সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
১৪ পৌষ ১৪৩২

মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ইউএনবি
প্রকাশিত
ইউএনবি
প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১৫:০৩

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে ওবাইদুর রহমান (৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার মধুপুর নামক স্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে ভারতের পুলিশ।

নিহত ওবাইদুর মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানেফ মন্ডলের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, গতরাতে মহেশপুর উপজেলার গোপালপর গ্রামে ৭ থেকে ৮ জন লোক অবৈধভাবে ভারতে যায়। রাত দেড়টার দিকে তারা বিএসএসএফের সামনে পড়ে। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন তারা পালিয়ে আবারো বাংলাদেশের ভিতরে চলে আসে। কিন্তু ওবাইদুর রহমানসহ দু’জন আসতে পারেনি। ওবাইদুর রহমানকে বিএসএফ ধরে ফেলে। বিএসএফ তাকে বস্তায় জড়িয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে গুলি করে হত্যা করে।

সকালে ভারতের অভ্যন্তরে মধুপুর নামক স্থানে একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। ওই লাশটি ওবাইদুর রহমানের হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। লাশটি ভারতের বাগদা থানার পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। আরেকজনের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ওমর আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি ওবাইদুরের বাড়িতে যান। বাড়িতে সবাই কান্নাকাটি করছেন। তিনি জানান, রাত ১টার দিকে ওপারে গোলগুলির শব্দ শুনেছে গ্রামবাসী। এতে ধারণা করা হচ্ছে ওবাইদুরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

যাদবপুর ইউনিয়নের মেম্বর বাবুল হোসেন জানান, তিনিও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির সংবাদ শুনেছেন। এ ঘটনার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে গোপালপুর গ্রামের ওবাইদুর নিখোঁজ রয়েছেন। ওপারে পড়ে থাকা লাশটি ওবাইদুরের হতে পারে।

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা জানান, ভারতের অভ্যন্তরে একজনের লাশ পড়ে আছে বলে আমি বিজিবির মাধ্যমে জানতে পেরেছি।

বিজিবির যাদবপুর বিওপির কমান্ডার হাবিলদার মফিজুল ইসলাম জানান, লোকমুখে তিনি এমন খবর পেয়ে সীমান্তে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তবে এখনো কোনো পরিবার তাদের দপ্তরে অভিযোগ করেনি।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম জানান, রবিবার সাকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ভারতের মধুপর বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ফোন করে তাকে জানিয়েছে, ভারতের সীমানার মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। সেটা বাংলাদেশি না ভারতীয় বোঝা যাচ্ছে না। ভারতের বাগদা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তে গত ৮ এপ্রিল ওয়াসিম নামে এক বাংলাদেশি যুবককে হত্যা করে ইছামিত নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। ১৯ দিন পার হলেও তার লাশ এখনো বিএসএফ ফেরৎ দেয়নি। নিহত ওয়াসিম বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।

ওয়াসিমের ভাই মেহেদী হাসান দাবি করেন, গত ৮ এপ্রিল ওয়াসিমসহ কয়েকজন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যায়। ভারত থেকে ফেরার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের ধাওয়া করলে মহেশপুরের সলেমানপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান, কাঞ্চনপুর গ্রামের রাজু, শাাবুদ্দিন, মানিক ও বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ ফিরে আসলেও তার ভাই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে। তাকে নির্যাতনে হত্যার পর লাশ ইছামতি নদীতে ফেলে দেয়। বিজিবি লাশ ফেরৎ চাইলেও ভিসা ও আইনি জটিলতার কারণে ১৯ দিনেও লাশ ফেরৎ পায়নি পরিবার।

ভারতীয় পুলিশ বিজিবিকে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে লাশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিন্তু ভারতে গিয়ে লাশ শনাক্ত করার সক্ষমতা ওয়াসিমের পরিবারের নেই বলে জানা গেছে।


টানা শৈত্যপ্রবাহে এবার উপকূলীয় শুঁটকি পল্লীতে উৎপাদন ব্যাহত

* বরগুনায় শুঁটকি উৎপাদনে ১২-১৫ হাজার নারী-পুরুষ জড়িত * শুঁটকির প্রধান মৌসুম নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি
বরগুনার উপকূলীয় শুঁটকি পল্লীতে মাছ শুকানোর কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। ছবি : দৈনিক বাংলা।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার উপকূলীয় শুঁটকি পল্লীগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরলেও টানা শৈত্যপ্রবাহ ও দীর্ঘদিন সূর্যের দেখা না মেলায় শুঁটকি উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। তালতলী উপজেলার আশারচর, নিদ্রারচরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে হাজারো জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী মৌসুমের শুরুতেই কাজে নেমেছেন; তবে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।

বরগুনা জেলায় শুঁটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ১২ থেকে ১৫ হাজার নারী-পুরুষ। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার মাসই শুঁটকির প্রধান মৌসুম। সাধারণত তিন থেকে চার দিনের টানা রোদে মাছ ভালোভাবে শুকিয়ে ওঠে। কিন্তু চলতি মৌসুমে একাধিক দফা শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা না মেলায় শুকানোর প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।

মিঠাপানির দেশি মাছের শুঁটকির জন্য পরিচিত আশারচর ও নিদ্রারচরে এ মৌসুমে সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকানোর চেষ্টা করা হলেও রোদ না থাকায় মাছ ঠিকমতো শক্ত হচ্ছে না। এতে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে, পাশাপাশি উৎপাদন খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শুঁটকিপল্লীতে কাজ করা শ্রমিক হালিম মিয়া বলেন, ‘নদীতে মাছ ধরা পড়লেও রোদ না থাকায় ঠিকমতো শুঁটকি করা যাচ্ছে না। অনেক সময় মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৫০টি অস্থায়ী টংঘরে জেলে ও শ্রমিকরা বসবাস করছেন। নারী ও শিশু শ্রমিকরা নদী থেকে আনা কাঁচা মাছ পরিষ্কার করে মাচায় সাজাচ্ছেন। কিন্তু দিনের পর দিন সূর্য না ওঠায় শুকানোর সময় দ্বিগুণেরও বেশি লাগছে।

শুঁটকি ব্যবসায়ী আশরাফ আলী জানান, ‘এ বছর আমরা কোনো রাসায়নিক বা অতিরিক্ত লবণ ছাড়াই শুঁটকি উৎপাদনের চেষ্টা করছি। কিন্তু রোদ না থাকলে ভালো মানের শুঁটকি করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্থায়ী শুকানোর অবকাঠামো থাকলে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হতো।’

ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, এসব পল্লীতে ২৫ থেকে ৩০ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি হয়। বর্তমানে ছুরি মাছের শুঁটকি প্রতি কেজি ৭০০–৮০০ টাকা, রূপচাঁদা ১,০০০–১,৫০০ টাকা এবং লইট্টা ৬০০–১,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

শুঁটকি পল্লীর আরেক বড় সংকট যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রধান সড়ক থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে ট্রাক প্রবেশ করতে পারে না। এতে পরিবহন ব্যয় বাড়ছে এবং ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শুঁটকি ব্যবসায়ী হানিফ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা নিয়মিত রাজস্ব দিচ্ছি, কিন্তু অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন নেই। টানা শীত আর রাস্তাঘাটের সমস্যায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’

নারী শ্রমিকদের দুর্ভোগও কম নয়। দুই যুগ ধরে শুঁটকি পল্লীতে কাজ করা পিয়ারা বেগম বলেন, ‘নারীদের জন্য কোনো স্থায়ী টয়লেট বা স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। শীতের মধ্যে এসব কষ্ট আরও বেড়ে যায়।’

তালতলীর সোনাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরাজি মো. ইউনুছ বলেন, ‘শুঁটকি শিল্প এক সময় এই অঞ্চলের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল। কিন্তু অবকাঠামো সংকট, পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতায় শিল্পটি হুমকির মুখে পড়েছে।’

বরগুনার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘শুঁটকি শিল্প একটি সম্ভাবনাময় খাত। আবহাওয়া জনিত সমস্যা ও অবকাঠামোগত সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘শুঁটকি পল্লীর সমস্যাগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সংশ্লিষ্টদের মতে, টানা শৈত্যপ্রবাহে সূর্যের অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দ্রুত বিকল্প শুকানোর ব্যবস্থা, উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো, শ্রমিকদের মানবিক সুযোগ-সুবিধা এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় রপ্তানির সুযোগ নিশ্চিত না হলে উপকূলের এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প অচিরেই অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।


টেকনাফ লেদা ক্যাম্পে আগুনে সর্বস্ব হারাল রোহিঙ্গারা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৫০টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ কাউছার সিকদার বলেন, ‘গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।’

১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ কাউছার সিকদার আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত- তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ক্যাম্পের বাসিন্দা ছৈয়দ আলম জানান, অগ্নিকাণ্ডে ৫০টির বেশি ঘর পুড়ে গেছে। অসহায় রোহিঙ্গারা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তাদের দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।

আগুন লাগার পর প্রাণ বাঁচাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যান ক্যাম্পের বাসিন্দারা। বসতঘরের সঙ্গে পুড়ে গেছে কাপড়চোপড়, আসবাবপত্র ও খাদ্যসামগ্রী। আগুনে সব হারিয়ে অনেকের পুড়ে যাওয়া ঘরের ভস্মস্তূপে কিছু পাওয়ার আশায় খুঁজতে দেখা গেছে। তবে দাঁড়িয়ে আছে শুধু বসতঘরের পিলারগুলো।

রোহিঙ্গা নারী আলমরজান বলেন, ‘হঠাৎ ঘরের ছাউনিতে আগুন দেখে দিশাহারা হয়ে পড়ি। আগে পরিবারের লোকজনকে সরিয়ে নেই। এরপর আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভায়।’

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এতে ৫০ থেকে ৬০টি ঘর পুড়ে গেছে।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।


সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় : ধর্ম উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রংপুর প্রতিনিধি

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত রংপুর জেলা কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম ৬ষ্ঠ পর্যায় প্রকল্পের অধীনে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এ কর্মশালা আয়োজন করে।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতা একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের পূর্বশর্ত। সামাজিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের ওপর। এ দেশে নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। সবাইকে নিয়েই আমাদের উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে। এখানে যদি অস্থিরতা কিংবা অসন্তোষ থাকে তাহলে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি সকলের মনকে উদার ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করার অনুরোধ জানান।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী তপন চন্দ্র মজুমদার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) ছাদেক আহমদ, প্রকল্প পরিচালক নিত্য প্রকাশ বিশ্বাস, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসেন ও হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টি পরিতোষ চক্রবর্তী বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।

এ প্রকল্পের অধীনে দেশের ৭,৪০০টি মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৫ হাজার প্রাক-প্রাথমিক, ১ হাজার ৪০০ ধর্মীয় বয়স্ক ও ১ হাজার ধর্মীয় শিশুশিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এ সকল শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতি বছর ২ লাখ ২২ হাজার শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিক ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় রংপুর জেলায় ১৪৯টি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এ প্রকল্প শিক্ষা প্রসারের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি তথা দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

দিনব্যাপী এ কর্মশালায় রংপুর জেলার প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত শিক্ষাকেন্দ্রগুলোর শিক্ষক, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জেলা প্রশাসন, জেলা ও উপজেলা মনিটরিং কমিটির সদস্য, শিক্ষার্থী অভিভাবক, শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে এরূপ মন্দিরের সভাপতি বা সম্পাদক, সনাতন ধর্মীয় প্রতিনিধি, ট্রাস্টি ও সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ করেন।


পিরোজপুর জেলা সরকারি চাকুরীজীবী কল্যাণ পরিষদের শপথ গ্রহণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুর জেলা সরকারি চাকুরীজীবী কল্যাণ পরিষদ (১১–২০ গ্রেড) এর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাইফ মিজান স্মৃতি সভাকক্ষে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

‎অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল কবির। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল কবির।

‎শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সভাপতি মোঃ শামসুদ্দোহা বলেন, নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ সরকারি চাকুরীজীবীদের যৌক্তিক দাবি আদায়, পেশাগত মর্যাদা রক্ষা এবং কল্যাণমূলক কার্যক্রম জোরদারে কাজ করবে। সংগঠনের সকল সদস্যকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

‎সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেন, পরিষদের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও আধুনিক করতে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া হবে। সদস্যদের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার অঙ্গীকার করেন তিনি। পাশাপাশি সকল সদস্যের সহযোগিতা কামনা করেন।


জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতায় গভীর সংকটে এনসিপি

*তাসনিম জারা, তাজনূভা জাবীন, মনিরা শারমিন ও আরশাদুল হকের পদত্যাগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে গিয়ে গভীর সংকটে পড়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। পদত্যাগের মিছিলও বড় হচ্ছে। এতে বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দলটিতে। ইতোমধ্যে জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধিতা করে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে ৩০ জন নেতা স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এনসিপি সূত্র জানায়, জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনের বিরোধিতা করে গত শনিবার ৩০ নেতার চিঠি দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জোটের সমর্থনে প্রচারণা শুরু হয়। এরপর থেকেই একের পর এনসিপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইতোমধ্যে দলটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। গতকাল রোববার পদত্যাগ করেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। তাকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল এনসিপি। একইদিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন। রোববার সন্ধ্যায় ফেসবুকে এ ঘোষণা দেন তিনি।
মনিরা শারমিন লিখেছেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষায় গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী একমাত্র মধ্যপন্থি রাজনীতির ভরসাস্থল ছিল। এই দল থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে নওগাঁ ৫ থেকে আমি মনোনীত প্রার্থী। তবে মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জানতাম না, এই দল জামায়াতের সাথে ৩০ সিটের আসন সমঝোতা করবে। আমি জানতাম, ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে একক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ছিল। যেহেতু এখন দলের পজিশন পরিবর্তন হয়েছে, তাই আমি নিজেকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করছি। নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করছি না। আমি এনসিপির স্বতন্ত্র শক্তিতে বিশ্বাসী। দলের প্রতি আমার কমিটমেন্ট আমি ভাঙি নাই। কিন্তু এই মুহূর্তে দলের প্রতি কমিটমেন্ট এর চেয়ে আমার গণ অভ্যুত্থানের প্রতি কমিটমেন্ট ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় দল থেকে সরে দাঁড়ান তাসনিম জারা। তিনি দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ও রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য ছিলেন। এরও আগে বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন দলটিতে জামায়াতবিরোধী অংশের নেতা হিসেবে পরিচিত মীর আরশাদুল হক।

গত বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, তারুণ্যের রাজনীতির কবর রচিত হতে যাচ্ছে। এনসিপি অবশেষে জামায়াতের সঙ্গেই সরাসরি জোট বাঁধছে। সারাদেশে মানুষের, নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জলাঞ্জলি দিয়ে গুটিকয়েক নেতার স্বার্থ হাসিল করতেই এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আর এর মধ্য দিয়ে কার্যত এনসিপি জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এনসিপির শীর্ষ এ নেতা আরও বলেন, যখনই জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোটের ঘোষণা আসবে, সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে পদত্যাগ করব। পদত্যাগ করেই সবার জন্য সব কিছু ওপেনভাবেই বলব। এখন চুপ করে আছি। আমরা শেষ পর্যন্ত আশা করছিলাম পার্টির (এনসিপি) টনক নড়বে। তারা সঠিক পথে ফেরত আসবে। যেদিন জোটের ঘোষণা হবে-সেদিন থেকে মিডিয়াও আমাদের নিয়মিত পাবে।
এ প্রসঙ্গে এনসিপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, জামায়াত-এনসিপি জোট হবে এমনটা দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় ছিল। কিন্তু গত ১ সপ্তাহে দল দুটির মধ্যে আলোচনা-বৈঠক, এক প্রকার দিন-রাতই চলছিল। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়ে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার রাতেই আসন ভাগাভাগির বিষয়টি এক প্রকার চূড়ান্ত হয়।
এদিকে ফেসবুক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ লেখেন, ৩০ আসনে এনসিপি জামায়াতের সঙ্গে জোটে গেলে ব্যাপারটা ‘আত্মঘাতী’ হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গণঅভ্যুত্থানের স্টেকহোল্ডার হিসেবে এনসিপিকে জোটে নিলে জামায়াত কৌশলগতভাবে লাভবান হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এনসিপির ভেতরে আরও বড় বিভাজন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. শামিম রেজা বলেন, ‘জামায়াতের অতীত ভূমিকা নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক আছে, এনসিপিকে সঙ্গে নিয়ে তারা সেটি আড়াল করার চেষ্টা করবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এনসিপি আদর্শিকভাবে কোথায়? তারা যে মধ্যপন্থার দল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল, এমন জোটের পর সেই ভাবমূর্তি বজায় রাখা নিকট ভবিষ্যতে কঠিন হয়ে পড়বে।’
জামায়াতের সঙ্গে জোট এনসিপির জন্য নির্বাচনী কৌশল নাকি রাজনৈতিক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত—সেই প্রশ্নে এখন তোলপাড় চলছে রাজনীতির মাঠে।


নির্বাচনে নাশকতার লক্ষ্যে সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে অস্ত্র

*কলকাতায় পলাতক নেতা ও সন্ত্রাসীরা পাচারের নেপথ্যে কাজ করছে *তাদের নির্দেশনায় সীমান্তজুড়ে সক্রিয় শক্তিশালী সিন্ডিকেট সীমান্তে সক্রিয় কারবারিরা *সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে র‌্যাব, বিজিবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সীমান্ত দিয়ে আসছে অস্ত্র। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থানরত কয়েকজন পলাতক রাজনৈতিক নেতা ও সন্ত্রাসী এই অস্ত্র পাচারচক্রের নেপথ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছে। তাদের নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন সীমান্তে সক্রিয় রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং একাধিক গোয়েন্দা সূত্রের।
সূত্রের খবর, এসব অস্ত্র প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় মজুত করে পরে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। পাচারকাজে সবজি ও ফলের চালান ব্যবহার করা হয়, আর বহনকারীদের বেশিরভাগই কিশোর ও যুবক।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পদ্মা নদী ও রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত ঘিরে গড়ে ওঠা এই অস্ত্র চোরাচালান নেটওয়ার্কের সঙ্গে অতীতে রাজশাহী অঞ্চলের আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার সংশ্লিষ্টতা ছিল। মামলা ও তদন্তের চাপে তারা ভারতে পালিয়ে গেছেন। সেখান থেকেই তারা বাংলাদেশে থাকা অনুসারী ও সহযোগীদের মাধ্যমে অস্ত্র পাচার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পূর্ববর্তী সরকারের সময় স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের ছত্রছায়ায় যারা অস্ত্র কারবারে যুক্ত ছিল, তাদের কেউ দেশে ফিরে সক্রিয় হয়েছে, কেউ বিদেশে থেকেই নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে, আবার কেউ কারাগারে থেকেও সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
সাম্প্রতিক উদ্ধার ও অভিযান: গত শুক্রবার হবিগঞ্জ জেলার সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ওয়াকিটকি সেট ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
‎‎হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (৫৫ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, চোরাচালান ও মাদক পাচার প্রতিরোধ করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব। চোরাচালান একটি জাতীয় সমস্যা। এ অপরাধ দমনে সীমান্তবর্তী জনগণের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে একইদিন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা সীমান্তে বিশেষ অভিযান চালিয়ে একটি ভারতীয় পিস্তল, তাজা গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে বিজিবি।
এ বিষয়ে খেদাছড়া ব্যাটালিয়ন (৪০ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহা. শাহীনূল ইসলাম বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অস্ত্র পাচার ও অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির সদস্যরা সর্বদা সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকা থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে বিজিবি। গত মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার রাঘববাটি এলাকা থেকে ৫৩ বিজিবির মনাকষা বিওপির সদস্যরা এগুলো জব্দ করেন। অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে সন্দেহভাজন অস্ত্রের ব্যাগটি ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করতে পারেনি বিজিবি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সীমান্ত নিরাপত্তা ও চোরাচালান দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এর আগে ১৫ ডিসেম্বর জেলার মনোহরপুর সীমান্ত থেকে বিজিবি চারটি বিদেশি পিস্তল, ৯টি ম্যাগাজিন ও ২৪ রাউন্ড গুলি জব্দ করে। বিজিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৫৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রস্তুত এসব অস্ত্র জব্দ করা হয়।
এর আগে ২৬ অক্টোবর বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে আটটি বিদেশি পিস্তল, ১৬টি ম্যাগাজিন, গুলি, গানপাউডার ও প্লাস্টিক বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, চালানটি ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছিল।
এছাড়া ১৬ আগস্ট রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই মোন্তাসেরুল আলম অনিন্দ্যকে আটক করা হয়। অভিযানে উদ্ধার করা হয় দুটি বিদেশি এয়ারগান, একটি রিভলবার, ছয়টি দেশি অস্ত্র, একটি টেজারগান, চারটি ওয়াকিটকি ও একটি বাইনোকুলার। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাজশাহী ও নওগাঁ এলাকায় সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানে একাধিক বিদেশি ও দেশি অস্ত্র জব্দ এবং সংশ্লিষ্টদের আটক করা হয়েছে।
রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও সীমান্তের আন্তর্জাতিক রুট ব্যবহারের কারণে এই অপরাধচক্র ভাঙা কঠিন হয়ে পড়েছে। অবৈধ অস্ত্রের মজুত আসন্ন নির্বাচনি পরিবেশকে বড় ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, অবৈধ অস্ত্রের মজুত নির্বাচনি পরিবেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। এ জন্য নির্বাহী বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োজন।
বিজিবি রাজশাহী ব্যাটালিয়ন-১-এর পরিচালক লে. কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ যেকোনো অবৈধ সামগ্রী অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি সর্বদা সজাগ রয়েছে। র‌্যাব-৫-এর একটি সূত্র জানায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতার লক্ষ্যে অস্ত্র মজুতের তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছি।


অধিগ্রহণ: ৬ বছরেও মেলেনি ১২৩ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ, বিপাকে ৫০০ জমির মালিক

আপডেটেড ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:২২
রাকিবুল হাসান রোকেল , নিজস্ব প্রতিবেদক, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামটাঘাট সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণ ছয় বছরেও না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ৫০০ জমির মালিক। বসতভিটা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভেঙে দিলেও এখনো তাঁদের প্রাপ্য প্রায় ১২৩ কোটি টাকা পরিশোধ হয়নি।

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী জমির মালিকরা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. রেনু মিয়া, ভুক্তভোগী কবির উদ্দিন ভূইয়া, চামটাঘাট বণিক সমিতির সভাপতি আজহারুল ইসলাম আরজু, মো. নাজমুল মিয়া, মো. জুয়েল মিয়া ও হেলিম মিয়াসহ আরও অনেকে। মানববন্ধনে শত শত ভুক্তভোগী অংশ নেন।

ভুক্তভোগী মো. রেনু মিয়া বলেন, ‘আমার ছয় শতাংশ জমি আর ২০০ ফিটের একটা ঘর গেছে। ছয় বছর হয়ে গেল, এখনো এক টাকাও পাই নাই। রাস্তা ক্লিয়ার করে দিয়েছি। টাকা না দিয়েই রাস্তা করতে চায়।’

চামটাঘাট বণিক সমিতির সভাপতি আজহারুল ইসলাম আরজু বলেন, ‘টাকার আশায় আমরা ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছি। ১৫ শতাংশ জমি গেছে আমার। ৭ ধারা নোটিশ দিয়েছে, কিন্তু টাকা দেয় না।’

আরেক ভুক্তভোগী কবির উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘আমরা ঘরবাড়ি ভেঙে রাস্তা করে দিয়েছি। এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা পাইনি। দ্রুত টাকা পরিশোধ আমাদের দাবি।’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামটাঘাট সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এর আগে ২০১৯ সালে সাকুয়া বাজার থেকে চামটাঘাট পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের উত্তর গণেশপুর, বয়রা, সাকুয়া ও রৌহা মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হয়।

তবে এলএ কেস নম্বর ০৯/২০১৯-২০২০–এর আওতাধীন এসব মৌজার অধিগ্রহণ কার্যক্রম এখনো সম্পন্ন হয়নি। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ৭ ধারা নোটিশ পর্যন্ত এসে থমকে রয়েছে। ফলে ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে জমির মালিকরা অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।

এ অবস্থায় চামটাঘাট বন্দর এলাকার ব্যবসায়ীরা তাঁদের দোকানঘর সংস্কার বা মেরামত করতে পারছেন না। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র ও বহু জেলার যোগাযোগের একমাত্র সড়ক হওয়ায় এখানে প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ। কোথাও রাস্তা সম্প্রসারিত হলেও কোথাও খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা অবস্থা রয়ে গেছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, অধিগ্রহণের একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া রয়েছে। প্রাক্কলন তৈরি করে গত মে মাসে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো অর্থ ছাড় হয়নি। অর্থ পাওয়া গেলে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করা হবে।

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, প্রকল্পের পাঁচটি এলএ মামলার মধ্যে চারটির ক্ষতিপূরণ ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। বাকি একটি মামলার প্রাক্কলিত মূল্য ১২৩ কোটি টাকা। বর্তমানে ডিপিপিতে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে। অতিরিক্ত ৬৩ কোটি টাকার প্রয়োজন হওয়ায় সংশোধিত ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও অর্থ ছাড় পেলেই জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা হবে।


মেঘনা নদীতে চলছে নিষিদ্ধ উপায়ে পাঙ্গাসের পোনা নিধনের মহোৎসব- দেখার কেউ নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভোলা জেলা প্রতিনিধি

মেঘনা নদীতে নিষিদ্ধ জাল ও চাই (ফাঁদ) ব্যবহার করে পাঙ্গাসের পোনা নির্বিচারে শিকার করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ মাছের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে স্থানীয় প্রভাবশালী গোষ্ঠী জড়িত থাকলেও মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনের উদাসীনতা বা নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে, যদিও মাঝে মাঝে অভিযান হলেও তা যথেষ্ট নয় এবং অসাধু জেলেরা প্রভাব খাটিয়ে আবার জাল ফেলছে। ডিসেম্বরের শেষদিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, দৌলতখান, মনপুরাসহ মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নিষিদ্ধ জাল ও ‘চাই’ ব্যবহার করে ব্যাপকহারে পাঙ্গাসের পোনা শিকারের খবর পাওয়া গেছে। অসাধু আড়তদাড়রা জেলেদের দিয়ে প্রতিদিন লাখলাখ পোনা নিধন করাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে মৎস্য উৎপাদনের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

রবিবার সরেজমিন বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নের মির্জকালু ও হাকিমুদ্দিন মাছঘাট ঘুরে এমনি দৃশ্য দেখা যায়।২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের আকাল থাকলেও বড় আকারের পাঙ্গাস মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়ার কথা থাকলেও নিষিদ্ধ চাই ব্যাবহার করে প্রতিদিন লাখলাখ পাঙ্গাসের পোনা শিকার করে অসাধু জেলেরা নিয়ে আসছে আড়ৎদারদের কাছে। আড়তদারদের কাছ থেকে কিনে খুচরা ব্যাবসায়ীরা অবাধে গ্রাম ও শহরের বাজারে বিক্রি করছে এসব পোনা।

পোনা নিধনের ফলে পাঙ্গাসসহ অন্যান্য মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা জেলেদের জীবিকা ও সামগ্রিক মৎস্যসম্পদের জন্য হুমকিস্বরূপ।

মৎস্য আইন অনুযায়ী ১২ ইঞ্চির (৩০ সেন্টিমিটার) নিচে পাঙ্গাস ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ভোলার উপকূলীয় এলাকায় পাঙ্গাসের পোনার আধিক্য বেশি দেখা যায়।

কালাম মাঝি নামে একজন জেলে জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই অবৈধ কাজে জড়িত ফলে সাধারণ জেলেরা প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। নদী থেকে অবৈধ চাই ও জাল ধ্বংস করতে পারলে ভবিষ্যতে নদীতে বড় পাঙ্গাস পাওয়া যেতো। জাল ও চাইয়ের ফাদ ব্যাবহার করে প্রতিদিন যে পরিমান পাঙ্গাসের পোনা শিকার করা হচ্ছে এতে ভবিষ্যতে পাঙ্গাস উৎপাদনে বড় বাধা হতে পারে। এতে বড় পাঙ্গাসের বাজার সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছু বড় পাঙ্গাস পাওয়া গেলেও তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে থাকবে।

গনমাধ্যমকর্মী রিয়াজ ফরাজী জানান, মেঘনার বুক থেকে নিষিদ্ধ উপায়ে পাঙ্গাসের পোনা নিধনের উৎসব চললেও, প্রশাসন ও মৎস্য অফিসের নীরবতা এবং প্রভাবশালী চক্রের দাপটে তা বন্ধ হচ্ছে না, যা এই মূল্যবান মৎস্যসম্পদকে বিপন্ন করে তুলছে। পোনা নিধনের ফলে পাঙ্গাসসহ অন্যান্য মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা জেলেদের জীবিকা ও সামগ্রিক মৎস্যসম্পদের জন্য হুমকিস্বরূপ। একদিকে যেমন পোনা ধরা পড়ছে, অন্যদিকে বড় মাছের অভাব দেখা দিচ্ছে, যা সাধারণ জেলে ও ভোক্তাদের বিপাকে ফেলছে।

এদিকে পোনা নিধন বন্ধে মৎস্য অফিসের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে মৎস্য অফিসের বিরুদ্ধে নীরব থাকার বা দেখেও না দেখার ভান করার অভিযোগ উঠেছে। তবে মৎস্য বিভাগ দাবি করেছে যে, তারা পাঙ্গাসের পোনা রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করছে। নভেম্বরে মেঘনা নদীতে পোনা শিকারের দায়ে একজন জেলেকে দণ্ডিত করা হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তজুমদ্দিন উপজেলায় মৎস্য অফিস ও কোষ্টগার্ড যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সোনারচর নামক এলাকা থেকে অবৈধ চাই ব্যাবহার করে পাঙ্গাসের পোনা শিকারের সময় ৮টি চাই, ২টি নৌকা এবং ১ হাজার কেজি পাঙ্গাসের পোনাসহ ১৩ জন জেলেকে হাতেনাতে আটক করে।

উপকূলীয় সচেতন মহলের দাবী, মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে কিছু চাই ও জাল জব্দ ও ধ্বংস এবং কিছু পোনা নদী বা এতিমখানায় অবমুক্ত করে নয়, বড়ং অসাধু জেলে অসাধু ব্যাবসায়ী, এবং মৎস্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারিদের চিহ্নিত করে কঠিন নজরদারি ও আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে পারলে মেঘনার বুক থেকে এই পোনা শিকারের মহোৎসব বন্ধ করা সম্ভব।


কেরানীগঞ্জে বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার কক্ষ

* শিশুসহ আহত ৪ * বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় বিস্ফোরণে একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্যমতে, ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবারও (২৭ ডিসেম্বর) ঘটনাস্থলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করেছে। এদিনও অভিযান চলে। ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে ক্রাইম সিন দল ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে।

জানা গেছে, মাদ্রাসাটিতে ৩০ থেকে ৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তার স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাদের তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হন। এর মধ্যে আছিয়া ও তার দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবারসহ তিন বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন।

পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’

ভবনমালিক পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তার শ্যালক আলামিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। এই ঘটনার পর পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।’


যমুনা ও সংসদ ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ মোড়। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর সাড়া না মেলায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সংগঠনটির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হাদির খুনের বিচার না করে কাউকেই ‘সেফ এক্সিট’ দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ও সংসদ ভবন ঘেরাওয়ের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।

শাহবাগের এই অবস্থান কর্মসূচি থেকে ছাত্র-জনতা হাদির খুনিদের গ্রেপ্তার এবং এর নেপথ্যের পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করার দাবিতে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন। ইনকিলাব মঞ্চ স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, সরকার হাদি হত্যার বিচার প্রক্রিয়ায় স্থবিরতা দেখাচ্ছে, যা শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানির শামিল।

বিক্ষোভ সমাবেশে আব্দুল্লাহ আল জাবের সরকারের উপদেষ্টাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, যারা ভাবছেন কিছুদিন ক্ষমতায় থেকে বিদেশে পাড়ি জমাবেন, তাদের সেই স্বপ্ন সফল হবে না। রক্তের সাথে বেইমানি করলে এই জমিনেই আপনাদের বিচার করবে জনতা।

তিনি আরও বলেন, ১ হাজার ৪০০ শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলেও তারা খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকারে আসার দাবি করা এই প্রশাসনের জন্য এটি চরম লজ্জার বিষয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে জাবের প্রশ্ন তোলেন, হাদি হত্যার বিচারে কারা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে? তিনি বলেন, কারা এই খুনের পেছনে রয়েছে তাদের নাম প্রকাশ করুন। আমরা আপনাদের পাহারা দেব, ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু বিচার করতে ব্যর্থ হলে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে।


৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে ওসমান হাদি হত্যার পরিকল্পনা

* ধারণা তদন্তকারী সংস্থার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাওয়া শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় একের পর এক নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। তদন্তকারী সংস্থার ধারণা, ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে পরিকল্পনা করে প্রকাশ্যে গুলি করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হয় এবং কিলিং মিশনটি সমন্বয় করেছে দেশ-বিদেশের কয়েকটি গ্রুপ।

তদন্ত সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের মূল সন্দেহভাজন শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ ২১ জুলাই সিঙ্গাপুরে গিয়ে কয়েকজন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে বৈঠক করে। পাঁচ দিন পর ২৬ জুলাই দেশে ফেরার আগেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয় বলে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য থেকে ধারণা পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর গিয়ে ফয়সাল নিজেকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা পরিচয়ে প্রবেশ করেন এবং মালয়েশিয়া সীমান্তে গিয়ে বৈঠক করেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ফয়সালের ভ্রমণ তথ্য পাওয়া গেছে, তদন্ত সে অনুযায়ী এগোচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত এখনই বলা যাচ্ছে না।

তদন্তে উঠে এসেছে, দেশে ফেরার পর স্ত্রী সাহেদা পারভীনকে ফয়সাল ইঙ্গিত দেন সামনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যখন দেশে থাকা কঠিন হবে। পরিবারের জন্য একটি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রাখা আছে বলেও স্ত্রীকে জানান তিনি। একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে ফয়সালের প্রেমিকা মারিয়া আক্তারের জিজ্ঞাসাবাদেও। হত্যার আগের রাতেই সাভারের মধুমতি মডেল টাউনে ফয়সাল, মোটরসাইকেলচালক আলমগীর ও মারিয়া সময় কাটান। সেদিন রাতে ফয়সাল মারিয়াকে বলেন, ‘আগামীকাল এমন কিছু হবে, যা দেশ কাঁপিয়ে দেবে।’ তবে মারিয়া ঘটনার সম্পক্ততার অস্বীকার করে জানান, মূল ঘটনা সম্পর্কে ধারণা ছিলো না।

হত্যার পর ফয়সাল ও আলমগীরকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মিরপুরের সাবেক কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী (বাপ্পী)। তার ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলামও সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। দুইজনকেই শনাক্ত করেছে পুলিশ। দালাল ফিলিপ স্নাল সীমান্তপথে পালিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা করে। এরপর তার মাধ্যমে হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে হত্যার রাতেই ফয়সাল-আলমগীর ভারতে প্রবেশ করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১১ জনকে ডিবি ও র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে।

হাদি হত্যার বিচার দাবিতে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার পর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করে ইনকিলাব মঞ্চ। সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, শাহবাগকে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ ঘোষণা করা হলো; বিচারের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মাথায় গুলি করে হাদিকে হত্যা করা হয়। প্রথমে ঢামেক, পরে এভারকেয়ারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতিতে ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। পরে ওসমান হাদির মরদেহ দেশে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।


সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষকরা 

পতিত জমিতে এবছর মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের পতিত জমিতে এবছর মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। একজন কৃষক ১৫ বিঘা জমিতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে ৮ লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করেছেন। বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ উপজেলায় ১০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা পেড়িয়ে ১০৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যা গত কয়েকদিন আগে থেকে উত্তোলন শুরু হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে এ বছর ২০ থেকে ২২ টন মিষ্টি কুমড়া উত্তোলন হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ উপজেলার মধ্যে দিয়ে যমুনা এবং বাঙালি দুটি বড় নদী প্রবাহিত হয়েছে। এজন্য এ উপজেলার ৩ ভাগের ২ ভাগ এলাকায় চরাঞ্চল রয়েছে। এসব চরাঞ্চল আদিকাল থেকেই পতিত রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই এসব পতিত জমিতে পানিসেচের মাধ্যমে কৃষকেরা নানা ধরনের ফসল ফলাচ্ছেন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ফসল হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। যা পতিত জমিতে বপন করা যায় এবং বপনের ৯০ দিনের মধ্যেই ফসল সংগ্রহ করা যায়।

গত কয়েক বছরের মতোই এ বছরও কৃষকরা চরাঞ্চলের পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা এখন তাদের জমি থেকে মিষ্টি কুমড়া উত্তোলন শুরু করেছেন। প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া ২ কেজি থেকে শুরু করে ৮ কেজি পর্যন্ত হয়েছে। যা বাজারে কৃষকরা ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

এছাড়া পাইকারি ক্রেতারা জমি বিঘা চুক্তিতেও মিষ্টি কুমড়া ক্রয় করছেন। যা পঞ্চগড়, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া চরের কৃষক রঞ্জু মিয়া এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন। ১৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করতে তার খরচ হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার ১৫ বিঘা জমির মিষ্টি কুমড়া পরিপক্ব হয়েছে। যা পাইকারি ক্রেতারা ৮ লাখ টাকা দাম করছেন। তাও এটা তার এ জমির ১ম কিস্তির কুমড়া। ১ম কিস্তির মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করার পর তিনি আবারও ২য় কিস্তির কুমড়া বিক্রি করবেন।

একই এলাকার কৃষক শাইন মিয়া ৩ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। যা পাইকারি ক্রেতারা দাম হাকছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। একই এলাকার কৃষক জিয়াউল ফকিরও ৩ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন। যা দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।

কৃষক রঞ্জু মিয়া বলেন, আগে চরাঞ্চলের জমিগুলো পতিত হয়েই থাকত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই এসব পতিত জমিগুলোতে তারা মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো লাভবান হচ্ছেন। গত বছর ফলন কম হওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যেই তারা মিষ্টি কুমড়া জমি থেকে উত্তোলন শুরু করেছেন। তার ১৫ বিঘা জমির মিষ্টি কুমড়া পাইকাররা ৮ লাখ টাকা দাম করেছে। যা পরে সাড়ে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকেরা চরের পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজারে ভালো দাম থাকায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।


ফটিকছড়িতে দুইশ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়ির ১০ ঘর পুড়ে ছাই

অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি!
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২০০ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়ির ১০ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের। গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার সমিতিরহাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আরবান আলী সওদাগর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হলে লেলিহান শিখা আশে পাশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আগুনের ভয়াবহতা দেখে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালালেও তীব্রতার কারণে কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খবর পেয়ে ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।

ততক্ষণে বিশেষভাবে তৈরিকৃত দু০০ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়ির বিপ্লব, বিটু, কপিল, কাজল, বাদল, রাসেদ, জাহেদ, হাসান, মিটু, টিটু, সোহেল চৌধুরী ও মঞ্জুর দ্বিতল বসতঘর সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মুক্তিযুদ্ধা রাশেদ মুহাম্মদ জানান, আগুনের ভয়াবহতায় ঘর থেকে কোনো মালামাল বের করতে পারেননি। আসবাবপত্র, ধান-চাল, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

ফটিকছড়ি ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার আব্দুল কাইয়ুম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

তবে বাড়িগুলো কাঠের তৈরি হওয়ায় আগুনের ভয়াবহতা ছিল অনেক বেশি। প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।


banner close