সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
২৬ কার্তিক ১৪৩২

বেনাপোল কাস্টমস হাউজে দ্বিতীয় দিনের মত চলছে কলম বিরতি

আমদানি-রপ্তানি চলছে স্বাভাবিক
বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত
বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৫ মে, ২০২৫ ১৩:১০

দ্বিতীয় দিনের মত এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কলম বিরতিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আদায়কারি প্রতিষ্ঠান বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চলছে ‘কলম বিরতি’।

কলম বিরতিতে রাজস্ব আয়রণের কাজ বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক আছে দু'দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার ও আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য। আমদানি রপ্তানিতে তেমন কোন প্রভাব না পড়লেও বিঘ্নিত হচ্ছে রাজস্ব আদায়। বুধবার কলম বিরতি সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার সেটা বাড়িয়ে তিনটা পর্যন্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কলম বিরতির সময় কাস্টমস হাউজে কোন কাজ হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন একজন রাজস্ব কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, “অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আমরা আছি এবং আমাদের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন আছে।”

সরেজমিনে দেখা গেছে,কাস্টমস হাউজ খোলা আছে তবে অধিকাংশ টেবিলই খালি।কর্মকর্তারা বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন।কিছু কর্মকর্তা আসনে থাকলেও কোন কাজ করছেন না।বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।কলম বিরতির কারণে নতুন করে কোন পণ্যের আইজিএম ইস্যু করা হচ্ছে না। আগের ইস্যু করা আইজিএমের পণ্য আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে।বেলা ৩টা পর্যন্ত কলম বিরতি চলবে। তারপর কাস্টমস হাউজে কাজ শুরু হবে বলে ওই রাজস্ব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বেনাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, কাস্টমসের কলম বিরতির কারণে সকাল ১০টা থেকে হাউজে কোন ফাইলে কাজ হয়নি। তবে ৩টার পর কাজ শুরু হবে বলে কাস্টমস থেকে জানতে পেরেছি। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইব্রাহিম আহমেদ জানান কাস্টমসের কলম বিরতি চললেও বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দু দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন,কাস্টমস হাউসের কলম বিরতি সত্বেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু'দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে।বুধবার ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর ৩০৬ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে।এসময় ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১৭৪ ট্রাক পণ্য। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ২৫ গাড়ি পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে ১১ ট্রাক পন্য ভারতের রপ্তানি হয়েছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ এর খসড়া কর্মকর্তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। বিভাগ দুটিতে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য পদ সংরক্ষিত না রেখে রাজস্বের কাজে অভিজ্ঞতা নেই এমন কর্মকর্তা পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে একদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞ নয় এমন কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, গতিশীলতা এবং কার্যকারিতা বিঘ্নিত হবে, অন্যদিকে এনবিআরে কর্মরত দুটি ক্যাডারের কাজের ক্ষেত্র ও পদোন্নতির সুযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাতকে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।


গোপালগঞ্জের নতুন জেলা প্রশাসক হলেন মো. আরিফ উজ জামান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. আরিফ উজ জামান। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

অন্যদিকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামানকে খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয়েছে। এজন্য তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে ন্যস্ত হয়েছেন। ২৪ বিসিএস এর কর্মকর্তা মুহম্মদ কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছিলেন ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪।

গত রোববার গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়।

মো. আরিফ উজ জামান গোপালগঞ্জের ২২তম জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মো. আরিফ উজ জামান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ অনুবিভাগের উপসচিব হিসেবে র্যাব-১ ও র্যাব-২ শাখায় কর্মরত রয়েছেন।

এর আগে মো. আরিফ উজ জামান ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, যশোর সদর ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ মার্চ ২০২১ তারিখে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন মো. আরিফ উজ জামান।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদে বড় ধরনের এই রদবদল করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।


রাজশাহীর ১৩টি পৌরসভায় নেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রোগব্যাধির ঝুঁকি বাড়ছে

দীর্ঘদিন ধরে ১৩টি পৌর এলাকার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ড্রেন, পুকুর কিংবা নদীতে। ছবি সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহী জেলায় পৌরসভার সংখ্যা ১৪। এর মধ্যে ১৩টিতেই নেই নির্ধারিত ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা বা ডাম্পিং স্টেশন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এসব পৌর এলাকার বর্জ্য খোলা আকাশের নিচে, ড্রেন, পুকুর কিংবা নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। ইতোমধ্যে অনেকে চর্মরোগ এবং ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দিন দিন ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

যদিও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য চারটি পৌরসভায় প্রায় ছয় কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প থাকলেও দীর্ঘদিনে সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। বর্জ্য সংগ্রহ ও নির্দিষ্ট জায়গায় নেওয়ার জন্য কোটি টাকায় কেনা যানবাহন ও সরঞ্জাম ব্যবহারের সুযোগ না পাওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পৌরসভাগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করলেও বাস্তবচিত্র ভিন্ন। কোথাও গড়ে তোলা হয়নি ডাম্পিং স্টেশন।

জানা যায়, পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভায় ডাম্পিং স্টেশন নেই। ফলে পৌর শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় বারনই নদীতে। একই নদীতে ফেলা হয় বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর পৌরসভার বর্জ্য। দুর্গাপুর পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হয় হোজা নদীতে। গোদাগাড়ী পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হয় পদ্মার বিভিন্ন স্থানে। এছাড়া কাটাখালী পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হয় সিটি হাটের ভাগাড়ে। তবে বেশিরভাগ ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় কাটাখালী বাজারের ড্রেনে। ফলে বৃষ্টি হলে বড় ড্রেনটি সংকুচিত হয়ে পানি জমে থাকে। আর বাঘা পৌরসভার নির্ধারিত জায়গা থাকলেও বর্জ্য ফেলা হয় শাহী মসজিদের পুকুরে।

বাঘা পৌর এলাকার বাসিন্দা শহিদুল হক বলেন, ‘পৌরসভার বর্জ্য পুকুরে ফেলার কারণে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। সেই পুকুরে গোসল করলে চর্মরোগ ছাড়াও ডায়রিয়া রোগ দেখা দিচ্ছে। কখনো কখনো খোলা আকাশের নিচে ছাড়াও বর্জ্যগুলো ফেলা হয় ড্রেনে। এর ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার জমে থাকা পানিতে মশা বংশবিস্তার করে। সেই মশা-মাছি থেকে ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি। জমে থাকা সেই পানিতে পা-চুলকায়।’

পবা উপজেলার স্কুলশিক্ষক সাকিলা খাতুন বলেন, ‘নওহাটা পৌরসভার বর্জ্য বারনই নদীতে ফেলা হচ্ছে। সেগুলো ভেসে ভেসে বাগমারায় চলে যাচ্ছে। সেই বর্জ্য পচে দুর্গন্ধ ও জীবাণু ছড়াচ্ছে।’

বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জানান, এসব বর্জ্য ফেলায় পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। এর ফলে নদী অববাহিকার মানুষ চর্মরোগ ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া বর্জ্য থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণে হাপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এ জন্য এসব বর্জ্য ধ্বংস করা জরুরি।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী, বর্জ্য অপসারণ ও ডাম্পিং ব্যবস্থাপনা প্রতিটি পৌরসভার অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব। অথচ রাজশাহীর ১৪টি পৌরসভার ১৩টিতে নেই ডাম্পিং স্টেশন। শুধু চারঘাটে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকলেও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই জেলার কোনো পৌরসভার।

রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘নদী, পুকুর এবং খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলার কারণে দূষণ বাড়ছে। খুব সহজে রোগ ছড়াচ্ছে। পরিবেশগত সমস্যা আমাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা দূষণ প্রতিকারে অচিরেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করব। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কাটাখালী, তাহেরপুর, বাঘা ও গোদাগাড়ী পৌরসভায় প্রায় ছয় কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু জমি না পাওয়া এবং প্রশাসনিক জটিলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। ডাস্টবিন, ভ্যান, ভেকুসহ বিভিন্ন পরিবহন ব্যবহারের সুযোগ না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। কাটাখালী পৌরসভায় কয়েক কোটি টাকার পরিবহন দীর্ঘদিন পড়ে থেকে অকেজো হয়ে পড়েছে। সেগুলো কাজে লাগানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

কাটাখালী পৌরসভার প্রশাসক জাহিদ হাসান বলেন, ‘বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য এখনো নির্দিষ্ট জায়গা পাইনি। খোঁজা হচ্ছে। পেলে সেখানে একটি ডাম্পিং স্টেশন করা হবে।’

রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘পচনশীল বর্জ্য থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও ব্যাকটেরিয়া ছড়ায়। এটি নানা রোগের কারণ হতে পারে। ভবিষ্যতে এটি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ জন্য এসব বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে ধ্বংস করতে হবে।’


হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর সড়কের বেহাল দশা, দুর্ভোগ চরমে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি

রাজধানী ঢাকাকে পাশ কাটিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর আঞ্চলিক সড়ক। বিশেষ করে মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরিগুলো ঢাকায় প্রবেশে বাধ্যবাধকতা থাকায় এই রাস্তায় ২৪ ঘণ্টাই নির্বিঘ্নে যান চলাচল করে। দীর্ঘ যানজট, পথে পথে বাঁধা আর সংক্ষিপ্ত দূরত্ব হওয়ায় লাখো মানুষের ভরসা এই সড়ক। সরু হলেও এটি চালকদের প্রথম পছন্দের রাস্তায় পরিণত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত, ভাঙন ও ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যান চলাচল ধীরগতির পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছে, ফলে চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মূল্যবান সময় এবং অতিরিক্ত অর্থের অপচয় হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের কানারচর থেকে ঝাউচর পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। এক কিলোমিটার রাস্তায় তিন-চার জায়গায় এমন বিপজ্জনক গর্ত রয়েছে যেখানে প্রায়ই যানবাহন উল্টে যায়, চালক ও যাত্রী আহত হন। বড় যানবাহনগুলো পার্স গেং বা যান্ত্রিক ত্রুটিতে অকেজো হয়ে মাঝেমধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়, ফলে সৃষ্ট হয় দীর্ঘ যানজট।

আলিপুর ব্রিজ থেকে জালাল মেম্বারের বাড়ি হয়ে জগন্নাথপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাতেও ছড়িয়ে আছে ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙন। বিশেষ করে অসুস্থ, গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্করা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করেন।

একই চিত্র রোহিতপুর ইউনিয়নের রোহিতপুর বাজার, ধর্মশুর ও বালুয়াটেক এলাকায়। রোহিতপুর বাজারের তিন রাস্তা মোড়, সান প্লাজার সামনে সামান্য জায়গায় চার-পাঁচটি বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। বালুয়াটেক গ্রামে প্রায় ২০ গজ জায়গা জুড়ে নিচু ও ভাঙা রাস্তা সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি এলেই এই সড়কে সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগ, ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

রোহিতপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ভূইয়া ও শাহজালাল জানান, স্থানীয়ভাবে নিজেরা অর্থ ব্যয়ে কয়েকবার সংস্কার করলেও বৃষ্টিতে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে রাস্তা। চোখের সামনেই প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে, বড় ট্রাক বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে।

কানারচর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, রাস্তার এমন বাজে অবস্থা আগে দেখিনি, দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবে রাস্তা পড়ে আছে অথচ দেখার যেনো কেউ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাটু সমান পানি জমে, মাঝে মাঝেই রিকশা উল্টে মারাত্মক আহত হন চালক ও যাত্রীরা। আমরা দ্রুত সময় রাস্তার সংস্কার চাই।

রিকশাচালক মতিন মিয়া বলেন, ভাঙা রাস্তায় রিকশার চাকা ভেঙে যায়, যাত্রী পড়ে যায়, তাই এখন আর এই পথে যেতে চাই না।

ইকবাল হোসেন নামে আরেকজন জানান, সামান্য এই ভাঙা রাস্তার কারণে লাখো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর সড়কের চার লেন করার কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে, তবে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে। কানারচর, আলিপুর-জালাল মেম্বার-জগন্নাথপুর এবং রোহিতপুর-ধর্মশুর-বালুয়াটেক অংশগুলো সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।


সরিষাবাড়ীতে ভিজিডি কার্ডে পচা চাল বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ভিজিডির বরাদ্দে দূর্গন্ধযুক্ত ও পচা চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার দুপুরে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৪৫৬ জন দুঃস্থ ও অসহায় ভিজিডির কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এসময় দেখা যায় দুর্গন্ধযুক্ত পচা ও জমাটবাধা চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এসময় পচা ও নিম্নমানের চাল পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুবিধাভোগীরা।

জানা যায়, পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৪৫৬ জন ভিজিডি কার্ডধারীদের জন্য দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৩ মাস পর ইউনিয়ন পরিষদ গোডাউন থেকে ৩০ কেজি করে ৩ বস্তা চাল উত্তোলন করেন কার্ডধারীরা। এসময় গোডাউনে জমাট বাধা পচা চাল বিতরণ করতে দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কার্ডধারী বলেন, ‘লালচে, দুর্গন্ধযুক্ত ও অনেকটা পচা এই চাল মানুষ কেন কোনো পশুরও খাওয়ার যোগ্য না। এসব চাল খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। এক রকম বাধ্য হয়েই নিতে হচ্ছে।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়া বলেন, খাদ্যগুদাম থেকে চালের বস্তা গুলো সরবরাহ করা হয়। এ মাসে ৩ মাসের চাল একবারে দিয়েছে। ফলে সব বস্তা দেখে নেওয়া সম্ভব হয় না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।


সাতক্ষীরার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার প্রশাসনের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, জেলার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মিজ আফরোজা আখতার। গত শনিবার মধ্যরাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তার এ নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়।

মিজ আফরোজা আখতার বর্তমানে পাবনা ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক এই প্রশাসনিক রদবদলের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরাসহ দেশের ১৫টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালী, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জ, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুর, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকা, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধা এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জ, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুর, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাট, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়া এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে পুরুষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনে এবার প্রথমবারের মতো একজন নারী সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যেটি জেলার নারী নেতৃত্বের অগ্রযাত্রায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।


ভারতে আটক ৩ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল বিএসএফ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তেতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা শূন্যরেখা সীমান্ত দিয়ে তিন বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গত রোববার বিকেলে উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ি সীমান্তের মেইন পিলার ৭৩২ এর ১ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে তাদের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হয়।

তিন বাংলাদেশি হলেন, সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার পদমপাল এলাকার অনন্ত কুমার ভৌমিক (২৮), তার স্ত্রী চৈতি রানী (২৩) ও তিন বছর বয়সী শিশু অরন্য কুমার ভৌমিক। এ সময় দুই বাহিনীর পাঁচজন করে সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবি জানায়, কিছুদিন আগে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ফুলবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাংলাবান্ধা কোম্পানি কমান্ডারকে অবহিত করেন যে, তিনজন বাংলাদেশি নাগরিককে বিএসএফ আটক করেছে। বিএসএফ তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে তারা আনুমানিক একবছর আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। বিএসএফ ফেরত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশি নাগরিক হলে তাদের গ্রহণ করা হবে বলে বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডারকে আশ্বস্থ করেন।

পরে বিএসএফের হাতে আটকৃত ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা মোতাবেক তাদের পরিবারের সাথে পুলিশ বিজিবির যোগাযোগ করে এবং বাংলাদেশি নাগরিক নিশ্চিত হওয়ায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।

পরে আটককৃতদের জিডিমূলে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে সোমবার সকালে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আটককৃতদের আত্নীয়দের সাথে যোগাযোগ করে হস্তান্তর করা হবে।


প্রশিক্ষিত তরুণরাই হবে উন্নত বাংলাদেশের ভিত্তি: আনসার-ভিডিপি মহাপরিচালক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেছেন, মেধা, যোগ্যতা ও অপ্রতিরোধ্য তারুণ্যের শক্তিতে বলীয়ান কর্মমুখী তরুণ প্রজন্মই একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র কাঠামোর ভিত্তি। তিনি জানান, আনসার ও ভিডিপির প্রশিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে জাতির এই অগ্রযাত্রায় অবদান রাখবে। রাজধানীর সাভার উপজেলার গোকুলনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভিডিপি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তিনি গাজীপুর মহানগরের ছোট দেওড়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভিডিপি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সফরকালে তিনি জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়, গাজীপুর ও পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনে দিকনির্দেশনা দেন।

ভিডিপি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে মহাপরিচালক বলেন, “এই প্রশিক্ষণের লক্ষ্য কেবল জ্ঞান অর্জন নয়; বরং অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে একজন তরুণ যেন গণপ্রতিরক্ষায় ভুমিকা রাখার পাশাপাশি সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ও কর্মসংস্হানের ব্যবস্হা করতে পারে— সেটিই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”

তিনি আরও বলেন, আনসার ও ভিডিপির প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা এখন সময়োপযোগী ও কর্মমুখী কাঠামোতে পুনর্গঠিত হয়েছে, যাতে তরুণ প্রজন্ম নিজস্ব জীবিকা মানন্নোয়নে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অভিযাত্রায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, “নির্বাচনকালীন সময়ে যেকোনো অপতৎপরতা বা ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা এবং ভোটকেন্দ্রসমূহের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করবে।”

তিনি আরও বলেন, আনসার ও ভিডিপি রাষ্ট্র পরিকল্পিত নিরাপত্তা বলয়ের অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ ও পেশাদার দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বাহিনীর সকল সদস্যকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত থেকে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। জাতীয় উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় আনসার-ভিডিপির অবদান আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। মহাপরিচালকের এ সফর বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ববোধ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পেশাদারিত্ব ও দেশপ্রেমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

উক্ত সফরে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিচালক জনাব মোঃ আশরাফুল আলম; জেলা কমান্ড্যান্ট, ঢাকা: মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ; জেলা কমান্ড্যান্ট,গাজীপুর: ফারুক আহম্মেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।


মাদারীপুরে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি, ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি

ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে নদী পাড়ের মানুষ
আড়িয়ালখাঁ ও কুমার নদীর উত্তর মহিষেরচর গ্রামে এভাবে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি একটি চক্র।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফায়েজুল কবীর, মাদারীপুর

মাদারীপুর সদর উপজেলা ও শহরে উপকন্ঠে আড়িয়ালখাঁ ও কুমার নদীপাড়ের মাটি অবৈধভাবে কেটে অন্যত্র তা বিক্রি করে ফসলি জমির ক্ষতি করছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিভিন্ন ফসলসহ নদীর তীরবর্তী সাধারণ কৃষকরা, ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন, ভাঙ্গণের ঝুঁকিতে রয়েছে নদীরপাড়বাসী ও বসতবাড়ী। প্রতিদিন রাতের আঁধারে ও ভোরে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটের ভাটা সহ মাটি ক্রেতাদের কাছে ও বিভিন্ন জায়গায়- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে এর সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফসলি জমির সাথে ক্ষতি হচ্ছে ফসল, আর নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ী হারানোর ঝুঁকিতে এলাকার মানুষ।

মাদারীপুর সদর উপজেলা পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর গ্রামের ইলিয়াস চৌকিদার নদীর মাটি কাটা ও বিক্রি করছে অভিযোগ রয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার মাটি কাটার কাজে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে মাঝে-মধ্যে বন্ধ রাখলেও আবারও চলতে থাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইলিয়াস চৌকিদার তার নিজস্ব লোকজন নিয়ে কখনো রাতের আঁধারে আবার কখনো ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মাটি কেটে ট্রলারে করে নৌপথে সেই মাটি নিয়ে যাচ্ছেন অন্যত্র। প্রথমে তার নিজস্ব জমি থেকে মাটি কাটলেও পরবর্তীতে স্থানীয় খলিল চৌকিদার, বাবুল চৌকিদারের জমি থেকেও মাটি কাটা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। নদীর পাড়ে মাটি কাটার কারণে বড়-বড় গর্ত হয়ে গেছে। এর ফলে পাশে থাকা স্থানীয় কাদের সরদারের লাউগাছ , লাল শাক, টমেটো, করলাসহ তার সবজির ক্ষেত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। হুমকিতে রয়েছে মিন্টু সরদারের বসতবাড়িও।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, আড়িয়ালখাঁ ও কুমার নদীর উত্তর মহিষেরচর গ্রামের দুটি স্থানে, একই ইউনিয়নের কাতলা বাহেরচরে দুটি স্থানসহ জেলার কমপক্ষে ২০টি স্থানে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মাটি বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে ইটভাটায়।

উত্তর মহিষেরচর শিকদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আলমগীর শিকদার বলেন, রাতের আঁধারে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করায় হুমকি দিয়েছেন।

একই গ্রামের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান সাইফ বলেন, আমরা বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারপরও মাটি চুরি থামানো যায়নি। প্রায় প্রতিদিন রাতের আঁধারেই তারা ট্রলারে করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। মাটি কাটা বন্ধ না হলে পুরো গ্রামটি হুমকির মধ্যে পড়বে।

আরেক বাসিন্দা মিন্টু সরদার বলেন, প্রতিদিন রাতেই এখান থেকে মাটি চুরি করে নিয়ে যায় তারা। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। আমরা এর প্রতিকার চাই।

একই এলাকার কাদের সরদার বলেন, আমার ফসলি জমির পাশে থেকেই মাটি কাটা হয়েছে এবং এতে আমার জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এরকম অনেকের জমি হুমকির মধ্যে রয়েছে।

স্থানীয় বাবুল চৌকিদার বলেন, আমার প্রায় তিন কাঠা জমি থেকে জোর করে ও রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে গেছেন ইলিয়াস চৌকিদার। আরেক ভুক্তভোগী খলিল চৌকিদার বলেন, আমার জমি থেকেও চুরি মাটি কেটে নিয়ে গেছে ইলিয়াস চৌকিদার গংরা। এতে আমার জমি হুমকির মুখে আছে।

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ যথাক্রমে- মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর ও অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেল জানান, নদীর তলদেশ থেকে সরকারি অনুমোদন ব্যতিরেকে মাটি বা বালূ উত্তোলন করা, খনন করা মারাত্মক ফৌজদারী অপরাধ।

এ ব্যাপরে ইলিয়াস চৌকিদার বলেন, আমি আগে কয়েকবার মাটি কেটেছি কিন্তু এখন আর কাটি না। তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এহেন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী, স্থীনীয় জনগন, নদীবাঁচাও আন্দোলন, মাদারীপুর জেলা শাখা ও সচেতন মহল মনে করে, অবিলম্বে জড়িতদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনকে থেকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে জোড় দাবি জানান।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল ও মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি অবৈধ মাটি খনন বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রয়োগ ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক আফসানা বিলকিস বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, যারা নদ-নদীর মাটি কাটছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।


‘‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান, জরিমানা আদায়’’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ০৯ নভেম্বর (রবিবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মিল্টন রায়, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিপণন বিভাগ-১ আওতাধীন নাসিরুদ্দিন সড়ক, দনিয়া, কদমতলী, ঢাকা, মদিনা ট্যাংক গলি, লন্ডন মার্কেট, সানারপাড়, সিদ্ধিরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আল রাব্বি ওয়াশিং ও ভাই ভাই ওয়াশিং সার্ভিস নামক প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ২" এমএস পাইপের আনুমানিক ৬০০ মিটার অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের এমএস পাইপ-১৫৫ফুট, বিভিন্ন ব্যাসের প্লাস্টিক পাইপ- ২০০ফুট, বুস্টার -২টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করার কারণে ভাই ভাই ওয়াশিং সার্ভিস নামক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১,০০০০০/- (এক লক্ষ) টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

একই দিনে, জনাব রাশেদ খান, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিপণন বিভাগ- রুপগঞ্জ, জোবিঅ -আড়াইহাজার আওতাধীন ঝাউগড়া (দক্ষিণপাড়া), নাগেরচর (মুকুন্দি) ও কৃষ্ণপুড়া, আড়াই হাজার, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ১,২০০টি বাড়ীর ১,৫০০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৩,১০০ ফুট এমএস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, নাগেরচর, আড়াইহাজার এলাকায় অবৈধভাবে চুনা কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে ২" ডায়া বিশিষ্ট পাইপ স্থাপন করায় সমস্ত পাইপ টুকরো করত: জব্দ করা হয়েছে।

এছাড়া, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-সাভার, জোবিঅ-আশুলিয়া আওতাধীন গোরাট পাকার মাথা, ইউসুফ মার্কেট সংলগ্ন, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকার ২টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৪৫০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৯০০ ফুট এমএস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ১১,৫৫,৯৯৬ টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক জোবিঅ -ফতুল্লা আওতাধীন এপি নীট কটন ডাইং.( ৩০৬০০০৫৬৭) , রয়া ডাইং (৩০৬০০০৩৮১), এডভ্যান্স ওয়ার্ল্ড লি: ( ৩০৬০০০৫৮৮), শাহানুর ট্রেডার্স (৩০৬০০০৫২৮), কদম রসূল ডাইং এন্ড প্রিন্টিং (৩০৬০০০৩৯৭), আজাদ রিফাত ফাইবার্স লি: (৩০৬০০০৫৩৮) আজাদ রিফাত ফাইবার্স লি: (৮০৬০০০৫৩৮) ঢাকা টেক্সটাইল মিলস (৩০৬০০০১৯৭), স্যামসন উইন্টার ওয়্যার লি: (৩০৬০০০৩১৭) ও মুন ফেব্রিক লি: (৩০৬০০০২৫৪) পরিদর্শন করা হয়েছে কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়নি।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৩৯৬টি শিল্প, ৫৩২টি বাণিজ্যিক ও ৭৩,০৯৭টি আবাসিকসহ মোট ৭৪,০২৫টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,৫৮,১৪৬টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ৩১০.৭ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।


সুন্দরবনে কোস্ট গার্ডের দীর্ঘ অভিযানে নিখোঁজ পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ শনিবার ১৪ জন পর্যটক সুন্দরবনের করমজল ভ্রমণের উদ্দেশ্যে জালি বোট যোগে যাত্রা শুরু করে। অতঃপর বোটটি দুপুর ১ টায় সুন্দরবনের ঢাংমারি খাল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে প্রবল ঢেউয়ে বোটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। স্থানীয় বোটের সহায়তায় ১৩ জন টুরিস্টকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ১ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বোটে থাকা জনৈক এক ব্যক্তি বিষয়টি কোস্ট গার্ডকে অবগত করেন।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা ও স্টেশন হারবারিয়া হতে দুইটি উদ্ধারকারী দল কোস্ট গার্ড বোট যোগে অতিদ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং নিখোঁজ পর্যটকের অনুসন্ধানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। চলমান ৩ দিনের ধারাবাহিক অনুসন্ধানের পর অদ্য ১০ নভেম্বর ২০২৫ সোমবার সকাল ৭ টায় কোস্ট গার্ড, মোংলার সাইলো জেটি সংলগ্ন এলাকায় ভাসমান অবস্থায় উক্ত নিখোঁজ পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

উদ্ধারকৃত মৃতদেহ পরবর্তীতে চাঁদপাই নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের সুরক্ষা ও ঝুঁকিমুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


টেকনাফে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ ১ জন মাদক পাচারকারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ রবিবার বিকাল ৪ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ কর্তৃক টেকনাফ থানাধীন কেরুনতলী এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় সন্দেহজনক ১ টি সিএনজি তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয় এবং ১ জন মাদক পাচারকারিকে সিএনজিসহ আটক করা হয়।

জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত পাচারকারির পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


ইলিশের বদলে জালে ধরা পড়ছে পাঙাশ-কোরাল-আইর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ২৫ অক্টোবর মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নদী ও সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গেলেও ভোলার জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। জালে ধরা পড়ছে পাঙাশ, কোরাল, চিংড়ি, আইর, বোয়াল, পোয়াসহ অন্যান্য মাছ। জেলেদের জালে ইলিশের শূন্যস্থান পূরণ করছে এসব মাছ।

সরেজমিনে সদরের মেঘনা নদী তীরবর্তী কাচিয়া কাঠিরমাথা মাছঘাট, ধনিয়া তুলাতুলি মাছঘাট ও শিবপুরের ভোলারখাল মাছঘাট সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জেলে জাল-ট্রলারসহ মাঝিমাল্লা নিয়ে নদীতে ইলিশ শিকারে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নদী থেকে মাছ ধরে তা বিক্রির জন্য নদী তীরবর্তী আড়ৎগুলোতে নিয়ে আসছেন। যার অধিকাংশই পাঙাশ, কোরাল, চিংড়ি ও পোয়া। এসব মাছ জেলেরা আড়তে নিলামে বিক্রি করার পর খরচের হিসেবে মিলিয়ে কেউ হতাশ, আবার কারও মুখে হাসি ফুটছে।

আড়তে বড় সাইজের প্রতি কেজি কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭০০ টাকা, পাঙাশ ৭৫০, আড়াইশ গ্রামের প্রতি কেজি চিংড়ি ১৩৫০ টাকা, আইড় ১৩০০ টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ১১-১২০০ টাকা প্রতি কেজি। ৫-৬০০ গ্রামের প্রতিকেজি ইলিশ ১৭-১৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ২১৫০ টাকা, ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি সাইজের ২৫৫০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ৩৫০০ টাকা।

নদী থেকে মাছ ধরে তা আড়তে এনে বিক্রির পর টাকা গুনছেন মাঝি রফিক ও জামাল। এরপর বসলেন খরচের হিসাব মেলাতে। জানতে চাইলে তারা দুজন বলেন, নদীতে মাছ ধরায় ২২ দিনের সরকারি অভিযান শেষ হইছে। ওই সময় আমরা পুরোপুরি বেকার ছিলাম। অভিযান শেষ হওয়ার পর গত কয়েকদিন গাঙ্গে (নদীতে) গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছি না। তবে পাঙাশ, কোরাল ও আইরসহ অন্যান্য মাছ কিছু পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তা বিক্রি করে কোনোমতে খরচ উঠানোর চেষ্টা করছি। নদীতে মাছ ধরা ছাড়া অন্যকোনো কাজও জানি না। বাধ্য হয়েই নদীতে যেতে হয়।

তারা আরও বলেন, ৪-৬ জন মাঝিসহ রাতের ৩টা বাজে গাঙ্গে গিয়ে জাল ফেলছি। ট্রলারের তেলসহ প্রায় ১৬০০ টাকা খরচ হয়েছে। ৫ পিস ছোট ইলিশ ও ৪ কেজি ওজনের একটা পাঙাশ পেয়েছি। আড়তে এনে বিক্রির পর সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পেয়েছি। মোটামুটি জেলেদের হাতখরচ দিতে পারব।

মো. খলিল ও মোশাররফ মাঝি বলেন, আসলে মূল কথা হচ্ছে আমরা নদীতে যাই ইলিশ ধরার আশায়। বড় সাইজের ১ হালি ইলিশ পেলেই হয়। কিন্তু বড় সাইজের ইলিশ তো দূরের কথা ছোট সাইজের ইলিশও তেমন পাই না। বছরের শুরু থেকে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় গত ছরের দেনা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। বছর শেষ হতে যাচ্ছে, জানিনা শোধ করতে পারব কি না। সামনের দিনে যদি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাই তাহলে দেনা রয়েই যাবে। কবে থেকে আবারও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাব তাও জানা নেই।

তুলাতুলি মাছঘাটের আড়ৎদার ইমতিয়াজ আহমেদ নাসিম ও ভোলারখাল মাছঘাটের আড়ৎদার মো. সুমন বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন ২২ দিন জেলেরা বেকার ছিল, আমাদের আড়ৎও বন্ধ ছিল। কিন্তু অভিযান শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না। মোকাম থেকে দাদন এনে জেলদের দিয়েছি। ইলিশ পাঠানোর জন্য মোকাম থেকে চাপ দিচ্ছে। আশানুরূপ ইলিশ মোকামে পাঠাতে পারছি না। নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় জেলেদের আমরা চাপও দিতে পারছি না। আমরা সব দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত।

মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের পরপরই সাধারণত ইলিশের মৌসুম শেষ হয়ে যায় বলে জানান ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে ইলিশ সমুদ্রে চলে যায়। নদীতে অল্প পরিমাণে ইলিশ আসে। ইলিশের মৌসুম হচ্ছে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর। এ বছর সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে বেশি পরিমাণে পাঙাশ, কোরালসহ অন্যান্য মাছ পাচ্ছে জেলেরা। এতে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশাবাদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।


জেলে নয়, ভিন্ন পেশার মানুষ পেয়েছে বকনা বাছুর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বকনা বাছুর বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে। 'প্রকৃত জেলেরা পায়নি বকনা বাছুর।' এ তথ্যের সূত্র ধরে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেছে দৈনিক বাংলা। ওই বিতরণের তালিকায় নাম ছিলো নিরঞ্জন চন্দ্র দাসের (৫০)। তিনি প্রকৃত জেলে না হলেও পেশায় একজন কাকড়া বিক্রেতা ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, বাছুর হাতে পাওয়ার ১ ঘন্টার মধ্যে তারই এলাকার এক রিকশা চালকের কাছে ১৬ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। এই ঘটনার সত্যতা জানতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডে গিয়ে তার বাড়ীতে ওই বকনা বাছুর সম্পর্কে নিরঞ্জনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বকনা বাছুরটি আমি একজন রিকশা চালকের কাছে পালতে দিয়েছি। বাছুরটি পালন করার মতো কেউ নেই।’ পরক্ষণে তার কাছে ওই রিকশা চালকের নাম ও ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তার নাম জানি না। আপনারা এতো কথা জিজ্ঞাসা করছেন কেনো? এতো ঝামেলা বুঝলে আমি বকনা বাছুর আনতাম না।’

বিতরণের তালিকায় নিরঞ্জনের মতো অন্য পেশার অধিকাংশ মানুষ বকনা বাছুর পেয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই তালিকাটি রাজনৈতিক নেতাদের হাত ধরেই মৎস্য অফিসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। জেলে নয়, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এমন অনিয়মের খোঁজ নিতে গেলে উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে প্রায় শ’খানেক অপ্রকৃত জেলেদের সন্ধান মিলেছে। একই তালিকায় মিলেছে জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দাসকান্দি গ্রামের মুদি দোকানী উমেশ তালুকদারের নাম। পেশায় মুদি দোকানী হলেও নাম লেখিয়েছেন জেলে কার্ডে। এই জেলে কার্ড দেখিয়ে পেয়েছেন বকনা বাছুর। সরেজমিনে গিয়ে ওই মুদি দোকানেই তার দেখা মিলেছে।

আপনি জেলে না হয়ে কিভাবে জেলে কার্ড পেলেন ও ওই কার্ড দিয়ে কিভাবে বকনা বাছুর পেলেন? জবাবে উমেশ তালুকদার বলেন, ‘আমি জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডের মৎস্যলীগের সভাপতি ছিলাম। তখন আমার নামে এই জেলে কার্ডটি হয়েছে। আমি কখনোই জেলে ছিলাম না। আমার কর্মজীবনের শুরু থেকেই ব্যবসা করে আসছি।’

এদিকে জিন্নাগড় ইউনিয়নের কার্ডধারী জেলে জাকির হোসেন, জামাল হোসেন, মনির হোসেন, নুরে আলম, শাহাবুদ্দিন, আবুল বশার, কামাল হোসেন, মফিজুল ইসলামদের জেলে কার্ড থাকলেও জেলে চাল ও বকনা বাছুর পাননি। এমন বিস্তর অভিযোগ তাদের। তাদের মতো মাদ্রাজ ইউনিয়নের কার্ডধারী জেলে ইয়াছিন, তোফায়েল, মোশাররফ হোসেন, বেল্লাল সিকদার ও আমজাদ হোসেনরাও এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সাগরে মাছ শিকার করে আসছেন। প্রতিবছরই নিষেধাজ্ঞায় মাছ শিকার থেকে বিরত থাকেন। তাদের জেলে কার্ড থাকলেও অন্য পেশার মানুষ যারা জেলে নয়, এমন কিছু লোক বকনা বাছুর ও নির্দিষ্ট স্লিপে চাল পান।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে পৌরসভাসহ ২১ ইউনিয়নে ১৭৪ জন তালিকাভুক্ত জেলেদের মাঝে ৪ কিস্তিতে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানায়, মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রান্তিক জেলেদের মাঝে উপকরণ হিসাবে গরু (বকনা বাছুর) বিতরণ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে, তখন তারা বেকার হয়ে যায়। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার এই উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

সুবিধাভোগীর তালিকায় ওয়ার্ড নম্বর উল্লেখ না থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানেও কোন হদিস পাওয়া যায়নি এবং জেলে নয়, ভিন্ন পেশার মানুষ পেয়েছে বকনা বাছুর! এমন প্রশ্নের জবাবে চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, ‘এই তালিকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধরা দিয়েছে। তবে ওইসব জনপ্রতিনিধিদের নামের তালিকা আমার কাছে সংরক্ষিত নেই।’


banner close