রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মনারটেক আমবাগান এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে আরও একজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৬।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতরা অটোরিকশার যাত্রী ও চালক।
নিহতরা হলেন, চট্টগ্রামের রাউজানের কাজীপাড়ার সোয়ার আলীর ছেলে আবু তোরাব (৪৫), রাঙামাটির কাউখালীর তালুকদার পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে নূর নাহার (৪০), রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়ার ডাবুয়া মংশি মারমার মেয়ে মিনু মারমা (৩৫), চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মিরহাটের মাহাবুবুর রহমান বাচ্ছু (৫৫), চট্টগ্রামের রাউজানের মো. জয়নাল আবেদীন (৬৩) ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির মৃত গুলজারের ছেলে ইজাদুল (২৫)। ইজাদুল সিএনজি অটোরিকশার চালক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেতবুনিয়ার মনারটেক এলাকায় রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশা (চট্ট মেট্রো থ ১১-৯১৭৩) ও বিপরীত দিক আসা পিকআপের (চট্ট মেট্রো ন ১১-৬৪৯২) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে অটোরিকশাটি সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে তিনজন ও পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুইজন এবং চট্টগ্রামে মেডিক্যালে একজনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই পিকআপের চালক পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, এটা মর্মান্তিক ঘটনা। ৬ জনের মধ্যে তিনজনকে রাঙামাটির মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল মর্গে এবং একজন রাউজানের জেকে মেমোরিয়াল হাসপাতালে আছে।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পলাতক চালককে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক কৃষকের কলাক্ষেতের ছয় শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে
উপজেলার টোক ইউনিয়নের উলুসারা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় টোকনগর গ্রামের ইউপি মেম্বার শফিকুল ইসলাম কবিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত রুস্তম আলী।
অভিযোগে বলা হয়, ওই কৃষক প্রায় এক যুগ আগে কবির মেম্বারের কাছ থেকে দেড় বিঘা জমি কিনে ভোগদখল করছেন। তিন-চার বছর ধরে জমি অর্ধেক দামে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি রাজি না হওয়ায় বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে জমি দখলের হুমকি দেওয়া হয়।
রুস্তম আলী বলেন, তার ক্ষেতে কলা পাকা শুরু হয়েছিল। দেড় বিঘা জমিতে কলা চাষে তিন লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। গাছগুলো কেটে ফেলায় তিনি এখন বড় বিপদে পড়েছেন।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রব বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার এক নিভৃত পল্লি থেকে নিখোঁজের তিনদিনের মাথায় জরিনা খাতুন (৫০) নামে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলার হরিয়ারঘাট গ্রামের মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত জরিনা খাতুন হরিয়ারঘাট গ্রামের আশির উদ্দিনের স্ত্রী।
পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে জরিনা খাতুন তিন দিন যাবৎ নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার গভীর রাতে পানের বরজ পাহারা দিতে গিয়ে কৃষকরা পচা গন্ধ টের পান। এরপর তারা খোঁজাখুঁজি করে ওই নারীর লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
হরিনাকুণ্ডু থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, ওই নারীর ছেলের বউয়ের সঙ্গে বনিবনা ছিল না। নিখোঁজ থাকলেও জরিনার পরিবার পুলিশকে কিছুই জানায়নি। থানায় জিডিও করেনি। জরিনার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়াল সেতুর নিচ থেকে অজ্ঞাত (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার সকাল ৯টার দিকে বাস র্যাপি ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়াল সেতুর টঙ্গী স্টেশন রোড অংশের নিচে মরদেহটির সন্ধান মিলে।
থানার উপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রবিবার সকালে স্থানীয় লোকজন বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সেতুর ৬৮ নাম্বার পিলারের পাশে ওই যুবকের মরদেহটি দেখতে পায়। পরে পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এই যুবককে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহটি সেতুর নিচে ফেলে গেছে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, যুবকের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নীলকুঠি ভাটপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১টি ওয়ান শুটার (পিস্তল), ৩রাউন্ড গুলি ও ৩টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
শনিবার দিবাগত মধ্যরাত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর গাংনী ক্যাম্পের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করে।
গাংনী সেনাবাহিনী ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অপরাধ চক্রটি পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দূর্বত্তদের ফেলে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী কাঁকন বাহিনীকে ধরতে কুষ্টিয়া, পাবনা, নাটোর ও রাজশাহী চার জেলার দুর্গম বিস্তীর্ণ পদ্মার চরে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় ২১ জনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। পুলিশ এ অভিযানের নাম দিয়েছে অপারেশন ফাস্ট লাইট।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত ভোররাতে এ অভিযান শুরু হয়ে চলবে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত। এতে পুলিশ, র্যাব ও এপিবিএনয়ের ১২শ সদস্য এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত সাড়াশি অভিযানে কাঁকন বাহিনীর ২১ জনকে আটক, ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, অভিযানে ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় কাঁকন বাহিনীর ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গেল ২৭ অক্টোবর চরে কাশের খড় দখলকে কেন্দ্র করে কাকন বাহিনীর গুলিতে বাঘায় আমান ও নাজমুল নিহত হয়। নিহত হন কাঁকন বাহিনীর সদস্য লিটন। এই ঘটনাশ মামলার পরে গত কয়েকদিন আগে কাঁকান বাহিনীর এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাজধানীর টিটিপাড়া আন্ডারপাস শনিবার যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে রাজধানীবাসীর যাতায়াত এখন অনেকটাই সহজ হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. শেখ মঈনুদ্দিন সকালে আন্ডারপাসটি পরিদর্শন করেন এবং তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার নির্দেশ দেন বলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান।
তিনি বলেন, আন্ডারপাসটি এক পাশে আতিশ দীপঙ্কর সড়ক এবং অন্য পাশে কমলাপুর আউটার সার্কুলার রোডকে সংযুক্ত করেছে, যা পূর্বের টিটিপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ের পরিবর্তে নির্মিত হয়েছে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘লেভেল ক্রসিংটি আন্ডারপাসে রূপান্তর করা হয়েছে, যেন ট্রেন ও সড়ক যানবাহন উভয়ের চলাচল নির্বিঘ্ন হয়।’
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত এ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হতে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে। নির্মাণকাজ চলাকালীন পথটি বন্ধ থাকায় অফিসগামী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
নতুনভাবে উদ্বোধন করা আন্ডারপাসটি প্রধান সড়কের নিচে প্রায় ১১ মিটার গভীরে অবস্থিত। এটি প্রায় ৩৫০ মিটার দীর্ঘ ও ৩৫ মিটার প্রশস্ত। এতে মোট ছয়টি লেন রয়েছে। এর মধ্যে চারটি মোটরযানের জন্য নির্ধারিত, যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচ মিটার উচ্চতার যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
এতে উভয় পাশে রিকশা ও সাইকেলের জন্য পৃথক লেন এবং পথচারীদের জন্য প্রশস্ত ফুটপাত রাখা হয়েছে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ‘এই অবকাঠামোর মাধ্যমে এখন ট্রেন ওপরে চলবে আর অন্যান্য যানবাহন নিচ দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে।’
তিনি আরও জানান, শুধু কার্যকারিতাই নয়, নান্দনিকতার দিকটি বিবেচনায় রেখেও আন্ডারপাসটি নির্মাণ করা হয়েছে।
আফজাল হোসেন বলেন, ‘সড়কে দাগ চিহ্ন, মাঝখানে ফুলগাছের সারি ও উভয় পাশে ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন এর সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে।’
বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা রোধে, আন্ডারপাসটিতে আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও আলাদা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন কূপ স্থাপন করা হয়েছে।
রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, আন্ডারপাসের সব বৃষ্টির পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কূপে প্রবাহিত হবে, যেখানে চারটি ৭৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প বসানো হয়েছে যাতে পানি নিষ্কাশন নির্বিঘ্ন থাকে। তিনি আরও বলেন, টিটিপাড়া আন্ডারপাস নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কলম বিসর্জন কর্মসূচির অংশ নিয়েছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের উদ্দেশে ‘পদযাত্রা’ শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রাথমিক শিক্ষকরা এ পদযাত্রায় যোগ দেন। তবে পুলিশ বাধায় পণ্ড হয়ে যায় তাদের পদযাত্রা।
শনিবার রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের পদযাত্রায় লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান দিয়ে পুলিশ বাধা দেয়। তাতে শতাধিক শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষকেরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, শিক্ষকেরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোতে চাইলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সদস্যরা পদক্ষেপ নেন।
এর আগে গত অক্টোবর মাসে এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা দাবি আদায়ে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তখন তাদের পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলনে নেমেছেন তিন দফা দাবিতে। দাবিগুলো হলো—সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে দেওয়া, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
সারাদেশ থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক ঢাকায় এসে আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। বিকেলে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।
শিক্ষকেরা জানান, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ চত্বর অভিমুখে পদযাত্রা ও প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের জন্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে কলম সমর্পণের কর্মসূচি ছিল তাদের। গণগ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দিলে তারা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। পুলিশ প্রথমে কাদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর লাঠিপেটার পাশাপাশি জলকামান ব্যবহার করে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ তাৎক্ষণিকভাবে বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক রক্তাক্ত হয়েছেন। দুজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।’
পুলিশের হামলায় আহত হয়ে শতাধিক শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীরা জানান। আহতদের মধ্যে নারী শিক্ষকেরাও রয়েছেন।
শিক্ষকদের বাধা দেওয়ার ব্যাখ্যায় পুলিশ বলেছে, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও সংলগ্ন এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও আন্দোলনকারীরা তা উপেক্ষা করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোন ডিসি মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষকরা মাইকে শহীদ মিনারে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন, তবে কিছু শিক্ষক ‘ব্যারিকেডের প্রথম লেয়ার ভেঙে ফেলে এবং পরের লেয়ারে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে’ পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কর’।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ওনাদের নেতৃত্বে যারা ছিল তাদের সাথে কথা বলে আমরা বিষয়টা সমাধান করে ফেলেছিলাম। সেটেলড একটা ইস্যু কয়েকজন মিলে কেন এমন করলো সেটা নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আবার কথা বলবো।’
এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাসে শিক্ষক, পুলিশ, রিকশাচালকসহ আহত অন্তত ১১০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেলের পর থেকে আহতরা একে একে হাসপাতালে আসেন। তাদেরকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক। তিনি জানান, বিকেলের পর থেকে তাদেরকে হাসপাতালে আনা হয়। সবাইকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি আরও জানান, আহতদের অধিকাংশই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। বাকিরা এখনো চিকিৎসাধীন।
এদিকে বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রোববার থেকে তাদের এ কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়ন ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান করবেন তারা। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে এ ঘোষণা দেন তারা।
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নিত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকরা। পরে শনিবার থেকে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।
পরিচালক রাজ নিদিমরু, অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। এ দিক-সে দিক প্রায়ই তাদের দেখা যায়। কিন্তু কোমর জড়িয়ে চিত্র সাংবাদিকদের সামনে বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়াতেই যে নতুন গুঞ্জন শুরু! খবর, সমান্থা নাকি ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে বার্তাও দিয়েছেন। খবর আনন্দবাজার।
কী সেই বার্তা? অভিনেত্রী নাকি জানিয়েছেন, তিনি কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। তার মধ্যে অন্যতম তার অভিনয় জীবন। বাকি সাহসী পদক্ষেপ কী? সামান্থা খোলসা করেননি। কিন্তু তার অনুরাগীরা যে দু’য়ে দু’য়ে চার করে ফেলেছেন। তাদের ভাবনায়, ‘ফ্যামিলি ম্যান’ পরিচালকের সঙ্গে তাদের প্রিয় অভিনেত্রী ‘ফ্যামিলি’ গড়ার সিদ্ধান্তও নাকি নিয়ে ফেলেছেন! তারই ইঙ্গিত তার বার্তায় এবং ঘনিষ্ঠ ‘পোজ’-এ।
এ দিকে রাজ-সামান্থার মুখোমুখি হওয়ার কারণও প্রকাশ্যে। খবর, পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে, প্রিয়জন, পরিজন, বন্ধু— সবাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারাও এক হয়েছিলেন। এ রকম ঘরোয়া অনুষ্ঠানে চর্চিত যুগলের উপস্থিতি স্বাভাবিক ভাবেই নতুন গুঞ্জনের কারণ। পারিবারিক অনুষ্ঠানে জোটে যোগদান মানেই যেন পারিবারিক স্বীকৃতি— এমনও মনে করছেন অনেকে!
সমান্থা-রাজকে নিয়ে গুঞ্জন যদিও আজকের নয়। ২০২৩ থেকে তারা চর্চায়। দু’জনে ইতিমধ্যেই ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ এবং ‘সিটাডেল: হানি বানি’-তে একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেটে তাদের ঘন ঘন একসঙ্গে উপস্থিতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ভক্তদের।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সংবর্ধনা হয়েছে।
শনিবার দুপুর দু'টায় দিনাজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যালি, পতাকা উত্তোলন এবং আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দিনাজপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোকসেদ আলী মঙ্গলীয়ার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নঈম জাহাঙ্গীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহমেদ।
এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুদ আলী সরকার, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির গর্ব। তাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নঈম জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই— যাতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ চিরজীবী থাকে। বিগত সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেই বিভেদ ভুলে গিয়ে, এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
এর আগে, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দদের অংশগ্রহণে এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ করা হয়।
মানিকগঞ্জের ইছামতি নদী থেকে একটি কুমির উদ্ধার করেছেন এলাকাবাসী। ওই নদীতে প্রায় এক মাস ধরে আতঙ্কের নাম ছিল কুমিরটি। সেই কুমিরই অবশেষে ধরা পড়েছে স্থানীয়দের তৈরি ফাঁদে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন যুবক সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ১০ ফুট লম্বা কুমিরটিকে আটক করতে সক্ষম হন। শনিবার বন বিভাগের পক্ষ থেকে ওই কুমিরটিকে উদ্ধার করে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হরিরামপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, হরিরামপুর উপজেলার ধুলসুরা ও হারুকান্দি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম এবং সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের ইছামতি নদীতে কুমিরটি কয়েকবার দেখা গিয়েছিল। গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় যুবকরা মানিকগঞ্জ সেটি চৌকিঘাটা এলাকা থেকে আটক করে। শনিবার ঢাকার বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে ওই কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় এক মাস ধরে কুমিরটি নদীপাড়ের মানুষের মনে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথমে হরিরামপুর উপজেলার বোয়ালী, আইলকুন্ডি, খামারহাটি ও হারুকান্দি ইউনিয়নের তন্ত্রখোলা এলাকায় কুমিরটির দেখা মেলে। পরে সেটি পদ্মার স্রোতে ভেসে সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চরবংখুড়ি ও চৌকিঘাটা এলাকায় চলে আসে। গত কয়েক সপ্তাহে তারা একাধিকবার কুমিরটিকে পানির ওপর ভেসে উঠতে দেখেছেন। এতে আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ নদীতে গোসল, মাছ ধরা ও নৌকা চালানো বন্ধ করে দেন। মানুষের কোনো ক্ষতি করতে না পারলেও ওই কুমিরটির পেটে গেছে স্থানীয়দের অনেক হাঁস।
সদর উপজেলার চরবংখুড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, ‘আমরা নদীতে নামতে ভয় পেতাম।
সকালে বা বিকেলে কেউ মাছ ধরতে যেত না। শুনেছি, বড় একটা কুমির ঘুরে বেড়ায় তাই সবাই আতঙ্কে ছিলাম। এখন কুমিরটি ধরা পড়েছে তার পরও ভয় লাগছে নদীতে নামতে।
হরিরামপুরে আইলকন্ডি গ্রামের বাসিন্দা রহিমা খাতুন জানান, ওই কুমিরটি তাদের ৬টি হাঁস খেয়ে ফেলেছে। এছাড়া তাদের এলাকায় অনেকের হাঁস খেয়েছে।
কুমিরটি ধরা পড়ার পর এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তির নিশ্বাস ফেরে। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। কেউ মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন, কেউ আবার সেলফি তোলার চেষ্টা করেন।
কুমির ধরার কাজে অংশ নেওয়া স্থানীয় যুবক রাহাত, অন্তর, রাকিব, আল আমিন, সুরুজ ও শাহিন জানান, তারা দীর্ঘদিন কুমিরটির গতিবিধি লক্ষ্য রাখছিলেন। কুমিরটা কোথায় থাকে, ‘কখন ভেসে ওঠে এসব পর্যবেক্ষণ করা হয়। গত শুক্রবার সকালে আবার দেখতে পাই। তারপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌকিঘাটা এলাকায় পানির ওপর ভেসে উঠলে আমরা দড়ির ফাঁদ পেতে দুই দফা চেষ্টা করে সেটিকে ধরতে সক্ষম হই।’ এর পর কুমিরটি মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। সারারাত কুমিরটিকে ঘিরে লোকজনের উপস্থিতি ছিল। শনিবার দুপুরে বন বিভাগের লোকজন কুমিরটিকে নিয়ে গেছেন।
ঢাকা বন বিভাগের বন্যপ্রানী ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা রথীন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মানিকগঞ্জে মিঠাপানিতে কুমির আটকের খবর পাওয়ার পর বন বিভাগের একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল থেকে শনিবার দুপুরে কুমিরটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। কুমিরটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে গাজীপুর সাফারি পার্কে কুমিরকে অমুক্ত করা হবে।
কুমিল্লায় জননিরাপত্তা বিঘ্ন, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সদস্য। শনিবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার জানান, বিদেশে পলাতক ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের কয়েকজন নেতা তাদের নিজ এলাকায় অর্থ পাঠিয়ে সরকার পতনের জন্য ঝটিকা মিছিলসহ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করাচ্ছে। এই নিষিদ্ধ সংগঠনের অর্থায়নে গত শুক্রবার ১ মিনিটের এই মিছিলে কুমিল্লার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে টাকার বিনিময়ে লোক সংগ্রহ এবং গাড়ি ভাড়া করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায় ঝটিকা মিছিল বের করে। সংক্ষিপ্ত সময়ের এই মিছিলের অধিকাংশ সদস্য নিজেকে গোপন করতে রুমাল ও মাস্ক দিয়ে মুখ ঢাকেন। আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানি দিয়ে আত্মগোপনে থাকা কেউ কেউ মিছিল করতে ইন্ধন দিচ্ছে।
গ্রেপ্তারকৃত কয়েকজন হলেন- দাউদকান্দি উপজেলা শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহাগ মিয়া (৪০), আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুকবিল হোসেন (৫৮), কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের কোতোয়ালি থানা উপদেষ্টা পাপন লাল (৫৫), বুড়িচং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর নুর তুষার (২৮), কুমিল্লা উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শের এ আলম।
কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আবদুল্লাহ জানান, তাদের বিরুদ্ধে পুরোনো মামলা রয়েছে। নতুন মামলা হবে। মামলা শেষে আদালতে তোলা হবে।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি)’র গৌরবোজ্জ্বল ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
শনিবার সকাল ১১ টার দিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সৈয়দপুর শহরের গেট বাজারস্হ আইডিইবির সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে আলোচনা সভা হয়।
আইডিইবির সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার সভাপতি প্রকৌশলী মো. মোনায়মুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলামের এর সঞ্চালনায়, এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহদি ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি ও নীলফামারীর-০৪ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আলহাজ অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার, সৈয়দপুর পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. শরিফুদ্দিন খান, জেলা আইডিইবির উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো. আজিজুল ইসলাম, সহ সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম।
সভায় বক্তারা বলেন, এই সংগঠন আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে। সেজন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আমাদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আলোচনা সভার পরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইডিইবির সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার দপ্তর ও গ্রন্থাগার সম্পাদক প্রকৌশলী হোসাইন মোহাম্মদ আরমান, আইসিটি সম্পাদক প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য প্রকৌশলী মো. আরিফুল, প্রকৌশলী মো. রুবেল।
শীতের আগমনের বার্তা নিয়ে কেশবপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। উপজেলার প্রতাপপুর, মোমিনপুর, মঙ্গলকোট হাসানপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের গাছিরা এখন খেজুর গাছ ছাঁটাই ও চাচ দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেশবপুরের মানুষ বছরের এই সময়টির অপেক্ষায় থাকে সারাবছর। কারণ শীত মানেই খেজুরের রস, গুড়-পাটালি আর পিঠা-পায়েসের উৎসব। স্থানীয়দের মুখে শোনা যায়- ‘যশোরের যশ, খেজুরের রস’-এই প্রবাদটি এখনো জীবন্ত হয়ে ওঠে শীতের সকালে। স্থানীয় গাছি আব্দুল গফুর জানান, প্রথমে ধারালো দা দিয়ে গাছের মাথা ছাঁটাই করা হয়, যাকে তারা ‘ডেগো ছাটাই’ বলে। এক সপ্তাহ পর গাছের সোনালি অংশ বের করে দেওয়া হয়, যেটিকে ‘চাচ দেওয়া’ বলা হয়। এরপর বাঁশের তৈরি নলি বসিয়ে মাটির ভাড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয় রস সংগ্রহের জন্য। তিনি বলেন, ‘ভোরের কুয়াশা আর ঠান্ডা হাওয়া জানিয়ে দেয় রসের সময় এসে গেছে। এখন প্রতিদিন সকালেই আমরা গাছের নিচে ভাড় নামাতে যাই রসের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। রস সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নতুন ধানের চাউল দিয়ে গুড়া তৈরি ও রসের পিঠা বানানোর আয়োজন। খেজুরের রস থেকে তৈরি হয় দানা গুড়, পাটালি গুড় ও তরল গুড়- যার সুনাম কেশবপুর ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রমজান আলী জানান, প্রতিবছর শীতের শুরুতেই কেশবপুরের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এখন অনেকে অনলাইনে অর্ডার দিচ্ছেন বিদেশেও পাঠানোর জন্য ‘
কেশবপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। প্রতি বছর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে নতুন খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে এবং চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন খেজুর গাছ অন্যান্য গাছের মতো সার বা কীটনাশক ছাড়াই বড় হয়। এটি কৃষকদের অতিরিক্ত আয় দেয় এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে স্থানীয়রা জানান, ইটভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানো এবং অপরিকল্পিত কাটা বন্ধ না করলে এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
প্রবীণ গাছি আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের দাদা-পরদাদারা খেজুর রসের গুড় বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এখন রসের চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু গাছ কমে যাচ্ছে। গাছ না বাঁচালে ঐতিহ্যও বাঁচবে না।
কেশবপুরের খেজুর রস শুধু খাদ্য নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, যা এই অঞ্চলের সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম বাংলার প্রতিটি প্রভাতে যখন ভাড় থেকে রস ঝরবে, তখন আবারও জীবন্ত হয়ে উঠবে সেই পুরনো চিত্র খেজুর গাছের নিচে রস বিক্রির ভিড়, গুড়ের গন্ধে ভরে থাকে কেশবপুরের গ্রামগুলো।