কবি রজনীকান্ত সেনের ভাষায়, ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই, আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি ঝড়ে।’ স্থপতি বাবুই পাখিটি জানে, নিজের যতই কষ্ট হোক, তালগাছের পাতায় শ্রমে-আনন্দে তৈরি নিজের ঘরেই সুখ।
বর্তমানে তালগাছ অনেকটা কমে গেলেও গ্রাম থেকে একেবারে হারিয়ে যায়নি। এখনো গ্রামের কোনো পুকুর বা দীঘিরপাড়ে, পথের পাশে দু-একটা তালগাছ দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক বছর ধরে স্থপতি বাবুই পাখির আবাসস্থল হয়ে আছে তালগাছ।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের গয়ঘর গ্রামে এ রকম একটি তালগাছে বাবুই পাখির বাসা গড়ে উঠেছে, যা আলাদাভাবে অনেকের নজর কাড়ছে।
সম্প্রতি গয়ঘর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, একটি বাড়ির পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে তালগাছ। গাছের বিভিন্ন পাতায় বাসা বুনেছে স্থপতি পাখি বাবুই। এক দুটি নয়, বাসা হবে প্রায় শখানেক। কোনো বাসা বোনার কাজ শেষ, কোনোটিতে চলছে বুনন। তখন বিকেল। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে, মেঘলা আকাশ। একটু পর সন্ধ্যা হবে। পাখিদের ফেরার সময় হয়েছে।
এ সময় দেখা যায়, কোনো বাবুই বাসার ওপরে বসছে, কেউ বাসার ভেতরে ঢুকেছে। কেউ উড়ে যাচ্ছে। কোনো বাবুই পাতার ওপর বসে চারদিকটা দেখে নিচ্ছে। কেউ তালগাছ ছেড়ে আশপাশের গাছে গিয়ে বসছে, আবার ফিরে আসছে। পাখিদের এমন চঞ্চলতার দৃশ্যে মুগ্ধ হবে যে কেউ।
বাবুই দৃষ্টিনন্দন পাখি। এদের বাসা বোনার গঠন বেশ জটিল আর আকৃতিও খুব সুন্দর। নিজের ঘর সাজাতে তাদের জুড়ি নেই। গ্রীষ্মকাল হচ্ছে বাবুই পাখির প্রজনন ঋতু। এ সময় পুরুষ বাবুই তাল, খেজুর, ধান ও ঘাসপাতা থেকে বাসা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। সুতার মতো দু-তিন ফুট লম্বা পাতার চিকন আঁশ ঠোঁটে চেপে নিয়ে আসে। পছন্দের গাছের ডালে সেটা পেঁচিয়ে গিঁট দিয়ে শুরু করে বাসা বোনা। একটি বাসা তৈরিতে সময় লাগে সপ্তাহখানেক। স্ত্রী বাবুই গড়ে তিনটি ডিম পেড়ে থাকে। ডিম থেকে ছানা ফুটতে ১০ থেকে ১৩ দিন সময় লাগে। ছানারা ১৫ থেকে ১৯ দিনে উড়তে শেখে। বাবুই পাখির আয়ুষ্কাল প্রায় চার বছর।
কথিত আছে- বাবুই পাখি রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করতে জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় গুঁজে রাখে এবং সকাল হলে ছেড়ে দেয়।
গয়ঘর গ্রামের মো. আমির মিয়া বলেন, ছোটবেলায় দেখতাম রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছগুলোতে অনেক বাবুই পাখির বাসা থাকত। কিন্তু এখন তা আর দেখা যায় না। যা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের পুরো এলাকাজুড়ে মাত্র একটি তালগাছে তারা বাসা বেঁধেছে। তাদের কিচিরমিচির শব্দে সকালবেলা আমাদের ঘুম ভাঙে।’
স্থানীয় পরিবেশকর্মী সোনিয়া মান্নান বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও পরিবেশের কারণে অসংখ্য প্রজাতির পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ আমাদের পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকগুলো বিলুপ্তির পথে। স্থপতি বাবুই পাখিও এখন তেমন একটা দেখা যায় না। তা ছাড়া আবাসন সংকটও একটা বড় কারণ। পরিবেশ বিপর্যয় ও বিলুপ্তির হাত থেকে বাবুই পাখিকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।
জেলার হাজী ছালামত স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহাঙ্গীর জয়েস বলেন, বাবুই পাখির খাবার ও বাসস্থানের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তারা ধান, কীটপতঙ্গ, ঘাস, পাতা, ফুলের মধু প্রভৃতি খেয়ে থাকে। সুতরাং কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে ঝোপঝাড় উজাড়ের বিষয়ে সচেতনতা দরকার। তালগাছ ছাড়াও নারিকেল, সুপারি, খেজুর প্রভৃতি গাছে বাবুই বাসা বানায়। এসব দিন দিন কমছে। এগুলো রক্ষায় নতুন করে গাছ লাগানোর পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে হবে।
বুননশিল্পী বাবুই পাখি ও বাসার সন্ধানে পাখিপ্রেমীরা ছবি তুলতে, কিচিরমিচির শব্দ শোনার জন্য আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াতেন। এখন আর তেমন একটা বাবুই পাখি চোখে পড়ে না। পড়ে না বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথে, কোনো পতিত উঁচু ভিটেমাটিতে কিংবা বাড়ির সীমানায় শোভাবর্ধন তালগাছে বাবুই পাখির বাসা দেখা যেত। তা দেখে পাখিপ্রেমীরা মুগ্ধ হতেন। এখন সেই তালগাছও প্রায় বিপন্ন হতে চলছে।
বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের এক নম্বর তফসিল অনুযায়ী এই পাখিটি সংরক্ষিত। তাই এটি শিকার, হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।
রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।
সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।
একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।
তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।
স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।
ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।
ঈদের ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে গত শনিবার রাতে বাসে করে ঢাকায় রওয়ানা দেন আব্দুল কাইয়ুম। সিলেটের জকিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা কাইয়ুম ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ২৩৫ কিলোমিটার দুরত্বের সিলেট থেকে বাসে করে ঢাকা যেতে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘন্টা। সে হিসেবে ভোরের আগেই সাইফুল ইসলামের ঢাকায় পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি গিয়ে পৌঁছান পরদিন সকাল ১১টায়। ঢাকা যেতে তার সময় লাগে প্রায় ১১ ঘন্টা।
বিরক্তকর এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে কাইয়ুম বলেন, ‘এই সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তাই সড়কের অনেকটা জুড়ে- মাটি, বালু, পাথরসহ বিভিন্ন সামগ্রী পড়ে আছে। বৃষ্টির কারণে মাটি ছড়িয়ে পুরো সড়ক কাদাময় হয়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনা এড়াতে যানবহানের গতি কমিয়ে আনতে হয়।’
তিনি বলেন, সিলেট থেকে মাধবপুর পর্যন্ত মোটামুটি গতিতে গাড়ি চলেছে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবেশ করার পর থেকেই দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়। এই যানজট ছিলো প্রায় ঢাকা পর্যন্ত । ফলে ৫ মিনিট গাড়ি চলে তো আধাঘন্টা থেমে থাকে, এভাবেই আসতে হয়েছে।
এই অভিজ্ঞতা সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট-পাকা সড়কে চলাচলকারী প্রায় সব যাত্রীদেরই। ভাঙ্গাচূরা এই সড়কে সবসময়ই লেগে থাকে যানজট। সবচেয়ে বেশি যানজট হয় ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড থেকে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত অংশে। এতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগে গন্তব্যে পৌছতে। ঈদের মতো উপলক্ষ্যে সড়কে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বাড়লে তো পরিস্থিতি আরও নাজুক আকার ধারণ করে। ৫/৬ ঘন্টার পথ পেরোতে লাগে যায় ১৬/১৭ ঘন্টা। এতে করে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সড়কে দুটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীকরণের কাজ চলছে। প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। অপরদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। এই দুই প্রকল্পের কাজই চলছে একেবারে ধীরগতিতে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেনের কাজ মাঝখানে কিছুদিন বন্ধ ছিল। এদিকে, বৃহৎ প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এই সড়কে এখন জরুরী সংস্কার কাজও বন্ধ রয়েছে। ফলে ভাঙাচোরা সড়ক দিয়েই যান চলাচল করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অংশের চলমান কাজের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সড়কের একপাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। ফলে এই অংশে সবসময়ই লেগে থাকে দীর্ঘ যানজট।
সিলেট থেকে নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করতে হয় ব্যবসায়ী ফয়সল আলমকে। তিনি বলেন, ‘সবসময় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক সময় বাসে চলাচল করতে হয়। কিন্তু এই সড়কে বাসে করে যাতায়াতের দুর্ভোগের আর কিছু নেই। বাসে ওঠার পর কখন গিয়ে যে ঢাকায় পৌছব তার কোন ইয়াত্তা নেই। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হয়। সড়ক ভাঙার কারণে ঝাঁকুনি তো আছেই।
তিনি বলেন, প্রায় ২ বছর ধরে ছয় লেনের কাজ চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এখনও ভূমি অধিগ্রহণই শেষ হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে ১০ বছরেও কাজ শেষ হবে না।
ফয়সল বলেন, ‘সড়কের এই দুরবস্থার সুযোগে সিলেট-ঢাকা রুটে বিমান ভাড়াও বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে ফেলা হয়েছে।
কেবল যাত্রীরা নয়, সড়কের বেহাল দশার কারণে চালকদেরও নাভিশ্বাস উঠে গেছে। ঢাকা-সিলেট সড়কে চলাচলকারী মিতালী বাসের চালক গউছ উদ্দিন বলেন, ‘সড়কের এমন বেহাল অবস্থা যে আমরা যাত্রীদের কেবল যাত্রার সময় বলি। পৌঁছার সময়ের ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা দেই না। আগে ঢাকা-সিলেট একদিনে যাওয়া-আসা করতে পারতাম। এখন কেবল যেতেই একদিন লেগে যায়।
এই সড়কে দুর্ভোগের পেছনে তিনটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভাঙাচূড়া সড়ক, চলমান উন্নয়ন কাজ ও বিভিন্ন স্থানে সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা দোকানপাটের কারণে সবসময় যানজট লেগেই থাকে।’
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিলেট অংশের হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে শেরপুর পর্যন্ত অংশ ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে একপাশ বন্ধ রেখে সম্প্রসারণ কাজ চলছে। বেশ কয়েকটি স্থানে চলছে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ। অনেক জায়গায় মাটি ভরাট ও জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। নির্মাণ কাজের কারণে সড়ক সরু হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন দেখা দিচ্ছে যানজটের। এছাড়া সড়কের অনেক জায়গায় খানাখন্দেরও সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বেড়েছে ভোগান্তি। বিভিন্ন স্থানে সড়ক দেবে গেছে, কোথাও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। আবার কোথাও পিচ সরে গিয়ে নিচের পাথর বের হয়ে এসেছে। এসব কারণে যানবাহনের গতি কমে আসায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনাও। ছয় লেনের কাজ চলমান থাকায় এখন ভাঙাচোড়া অংশও সংস্কার করছে না সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর।
যদিও তবে সড়ক ও জনপথ অধিপ্তরের কর্মকর্তা এবং প্রকল্প সংশ্লিস্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূল সড়কে এখন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। সড়কের পাশে কাজ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন জানান, মহাসড়কটি নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে। দুই লেনের মহাসড়কটি ছয় লেন হচ্ছে। তাই পুরনো সড়কে খুব বেশি ব্যয় করা হচ্ছে না। যানবাহান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন কেবল ততটুকু করা হচ্ছে।
ছয় লেনের কাজ দুই বছরে কাজ এগিয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনের উন্নীতকরণ কাজ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হলেও দুই বছরে কাজ এগিয়েছে মাত্র ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ। জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ হচ্ছে ধীরগতিতে। বর্তমান সড়কের দুপাশে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পের কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় যাতায়াত ভোগান্তিতে সিলেটে অঞ্চলের কোটি মানুষ। ঢাকা সিলেট ৬ লেন প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় বলেন, প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত ১৫/১৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা ছিল। একারণে কাজ আশানুরুপ এগোয়নি। তবে এখন জটিলতা অনেকটা কেটে গেছে। এখন দ্রুত গতিতেই কাজ এগিয়ে চলবে।
এই প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০৯ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ সম্প্রসারণ এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার এলাকা চার লেনে উন্নীতকরণ করার কথা। আগামী বছরের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর প্রায় তিন মাস বন্ধ ছিল আশুগঞ্জ-আখাউড়া ৫১ কিলোমিটার সড়কে ৪ লেন প্রকল্পের কাজ। যদিও নভেম্বর থেকে আবার এই সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ বলেন, ‘এখণ পুরোদমে কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে পুরো কাজ শেষ করতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে।’
সাদা বস্তায় টকটকে লাল মরিচ, এই দৃশ্য এখন গাইবান্ধার ফুলছড়ি হাটের চেনা রূপ। দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় মরিচের পাইকারি হাট এটি। জেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের পুরাতণ হেডকোয়ার্টার এলাকায় বসে ওই ঐতিহ্যবাহী হাট। প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে কোটি টাকার বেচা-কেনা। তবে এই হাটের নেই নিজস্ব কোন জায়গা। হাট বসে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভাড়া করা জায়গায়।
সংশ্লিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, ‘গাইবান্ধার সদর, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৬৫টি চরে উল্লেখযোগ্য হারে চাষ হয় লাল মরিচের। এসব চরের উৎপাদিত শুকনা মরিচই বেচা-কেনা হয় এই হাটে। স্থানীয় ব্যবসায়ি ছাড়াও জামালপুর, নওগাঁ, রাজশাহী, দিনাজপুর, বগুড়া, রংপুর ও রাজধানী ঢাকা সহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে মরিচ কিনতে আসেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া দেশের নামকরা প্যাকেটজাত খাদ্যপ্রস্তুত কোম্পানির প্রতিনিধিরাও এ হাট থেকে নিয়মিতভাবে মরিচ সংগ্রহ করে থাকেন।
গতকাল মঙ্গলবার দেখা যায়, ‘ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের ঘাটে দ্রুত গতিতে একের পর এক ছুটে আসছে নানা আকারের নৌকা। প্রতিটি নৌকায় বোঝাই করা রয়েছে সাদা বস্তা, যার ভেতরে ঠাসা লাল মরিচ। নৌকাগুলোর সঙ্গে আছে মানুষ- কেউ চালক, কেউ বা সহকারি, সবাই ব্যস্ত নিজেদের কাজে। এ সময় নদী যেন একটি ভাসমান জীবনে পরিণত হয়। যেখানে এক মুহূর্তের জন্যও জীবনের গতি থেমে নেই। হাটের দিন ভোর বেলা থেকেই নদীর ঘাটে এমন ব্যস্ততা চোখে পড়ে। ঘাটে নৌকা ভিড়লে ঘাটজুড়ে উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
নৌকা ঘাট থেকে মরিচের হাটে যেতে নদী পথ পাড়ি দিতে হয় প্রায় আধা কিলোমিটার। কোন কোন সময়ে আরও বেশি। নৌকা থেকে নেমেই চরাঞ্চলের কৃষকরা ছুটে চলেন হাটের দিকে। যাদের সঙ্গে অল্প পরিমাণ মরিচ, তারা কেউ মাথায়, কেউ ভারে সাজিয়ে হেঁটে চলেন বালির পথ ধরে। গন্তব্য মরিচের হাট। বেশি পরিমাণ মরিচ বহনকারীরা ব্যবহার করে ঘোড়ার গাড়ি। প্রচণ্ড রৌদ্র আর ওই খরা তাপের যাত্রা শুধু পুরুষদের নয়- এই পথে সঙ্গী হতে দেখা গেছে নারী ও শিশুদেরও। এর পরই বেলা বারার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় লাল মরিচের বেচা-কেনা। ক্রেতা-বিক্রেতার দরদামে মুখরিত হয়ে ওঠে হাটের মাঠ। মরিচের জাত আকার ও মান ভেদে দাম নিয়ে চলে ক্রেতা-বিক্রেতার তোরজোর। এই হাটে মান ভেদে তিন ধরণের মরিচ পাওয়া যায়- উত্তম, মধ্যম ও নিম্ন মানের। মওসুম ভেদে ভিন্ন ভিন্ন দাম থাকে মরিচের। সকাল থেকে শুরু হওয়া হাটের বেচাকেনা চলে শেষ দুপুর পর্যন্ত।
স্থানীয় বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা জানান, ‘ফুলছড়ির মরিচ মানে ভাল মানের পণ্য। এক যায়গায় এত ভাল মানের মরিচ আর কোথাও মেলেনা। তাই দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন এখানে।
তবে চলতি মৌসুমে মরিচের দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট কৃষকরা। একাধিক কৃষকের অভিযোগ, উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারদর কম হওয়ায় তারা প্রত্যাশিত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
খোলাবাড়ি গ্রামের সাদেকুল বলেন, ‘ফুলছড়ি হাটে মরিচ বিক্রি করতে আসছি। অল্প মরিচ তাই মাথায় নিয়ে এলাম। আবাদ করেছি চারবিঘা। ভালো হয়েছে ফলন। চরের মানুষের একমাত্র মরিচের হাট এটি। এখানেই সারা বছর আমরা মরিচ বিক্রি করে থাকি।
ফুলছড়ি হাট ইজারাদার অহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটি উত্তারাঞ্চলের সব চেয়ে বড় মরিচের হাট। এখানে জেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা মরিচ বিক্রি করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এবং বিভিন্ন কোম্পানী এখানে মরিচ কিনতে আসেন। প্রতি হাটে সোয়া কোটি থেকে ২ কোটি টাকার মরিচ বেচা-কেনা হয়ে থাকে।
এ সময় তিনি সোয়া কোটি টাকার ডাক হওয়া হাটের নানা সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এই হাটের কোন নিজস্ব জায়গা নেই। এখন যে জায়গাতে হাট বসানো হয়েছে সেটি ভাড়া নেয়া। এছাড়া এই হাটটি খুব সকাল থেকে শুরু হয়। দূরের ব্যবসায়ীরা এখানে এসে রাতে থাকার কোন হাটসেড নেই।’
তিনি বলেন, এখানে সরকারি খাস জমি রয়েছে। সেটি ভরাট করে অবকাঠামো এবং হাটের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ব্যবসায়ীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুবিধা দেয়া গেলে হাটটি আরও জাকজমক হবে, সরকারি রাজস্ব বাড়বে। বিষয়গুলো আমলে নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনা সনাক্ত হয়েছেন। তিনি অর্থ সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে জামালপুর মেডিকেল কলেজে কর্মরত।
বুধবার (১৮ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, ডাঃ আবু হাসনাত মোস্তফা জামান গত ১৬ জুন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নমুনা পরিক্ষা করান। পরিক্ষায় তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। এ পর্যন্ত ১২ জনের নমুনা পরিক্ষায় এই প্রথম একজন চিকিৎসকের করোনা সনাক্ত হলো। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে করোনা পরিক্ষার সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। ইতিমধ্যেই ১০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
কুষ্টিয়া বিজিবির পৃথক যৌথ টাস্কফোর্স এর অভিযানে ২৮৮০ কেজি বেহুন্দী জাল, ৪৭০ কেজি কারেন্ট জাল ও ১৫টি তেলের ড্রাম জব্দ এবং ৮টি নৌকার মালিককে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১১ টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া বিজিবি-৪৭ ব্যাটালিয়ন।
বিজিবি জানায়, ১৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মানিকের চর এলাকায় একটি যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য অফিসার, এবং বিজিবির ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোঃ জাকিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়।
পরিচালিত অভিযানে এ বিপুল পরিমাণ অবৈধ ২৮৮০ কেজি বেহুন্দী জাল, ১৫টি তেলের ড্রাম জব্দ সহ মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এর ৪(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ৬টি নৌকার মালিককে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত জাল ও তেলের ড্রামের আনুমানিক মূল্য ৭২,৭৫,০০০ হাজার টাকা।
জব্দকৃত জাল ও তলের ড্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়াও মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে জেলার মিরপুর উপজেলার গরুর হাট সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়।
এ সময় ৪৭০ কেজি ভারতীয় অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত অবৈধ কারেন্ট জাল মিরপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং একই ধারায় অভিযুক্ত ২জনকে ১ হাজার টাকা করে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত কারেন্ট জালের আনুমানিক মূল্য ৭,০৫,০০০ টাকা।
বিজিবি আরো জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মাদক ও চোরাচালানসহ সকল অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড। এই অভিযান মাদক ও চোরাচালানবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতির একটি সফল বাস্তবায়ন। ভবিষ্যতেও এই ধরনের অপরাধ দমনে কঠোর এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়ন।
কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক এমপি জাফর আলম কে আদালতে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাতে চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হয়েছে আজ।
জাফর আলম সর্বশেষ কক্সবাজার-১ আসনের এমপি এবং চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন।
বুধবার সকাল ৯টার পর পরই জেলা পুলিশের একটু প্রিজন ভ্যানে করে যৌথ বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় তাকে আদালতে আনা হয়।
তাকে আজ আদালতে তোলার খবরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত চত্বর ও আশপাশের অন্তত অর্ধ কিলোমিটার এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে।
আদালত সূত্র জানায়- বিগত ৫ আগষ্ট পরবর্তী চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় দায়ের করা একাধিক হত্যাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাকে শ্যােন অ্যারেস্ট দেখানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। সেসব মামলার শুনানি করা হয় আজ। এ সময় আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল কবির শুনানী শেষে ৭ মামলায় সর্বমোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তন্মধ্যে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব মামলায় সর্বোচ্চ চারদিন ও সর্বনিম্ন ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলাগুলোর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি ও পেকুয়া থানার ২টি মামলা রয়েছে।
আরও জানান- আদালতের শুনানী চলাকালে জাফর আলমের পক্ষে শুনানী করেন অসংখ্য আইনজীবী। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে তথা জাফর আলমের বিপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট মো. মঈন উদ্দিন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন এপিপি মঈন উদ্দিন-ই।
আদালতের শুনানী শেষে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা জাফর আলমের মুক্তির দাবিতে সাড়ে দশটার দিকে একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন।
এর আধাঘন্টা পর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জাফর আলমের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে পাল্টা মিছিল করে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে গিয়ে শেষ করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ২০ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বুধবার (১৮ জুন) ভোর পৌনে ৫টার দিকে ভারত থেকে তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। এরপর মাসুদপুর বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদের আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ।
তিনি জানান, আটকদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ, ৭ জন মহিলা ও ১০টি শিশু রয়েছে। তারা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
এ ছাড়া আটকদের নাম ও ঠিকানা যাচাইয়ের কাজ শেষে তাদের শিবগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
কর্নেল ফাহাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে জোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
এর আগে, গত ৩ জুন জেলার ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারি সীমান্ত দিয়ে ৮ জনকে ও ২৭ মে গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭জনকে পুশইন করে বিএসএফ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গোসাইপুর-জালশুকা সড়কের নির্মাণ কাজ ১১ মাসেও শেষ হয়নি। অথচ ঠিকাদারের শর্ত অনুসারে এ কাজ নয় মাসে শেষ করার কথা। অভিযোগ রয়েছে- ঠিকাদার লোকমান হোসেন এ সড়কের বক্সকাটিং করে ১১ মাস ধরে ফেলে রেখেছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতা ও গাফিলতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উল্লেখ্য তিতাস নদীর উত্তর পাড়ে বড়াইল ইউনিয়নের একটি গ্রাম গোসাইপুর। গ্রামের পশ্চিম অংশে বাজার। বাজারের পূর্ব দিকে দিয়ে চলে গেছে গোসাইপুর-জালশুকা সড়কটি। এ বাজারের যাতায়াতের জন্য রাধানগর, চরগোসাইপুর, জালশুকা, বড়াইল, মেরাতুলী গ্রামের মানুষেরাও সড়কটি ব্যবহার করে।
গোসাইপুর বাজারের মুদি মালের ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন-"আমার গ্রামের বাড়ি জালশুকা । প্রতিদিন এ সড়কে বাজারে আসি। সড়কটি বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই পানি ও কাঁদা মিলে চলাচলে অযোগ্য হয়ে যায়"। বড়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাসার বলেন-"পূর্ব অঞ্চলের জনগণের জন্য এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোসাইপুর বাজার ও রাধানগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আসা-যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ার কারণে জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে"। গোসাইপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন-"সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই। নির্মাণ কাজ করতে এসে ঠিকাদার আর কাজ করছেন না। এখন বর্ষার বৃষ্টির কারনে মোড়ে মোড়ে রাস্তা ভেঙে মাটি পড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরাও"। কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন- "সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে আমি কয়েকবার তাগিদ দিয়েছি"। এ বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব হোসেন বলেন-"এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে"। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী বলেন-"এই সড়কের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করব"।
শেরপুর জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকী ওরফে বাচ্চু মেকারকে দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১২ বছর পূর্বে শেরপুরে ডিবি হেফাজতে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শেরপুরের তৎকালীন হুইপ ও মহিলা এমপি এবং পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিবির পরিদর্শকসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে গত ১ জুন আদালতে ওই মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ছেলে মোকারুল ইসলাম মোহন। ১৭ জুন মঙ্গলবার দুপুরে ওই মামলার শুনানী শেষে শেরপুর সদর সি,আর আমলী আদালতের বিচারক (সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সুলতান মাহমুদ মিলন মামলাটি জামালপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। এর আগে
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল আজিজ সজীব রানা বলেন, নালিশী মামলাটি দায়েরের সময় আদালত একই ঘটনায় ইতিপূর্বে থানায় কোন মামলা হয়েছে কি না তৎমর্মে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক থানার প্রতিবেদন আসার প্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক মামলার ঘটনার বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জামালপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে শেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার, বর্তমানে ডিআইজি মো. আনিছুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিবুল ইসলাম খান, জেলা ডিবি পুলিশের সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক সেকেন্ড অফিসার মো. জহুরুল ইসলাম, সাবেক এসআই মো. রিয়াদ হোসেন, শহর পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এসআই, মো. নজরুল ইসলাম, নিষিদ্ধ ঘোষিত শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, শেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ডিআইজি আনিসুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমাতুজহুরা শ্যামলী, তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মো. আরিফ রেজা ও মো. শুভ রেজা, শেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন সাহা, আমিরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, মো. আব্দুল হামিদ, হাজী মোশারফ, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা বেগম, যুব মহিলা লীগ নেত্রী মাহবুবা রহমান শিমু, যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম রাজু, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী, মো. শহিদুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, মো. আব্দুল আলিম, আশীষ কুমার সুর, সাংবাদিক শরিফুর রহমান শরিফ, মাসুদ রানা, মো. সাইদুল ইসলাম সাইদ, মনিরুজ্জামান মিলন তালুকদার, চানু মিয়া, সেতু দত্ত, গোপাল দত্তসহ ৩৪ জন স্বনামেসহ আরও অনেকের কথা বলা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে প্রকাশ, শেরপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান ও ডিবির ওসি নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ ২০১২ সালের ৩ ডিসেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সজবরখিলা মহল্লার বাসা থেকে বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু ওরফে বাচ্চু মেকারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। পরদিন ৪ ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে আবু বকর সিদ্দিকী বাচ্চুর নিথর দেহটি তার বাড়িতে রেখে যায় পুলিশ। আর ওই ঘটনায় সাবেক হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও সংরক্ষিত এমপি ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলীর বিরুদ্ধে পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু ডিশ ক্যাবলের ব্যবসার পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তার নামে কোন মামলা ছিল না। তাকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ প্রশাসনের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডিবি হেফাজতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
নিহতের ছেলে মোকারুল ইসলাম মোহন সাংবাদিকদের বলেন, বাবাকে হত্যা করার পর পুলিশ পাহারায় জানাজা এবং দাফন সম্পন্ন করা হয়। আমরা তখন মামলা করতে পারিনি। মামলা না করার জন্য পুলিশ সবসময় আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখাতো এবং আমাদের তিন ভাইকে বিভিন্ন মামলায় দিয়ে হয়রানী করেছে। আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংযোগ সড়ক ও রাস্তা না থাকায় কাজে আসছে না প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ। ফলে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয় ৫ গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের। এমন ব্রিজের দেখা মিলেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর আদ্রা গ্রামের ফসলের মাঠে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটি। ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও এখন পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলের জন্য নির্মিত হয়নি সড়ক। ফলে কোনো কাজেই আসছে না সাতপোয়া ইউনিয়নের, চর রৌহা, আকন্দপাড়া, মাজারিয়া ও খামার মাগুরাসহ পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জ উপজেলার আরও ২টি গ্রামের জনসাধারণসহ হাজারও মানুষের।
সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রতিদিন এসব এলাকার ফসলের মাঠের আল দিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। ব্রিজটি নির্মাণের দীর্ঘদিন পার হলেও এটি এখনো জনগণের চলাচলের জন্য ব্যবহারযোগ্য হয়ে ওঠেনি। ব্রিজের দুই পাশে কাঁদা ও অসমতল জমির কারণে শিশু, বৃদ্ধ এমনকি সাধারণ পথচারীদেরও চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া কৃষকদের আবাদি ফসল আনা-নেওয়া বা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতেও হয়েছে চরম দুর্ভোগ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হাসানুর কবীর স্বপন, মাসুদ রানা, চান মিয়া, ছমিরন বেওয়া বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের খবরে আমরা এলাকাবাসীরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। ভেবে ছিলাম আমাদের কয়েক গ্রামের দীর্ঘদিনের চলাচলের দুর্ভোগ লাঘব হবে। কিন্তু ব্রিজটি নির্মাণের এতদিন পার হলেও সড়ক না থাকায় এটি আমাদের কোনো কাজে আসছে না। আমরা দাবি জানাই অতি দ্রুত আমাদের চলাচলের সুবিধার্থে ব্রিজটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী শওকত জামিল বলেন, ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই ব্রিজটি ও সড়কের কথা জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। ওই এলাকার মানুষদের চলাচলের দুর্ভোগ লাঘবে মাটি কেটে রাস্তা উঁচু করে ব্রিজের সঙ্গে সংযোগ রাস্তা নির্মাণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
বর্ষার শুরু থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। এতে করে প্রকৃতিতে গরমের তীব্রতা কমতে শুরু করে। এর আগে বেশ কিছুদিন রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই টানা কদিনের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ ছিল জনজীবন। তবে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে আষাঢ়ের শুরু থেকেই। কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি কোথাও বা মুষলধারে বৃষ্টিতে গরম কিছুটা কমেছে।
বিশেষ করে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হওয়াতে তাপপ্রবাহ একেবারেই কমে গেছে। ঢাকায় অতি বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন সড়কে জলজট দেখা দিয়েছে। এতে করে যানজট ছিল নগরীর বিভিন্ন রাস্তায়। গরমে নগরবাসীকে স্বস্তি দেওয়া বৃষ্টি অফিসগামীদের বেশ ভোগান্তিতে ফেলেছে। ঢাকা ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানেও বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টি হতে পারে আরও দু–এক দিন। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে পাঁচ দিনের মাথায় গিয়েও।
এদিকে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে বঙ্গোপসাগরে বজ্রমেঘ তৈরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ঝোড়ো হাওয়াও। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দেশের চার বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় দেওয়া আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সাগরে বায়ুচাপের তারতম্য দেখা দিয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করার কথাও সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ুপ্রবাহ সক্রিয় থাকায় দেশের রংপুর, রাজশাহী ছাড়া বাকি বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে পুরো দেশেই বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির গণমাধ্যমকে বলেন, উপকূল ও সব সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর সতকর্তা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয় এবং তা অন্যত্র মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এর প্রভাবে ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
অন্যদিকে ঢাকাসহ দেশের আট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। অতি ভারী বৃষ্টির ফলে পাঁচ জেলায় ভূমিধস এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছার দেওয়া ভারী বৃষ্টির সতর্কতায় এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অফিস জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে আজ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (১৮৮ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলাগুলোর পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, আজ বুধবার সকাল ৯টার মধ্যে ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ৯ থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আর শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মৃতরা হলেন- উপজেলার দোনারচর গ্রামের মান্নানের ছেলে ইউসুফ আলী, সবজিকান্দির নাজির চৌধুরীর স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও রাসেলের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, দাউদকান্দি উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এর মধ্যেই ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জুন মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ১০২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এছাড়া উপজেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ২৫৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪৪ জন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩৮ জন আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে। তবে এই সময়ে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল রিপোর্ট, ডেঙ্গুর চিকিৎসা দিতে বিপাকে চিকিৎসকরা
এদিকে গত একদিনে সারাদেশে ২০৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৯৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৬ হাজার ৪৬৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের।