বাংলা বর্ষবিদায় ও বরণ উৎসবে মাতোয়ারা পার্বত্য চট্টগ্রাম। আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসল বিজুর ফুল।
শনিবার সকালে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটিতে শুরু হয়েছে বৈসাবি’র মূল আয়োজন। পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই উৎসব ১৯ এপ্রিল মারমা জনগোষ্ঠীর জলকেলি’র মাধ্যমে শেষ হবে পাহাড়ের বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা।
২৯ চৈত্র ১২ এপ্রিল শনিবার সকালে হ্রদের জলে গঙ্গা দেবীর আরাধনায় ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে পাহাড়ে শুরু হয়েছে বৈসাবি’র মূল আনুষ্ঠানিকতা। বিভিন্ন সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে দিনটি উদযাপন করে থাকে। তবে এটি ‘ফুল বিজু’ নামে বেশি পরিচিত। রাঙামাটির শহরের গর্জনতলী মধ্যম দ্বীপে কাপ্তাই হ্রদের জলে গঙ্গা দেবীর আরাধনায় ফুল ভাসিয়ে এর উদ্বোধন করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার।
পূর্ণময় এই দিনে দেশ ও দশের মঙ্গল কামনা করছেন পাহাড়িরা। সবেমাত্র পূর্ব আকাশে উঁকি দিয়েছে সূর্য। তার লাল আভা ছড়িয়ে পড়েছে হ্রদের বুকে। সেই ভোরে নানা বয়সি মানুষ ফুল নিয়ে জড়ো হতে থাকে ঘাটে। ডালায় থাকা রক্তজবা, রঙ্গণ গাদাসহ নাম না জানা বুনো ফুল কলা পাতায় সাজাতে ব্যস্ত সবাই। উদ্দেশ্য গঙ্গা দেবীর আরাধনার হ্রদের জলে ফুল নিবেদন। এ উৎসবে নারীরা পরিধান করেছে বাহারি রঙের পিনোন হাদি আর ছেলেরা ধুতি, পাঞ্জাবি/ফতুয়া। দেখে মনে হবে হ্রদের পাড়ে বসেছে রঙের মেলা। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম এই সামাজিক উৎসবে ব্যস্ত প্রতিটি পল্লী। বাংলাবর্ষ বিদায় ও বরণ উপলক্ষে ত্রিপুরারা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই, চাকমারা বিজু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু ও অহমিয়ারা বিহু- এভাবে ভিন্ন ভিন্ন নামে উদযাপন করে। যা বৈসাবি নামে বেশি পরিচিত। পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে পুরানো বছরের সব গ্লানি, হিংসা, বিভেদ নদীর জলে ভেসে যাবে। আর নতুন বছর বয়ে আনবে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি- এমন প্রত্যাশায় রাঙামাটি শহরের গর্জনতলী, রাজবিহার ঘাট, কেরানী পাহাড়ঘাট সহ, বিভিন্ন এলাকায় ভাসানো হয় বিজুর ফুল।
গর্জনতলী ঘাটে ফুল ভাসাতে আসা অমিয় ত্রিপুরা বলেন, ‘সকালে ফুল সংগ্রহ করে ঘর সাজিয়ে এখন ফুল ভাসাতে এসেছি। ফুল ভাসনোর মধ্যে দিয়ে পুোনো বছরের দুঃখ বেদনা গ্লানি পানিতে ভাসিয়ে দিলাম এবং নতুন বছর যেন সুন্দর হয়।’
রাজ বনবিহার ঘাটে ফুল ভাসিয়ে শ্রাবণী চাকমা বলেন, এটি পার্বত্য অঞ্চলের ঐহিত্যবাহী সামাজিক উৎসব। হ্রদে ফুল ভাসিয়ে গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করেছি, ‘আগামী বছরটা যেন আরও সুখশান্তিতে কাটাতে পারি। পার্বত্য এলাকাসহ সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হউক’।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার। বলেন, ‘আজকের এই পবিত্র দিনে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসিয়ে প্রার্থনা করেছি। আমরা যাতে সম্প্রীতির মধ্যদিয়ে সকল জাতিগোষ্ঠী একসঙ্গে বসবাস করতে পারি।’
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। সবার মাঝে সম্প্রীতি অটুট থাকুক। আর আগামী দিনগুলোতে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় এগিয়ে যাক প্রিয় বাংলাদেশ, এটাই আমাদের একমাত্র প্রার্থনা। এসময় অন্যান্যর মধ্যে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ,ত্রিপুড়ার কল্যান ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা প্রীতি কান্তি ত্রিপুড়া, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি শংকর ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজ বনবিহার ঘাটে কাপ্তাই হ্রদের জলে হ্রদের জলে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্য ফুল বাসিয়ে এর উদ্বোধন করেন রাঙামাটির সাবেক সাংসদ উষাতন তালুকদার। তিনি বলেছেন, পাহাড়ে বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য আজকের দিনটি বিশেষ একটি দিন। কারণ এদিন থেকেই নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই ফুল ভাসানোটা এখন সম্প্রীতির উৎসবে রুপ নিয়েছে। সবাই একসঙ্গে একত্রিত হয়ে ফুল নিবেদন করে প্রার্থনা করে। আজকের দিনে আমাদের চাওয়া হলো, আগামী দিনেগুলোতে যাতে সবাই মিলেমিশে সুখ-শান্তিতে বসবাস করতে পারি।
এসময় অন্যান্যর মধ্যে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, বিহু, চাংক্রান-২০২৫ উদযাপন কমিটির সভাপতি সাবেক উপ সচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈসাবীর আমেজ পুরো জেলা জুড়ে সাজ সাজ রব।
ইসকনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম তরুণীদের টার্গেট করে করে হিন্দু সঙ্ঘবদ্ধচক্র কর্তৃক পালাক্রমে ধর্ষণ ও গাজীপুরে মসজিদের ইমামকে গুম করার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার নেত্রকোনা বড়বাজার শাহী মসজিদের সামনে খেলাফত আন্দোলনের ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বড়বাজার শাহী মসজিদের সামনে শুরুতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয় এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো প্রদক্ষিণ করে বারহাট্টা রোডের জামিয়া ইসলাম উলুম মাদ্রাসার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম রুহী, ইসলাম ঐক্যজোটের জেলা সভাপতি মাওলানা শরিফ উদ্দিন ও সেক্রেটারি মাওলানা আবু সায়েম খান, জেলা হেফাজতে ইসলামের সদস্য সচিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন নেতা মাওলানা মুস্তাফা জেহাদী, মুফতি আরিফুজ্জামান, হাফেজ জাকির হোসেন, মুফতি মুসা শেখ, মাওলানা আতাউর রহমান কমলপুরী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মাওলানা ইজহারুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মোতালিব, হাফেজ সাকিব আল হাসান প্রমুখ।
এ সময় খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব গাজী মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রহিম বলেন, ইসকন ধর্ম প্রচারের নামে দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশে একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে শান্ত এই ভূমিকে বিদেশি ইন্দনে অশান্ত করে তোলার ফন্দি এঁকেছে। চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যাকাণ্ড তার জ্বলন্ত উদাহরণ। সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুরে মাদ্রাসার ১৩ বছরের এক ছাত্রীকে হিন্দু একটি চক্র পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। টঙ্গীতে একজন মসজিদের ইমামকে হত্যার উদ্দেশে গুম করে নিয়ে পঞ্চগড়ে ফেলে রেখেছে।
নরসিংদীর মেঘনা নদীতে এক আকর্ষণীয় তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নরসিংদী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নরসিংদী জেলা পরিষদ, নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, নরসিংদী পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় নরসিংদী-কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নারায়ণগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ১২টি নৌদল অংশগ্রহণ করে। শনিবার এ নৌকা প্রতিযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার মোহাম্মদ উসমান উল্লাহ নৌদল চ্যাম্পিয়নশীপ এবং হবিগঞ্জ জেলার টঙ্গীঘাট উপজেলার কালা মিয়ার নৌদল রানার্সআপের গৌরব অর্জন করে।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করার জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষ-শিশু মেঘনা নদীর দুই তীরে ভীড় জমায়। ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোড, লঞ্চ, ট্রলার, ছোট নৌকা অসংখ্য নৌকা দিয়ে মেঘনা নদীতে আকর্ষণীয় এই নৌকাবাইচ উপভোগ করে। নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ হুমায়ুন কবির, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, পুলিশ সুপার মেনহাজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা জাহান সরকার, পৌর প্রশাসক মনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (রাজস্ব) মাহমুদা বেগম, হারুন অর রশিদ হারুন প্রমুখ।
দিনাজপুরের পরিচিত মুখ, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মো. আব্দুল মজিদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি মেসার্স পৃথিবী বুক স্টলের স্বত্বাধিকারী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দিনাজপুর জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক আজকের দিনাজপুর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে সুপরিচিত।
তার অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে হাসপাতালে দেখতে যান সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর ২৯৩৬-এর নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মো. ফারুক হোসেন, অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম, দৈনিক বাংলার দিনাজপুর প্রতিনিধি মো. মিজানুর রহমান মিজান. মো. ওয়ামিকসহ সংগঠনের সদস্যরা। নেতারা তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ অক্টোবর ২০২৫, শনিবার ভোরে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের পঞ্চম তলায় ৫০৭ নিউরোলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে, তবে তার অবস্থা গুরুতর বলে পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তার সুস্থতার জন্য পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে সকলের কাছে দোয়া কামনা করা হয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ও কাথুলি সীমান্ত দিয়ে ৬০ জন নারী ও পুরুষকে পুশইন করেছে বিএসএফ।
শনিবার সকাল ১০টার সময় কাজিপুর সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১৪৭ মেইন পিলারের নিকট শহীদ স্মরণী দিয়ে ৩০ ব্যক্তিকে ৪৭-বিজিবি কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদের মধ্যে ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য রয়েছে।
কাজিপুর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার শাহাবুদ্দিন তাদের গ্রহণ করেন।
এসব বাংলাদেশিদের হস্তান্তর করেন ১১ গান্দিনা বিএসএফে কোম্পানি কমান্ডার এবিসন ফ্রান্কো।
এছাড়া দুপুর ১২টার সময় একই উপজেলার কাথুলি সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৩৩/৩ এসের নিকট দিয়ে ৩০ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কাথুলি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর তাদের গ্রহণ করেন।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, তাদের বাড়ি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে।
তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দালালের মাধ্যমে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছিলেন। ভারতের মুম্বায়, দিল্লি, আসাম রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। পরে পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের তেইমপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অনোজ কুমারের কাছে হস্তান্তর করে। অনোজ কুমার পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাথুলীর বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমানের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন। আটকদের গাংনী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল জানান, বিএসএফ ১৪ বাংলাদেশিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে সীমান্তের বিভিন্ন স্থান দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকেছিল। পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে তাদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ নিরপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সম্প্রতি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগুনের ঘটনার পর সরকারের উচ্চ মহল থেকে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কৌশলগত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ ও আশপাশের এলাকাকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়মিত নিরাপত্তা কার্যক্রমে বর্তমানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও বন্দর নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে কাজ করছে। বিশেষ করে বন্দরের বৃহত্তম টার্মিনাল নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়ায় সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবচেয়ে কঠোর রাখা হয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বন্দরের অভ্যন্তর ও সংলগ্ন জলসীমায় নৌবাহিনীর টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের প্রধান প্রবেশ ও প্রস্থানপথে এখন চেকপোস্টের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে, যাতে কোনো অননুমোদিত ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে। একইসঙ্গে বন্দরের কেমিক্যাল গুদাম, তেল ট্যাঙ্কার টার্মিনাল এবং আমদানি-রপ্তানি কার্গো জোনগুলোতেও নিরাপত্তা বলয় সম্প্রসারিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউজের গুরুত্ব বিবেচনায় সেখানে নিরাপত্তা সংস্থার একাধিক টিম নিয়োজিত আছে। নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিদিন নিয়মিত ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া বন্দর এলাকার আশপাশে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহের কাজও বাড়ানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম জানান, বন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। প্রতিটি বিভাগে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যাতে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা টিমের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, বন্দর এলাকায় কোনো ধরনের নাশকতা, অগ্নিসংযোগ বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঘটলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। তাই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বন্দরের ভেতরে ও বাইরে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো, নিয়মিত চেকপোস্ট ও টহল টিম গঠন এবং প্রতিটি পণ্যবাহী কনটেইনারের তালিকা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষ নিরাপত্তা প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপন কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি)-এর নেতৃত্বে গঠিত ১৮ সদস্যের এই দলে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, শুল্ক বিভাগ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান, কাস্টম হাউজ কমিশনার, বন্দর ট্রাফিক পরিচালক, বন্দর নিরাপত্তা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তারা। বৈঠকে স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নজরদারিসহ বন্দরের নিরাপত্তা জোরদারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অপরদিকে বন্দর নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে সম্প্রতি বন্দরকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কর্মীরা সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করা, জরুরি সাড়া প্রদান এবং আগুন লাগলে দ্রুত উদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল রপ্ত করছেন।
এ ছাড়া প্রতিটি শিফটে দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়মিত ব্রিফিংয়ের পাশাপাশি বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ মোতায়েন করা হয়েছে, যারা যেকোনো সময় জরুরি পদক্ষেপ নিতে সক্ষম।
শনিবার ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ ভোর ৪ টায় কোস্ট গার্ড আউটপোস্ট নলিয়ান কর্তৃক খুলনার দাকোপ থানাধীন সুন্দরবনের নলিয়ান সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ১০৬ কেজি হরিণের মাংস ও ২০০ মিটার হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ১ জন হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়।
জব্দকৃত হরিণের মাংস, ফাঁদ ও আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
তিন লা ভবন নির্মাণকাজ শেষ করে হস্তান্তরের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। সেখানে নেই কোন আসবাবপত্র ও বিদ্যুৎ–সংযোগ। পর্যাপ্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী বছর থেকে ম্যাটস চালুর সম্ভাবনা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ে (আরএফএসটি) কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এরপর পূর্ণাঙ্গভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদানের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলীতে ম্যাটসের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
কাজটি সম্পন্ন করে ময়মনসিংহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ শেষে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবনটি তৎকালীন জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি কে এম জোবায়ের গালিবকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে একটি একাডেমিক ভবন, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক বাসভবন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, গ্যারেজ ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতলাল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ভবন ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাটস বুঝিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ম্যাটস হস্তান্তরের পর কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। কেউ না থাকায় রাতের বেলায় কয়েক দফায় ম্যাটসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত চালু করা না গেলে অযত্ন আর অবহেলায় প্রতিষ্ঠানটি নষ্ট হয়ে হবে।
বটতলী এলাকার মিনহাজুল মুকিত বলেন, যদি চালুই করতে না পারে, তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করার কোন প্রয়োজন ছিল না।
ম্যাটসের অধ্যক্ষ কে এম জোবায়ের গালিব বলেন, আমাকে গত জানুয়ারিতে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনো অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আসবাব ও বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর প্রতিষ্ঠানটি চালু হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন আল মামুন বলেন, ম্যাটস নির্মাণের পর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে এখন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানামতে, আপাতত ম্যাটসের কার্যক্রম থাকবে না। রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
নওগাঁর ধামইরহাটে গরু বোঝাই ইঞ্জিনচালিত ভটভটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে উল্টে চালক ও গরু ব্যবসায়ীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও চার গরুর ব্যবসায়ী আহত হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বিহারীনগর বাইপাস সড়কের তালঝাড়ি মাঠের পাশে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার আড়ানগর এলাকার ভটভটি চালক মাসুদুর রহমান মওলা (৩৫) ও একই গ্রামর গরু ব্যবসায়ী ভুট্টু (৪০)।
জানা যায়- শনিবার সকালে উপজলার আড়ানগর এলাকা থেকে একটি ভটভটি যোগে গরু নিয়ে পাশের জয়পুরহাট জেলার গরুর হাটে যাচ্ছিলেন কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী। পথে বিহারীনগর-পিড়লডাঙ্গা বাইপাস সড়কের তালঝাড়ী এলাকায় একটি মোটরসাইকেলকে পাশ কাটতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভটভটিটি রাস্তার নিচে খাদে ধান খেতে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ভটভটি চালক মাসুদুর রহমান মওলা মারা যান। খবর পেয়ে ধামইরহাট থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের টিম স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতের উদ্ধার করে ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে নেওয়ার পথে আরও একজন মারা যান। দুর্ঘটনায় চারজন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে সলিম ও নাজিম নামে দুজনের অবস্থাও গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঈমাম জাফর বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত দুই লাখ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতিদিনই শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে বাড়ছে ভোগান্তি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা-আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদে স্থায়ী সেতুর অভাব সবচেয়ে বেশি প্রকট।
বান্দরবান পাহাড়ি জেলা হওয়ায় ঝিরি ও ছোট ছোট খালের সংখ্যা অধিক। শুকনো মৌসুমে চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢল বা হরকা বাণের কারণে এসময় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে চলাচল। এর মধ্যে কয়েকটি স্থানে বাঁশের সাঁকো থাকলেও অধিকাংশে তাও নেই। বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে গিয়ে খাল পারাপারের সময় ঢলের পানিতে তলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়।
এসব এলাকার অসুস্থ রোগী ও প্রসুতি মায়েদের সময়মতো চিকিৎসাসেবা পেতেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।
এছাড়াও অন্তত অর্ধলক্ষ হেক্টর জমির উৎপাদিত ফসল বাজারে পৌঁছাতে গিয়ে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। এতে স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। বারবার সেতু নির্মাণের আবেদন জানানো হলেও এখনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। দ্রুত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করে ভোগান্তি দূর করার জোর দাবি তুলেছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান-লামা সড়ক দিয়ে তিনটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের সহজ যাতায়তের একমাত্র অবলম্বন এটি। অতি বৃষ্টিতে সড়কটির বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন সৃষ্টি হলেও ২২০০ মিটার চেইনেজ এলাকায় বেশ ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মঞ্জয় পাড়া-নাচালং সড়কের ১৪৩৭০ চেইনেজ এলাকা, আলীকদমের ওবাইদুলহাকিম পাড়া সড়কের বাসস্টেন্ড হিন্দু পাড়া এলাকা, কলারঝিড়ি সড়ক, লামার গাইন্ধ্যা-চিন্তাবা পাড়া সড়কের বমু খাল এলাকা, ফাইতং চিউবতলী পোলাও পাড়া খাল এলাকা, নাইক্ষ্যংছড়ি সাপের গাড়া এলাকার কাগজি খোলা খাল এলাকা, কম্বনিয়া পাড়া, মিরঝিরিপাড়া এলাকা, রোয়াংছড়ির ব্যাংছড়ি খাল, থানচি বলিপাড়ার সোনাইছড়ি খান, তিন্দু খাল, রুমার হানারাম পাড়া, রুমার গ্যালেংগা খালসহ বেশ কিছু এলাকায় কোথাও সেতু নেই আবার কোথাও ৩০-৫০ বছরের ছোট আকারের ভাঙা পুরোনো সেতু। যা চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে গেছেন। ভাঙা সেতু দিয়ে কোন রকমে কিছু এলাকার মানুষ পারাপার হতে পারলেও সাপেরগাড়া, চিন্তাবা পাড়া, ব্যংছড়িসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ঝিরি বা খাল পার হয় পায়ে হেঁটে।
এছাড়া বর্ষা মৌসুমে স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি পন্য পরিবহনসহ শিক্ষা গ্রহনও ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
সাপের গাড়া এলাকার বাসিন্দা জেবুল হক ও জসীম উদ্দীন বলেন, সাপের গাড়া- কাগজিখোলা এলাকায় অন্তত ২৫-৩০ হাজার লোকের বসবাস। গত ২০ বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস গড়ে উঠলেও একটি সেতুর অভাবে বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়ত স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি পণ্য পরিবহনসহ ব্যাহত হয় স্থানীয় ব্যাবসা বাণিজ্য।
এছাড়া বর্ষাকালে স্কুলে যেতে গিয়ে ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে কয়েক জন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ফলে এই এলাকায় অতি দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।
গজালিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মারমা বলেন, চিন্তাবর, বাইশফারি, ঢেকিছড়া, তুলাতলি, বটতলি, হামায় চর পাড়া এলাকায় ৮-৯ হাজার মানুষের বসবাস।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, বমু খালের উপর একটি সেতুর অভাবে কয়েক দশক ধরে যাতায়াতে প্রতিনিয়িত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে এ এলাকার মানুষদের। বিশেষ করে এই এলাকায় স্কুল, কলেজ থাকলেও বর্ষা মৌসুমে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারে না, খালের পানিতে প্রবল স্রোতের কারনে। এছাড়াও অন্যান্য অসুবিধাতো আছেই। ফলে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অতিদ্রুত সেতুটি নিমার্ণে জোড় দাবি জানান সাবেক চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মারমা।
এ নিয়ে বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর বলেন, জেলার ৭টি উপজেলায় জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা স্বাপেক্ষে অতি প্রয়োজনীয় আন্ডার হানড্রেড মিটারের ৪১টি সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন স্বপেক্ষে সেতু গুলো নির্মাণ কাজ চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে “রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ৩১ দফা” বিষয়ে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন আয়োজিত মেধাবৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিক্ষকদের এমন সাপোর্ট দেওয়া হবে যাতে তারা পাঠদানে পুরো মনোযোগ দিতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে নিজের যত্ন নেওয়া এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের শিক্ষা।”
তারেক রহমান জানান, ভবিষ্যতে মেধাবীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং শিক্ষকদের মর্যাদা ও প্রণোদনা বাড়ানো হবে।
তারেক রহমান বলেন, “বিগত ১৫ বছরে প্রচুর অর্থবিত্ত পাচার হয়ে গেছে। পানির অপর নাম জীবন তাই খালগুলো পুনঃখনন ও পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে যে খাল খনন কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তা পুনরায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে পানির সংকট ও আর্সেনিক সমস্যা সমাধানের পথ উন্মুক্ত হবে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “মেধাবীদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আগামীর নেতৃত্ব। তরুণরা যেন বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করতে পারে ভাষা শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রে স্কুল থেকেই দক্ষতা গড়ে তোলা হবে।”
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, কোনো মেধাবী যেন আর ঝরে না পড়ে, সে লক্ষ্যে সরকার গঠন করলে শিক্ষাব্যবস্থায় যুগান্তকারী সংস্কার আনা হবে।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপি'র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ।
প্রধান অতিথি তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানস্থল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা সরাসরি বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তর দেন।
উল্লেখ্য যে, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার ওপর গত ১৬ আগস্ট ১০ হাজারের ওপর শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হয়। পুরস্কার দেওয়া হয় ৬০ জনকে। এরমধ্যে প্রথম পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা এবং চতুর্থ পুরস্কার ৫ হাজার টাকা।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তিনটি স্কুলকে এক লাখ করে তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়।
অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত নির্মাণ কর্মকাণ্ড, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও জলাশয় ভরাট, বর্জ্য অব্যবস্থাপনা এবং ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে রাজশাহী শহরে বসবাসরত প্রায় দশ লাখ মানুষ। এক সময়ের বাংলাদেশের ‘সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরী’ হিসেবে পরিচিত রাজশাহী এখন অন্যতম দূষণের নগরী। ২০১৬ সালে নির্মল বায়ুর জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া এই শহরটি সাম্প্রতিক সময়ে বায়ু দূষণে রাজধানী শহর ঢাকাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা বায়ুর গুণমান সূচক (একিউআই) ৫০ এর সীমা পর্যন্ত সাধারণত নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়। তবে একিউআই এর মান ১০০ অতিক্রম করলে, বায়ু ক্রমশ ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে থাকে। একিউআই এর মান ২০০ অতিক্রম হলে সেই বায়ুকে অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০০ এর ওপরে হলে বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হয়। এমতাবস্থায় জনসাধারণকে ঘরের বাইরে অবস্থানকালে মাস্ক পরিধান করা এবং সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে অবস্থান না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়। এর প্রধান কারণগুলো হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি।
আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা জিরো কার্বন এনালাইটিক্স-এর সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, বায়ু দূষণের কারণে গত ২০২১ সালে বাংলাদেশে ১৯ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।
সংগৃহীত এক তথ্য দেখা গেছে, রাজশাহী শহরের বায়ুর মান নিয়মিতভাবে ২০০ এর সীমা অতিক্রান্ত করছে। এমনকি কোনো কোনো সময় বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে তা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে।
পর্যালোচনা অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২৪ সালে রাজশাহী নগরীর একিউআই এর মান ৩০০ এর সীমা ছাড়িয়েছিল তিন দিন। তখন সর্বোচ্চ একিউআই এর মান রেকর্ড করা হয়েছিল ৩১৭ এবং ২০০ এর ওপর ছিল ৪৮ দিন।
তবে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই নগরীর একিউআই এর মান ৩০০ এর সীমা ছাড়িয়েছে ৭ দিন। আর জানুয়ারিতে রাজশাহী শহরের একিউআই এর মান টানা তিন দিন ৩০০ এর সীমা ছাড়িয়েছে। আর ২০০ ছাড়িয়েছে ১৮ দিন। এ সময় সর্বোচ্চ একিউআই এর মান রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯৪।
তুলনামূলকভাবে, জানুয়ারি মাসে ঢাকায় একিউআই এর মান ৩০০ এর ওপর রেকর্ড করা হয়েছিল মাত্র একদিন যা সর্বোচ্চ ৩৬৭ এর সীমায় পৌঁছেছিল এবং ২৪ দিন ২০০ এর ওপর ছিল।
একইভাবে ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহীতে একিউআই এর মান তিন দিন ৩০০ এর ওপর এবং ১৮ দিন ২০০ এর ওপর ছিল। যেখানে ঢাকা ৩০০ এর সীমা অতিক্রম করেছিল মাত্র একবার।
গবেষকদের মতে, বায়ু দূষণের বেশ কয়েকটি নিয়ামকের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর হচ্ছে ফাইন পার্টিকুলার ম্যাটার বা সংক্ষেপে পিএম ২.৫। পিএম ২.৫ হচ্ছে বাতাসে মিশে থাকা অতি সুক্ষ্ম কণা যার ব্যাস মানুষের মাথার চুলের ব্যাসের প্রায় ৩০ ভাগের এক ভাগ। গাড়ি, কল-কারখানার ধোঁয়া, ইটভাটা, নির্মাণকাজ, কৃষিকাজে পোড়ানো ধুলা ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন এই কণা এতটাই ছোট যে মানুষের ফুসফুস ও রক্ত প্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনো শহর বা এলাকার বাতাসে পিএম২.৫ এর পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে ২৪ ঘণ্টার গড় মাত্রা সর্বোচ্চ ১৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হয়, তবে সেটি এরইমধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ধরা হয়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রাজশাহীর বাতাসে পিএম ২.৫ এর পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে সর্বোচ্চ ৪৪৮.৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছিল, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা এর চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ বেশি।
একই সময়ে রাজশাহীর বাতাসে তুলনামূলকভাবে একটু বড় কণিকা পিএম ১০ এর সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৪০৩.৪ মাইক্রোগ্রাম। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাতাসে এর ২৪ ঘণ্টার গড় পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে সর্বোচ্চ ৪৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তাররা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দূষণের কারণে হাঁপানি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শ্বাসযন্ত্রের রোগের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক আহমদ জয়নুদ্দীন সানি বলেন, দূষণের কারণে শিশু ও বয়স্করা এসব রোগে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে।
স্থানীয়রা জেলা প্রশাসন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে একটি পাবলিক অ্যালার্ট সিস্টেম চালু করারও আহ্বান জানান, যাতে বায়ু দূষণ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছালে তারা যেন শহরের বাসিন্দাদেরকে সতর্ক করতে পারেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্মাণ কার্যক্রম এবং সবুজায়ন কমে যাওয়ার রাজশাহী শহরে বাতাসের মান খারাপ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি এবং নির্দেশনা জারি করছি। কিন্তু একটি জাতি হিসেবে আমরা নিয়ম মানি না, যে কারণে সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে।
নড়াইল-মাগুরা পাশাপাশি দুটি জেলা । গ্রামীণ সড়ক পথে দুটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে ২০ বছর আগে নড়াইল অংশের লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ঝামারঘোপ খালের ওপর একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের দুইটি ও লাহুড়িয়া ইউনিয়নের তিনটি এবং মাগুরার মোহম্মদপুর উপজেলার ২টি গ্রাম মোট সাতটি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে আসছে। ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, মুমূর্ষু রোগীসহ সাধারণ মানুষ এ পথ দিয়ে চলাচল করে থাকে।
এলাকার মানুষ জানায়, দুই বছর আগে নির্মিত কালভার্টের উপরিভাগের বেশ কিছু অংশ ভেঙে যায় । সংস্কার না করায় তার ওপর দিয়ে সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে যেতে ঘুরপথে নিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা শহর থেকে লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ঝামারঘোপ এলাকার দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। কালভার্টের পাটাতনের উপরিভাগের একাংশ ভেঙে পড়ায় ভেতরের লোহার রড বেরিয়ে গেছে । এলাকার মানুষ তার ওপর কাঠের তকতা দিয়ে কোন রকম চলাচলের ব্যবস্থা করলেও ঝুঁকি রয়েছে। দিনের বেলায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করছে। মাঝে মধ্যে দুই একটা ইজিবাইক চলাচল করেছে। তবে সন্ধ্যার পরে ওই সড়কে কোনো কিছুই চলাচল করতে সাহস পায় না।
স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর নড়াইল কার্যালয় সূত্র জানায়, বক্স কালভার্ট সংস্কারে সম্প্রতি প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া গেছে । খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করা যাবে ।
ঝামারঘোপ গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন,সন্ধ্যার পর এই সড়ক দিয়ে কিছুই চলে না। ফলে দূর-দূরান্তের স্বজনরা খুব একটা আসতে চায় না।
লাহুড়িয়া গ্রামের সৈয়দ সরোয়ার হোসেন বলেন, ৮৫টি পাড়া নিয়েই লাহুড়িয়া ইউনিয়ন গঠিত। এক একটি পাড়া একটি গ্রামের সমান। রাস্তায় চলাচলে ঝুকি থাকায় এই ইউনিয়নের অনেক পাড়ার আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসতে চায় না।
স্থানীয় স্কুল ছাত্রী রোকসানা জানায় এর ওপর দিয়ে হাঁটতে গেলে বুক কেপে ওঠে। বের হয়ে থাকা লোহার রডগুলো দেখলে থমকে দাঁড়াই। তখন মনে হয় পরে যাব।
স্থানীয় ঠিকাদার প্রিন্স জানান, কালভার্ট মেরামতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার যোগাযোগ করা হলেও কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, রাতের পর ওই সড়ক দিয়ে কোনো কিছুই চলাচল করে না। মুমূর্ষ রোগীদের ঘুরপথে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারগুলো উন্নত চিকিৎসা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার ইকরামুল কবির বলেন, মানুষের চলাচলের জন্য অনেক আগে ঝামারঘোপ খালের ওপর একটি সাধারণ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ২০০১ সালের দিকে ওই কালভার্টকে বক্স কালভার্টে পরিণত করা হয়। তিনি বলেন, ৩০ মিটার দৈর্ঘের এই বক্স কালভার্টটি মেরামতে অনুমতি পাওয়া গেছে। খুব তাড়াতাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
ভোলার চরফ্যাশনে তিন সন্তান ও দুই মেয়ে থাকার পরও ৯০ উর্ধ্ব বৃদ্ধ মায়ের ঠাঁই মেলল ছেলের গোয়াল ঘরে। সন্তানরা ঘরে ঠাঁই না দেয়ায় বৃদ্ধ মা উলফৎ নেছা আশ্রয় নেন মেঝো ছেলে নিরবের গোয়াল ঘরে। গরু রাখার পাশাপাশি ওই বৃদ্ধ মা গোয়াল ঘরে চটের মেঝেতে বিছনা পেতে কয়েক মাস যাবত দিনযাপন করছেন।
শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডে ছেলের বাড়িতে এমন হৃদয়বিধারক ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ওই ছেলের প্রতি ধিক্কার জানান হাজার হাজার নেটিজেনরা।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় বৃদ্ধ মা উলফৎ নেছা ছেলের গোয়াল করে চটের বিছনায় শুয়ে আছেন। আশেপাশে গরু বেধে রাখা আর অন্য পাশে কাপড়ের প্রাচীর দিয়ে বৃদ্ধ মায়ের আবাসস্থল। এমন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে ছড়িয়ে পড়লে নজরে আসে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের। গতকাল শুক্রবার তিনি ওই বৃদ্ধের বাড়িতে ছুটে গিয়ে বৃদ্ধের ভরণপোষণের সকল দ্বায়িত্বভার নেন। এবং তিনি বৃদ্ধকে তার বড় মেয়ে ফজিলত বেগমের জিম্মায় রেখে আসেন।
স্থানীয় সত্রে জানা যায়, বৃদ্ধ উলফৎ নেছার ঘরে তিন ছেলেও ও দুই মেয়ে। প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী খলিলুর রহমান মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তার স্বামীর ওয়ারিশি পাওনা ঘর ভিটে তিন সন্তান তাদের নামে লিখে নেন। অবশেষে স্বামীর শেষ সম্বল ঘর ভিটে হারিয়ে তার ঠাঁই হয় তিন সন্তান আবদুস সহিদ, মো. নিরব ও মো. বাছেদের ওপর। দিনমুজর সন্তানরা অভাবের সংসারে টানাপড়নে কর্মের সন্ধানে ছুটে যান ঢাকা ও চট্রগ্রামে। পুত্রবধুদের দোটানায় পড়ে সর্বশেষ তার ঠাঁই মেলে মেঝো ছেলে নিরবের ঘরে। বৃদ্ধ মা বিছনায় মলমুত্র ত্যাগ করে এমন অজুহাত দিয়ে ছেলে ও পুত্রবধূ নাহার মিলে তাকে বসত ঘরের পাশে মাটির গোয়াল ঘরের মেঝেতে চটের বিছানায় থাকতে দেন।
পাষন্ড ছেলে নিরব জানান, তিনি পেশায় দিনমুজুর। মা অনেক বৃদ্ধ। তাই সে বিছনায় মলমুত্র ত্যাগ করতেন। গোয়াল ঘরের পাশে থাকতে দেয়া হয়েছে। নিয়মিত তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও খাবার খাওয়ানো হতো।
শশীভূষণ থানার ওসি তারিক হাসান রাসেল জানান, সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখার পরে ওই বৃদ্ধে ছেলেকে থানায় ডেকে এনে তার মাকে ঘরে তোলার জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা সারমিন মিথি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।