লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আছিয়া মার্কেট সংলগ্ন চরআফজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করে ৭ বছর ধরে ভাড়া তুলছেন সাইফুল আলম বিপ্লব নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা। রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চরগাজী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুল হক শের আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, স্কুলটি বিপ্লবদের বাড়ির দরজায় হওয়ায় তিনি প্রভাব বিস্তার করে স্কুলের জায়গায় ৬টি দোকান নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ৪ হাজার করে প্রতিমাসে ২৪ হাজার টাকা ভাড়া তুলছেন বিপ্লব। ৭ বছরে ২০ লাখ ১৬ হাজার টাকা ভাড়া ভোগ করছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ।
আছিয়া মার্কেট এলাকার তিনজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০১৮ সালের দিকে দলের প্রভাব খাটিয়ে স্কুলের এ জায়গা দখল করে ৬ রুম বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণ করেন বিপ্লব ও তার ভাই মাহবুবুল আলম রাসেল।
এদিকে বিপ্লব ও রাসেল প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরাসহ এলাকাবাসী।
অন্যদিকে বিপ্লবের আরেক ভাই মো. সোহেল ওই স্কুলের পাশেই জারিরদোনা শাখা খাল দখল করে তিনটি দোকানঘর নির্মাণ করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে সোহেল তার অন্য ভাইদের নিয়ে প্রতিবাদকারীদের অপমান অপদস্থ করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল আলম বিপ্লব বলেন, ‘স্কুলের সব জায়গা আমরা দিয়েছি। প্রয়োজনে আরও দিব। এটা নিয়ে এত হৈচৈ করার কি আছে?’
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সুবির চন্দ্র দে এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ইউছুফ বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দখল করে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলবেন তিনি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাগুরা জেলা কার্যালয় কর্তৃক মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১,৫৫,০০০/ টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পরিচালিত অভিযানে বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার, সার-কীটনাশকের সাব ডিলার, বীজ, ফার্মেসি ও মুদিদোকানসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়।
এসময় মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজ নামক বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কৃষকদের ও সাব ডিলারের অভিযোগ ডিলার প্রতিষ্ঠানটি বেশি দামে সার বিক্রয় করলেও সঠিকভাবে ভাউচার প্রদান করেন না। এছাড়া সকালে কৃষিকাজে তাদের সারের দরকার হলেও তারা দোকান খোলেন প্রতিদিন দুপুর ১২টার পরে যার কারনে অন্য খুচরা দোকান থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে তাদের সার কিনতে হয়। বিক্রয় রেজিস্টার ও ভাউচার পর্যবেক্ষণ করে ধরা পরে নানা অনিয়ম। বেশি দামে সার বিক্রয়, ভাউচার ও রেজিস্টারে গড়মিল, কৃষকদের ভাউচার না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত ভাউচার তৈরি প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া রেজিস্টার দেখে গোপালপুরের কৃষক তবিবারকে ফোন দিলে তিনি জানান গতকাল রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ৪বস্তা ডিএপি নিয়েছেন ১৩৫০ টাকা করে কিন্তু তাকে ভাউচার দেয়া হয়নি। অথচ তার নামে ২ বস্তা ইউরিয়া, ২বস্তা ডিএপি ও ১ বস্তা এমওপি সারের ভাউচার লেখা হয়েছে সরকারি মুল্যে। লক্ষ্মীপুর গ্রামের রাতুলকে ফোন করে জানা যায় তিনি পটাশ সার নিয়েছেন ১৫ কেজি কিন্তু তার নামে ভাউচার লেখা আছে ৫০কেজির, ইউরিয়া ১বস্তা নিলেও ভাউচারে লেখা আছে ২বস্তা।
এছাড়া ডিএপি সারের দাম নেয়া হয়েছে সরকার নির্ধারিত দামের বেশি অথচ তাকে কোন প্রকার ভাউচার প্রদান করা হয়নি। রেজিস্টার দেখে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলার পরে ডিলার প্রতিষ্ঠানটি তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি র্যাক থেকে প্রচুর মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক পণ্য জব্দ করা হয়।
সারের দাম বেশি নেয়াসহ কৃষকদের সাথে এমন প্রতারণামূলক অপরাধের দায়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক জনাব মিলন কুমার ঘোষকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০,৪৫ ও ৫১ ধারায় ১,৫০,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয়।
পরবর্তীতে অপর একটি সাব ডিলার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্সকে ক্রয় বিক্রয় ভাউচার না রাখা, সারের মুল্যতালিকা যথাযথভাবে প্রদর্শন না করা ও অতিরিক্ত দামে সার বিক্রয়ের অপরাধে ৫,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয় এবং সবাইকে ভবিষ্যতে এধরণের আইন অমান্যকারী কার্যকলাপ না করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়। এসময় সবাইকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মুল্যতালিকা প্রদর্শন ও ক্রয় বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলাম ও মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
কক্সবাজারের টেকনাফ বাহার ছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্টগার্ডের বিশেষ অভিযানে দেশীয় বন্দুকসহ তিন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাচারের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট সাতজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক।
তিনি জানান, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত রবিবার (৭ ডিসেম্বর)
গভীর রাতে কোস্টগার্ড স্টেশন টেকনাফ ও আউটপোস্ট বাহারছড়ার সদস্যরা মারিশবুনিয়া এলাকার গহীন পাহাড়সংলগ্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানকালে পাচারকারীদের গোপন আস্তানা থেকে সাতজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং তিনজন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়। পরে পাচারকারীদের দেওয়া তথ্যে তাদের আড়ালস্থল থেকে একটি দেশীয় বন্দুকও উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সংঘবদ্ধ কয়েকটি পাচারকারী চক্র উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় পাচারের পরিকল্পনা করছিল। ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়ে আটকে রাখা এবং নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়েরও চেষ্টা করা হচ্ছিল।
টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সালাহউদ্দিন তানভীর জানিয়েছেন, উদ্ধার ব্যক্তিরা, জব্দ আগ্নেয়াস্ত্র এবং আটক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। মানবপাচার রোধে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার রতনপুর বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী আশরাফুল হক (১৯) নিহত হয়েছেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আশরাফুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গারাও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল (নং: মৌলভীবাজার–ল ১১-৫৪৪৩) চালিয়ে নিজ কর্মস্থল স্থানীয় একটি কোম্পানির উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাস্তা পার হওয়ার সময় অজ্ঞাতনামা একটি দ্রুতগামী গাড়ি তার মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করে।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়েই আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত গাড়িটি শনাক্তে কাজ চলছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
শেরপুরের শ্রীবরদীর গারো পাহাড়ী এলাকায় চোরাকারবারীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই ভারতীয় সাবান জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধায় উপজেলার সিংগাবরুনা ইউনিয়নের গারো পাহাড় সীমান্তের বড়ইকুচি পশ্চিমপাড়া গ্রামে ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন ৩৯ বিজিবির কর্ণজোড়া বিওপি’র একটি টহল দল এই অভিযান পরিচালনা করে।
জানা যায়, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য পেয়ে শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ইকুচি এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি সদস্যরা। ওইসময় স্থানীয় আব্দুল বারেকের ছেলে মো. রাব্বানীর বসতবাড়ির পাশে খড়ের গাদায় লুকানো অবস্থায় ১৮টি বস্তায় ৮৯টি কার্টনের ভেতর ৬ হাজার ৪০৮ পিস ভারতীয় সাবান জব্দ করা হয়।
জব্দ এসব মালামালের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এসব পণ্য অবৈধভাবে সীমান্তপথে পাচার করে স্থানীয় বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুত করা হয়েছিল বলে ধারণা বিজিবির। তবে অভিযানকালে রাব্বানী বা অন্য কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ভারতীয় সাবান জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণজোড়া বিওপি’র ক্যাম্প ইনচার্জ সুবেদার মো. ফুলু মিয়া বলেন, ভারতীয় মালামাল জব্দের ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে জানা গেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত ১৫ জন পুলিশ পরিদর্শককে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) মো. আমির খসরু স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে বদলি বা পদায়ন করা কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
যাদের বদলি ও পদায়ন করা হলো- ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের পরিদর্শক আহসান উল্লাহকে ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত), শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সরদার ইব্রাহিম হোসেন সোহেলকে কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত), ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মাসুদ রানাকে সূত্রাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত), ডিবি তেজগাঁও বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমকে ক্যান্টনমেন্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত), পিএস অ্যান্ড আইআই বিভাগের পরিদর্শক আব্দুস সালামকে নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত), আইএডির পরিদর্শক মো. মুনিরুজ্জামানকে উত্তরা পশ্চিম থানা পরিদর্শক (তদন্ত), ডিবির রমনা বিভাগের পরিদর্শক মীর রেজাউল ইসলামকে শাহ আলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত), ডিবি মতিঝিল বিভাগের পরিদর্শক মোহা. আনোয়ার হোসেন খানকে বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত), ডিবি ওয়ারি বিভাগের পরিদর্শক বাহালুল খানকে রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত), ক্যান্টনমেন্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল হাসান খানকে গেন্ডারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত), নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাফিজুল ইসলামকে যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত), বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ রফিকুল ইসলামকে উত্তরখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত), রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ মশিউল আলমকে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত), উত্তর পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ উল্লাহ ফয়সালকে গোয়েন্দা বিভাগ ও কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলামকে গোয়েন্দা বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রে ডাকাতের কবলে পড়া ১১ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড।
রবিবার ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যায় কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ শুক্রবার মহেশখালী থানাধীন সোনাদিয়া চ্যানেল সংলগ্ন এলাকায় এফ বি মায়ের দোয়া-৩ নামক একটি ফিশিং বোট ডাকাতির কবলে পড়ে। ডাকাতদল বোটে থাকা মাছ, খাবার, ইঞ্জিন, ব্যাটারি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ বোটে থাকা জেলেদের জিম্মি করে রাখে।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে এফ বি তাসমীম নামক অন্য ফিশিং বোট গত ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ সকাল ৮ টায় কোস্ট গার্ডের জরুরি সেবা নম্বর ১৬১১১ এ সাহায্যের জন্য আবেদন করলে বিষয়টি কোস্ট গার্ড অবগত হয়।
সিয়াম-উল-হক বলেন, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, কোস্ট গার্ড স্টেশন মহেশখালী হতে একটি উদ্ধারকারী দল অতিদ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ডাকাতের কবলে পড়া ১১ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করত ফিশিং বোটসহ মালিক পক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে রাজনৈতিক দলই বিজয়ী হোক না কেন, সরকার ও জাতির স্বার্থে আমরা তাদের পাশে থাকবো বলে মন্তব্য করেছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করাই এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টায় বরিশালের বাবুগঞ্জে আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর বাবুগঞ্জ–মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ফাওজুল কবির বলেন, নির্বাচন যেন উৎসবমুখর পরিবেশে হয়। আগের মতো ভোটকেন্দ্র দখল বা সহিংসতার পুনরাবৃত্তি চাই না। নির্বাচনের দায়িত্ব এখন সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। আমরা শুধু স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করছি। বিভিন্ন জটিলতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে সেতু প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হয়েছে, ফলে প্রকল্প ব্যয়ও বেড়েছে। এ কারণে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফওজুল কবির খান বলেন, মীরগঞ্জ সেতু বরিশালের তিন উপজেলা মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটাবে। আমরা প্রকল্পটি দ্রুত শুরু করার চেষ্টা করেছি। আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ মেঘনা ও এর শাখা নদীবেষ্টিত এ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। তিনি সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুবুর রহমান ও নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেনের সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করতেই সরকারী পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। তবে নতুন আবাসিক গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ভোলার সঙ্গে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত কোনো পাইপলাইন না থাকায় জাতীয় গ্রিডে ভোলার গ্যাস সরবরাহের কোনো পরিকল্পনা নেই।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর সেতুটি বরিশালের তিন উপজেলার মানুষের জীবনমান বদলে দেবে। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান যেন মানসম্মতভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনকে সেতু নির্মাণে বাধা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান।
বরিশাল নদী বন্দরের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পোর্ট রোড উন্নয়ন করা হয়েছে, নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজও এগোচ্ছে। বন্দর সচল রাখতে ড্রেজিংসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সুমনসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩-এর ৩১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক―এর সভায় মীরগঞ্জ সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা, ডিপিপি চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করে। ঐ ডিপিপি অনুযায়ী, ২০২৮ এর জুনের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও নদী শাষন কাজ সম্পন্ন করে মীরগঞ্জ সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার কথা রয়েছে।
এক হাজার ৪৮৪ মিটার দীর্ঘ মীরগঞ্জ সেতুটি দৃশ্যত চট্টগ্রাম দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু ও বরিশালের পায়রা সেতুর আদলে নির্মিত হবে। সেতুর মূল অংশ ২টি এবাটমেন্ট এবং ১৭৫ মিটারের দুটি ও ৯৭ মিটারের দুটি পীয়ার সহ মোট ৫৪৪ মিটার। এরসাথে দু প্রান্তে সংযুক্ত ভায়াডাক্ট ৯৪০ মিটার। সেতু ও ভায়াডাক্ট সহ মোট পীয়ারের সংখ্যা থাকছে ৩০টি। সেতুটির দুই প্রান্তে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মিত হবে। যারমধ্যে টোলপ্লাজার সন্নিকটে রিজিট পেভমেন্ট এবং অবশিষ্ট ৩ হাজার ৯৭৩ মিটার ফ্লেক্সিবেল পেভমেন্ট-এর সড়ক নির্মিত হবে। খরস্রোত আড়িয়াল খাঁ নদের সম্ভাব্য যে কোনো ঝুঁকির হাত থেকে সেতুটি রক্ষায় ৪৬০ মিটার নদীতীর রক্ষাকাজে ৯৬.৬১ কোটি টাকা ব্যায় ধরা হয়েছে। এছাড়া সেতুটির প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ২১.৫৫ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহনে ৯৩.৫৮ কোটি টাকা বরাদ্ব রাখা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মাছিমপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে।
এ সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া (৩০) কে গ্রেপ্তার করে রূপগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল। মাদক ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া মাসিমপুর কান্তিক পাড়া এলাকার ভূমিদস্যু ইয়াকুব মিয়ার ছেলে।
সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পের একটি চৌকস দল শনিবার (৬) ডিসেম্বর দিবাগত রাতে এই অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনী।
এসময় ৭টি দেশীয় অস্ত্র, ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
রূপগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পের ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান, আমরা সোহাগের অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহাগ জানান তার সহযোগী আরমানের কাছে তার একটি পিস্তল রয়েছে।
তিনি আরো জানান, আমাদের অস্ত্র উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। এব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিকুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীর হাতে আটক সোহাগ মিয়াকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য জব্দ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস দমন ও মাদক নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ৯৯০ জন এবং অন্যান্য ঘটনায় আরও ৩৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘অভিযানকালে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, সাত রাউন্ড গুলি, দুটি চায়নিজ কুড়াল, দুটি বার্মিজ চাকু, একটি খুর, চারটি হাঁসুয়া, দুটি রামদা, দুটি চাপাতি, একটি চাকু, দুটি ককটেল, দুটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটারগান, একটি বিদেশি রিভলভার এবং দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
ফেনীতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে দরিদ্র বর্গাচাষিদের ধান কাটা, মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছে কৃষকদল নেতা-কর্মীরা। ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব।
এ সময় ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা কৃষকদল নেতা আমির হোসেন বাদশা, সদর উপজেলা কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আব্দুল গনি, পৌর সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূর নবী, ফেনী জেলা যুবদলের সদস্য মদুদ আহাম্মদ রনিসহ দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামের কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমি একজন বর্গাচাষী। শ্রমিকের মূল্য বেশি ধান কাটতে পারছি না। তাই চাষাবাদ করা চুয়ান্ন শতাংশ জমির ধান বিএনপি ও কৃষকদলের নেতা-কর্মীরা এসে কেটে দিয়েছে। তাতে আমার উপকার হয়েছে।’
ইলাশপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন, মাথিয়ারা গ্রামে মুসলিমপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়া ও বগই এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানায়, বাজার থেকে শ্রমিক এনে ধান কেটে ঘরে তুলতে অনেক খরচ পড়ে। তবে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলতে সময় ও অর্থ দুটিই কম লাগে। কৃষকদলের নেতারা ধান কেটে দেওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাওয়া গেছে।
ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘শ্রমিকের উচ্চ মূল্যের কারণে যে সকল কৃষক ধান কাটতে পারছে না তাদের পাশে কৃষকদল দাড়িয়েছে। আমরা নবান্নের শুরু থেকে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছি। কৃষকদলের কার্যক্রম চলমান থাকবে।’
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য ধান কেটে ঘরে তুলে দেওয়ার জন্য আমরা মাঠে এসেছি। সারাদেশে দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দেওয়ার কৃষকদল কর্মসূচি নিয়েছে। দরিদ্র কৃষকরা ধান চাষাবাদ করে ঘরে তুলতে যে খরচ হয় এটা বহন করে তাদের পক্ষে চাষাবাদ করে ধান ঘরে তুলে লাভবান হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আমরা যে প্রযুক্তিতে ধান কাটার পদক্ষেপ নিয়েছি ধান কাটা, মাড়াই ও ঝেরে একেবারে পরিচ্ছন্ন ধান ঘরে তোলার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম আসবে এবং কৃষকরা লাভবান হবেন। আগামীতে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত ও উদ্যোগী হবেন। যা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে, খাদ্য সংকট দুর করবে এবং খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করবে।’
দিনাজপুরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হহয়েছে।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মো. জেদান আল মুসা
বলেন, ‘মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘দিনাজপুরের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূর উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে।’ তিনি দিনাজপুরকে যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রফিকুল আলম, অতিরিক্ত পুলিম সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুল হালিম, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মুরুল হুদা দুলাল, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রঞ্জু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জাতীয় দৈনিকের দিনাজপুর প্রতিনিধি, সাদাকাত আলী খান,
সাংবাদিক ইউনিয়ন অপর অংশের সভাপতি মোফাসসিলুল মাজেদ, দিনাজপুর টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েনের সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, জাতীয় দৈনিকের দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধ মাহবুবুল হক খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট দিনাজপুর প্রতিনিধি এসএম আলমগীর হোসেন, দৈনিক বাংলা জেলা প্রতিনিধ মিজানুর রহমান. মানবজমিন পত্রিকারজেলা প্রতিনিধি কামরুজ্জামানসহ দিনাজপুর জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের কবর কবিতা প্রকাশের ১০০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ‘কবর কবিতার শতবর্ষ গ্রন্থে’ প্রকাশনা উৎসব ও মোরক উন্মোচন অনুষ্ঠান শনিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কবি লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আলী খান সম্পাদিত কবর কবিতার শতবর্ষ গ্রন্থের প্রকাশনা ও মোরক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ।
ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম এ সামাদ, সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান, ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাকলী মুখোপাধ্যায়, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হালিম, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ওবায়দুর রহমান, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়ালসহ কবি ও সাহিত্যিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে গ্রন্থের সম্পাদক কবি লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আলী খান বলেন, ভারতের কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘কল্লোল’ পত্রিকার পেছনের পাতায় একটি ‘গ্রাম্যকবিতা’ নামে ‘পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের’ এই কবর কবিতাটি সেই ১৯২৫ সালে ছাপা হয়।
তারপরের ইতিহাস আলোয় ভরা, সোনা দিয়ে মোড়া ‘কবর’ কবিতা স্কুলের পাঠ্য হয়ে বাঙালি তরুণ-তরুণীর হৃদয়ে যেমন স্থান করে নিয়েছে, তেমনি বাংলা সাহিত্যে পেয়েছে স্থায়ী আসন। কবিতার শব্দে ছন্দে ঝরে পড়ে বেদনার অশ্রুবিন্দু।
সেই কবিতা প্রকাশের শত বছর পার হলো এই ২০২৫ সালে। শতবর্ষ পরেও ‘কবর’ কবিতা আজো পাঠকের হৃদয়ে আলোড়ন তোলে, আবৃত্তিকারের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় তার মহিমা। একজন কবির কবিতা ১০০ বছর পরেও হয়ে ওঠে প্রিয় কবিতা, যাকে বারে বারে স্পর্শ করা যায় অন্তরের গহীন কোণে।
সাতক্ষীরায় শ্যামনগর শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পরিচিত খাবার কুমড়োর বড়ি। তরকারির সাথে এই কুমড়োর বড়ি রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু বছরের। শীতের মৌসুম এলেই সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে শুরু হয় কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর শীতের শুরু থেকেই কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্যামনগরের গৃহিণীরা। গ্রাম থেকে শহরের অনেকেই নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে এই কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। শ্যামনগর উপজেলায় প্রায় প্রতিটা বাড়িতে দেখা যায় শীত এলেই মাষকলাই ডালের সাথে চাল কুমড়া দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বড়ি তৈরি করা হয়।
শীতের কাকডাকা ভোরে মহিলারা বিশেষ পদ্ধতিতে দলবেঁধে কুমড়োর বড়ি দেওয়া শুরু করলেও মূলত আগের দিন থেকে শুরু করতে হয় মূল কর্মযজ্ঞ। শ্যামনগর মূলত অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে কুমড়া বড়ি তৈরির মহোৎসব। কেউ কেউ নিজেরা মিলে আবার কেউ পাড়ার সবাই একসাথে তৈরি করে এই বিশেষ সুস্বাদু কুমড়ার বড়ি।
গৃহবধূ মিনারা পারভীন জানান, গ্রাম বাংলায় আবহমান কাল ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি অত্যন্ত সুস্বাদু এই কুমড়োর বড়ি তরকারিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। ছোট বড় সকলের প্রিয় সুস্বাদু এই বড়ির চাহিদা সারা বছর থাকলেও শীতকালে শুধু তৈরি করা হয়। পরিবারের সারা বছরের চাহিদা অনুযায়ী সংরক্ষণের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও কুমড়োর বড়ি দিয়ে থাকি। আসলে কুমড়ার বড়ি তৈরি গ্রাম বাংলার পুরানো ঐতিহ্য।
তিনি আরও জানান, তার ৩৮ বছরের জীবনে ছোট থেকে দেখে আসছেন শীতকাল পড়লে গ্রামের মা-বোন ও চাচিরা মিলে কুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরি করতে। এটা খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়। এই কুমড়ার বড়ি বিভিন্ন রকম তরকারির সাথে দিয়ে রান্না করলে তরকারিতে অন্য রকম মজাদার ও লোভনীয় স্বাদ আসে। আগে যেমন তারা দেখতেন মা-চাচিরা বাড়িতে শীল-নোড়া, হিজিড়-মালশায় ফেলে ডাল বাটা-কুটার কাজ করতো।
কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ডাল ও কুমড়া বাটা-কুটার মেশিন বের হয়েছে। মেশিনে কুটার কারণে এখন তাদের অনেক কষ্ট কম হয় এবং সময়ও তুলনামূলক অনেক কম লাগে। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মতো বড়ি তৈরির পাশাপাশি প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দেওয়া হয় বলে আমাদের একটু বেশি তৈরি করতে হয় বলে জানান তিনি।
এছাড়া বর্তমানে গ্রামের অনেক গৃহিণীরা আর্থিক লাভবান হওয়ার আশায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি কিছু উপার্জনের আশায় কুমড়োর বড়ি বানিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। এই কুমড়া বড়ি গ্রাম থেকে কিনে অনেকে আবার শহরে নিয়ে যান বিক্রি করতে।
এই বড়ি কেজি প্রতি দুশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। যার কারণে অনেক মহিলারা এটাকে আবার পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছেন। সারাদেশে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় এবং কুমড়োর বড়ি তৈরির উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় শ্যামনগর অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয় খাবারটিকে ঘিরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেকেরই কর্মসংস্থান গড়ে তোলা সম্ভব বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা।