নারায়ণগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।
কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শামিম হোসেন,নাজমুল ও জিলকদ।
আজ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. গোলাম কবির এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।জরিমানা অনাদায়ে তাদের ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাজ্জাত হোসেন সবুজ বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজ এলাকায় লেখাপড়া করতেন। আসামি মো. শামিম হোসেন কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ওই ছাত্রীকে নিয়মিত প্রেমের প্রস্তাব দিতেন ও নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
২০১৬ সালের ১৫ মার্চ সকালে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হন ভুক্তভোগী। আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে কলেজের মেইন গেটের সামনে পৌঁছালে মো. শামিম, তার সহযোগী মো. নাজমুল, মো. জিলকদ এবং আরও এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে। এরপর তারা পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ১৭ মার্চ ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে আটজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
রাজধানী ঢাকাকে পাশ কাটিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর আঞ্চলিক সড়ক। বিশেষ করে মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরিগুলো ঢাকায় প্রবেশে বাধ্যবাধকতা থাকায় এই রাস্তায় ২৪ ঘণ্টাই নির্বিঘ্নে যান চলাচল করে। দীর্ঘ যানজট, পথে পথে বাঁধা আর সংক্ষিপ্ত দূরত্ব হওয়ায় লাখো মানুষের ভরসা এই সড়ক। সরু হলেও এটি চালকদের প্রথম পছন্দের রাস্তায় পরিণত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত, ভাঙন ও ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যান চলাচল ধীরগতির পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছে, ফলে চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মূল্যবান সময় এবং অতিরিক্ত অর্থের অপচয় হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের কানারচর থেকে ঝাউচর পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। এক কিলোমিটার রাস্তায় তিন-চার জায়গায় এমন বিপজ্জনক গর্ত রয়েছে যেখানে প্রায়ই যানবাহন উল্টে যায়, চালক ও যাত্রী আহত হন। বড় যানবাহনগুলো পার্স গেং বা যান্ত্রিক ত্রুটিতে অকেজো হয়ে মাঝেমধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়, ফলে সৃষ্ট হয় দীর্ঘ যানজট।
আলিপুর ব্রিজ থেকে জালাল মেম্বারের বাড়ি হয়ে জগন্নাথপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাতেও ছড়িয়ে আছে ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙন। বিশেষ করে অসুস্থ, গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্করা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করেন।
একই চিত্র রোহিতপুর ইউনিয়নের রোহিতপুর বাজার, ধর্মশুর ও বালুয়াটেক এলাকায়। রোহিতপুর বাজারের তিন রাস্তা মোড়, সান প্লাজার সামনে সামান্য জায়গায় চার-পাঁচটি বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। বালুয়াটেক গ্রামে প্রায় ২০ গজ জায়গা জুড়ে নিচু ও ভাঙা রাস্তা সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি এলেই এই সড়কে সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগ, ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
রোহিতপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ভূইয়া ও শাহজালাল জানান, স্থানীয়ভাবে নিজেরা অর্থ ব্যয়ে কয়েকবার সংস্কার করলেও বৃষ্টিতে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে রাস্তা। চোখের সামনেই প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে, বড় ট্রাক বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে।
কানারচর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, রাস্তার এমন বাজে অবস্থা আগে দেখিনি, দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবে রাস্তা পড়ে আছে অথচ দেখার যেনো কেউ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাটু সমান পানি জমে, মাঝে মাঝেই রিকশা উল্টে মারাত্মক আহত হন চালক ও যাত্রীরা। আমরা দ্রুত সময় রাস্তার সংস্কার চাই।
রিকশাচালক মতিন মিয়া বলেন, ভাঙা রাস্তায় রিকশার চাকা ভেঙে যায়, যাত্রী পড়ে যায়, তাই এখন আর এই পথে যেতে চাই না।
ইকবাল হোসেন নামে আরেকজন জানান, সামান্য এই ভাঙা রাস্তার কারণে লাখো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর সড়কের চার লেন করার কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে, তবে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে। কানারচর, আলিপুর-জালাল মেম্বার-জগন্নাথপুর এবং রোহিতপুর-ধর্মশুর-বালুয়াটেক অংশগুলো সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ভিজিডির বরাদ্দে দূর্গন্ধযুক্ত ও পচা চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৪৫৬ জন দুঃস্থ ও অসহায় ভিজিডির কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এসময় দেখা যায় দুর্গন্ধযুক্ত পচা ও জমাটবাধা চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এসময় পচা ও নিম্নমানের চাল পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুবিধাভোগীরা।
জানা যায়, পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৪৫৬ জন ভিজিডি কার্ডধারীদের জন্য দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৩ মাস পর ইউনিয়ন পরিষদ গোডাউন থেকে ৩০ কেজি করে ৩ বস্তা চাল উত্তোলন করেন কার্ডধারীরা। এসময় গোডাউনে জমাট বাধা পচা চাল বিতরণ করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কার্ডধারী বলেন, ‘লালচে, দুর্গন্ধযুক্ত ও অনেকটা পচা এই চাল মানুষ কেন কোনো পশুরও খাওয়ার যোগ্য না। এসব চাল খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। এক রকম বাধ্য হয়েই নিতে হচ্ছে।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়া বলেন, খাদ্যগুদাম থেকে চালের বস্তা গুলো সরবরাহ করা হয়। এ মাসে ৩ মাসের চাল একবারে দিয়েছে। ফলে সব বস্তা দেখে নেওয়া সম্ভব হয় না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরার প্রশাসনের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, জেলার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মিজ আফরোজা আখতার। গত শনিবার মধ্যরাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তার এ নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মিজ আফরোজা আখতার বর্তমানে পাবনা ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক এই প্রশাসনিক রদবদলের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরাসহ দেশের ১৫টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালী, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জ, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুর, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকা, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধা এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জ, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুর, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাট, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়া এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পুরুষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনে এবার প্রথমবারের মতো একজন নারী সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যেটি জেলার নারী নেতৃত্বের অগ্রযাত্রায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা শূন্যরেখা সীমান্ত দিয়ে তিন বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গত রোববার বিকেলে উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ি সীমান্তের মেইন পিলার ৭৩২ এর ১ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে তাদের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হয়।
তিন বাংলাদেশি হলেন, সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার পদমপাল এলাকার অনন্ত কুমার ভৌমিক (২৮), তার স্ত্রী চৈতি রানী (২৩) ও তিন বছর বয়সী শিশু অরন্য কুমার ভৌমিক। এ সময় দুই বাহিনীর পাঁচজন করে সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি জানায়, কিছুদিন আগে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ফুলবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাংলাবান্ধা কোম্পানি কমান্ডারকে অবহিত করেন যে, তিনজন বাংলাদেশি নাগরিককে বিএসএফ আটক করেছে। বিএসএফ তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে তারা আনুমানিক একবছর আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। বিএসএফ ফেরত নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশি নাগরিক হলে তাদের গ্রহণ করা হবে বলে বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডারকে আশ্বস্থ করেন।
পরে বিএসএফের হাতে আটকৃত ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা মোতাবেক তাদের পরিবারের সাথে পুলিশ বিজিবির যোগাযোগ করে এবং বাংলাদেশি নাগরিক নিশ্চিত হওয়ায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।
পরে আটককৃতদের জিডিমূলে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে সোমবার সকালে তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আটককৃতদের আত্নীয়দের সাথে যোগাযোগ করে হস্তান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেছেন, মেধা, যোগ্যতা ও অপ্রতিরোধ্য তারুণ্যের শক্তিতে বলীয়ান কর্মমুখী তরুণ প্রজন্মই একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র কাঠামোর ভিত্তি। তিনি জানান, আনসার ও ভিডিপির প্রশিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে জাতির এই অগ্রযাত্রায় অবদান রাখবে। রাজধানীর সাভার উপজেলার গোকুলনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভিডিপি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরে তিনি গাজীপুর মহানগরের ছোট দেওড়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভিডিপি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সফরকালে তিনি জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়, গাজীপুর ও পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনে দিকনির্দেশনা দেন।
ভিডিপি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে মহাপরিচালক বলেন, “এই প্রশিক্ষণের লক্ষ্য কেবল জ্ঞান অর্জন নয়; বরং অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে একজন তরুণ যেন গণপ্রতিরক্ষায় ভুমিকা রাখার পাশাপাশি সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ও কর্মসংস্হানের ব্যবস্হা করতে পারে— সেটিই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
তিনি আরও বলেন, আনসার ও ভিডিপির প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা এখন সময়োপযোগী ও কর্মমুখী কাঠামোতে পুনর্গঠিত হয়েছে, যাতে তরুণ প্রজন্ম নিজস্ব জীবিকা মানন্নোয়নে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অভিযাত্রায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, “নির্বাচনকালীন সময়ে যেকোনো অপতৎপরতা বা ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা এবং ভোটকেন্দ্রসমূহের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করবে।”
তিনি আরও বলেন, আনসার ও ভিডিপি রাষ্ট্র পরিকল্পিত নিরাপত্তা বলয়ের অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে নিরপেক্ষ ও পেশাদার দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বাহিনীর সকল সদস্যকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত থেকে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। জাতীয় উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় আনসার-ভিডিপির অবদান আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। মহাপরিচালকের এ সফর বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ববোধ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পেশাদারিত্ব ও দেশপ্রেমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
উক্ত সফরে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিচালক জনাব মোঃ আশরাফুল আলম; জেলা কমান্ড্যান্ট, ঢাকা: মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদ; জেলা কমান্ড্যান্ট,গাজীপুর: ফারুক আহম্মেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
মাদারীপুর সদর উপজেলা ও শহরে উপকন্ঠে আড়িয়ালখাঁ ও কুমার নদীপাড়ের মাটি অবৈধভাবে কেটে অন্যত্র তা বিক্রি করে ফসলি জমির ক্ষতি করছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিভিন্ন ফসলসহ নদীর তীরবর্তী সাধারণ কৃষকরা, ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন, ভাঙ্গণের ঝুঁকিতে রয়েছে নদীরপাড়বাসী ও বসতবাড়ী। প্রতিদিন রাতের আঁধারে ও ভোরে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটের ভাটা সহ মাটি ক্রেতাদের কাছে ও বিভিন্ন জায়গায়- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে এর সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফসলি জমির সাথে ক্ষতি হচ্ছে ফসল, আর নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ী হারানোর ঝুঁকিতে এলাকার মানুষ।
মাদারীপুর সদর উপজেলা পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর গ্রামের ইলিয়াস চৌকিদার নদীর মাটি কাটা ও বিক্রি করছে অভিযোগ রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার মাটি কাটার কাজে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে মাঝে-মধ্যে বন্ধ রাখলেও আবারও চলতে থাকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইলিয়াস চৌকিদার তার নিজস্ব লোকজন নিয়ে কখনো রাতের আঁধারে আবার কখনো ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মাটি কেটে ট্রলারে করে নৌপথে সেই মাটি নিয়ে যাচ্ছেন অন্যত্র। প্রথমে তার নিজস্ব জমি থেকে মাটি কাটলেও পরবর্তীতে স্থানীয় খলিল চৌকিদার, বাবুল চৌকিদারের জমি থেকেও মাটি কাটা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। নদীর পাড়ে মাটি কাটার কারণে বড়-বড় গর্ত হয়ে গেছে। এর ফলে পাশে থাকা স্থানীয় কাদের সরদারের লাউগাছ , লাল শাক, টমেটো, করলাসহ তার সবজির ক্ষেত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। হুমকিতে রয়েছে মিন্টু সরদারের বসতবাড়িও।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, আড়িয়ালখাঁ ও কুমার নদীর উত্তর মহিষেরচর গ্রামের দুটি স্থানে, একই ইউনিয়নের কাতলা বাহেরচরে দুটি স্থানসহ জেলার কমপক্ষে ২০টি স্থানে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মাটি বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে ইটভাটায়।
উত্তর মহিষেরচর শিকদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আলমগীর শিকদার বলেন, রাতের আঁধারে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করায় হুমকি দিয়েছেন।
একই গ্রামের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান সাইফ বলেন, আমরা বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারপরও মাটি চুরি থামানো যায়নি। প্রায় প্রতিদিন রাতের আঁধারেই তারা ট্রলারে করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। মাটি কাটা বন্ধ না হলে পুরো গ্রামটি হুমকির মধ্যে পড়বে।
আরেক বাসিন্দা মিন্টু সরদার বলেন, প্রতিদিন রাতেই এখান থেকে মাটি চুরি করে নিয়ে যায় তারা। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। আমরা এর প্রতিকার চাই।
একই এলাকার কাদের সরদার বলেন, আমার ফসলি জমির পাশে থেকেই মাটি কাটা হয়েছে এবং এতে আমার জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এরকম অনেকের জমি হুমকির মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় বাবুল চৌকিদার বলেন, আমার প্রায় তিন কাঠা জমি থেকে জোর করে ও রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে গেছেন ইলিয়াস চৌকিদার। আরেক ভুক্তভোগী খলিল চৌকিদার বলেন, আমার জমি থেকেও চুরি মাটি কেটে নিয়ে গেছে ইলিয়াস চৌকিদার গংরা। এতে আমার জমি হুমকির মুখে আছে।
বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ যথাক্রমে- মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক শরীফ মো. ফায়েজুল কবীর ও অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেল জানান, নদীর তলদেশ থেকে সরকারি অনুমোদন ব্যতিরেকে মাটি বা বালূ উত্তোলন করা, খনন করা মারাত্মক ফৌজদারী অপরাধ।
এ ব্যাপরে ইলিয়াস চৌকিদার বলেন, আমি আগে কয়েকবার মাটি কেটেছি কিন্তু এখন আর কাটি না। তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এহেন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী, স্থীনীয় জনগন, নদীবাঁচাও আন্দোলন, মাদারীপুর জেলা শাখা ও সচেতন মহল মনে করে, অবিলম্বে জড়িতদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনকে থেকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে জোড় দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল ও মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি অবৈধ মাটি খনন বন্ধে জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রয়োগ ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক আফসানা বিলকিস বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, যারা নদ-নদীর মাটি কাটছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ০৯ নভেম্বর (রবিবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মিল্টন রায়, সিনিয়র সহকারী সচিব ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর মেট্রো ঢাকা বিপণন বিভাগ-১ আওতাধীন নাসিরুদ্দিন সড়ক, দনিয়া, কদমতলী, ঢাকা, মদিনা ট্যাংক গলি, লন্ডন মার্কেট, সানারপাড়, সিদ্ধিরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আল রাব্বি ওয়াশিং ও ভাই ভাই ওয়াশিং সার্ভিস নামক প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ২" এমএস পাইপের আনুমানিক ৬০০ মিটার অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের এমএস পাইপ-১৫৫ফুট, বিভিন্ন ব্যাসের প্লাস্টিক পাইপ- ২০০ফুট, বুস্টার -২টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। উক্ত অভিযানে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করার কারণে ভাই ভাই ওয়াশিং সার্ভিস নামক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১,০০০০০/- (এক লক্ষ) টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব রাশেদ খান, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিপণন বিভাগ- রুপগঞ্জ, জোবিঅ -আড়াইহাজার আওতাধীন ঝাউগড়া (দক্ষিণপাড়া), নাগেরচর (মুকুন্দি) ও কৃষ্ণপুড়া, আড়াই হাজার, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ১,২০০টি বাড়ীর ১,৫০০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৩,১০০ ফুট এমএস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, নাগেরচর, আড়াইহাজার এলাকায় অবৈধভাবে চুনা কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে ২" ডায়া বিশিষ্ট পাইপ স্থাপন করায় সমস্ত পাইপ টুকরো করত: জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-সাভার, জোবিঅ-আশুলিয়া আওতাধীন গোরাট পাকার মাথা, ইউসুফ মার্কেট সংলগ্ন, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা এলাকার ২টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ৪৫০টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ৯০০ ফুট এমএস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ১১,৫৫,৯৯৬ টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক জোবিঅ -ফতুল্লা আওতাধীন এপি নীট কটন ডাইং.( ৩০৬০০০৫৬৭) , রয়া ডাইং (৩০৬০০০৩৮১), এডভ্যান্স ওয়ার্ল্ড লি: ( ৩০৬০০০৫৮৮), শাহানুর ট্রেডার্স (৩০৬০০০৫২৮), কদম রসূল ডাইং এন্ড প্রিন্টিং (৩০৬০০০৩৯৭), আজাদ রিফাত ফাইবার্স লি: (৩০৬০০০৫৩৮) আজাদ রিফাত ফাইবার্স লি: (৮০৬০০০৫৩৮) ঢাকা টেক্সটাইল মিলস (৩০৬০০০১৯৭), স্যামসন উইন্টার ওয়্যার লি: (৩০৬০০০৩১৭) ও মুন ফেব্রিক লি: (৩০৬০০০২৫৪) পরিদর্শন করা হয়েছে কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়নি।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ৩৯৬টি শিল্প, ৫৩২টি বাণিজ্যিক ও ৭৩,০৯৭টি আবাসিকসহ মোট ৭৪,০২৫টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,৫৮,১৪৬টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ৩১০.৭ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ শনিবার ১৪ জন পর্যটক সুন্দরবনের করমজল ভ্রমণের উদ্দেশ্যে জালি বোট যোগে যাত্রা শুরু করে। অতঃপর বোটটি দুপুর ১ টায় সুন্দরবনের ঢাংমারি খাল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে প্রবল ঢেউয়ে বোটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। স্থানীয় বোটের সহায়তায় ১৩ জন টুরিস্টকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ১ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বোটে থাকা জনৈক এক ব্যক্তি বিষয়টি কোস্ট গার্ডকে অবগত করেন।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা ও স্টেশন হারবারিয়া হতে দুইটি উদ্ধারকারী দল কোস্ট গার্ড বোট যোগে অতিদ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং নিখোঁজ পর্যটকের অনুসন্ধানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। চলমান ৩ দিনের ধারাবাহিক অনুসন্ধানের পর অদ্য ১০ নভেম্বর ২০২৫ সোমবার সকাল ৭ টায় কোস্ট গার্ড, মোংলার সাইলো জেটি সংলগ্ন এলাকায় ভাসমান অবস্থায় উক্ত নিখোঁজ পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধারকৃত মৃতদেহ পরবর্তীতে চাঁদপাই নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের সুরক্ষা ও ঝুঁকিমুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ রবিবার বিকাল ৪ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ কর্তৃক টেকনাফ থানাধীন কেরুনতলী এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় সন্দেহজনক ১ টি সিএনজি তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয় এবং ১ জন মাদক পাচারকারিকে সিএনজিসহ আটক করা হয়।
জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত পাচারকারির পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গত ২৫ অক্টোবর মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নদী ও সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গেলেও ভোলার জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। জালে ধরা পড়ছে পাঙাশ, কোরাল, চিংড়ি, আইর, বোয়াল, পোয়াসহ অন্যান্য মাছ। জেলেদের জালে ইলিশের শূন্যস্থান পূরণ করছে এসব মাছ।
সরেজমিনে সদরের মেঘনা নদী তীরবর্তী কাচিয়া কাঠিরমাথা মাছঘাট, ধনিয়া তুলাতুলি মাছঘাট ও শিবপুরের ভোলারখাল মাছঘাট সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো জেলে জাল-ট্রলারসহ মাঝিমাল্লা নিয়ে নদীতে ইলিশ শিকারে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নদী থেকে মাছ ধরে তা বিক্রির জন্য নদী তীরবর্তী আড়ৎগুলোতে নিয়ে আসছেন। যার অধিকাংশই পাঙাশ, কোরাল, চিংড়ি ও পোয়া। এসব মাছ জেলেরা আড়তে নিলামে বিক্রি করার পর খরচের হিসেবে মিলিয়ে কেউ হতাশ, আবার কারও মুখে হাসি ফুটছে।
আড়তে বড় সাইজের প্রতি কেজি কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০-৭০০ টাকা, পাঙাশ ৭৫০, আড়াইশ গ্রামের প্রতি কেজি চিংড়ি ১৩৫০ টাকা, আইড় ১৩০০ টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ১১-১২০০ টাকা প্রতি কেজি। ৫-৬০০ গ্রামের প্রতিকেজি ইলিশ ১৭-১৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ২১৫০ টাকা, ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি সাইজের ২৫৫০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ৩৫০০ টাকা।
নদী থেকে মাছ ধরে তা আড়তে এনে বিক্রির পর টাকা গুনছেন মাঝি রফিক ও জামাল। এরপর বসলেন খরচের হিসাব মেলাতে। জানতে চাইলে তারা দুজন বলেন, নদীতে মাছ ধরায় ২২ দিনের সরকারি অভিযান শেষ হইছে। ওই সময় আমরা পুরোপুরি বেকার ছিলাম। অভিযান শেষ হওয়ার পর গত কয়েকদিন গাঙ্গে (নদীতে) গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছি না। তবে পাঙাশ, কোরাল ও আইরসহ অন্যান্য মাছ কিছু পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তা বিক্রি করে কোনোমতে খরচ উঠানোর চেষ্টা করছি। নদীতে মাছ ধরা ছাড়া অন্যকোনো কাজও জানি না। বাধ্য হয়েই নদীতে যেতে হয়।
তারা আরও বলেন, ৪-৬ জন মাঝিসহ রাতের ৩টা বাজে গাঙ্গে গিয়ে জাল ফেলছি। ট্রলারের তেলসহ প্রায় ১৬০০ টাকা খরচ হয়েছে। ৫ পিস ছোট ইলিশ ও ৪ কেজি ওজনের একটা পাঙাশ পেয়েছি। আড়তে এনে বিক্রির পর সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পেয়েছি। মোটামুটি জেলেদের হাতখরচ দিতে পারব।
মো. খলিল ও মোশাররফ মাঝি বলেন, আসলে মূল কথা হচ্ছে আমরা নদীতে যাই ইলিশ ধরার আশায়। বড় সাইজের ১ হালি ইলিশ পেলেই হয়। কিন্তু বড় সাইজের ইলিশ তো দূরের কথা ছোট সাইজের ইলিশও তেমন পাই না। বছরের শুরু থেকে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় গত ছরের দেনা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। বছর শেষ হতে যাচ্ছে, জানিনা শোধ করতে পারব কি না। সামনের দিনে যদি কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাই তাহলে দেনা রয়েই যাবে। কবে থেকে আবারও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাব তাও জানা নেই।
তুলাতুলি মাছঘাটের আড়ৎদার ইমতিয়াজ আহমেদ নাসিম ও ভোলারখাল মাছঘাটের আড়ৎদার মো. সুমন বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন ২২ দিন জেলেরা বেকার ছিল, আমাদের আড়ৎও বন্ধ ছিল। কিন্তু অভিযান শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না। মোকাম থেকে দাদন এনে জেলদের দিয়েছি। ইলিশ পাঠানোর জন্য মোকাম থেকে চাপ দিচ্ছে। আশানুরূপ ইলিশ মোকামে পাঠাতে পারছি না। নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় জেলেদের আমরা চাপও দিতে পারছি না। আমরা সব দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের পরপরই সাধারণত ইলিশের মৌসুম শেষ হয়ে যায় বলে জানান ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে ইলিশ সমুদ্রে চলে যায়। নদীতে অল্প পরিমাণে ইলিশ আসে। ইলিশের মৌসুম হচ্ছে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর। এ বছর সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে বেশি পরিমাণে পাঙাশ, কোরালসহ অন্যান্য মাছ পাচ্ছে জেলেরা। এতে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশাবাদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বকনা বাছুর বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে। 'প্রকৃত জেলেরা পায়নি বকনা বাছুর।' এ তথ্যের সূত্র ধরে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেছে দৈনিক বাংলা। ওই বিতরণের তালিকায় নাম ছিলো নিরঞ্জন চন্দ্র দাসের (৫০)। তিনি প্রকৃত জেলে না হলেও পেশায় একজন কাকড়া বিক্রেতা ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, বাছুর হাতে পাওয়ার ১ ঘন্টার মধ্যে তারই এলাকার এক রিকশা চালকের কাছে ১৬ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। এই ঘটনার সত্যতা জানতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডে গিয়ে তার বাড়ীতে ওই বকনা বাছুর সম্পর্কে নিরঞ্জনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বকনা বাছুরটি আমি একজন রিকশা চালকের কাছে পালতে দিয়েছি। বাছুরটি পালন করার মতো কেউ নেই।’ পরক্ষণে তার কাছে ওই রিকশা চালকের নাম ও ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তার নাম জানি না। আপনারা এতো কথা জিজ্ঞাসা করছেন কেনো? এতো ঝামেলা বুঝলে আমি বকনা বাছুর আনতাম না।’
বিতরণের তালিকায় নিরঞ্জনের মতো অন্য পেশার অধিকাংশ মানুষ বকনা বাছুর পেয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই তালিকাটি রাজনৈতিক নেতাদের হাত ধরেই মৎস্য অফিসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। জেলে নয়, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এমন অনিয়মের খোঁজ নিতে গেলে উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে প্রায় শ’খানেক অপ্রকৃত জেলেদের সন্ধান মিলেছে। একই তালিকায় মিলেছে জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দাসকান্দি গ্রামের মুদি দোকানী উমেশ তালুকদারের নাম। পেশায় মুদি দোকানী হলেও নাম লেখিয়েছেন জেলে কার্ডে। এই জেলে কার্ড দেখিয়ে পেয়েছেন বকনা বাছুর। সরেজমিনে গিয়ে ওই মুদি দোকানেই তার দেখা মিলেছে।
আপনি জেলে না হয়ে কিভাবে জেলে কার্ড পেলেন ও ওই কার্ড দিয়ে কিভাবে বকনা বাছুর পেলেন? জবাবে উমেশ তালুকদার বলেন, ‘আমি জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডের মৎস্যলীগের সভাপতি ছিলাম। তখন আমার নামে এই জেলে কার্ডটি হয়েছে। আমি কখনোই জেলে ছিলাম না। আমার কর্মজীবনের শুরু থেকেই ব্যবসা করে আসছি।’
এদিকে জিন্নাগড় ইউনিয়নের কার্ডধারী জেলে জাকির হোসেন, জামাল হোসেন, মনির হোসেন, নুরে আলম, শাহাবুদ্দিন, আবুল বশার, কামাল হোসেন, মফিজুল ইসলামদের জেলে কার্ড থাকলেও জেলে চাল ও বকনা বাছুর পাননি। এমন বিস্তর অভিযোগ তাদের। তাদের মতো মাদ্রাজ ইউনিয়নের কার্ডধারী জেলে ইয়াছিন, তোফায়েল, মোশাররফ হোসেন, বেল্লাল সিকদার ও আমজাদ হোসেনরাও এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সাগরে মাছ শিকার করে আসছেন। প্রতিবছরই নিষেধাজ্ঞায় মাছ শিকার থেকে বিরত থাকেন। তাদের জেলে কার্ড থাকলেও অন্য পেশার মানুষ যারা জেলে নয়, এমন কিছু লোক বকনা বাছুর ও নির্দিষ্ট স্লিপে চাল পান।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে পৌরসভাসহ ২১ ইউনিয়নে ১৭৪ জন তালিকাভুক্ত জেলেদের মাঝে ৪ কিস্তিতে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানায়, মৎস্য অধিদপ্তরের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রান্তিক জেলেদের মাঝে উপকরণ হিসাবে গরু (বকনা বাছুর) বিতরণ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে, তখন তারা বেকার হয়ে যায়। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার এই উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
সুবিধাভোগীর তালিকায় ওয়ার্ড নম্বর উল্লেখ না থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানেও কোন হদিস পাওয়া যায়নি এবং জেলে নয়, ভিন্ন পেশার মানুষ পেয়েছে বকনা বাছুর! এমন প্রশ্নের জবাবে চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, ‘এই তালিকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধরা দিয়েছে। তবে ওইসব জনপ্রতিনিধিদের নামের তালিকা আমার কাছে সংরক্ষিত নেই।’
ভোলায় প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে চৈতি রানী (১৯) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে ভোলা জেলা শহরের পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের মোনালিসা গলিতে একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। তার স্বামীর নাম শুভ দাস। নিহত চৈতি রানী পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সঞ্জয় দাসের মেয়ে বলে জানা গেছে।
নিহতের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে প্রবাসী শুভ দাসের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন চৈতি রানী দাস, ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। স্ত্রীকে পরিবারের কাছে রেখে গত দেড় মাস আগে কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ চলে যান শুভ দাস।
শুভ দাসের ভাগ্নি দিপা বলেন, গতকাল রাতে আমার বড় মামার স্ত্রী ও ছোট মামার স্ত্রী চৈতি রানী দুজনে মিলে মার্কেটে গিয়েছিল এবং তারা দুজন বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করছিল এবং কে কি কিনল তা দেখাল, এরপর যে যার রুমে চলে গেল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চৈতি রানীকে ভাত খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। পরে পার্শ্ববর্তী আরও একজন আত্মীয়কে ডেকে এনে শাবল দিয়ে তার রুমের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভেতরে ঢুকলে তাকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে তাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাৎ হাচনাইন পারভেজ বলেন, মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার পর অভিমান করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি, তদন্ত চলছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাগেরহাটের মোংলার পশুর নদীতে দ্রুতগামী বোটের স্রোতের তোড়ে জালিবোট উল্টে নিখোঁজ হওয়া নারী পাইলট রিয়ানাকে ৪৮ ঘণ্টা পরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বন বিভাগ ও স্থানীয় জেলেরা নদীতে তল্লাশি চালালেও ওই নারী প্রবাসীর কোনো খোঁজ মেলেনি।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে। রিয়ানা স্বামীসহ পরিবার নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে ডাংমারী ও পশুর নদীর মিলনস্থলে পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি বোটের ঢেউয়ের তোড়ে তাদের জালিবোটটি উল্টে যায়। পরিবারের অন্য সদস্যরা কোনোমতে সাঁতরে কূল পেয়ে গেলেও রিয়ানা নিখোঁজ হয়ে যান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ রিয়ানা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সাবেক পাইলট ছিলেন। বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। কয়েক দিনের ছুটিতে বাংলাদেশে এসে পরিবারসহ সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়েছিলেন তিনি।
স্বজনরা বলেন, “আমরা এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না রিয়ানাকে হারিয়েছি। নদীর দিকে তাকিয়ে আছি চাতক পাখির মতো— হয়তো সে ফিরে আসবে।”
এদিকে, এ দুর্ঘটনার জন্য দ্রুতগামী বোটচালকদের দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রিয়ানার পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা রেঞ্জের বন বিভাগের কর্মকর্তা সুরজিৎ চৌধুরী বলেন, “নিখোঁজ নারী পাইলট রিয়ানাকে উদ্ধারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার কার্যক্রমে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, নিখোঁজ রিয়ানা আমেরিকা প্রবাসী, একসময় বিমানবাহিনীর পাইলট ছিলেন।
রিয়ানার সন্ধানে এখনো নদীজুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে বন বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা।