সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সুনামগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত

ইউএনবি
প্রকাশিত
ইউএনবি
প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০২৫ ১৬:৫৭

সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। সোমবার (১৯ মে) ভোরে জেলার রাজাপাড়া সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ সামছু মিয়া (২৫) বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চিনাকান্দি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী রাজাপাড়া গ্রামের আব্দুল সাত্তারের ছেলে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুরের রাজাপাড়া সীমান্ত পিলার ১২১১ নম্বর দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে চোরাইপণ্য আনতে যান ৪-৫ জন চোরাকারবারী। এ সময় চিনাকান্দি বিজিবি ক্যাম্পের বিপরীতে ১৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রাজাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে শামসুল গুলিবিদ্ধ হন।

পরে সহকর্মীরা উদ্ধার তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবির অধিনায়ক একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত যুবক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পণ্য আনতে গিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’


টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধ: গুলিবিদ্ধসহ আটক ৩, ইয়াবা অস্ত্র উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৯ মে, ২০২৫ ১৯:০১
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধসহ তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করা হয়েছে। এ সময় ৩০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।

আটকরা হলেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. ইলিয়াস (৩০), নুর মোহাম্মদ (৬১) ও গুলিবিদ্ধ আব্দুল শক্কুর (৪০)। গুলিবিদ্ধ শক্কুরকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাত আড়াইটায় টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের তুলাতলী ঘাটসংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

অভিযানকালে একটি সন্দেহভাজন ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকাকে থামার সংকেত দিলে পাচারকারীরা গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে কোস্ট গার্ড সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এতে এক পাচারকারী গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় এক ঘণ্টার ধাওয়া শেষে নৌকাটি জব্দ করা হয়।

পরে নৌকায় তল্লাশি চালিয়ে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ৯ মি.মি. বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় পাচারচক্রের আরও চার সদস্য সাগরে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়।

কোস্ট গার্ড জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

অন্যদিকে স্থানীয় জেলেদের দাবি, সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আট জেলে সাগরে মাছ ধরতে যান। পরে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের একজনের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কায় স্বজনরা তুলাতলী ঘাটে ছুটে আসেন।

কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, “উপকূলীয় এলাকায় মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত টহল ও অভিযান পরিচালনা করছে কোস্ট গার্ড। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”


বল ভেবে ককটেল নিয়ে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত তিন শিশু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যশোরে কুড়িয়ে পাওয়া ককটেলকে টেনিস বল ভেবে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিন শিশু আহত হয়েছে। আহত শিশুরা সম্পর্কে ভাই-বোন।

সোমবার (১৯ মে) সকাল ৮টার দিকে শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকায় শাহাদাত হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিশুরা হলো— আহত শিশুরা হলো, শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার শাহাদৎ হোসেনের মেয়ে খাদিজা খাতুন (৫), সজিব হোসেন (৬) এবং আয়েশা খাতুন (৩)। আহত শিশুদের প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের মধ্যে খাদিজার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আহতদের স্বজনরা জানান, পাঁচ বছর বয়সী খাদিজা আজ (সোমবার) সকালে বাড়ির পাশে ছোটনের মোড়ের মাঠে খেলতে যায়। সেখানে পড়ে থাকা একটি ককটেলকে টেনিস বল ভেবে সে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে ওই বল দেখে তার ভাই সজিব আহমেদ ও বোন আয়েশা সুলতানা একসঙ্গে খেলায় অংশ নেয়। খেলার একপর্যায়ে হঠাৎ ককটেলটি বিস্ফোরিত হলে তিনজনই গুরুতর আহত হয়।

পরে তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হলে খাদিজার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। আহত তিন শিশুই একই পরিবারের সদস্য।


শেরপুরে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা

ঝিনাইগাতীতে সোমেশ্বরীর পানি বেড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর ও ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত এবং ভারতের মেঘালয় ও আসামে অব্যাহত বর্ষণের কারণে শেরপুর জেলার নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় কয়েক দফা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পাঠানো এক জরুরি সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো আগামী ২০ মে পর্যন্ত সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে। এতে করে জনজীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কৃষিরও বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগ মাঠে থাকা আধা পাকা ধান দ্রুত কেটে নিরাপদ স্থানে রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশেষ করে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলাগুলোতে যেসব ধান ৮০ শতাংশের বেশি পেকে গেছে, তা কেটে উঁচু স্থানে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন এরই মধ্যে বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গত রাত থেকে শুরু হয়েছে মাইকিং। প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

১৮ মে বিকেলে নদীর পানি পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রাসেল। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগাম বন্যা হলে তা মোকাবিলা করতে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি।

এদিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। গতকাল ভোরে নদীর পানি উপচে পড়ে ধানশাইল এলাকার বাগেরভিটা গ্রামে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ডুবে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ করে পানি বেড়ে যাওয়ায় তারা কিছুই বাঁচাতে পারেনি। দোকানদার লিখন মিয়ার প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল পানিতে ভেসে গেছে। তার দোকানের পাশাপাশি কয়েকটি বাড়িতেও পানি ঢুকে গোলার ধান এবং ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে।

এলাকার একটি প্রধান রাস্তার বড় অংশ পানির স্রোতে ভেসে গেছে। স্থানীয়রা জানান, নির্মাণাধীন একটি সেতু জমে থাকা আবর্জনা এবং ভেসে আসা গাছপালার কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানির স্রোত আরও শক্তিশালী হয়ে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ায় তারা কৃষকদের আগেভাগেই ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছিল। এ কারণে প্রায় ৯৫ শতাংশ ধান রক্ষা পেয়েছে। তবে কিছু জমির ধান এখনো পানির নিচে রয়েছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘ইতোমধ্যে সোমেশ্বরী নদীতে নির্মাণাধীন ব্রিজের ঠিকাদারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং তারা রাস্তা মেরামত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ে ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার কয়েকটি জমিতে পানি প্রবেশ করেছে। আগাম বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’

স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।


‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ মনু মিয়া হাসপাতালে

তার ঘোড়াটি মেরে ফেলল দুর্বৃত্তরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শফিকুল ইসলাম

বিনা পারিশ্রমিকে ৩০৫৭ কবর খুঁড়েছেন মনু মিয়া। দরদ দিয়ে যত্নের সঙ্গে কবর খোঁড়েন বলে নিজ গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় তাকে সবাই চেনেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ হিসেবে। বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি গ্রামে। কারও মৃত্যুর সংবাদ কানে আসামাত্রই খুন্তি, কোদাল, ছুরি, করাত, দা, ছেনাসহ সহায়ক সব যন্ত্রপাতি নিয়ে কখনো হেঁটে কখনো ঘোড়া ছুটিয়ে চলে যান মৃতের বাড়ি কিংবা কবরস্থানে। এভাবেই কবর খননের কাজ করে তিনি পার করে দিয়েছেন তার ৬৭ বছরের জীবনের সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বকশিশ না নিয়ে এ পর্যন্ত খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর। এমন কি দূরদূরান্তে গিয়ে কবর খুঁড়েও কোনো মৃত পরিবারের দেওয়া খাবারও তিনি খাননি। নিজের টাকা দিয়ে খাবার কিনে খেয়েছেন।

মনু মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বয়স এখন ৬৭ বছর। জীবনভর কবর খোঁড়ার কাজ করতে গিয়ে নিজের দিকেই খেয়াল দেওয়া হয়নি মনু মিয়ার। রোগে কাবু হয়ে সম্প্রতি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। গত ১৪ মে তাকে রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই একরকম মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা চলছে তার। স্বামীর পাশে আছেন স্ত্রী রহিমা বেগম এবং ভাতিজা শফিকুল ইসলাম।

কবর খুঁড়তে দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানি জমি বিক্রি করে কয়েক বছর আগে একটি ঘোড়া কিনেছিলেন তিনি। ঘোড়াটি সচল রেখেছিল তাকে। বাড়িতে মনু মিয়া ও তার স্ত্রী রহিমা বেগমের অনুপস্থিতিতে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ে ঘোড়াটি। গত শুক্রবার (১৬ মে) সকালে পাশের মিঠামইন উপজেলার হাশিমপুর ছত্রিশ গ্রামের একটি মাদরাসার পাশে পানির মধ্যে ঘোড়াটির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। ঘোড়াটির বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনু মিয়ার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা ভেবে স্ত্রী ও স্বজনেরা তার কাছে গোপন রেখেছেন ঘোড়াটি হত্যার কথা।

স্থানীয়রা জানান, মনু মিয়ার এমন সংকটকালেই বর্বরতার বলি হয়েছে তার প্রিয় ঘোড়াটি। বাড়িতে মনু মিয়া ও তার স্ত্রী রহিমা বেগম না থাকায় অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়া ঘোড়াটি গত তিন দিন বাড়িতে ছিল না। বাড়ি থেকে প্রাণীটি একা বের হয়ে যায় নাকি কেউ বের করে নিয়ে যায় সে তথ্য জানেন না গ্রামবাসী।

আলগাপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত তিন দিন গ্রামের কারও নজরে পড়েনি ঘোড়াটি। তবে গত শুক্রবার সকালে পার্শ্ববর্তী মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের হাশিমপুর ছত্রিশ গ্রামের একজন বাসিন্দার কাছে একটি ফোনকল আসে। তাতে ওই প্রান্ত থেকে জানানো হয় যে একটি ঘোড়া মৃত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে এবং এটি মনু মিয়ার ঘোড়া বলে মনে হচ্ছে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান আলগাপাড়া গ্রামের তিন তরুণ যুবক। তারা গিয়ে ছত্রিশ গ্রামের একটি মাদরাসার পাশে পানির মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকা ঘোড়াটিকে দেখতে পান। বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘোড়াটি সেখানে নিথর হয়ে পড়ে ছিল।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ঘোড়াটিকে শনাক্ত করতে যাওয়া তিনজনের একজন ছিলেন এস এম রিজন। তিনি দাবি করেন, মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের হাশিমপুর ছত্রিশ গ্রামে গিয়ে তারা এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, ওই এলাকার শাওনের একটি স্ত্রী ঘোড়া রয়েছে। ওই স্ত্রী ঘোড়াটিকে না কি মনু মিয়ার ঘোড়াটি আঘাত করে। এই অপরাধে মনু মিয়ার ঘোড়াটির বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে শাওন। তাতে মনু মিয়ার ঘোড়াটি মারা যায়। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শাওনের বাবার নাম আজমান এবং তার চাচার নাম হাসান মাস্টার।

মনু মিয়ার ভাতিজা শফিকুল গতকাল সকালে দৈনিক বাংলাকে ফোনে জানান, ‘মনু মিয়ার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। মনু মিয়া জীবনে কারও কোনো ক্ষতি করেননি। এত দিন জানতাম, উনাকে মানুষ ভালোবাসে। উনার এমন খারাপ অবস্থায় কী করে এমনভাবে উনার প্রিয় ঘোড়াটিকে মানুষ মেরে ফেলতে পারল। এই খবরটা আমরা উনাকে দিলে উনি কোনোভাবেই সহ্য করতে পারবেন না।’

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মুকিত সরকার জানান, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি নির্দেশনা দেবেন।


দিনাজপুরে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।

সোমবার (১৯ মে) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের ২৬ মাইল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বীরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রায়হান জানান, গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যে আজ (সোমবার) সকালে ঠাকুরগাঁওগামী একটি সিমেন্টবোঝাই ট্রাক এবং ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুরমুখী একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাস চালকসহ দুইজন নিহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এ সময় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।

নিহতদের মধ্যে মাইক্রোবাস চালক মানিক (৩৫) ঠাকুরগাঁও জেলার হরিহরপুর এলাকার মৃত আবুলের ছেলে।

দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হওয়া যাত্রী দেলোয়ার হোসেন (৪৫) একই জেলার হাজীপাড়ার বাসিন্দা ও স্থানীয় ট্রেজারি অফিসের একজন কর্মকর্তা। তিনি মৃত হাফিজুর রহমানের ছেলে।

তবে হাসপাতালে নেওয়ার সময় নিহত ব্যক্তির পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আহতদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাতের বৃষ্টিতে সকালে রাজধানীর বাতাসের মানে উন্নতি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

শনিবার ছুটির দিনে সরকারি অফিস খোলা থাকলেও রাজধানীর বাতাসের মানে উন্নতির দেখা মিলেছে। গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যারাতে বৃষ্টির প্রভাবে বাতাসে দূষণের মাত্রা কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ (১৭ মে) সকাল ৯টায় বাতাসের মান নির্ণয়কারী ওয়েবসাইট আইকিউ এয়ারে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ৯৬, মানের দিক থেকে যা ‘মাঝারি’। দুপুর ১২টায় অবশ্য তা বেড়ে ১১৯-এ উন্নীত হয়েছে, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত।

তবে বেশ কিছুদিন ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর থাকার পর আজ সকালে বাতাসের মানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়।

যখন কণা দূষণের একিউআই মান শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তখন তাকে ‘ভালো’ বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এরপর একিউআই সূচক ৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ এবং ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সূচক ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এখানকার বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের ফলে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।


মধুমাসে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নানা স্বাদের ফল

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নানা স্বাদের ফল। এই মাসে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, ডেউয়া, লটকন, গোলাপ জাম, বেতফল, গাব, তালশাঁস, জামরুল, আতাফল, কাউফলসহ বিভিন্ন রকমের মিষ্টি-টক রসালো ফল পাওয়া যায়। এগুলো সবই দেশি ফল। ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এসব মৌসুমি ফল রাজধানীসহ দেশের সব জেলায় পৌঁছে যায়।

ফলের সুমধুর গন্ধে জ্যৈষ্ঠ মাস হয়ে উঠেছে মধুময়। জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই রাজধানীর ছোট-বড় বাজার ছেয়ে গেছে রসালো ফলে। আম, কাঁঠাল, লিচু, তালশাঁস, আনারস, জামরুলসহ নানান ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। তবে এইসব ফল তুলনামূলক বেশি দাম হাঁকছেন ক্রেতারা।

এ ছাড়া মৌসুম শেষ হলেও বেল, বাঙ্গি ও তরমুজও পাওয়া যাচ্ছে ফলের দোকান ও আড়তে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, খিলগাঁও, শান্তিনগর, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে বর্তমানে বাজারে ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে আম ও লিচু। বিশেষ করে লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে এ সপ্তাহে। এ ফলটি বেশিদিন পাওয়া যায় না। তবে লিচুর দাম এ মুহূর্তে তুলনামূলক বেশি। একশ লিচু ৪০০ টাকা থেকে লিচুর জাত বুঝে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাজশাহী দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলার লিচু বাজারে আসলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই দাম কমে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

তবে ফলে চাষিরা যে দামে বিক্রি করেন আড়ত ঘুরে খুচরা ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে দামে তারতম্য হয় বলে জানান ক্রেতারা।

বাজারে সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী থেকে আসা বাহারি নামের আম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। প্রতিকেজি কালোজাম বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। প্রতিটি তাল ৩০-৪০ টাকা, আনারস ৩০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও ফুটপাতে ভ্যানে করেও মৌসুমি এসব ফল বিক্রি করছেন ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি হিমসাগর আম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়, গোবিন্দভোগ ১২০ টাকা, গোপালভোগ ১২০ টাকা, গুটি আম ১০০০ টাকায়। তাছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির আম বিক্রি হচ্ছে।

জাম, কাঁঠালসহ অন্যান্য দেশি ফল তুলনামূলক দাম বেশি। তবে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই দাম সহনীয় ও সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে চলে আসবে বলে জানান দোকানিরা।

বাজারে এ সময়ে পাকা কাঁঠালের সরবরাহ কম। কিছুদিনের মধ্যেই বাজার ছেয়ে যাবে কাঁঠালে আশা করছেন ফল ব্যবসায়ীরা। সবজি হিসেবে রান্না করার জন্য কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে। এটি দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, আলুসহ পাঁচমিশালী সবজি দিয়ে কাঁঠাল রান্না এখন ভীষণ জনপ্রিয়।

খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় ফল বিক্রেতা আবু তাহের বলেন, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আম আসছে। আমের দাম তুলনামূলক কম। সব ধরনের আমের বিক্রিই ভালো।

মিরপুর এলাকায় ফল ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, বাজারে যে লিচুগুলো এখন আসছে সেগুলো আকারে কিছুটা ছোট। আগামী সপ্তাহ থেকে বড় লিচু আসবে, দামও কিছুটা কমবে। পাকা কাঁঠালের একটা বড় অংশ আসে গাজীপুর ও সাভার থেকে। দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে পাকা কাঁঠালের সরবরাহ বাড়বে বলে তিনি জানান।

ব্যবসায়ীরা জানান, মধুমাস জ্যৈষ্ঠে আম, লিচু ও দেশি অন্যান্য ফলের কারণে বিদেশি ফলের চাহিদা কম থাকে। বনশ্রী এলাকায় ফল ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম বলেন, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়ে মানুষ আম-কাঁঠাল ও দেশি ফল খাবে। তবে রোগীর জন্য অনেকেই মাল্টা, আপেল, আনার কিনছেন।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেশি বিভিন্ন ফলের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতাদের মাঝে।

ক্রেতারা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে আমের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকে। ভরা মৌসুমে কিছুটা কমে। শেষ দিকে আবার বেড়ে যায়।

অনেক ক্রেতা বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষেরা বিদেশি ফল সারা বছর দামের কারণে কিনে খেতে পারেন না। জ্যৈষ্ঠ মাস আসার অপেক্ষায় থাকেন তারা। সাধ্যের মধ্যে দেশি ফল কিনে খাওয়ার অপেক্ষা করেন।

একজন ক্রেতা জানান, আম-লিচুর দাম সহনীয় হলেও দেশি অন্য ফলের দাম কিছুটা বেশি।

বাজার ঘুরে দেখে গেছে, দেশি কালোজাম ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। দাম তুলনামূলক বেশি। বিক্রেতারা বলেন, এসব ফলেরও বাণিজ্যিক চাষাবাদ বাড়ানো প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ মাসে সামর্থ্যে নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও সব শ্রেণি পেশার মানুষই দেশি ফলের স্বাদ নেন। এটি আমাদের দেশের ঐতিহ্য।


ফুলবাড়িয়ায় শর্টগান ও গুলি উদ্ধার

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

পুলিশের লুট হওয়াএকটি শর্টগান ও এক রাউন্ড গুলি ফুলবাড়িয়া উপজেলার বেতবাড়ি থানার পাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির ভিতর বালুর স্তুপ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করার সময় বিদ্যালয়.মাঠের দক্ষিণ পুর্বপাশে বালুর স্তুপে একটি বন্দুক দেখে শিক্ষকদের জানায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফুলবাড়িয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে বালুর স্তুপ থেকে মরিচাধরা একটি শর্টগান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। শর্টগানের বাটে বিডি-২০১৮ লেখা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বেতবাড়ি মাঝির ঘাট ভায়া এনায়েতপুর পাকা সড়কের পাশে থানার পাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির ঘেঁষে ভিতরে বালুর স্তুপে বন্দুকটি কেউ ফেলে রেখেগেছেন। পুলিশের ধারণা, ৫ আগস্টের দিন পুলিশের এই অস্ত্রটি লুট করা হয়েছিল।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির ভিতরে বালুর স্তুপ থেকে মরিচাপরা একটি শর্টগান ও এক রাউন্ড গুলি পরিত্যাক্তবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি পুলিশের। এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে জানানো হবে।


হিলি সীমান্তে ধানখেত থেকে ড্রোন উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ঘাসুড়িয়া সীমান্তে ধানখেত থেকে একটি ড্রোন উদ্ধার করা হয়েছে। ড্রোনটি পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে সীমান্তবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন।

উপজেলার ঘাসুড়িয়া আদিবাসীপাড়ার প্রফুল্ল টপ্প বলেন, ‘বুধবার (১৪ মে) দুপুরের দিকে সীমান্তবর্তী একটি ধানখেতে ধান কাটার কাজ করছিলেন। এ সময় খেতের মাঝখানে একটি কালো রঙের মাকড়সার মতো বস্তু পড়ে থাকতে দেখে সহকর্মীদের জানাই। পরে তারা কাছে এসে বলেন এটি ড্রোন। তারা ড্রোনটি তার বাড়িতে রাখার কথা বলেন। কাজ শেষ করে ড্রোনটি বাড়িতে নিয়ে যান তিনি।’

উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, ‘সীমান্তের ২৮৭/২১ নম্বর সাব সীমানা পিলার সংলগ্ন ঘাসুড়িয়া গ্রামের মিরাজুল ইসলামের জমিতে এককদল শ্রমিক ধান কাটছিলেন। এক পর্যায়ে শ্রমিক প্রফুল্ল টপ্প ড্রোনটি দেখতে পেয়ে সবাইকে জানান।’

‘তারা প্রফুল্ল টপ্পকে তার কাছে ড্রোনটি রাখার কথা বলতে প্রফুল্ল ড্রোনটি বাড়িতে নিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা মংলা বিজিবি ক্যাম্পে ও থানায় খবর দিলে তারা ড্রোনটি উদ্ধার করে নিয়ে যান।’

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গতকাল বুধবার দুপুরে ঘাসুড়িয়া সীমান্তের ৪০০ গজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরে ধানখেতে স্থানীয় শ্রমিক প্রফুল্ল টপ্প পড়ে থাকা একটি ড্রোন ক্যামেরা দেখতে পান। বিষয়টি লোকজনকে জানালে তারা এসে ড্রোন ক্যামেরাটি উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। পরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ ড্রোন ক্যামেরাটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে সেটি থানা হেফাজতে রয়েছে।

দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন বলেন, ‘ঘাসুড়িয়া সীমান্তের একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার হওয়া ড্রোন ক্যামেরাটি ভারত থেকে উড়ে আসা বলে তিনি প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছেন। ড্রোনটিতে ৫টি ক্যামেরার লেন্স রয়েছে।’

তবে ড্রোনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে এবং আরও তথ্য উৎঘাটনে অনুসন্ধান চলছে বলেও জানান তিনি।


কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নারায়ণগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।

কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শামিম হোসেন,নাজমুল ও জিলকদ।

আজ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. গোলাম কবির এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।জরিমানা অনাদায়ে তাদের ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাজ্জাত হোসেন সবুজ বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজ এলাকায় লেখাপড়া করতেন। আসামি মো. শামিম হোসেন কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ওই ছাত্রীকে নিয়মিত প্রেমের প্রস্তাব দিতেন ও নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

২০১৬ সালের ১৫ মার্চ সকালে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বের হন ভুক্তভোগী। আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে কলেজের মেইন গেটের সামনে পৌঁছালে মো. শামিম, তার সহযোগী মো. নাজমুল, মো. জিলকদ এবং আরও এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে। এরপর তারা পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ১৭ মার্চ ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে আটজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।


চরফ্যাশন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগী

স্যালাইন সংকটে সেবা ব্যাহত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

তীব্র গরমে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। শিশু, কিশোর, প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। এদিকে হাসপাতালে স্যালাইন সংকটের কারণেহাসপাতালের বাহির থেকে খাবার স্যালাইন এবং কলেরা স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও তার স্বজনরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১ মে থেকে বুধবার ১৪ মে পর্যন্ত ১৪ দিনে শিশু, কিশোর ও বৃদ্ধসহ ১৬৩ জন রোগী ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এদের মধ্যে ১৫৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। বুধবার সকালে ভর্তি হয়ে ৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

বুধবার দুপুরে চরফ্যাশন উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।

শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অহিদ পাতলা পায়খানা হওয়ায় তার ৪ বছর বয়সের বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়েছিলাম, তবে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার সকালে আমার সন্তানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। এখনও তার ছেলেকে নার্সেরা দেখতে আসেনি।

উপজেলার নীলকমল ইউনিয়ন ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারজানা বেগম বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তার ১ বছর বয়সী শিশু বাচ্চাকে বুধবার সকালে ভর্তি করেন। এরপর নার্সদের পরামর্শে হাসপাতালের বাহির থেকে স্যালাইন সেট, ক্যানেলা ও কলেরা স্যালাইন এবং খাবার কিনে আনতে হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কিছুই দেওয়া হয়নি। সরকারী হাসপাতাল হলেও সরকারী কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে রোগীদের প্রয়োজনে হাসপাতালে চিকিৎসক তো দূরের কথা, কোনো নার্সকেও তারা ডেকে পান না। হাসপাতাল থেকে তেমন কোনো ওষুধও সরবরাহ করা হয় না।

নার্সরা স্লিপ ধরিয়ে দেন, তা দেখে বাইরে থেকে ওষুধ, স্যালাইন, ক্যানুলাসহ যাবতীয় সামগ্রী কিনে আনতে হচ্ছে। নামেই শুধু সরকারি হাসপাতাল। সবই কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। হাসপাতালে খাবার স্যালাইন থাকা সত্বেও রোগীদের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে না।

হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ অপরাজিতা জানান, রোগীরা নার্সদের ডাকলে নার্সরা আসেনা এই কথাটা সম্পূন্ন মিথ্যা, রোগীদের সেবায় ১৭ জন নার্স সর্বদা নিয়োজিত রয়েছেন। ডায়রিয়া রোগীদের খাবার স্যালাইন ও কলেরা স্যালাইন হাসপাতালে নাই বলে বাহির থেকে আনার জন্য স্লিপ ধরিয়ে দেন এ বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, গত ১৪ দিনে চরফ্যাশন হাসপাতালে ১৬৩ জন ডায়রিয়ায় (কলেরা) আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে স্যালাইন সেট, বাচ্চাদের ক্যানেলা, কলেরা স্যালাইন, এন্টিবায়োটিক, মাইক্র বুলেট, জিং সিরাপ না থাকায় ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দানে কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে। তাই রোগীদেরকে বাহির থেকে আনতে বলা হয়। যার ফলে রোগীরা এই অভিযোগগুলো তুলছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বশাককে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাকলুকুর রহমান বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সীমিত সংখ্যাক কলেরা স্যালাইন সরবরাহ পাওয়ায় কোনো রকমে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে রোগীদের বাহির থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে জেলা সিভিলা সার্জন বরাবর ডায়রিয়া রোগীদের স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওধুধের চাহিদা পাঠানো হয়েছে, আশা করি এর দ্রুত সমাধান হবে।’


খুলনায় ৮৫ শতাংশ টিউবওয়েলে মিলছে না পানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আওয়াল শেখ, খুলনা

ভোর হয়নি তখনো। কিন্তু খুলনার বটিয়াঘাটার গ্রামে ব্যস্ততা। কারো হাতে কলস, কারো কাঁধে বালতি। পায়ে ছোপ ছোপ ধুলা, মুখে নীরব প্রার্থনা- দ্রুত একটু পানি মিলবে তো?

এটা কোনো উৎসব নয়, বেঁচে থাকার সম্বল পানির জন্য এক কঠিন প্রতিযোগিতা। সেখানের নিমাই চন্দ্র রায়ের বাড়ির উঠোনটা যেন হয়ে উঠেছিল গ্রামের জীবনধারণের কেন্দ্র। ২০০৪ সালে নিজের খরচে বসানো ডিপ টিউবওয়েল তখন স্বপ্ন দেখাতো- যেন এই পানির ধারা কখনো শুকাবে না।

প্রতিদিন ফজরের আজানের আগেই জড়ো হতেন আশপাশের দুই ডজন পরিবারের মানুষ। নারীর কণ্ঠে প্রার্থনা, শিশুর ক্লান্তি, পুরুষের ব্যস্ত মুখ- সব মিলিয়ে একটা জলের মহাযজ্ঞ।

কিন্তু এ বছরের মার্চে সেই উৎসও যেন নীরব অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যতই চাপ দেওয়া হোক, টিউবওয়েল এখন বোবা। মোটর লাগানো হয়েছে, সেই আশাও নিঃশেষ।

নিমাই বলেন, ‘আগে ১৫-২০ মিনিট চাপ দিলে একটু পানি আসত। এখন তো আর কিছুই আসে না।’ এই শূন্যতা শুধু তার একার নয়। পুরো খুলনা ও পার্শ্ববর্তী জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে পানিশূন্যতার দীর্ঘশ্বাস।

নিমাইয়ের বাড়ির মতো খুলনা ও আশপাশের জেলাগুলোতে এখন লক্ষাধিক হ্যান্ড-পাম্প টিউবওয়েল অচল হয়ে গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) তথ্য অনুযায়ী, খুলনা বিভাগে থাকা ১,০১,৩৫০টি হ্যান্ড-পাম্পের ৮৫ শতাংশই এখন পানিশূন্য। খুলনা জেলাতেই রয়েছে ২৮,৪৫২টি, যার অধিকাংশই অকার্যকর।

বটিয়াঘাটায় ৪,১৮৫টি ডিপ টিউবওয়েলের মধ্যে ৮০ শতাংশেই এখন আর পানি ওঠে না। যশোরেও দুই-তৃতীয়াংশ ২৪,৩০৩টি টিউবওয়েল শুকিয়ে গেছে।

ডিপিএইচই এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হ্যান্ড-পাম্প টিউবওয়েল ২৬ ফুটের নিচে পানি থাকলে তা তুলতে পারে না। মোটর পাম্পও ব্যর্থ হয় যদি পানি স্তর ৩০-৩৫ ফুটের নিচে নামে। কেবল সাবমার্সিবল পাম্পই সেই গভীরতা থেকে পানি তুলতে পারে। অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, জলাশয়ের ঘাটতি এবং অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাই এই সংকটের মূল কারণ।

নিমাইয়ের প্রতিবেশী গুরুদাসী বৈরাগী এখন প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অপেক্ষা করেন কাচারিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র কার্যকর টিউবওয়েলে। ‘২০ লিটারের কলসি ভরতে ১৮০-১৯০ বার চাপ দিতে হয়। প্রতিদিন এখানে ৩০০-৩৫০ জন আসে।’ বলেন তিনি।

তিনি জানান, তার গ্রামে ৫-৬ বছর আগেও অধিকাংশ হ্যান্ড-পাম্প ঠিকঠাক কাজ করত। একই সুরে বটিয়াঘাটা সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান পল্লব বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের মধ্যে ৯০ শতাংশ টিউবওয়েল এখন অচল।

এ ছাড়া গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের ঝরভাঙা গ্রামের মিলন কান্তি মণ্ডল ১৯৮৯ সালে একটি ডিপ টিউবওয়েল বসিয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তিনি প্রতিদিন দুই কিলোমিটার হাঁটেন পানির সন্ধানে। আমার গ্রামে ১৮টির মধ্যে মাত্র একটি টিউবওয়েল কাজ করে। প্রায় ৩০০ পরিবার এখন পানির অভাবে দিন কাটাচ্ছে- জানান তিনি।

গঙ্গারামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসলাম হালদার বলেন, ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের মধ্যে ২৫টিতেই এখন পানি সংকট চলছে। কিছু এলাকায় এমনকি ১,২০০ ফুট গভীরতায়ও পানি মিলছে না

ডিপিএইচই জানায়, ২০১৫-১৬ সালে খুলনা অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ছিল ১৮ থেকে ২২ ফুট। বর্তমানে তা নেমে গেছে ২৪ থেকে ৩২ ফুটে।

এই সংকট মোকাবেলায় ডিপিএইচই সাবমার্সিবল পাম্প বসানো, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে উৎসাহ দেওয়া ও সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প স্থাপন শুরু করেছে।

যশোরে ডিপিএইচই নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ জানান, জেলার সদর, বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা ও শার্শার অনেক জায়গায় পানির স্তর ৩০-৩৫ ফুটের বেশি নিচে নেমে গেছে। ১২,৫০০ সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ‘তারা নম্বর ৬’ টিউবওয়েল ও সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প বসানো হচ্ছে।

ডিপিএইচইর খুলনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জামানুর রহমান বলেন, উপকূলীয় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরে আমরা ‘তারা নম্বর ৬’ টিউবওয়েল বসাচ্ছি, যা ৬০-৭০ ফুট গভীর থেকে পানি তুলতে পারে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের হার পুনঃভরণ হারের চেয়ে বেশি হওয়ায় পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততার বিস্তার ও বৃষ্টিপাতের ঘাটতিও এই সংকট বাড়াচ্ছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, ‘যতটা পানি উত্তোলন হচ্ছে, ততটা ফিরে আসছে না। তাই টিউবওয়েলগুলো অচল হয়ে পড়েছে।’


banner close