল্পের মোটা সুবিধাভোগী ৯ হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ১২ জন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য ৪৬ জন, দলিত সদস্য ৩০ জন, ট্রান্সজেন্ডার ২২ জন, নারীপ্রধান পরিবার ২৭ জন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার ৩৪৩ জন, ৪৮০ জন প্রত্যক্ষ সদস্য এবং পরোক্ষ সদস্য ৮,৫৮৯ জন।


ট্রাভেল এজেন্সি খাতে নতুন অধ্যাদেশ খসড়া বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি জানিয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে সৈয়দপুর, নীলফামারী, রংপুর বিভাগের সকল ট্রাভেল এজেন্সিদের এক ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তারা এই দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে মঙ্গলবার দুপুরে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

জাকির হোসেন মেননের সভাপতিত্বে ও শরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন এটিএবির সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন টিপু, আমিনুল ইসলাম রতন, মাহাতাব হোসেন, মেহেদী হাসান, দিদারুল হোসেন, আলমগীর হোসেন রিপন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের আইন এবং ২০২১ সালের সংশোধনী আইনের পরিবর্তন করে নতুন যে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছে, তা বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় হাজার হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে মালিক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা পুরো খাত এবং জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

বক্তারা আরও বলেন, নতুন অধ্যাদেশে যেসব সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে, তার অনেকগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষ করে ধারা ৫-এ অন্য এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করলে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলো টিকে থাকতে পারবে না। দেশে যে কয়েক হাজার এজেন্সি আছে, তাদের অধিকাংশেরই এয়ারলাইন্স থেকে সরাসরি টিকিট ইস্যুর সক্ষমতা নেই। অনলাইন ও অফলাইনের জন্য যে ১০ লাখ টাকা জামানত রাখার কথা বলা হয়েছে, তা ছোট এজেন্সিগুলোর পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

অধ্যাদেশের ধারা ৯-এ পরিবারের বাইরে ব্যবসা হস্তান্তর নিষিদ্ধ করা, এক ঠিকানায় রিক্রটিং এজেন্টের কার্যক্রম সীমিত করা এবং বিনা শুনানিতে লাইসেন্স স্থগিত করার মতো বিধানগুলো খাতটিকে অকার্যকর করে দেবে। দেশের প্রচলিত আইনেই একই ঠিকানায় একাধিক ব্যবসার লাইসেন্স বৈধ। বহু রিক্রুটিং ও হজ এজেন্সি দীর্ঘদিন ধরে টিকিট সেবা দেওয়ার জন্য একই অফিস থেকে ট্রাভেল ব্যবসা পরিচালনা করছে। ২০২১ সালের আইনে নির্ধারিত শাস্তি সংসদীয় যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পাস হয়েছিল। সেটিকে হঠাৎ করে তিন বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক।


রৌমারীর চরাঞ্চলে আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩৬০ পরিবার স্বাবলম্বী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন ও বন্যায় রৌমারীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে সংকটে পড়েন এ অঞ্চলের মানুষ। সাম্প্রতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ বাংলাদেশ সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছেন। দুর্যোগকালীন সহায়তার পাশাপাশি পরিবারভিত্তিক আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ দেওয়ায় বদলে যেতে শুরু করেছে ৩৬০টি পরিবারের জীবনমান।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর রৌমারী উপজেলার ১২টি চরের ৩৬০টি দরিদ্র্য পরিবারকে বিভিন্নভাবে উন্নয়নমুখী সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। শীত ও গ্রীষ্ম দুই মৌসুমে সবজি বীজ সরবরাহ, আধুনিক কৃষি প্রশিক্ষণ, ভেড়া বিতরণসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফ্রেন্ডশিপ। বন্যার সময়েও সবজি উৎপাদন চালু রাখতে কমিউনিটি ভিত্তিক সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বস্তায় আদা চাষ, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন এবং জৈব সার ব্যবহারের প্রচার ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় রাখতে পরিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ ও আইনগত বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শও দিচ্ছে সংস্থাটি। সম্প্রতি চরশৌলমারী ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার মিয়ার চরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের ৩০টি বন্যাকবলিত পরিবার শুধু আয়বৃদ্ধিমূলক কাজেই নয়, সামাজিক উন্নয়নেও যুক্ত হয়েছেন।

মিয়ার চর গ্রামের আছিয়া বেগম জানান, ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্পের সহায়তায় তিনি ৪ হাজার ১০০ টাকা মূল্যের একটি ভেড়া পেয়েছিলেন। বর্তমানে তার পাঁচটি ভেড়া হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৪৭ হাজার টাকা।

আরেক কৃষক গোলজার আলী বলেন, ‘আধুনিক সবজি চাষের প্রশিক্ষণ পেয়ে বাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে এ বছর ২২ হাজার টাকা আয় করেছি। এতে সংসারের খরচ চালিয়ে কিছু টাকা সঞ্চয়ও করতে পেরেছি।’

একই গ্রামের শেফালী বেগম জানান, কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি এখন প্রতি মাসে প্রায় ১৫ শত টাকার ভার্মি কম্পোস্ট বিক্রি করছেন।

আছমা বেগম জানান, তিনি ২৫টি বস্তায় আদাচাষ করেছেন এবং প্রতি বস্তা থেকে এক থেকে দেড় কেজি আদা পাওয়ার আশা করছেন। গ্রামের আরও অনেকে বস্তায় আদা চাষ, সবজি উৎপাদন, জৈব সার তৈরি ও ভেড়া পালন করে পরিবারের আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন।

আবু হানিফ বলেন, ‘আমাদের সুশাসন বিষয়ক প্রশিক্ষণদেওয়া হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, তালাক, সংবিধান ও সংসদ সম্পর্কে জেনেছি। এখন কোন আইনি সহায়তা লাগলে ফ্রেন্ডশিপ বিনামূল্যে পরামর্শ দেয়।’

একই গ্রামের এছাহাক আলী ও বেলায়েত হোসেন জানান, আগে হাট থেকে রাসায়নিক সার কিনতে হতো; এখন নিজেরাই জৈব সার তৈরি করে ব্যবহার করছেন। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে কীট দমন করছেন এবং সরকারি সেবা পেতে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের সক্ষমতাও বেড়েছে। ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড (এএসডি) প্রকল্পের রিজিওনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গ-এর সহায়তায় কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার মোট ২৮টি চরে ৮৪০ জন সদস্যকে আয়বৃদ্ধি, সুশাসন এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘ফ্রেন্ডশিপ প্রকল্পের পাশাপাশি কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরও উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সর্বাত্মকসহযোগিতা প্রদান করছে।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান পাইকাড় জানান, চরাঞ্চল ভেড়া পালনের জন্যঅত্যন্ত উপযোগী। এ বছর ফ্রেন্ডশিপের উদ্যোগে ৩৬০ পরিবারকে ভেড়া ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভেড়াকে বিনামূল্যে টিকা ও কৃমিনাশক দেওয়া হয়েছে। এতে স্বল্প খরচে দ্রুত আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা চরাঞ্চলের মানুষকে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করছে।


চসিকে দম্পতির দুর্নীতির সন্ধান

*রয়েছে অভিজাত বাড়ি-গাড়ি *অস্ট্রেলিয়ায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম

এ যেন ফিলিপাইনের কুখ্যাত দুর্নীতি জুটি ‘ফের্দিনান্দ মার্কোস-ইমেলদা মার্কোসের চট্টগ্রাম সংস্করণ! এখানে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দের ভূমিকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)-র সিভিল ও মেকানিক্যাল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে স্ত্রী ও চসিক সিভিল বিভাগের অঞ্চল-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা। ‘দুর্নীতির মানিক জোড়া’ চসিকের সিভিল বিভাগকে করেছে অনিয়ম দুর্নীতির আতুড় ঘরে। অনিয়ম দুর্নীতি করে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। দেশের গন্ডি পেড়িয়ে সম্পদের সাম্রাজ্য গড়েছেন সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়।

চসিক সিভিল বিভাগের অঞ্চল-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির কোনো অভিযোগ থাকলে আমার সিনিয়দের জানান। তারাই বক্তব্য প্রদান করবেন। দুর্নীতির প্রমাণ না দেখা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করব না।’ চসিক সিভিল ও মেকানিক্যাল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহীন উল ইসলাম চৌধুরীর মোবাইলে একাধিবার কল ও এসএমএস দেওয়া হলে তিনি সাড়া দেননি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শাহীন উল ইসলাম চৌধুরীর খালাতো ভাই ও চসিকের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলামের সুপারিশে দৈনিক বেতনের ভিত্তিতে বিল্ডিং সুপারভাইজার হিসেবে চাকরি জীবনের শুরু হয়। শুরুতে অস্থায়ী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি চসিকের সংস্থাপন শাখার এক অফিস আদেশে সহকারী প্রকৌশলী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী হন শাহীন। আদেশে শর্ত হিসেবে উল্লেখ ছিল- যোগদানের তারিখ থেকে এক বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে থাকতে হবে। এ সময় সন্তোষজনক কর্মসম্পাদনের পর স্থায়ী করা হবে। কিন্তু ২০২৪ সালে তাকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থেকে দুই ধাপ টপকে পদোন্নতি দিয়ে প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পর প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু শিক্ষানবিশ নির্বাহী প্রকৌশলীর ৪ বছরের মধ্যেই তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পেয়ে যান। ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের সময় শাহীন উল ইসলাম চৌধুরীর কর্মকাণ্ড বিতর্কের জন্ম দেয়।

অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলন চলাকালে ৩ ও ৪ আগস্ট শাহীনের নির্দেশে নগরের সড়কবাতি বন্ধ রাখা হয়। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর তাকে ‘শাস্তিমূলক বদলি’ করা হয় বরিশাল সিটি করপোরেশনে। ওখানে দায়িত্ব পালনকালেই বড় পুরস্কার পান তিনি। শাহীন উল ইসলাম চৌধুরীর যখন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছিলেন, সেই সময়েই চসিক তাকে পদোন্নতি দেয়। পদোন্নতি পাওয়ার কয়েক মাস পর তিনি চসিকে যোগদান করেন। শাহীনের বিরুদ্ধে সহকর্মীদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে অহরহ।

এক সংখ্যালঘু সিনিয়র কর্মকর্তাকে ধর্মীয় আঘাত করে মন্তব্য করায় ২০১৭ সালে সিটি করপোরেশনের চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। পরে উচ্চ আদালতে রিট করে চাকরি ফিরে পান। শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী নিজের প্রভাব খাটিয়ে তার স্ত্রী ফারজানা মুক্তাকে চসিকে অস্থায়ী সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দেন। চসিকের সাবেক প্রধান নির্বাহী শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সহায়তায় সরকারি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ২০২৩ সালে ২৫০ কোটি টাকার ‘পরিচ্ছন্নকর্মী নিবাস নিমার্ণ’ প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় ফারজানা মুক্তাকে। এ দায়িত্ব দেওয়ার সময় ফারজানা মুক্তা ছিলেন অস্থায়ী সহকারী প্রকৌশলী। অথচ সরকারি বিধি অনুযায়ী কোনো প্রকল্পের পরিচালক হতে স্থায়ী কর্মকর্তা হওয়া বাধ্যতামূলক। একই সাথে মন্ত্রণালয়েরও অনুমতি প্রয়োজন হয়। মুক্তাকে এ দায়িত্ব দেওয়ার সময় কোনো বিধিই অনুসরণ করা হয়নি। শাহীন একইভাবে মুক্তাকে চসিকের ১০টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়ে বির্তকের জন্ম দেয়। বর্তমানে শাহীন সিভিল ও মেকানিক্যাল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছে। মুক্তা হচ্ছে সিভিল বিভাগের অঞ্চল-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী।

এ দম্পতির ‘মানিক জোড়’ নানা দুর্নীতি অনিয়মের আতুড় ঘরে পরিণত করে চসিকের প্রকৌশল বিভাগকে। তাদের অনিয়ম দুর্নীতির বটবৃক্ষ ছিলেন চসিকের সাবেক প্রধান নির্বাহী শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। অনিয়ম দুর্নীতির টাকায় তারা গড়েছে সম্পদের পাহাড়। নগরীর প্রাণকেন্দ্র পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ৬নং রোডের ২৪ নম্বর বাড়িতে প্রকৌশলী দম্পতির রয়েছে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। যার বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকা। তারা চলাচল করেন কোটি টাকা দামের অভিজাত গাড়িতে। দুই ছেলেকে লেখাপড়া করার নগরীর ধনী সন্তানদের স্কুল হিসেবে খ্যাত এক ইংলিশ মিডিয়ামে। তাদের টিউশন ফি মাসে প্রায় লাখ টাকা। অথচ এ দম্পতি মিলে চসিক থেকে বেতন পান লাখ টাকার মতো। শাহীনের গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায় দুর্নীতির টাকায় কিনেছেন শত বিঘা কৃষি ও অকৃষি জমি। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে বেনামি ফ্ল্যাট ও প্লট। শাহীন তার শালার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় করেছে কোটি কোটি টাকা পাচার। অস্ট্রেলিয়ায় করেছে বাড়ি ও গাড়ি।


গাইবান্ধায় মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহ করছে অনেকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

গাইবান্ধা জেলা শহরের পুরোনো বাজার, স্থানীয়দের কাছে পরিচিত এক প্রাণচঞ্চল নিত্যপণ্যের কেন্দ্র। এই সাধারণ বাজার আজ বদলে গেছে নতুন এক কর্মজীবনের ঠিকানায়। এখানে মাছের ভিড় যেমন চোখে পড়ে, তেমনি দেখা যায় একদল ব্যস্ত মানুষের নতুন পেশার দাপট-মাছ কুটুনি বা মাছ কাটিয়া। সময়ের চাহিদায় দ্রুত বাড়ছে এই পেশার কদর, বাড়ছে মানুষের কর্মসংস্থান ও সচ্ছলতা।

সম্প্রতি সরেজমিনে বেলা ১১টার দিকে বাজারে গেলে দেখা যায়-ছুটির দিনে মাছ-মাংসের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। বাজারের পূর্বদিকের দ্বিতীয় গলিতে ঢুকতেই চোখে পড়ে সারিবদ্ধ মাছ কাটিয়াদের ব্যস্ততা। বড় বড় বটি হাতে তারা যেন সময়ের সঙ্গে লড়ছেন। ক্রেতারা মাছ কিনে এগোতেই ডাক পড়ে-‘ভাই, মাছ কাটবেন?’

পুরোনো বাজারে ইলিশ থেকে শুরু করে রুই, কাতলা, বোয়াল- সব ধরনের দেশি মাছ পাওয়া যায়। এসব মাছ কিনে অধিকাংশ ক্রেতাই সরাসরি চলে যান কাটিয়াদের কাছে। কারণ ঘরে নিয়ে কাটার ঝামেলার চেয়ে সামান্য টাকায় বাজারেই মাছ কেটে নেওয়া তাদের কাছে অনেক সুবিধাজনক।

মাছ কাটিয়াদের ভাষ্য, একসময় বাজারে মাত্র দুই-তিনজন বটিওয়ালা ছিলেন। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ জনে। তাদের অনেকেই পেশা বদলে যুক্ত হয়েছেন এই কাজে। কেউ ছিলেন মাছ ব্যবসায়ীর শ্রমিক, কেউ ছোট-খাটো মাছ বিক্রেতা। পুঁজি ও ক্ষতির ঝুঁকি ছাড়া এই পেশায় স্থায়ী আয়ের সম্ভাবনা থাকায় অনেকেই বেছে নিয়েছেন মাছ কাটার কাজ।

এ বাজারের সবচেয়ে অভিজ্ঞ কুটুনিদের একজন বালিয়া চন্দ্র দাস। আগে ছোট মাছ ব্যবসা করলেও এখন পুরোপুরি পেশা বদলেছেন।

রবীন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আগে ছোট মাছের ব্যবসা করতাম। এখন ঝুঁকি-লোকসান ছাড়াই মাছ কাটার কাজ করি। প্রতিদিন ৭-৮শ থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত আয় হয়।

২৪ বছর বয়সি নিমাই চন্দ্র দাস একসময় ছিলেন মাছ ব্যবসায়ীর শ্রমিক। মাত্র পাঁচ-ছয় মাস হলো জায়গা ভাড়া নিয়ে শুরু করেছেন নিজের মাছ কাটার দোকান।

নিমাই দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আগে লেবার হিসেবে সংসার টানাপড়েনে চলত। এখন নিজে কাজ করি, আয়ও ভালো। ক্রেতারাও এই পেশার উন্নতিতে সন্তুষ্ট।

সিরাজ সরদার বলেন, অল্প টাকায় বাজারেই মাছ কেটে দিচ্ছে- এটা আমাদের জন্য খুব সুবিধা হচ্ছে।

অপর ক্রেতা মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, বড় মাছ ঘরে কাটতে ঝামেলা। বাজারেই কেটে দেওয়া হলে সময়ও বাঁচে, পরিশ্রমও কম।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে- মাছ কুটুনিদের এ নতুন পেশা দেখতে সাধারণ হলেও বদলে দিচ্ছে বহু মানুষের জীবন। শুধু মাছ বিক্রির কেন্দ্র নয়, গাইবান্ধার পুরোনো বাজার এখন হয়ে উঠেছে স্থানীয় কর্মসংস্থানের নতুন ভরসাস্থল।


তীব্র যানজটে অসহায় ময়মনসিংহের মানুষ

ভেঙে পড়েছে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কামরান পারভেজ, ময়মনসিংহ ব্যুরো

প্রখ্যাত বাউল শিল্পী শাহ আব্দুল করিমের জনপ্রিয় গানের কথা ‘গাড়ি চলে না, চলে না, চলে নারে।’ ওই গানে হয়তো গাড়ি চলে না, চরণকে আক্ষরিক অর্থে বোঝানো হয়নি। তবে এ কথাগুলোর আক্ষরিক অর্থ এখন মিলে যায় ময়মনসিংহ নগরের সঙ্গে। এ নগরে প্রতিদিন বাড়ছে মানুষ। বাড়ছে যানবাহন আর যানজট। সাম্প্রতিক সময়ে এ যানজট হয়ে ওঠেছে বাউলের গানের মতোই-‘গাড়ি চলে না, চলে না, চলে নারে।’

প্রাচীন জেলা, বিভাগীয় নগর, শিক্ষানগরী, চিকিৎসার নগরী- এসব উপমাকে পেছনে ফেলে এখন যেন ময়মনসিংহ হয়ে ওঠেছে যানজটের নগরী। গত কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছে ময়মনসিংহ নগরের প্রায় সবগুলো সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সড়কে যানজটের কবলে দীর্ঘ সময় আটকে থাকছে ইজিবাইক আর রিকশাগুলো। এ যানজটে স্থবির এক নগরী।

যানজট নিয়ে ময়মনসিংহ ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ময়মনসিংহ সারা বিশ্বের মধ্যে নবম ধীরগতির শহর হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিকের এক গবেষণায় বিশ্বের ২০টি ধীরগতির শহরের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় ময়মনসিংহ নবম স্থানে ছিল।

এরপরেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আসছে না। উল্টো গত এক বছরে যেন আরও বেড়েছে যানজন।

গত রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট চোখে পড়ে। বর্তমানে একই সঙ্গে নগরের সব স্কুলে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা। সঙ্গত কারণে মানুষের চলাচল ছিল বেশি। এমন ব্যস্ত সময়ে নগরজুড়ে তীব্র যানজট লেগেই আছে। গত রোববার দুপুরে নগরের বদরের মোড় থেকে কাচিঝুঁলি পর্যন্ত ইজিবাইকে যেতে যাত্রীদের সময় লেগেছে ৩০ মিনিটের বেশি। অথচ এ দূরত্ব যানজট না থাকলে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই যাওয়া যায়। বদরের মোড় থেকে কাচিঝুঁলি পর্যন্ত যেতে যেতে কথা হয় ইজিবাইকচালক রনি মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান,‘মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড থেকে তিনি টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রী নেন। দূরত্ব আনুমানিক ৬ কিলোমিটার। স্বাভাবিকভাবে ৬ কিলোমিটার যেতে ১৫ মিনিট সময় লাগে। তবে গত রোববার তীব্র যানজটের কারণে এ পথ যেতে সময় লেগেছে ১ ঘণ্টা। রনি মিয়া জানান, যানজটে এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকার কারণে সারা দিনের রোজগার অনেক কমে যায়। এতে আর্থিক সংকটে ভুগতে হয়। দুপুরে নগরের নতুন বাজার, সাহেব আলী রোড ও গরু খোয়ার মোড়ে দেখা যায় তীব্র যানজটে অসংখ্য যানবাহন আটকে রয়েছে। ওই সময় ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে যাচ্ছিল। তীব্র যানজটের কারণে গাড়ি দুটি অনেকক্ষণ আটকে থাকে।

ময়মনসিংহ নগরের বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, নগরের গাঙ্গিনারপাড়, চরপাড়া, পাটগুদাম মোড়, নতুন বাজার, জিলা স্কুল মোড় ও কাচিঝুঁলি এলাকায় প্রতিদিন সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। যানজটের কারণে নগরবাসী প্রতিদিনই ভোগান্তির শিকার হয়।

নগরবাসীরা বলেন, নগরে সড়কের তুলনায় ইজিবাইক ও ব্যাটারিচাতি রিকশার সংখ্যা অনেকগুল বেশি থাকার কারণে এ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ফুটপাত দখল, নগরের ভেতর দিয়ে যাওয়া রেললাইন ও ট্রাফিক আইন না মানার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে এমন যানজট। ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার পর যেন এ নগরে দ্রুত বেড়ে গেছে মানুষ।

জেলা ট্রাফিক পুলিশ জানায়, ময়মনসিংহ নগরের ১৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ। ট্রাফিক বিভাগে বর্তমানে কর্মরত আছে ১১০ জন। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দুই ভাগে ভাগ হয়ে দায়িত্ব পালন করেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যে কারণে অনেক সময় সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়েও পুলিশ সদস্য দেওয়া সম্ভব হয় না।

সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, যানজট বেড়ে যাওয়ায় কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশার নিবন্ধন। বর্তমানে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা মিলিয়ে নগরে অন্তত ১৫ হাজার যানবাহন রয়েছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে ইজিবাইক ও মোটা চাকার রিকশাগুলোতে জোড় ও বিজোড় নম্বরে ভাগ করে একদিন পর পর চলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) আবু নাসের মো. জহির বলেন, স্কুলগুলোতে একযোগে পরীক্ষা চলার কারণে যানজট এখন বেশি। পরীক্ষা ছাড়াও অন্যান্য সময়েও ময়মনসিংহ নগরে যানজট সৃষ্টি হয়। যানবাহনের তুলনায় সড়কের পরিমাণ কম, নগরের মার্কেট ও বহুতল ভবনের পার্কিং করার সুযোগ না দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে নিয়মিতভাবে যানজট হচ্ছে। যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য সব কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।


banner close