রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

তুমব্রু সীমান্তে মাদক কারবারিদের গুলিতে প্রাণ গেল ডিজিএফআই কর্মকর্তার

আহত র‌্যাব সদস্যকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৫ নভেম্বর, ২০২২ ০১:৪৬
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ০১:৩১

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে র‌্যাব ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ অভিযানে মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তা। তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্য ছিলেন।

সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জানা গেছে, নিহতের নাম স্কোয়াড্রন লিডার রেজওয়ান আহমেদ।

এদিকে একই অভিযানে র‍্যাবের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের গুলিতে অজ্ঞাত এক নারীও প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে জেলা পুলিশ।

সোমবার রাত ৮টার দিকে তুমব্রুর কোনারপাড়া সীমান্তে মাদক ও অস্ত্র আসার খবরে অভিযানে গেলে র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের সদস্যদের ওপর এ হামলা চালায় মাদক চোরাচালানে জড়িত ওই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন র‍্যাবের কনস্টেবল সোহেল বড়ুয়া। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযান পরিচালনার সময় মাদক চোরাচালানকারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বান্দরবন জেলার তমব্রু সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ হয়। মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে এই সংঘর্ষের সময় মাদক চোরাচালানকারীদের গুলিতে দায়িত্বরত অবস্থায় ডিজিএফআইয়ের একজন কর্মকর্তা (বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা) দেশের জন্য আত্মত্যাগ করে শহীদ হন এবং র‌্যাবের একজন সদস্য আহত হন।

তুমব্রু সীমান্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান দিল মোহাম্মদ বলেন, অভিযান চলাকালে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে এক নারী মারা গেছেন। তবে এখনো তার পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।

কক্সবাজার সদর হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ রিপন চৌধুরী বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক র‌্যাব সদস্যকে ১০টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ঘটনাস্থলে একজন নারীর মরদেহ মিলেছে। তবে তিনি রোহিঙ্গা নাকি বাংলাদেশি তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন দৈনিক বাংলার কক্সবাজার প্রতিনিধি]


রাজধানীতে তিন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ

গাজীপুর, না’গঞ্জে দুই বাসে আগুন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরে এবং হাতিরঝিলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হাতিরঝিলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায়। গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে মিরপুরের বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এলাকায়, মিরপুর-১২ মেট্রো স্টেশনের নিচে এবং হাতিরঝিলের মধুবাগ ব্রিজের নিচে পৃথক ৪টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া গতকাল শনিবার সাত সকালে গাজীপুরের হারিকেন এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস এবং রাত আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মিনিবাসে আগুনে পুড়ে গেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিআরটিএ এলাকায় একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে কে বা কারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তা জানা যায়নি।

এদিকে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে হাতিরঝিলের মধুবাগ ব্রিজের নিচে আরেকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরে যায়।

হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) ফুয়াদ আহমেদ বলেন বলেন, বিস্ফোরণে কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে।

এদিকে পল্লবী থানা পুলিশ বলছে, সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে মিরপুর-১২ মেট্রো স্টেশনের নিচে আচমকা ২টি ককটেল বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে পল্লবী থানা পুলিশ উপস্থিত রয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে একটি মিনিবাসে আগুন দেওয়া হয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনূর আলম ওসি বলেন, আগের দিন (শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মহাসড়কের ওপর নাফ পরিবহনের মিনিবাসটি থামিয়ে রেখে চালক চলে যান। রাতে বাসটি সেখানেই ছিল। শনিবার সকাল ছয়টার দিকে বাসটিতে আগুন জ্বলতে দেখতে পান স্থানীয়রা।

পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভান। ততক্ষণে বাসের সিটগুলো পুড়ে যায়। তবে আগুনের ঘটনা পরিকল্পিত নাকি যান্ত্রিক ত্রুটি, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের হারিকেন এলাকায় গতকাল রাত ৮টার দিকে যাত্রীবাহী একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

জয়দেবপুর চৌরাস্তা ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার তাজউদ্দীন আহমদ বলেন, বাসটির পেছন দিকে হঠাৎ আগুন লেগে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাসটি ঢাকার দিকে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ আগুন লেগে গেলে যাত্রীরা লাফিয়ে বাস থেকে নেমে প্রাণ বাঁচান।

গাছা থানার ডিউটি অফিসার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শরীয়ত উল্লাহ বলেন, হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তদন্ত শেষে অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।


ময়মনসিংহে ১৯ ছাত্রদল নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ ব্যুরো

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের সদ্য বহিষ্কৃত হওয়া ১৯ জন ছাত্রদল নেতার বহিষ্করাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ক্রিকেটারের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রিভিউ আবেদন করেছেন। শনিবার দুপুরে গৌরীপুর উপজেলা সদরের পাট বাজারে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের এমন আবেদন জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে এ দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত হওয়া ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

গৌরীপুর পৌর ছাত্রদলে সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম পিয়াস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মনোনয়ন বঞ্চিত আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের নিদের্শনায় গত ৯ নভেম্বর গৌরীপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে নারী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। একই দিন ওই নারী সমাবেশ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইনের সমর্থনে সভার আয়োজন করা হয়। ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইন সভাস্থলে যাওয়ার পথে তাদের গাড়িবহর থেকে স্থানীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে নারী সমাবেশে মঞ্চ, চেয়ার, মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এতে সভাস্থলে উপস্থিত মা ও শিশুসহ ৫০ জনের বেশি আহত হয়। এরপর ছাত্রদলের কর্মী তানজিন আহমেদ আবিদের স্ট্রোক করে মারা যাওয়ার ঘটনাকে হত্যার গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয়।

পিয়াস আরো বলেন, ১০ নভেম্বর ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন তালুকদার সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের ১৯ জনকে কোন কারণ দর্শানো ছাড়াই বহিষ্কার করা হয়। বিগত ৩ দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায় ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেলের নেতৃত্বে স্থানীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সভাস্থলে হামলা করে। সোহেল নিজের কৃতকর্ম আড়াল করার জন্য আমাদের বহিষ্কার করে ঘটনার মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে দাবি জানাচ্ছি ঘটনাটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে পুনর্বিবেচনা করা হোক।

ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল জানান, যারা বহিষ্কৃত হয়েছেন তারা যদি দলের সিদ্ধান্ত মেনে দলের পক্ষে কাজ করে এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য লিখিত আবেদন করে। তাহলে আমরা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে জানাবো।


গাইবান্ধায় মানত পূরণে আয়োজন ‘সত্য পীরের গান’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

সন্তান জন্মের দীর্ঘ নয় বছর পর মানত পূরণ করতে আয়োজন করা হয়েছে সত্য পীরের গান। স্থানীয়ভাবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তিন রাত তিনদিন ব্যাপী এই গানের আয়োজন করে গাইবান্ধার সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের একটি মুসলিম পরিবার।

সরেজমিনে শুক্রবার রাতে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আয়োজক পরিবারের বাড়ির উঠানে ছামিয়ানা টাঙিয়ে সাজানো হয়েছে গানের আসর। ছামিয়ানার নিচে রোপন করা হয়েছে কম বয়সী চারটি কলাগাছ। তার নিচে জালানো হয়েছে প্রদীপ।

ছামিয়ানার নিচে সত্য পীরের গান, কিচ্চা, খনার বচনসহ বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ও লোকজ পরিবেশনায় অংশ নিচ্ছেন তিন নারী ও দুই পুরুষ। বাদ্যযন্ত্রে তাল দিচ্ছেন আরও চারজন শিল্পী। গানের আসরকে ঘিরে চারপাশে ভিড় করেছেন আশপাশ এলাকার নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, তরুণ-যুবকসহ নানা বয়সি দর্শক।

আয়োজক পরিবার জানায়, মোস্তাফিজুর রহমান ও এজমা দম্পতির বিয়ের এক যুগ পরও সন্তান না হওয়ায় মানত করা হয়—সন্তান হলে সত্য পীরের গান আয়োজন করা হবে। পরবর্তীতে তাদের ঘরে সন্তান জন্ম নেয়। নয় বছর পর সেই মানত পূরণে আয়োজন করছেন এই গানের অনুষ্ঠান।

আয়োজক এজমা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর ১২ বছর সন্তান হয়নি। তখন বাবা মানত করেছিলেন সত্য পীরের গান করার। পরে আমার সন্তান হয়, এখন তার বয়স ৯ বছর। মানত পূরণে তিন রাত তিনদিনের আয়োজন করেছি।

গানের দলনেতা ফতু বলেন, ‘এটা আধ্যাত্মিক বিষয়। যুগ যুগ ধরে মানুষের বিশ্বাস-আস্থায় চলে আসছে। মানুষ যে কোনো আকাঙ্ক্ষা পূরণের আশায় মানত করে। চাওয়া পূরণ হলে আমরা গান করতে যাই।

তিনি আরও জানান, ‘আমরা কাউকে জোর করি না। কেউ পরামর্শ চাইলে দিই। এই গ্রামে প্রায় ২০–২১ বছর পর এক দম্পতির সন্তান হওয়ায় তাদের বাড়িতেও গান করতে এসেছি।’


ফেনীর পানি শোধনাগারটি চালু হয়নি দুই বছরেও

*বিকল হয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্চামাদি *সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি পান থেকে বঞ্চিত শহরের মানুষ *ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটিতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৮ কোটি টাকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবু তাহের ভূঁইয়া, ফেনী

ফেনী পৌরসভায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি (পানি শোধনাগার) নির্মাণের দুই বছর পার হলেও এখনো চালু করা হচ্ছেনা। এতে করে এক দিকে শহরের মানুষ সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি পান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্চামাদি নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে ফেনী পৌরসভায় চলমান পানি সরবরাহ প্রকল্পের পানির গুণাগুণ ভালো না থাকায় এখানে বসবাসরত দুই সহস্রাধিক সেবাগ্রহিতার মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন প্রকল্পটি দ্রুত চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, ৩৬ জেলা শহরে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ফেনী পৌরসভার জেলা সদর হাসপাতাল মোড়সংলগ্ন বিরিঞ্চি এলাকায় স্থাপন করা হয় বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প। দরপত্র আহবানের পর ২০১৯ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের এ কাজটি দুই বছর মেয়াদে বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় শামীম ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াই লাখ ঘনমিটার পানি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এ প্রকল্পে ৯টি গভীর নলকূপ ও ৪০ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন স্থাপন করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে কাজের গতি কমে যাওয়ায় ঠিকাদার এমন অজুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপণ করে ২০২৩ সালে প্রকল্পটি নির্মাণ কাজ শেষ করে। পরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তা ফেনী পৌরসভার নিকট হস্তান্তর করে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত অযত্মে অবহেলায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি পড়ে আছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সীমানা প্রাচীর ঘেরা প্রকল্প এলাকার প্রধান ফটকে তালা ঝুলানো রয়েছে। প্রকল্পটি নির্মাণকাজ ২০২৩ সালে শেষ হলেও ২০২০ সালে এটি উদ্বোধন হয়েছে মর্মে স্থাপন করা একটি ফলক দেখা গেছে। ভেতরের বিভিন্ন লোহার সরঞ্জামাদী জং ধরে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে ইলেক্ট্রিকের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। অথচ এ প্রকল্পটি কেন বা কি কারণে স্থাপন করা হয়েছে; বিষয়টি জানেন না স্থানীয়রা।

ফেনী পৌরসভার একাধিক সূত্র জানায়, প্রকল্পটিতে ৪০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। পরে ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে আরও ৪০ কিলোমিটার পানি সরবরাহ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হলে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর পরিকল্পনা নেয়া হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক অতিরিক্ত ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনী পৌরসভা থেকে আরিফ নামের এক ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তুু গণঅভ্যুত্থানের পর ওই ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

পরে ফেনী পৌরসভার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রকল্পটি থমকে দাড়ায়। পানি শোধনাগারের প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত পাম্প অপারেটর সৌরভকে পৌরসভার অন্য বিভাগে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

ফেনী পৌরসভার বাসিন্দারা জানান, বর্তমানে ফেনী পৌর এলাকায় তিনটি পানির ট্যাংকের মাধ্যমে নাগরিকদের পানি সরবরাহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পুরাতন ওই প্রকল্পের আওতায় দুই হাজার ৬শ গ্রাহক প্রতি গ্যালন পানি (১০০০ লিটার) আবাসিকে ৯ টাকা ও বাণিজ্যিকে ২২ টাকা হারে বিল পরিশোধ করে থাকেন। কিন্তুু এ প্রকল্পের পানির মাঝে ময়লা- আবর্জনা থাকায় দিন দিন গ্রাহকরা পৌরসভা থেকে পানির সুবিধা নেয়া বন্ধ করতে শুরু করেছে। পৌরসভা থেকে চাহিদামত সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে আইনভঙ্গ করে বাড়ির মালিকরা বাধ্য হয়ে পৌর এলাকায় গভীর নলকুপ বসিয়ে পানির সংকট পূরণ করছেন।

ফেনী পৌর এলাকার ট্রাঙ্ক রোডসংলগ্ন মো. রহিম উল্লাহ নামের এক বাসিন্দা জানান, ফেনী পৌরসভায় পুরাতন পানির ট্রাংকিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে পড়েছে। এসব ট্রাংকি থেকে সরবরাহকৃত পানির গুণগত মান ভালো না থাকায় বাধ্য হয়ে মানুষ শহরে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি তুলছে। নতুনভাবে স্থাপিত প্রকল্পটি চালু করা গেলে এ শহরের অন্তত দুই লাখ মানুষ বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানি ব্যবহারের সুযোগ পেতো। এতে করে একদিকে মানুষের উপকার হতো অন্যদিকে পৌরসভার রাজস্ব আয় বাড়তো।

ফেনী পৌরসভার প্রশাসক (উপসচিব) গোলাম মো. বাতেন বলেন, ২০২৪ এর বন্যার সময়ে পানি শোধনাগারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা এটি দ্রঙত চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আশা করি প্রয়োজনীয় মেরামত ও লাইন স্থাপন কাজ শেষে আমরা শিগগিরই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি চালু করতে পারব।


জয়পুরহাটে ঐতিহ্যবাহী পাখি তলার মেলা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আয়মাপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী পাখি তলার মেলা, যা স্থানীয়দের কাছে জামাই মেলা নামেও সুপরিচিত। বহু প্রাচীন এই মেলাকে ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই গ্রামজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দূরদূরান্ত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষজন ভিড় করছেন মেলাপ্রাঙ্গণে।

মেলায় শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য উঠেছে রঙিন নাগরদোলা, চড়কি ও বিভিন্ন খেলার রাইড। তাদের উচ্ছ্বাসে মেলার চারদিক আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি বসেছে হস্তশিল্পের পসরা কাঠ, বাঁশ, মাটির তৈরি খেলনা, ঘর সাজানোর সামগ্রী, বাঁশের তৈরি নানান ব্যবহার্য জিনিসপত্র। রঙিন মিঠাই, জিলাপি, ছানামিঠাইসহ ঘরোয়া মিষ্টির গন্ধে মেলার চারপাশ সরব।

মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। স্থানীয় লাঠিয়াল দলের মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী দেখতে ভিড় জমিয়েছে উৎসুক জনতা। প্রবীণদের মতে, এ ধরনের আয়োজন গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আইমাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাপ-দাদারা এই মেলা করে গিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে আমরাও করছি। আগামীতে আমাদের সন্তানরা করবে। ১০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে এ মেলা হয়ে আসছে। মেলার প্রধান আকর্ষণ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের লাঠি খেলা। মেলার দিনে এ গ্রামের সকলেই জামাইদের আমন্ত্রণ করেন। এ কারণে এই মেলাটি জামাই মেলা নামেও পরিচিত।

দিনব্যাপী আয়োজিত এই মেলায় সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান, নাচ আর নানা পরিবেশনায় মুখর হয়ে উঠবে সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গণ। উৎসব-উদ্দীপনা, পারিবারিক মিলন মেলা আয়মাপুরের পাখি তলার মেলা যেন গ্রামবাংলার সংস্কৃতির এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।


দিনাজপুরে গণ প্রকৌশল দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মিজানুর রহমান, দিনাজপুর

প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহারের মাধ্যমে জনতার সামগ্রীক মুক্তি অর্জনে, ‘দক্ষতা জনশক্তি-দেশ গঠনের মূল ভিত্তি’ বাস্তবায়নের আহ্বানে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে শনিবার ‘গণ প্রকৌশল দিবস -২০২৫ ও আইডিইবির ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সকাল সাড়ে দশটায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার দিনাজপুর এর উপপরিচালক ও দিনাজপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. রিয়াজ উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওয়াদুদ মন্ডল, আইডিইবির যুগ্ম আহ্বায়ক (রংপুর অঞ্চল) মো. আব্দুছ ছাত্তার শাহ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. মোকাররম হোসেন।

ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আইডিইবি দিনাজপুর জেলা শাখার সহসভাপতি (নির্বাহী প্রকৌশলী-দিনাজপুর পৌরসভা) প্রকৌশলী মো. মিনারুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিইবি দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. সাজিউল ইসলাম সাজু।

আইডিইবির চাকরিবিষয়ক সম্পাদক (সহকারী প্রকৌশলী-দিনাজপুর সড়ক বিভাগ) প্রকৌশলী মো. শাহানুর রহমান এর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক সেক্রেটারি প্রকৌশলী মো. আব্দুল আউয়াল, ডিইএব জেলা শাখার সভাপতি মো. মনজুর মোরশেদ সুমন।

ওই র‍্যালিতে আইডিইবি দিনাজপুর জেলা শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, শিক্ষার্থীছাড়াও দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।


ভূমির ভোগান্তি কমাতে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগ 

*ভূমিসচেতন বিদ্যার্থী গড়তে বিনামূল্যে ১০ হাজার বই বিতরণ *৯৪ পৃষ্ঠার ‘ভূমিকথা’ বইটি হবে মৌলিক জ্ঞান সহায়িকা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিহাব আহমেদ, মুন্সীগঞ্জ

দেশের অসংখ্য দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার প্রধান উৎস-ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা। এই সমস্যা নিরসনে আইনি কাঠামোর পাশাপাশি প্রয়োজন একটি সচেতন প্রজন্ম। এই ভাবনা থেকেই মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে: স্কুলের পাঠ্যক্রমে নয়, বরং একটি নিজস্ব পুস্তিকা ‘ভূমিকথা’-র মাধ্যমে ভবিষ্যতের নাগরিকদের ভূমিসচেতন করে তোলার কাজ শুরু করেছে তারা।

সম্প্রতি এই কর্মসূচি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং দেশের অন্যান্য প্রান্তের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে মডেল কার্যক্রম হিসাবে অনুসরণীয় হয়ে উঠেছে। ভূমি বিষয়ক মৌলিক জ্ঞান, আইন ও সেবা সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া পুস্তিকাটি সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় ভূমি বিষয়ক মৌলিক ধারণাগুলো তুলে ধরেছে।

জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের ঐকান্তিক ইচ্ছা, পরিকল্পনা ও সঠিক দিক-নির্দেশনায় এই প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেছে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই ছিল এই বই প্রকাশের মূল লক্ষ্য। বর্তমানে ভূমি বিষয়ক সেবা গ্রহণ পদ্ধতির ডিজিটাল পদ্ধতি চালু থাকলেও সে সম্পর্কে ব্যাপক অজ্ঞতা রয়েছে। অনেকে জানেন না কোন সেবা কোথায় পাওয়া যায়, কীভাবে দলিল তৈরি করতে হয় বা নামজারি করতে হয়। এই অজ্ঞতার কারণে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন এবং প্রতারিত হন। এই প্রেক্ষাপটে ‘ভূমিকথা’ সাধারণ নাগরিককে ভূমি বিষয়ক মৌলিক ধারণা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং আধুনিক ডিজিটাল সেবাসমূহ সম্পর্কে সচেতন করতে সহায়ক হবে। এটি ভূমি সম্পর্কিত ভুল ধারণা দূর করে ভোগান্তি কমাতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

‘ভূমিকথা’ নামক ৯৪ পৃষ্ঠার পুস্তিকাটি ভূমি সংক্রান্ত মৌলিক জ্ঞান ও সেবা সম্পর্কিত তথ্যসমৃদ্ধ একটি সহায়িকা হিসেবে কাজ করছে।

এটি ভূমি সংক্রান্ত বিদ্যমান ও প্রচলিত সরকারি আইন/বিধিমালা/নীতিমালা/পরিপত্র অনুসরণ করে প্রণীত। পুস্তিকাটিতে ভূমি কেনার আগে কী কী যাচাই করতে হয়, ভূমি রেজিস্ট্রেশনের সময় কী কী কাগজপত্র লাগে, নামজারি কীভাবে করতে হয়, ভূমি উন্নয়ন কর কীভাবে ও কেন পরিশোধ করতে হয়, ভূমি সেবা সংক্রান্ত অফিসসমূহ ও প্রদেয় সেবাসমূহ, ভূমি বিরোধ/মামলা কীভাবে ও কোথায় নিষ্পত্তি হয়, ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২০ এবং অনলাইন/ডিজিটাল ভূমি সেবাসমূহ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল জিজ্ঞাসিত বিষয়গুলো সহজ ও বাস্তবধর্মী ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

‘ভূমিকথা’র সম্পাদক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শরীফ উল্যাহ জানান, উত্তরাধিকার আইন, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সারসংক্ষেপসহ ভূমি সংক্রান্ত ব্যবহারিক শব্দাবলির (ইংরেজি থেকে বাংলা) পরিচিতিও এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। ভূমিবিষয়ক এই জ্ঞান নিয়ে কেউ পেশা গড়তে চাইলে তার জন্যও এটি একটি মূল্যবান পুস্তিকা। জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে জেলার সকল স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এটি বিতরণ করা হচ্ছে এবং এটি নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেমিনার ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, পর্যায়ক্রমে এই পুস্তিকাটি বাংলাদেশের সকল নাগরিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে পৌঁছাতে পারলে ভূমি বিষয়ক কার্যক্রম আরও বেশি ফলপ্রসূ হবে।

এদিকে, শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জমকালো আয়োজনে এই কর্মসূচির চূড়ান্ত কুইজ প্রতিযোগিতা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টায় লিখিত কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্ব শুরু হয়। পরে দুপুর ১২টায় দলগত কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। একক কুইজে সর্বোচ্চ ৪৭ নম্বর পেয়ে প্রথম হওয়া জুবাইদা খাতুন অর্পাকে ২৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আর দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী তৌছিফ আহমেদকে ১৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী হাবিবা আক্তারকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড। এছাড়া, চতুর্থ থেকে দশম স্থান অর্জনকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে প্রাইজবন্ড দেওয়া হয়।

দলগত চ্যাম্পিয়নকে ১৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়। দ্বিতীয় স্থান অধিকার পেয়েছে ১০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী স্কুল পায় ৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও ক্রেস্ট।

জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত চলতি বছরের মে মাসে ‘ভূমিকথা’ নামক ছোট এই পুস্তিকাটি প্রকাশের পরিকল্পনা করেন। ভূমি বিষয়ক মৌলিক জ্ঞান ও ভূমি সেবার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ এই বইটি প্রকাশের পর মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলার প্রায় ১০ হাজার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।


জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: ডা. তাহেরের বক্তব্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন সংস্কার চায় না। তারা পুরোনো নিয়মে নির্বাচনের আয়োজন করতে চাইছে এবং অন্তবর্তী সরকার সে দলের ফাঁদে পা দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসাথে আয়োজনের সিদ্ধান্ত জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। আলাদা গণভোট হলে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ সংস্কারের পক্ষে রায় দিত। সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়- এটি বিশ্বাসঘাতকতা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহান, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মুনা কনভেনশন সেন্টারের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ও বায়তুল মামুর মসজিদের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন।

শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে এবং মনির হোসাইন ও রবিউল হোসেন মিলনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভিপি শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আমীর মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, পৌর আমীর মাওলানা ইব্রাহীম, শিবির নেতা আলা উদ্দিন, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম, সাবেক সেক্রেটারি শাহ মিজানুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা মাওলানা আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. ফজলুর রহমান, বিভিন্ন মাদরাসার অধ্যক্ষরা ও স্থানীয় নেতারা।


কুমড়ো ও ডালের বড়ি বানিয়ে সফল রূপগঞ্জের ৭০ পরিবার

*৭০টি পরিবার মাসে ৮৪ লাখ টাকার বড়ি তৈরি করছে *স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে বড়ি যাচ্ছে দেশে-বিদেশেও
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

কার্তিকের সোনালি রোদ ঠিকরে পড়ছে। দিগন্তে চোখ পাতলেই দেখা যায় ধানের খেত সোমত্ত হয়ে উঠছে। সবুজ থেকে ধীরে ধীরে হলুদ হচ্ছে ধানগাছের শরীর। ঋতুচক্রে এখন হেমন্ত কাল। কিন্তু উত্তরের হেমন্ত মূলত শীতেরই আগমনী বার্তা দেয়। ঘাসে ঘাসে শিশির বিন্দু কণা। সকালে এখন শীতের আবেশ। সেই আবেশ ছড়িয়ে পড়েছে গর্ন্ধবপুর নওগাঁও গ্রামসহ পুরো উত্তরে। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শীতের।

শীত মানেই বড়ি দিয়ে আলু ফুলকপির ঝোল, সিম-বেগুন, পাঁচ মিশালি চচ্চড়ি, কচুর শাক, বা কৈ-শোল মাছের ঝাল। আর গরম ভাতে ঘি আর কালোজিরে বা পোস্ত দেয়া ছোট্ট ছোট্ট ডালের বড়ি ভাজা হলে তো এক থালা ভাত নিমেষে শেষ! শীতের খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে মাছ-সবজিতে বড়ির প্রচলন দীর্ঘদিনের।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শীতের পিঠাপুলি খাবারের মত বড়ির বেশ কদর রয়েছে। মুখরোচক সুস্বাদু এই খাদ্য অতিযত্ন সহকারে শৈল্পিকভাবে তৈরি করে আসছে রূপগঞ্জের ৫টি গ্রামের প্রায় ৭০টি পরিবার। শীতের শুরু থেকে চার মাস এই বড়ি তৈরির কাজে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। ডালের বড়ি মূলত নারীরাই তৈরি করেন। পুরুষরা সহযোগিতা করেন।

কারিগররা বলেন, বাজারে ডালের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন বিক্রি কম। তবু বসে নেই এই মাসকলাই-কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগররা। এই বড়ি স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশে-বিদেশে।

কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আত্মীয়-স্বজনের হাত ঘুরে সুস্বাদু বড়ি এখন প্রবাসী বাঙালীদের রসনা তৃপ্ত করছে। এ উপজেলার মানুষ যারা দুবাই, সৌদি আরব, কাতার-ওমান, আরব-আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন তাদের জন্য পাঠানো হচ্ছে এই বড়ি। রূপগঞ্জের ৭০টি পরিবার মাসে প্রায় ৪২শ কেজি ডালের বড়ি তৈরি করে আসছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮৪ লাখ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই বড়ি বানানোর কাজ শুরু হয় ভোর ৫টার দিকে। সেই কর্মযজ্ঞ দেখতে ভোরবেলা রওনা হই সিএনজিযোগে। তারাব পৌর এলাকা থেকে গর্ন্ধবপুর এলাকা। এরপর আঁকাবাঁকা কাঁচা সড়ক ধরে পূর্বে ছুটে চলি। প্রায় আধা কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে না করতেই আটকে গেল দুই চোখ। বাড়ির উঠানে বসে লোকজন পরিষ্কার করছেন টিন। পুরোনো সেই টিনের ওপর কেউবা দিচ্ছেন নারকেল তেলের প্রলেপ। কেউ ফেটিয়ে যাচ্ছেন মিহি করে বেটে নেয়া মাষকলাই। আবার কেউ তৈরি করছেন ডালের বড়ি। বাড়ির নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কিংবা শিশু সবাই কোনো না কোনোভাবে বড়ি বানানোর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন। এটাই যে সেই নওগাও, তা আর বুঝতে বাকি রইল না।

কারিগররা আরো বলেন, শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাজারে নানা ধরনের সবজির সমাহার দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলের খালবিল নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এই সময়ে মাছের সাথে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের সবজি বাজারে ওঠে। আর এই মাছ ও সবজি রান্নাতে ব্যবহার হয় সুস্বাদু কুমড়া বড়ি। সেই চাহিদা পূরণ করছে নওগাও, গন্ধবপুর বারোবিঘা, নিমেরটেক, টান মুশরী গ্রামের মাসকলাই ও কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগর।

পরিবারের কাজের ফাঁকে কুমড়া বড়ি তৈরি করে বাড়তি উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন গ্রামের নারী ও পুরুষরা।

নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি কুমড়া বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দিয়েছেন। আর এ কাজে নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও কাজ করছেন। ডাল ভেদে দাম নির্ধারণ হয় কুমড়া বড়ির। ১৮০ টাকা কেজি থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা কেজি পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। ভোর থেকে উপকরণ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে সূর্য উঠা পর্যন্ত চলে এই কাজ। শীতের প্রখর রোদে দুই-তিন দিন শুকিয়ে বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করা হয় কুমড়া বড়ি।

নগরপাড়া এলাকার গৃহবধূ নাজনীন সুলতানা বলেন, শীত আসলে ঘরে ডালের বড়ি থাকা চাই। ডালের বড়ির সাথে ফুলকপি আর কৈ মাছ দিয়ে সুস্বাদু তরকারি তৈরি করি।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জজ বলেন, ডালের বড়ি বা কুমরোর বড়ি আসলেই মজাদার খাবার। দিন দিন এগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রক্ষণা বেক্ষণ করতে হবে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হবে।


সারিয়াকান্দিতে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জোরপূর্বক জমিদখল, বাবাকে হত‍্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে আহতের বিচার ও নিজের এবং বাবার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী।

গত শুক্রবার সকালে সারিয়াকান্দি মডেল প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকার জয়নাল আবেদীনের মেয়ে শারমিন আক্তার জনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৮নভেম্বর আনুমানিক সকাল ১১ ঘটিকায় উপজেলার নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকায় তার আপন মামা সামছুল মোল্লা, দুলা মিয়া, মুন বাবু, রশিদুল, নাহিদ ও লাইলীসহ বেশ কয়েকজন মিলে তার মা রহিমা বেগম, বাবা জয়নাল আবেদীনসহ তার চাচা-চাচিকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করেন এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেন। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার মামার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে জনির আপন মামা সামছুল মোল্লা জনির বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন এবং তার মা ও চাচা-চাচিকে রড দিয়ে বেধরক পিটায়। কুড়ালের আঘাতে জয়নাল আবেদীনের মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং অনবরত রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে সামছুল মোল্লাসহ তার বাহিনী পিছু হটে। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আহতদের প্রথমে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন এবং জয়নাল আবেদীনের মাথায় রক্তক্ষরণ বন্ধে ৬টি সেলাই দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও গত অক্টোবর মাসে এ জমি দখলের উদ্দেশ্যে সামছুল মোল্লার মেয়ে জামাই নাহিদের নেতৃত্বে বগুড়া থেকে প্রায় শতাধিক সন্ত্রাস বাহিনী জয়নাল আবেদীনকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়। একই দিনে সন্ত্রাস বাহিনী ধারালো অস্ত্র দিয়ে জমিতে রোপনকৃত ১৫টি বনজ ও ফলজ বৃক্ষ কর্তন করে এবং এরকমই গাছের মতো তাদের দেহ থেকে মাথা আলাদা করার হুমকিও প্রদান করে। এটা সমাধান করার জন্যে মাত্র ৭দিন সময় বেঁধে দেয় সন্ত্রাসরা। সাত দিনের মধ্যে আমরা তাদের কথা মতো জমি না ছাড়ার পেক্ষিতে গত ৮নভেম্বর শনিবার এই হামলার ঘটনা ঘটায়।

সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শারমিন আক্তার জনি তাদের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ওই পরিবারের কোনো ক্ষতি হলে সামছুল মোল্লাসহ তার বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী থাকবে বলেও তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।


আটক আসামির বক্তব্য প্রচার: রাজশাহী পুলিশ কমিশনারকে আদালতে তলব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী প্রতিনিধি

বিচারকের ছেলেকে হত্যা ও স্ত্রীকে আহত করার ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে ১৯ নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার সকালে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশীদ এ আদেশ দেন।

আদেশে বলা হয়, মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদ থেকে আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় অভিযুক্ত লিমন মিয়া কৌশলে প্রবেশ করে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৭) ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এছাড়া তাঁর স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এর প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল থেকে লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায়, লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেয় যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র ৩৯ বিএলডি ৪৭০সহ বিভিন্ন মামলায় প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ দেওয়ায় কেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।


হ্যান্ডকাপসহ পালালো আ.লীগ নেতা, সাঁড়াশি অভিযানে পুলিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় আক্রমণ করে ক্যান্ডকাপসহ পালিয়েছেন এক আ.লীগ নেতা। তাকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ। রাতভর অভিযানের পরও তাকে ধরা যায়নি। পলাতক জসিম উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য।

এরআগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পুটিজুরী বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ পরই জসিম মেম্বার ও সহযোগীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের এসআই মহসিন রেজা সৌরভ আহত হলে জসিম মেম্বার পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। স্থানীয়রা জানান, পুলিশ জসিম মেম্বারকে গ্রেপ্তার করার পরে সে চিৎকার করে উঠলে তার সহযোগীরা তাকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে অস্ত্রসহ হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি একাধিক মামলার আসামি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।

বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে জসিম মেম্বারকে ধরতে গেলে সে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। আর হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।


ভোরের আলো ফোটার আগেই ফ্ল্যাটে মিললো স্ত্রীর লাশ, গুরুতর আহত স্বামী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে শনিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই ফ্ল্যাটে মিলেছে স্ত্রীর লাশ। এ সময় গুরুতর আহত স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার ভোরে বাইশমাইল এলাকার নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার স্থানীয় একতা টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রহিমা খাতুন ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার আমতৈল গ্রামের কসাই এমরান হোসেনের স্ত্রী । তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ইমরান কসাই এর কাজ করেন। তার স্ত্রী রহিমা খাতুন ও মেয়ে শারমিনকে নিয়ে বাইমাইল এলাকায় একতা টাওয়ারের ৫ম তলার ফ্ল্যাটে ভাড়ায় বসবাস করতেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তরা ওই বাসায় প্রবেশ করে ইমরান ও তার স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রহিমা খাতুনের মৃত্যু হয়। শনিবার ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইমরানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ও স্ত্রীর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সিআইডিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কোনাবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, লাশ উদ্ধারের কিছুক্ষণ পর তল্লাশি চালালে স্বামী এমরান হোসেনের পালস পাওয়া যায়। তাই তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার স্ত্রী রহিমার লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে শারমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


banner close