বন্দরনগরী চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের খালি সিটের নিচ থেকে ৫৬টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলোর ওজন ৬ কেজি ৫২৪ গ্রাম।
শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুবাই থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৮ ফ্লাইটের একটি খালি বিজনেস ক্লাস সিট থেকে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করে কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজনেস ক্লাসের একটি খালি সিটের নিচে লুকানো ৫৬টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছি আমরা। যার ওজন ৬ কেজি ৫২৪ গ্রাম। আর এসব স্বর্ণের বাজার মূল্য চার কোটি ৫৮ লাখ টাকা প্রায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু সিটটা খালি ছিল, আমাদের ধারণা বিমানের কেউ জড়িত। তবে আমরা কাউকে সরাসরি দায়ি করতে পারব না। ওই সিটের আশেপাশে যারা ছিল তাদের মধ্যে কেউও জড়িত থাকতে পারে। আমরা তাদের সবার রেকর্ড সংগ্রহ করব।’
এই ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে শূন্যরেখার নিকট থেকে এক মানসিক ভারসাম্যহীন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ৪৭ ব্যাটালিয়ন। পরে মানবিক বিবেচনায় তাকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২ নভেম্বর দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার পশ্চিম ধর্মদাহ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় টহলরত বিজিবি সদস্যরা সন্দেহ জনক অবস্থায় ঘোরাঘুরি করতে থাকা ফিরোজ আহম্মেদ সাদ্দাম (৩৩) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেন। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মির্জানগর এলাকার তোফাজ্জেল শেখের ছেলে এবং মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।
পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে পরিবারের মুচলেকা নিয়ে ফিরোজ আহম্মেদকে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষা, মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে বিজিবি সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও বিজিবি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এ ঘটনার মাধ্যমে তা আবারও প্রতিফলিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিজিবির এমন মানবিক উদ্যোগে স্থানীয় জনগণ প্রশংসা করেছেন এবং আটক ব্যক্তির পরিবার বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
কুমিল্লা সেক্টরের সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান জানান, আজ সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পৃথক পৃথক অভিযানে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সীমান্তঘেঁষা এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় খাদ্য সামগ্রী।
তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচার প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। জব্দকৃত পণ্যসমূহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জেলার কলাপাড়া উপজেলায় ঢাকাগামী ছয়টি দূরপাল্লার বাসে অভিযান চালিয়ে ১৪০০ কেজি (৩৫ মণ) জাটকা (বাচ্চা ইলিশ) জব্দ করা হয়েছে। একইসাথে বাস চালকদের প্রত্যেককে ১২,০০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসীন সাদেকের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত গতকাল রবিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে কলাপাড়া চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালিয়ে এ মাছ জব্দ করে। অভিযানকালে মিজান, ডলফিন, মিমসহ ছয়টি বাস তল্লাশি করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসীন সাদেক বলেন, মহিপুর-আলীপুর রুটের বিভিন্ন বাসের ৩১টি কর্কসিটে লুকিয়ে রাখা এসব জাটকা বিভিন্ন স্থানে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসীন সাদেকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরে জব্দকৃত জাটকা বিতরণ করেন। স্থানীয় ৫০টি এতিমখানার শিক্ষার্থী এবং কলাপাড়া পৌরসভার ৩০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মধ্যে এসব মাছ বিতরণ করা হয়।
পাবনায় নামাজরত অবস্থায় বাবা নিজাম প্রামাণিককে (৬০) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মাদকাসক্ত ছেলে মোস্তফা প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। রোববার (২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তবে তাকে আটক করতে গিয়ে সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আহত হয়েছেন।
পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত নিজাম প্রামাণিক ওই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামাণিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত ছেলে মোস্তফা প্রামাণিকও বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ করতেন। তবে তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামাণিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে সন্ধ্যার পর বাড়িতে ফেরেন। এরপর তিনি রাতের খাবার শেষে এশার নামাজে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় আগে থেকে ঘরে ওঁৎপেতে থাকা ছেলে মোস্তফা দরজা বন্ধ করে দেন। এর পর ধারালো হাসুয়া দিয়ে বাবা নিজাম প্রামাণিককে উপর্যুপরি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘর থেকে বের হয়ে যান।
ঘাতক মোস্তফা এরপর পাশের রুমে গিয়ে দরজা আটকে বসে থাকেন। পরে বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে নিজাম প্রামাণিকের লাশ উদ্ধার এবং ঘাতক ছেলে মোস্তফাকে আটক করে।
এদিকে অভিযুক্ত ছেলে মোস্তফাকে আটকের সময় মোস্তফার ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হন।
পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সদর উত্তর ইউনিয়নের গোমতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন কদমতলী-হাসনাবাদ সেতুর কাজ শুরু হয়েছে ২০২০-২১ অর্থ বছরে। ৫৭০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৬৬ কোটি টাকা।
কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএএম হোল্ডিং লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের মে মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। মাঝে ২ বছর করোনা মহামারীর কারণে বন্ধ ছিল নির্মাণ কাজ।পরে সময় বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পাঁচ বছরেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৩৮ শতাংশ। সেতুর কাজে ধীরগতিতে দুর্ভোগে আছে লাখো মানুষ। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয়দের মাঝে।
প্রাশাসনিক নজরদারির ঘাটতি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা। শ্রমিক বেতন বকেয়া। সব মিলিয়ে প্রায়শই থমকে থাকে সেতুর নির্মাণ কাজ। ফলে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়
দাউদকান্দি, তিতাস ও মেঘনা উপজেলার অন্তত ৩২ গ্রামের লাখো মানুষকে। তাদের নিত্যদিন পারাপারের একমাত্র বাহন নৌকা। এতে নষ্ট হচ্ছে সময়। পারাপারে আছে জীবন ঝুঁকি। গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম অবহেলা ও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক না দেওয়ার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। গত চার মাস ধরে প্রকল্প এলাকায় কার্যত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
চর কুমারিয়ার কৃষক লিয়াকত আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিন নদী পার হয়ে মাঠে যাই। আসা-যাওয়ার পথে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় নৌকার জন্য। ভিটিকান্দি গ্রামের নুরুল হক সরকার বলেন, আমরা হয়তো বেঁচে থাকতে এই সেতুর উদ্বোধন দেখতে পারব না। তিনি দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করার দাবী জানান। দুধঘাটা গ্রামের গৃহবধূ রিনা আক্তার বলেন, ডাক্তারের কাছে যাওয়া বা বাজারে যাওয়া সব কিছুতেই এখন ভয় আর কষ্ট। একবার যেতে ও ফিরতে ২০০ টাকার মতো খরচ হয়।
ভিটিকান্দি গ্রামের রুমা বেগম জানান, অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে নদী পার হওয়া যেন এক যুদ্ধের মতো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
সাইট সহকারী প্রকৌশলী মো. নাঈমুর রহমান বলেন, “জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, বন্যা ও করোনা মহামারির কারণে প্রায় আড়াই বছর কাজ বন্ধ ছিল। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে কাজের মেয়াদ। তবে আরও কিছু সময় প্রয়োজন।
অন্য সহকারী প্রকৌশলী অসিত কুমার রায় জানান, শ্রমিকদের বেতন বকেয়া থাকায় অনেকে কাজ ছেড়ে চলে গেছেন। তাই আপাতত কাজ বন্ধ আছে।
দাউদকান্দি উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, গোমতী নদীর ওপর ৬৬ কোটি টাকায় ৫৭০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় দুটি প্রতিষ্ঠান মঈনউদ্দিন বাশী লিমিটেড ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজ (জেভি)। নির্ধারিত সময়েও কাজ শেষ হয়নি। প্রতিষ্ঠান সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। প্রয়োজনে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার গরুর খামারে ৩মাসে দুই দফায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ১২টি গরু লুটের ঘটনা ঘটেছে। দুই দফায় ২৫ লাখ টাকার দুধের গরু নিয়ে গেছে ডাকাতদল। জেলার লাকসাম উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ ঘটনায় শিক্ষক, কেয়ারটেকার ও ছাত্রসহ আটজনকে আহত করেছে ডাকাদল। রোববার মাদ্রাসায় গিয়ে এই তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, এই খামারের আয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চলতো। ৩ মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খামারের বড় গরু গুলো লুট হয়ে গেছে। খামারের এক পাশ খালি পড়ে আছে। এখন ১১টি গরু আছে। খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাতদলের আনা তুষের বস্তা। যেগুলোর মাধ্যমে গরু ভ্যানে ওঠানো হয়। এলাকাবাসী গরু উদ্ধার ও ডাকাত দলের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।
মামলার বাদী ওই মাদ্রাসা শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, ‘গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুইটি পিকআপ গাড়ি নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদ্রাসার শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। এ সময় শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মুঠোফোনগুলো ডাকাতদের কাছে নিয়ে যায়। এরপর তারা মাদ্রাসার পাশ্ববর্তী গরুর খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে ৫ টি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, এ গরু খামারের আয়ের অর্থ দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও এ মাদ্রাসার খামারে গত তিন মাসে আগে ৭টি গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, লুট হওয়া গরু উদ্ধার ও ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে রাজকীয়ভাবে বিদায় নিলেন নাটোরের বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগের সহকারী শিক্ষক (টেকনিক্যাল) দিলীপ কুমার সরকার। দীর্ঘ ২৭ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টেনে তিনি অবসরে গেলেন। এ উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এক আবেগঘন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। রোববার বিদ্যালয়ের সহকর্মী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় বিদায় সংবর্ধনা। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা প্রিয় শিক্ষককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় এবং বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পরে ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন দিলীপ কুমার সরকার। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের অনেকে অশ্রুসজল নয়নে প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) অনিতা রানী বলেন, ‘দিলীপ কুমার সরকার ছিলেন অত্যন্ত পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল শিক্ষক। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়ের টেকনিক্যাল বিভাগে এসেছে বহু সাফল্য। তাকে আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করব।’
বিদায়ী শিক্ষক দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘এই বিদ্যালয় আমার দ্বিতীয় পরিবার। সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই বিদায় আমার জন্য যেমন গর্বের, তেমনি খুব আবেগেরও।’
জানা গেছে, তিনি ১৯৯৮ সালের ২ মে বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরি বিভাগের সহকারী শিক্ষক (টেকনিক্যাল) হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি শিক্ষকতা, দায়িত্ববোধ ও শিক্ষার্থীদের প্রতি মমতায় সবার হৃদয়ে জায়গা করে নেন।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ বটতলী শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা একমাত্র বোয়ালিয়া খাল এখন বিলীন প্রায়। এক যুগ আগেও এই খাল কই, মাগুর, শিং, টেংরা, টাকি, শোল, বোয়াল প্রভৃতি পাঁচমিশালি মাছে ভরপুর ছিল। সহজেই দেখা মিলতো সাপ, ব্যাঙ, কুচিয়া, কচ্ছপ ইত্যাদি জলজ প্রাণীর।
জানা যায়, একসময় খালে বড়শি ও জাল ফেলে হরেক রকমের মাছ পাওয়া যেত। খালের পানি কৃষি ও গৃহস্থলির কাজে ব্যবহার করা যেত। এখন বোয়ালিয়া খালে মাছ তো দূরের কথা, ব্যাঙও দেখা যায় না। খালটি এখন মশার আস্তানা। একসময় খালের স্বচ্ছ পানিতে গোসল করা যেত। এই খাল দিয়ে অনায়াসে নৌকা চলতো। সেসব এখন সোনালি অতীত।
ভয়াবহ দূষণ, দখলসহ বিভিন্ন কারণে বোয়ালিয়া খাল থেকে মাছ ও জলজ প্রাণী প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। দূষণের ফলে পানির রং কালো হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানির ওপর নানা ধরনের পোকা ভেসে বেড়াচ্ছে। দুর্গন্ধের কারণে মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাচলও করতে পারছে না। খালটি বর্তমানে মশার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে মশাবাহী নানা রোগ। বর্তমানে তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা খালটির প্রস্থ প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।
জানা গেছে, বোয়ালিয়া খালের উৎপত্তিস্থল লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে উত্তর কলাউজান মিশ্রী বর পাড়া এলাকার বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে। উৎপত্তিস্থল থেকে লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান ইউনিয়ন, লোহাগাড়া সদর ইউনিয়ন ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়ে প্রায় ১১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সীমান্তে টঙ্কাবতীর মুখ এলাকায় গিয়ে টঙ্কাবতী নদীতে বোয়ালিয়া খাল মিশেছে।
বটতলী শহর এলাকায় বোয়ালিয়া খালের এক কিলোমিটার অংশে দখল ও দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। খালের জায়গা দখল করে দুপাশে একাধিক দোকানপাট ও বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী খালটির গড় প্রস্থ প্রায় ৩০ ফুট। কিন্তু দখলের কারণে খালটির কোনো কোনো অংশ ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত সরু হয়ে গেছে। বটতলী শহরের নালা ও স্থানীয়দের শত শত সেফটি ট্যাংকের নল খালের দিকে প্রবাহিত করায় দূষণে খালটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
এই খাল দিয়ে বৃষ্টি ও ঢলের পানি নিষ্কাশন হয়। কিন্তু দখল–দূষণে পানি নিষ্কাশনের এই পথ ক্রমাগত সরু হয়ে আসছে। এতে বাড়ছে দীর্ঘমেয়াদে বন্যার ঝুঁকি যার সাক্ষী হয়ে আছে ২০২৩ সালের ভয়াবহ বন্যা। শত শত মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, জমির ফসল ও প্রাণহানির মতো ঘটনার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন।
বোয়ালিয়া খাল রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, আগে এই খালে বিভিন্ন দেশীয় মাছ পাওয়া গেলেও এখন শুধু মশা তৈরী হয়। খালটি রক্ষার দ্বায়িত্ব আমাদের সকলের। খাল অপরিষ্কার ও দূষিত হতে থাকলে একদিন এটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে সাথে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর দেখা পাবে না।
বোয়ালিয়া খাল দখল ও দূষণমুক্ত করতে আগামীতে এই কমিটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের চারতলার একটি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেট ওয়ার্ড করা হয়েছে। সে ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৪০টি। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন আছে ৭৭ জন রোগী। যে কারনে ওয়ার্ডের বারান্দায় শয্যা পেতে আশ্রয় নিতে হয়েছে রোগীদের। শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ বছরের জানুয়ারী থেকে গত আগস্ট মাস পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৫০ জন। আর পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে রোববার পর্যন্ত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি হওয়া ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫৬০ জন। অর্থাৎ দুই মাসে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে ১৪১০ জন। আর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ বছরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছে ৪১ জন।
রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ডেডিকেটেট ওয়ার্ডে দেখা যায়, শয্যার পাশাপাশি ওয়ার্ডের বারান্দাও রোগীতে ঠাসা। পাশাপাশি রোগীদের স্বজনারাও ভিড় করছেন হাসপাতালের ওয়ার্ড এবং বারান্দায়। একাধিক রোগীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশি ভাগ রোগীই ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবারও ময়মনসিংহ নগরে বসবাস করা রোগীও আছে।
হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, সম্প্রতি প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোববার ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ রোগীর সংখ্যা ৬৪ জন। নারী রোগী ছিল ১৩ জন।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের সহকারী ফোকাল পারসন ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোস্তাফা ফয়সাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, বিগত বছরগুলোতে কেবল ঢাকা ও ঢাকার আসপাশের এলাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসত। ময়মনসিংহে বসবাসকারী রোগীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। এ বছরই প্রথম ঢাকায় না গিয়ে ময়মনসিংহ থেকে চিকিৎসা নেওয়া ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। যে কারণে রোগীর চাপ বেশি। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি চাপ সামলে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিতে।
ডা. মোস্তাফা ফয়সাল আরও জানান, এ বছর বৃষ্টি বেশি হওয়ায় ময়মনসিংহে মশা বেড়েছে। যে কারণে ময়মনসিংহে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এখনো বাড়ছে। গত শনিবার এবং রোববারও ময়মনসিংহে বৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে এখনো ডেঙ্গুরোগী বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় সচেতনতা খুবই জরুরি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ নগরের বাউন্ডারী রোডে প্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে। এরপর নগরের গুলকিবাড়ীসহ আরও কয়েকটি এলাকার বসবাসকারী মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ময়মনসিংহে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়ার পর সিটি করাপোরেশনের পক্ষ থেকে কয়েকদিন মাইকিং করে নাগরিকদের সচেতন করা হয়। মাইকিংয়ের পাশাপাশি মশক নিধন কার্যক্রমের ওপর জোর দিচ্ছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মজুমদার বলেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বিষয়টি জানার পর ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন সচেতনতা কার্যক্রমের পাশাপাশি মশক নিধনের কাজ বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে পানি জমে থাকার খবর পেয়ে বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। নির্মাণাধীন বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পেয়ে জরিমানাও করা হয়েছে। তবে শেষ প্রায় এক সপ্তাহে কোথও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি।
ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. ফয়সাল আহমেদ দৈনিক বাংলাকে জানান, ময়মনসিংহে অনেক ডেঙ্গুরোগী সনাক্ত হলেও পরিস্থিতি এখনো আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। উপজেলাগুলোর তুলনায় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা জরুরী। তবে সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একটু বেড়েছে।
রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উপস্থাপিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কুষ্টিয়া সদর-৩ আসনে লিফলেট বিতরণ, পথসভা ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বরে লিফলেট বিতরণ ও পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের বারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য,বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন।
পথসভায় বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মিরাজুল ইসলাম রিন্টু, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান কাজল মাজমাদার, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. বশিউর আলম চাঁদ, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মেজবাউর রহমান পিন্টু, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ফুহাদ রেজা ফাহিম ও জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির রহমান রাব্বি প্রমুখ।
লফিলটে বতিরণ ও র্যালী পূর্ব পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, জনগণের ভোটাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই দফাগুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে মানুষ নিরাপদে কথা বলতে পারবে, ন্যায়বিচার পাবে এবং তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশ একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। তাই এই ৩১ দফা দাবি জনগণের দোয়ারে দোয়ারে পৌঁছিয়ে দিতে হবে।
পথসভা শেষে কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বর থেকে একটি র্যালী বের হয়। র্যালীটি এন এস রোড় ঘুরে বড়বাজার রকশী গলির মোড়ে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ২দিন ব্যাপী ২য় ব্যাচে গ্রাম আদালত বিষয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। গত শনিবার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণে কোর্স ডিরেক্টর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ এবং কোর্স কোর্ডিনেটর হিসেবে ছিলেন, উপপরিচালক (অ.দা.) মোহাম্মদ ইসমাইল।
এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের গ্রাম আদালতের উপর হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। গ্রাম আদালত পরিচালনার উপর বড় পর্দায় নাটিকা প্রদর্শন করা হয়। প্রশিক্ষনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ গ্রাম আদালতের উপর একটি মক ট্রায়াল প্রদর্শন করেন।
প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ও কোর্স ডিরেক্টর খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, গ্রামের বিরোধগুলো আপনারাই নিষ্পত্তি করে থাকেন। তবে সেই বিরোধগুলো যাতে গ্রাম আদালতের মাধ্যমেই নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সমাধা করা হয় সে দিকে লক্ষ রাখবেন। আপনাদের আন্তরিকতায় গ্রামের হতদরিদ্র মানুষগুলো অল্প সময়ে গ্রাম আদালতের সেবা নিতে পারবে। ছোটখোটো কোনো বিরোধ নিয়ে পক্ষরা যাতে থানা বা জেলা আদালতে না চলে যায় তার জন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গ্রাম আদালতের বিষয়ে প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থাও করতে হবে। গ্রাম আদালতে গত ৬ মাসে মামলা গ্রহণে ১ম, ২য় এবং ৩য় স্থান অর্জনকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পুরস্কৃত করা হয়।
প্রশিক্ষণ পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী মামুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বেগমগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়কারী মো. নুরে আলম সিদ্দিক এবং চাটখিল উপজেলা সমন্বয়কারী রবিউল হাসান, প্রোগ্রাম এন্ড ফাইন্যান্স এসিস্ট্যান্ট ফয়েজ আহমেদ।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা নদীর দুর্গম চরাঞ্চল এবং ভারত সীমান্তঘেঁষা অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি পদ্মার চরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ এবং ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলিতে তিনজন নিহতের ঘটনায় নড়েচড়ে বসলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, শুধু কাকন কিংবা মণ্ডল বাহিনী নয়; সাইদ, রাখি, কাইগি, রাজ্জাক ও বাহান্ন বাহিনীও সক্রিয় এই চরাঞ্চলে।
রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসব বাহিনী জমি দখল, ফসল কেটে নেওয়া, চাঁদাবাজি, বালু উত্তোলন, মাদক, অস্ত্র পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব বাহিনী পদ্মার এমন দুর্গম চরে ‘সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছে, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রবেশ একেবারে সীমিত। সম্প্রতি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা নদীর দুর্গম চরে কাকন বাহিনী ও মণ্ডল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের তিনজন নিহত হন। এরপর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
এ ঘটনার মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে প্রধান কাকনকে। এরপর গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা পুলিশের একাধিক ইউনিট শতাধিক সদস্য নিয়ে পদ্মার চরে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে প্রথম দিনের অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, দৌলতপুরের পদ্মা চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ডজনখানেক সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তবে ২০ বছর আগে দুটি সন্ত্রাসী বাহিনীর উত্থান ঘটেছিল বিস্তৃত পদ্মার দুর্গম এই চরাঞ্চলে। তাদের ভাগ না দিয়ে কেউ চরের ফসল ঘরে তুলতে পারত না। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে তাদের হাতে ওই সময় ৪১ জন খুন হয় বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
সূত্র জানায়, এ বছরের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ‘কাকন বাহিনী’র বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী, বাঘা, লালপুর ও দৌলতপুর থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়েছে। বাহিনীর প্রধান কাকন পাবনার ঈশ্বরদী কলেজ রোডের বাসিন্দা হলেও তার পৈতৃক নিবাস কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মরিচা ইউনিয়নের মাজদিয়াড় গ্রামে।
১৯৯৪ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি চাকরি করলেও ২০০৫ সালে পান্না নিহত হওয়ার পর ২০০৭ সালে সৌদি আরব থেকে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় বালুমহাল দখল ও নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নইম উদ্দিন সেন্টুকে নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে টুকু বাহিনী। বাহিনীর প্রধান তরিকুল ইসলাম ওরফে টুকু ফিলিপনগর গ্রামের বাসিন্দা।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের পর দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে বিপুল অস্ত্র দেশে ঢোকার তথ্য রয়েছে। জানা গেছে, তিন চালানে মোট প্রায় ২ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র এসেছে দেশে।
গত বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ ১২০ জন সদস্য নিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পুলিশ এই অভিযানে চরবাসী খুবই খুশি। এতে জনমনে স্বস্তি ফিরবে বলে তারা আশা করছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘এই অভিযান রাতেও চলবে। অভিযান শেষ হবে না। এটা যে শুধু আসামি ধরা, তা নয়। মানুষকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় এই চরগুলোতে আর হবে না।’
কারোর কাছে হাত পেতে নয়, নিজের পরিশ্রমেই জীবন যাপন। দুপা হারিয়েও হার মানেননি মেহেরপুরের গাংনীর ঠান্ডু মিয়া। জীবনের সঙ্গে এক অনন্য সংগ্রামের নাম ‘ঠাণ্ডু মিয়া’। গাংনী উপজেলার জুগিরগোফা স্কুলপাড়া এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে ঠাণ্ডু মিয়া। ২০০০ সালে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় হারান তার ডান পা। তারপরও থামেননি, জীবন চলেছে কোনোভাবে।
এক বছর তার চিকিৎসা চলছিল। তারপর আসে করোনা। চিকিৎসার অভাবে আক্রান্ত হয় অন্য পাটিও। অবশেষে ২০২৪ সালে সেটিও কেটে ফেলতে হয়। এরপর একজন পরিশ্রমী কৃষক, হঠাৎই হয়ে পড়েন কর্মহীন ও অসহায়। নিজ হাতে তৈরি করেছেন বিশেষ ভ্যান। এই ভ্যানই এখন তার জীবনযাত্রার একমাত্র ভরসা।
প্রতিদিন সকালে বের হন বাদাম নিয়ে গাংনী, বামন্দী, আলমডাঙ্গা কিংবা হাটবোয়ালিয়া যেখানেই যান, সঙ্গে থাকে জীবনের আশ্চর্য এক উদ্যম। প্রতিদিন বাদাম বিক্রি করে সাত আট শ টাকা বিক্রি করে আড়াই থেকে তিন শত টাকার মতো লাভ হয়। সেই টাকায় চলে পরিবারের নিত্যপ্রয়োজন।
ঠাণ্ডু মিয়া বলেন, ‘দুই পা নাই... কিন্তু আমি কারো কাছে হাত পাততে চাই না। আমি বাদাম বিক্রি করি। আল্লাহ যা দেন তাই খাই।’
ঠাণ্ডুs মিয়ার স্ত্রী শাহানারা খাতুন বলেন, আমাদের এক সময় ভালো অবস্থা ছিল। চাষাবাদ ও মুনিশপাট খাইটি ভালই চলতো। এক্সিডেন্টে আমার স্বামীর পা হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। তারপরেও থেমে নেই আমাদের জীবন। বাদাম বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তাই দিয়েই সংসার চলে। ‘আমি প্রতিদিন বাদাম ভেজে রেডি করে দিই। যা আয় হয় তাই দিয়ে সংসার চলে।’
স্কুল শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘মানুষটার মনটা অনেক বড়। ও কারো কাছে চায় না, নিজের পরিশ্রমে খায়। আমরা চেষ্টা করি বাদাম কিনে একটু সাহায্য করতে।’ দু’পা নেই—তবুও তিনি থেমে যাননি। মানুষের অঙ্গ হারালেও, হারায় না মনোবল। ঠাণ্ডু মিয়া যেন তার প্রমাণ।