ঢাকা, ২২ জুন ২০২৫ (বাসস) : এশিয়ান বোলারদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েছেন ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরাহ। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।
হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৩ উইকেট নেন বুমরাহ। এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে মোট ৩২ ম্যাচ খেলে ১৪৮ উইকেট শিকার করেছেন বুমরাহ। এতে ভেঙে যায় আকরামের রেকর্ড।
অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে মোট ৩২ ম্যাচ খেলে আকরাম শিকার করেছেন ১৪৬ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৩ উইকেট নিয়ে আকরামের রেকর্ড দখলে নিলেন বুমরাহ।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১২ ম্যাচে ৬৪, ইংল্যান্ডে ১০ ম্যাচে ৪০, নিউজিল্যান্ডে ২ ম্যাচে ৬ এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮ ম্যাচে ৩৮ উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ।
অন্যদিকে আকরাম, অস্ট্রেলিয়ায় ৯ ম্যাচে ৩৬, ইংল্যান্ডে ১৪ ম্যাচে ৫৩, নিউজিল্যান্ডে ৭ ম্যাচে ৫০ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ২ ম্যাচে ৭ উইকেট শিকার করেছেন।
এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন ভারতীয় স্পিনার অনিল কুম্বলে। ৩৫ ম্যাচে ১৪১ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছেন ভারতের দুই পেসার ইশান্ত শর্মা ও মোহাম্মদ সামি। ইশান্ত ৪১ ম্যাচে ১৩০ ও সামি ৩৪ ম্যাচে ১২৩ উইকেট নিয়েছেন।
ষষ্ঠ স্থানে আছেন ১৩৩ ম্যাচে ৮০০ উইকেট নিয়ে বিশ্ব রেকর্ডের মালিক শ্রীলংকার মুত্তিয়া মুরালিধরন। ২২ ম্যাচ খেলে ১২০ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজহার উল আলম, মৎস কর্মকর্তা জয় বণিক, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি রফিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভৈরব এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এবারের কৃষি প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন কৃষির আধুনিক যন্ত্র, ফলজ, ফুলসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলি খোলা থাকবে। এ মেলা চলবে ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, উপজেলার কৃষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় কৃষি কাজের সকল প্রযুক্তিসহ কৃষি সম্পকিত নানা বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য মেলায় বিভিন্ন স্টল বসেছে। এসব স্টলে এসে কৃষকরা প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন এবং তাদের কৃষি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজে লাগাতে পারবেন।
এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই। এরই মধ্যে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই ধরণের মেলা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসাবে কাজে দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তারা গবেষণা করছেন, সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন। বর্তমানে সব ধরনের চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা অবস্থায় পাওয়ার ঘটনায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) আরও চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে নওগাঁর পত্নীতলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ধামরইহাট থানা প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা হলেন, ধামইরহাট থানার ওসি আব্দুল মালেক, পুলিশ সদস্য মো. রেজুয়ানুর রহমান, আতিকুর রহমান ও মেহেদী হাসান।
এ ঘটনায় এর আগে আরও দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। তাঁরা হলেন, ধামইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাকিরুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্য ইকবাল হোসেন। থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা পাওয়ার ঘটনায় ধামইরহাট থেকে মোট ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটলো।
এএসপি শরিফুল ইসলাম জানান, আসন্ন এইচএসসি প্রশ্নপত্রের বেশ কয়েকটি বাক্স ধামইরহাট থানা হেফাজতে রাখা হয়। প্রশ্নপত্রের বাক্সগুলো থানার মালখানা কক্ষে রাখার কথা। কিন্তু কয়েকটি বাক্স ধামইরহাট থানায় আসামি রাখার হাজতখানা ঘরে রাখা হয়েছিল। ওই হাজতখানায় গত মঙ্গলবার রাতে মাদক মামলার এক আসামিকে রাখা হয়। গভীর রাতে ওই আসামি ট্রাংকের সিলগালা উঠিয়ে তালা খুলে ফেলে। ট্রাংকের ভেতরে প্যাকেটবন্ধ অবস্থায় থাকা প্রশ্নপত্র বের করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে হাজত ঘরের মধ্যে। কয়েকটি ছিঁড়েও ফেলে। পরদিন সকালে থানার কর্তব্যরত অফিসারের নজরে আসে এটি।
ঘটনা জানার পর ওই দিন থানার লকআপ বা হাজত পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে নওগাঁ পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে গতকাল শনিবার ধামইরহাট থানার ওসিসহ আরও চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নওগাঁ পুলিশ লাইনে ক্লোজ কর হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য কিংবা অন্য কারও বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মিললে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, থানা হাজতে থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলেন সেই ব্যক্তিকে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে ধামইরহাট থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে ওই আসামির বিরুদ্ধে নতুন একটি মামলা করেছে ধামইরহাট থানা পুলিশ। গত বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা পাওয়ার ঘটনায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম মোফাখখারুল ইসলাম শনিবার জানান, ইতিহাস বিষয়ের যে সেটটি থানায় নষ্ট হয়েছে সেটিতে আর পরীক্ষা নেওয়া হবে না। রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় আগামী ১৯ জুলাই বিকল্প সেটে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা অবস্থায় পাওয়ার পর নওগাঁ জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিন জানান, ওই প্যাকেটে ৫০টি প্রশ্নপত্র ছিল। সব কটিই উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকটি ছেঁড়া থাকলেও কোনো প্রশ্নপত্র হারিয়ে যায়নি।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় টয়লেটের ছাদে গাঁজা চাষ করায় ফয়সাল মিয়া বিজয় (৩২) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাতে সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের সাইজাল বরুন্ডি এলাকা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) একটি দল তাকে গ্রেফতার করেন। এসময় চারটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ফয়সাল মিয়া বিজয় সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের সাইজাল বরুন্ডি এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ জানান,ফয়সাল মিয়া বিজয় তার বসতঘরের পাশের পাকা টয়লেটের ছাদে গাঁজা চাষ করছে,এমন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে ফয়সাল মিয়া বিজয়কে আটক করা হয় এবং তার পাকা টয়লেটের উপর থেকে রোপন করা চারটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়। এরপর গাঁজা গাছসহ তাকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান,নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিয়ানের অংশ হিসেবে চারটি গাঁজা গাছসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
নতুন অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। রবিবার (২২ জুন) প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাজেট অনুমোদন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাজেট অনুমোদন হয়েছে। বাজেটের অঙ্ক পরিবর্তন হবে না। আমরা কোনো মেগাপ্রকল্প নিচ্ছি না। পাশাপাশি, পুরোনো অনেক প্রকল্প বাদ দিয়ে দিয়েছি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) টাকা মোটামুটি একটা বাস্তব পর্যয়ে নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘আগে বাজেট নিয়ে যা লেখালেখা হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। একটা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা ছিল, সেটা পরিবর্তন করে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
‘দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ডব্লিউটিওর একটি চুক্তি আছে যে আমরা রফতানি খাতে প্রণোদনা চারধাপে কমিয়ে আনবো। এরইমধ্যে দুইধাপ আমরা করেছি। তারা বলেছিল, জুলাই থেকে তৃতীয় ধাপ শুরু করা। কিন্তু আমরা বলেছি, জানুয়ারির আগে আমরা শুরু করবো না। প্রস্তুতির জন্য আমাদের সময় লাগবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংসদ না থাকায় এবার উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় ও সংশোধিত অর্থ অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে। অর্থ অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে নির্দিষ্টকরণ অধ্যাদেশের গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে যাবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। গত ২ জুন বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সংসদ না থাকায় তার বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাসেম আলী (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২২ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ গোড়ের পাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসেম আলী দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোবরগাড়া গ্রামের মৃত আছান শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন একটি ভবনে ইট ভেজাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক মোটরে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন হাসেম আলী। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
নেত্রকোণার বিএনপি দলীয় জেলা কার্যালয় ভাংচুর ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সৈয়দ ওয়াসিউল্লাহ্ রাসেলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে নেত্রকোণা জেলা শহরের উত্তর সাতপাই এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নেত্রকোণা সদর মডেল থানার সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত সৈয়দ ওয়াসিউল্লাহ্ রাসেল ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিভিন্ন পদে দ্বায়িত্বরত ছিলেন। বর্তমানে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও রাসেল তা অমান্য করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। তাছাড়া শুক্রবার সকালে হওয়া আওয়ামীলীগের মিছিলে সৈয়দ ওয়াসিউল্লাহ্ রাসেল পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল বলেও জানায় পুলিশ।
এব্যাপারে নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) চম্পক দাম জানান, সৈয়দ ওয়াসিউল্লাহ্ রাসেলকে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিএনপি কার্যালয় ভাংচুর ও নাশকতার ঘটনায় পরবর্তীতে দায়ের করা মামলায় সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
দেশের কৃষি প্রধান খাদ্য উদ্বৃত্ত ও সর্ববৃহৎ ধান ও চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ। বোরোর মৌসুম মাত্র শেষ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফসল ভালো হয়েছে, আবার ফসল নষ্টও হয়নি। তারপরও নওগাঁয় অস্থির চালের দাম।
সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ২-৪ টাকা। পাইকারিতে চালের দাম বাড়ায় স্থানীয় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। খুচরা বাজারে বেড়েছে ৫-৬ টাকা। এদিকে ঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।
কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সুযোগ বুঝে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু ব্যবসায়ী ও মিলার ধান সংগ্রহ করে কৃত্রিমভাবে চাল মজুদ করে, যার ফলে দাম বেড়ে যায় বলে দাবি খুচরা চাল ব্যবসায়ীদের। এজন্য প্রশাসনের নজরদারির অভাবকে দায়ি করা হচ্ছে।
নওগাঁ জেলার সবচেয়ে বড় চালের মোকাম শহরের আলুপট্টি চাল বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ২-৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে জিরাশাইল ৬৮-৭০ টাকা, শুভলতা ৬০-৬২টাকা, কাটারি ৭০-৭২, ব্রি আর-২৮ চাল ৬২-৬৪ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৫-৫৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও জিরাশাইল ৬৪-৬৬ টাকা, কাটারি ৬৬-৬৮ টাকা,শুভলতা ৫৭-৫৮ টাকা, ব্রি আর-২৮ জাতের চাল ৫৯-৬০ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ চাল ৫৩-৫৪ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে মানভেদে কেজি প্রতি ৫-৬ টাকা বেড়ে জিরাশাইল ৭০-৭২ টাকা, কাটারি ৭৫-৮০ টাকা, শুভলতা ৬২-৬৪ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৬৫-৬৬ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক সপ্তাহে আগে জিরাশাইল ৬৫-৬৬ টাকা, কাটারি ৭০-৭২ টাকা, শুভলতা ৫৭-৫৮ টাকা, ব্রি আর-২৮ চাল ৫৯-৬০ টাকা এবং স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫২-৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
চাল কিনতে আসা রিক্সা চালক আশরাফুল আলম ও গৃহিণী রেকেয়া বেগম বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ হঠাৎ এমনভাবে চালের দাম বাড়লে আমরা বেকায়দায় পড়ে যাচ্ছি। শুধু চাল নয় আরও অনেক জিনিসপত্র কিনতে হয় সবমিলে কঠিণ হয়ে যাচ্ছে জীবন ধারণ।
কথা হলে পৌর ক্ষুদ্র চালবাজার সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, বড় বড় বয়বসায়ীরা বেশি দাম দিয়ে ধান কিনছে। ছোট ব্যবসায়ীরা বড় বড় মিলারদের সাথে পেরে উঠতে পারছে না। এটা পুরো একটা সিন্ডিকেট। বাংলাদেশে যে ধান আছে, তা দিয়ে একবছর চলে যাব। সরকারি নজরদারি না থাকার সুযোগে কৃত্রিম মজুদ করেছে তারা। তাই বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান দরকার।
বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে যার ফলে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে দাবি করে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বলেন, চালের দাম সাধারণ ২-৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ৬ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ব্র্যান্ডিং কোম্পানির। তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কৃষকদের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে। যার কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও আমরা বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ চাই। এই জন্য আমাদেরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর দৃশ্যমানভাব যেসকল মিলে অতিরিক্ত মজুদ আছে সেখানে অভিযান চালনো উচিত। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে চাইলে ধান-চালের অবৈধ মজুতদারদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার বলেন, চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি) কর্মসূচি সচল রাখা হয়েছে। অবৈধ মজুত খুঁজে বের করতে জেলার বিভিন্ন মিল পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোথাও অবৈধ মজুত পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, চালের দাম কি কারণে বেড়েছে এই জন্য খাদ্য কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছি। তারা যেন প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে যদি অপরাধ মনে হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করবো।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমানকে প্রধান করে শনিবার এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো সাইফুল ইসলাম এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক বেলাল শিকদার।
এসব তথ্য জানিয়ে শাবি প্রক্টর মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। নির্ধারিত সময়ে রিপোর্ট দেবো। এর সাথে আরও কেউ জড়িত কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে। যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরআগে শুক্রবার বিকেলে ওই ছাত্রী বাদি হয়ে সিলেটের কতোয়ালি থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থ’র নাম উল্লেখ করে অজ্ঞতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
আদনান ও পার্থকে বৃহস্পতিবার রাতেই আটক করে পুলিশ। পরে মামলায় তদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা দু'জনই শাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার শান্ত তারা আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমানের অনুসারী ছিলেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসীূচতে তাকে দেখা গেছে। আদনান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল ‘নোঙর’-এরও সদস্য ছিলেন।
অপরদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক শিক্ষার্থী স্বাগত দাস পার্থ গত বছরের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছিলেন বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। তার ফেসবুকে প্রোফইলেও জুলাই আন্দোলনের সমর্থনে ছবি যুক্ত রয়েছে। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, পার্থ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তবে তিনি তেমন সক্রিয় ছিলেন না।
এদিকে, পার্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যসংগঠন ‘দৃক থিয়েটার’-এর কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ এবং বিশ্ববিদ্যালের শৃঙ্খলা-বডি সূত্রে জানা যায়- গত ২ মে সন্ধ্যারাতে সহপাঠী শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থের সঙ্গে শহরের কনসার্টে যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। কনসার্টে যাওয়ার পূর্বে তারা ওই ছাত্রীকে সুরমা এলাকার একটি মেসে নিয়ে যান। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণ করেন আদনান এবং পার্থ। একইসাথে এই ঘটনার ভিডিও এবং মেয়েটির নগ্ন ছবি ধারণ করেন। পরে ওইসকল ভিডিও ও নগ্ন ছবি দেখিয়ে আদনান এবং পার্থ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করছিলেন এবং ঘটনা জানাজানি করলে ভিডিও ও ছবি অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করলে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ আদনান এবং পার্থকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনা শেষে তাদেরকে থানায় পুলিশ হেফাজতে নেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির বিষয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি আমরা। বর্তমানে অপরাধীরা পুলিশ হেফাজতে আছে এবং মামলার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।'
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হচ্ছে।'
রূপগঞ্জের অজোপাড়াগায়ের পল্লীতে গড়ে ওঠেছে নৌকার গ্রাম। আর এ নৌকার গ্রামকে ঘিরে বালু নদীর তীর ঘেষে জমে ওঠেছে ব্যতিক্রমী নৌকার হাট। কাঠের খুটখাট আর নদীর পানির ছলাৎ-ছলাৎ শব্দ যে-কারো মনকে আবেগে ভরিয়ে দেবে। নৌকা তৈরির এ গ্রাম দু’টির অদূরেই বালু নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট। বর্ষা আসলেই রূপগঞ্জের নয়ামাটি ও পিরুলিয়া এলাকায় নৌকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কারিগরেরা হয়ে পড়ে মহাব্যস্ত। কায়েতপাড়া নৌকার হাটটিতে তখন চলে নৌকা বেচাকেনার রমরমা ব্যবসা। এছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকন্দাইল বাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার বসে নৌকার হাট। ইছাখালী-নগরপাড়া সড়কের অদূরেই নৌকার গ্রাম। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাত্র তিন মাসের মৌসুমি ব্যবসা। চাহিদা যথেষ্ট, তাই কারিগরদের ব্যবস্থাও বেশি ।
শুরুর ইতিহাস ঃ রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার কারিগরেরা স্বাধীনতারও আগে থেকে নৌকা তৈরি করে আসছে। কারো-কারো মতে,এ এলাকার নৌকা তৈরির ইতিহাস প্রায় শতাব্দী প্রাচীন। পিরুলিয়া এলাকার অতশীপরবৃদ্ধ অঞ্জনকুমার দাস বলেন, আমার জন্মের আগে থেইক্যা বাপ-দাদারা গয়না( নৌকা) বানাইয়া আইতাছে হুনছি। নয়ামাটি ও পিরুলিয়া ছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট এলাকার কারিগরেরা নৌকা তৈরি করে আসছে।
কারিগর কারা ঃ নৌকা তৈরির গ্রাম পিরুলিয়া ও নয়ামাটি বললেই সবাই চেনে। তবে এ এলাকা দু’টি গ্রামের ৯০ ভাগই মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। হিন্দুরাই দীর্ঘদিন ধরে নৌকা তৈরি করে আসছে। আশির দশকের পর নৌকা ব্যবসায়ী কমে যায়। অনেকে ভারত চলে যাওয়ায় এখনো দেড়’শ পরিবার টিকে রয়েছে কোনোমতে। সাওঘাট এলাকার কারিগর প্রদ্যুত কুমার সরকার বলেন, আগে ব্যবসা ভালাই আছিলো। অহন কাটের দাম আর লোয়া ( লোহা ) পেরেকের দাম বাইড়া যাওনে লাভ কম অয়।
কারিগরদের কথা ঃ পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার নৌকা তৈরির কারিগরেরা এখন ভালই আছেন। নৌকা বিক্রি করে তারা সংসার চালাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। বছর শেষে মোটামুটি লাভের মুখ ও দেখছেন। কথাগুলো একবাক্যে বললেন পিরুলিয়া এলাকার সত্যেন দাস। তার ছেলে লেখাপড়া করছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নয়ামাটি এলাকার রমেশ দাস বলেন, কই খারাপতো নাইগো দাদা। মোডা ভাত- আর মোডা কাপড় পরবার পারি। এইডাই সুখ।
বর্তমান অবস্থা ঃ নৌকা তৈরির কারিগরদের অবস্থা এখন কিছুটা ভাটা পড়েছে। ৯০’দশকের পর যান্ত্রিক সভ্যতা ফিরে আসায় নৌকার কদর কিছুটা কমে যায়। প্রতিবছর বর্ষায় নৌকা তৈরির ধুম চলে। তবে বন্যা হলে ব্যবসা ভালো হয় বলে জানালেন সুনীল দাস। তিনি বলেন, ৮৮’ আর ৯৮’ সালের বন্যায় অনেক টেহা লাব অইছিলো। নয়ামাটি এলাকার নৌকার কারিগর রবি দাস বলেন, কাডের দাম বাইড়া যাওনে লাভটা কম হয়। নাইলে ব্যবসা খারাপ না। আর ষ্টেলের নৌকার কারনে কিছুডা লছ অইতাছে। তারপরেও খারাপ নাই। ডাইল-ভাত খাইবার পারি।
খরচ কত ঃ এক-একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর মোটামুটি কাঠের নৌকা তৈরিতে খরচ পড়ে ৮/১০ হাজার টাকা। কথাগুলো বললেন নৌকার কারিগর তাপস দাস।
নৌকার হাটের কথা ঃ বালু নদীর তীর ঘেঁষেই কায়েতপাড়া বাজারে নৌকার হাট। ঢাকার নিম্মাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা নৌকা কিনতে আসেন। দামে সস্তা হওয়ায় এখানকার নৌকার কদরও বেশি। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বাজারের সামনে বিলে জমে ব্যতিক্রমি নৌকার হাট। এ হাটে প্রতি বৃহস্পতিবারে প্রায় কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। নৌকার হাট শুরু হয় নৌকা তৈরির গ্রামগুলোর কারিগরদের ঘিরেই। প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাট জমে ওঠে। বৃহস্পতিবার এ হাটে কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। ওঠে নৌকার বৈঠাও। গজারি কাঠের এক-একটি নৌকার দাম পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর কোষা ৭/৮ হাজার টাকায়। বৈঠাগুলো ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়। নৌকা বিক্রেতা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, দাদু ব্যবসা ভালোই, তয় পানি বেশি অইলে লাভ অয়। ঢাকার ত্রিমহোনী থেকে নৌকা কিনতে আসা ওমরআলী বলেন, এ হাটে তুলনামূলক সস্তায় নৌকা পাওয়া যায়। আড়াইহাজার থেকে নৌকা কিনতে আসা সামছুল হক বলেন, এ হাটে নৌকার দাম কম। তাই এহান থেইক্যা কিনবার আইছি।
র্যাবের অভিযানে ০৫ টি ডাকাতি, ০২ টি অস্ত্র আইনের মামলাসহ মোট ০৯ টি মামলার আসামী জলিল ডাকাতকে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ হতে গ্রেফতার করেছে সিপিসি-১, র্যাব-৮ এবং সিপিএসসি, র্যাব-৬, খুলনার যৌথ আভিযানিক দল।
র্যাব-৮, সিপিসি-১ (পটুয়াখালী) এবং র্যাব-৬, সিপিএসসি (খুলনা) এর যৌথ গোয়েন্দা ও অভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২১ জুন ২০২৫ ইং তারিখ বিকেল আনুমানিক ১৭৪৫ ঘটিকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানায় সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস ডাকাতি মামলার মূল হোতা মোঃ আঃ জলিল খাঁন (৪০), পিতা- আলী আকবর খাঁন, সাং-হোসনাবাদ, থানা- বেতাগী, জেলা- বরগুনা’কে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ গিয়াস উদ্দিন একজন প্রবাসী, যিনি সৌদি আরব থেকে ৯ জানুয়ারি ২০২৫ ইং দেশে ফেরেন। গত ৮ এপ্রিল ২০২৫ ইং তারিখ গভীর রাতে, আনুমানিক ০৩:০০ ঘটিকায় তার মঠবাড়িয়া থানাধীন বাড়িতে একদল সশস্ত্র ডাকাত হামলা চালায়। ১০-১২ জনের এই ডাকাত দল বাড়ির গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। তারা ঘরের মালামাল ভাংচুর করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতরা ওই সময় ঘর থেকে প্রায় ৩,৫০,০০০ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা নগদ, ২৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ২টি স্মার্টফোন এবং ১টি ল্যাপটপসহ মোট আনুমানিক ৪৫,২০,০০০ (পঁয়তাল্লিশ লক্ষ বিশ হাজার) টাকার সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। ঘটনার পরপরই র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায়, ২১ জুন ২০২৫ তারিখ বিকালে পরিচালিত অভিযানে মোঃ আঃ জলিল খাঁনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব। তাকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মাছ আমিষের যোগানদাতা; প্রাণিজ আমিষ হিসেবে মাছ বাঙালির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
উপদেষ্টা গতকাল বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ময়মনসিংহ কর্তৃক আয়োজিত ‘বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা ও গবেষণা পরিকল্পনা (২০২৫-২৬) প্রণয়ন শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মাছ বিশেষ করে ছোটমাছ কিভাবে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যায় তার জন্য বিএফআরআইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগ, বিএফআরআই এবং মৎস্য অধিদপ্তরকে অভিন্ন লক্ষ্যে আন্তঃসমন্বয় করে কাজ করতে হবে; তবেই বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের গুণগত পরিবর্তন সম্ভব।
বিজ্ঞানীদের জাতির মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, তারা যেন তাদের মেধা দিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে, গবেষণায় আরও মনোনিবেশ করতে পারে—সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানীদের এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে, যা সাধারণ মানুষের বোধগম্য হবে এবং যার উপকারিতা জনগণ সরাসরি বুঝতে পারবে। এসব প্রযুক্তি যদি মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারিত করা যায়, তাহলে দেশে মাছের সংকট থাকবে না বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা আরো বলেন, কৃষি কার্যক্রমে ব্যবহৃত কীটনাশক হাওর এলাকার মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই কমিটিগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে হাওরাঞ্চলে কীটনাশক ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমবে; ফলে জলজ প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, গবেষণাকে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএফআরআই এর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় জরুরি।
বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, বিএফআরআই এর বিজ্ঞানীরা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, মৎস্য খামারিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাদু পানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন উর রশিদ গবেষণা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এর আগে উপদেষ্টা বিএফআরআই এর গবেষণা মাঠের ঘারুয়া, রাণী, মহাশোল, দেশী স্বঁরপুটি, ভাগনা, গুলশা, পাবদা, টেংরা, বাটা, বিএফআরআই তেলাপিয়া, বটমক্লিন সিস্টেম (পাবদা ও মাগুর), গুড়া চিংড়ি, কুচিয়া, কার্প রেণু হ্যাচারি এবং মুক্তা ল্যাব পরিদর্শন করেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফআইডিসি) রাবার কাঠের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্যের প্রসারে কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।
গতকাল শনিবার রাজধানীর মিরপুরে বিএফআইডিসির ক্যাবিনেট ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে প্রস্তাবিত শো-রুম স্থাপনের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সরকারিভাবে উৎপাদিত গৃহস্থালী কাঠসামগ্রীকে আরও সহজলভ্য ও আকর্ষণীয় করে তুলতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএফআইডিসির উৎপাদিত পণ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়িত্ব, কারিগরি দক্ষতা এবং দেশীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, যা জনআস্থার জন্য যথেষ্ট। এই সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সরকারি বনশিল্প খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে গড়ে তোলা সম্ভব।
উপদেষ্টা বলেন, বিএফআইডিসি কর্তৃপক্ষ উপদেষ্টাকে উৎপাদন প্রক্রিয়া, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং শো-রুম স্থাপনের সম্ভাব্য স্থান ঘুরিয়ে দেখান। তিনি নির্দেশনা দেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে স্থান নির্ধারণ ও অন্যান্য কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে।
পরিদর্শনকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দীনসহ মন্ত্রণালয় ও কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।