রোববার, ২৭ জুলাই ২০২৫
১২ শ্রাবণ ১৪৩২
ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ

৬ কোটি টাকার সেতুতে ওঠতে হয় মই বেয়ে

নাসরিন সিপু, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশিত
নাসরিন সিপু, আমতলী (বরগুনা)
প্রকাশিত : ১৯ জুন, ২০২৫ ২০:৫৬

বরগুনার আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়া নামক স্থানে সোয়া ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গুলিশাখালী খালের ওপরে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। মই বেয়ে ওঠতে হয় সেতুতে। যা রীতিমতো ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া ও চাওড়া এই তিন ইউনিয়নের সংযোগস্থল আমড়াগাছিয়া বাজারের পশ্চিমপাশে গুলিশাখালী খালের ওপর ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্য ৬.৭৭ মিটার প্রস্থের এই গার্ডার সেতু ৬ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার ৩২৩ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের চুক্তি করে বরগুনা এলজিইডি। কাজটি পায় বরিশালের মেসার্স কহিনুর এন্টার প্রাইজ অ্যান্ড ত্রিপুরা জেভি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের ১৯ মে কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জুনে নির্ধারিত সময়ের আগেই মূল সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন। কিন্ত বিপত্তি দেখা দেয় সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে। সেতুর পশ্চিম পাশের সেতুর ঢালের ৫ ফুটের মাথায় রয়েছে পূর্ব খেকুয়ানি গ্রামের চলাচলের জন্য সড়ক। সেতুর ডিজাইন এবং উচ্চতা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যাবে এ নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সেতু নির্মাণের ১১ মাস ধরে সংযোগ সড়ক ছাড়া এভাবে পরে আছে। এতে তিন ইউনিয়নের ২০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পড়েছে ভোগান্তিতে। যাতায়াতের জন্য স্থানীয়রা সেতুর পশ্চিম পারে কাঠ ও বাঁশের মই বানিয়ে কোনো রকমে যাতায়াতের উপযোগী করে চলাচল করছে। এই মই বেয়ে বয়স্ক ও শিশুরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। কোনো ধরনের যানবাহন সেতুতে ওঠতে না পারায় পণ্য পরিবহনে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। পণ্য পরিবহন করতে দশ কি. মি. ঘুরে মহিষকাটা সেতু পাড় হয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এতে ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেতুটি গুলিশাখালী, চাওড়া ও কুকুয়া এই তিন ইউনিয়নের সংযোগস্থল । এই সেতু পার হয়ে গুলিশাখালী ইউনিয়নের পূর্ব খেকুয়ানী, গুলিশাখালী, ডালাচারা, বাইবুনিয়া, কলাগাছিয়া গ্রামের শত শত মানুষ আমতলী সদর, বরিশাল, ঢাকাসহ সারা দেশে চলাচল করে। চাওড়া ও কুকুয়া ইউনিয়নের মানুষও এই সেতু পার হয়ে গুলিশাখালী ইউনিয়নে যাতায়াত করেন। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় আমাদের চলাচলে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে পণ্য পরিবহন, রোগী আনা-নেওয়ায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। মরদেহ আনা-নেওয়ায়ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। দ্রুতই সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে যাতায়াতের সুব্যবস্থার দাবি করছেন এলাকাবাসী । ঠিকাদার মো. কাওছার মিয়া বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেছি। সংযোগ সড়কের জন্য আলাদা দরপত্র হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে তারাই কাজ করবে। এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, সেতুর উচ্চতা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক তৈরি করতে গেলে পাশের একটি সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে বিকল্প হিসেবে সেখানে আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যাতে মূল সড়কটি ঠিক থাকে। এতে ব্যয় কিছুটা বাড়বে। এ লক্ষ্যে নতুন করে নকশা ও বাজেট তৈরি করে প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলেই দরপত্র আহ্বান করে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।


পাহাড়ে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাচ্ছে কপি ও কাজুবাদাম

পরিবেশ বিধ্বংসী সেগুন ছেড়ে বিকল্পে ঝুঁকছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের চাষিরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম

কপি ও কাজুবাদাম চাষে অর্থকষ্ট থেকে মুক্তির আশা দেখছে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাষিরা। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির পাহাড়ি-বাঙালি চাষিদের জাগিয়ে তুলেছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ পার্বত্য তিন জেলা পরিষদ ও স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সংশ্লিষ্টরা জানান, পাহাড়ের কৃষকদের কপি ও কাজুবাদাম চাষের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা জানিয়েছেন, অনগ্রসর পাহাড়বাসীদের ভূপ্রকৃতি রক্ষাসহ তাদের আর্তসামাজিক উন্নয়নে পার্বত্যাঞ্চলে তিনি জানান, সম্প্রতি পাহাড়ে কপি ও কাজুবাদাম গাছ লাগানোর ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই লক্ষ্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অধীন উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদগুলোসহ স্থানীয় কৃষি অফিসগুলোর মাধ্যমে পাহাড়ের কৃষকদের কপি ও কাজুবাদামের চারা বিতরণসহ এই কপি ও কাজুবাদাম বিষয়ে স্থানীয় কৃষক-কৃষাণিদের ব্যাপক ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় করার নির্দেশনা দিয়েছি।

পার্বত্য উপদেষ্টা বলেন, কপি-কাজুবাদাম শুধু ১ বছরের জন্য নয়; এটি একবার শুরু করলে আগামী অন্তত ৪০-৫০ বছর লাগাতার অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেবে। এতে করে আমাদের প্রার্ন্তিক জনগোষ্ঠী খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশীলতায় পৌঁছাবে।

জানা গেছে, দেশের ১ হাজর ৮০০ হেক্টর জমিতে-২০২১ জুন মাসে কপি-কাজুবাদাম চাষ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পের শুরুতে কাজুবাদাম চাষ হতো। প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে প্রায় ৪ হাজর ২০০ হেক্টর জমিতে কাজুবাদাম চাষ হচ্ছে। সেই সঙ্গে কফি চাষ ৬৫ হেক্টর থেকে বেড়ে ১ হাজর ৮০০ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে। পাহাড়ে বর্তমানে উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলার ১২ উপজেলায় প্রায় ২ হাজার কপি ও কাজুবাদামের বাগান সৃজন করা হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের কপি ও কাজু বাদাম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের অনাবাদি জমিতে কাজুবাদাম ও কফি চাষ সম্প্রসারিত প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনা করছে উন্নয়ন বোর্ড।

বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় ৫ লাখ হেক্টর অব্যবহৃত জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ হেক্টরে কফি চাষ করলে ২ লাখ টন কফি উৎপাদন সম্ভব।’ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৯২ শতাংশ উঁচু ভূমি, তাই এখানে পানি জমে না যা কফি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ কফি গাছ চাষ করতে বাড়তি জমিরও প্রয়োজন হয় না। পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কফি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পাহাড়ে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার কপি-কাজুবাদামের বাগান সৃজিত করেছে স্থানীয়দের মাধ্যমে।

এ প্রকল্পে দেশে উৎপাদিত কাজুবাদাম ও কফির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। পাহাড়ে এই প্রকল্পের শুরু থেকেই এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। তিনি জানান, দেশের পার্বত্য অঞ্চলের ২ লাখ হেক্টর অনাবাদি জমিকে কাজুবাদাম ও কফি চাষের আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে উৎপাদিত কাজুবাদাম ও কফির মাধ্যমে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ১ বিলিয়ন ডলার এর রপ্তানি করা সম্ভব।

ইতোমধ্যে কাজুবাদামের ২২টি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেছে। দেশে বর্তমানে কাজুবাদামের বাজার প্রায় ৭০০ কোটি টাকার। প্রতি বছর গড়ে ২ হাজর ৫০০ থেকে ৩ হাজার টন প্রক্রিয়াজাতকৃত কাজুবাদাম আমদানি হয়। দেশে কফির চাহিদা প্রায় ২ হাজার টন। গত এক দশকে গড়ে কফির চাহিদার প্রবৃদ্ধি প্রায় ৫৬ শতাংশ। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার কফি দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি হয়। ভোক্তা পর্যায়ে গত ৫ বছরে এ দুটি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

এদিকে বিএসআরএম ও কাজী গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠান রপ্তানির উদ্দেশ্যে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করছে। এসব কারখানায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জনের মতো লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বিদ্যমান প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলোতে প্রায় ২ হাজার জন শ্রমিক কাজ করছে। এসব শ্রমিকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হলো- নারী শ্রমিক।

এদিকে রাঙামাটির কৃষি বিভাগ বলছে ‘সঠিক পরিকল্পনায় পাহাড়ি এলাকায় কপি ও কাজুবাদাম চাষ শুরু করা গেলে তা একদিকে অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে, অন্যদিকে পাহাড় রক্ষা পাবে।’


ভোলায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ আট ডাকাত গ্রেপ্তার  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় অভিযান চালিয়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমানে দেশীয় অস্ত্রসহ ৮ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে কোস্টগার্ড দক্ষিন জোনের ভোলা বেইস।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন,মো.সুজন (৩৫),মো.জাকির (৪৮),মোঃ সোহাগ (২৪),মোঃ আল আমিন (৪০),মো.শাহ আলী (৬০),মো.হানিফ ফরাজী (৬১), মো,শামসুদ্দিন (৪৮) ও আব্দুল হক (৫৬)। তারা সকলে ভোলা সদর ও চরফ্যাশন উপজেলার বাসিন্দা।

রোববার (২৭ জুলাই) সকালে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরবৈরাগী এবং তৎসংলগ্ন চর এলাকায় একটি ডাকাত দল স্থানীয় জনসাধারণ এবং জেলেদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি, জমি দখল ও বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করে আসছিলো বলে জানা যায়।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ধনিয়া তুলাতুলি ঘাট এলাকায় স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন ওই এলাকা থেকে ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র (পিস্তল) সহ ৩ জন ডাকাতকে আটক করা হয়।

পরবর্তীতে আটককৃত ডাকাত সদস্যদের দেওয়া তথ্যানুসারে শনিবার (২৬ জুলাই) ভোর থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত দৌলতখানের চরবৈরাগী এলাকায় স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় আরও একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ৭টি দেশীয় অস্ত্র ২ টি মেটাল স্টিকসহ আরও ৫ জন ডাকাতকে আটক করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর রশিদ আরও বলেন,পরবর্তীতে জব্দকৃত অস্ত্র ও আটককৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভোলা সদর ও দৌলতখান থানায় হস্তান্তর করা হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


৩ দিন বন্ধ থাকার পর, ভোলার নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো: ইউসুফ হোসেন অনিক,ভোলা

বৈরী আবহাওয়ায় নদী উত্তাল থাকায় টানা ৩দিন বন্ধ থাকার পর ভোলার ১০টি অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকা ১০টি রুটের মধ্যে ছিল,ইলিশা-মজুচৌধুরী ঘাট,হাতিয়া-ঢাকা,হাতিয়া-মনপুরা,চরফ্যাশন-ঢাকা,তজুমদ্দিন-মনপুরা,দৌলতখান- আলেকজান্ডার, তজুমদ্দিন-ঢাকাসহ অন্যান্য রুট। তবে স্বাভাবিক ছিল ইলিশা-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল।

রোববার (২৭ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভোলা নদী বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা মো.জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন,বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে নদী উত্তাল থাকায় ভোলার ১০টি রুটে যাত্রীবাহি নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় রোববার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে ভোলার এসব রুটে যাত্রীবাহি লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়েছে। তবে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।


মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনার উজানে ধসে পড়লো কোটি টাকার সড়ক, ভরসা এখন বাঁশের সাঁকো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তুহিন,বরিশাল ব্যুরো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনা নদীর পানি হু হু করে বেড়ে প্লাবিত করেছে বিস্তীর্ণ জনপথ। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর-ঘের ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা।

এরই মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আলিগঞ্জ-উলানিয়া চার লেনের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। ধসে পড়া সড়কের উপরই স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো যা এখন হাজারো মানুষের একমাত্র ভরসা।

রবিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, জোয়ারের পানিতে রাস্তাটির অন্তত ১০টি স্থানে ভয়াবহ গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো সড়ক এখন চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার অন্তত ৫/৬টি গ্রামের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ, যারা প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও হাটবাজারে যাতায়াত করতেন। উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিএনপির সহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় আপদকালীন চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়েছে কয়েকটি বাঁশের সাঁকো। ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদুল হক মিল্টন চৌধুরী বলেন,এভাবে গাইডওয়াল ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রাস্তা নির্মাণের কারণে কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প এখন ধ্বংসের মুখে। আগে গাইডওয়াল নির্মাণ, তারপর রাস্তা এই নীতিতে কাজ করতে হবে। স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় জোয়ারের পানিতে সড়ক ভেঙে পড়েছে। বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আকবর চৌধুরী বলেন, এভাবে কোটি টাকার প্রকল্প ধসে যাওয়া গভীর উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা দায় এড়াতে পারে না। বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজুর রহমান জানান,উপজেলা প্রকৌশলীকে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে পুনঃনির্মাণে কাজ করবে বলে আশা করছি।


কেরানীগঞ্জে বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে পুরাতন-নবাগত কর্মকর্তাদের মিলনমেলা

আপডেটেড ২৭ জুলাই, ২০২৫ ১১:৪৪
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলি, পদোন্নতি ও অবসরজনিত বিদায় এবং নবাগতদের বরণ উপলক্ষ্যে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা অফিসার্স ক্লাব

শনিবার (২৬ জুলাই) কেরানীগঞ্জ উপজেলা অডিটোরিয়ামে এই 'শুভাশিস অহর্নিশ' নামক অনুষ্ঠানে মিলিত হন পুরাতন ও নতুন কর্মকর্তারা।

জুলাই মাসের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে সময়মতো বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে না পারায় কিছুটা দেরিতে হলেও এই আয়োজনকে ঘিরে ছিল উচ্ছ্বাস ও হৃদয় ছোঁয়া অনুভূতি। অনুষ্ঠানে বিদায়ী কর্মকর্তারা যেমন নিজেদের কর্মজীবনের স্মৃতি তুলে ধরেন, তেমনি নবাগতরা কেরানীগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব পালনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সহকারী কমিশনার রইস আল রেদোয়ান, মনিষা রানী কর্মকার, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা, উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল্লাহ, সহকারী প্রকৌশলী আসিফ উল্লাহ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: তানভীর হোসেন, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মনসুর আহমেদসহ আরও অনেকে।

তাছাড়া নতুন যোগদান করা কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া, , উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার বেগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মোক্তাদ্দেস হোসেন, মৎস্য কর্মকর্তা কারিশা আহমেদসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, কর্মস্থল বদল হলেও হৃদয়ের বন্ধন ছিন্ন হয় না। আবার নতুন জায়গায় নতুনভাবে কাজ শুরু করার সুযোগও সৃষ্টি হয়। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের এমন হৃদয়বান আয়োজন প্রত্যেক কর্মকর্তার জন্যই এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে বিদায়ী ও নবাগতদের হাতে সম্মাননা স্মারক ও ফুলের তোড়া তুলে দেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তার রিনাত ফৌজিয়া।

দীর্ঘদিন পর পুরোনো সহকর্মীদের দেখা পাওয়া এবং নবাগতদের আন্তরিক বরণে এক উষ্ণ ও হৃদয়স্পর্শী পরিবেশের সৃষ্টি হয় পুরো অডিটোরিয়াম জুড়ে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের এমন আয়োজনকে সংশ্লিষ্টরা প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন।


মাগুরায় ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
 মাগুরা প্রতিনিধি

শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মাগুরা শহরের ছায়াবীথি সড়কে গলা কেটে ভজন গুহ (৫৫) নামে এক কলা ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবির হাসান নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ ,তার বাড়ি থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: মিরাজুল ইসলাম জানান, রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে শহরের ছায়াবিথী সড়কের ভাড়াটিয়া কলা বিক্রেতা ভজন গুহ কে তার বাসার সামনের রাস্তার উপর গলা কেটে হত্যা করে কে বা কারা ফেলে রেখেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ঐ এলাকার হান্নান বিশ্বাস এর পুত্র নেশাগ্রস্থ আবির হাসান কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তার বাড়ি থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।


নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটবল খেলার মাঠে ঢুকে পড়ল বাস, নিহত ১

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কুমিল্লার মুরাদনগরে ফুটবল খেলার মাঠে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢুকে পড়ে একটি যাত্রীবাহী বাস। এ সময় বাসটির চাপায় গিয়াস উদ্দিন (৪৩) নামের এক অটোরিকশাচালক নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় মাঠে থাকা আরও পাঁচজন দর্শক আহত হয়েছেন।

শনিবার (২৬ জুলাই) বিকালে মুরাদনগর উপজেলার সদরের ডিআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত গিয়াস উদ্দিন মুরাদনগর উপজেলার দুলারামপুর গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে মাদকবিরোধী ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা চলছিল ডিআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। এ সময় ইলিয়টগঞ্জ এক্সপ্রেসের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাঠে ঢুকে দর্শকদের ওপর উঠে গেলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরে ক্ষুব্ধ দর্শকরা বাসটি ভাঙচুর করেন।

এতে আহতরা হলেন— দুলারামপুর গ্রামের কাশেম মিয়ার ছেলে গোলাম রাব্বানী (১৮), গকুলনগর গ্রামের আবদুস সোবহান মিয়ার ছেলে শাহ জালাল (৪৫), দড়িকান্দি গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে সাইদুল ইসলাম (৩০), মুরাদনগর গ্রামের অনিল চন্দ্র বর্মণের ছেলে হৃত্তিক চন্দ্র বর্মণ (২০), কামারচর গ্রামের বারেক মিয়ার ছেলে দুধ মিয়া (৫৬)।


কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে, কিন্তু তার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার পায়নি: নাহিদ ইসলাম

আপডেটেড ২৭ জুলাই, ২০২৫ ০১:০৩
রাকিবুল হাসান রোকেল, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে, কিন্তু তার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার পায়নি। এই ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপতি আপনাদের বাংলাদেশকে, আমাদের বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছিলো। মানুষের মানবাধিকার, মানুষের গণতন্ত্র, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলো। এই কিশোরগঞ্জ থেকেই আপনারা সেই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান তৈরি করেছিলেন। শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জে জুলাই পদযাত্রা সমাবেশে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। জেলা শহরের পুরানথানা এলাকার স্বাধীনতা চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জানি, কিশোরগঞ্জের সদর এলাকাতেও স্কুল আছে কিন্তু শিক্ষক নেই, হাসপাতাল আছে কিন্তু ডাক্তার নাই, যু্ব সমাজ আছে কিন্তু কর্মসংস্থান নাই। অনেক বাজেট আছে কিন্তু রাস্তা নাই। রাষ্ট্রপতি আছে কিন্তু মানুষের উন্নয়ন নাই। আমরা এই কিশোরগঞ্জের চেহারা পাল্টে দিতে চাই।

জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের আবারো রাজপথে নামতে হয়েছে। যখন আমরা দেখেছি, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরেও মানুষের অধিকার আদায় হয়নি। আমরা যখন দেখতে পাচ্ছি, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরেও সমাজে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে। আমাদের আবারো নামতে হয়েছে, যখন আমরা দেখেছি, রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে দুর্নীতিকে চিরতরে বিলুপ্ত করা যায়নি। আমরা বলেছিলাম, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যেই পুরনো ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা রয়েছে, শেখ হাসিনার সংবিধানসহ শেখ হাসিনার যে সরকার ব্যবস্থা ছিলো, এই সকল নিয়ম বাদ দিয়ে নতুন রাষ্ট্র, নতুন সরকার তৈরি করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় আমরা নতুন সরকার পেলেও নতুন দেশ এখনো পাইনি। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ, গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ, নতুন দেশ গড়ার আগ পর্যন্ত আমাদের এই লড়াই চলমান থাকবে।

নাহিদ ইসলাম কিশোরগঞ্জ জেলার অধিবাসীদের উন্নয়ন বঞ্চনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কিশোরগঞ্জ হাওর বিধৌত এলাকা। হাওর এলাকার মানুষকে সংগ্রাম করে, কষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয়। এই কিশোরগঞ্জে সুপেয় পানির সংকট তৈরি হয়েছে। এই কিশোরগঞ্জের কৃষকদেরকে সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে সার সংকট তৈরি করা হয়েছে। কৃষকরা তাদের কৃষিকাজ ঠিকমতো করতে পারছে না। তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। হাওর এলাকা থেকে একটা শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারে না, চিকিৎসার জন্য সুব্যবস্থা পায় না। আমরা এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে প্রত্যেকটা মানুষের কাছে নাগরিক সুবিধা পৌঁছাবে। প্রত্যেকটা মানুষ নাগরিকের মর্যাদা পাবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ গণঅভ্যুত্থান হয়েছিলো তরুণদের নেতৃত্বে। এই তরুণদের উপর আস্থা রেখে বাংলাদেশের মানুষ নেমে এসেছিলো। আমরা আবারো বলছি, এই তরুণদের উপর আস্থা রেখে আপনারা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগদান করুন। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদেরকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশের ৫৪ বছরে যেই দুর্নীতিপরায়ণ রাষ্ট্র ব্যবস্থা, যেই মাফিয়াতান্ত্রিক লুটেরা রাষ্ট্রব্যবস্থা, সেই রাষ্ট্রের পরিবর্তন ঘটাবে। নাহিদ ইসলাম যোগ করেন, তরুণরা রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি, দেশের চালিকাশক্তি।

এই তরুণদেরকে যদি গণঅভ্যুত্থানের পরেও কাজে লাগাতে না পারি, এই তারুণ্যের শক্তিকে যদি দেশ গঠনে কাজে লাগানো না যায়, বাংলাদেশকে আর কখনো গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। আমরা তরুণরা তারুণ্যের সেই শক্তিতে বিশ্বাসী, আমরা কিশোরগঞ্জের শক্তিতে বিশ্বাসী। আমরা বিশ্বাস করি, কিশোরগঞ্জ জাতীয় নাগরিক পার্টির শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত হবে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্মআহ্বায়ক মনিরা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব আহনাফ সাঈদ খান, দক্ষিণাঞ্চল সংগঠক আকরাম হোসেন রাজ, উত্তরাঞ্চল সংগঠক খায়রুল কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রাত ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়াম থেকে পদযাত্রা করে নেতৃবৃন্দ পুরানথানা এলাকার সমাবেশস্থলে যান। এনসিপি’র এই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে প্রশাসনের পক্ষে আগে থেকেই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সমাবেশ শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে থেকে পুরানথানা এলাকার সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে এনসিপি নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।


ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই সংস্কারের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ ও বিদেশ থেকে ভাড়াটে লোক এনে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে কিছু লোক ভাড়া করে কি একটা দেশ চালানো যায়? না, যায় না। এটিই সহজ সত্য, আমাদের তা বুঝতে হবে।’

শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিয়া পরিষদের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচিটি পালন করা হয়, যা শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের’ পতনের সূচনা বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছেন, কয়েকটি বৈঠক করলেই সংস্কার হয়ে যাবে। এটা ঠিক নয়। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, তা একদিনে হয় না।’

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আগামীকাল থেকে পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে তা হবে না। তাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা নিরুৎসাহিত করা হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান আমলাতন্ত্র দেশের উন্নয়নের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি নেতিবাচক একটি আমলাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এটি পরিবর্তন করে ইতিবাচক আমলাতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে। আর তা করতে হলে জনগণকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফেরা, তাদের চাহিদা জানা এবং সেই চাহিদার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা।’

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিকে কেন্দ্র করে সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করলেই বলা হচ্ছে বিএনপি শুধু ভোট চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রকৃত জন-প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব। আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা সংসদে যাবে কীভাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে জনগণের শাসন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?’

আংশিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এই পদ্ধতির পক্ষে জোরালো সুরে কথা বলছে। কিন্তু পিআর নির্বাচন কী—সাধারণ মানুষ তা বোঝে না।’

তিনি বলেন, ‘দেশে এই পদ্ধতি নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, সেটি হলো—রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, প্রতীক হবে ধানের শীষ, পাল্লা, হাতপাখা ইত্যাদি; আর ভোটাররা গিয়ে ভোট দেবে। এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।’

পিআর পদ্ধতির ব্যাখ্যায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে জনগণ ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেয়। এরপর দল যাকে ইচ্ছা তাকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়। ফলে জনগণের পছন্দের, নিজেদের এলাকার কোনো নেতাকে তারা আর সংসদে পাঠাতে পারবে না।’

এই কারণেই বিএনপি জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে সমর্থন করে না বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক গভীর সংকটে রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কখন গণতন্ত্রের পথে ফিরব। দেশ বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।’

আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘তারা যে ক্ষতি করেছে তা পূরণ করা সহজ হবে না। তারা বিচার বিভাগ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য খাত, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ধ্বংস করেছে।’

বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু পত্রিকায় যেসব অপকর্মের খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের গড়া দল। এই দলের নেতৃত্ব ও কর্মীদের সততাই প্রধান ভিত্তি। সততা ছাড়া বিএনপি জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘আজকাল পত্রপত্রিকায় যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, সেগুলো বিএনপির আদর্শ বা জিয়াউর রহমানের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। তাই যারা বিএনপির রাজনীতি করছেন, তাদের জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে এবং অবশ্যই সৎ হতে হবে।’


বিচার নিশ্চিত না হলে আবারও গুমের সংস্কৃতি ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

শনিবার (২৬ জুলাই)এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিচার নিশ্চিত না হলে দেশে আবারও গুমের সংস্কৃতি ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

বক্তারা বলেন, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে গুমের আলামত নষ্ট এবং সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি রয়েছে হুমকি ও নানা ধরনের অসহযোগিতাও।

আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণাগার হলে ‘বলপূর্বক গুমের ঘটনা মোকাবেলা: কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়’ শীর্ষক এক সেমিনারের তারা এ কথা বলেন।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার এবং গুম থেকে ফিরে আসা ভিকটিমসহ শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের সহযোগিতায় মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন ও ড. নাবিলা ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন।

অধিকার’র পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন জাতিসংঘের ঢাকাস্থ মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন।

বক্তারা আরও বলেন, বিচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, গুমের সঙ্গে জড়িত তৎকালীন বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তিরা পালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে বিচার নিয়েও সংশয় তৈরি হচ্ছে।

তারা বলেন, তবে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই গুমের ঘটনাগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার সব ধরণের তথ্যই সংগ্রহ করছে। যাতে করে অভিযুক্তদের বিচার নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চারটি স্তরে সাধারণ মানুষকে গুম করা হতো। এগুলো হচ্ছে- একটি গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নজরদারির মধ্যে রাখত। অপর গ্রুপ তাকে তুলে নিতো। এই গ্রুপটি গুমের শিকার ব্যক্তিকে হয় জঙ্গি বানিয়ে সন্ত্রাস ও অস্ত্র মামলা দিয়ে আদালতে চালান দিতো, অথবা মেরে ফেলত। সর্বশেষ গ্রুপটি ভারতে পাচার করে দিত অথবা আয়না ঘরে গুম করে রাখতো।

তিনি বলেন, গুম কমিশন চারভাবে অনুসন্ধান করছে। এগুলো হচ্ছে- সব আয়না ঘর বা বন্দিশালা পরিদর্শন, সংশ্লিষ্টদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ, ভারতীয় কারাগারে বাংলাদেশীদের আটকের তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পত্র প্রেরণ এবং ভারতে পুশইনের তালিকা ধরে অনুসন্ধান করা। এভাবে গুম কমিশন অভিযুক্তদের বিচারের ব্যাপারে কাজ করছে।

সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম, খুলনা জেলা আইন কর্মকর্তা (জিপি) অ্যাডভোকেট ড. মো. জাকির হোসেন, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তৌহিদুর রহমান চৌধূরী তুষার ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ড. নাজমুস সাদাত শুভ।

এর আগে গতকাল শুক্রবার খুলনার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে গুম থেকে ফেরত আসা ব্যক্তি ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের খুলনা বিভাগীয় পরামর্শ সভায় গুম কমিশনের সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের না জানিয়েই আয়না ঘর ও বিভিন্ন বন্দিশালা পরিদর্শন করা হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে জানিয়ে পরিদর্শনে গেলে সবকিছু গোছানো অবস্থায় পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, কিন্তু না জানিয়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় ভুক্তভোগীদের বর্ণনার সঙ্গে আলামতের মিল পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে একটানা কাজ করে কমিশনের সদস্যরা তথ্য প্রমাণ ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

সেমিনারে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার ও গুম থেকে ফেরত আসা ব্যক্তিরা গুম সংক্রান্ত কমিশনের কাছে তাদের দুর্বিষহ নিদারুণ নির্যাতন নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন।


সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ৬ বাংলাদেশি আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ৬ বাংলাদেশীকে আটক করেছে বর্ডারগার্ড বিজিবি। আটককৃতরা হলেন, সুনামগঞ্জের প্রমোদ তালুকদারের ছেলে প্রভাত তালুকদার (৭৪), নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা থানার বিনোদ সরকারের ছেলে বিধান সরকার (৫০), মধ্যনগর উপজেলার গবিন্দ সরকারের ছেলে রিপন সরকার (৩৫), একই উপজেলার মতি সরকারের ছেলে অপু সরকার (১৭), নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ বরহাতুনী গ্রামের জীবন সরকারের ছেলে সৃজন সরকার (১৫), একই জেলার ডরিয়াকোনা গ্রামের বিধান সরকারের স্ত্রী রিক্তা সরকার (৪৫)।

জানা যায়, শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ বিরেন্দ্রনগর বিওপির একটি বিশেষ টহল দল দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ১১৯৪/এমপি হতে প্রায় ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লামাঘাটা নামক স্থান থেকে তাদেরকে আটক করে বিজিবি।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল একেএম জাকারিয়া কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আটককৃতরা কাজের উদ্দেশ্যে প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস পূর্বে অবৈধভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে কুচবিহারে অবস্থান নেয়। সেখানে সঠিক মজুরী না পাওয়াসহ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভয়ে বাংলাদেশে আবার পালিয়ে আসার চেষ্টা করলে বিজিবি তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাহিরপুর থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।


কালীগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ: লাখো কণ্ঠের সঙ্গে শপথ নিলেন সর্বস্তরের মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি 

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।

বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।


মেহেরপুরের বাজারে দাম না থাকায় কাঠাল এখন গবাদিপশুর খাদ‍্য 

আপডেটেড ২৬ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৪৬
মেহেরপুর প্রতিনিধি

কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে জাতীয় রসালো ফল কাঠাল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এবারে কাঠালের ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম না থাকায় গাছেই পেকে নষ্ট হচ্ছে কাঠাল। ব‍্যাবহৃত হচ্ছে গবাদিপশুর খাদ‍্য হিসেবে।

কৃষি বিভাগ বলছে স্থানীয় ভাবে বাজার সৃষ্টি করা গেলে এই সমস্য থাকবে না।

জেলার গ্রাম অঞ্চলের সড়কের দুপাশসহ বিভিন্ন এলাকার কাঠাল বাগানের প্রতিটি গাছেই ঝুলে আছে বড় বড় কাঠাল। স্থানীয় ভাবে বাজার না থাকায় এসব কাঠাল বিক্রি করতে পারছে না চাষিরা। চাহিদা না থাকাকে পুজি করে ভ্রাম্যমান কাঠাল ব্যবসায়ীরা কম দামে চাষিদের কাছ থেকে কিনছে এসব ছোট বড় কাঠাল।

স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, একটি ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের বড় আকারের প্রতিটি কাঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। অনেকে দাম না পেয়ে কাঠাল কেটে গরু ছাগলের খাবার হিসেবে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, গত বছর যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তাও বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে।

কৃষি বিভাগের তথ‍্য মতে জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমির কাঠাল বাগান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন।

জামাল হোসেন বলেন, আমার বাড়ির উঠানে থাকা একটি কাঠাল গাছে প্রায় শতাধিক কাঠাল ধরে ছিলো।যার মধ‍্যে আমি সাতটা কাঠাল শুরুর দিকে বিক্রি করে ছিলাম ২"শ ৫০ টাকা করে। আর বতর্মানে প্রতি পিচ কাঠালের দাম দিতে চাইছে ১৫ টাকা করে। তাই বিক্রি না করে কাঠাল কেটে গরুর নাইন্দে খাদ‍্য হিসেবে দিচ্ছি। এই দামে কাঠাল বেচে পড়তা হয়।

আরেক বাগানি আমজাদ হোসেন বলেন,গাছে প্রচুর কাঠাল ধরেছে। গাছের কাছে ব্যাপারী গেলে ঘুরে আসছে। নেওয়ার লোক নাই ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজনের কাঠাল দাম বলছে কম এখন গাছেই কাঠাল পেকে পোচে যাচ্ছে।

ইউপি সদস‍্য শাহিন আহমেদ বলেন,

এত বড় বড় কাঠাল গাছে পেকে পড়ে নষ্ট হচ্ছে গরুকে খাওয়াইছি। নেয়ার লোক নাই ২০ টাকা ৩০ টাকা দাম বলছে। এখন কি হবে নষ্ট হচ্ছে পচে। অথচ এই কাঠাল এমন একটি ফল যার পাতা থেকে শুরু করে সবকিছুর ব‍্যাবহার হয়। তাছাড়া একটি সময় ছিলো প্রতিটি বাড়িতেই কাঠাল গাছ ছিলো। বতর্মানে তেমনটির আর দেখা মিলছে না। বরং এখন কাঠাল বাগান কেটে ফেলা হচ্ছে।

বিধবা রওশনারা বলেন,বাগানে কাঠাল পড়ে আছে নেয়ার লোক নাই। গরু ছাগলে খাইছে মানুষ খাইছে না। পাকা কাঠাল পইড়ি নষ্ট হইছে।

কাঠাল বিক্রেতা রইচ উদ্দিন বলেন,গত বার যে কাঠাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কিনেছি সেই কাঠাল এবারে কিনছি ২০ টাকা করে। আর আমাদের খরচ যোগ হচ্ছে ১০ টাকা। অথচ সেই কাঠাল হাটে বিক্রি করতে গেলে ২০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে না। আবার কিছু বাগান মালিক আছে কম দামে কাঠাল বিক্রি না করে ঘাসের বিকল্প হিসেবে গরু ছাগলকে খেতে দিচ্ছে।

আমরা যে ১০ টাকা লাভ করবো তা করতে পারছিনি। বাগান থেকে ঘুরতে হচ্ছে ওখানে বেচতে পারছিনি।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সামসুল আলম বলেন, মেহেরপুর জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে কাঠাল বাগান আছে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩শ মেট্রিকটন। যে পরিমান উৎপাদন হয়েছে সে পরিমান চাহিদা নেই। মেহেরপুরে বাজার না থাকার কারনে কাঠাল বিপনন করতে সমস্যা হচ্ছে। এই ব্যাপারে কৃষি বিপনন কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং ডিসির সাথে কথা বলেছি এখানে স্থানীয় ভাবে বাজার করা যায় কি না। যদি করা যায় তাহলে সমস্যা থাকবে না। আমরা কৃষদের পরামর্শ দেব, দেশের যে এলাকায় কাঠালের চাহিদা আছে সেখানে বিক্রি করতে পারলে লাভবান হবে।


banner close