রাজধানীর পরীবাগে রাস্তার পাশে চা বিক্রি করেন মোহাম্মদ আলী। স্ত্রী, বৃদ্ধ অসুস্থ মা আর দুই সন্তান নিয়ে তার পাঁচজনের সংসার। ২০১০ সাল থেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তিনি। পরে ধরা পড়ে কিডনির সমস্যা। তার আগে প্রতি মাসে শুধু ওষুধের পেছনে তার পরিবারের জন্য খরচ হতো ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকার মতো। কিন্তু কয়েক দিন আগে ওষুধের দোকানে গিয়ে হোঁচট খান মোহাম্মদ আলী। সবমিলিয়ে ওষুধের দাম আসে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা।
পরীবাগের দোকানে বসে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। দোকানে আগের চাইতে ভিড় কম থাকায় জানতে চাওয়া হয় ক্রেতা কম কেন? চা বানাতে বানাতে মনের খেদ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে করে মানুষ আর আগের মতো চা খেতে আসে না। ভাত খাবে নাকি চা খাবে? তা হলে আপনার বিক্রিও তো কমে গেছে মন্তব্যে বলেন, ‘বিক্রি কমছে কিন্তু খরচ বাড়ছে। তিনবেলার বদলে দুই বেলা ভাত খাই। আগে শখ করে মাছ কিনতাম, গত দুই মাসেরও বেশি মাছ কিনি না। বাড়িতে দুধ চা হতো, বাদ গেছে, মায়ের পান খাওয়াও কমানো হয়েছে।’
বলেন, ‘আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল না হওয়ায় কিশোরী মেয়েকে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিয়েছেন।’ কিন্তু বাড়িতে যে ওষুধগুলো দরকার হয় সেগুলোর কী করেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওষুধ খাওয়া কমিয়ে দিছি। মায়ের সব ওষুধ কিনি না, কিছু কিনি। আর নিজেরগুলো কিনি না।’
তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিস আর কিডনি- দুটোরই ওষুধ খাওয়া কমিয়ে দিছি। শরীর খারাপ লাগলে মহল্লার দোকান থেকে কিনি, নয়তো আর ওষুধ কিনি না।’ পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সংসার চালাব কীভাবে, আর ওষুধই কিনব কীভাবে? গ্রামের বাড়িতে ছোট বোনকে কিছু টাকা দিতেন প্রতি মাসে, সেটাও বন্ধ করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি নিজে কোনো আত্মীয়ের বাড়ি যান না, যেন তারাও না আসতে পারে।’
সরকারি কর্মকর্তা সাঈদ হাসানকে (ছদ্মনাম) মোহাম্মদ আলীর মতো ওষুধ বাদ না দিতে হলেও তিনি মনে করেন চিকিৎসা বা ওষুধ খরচের কারণে তার চাকরি জীবনে কোনো সঞ্চয় করতে পারবেন না।
সাঈদ হাসান জানালেন, তার মা ২০০১ সালে স্ট্রোক করেন, একপাশ প্যারালাইজড। সঙ্গে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আর উচ্চ রক্তচাপ। যার কারণে কিডনি খারাপ হতে শুরু করে। চার বছর ধরে তাকে সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস নিতে হয়।
সাঈদ হাসান বলেন, ‘এই চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল আর ওষুধের দামসহ চিকিৎসা ব্যয় এত বেড়েছে- মা যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন আমাদের কোনো সঞ্চয় হবে না, করতে পারব না।’
সাঈদ হাসান বলেন, ‘প্রতি মাসের শুরুতেই হিসাব নিয়ে বসতে হয় কোথায় কাটছাঁট করলে সব ওষুধ সময়মতো কিনে আনা যাবে। চাকরিজীবী স্ত্রীকে বাসার গৃহকর্মীর কাছ থেকে তেল-পেঁয়াজের হিসাব নিতে দেখছি, যেটা কোনো দিন ভাবিওনি। জানালেন, আগে নিয়ম করে বাইরে খেতে যেতেন, যা বাদ গেছে।’
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বহুল ব্যবহৃত ৫৩ ধরনের ওষুধ দাম বাড়ানোর আবেদনে গত মাসেই অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। যেখানে কোনো কোনো ওষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি, বৃদ্ধির হার ছিল ১৩২ শতাংশ পর্যন্ত। এরপর অন্যান্য ওষুধের দামও বাড়ে পাল্লা দিয়ে।
ওষুধের দোকানগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ট্যাবলেটের দাম ছিল আগে এক টাকা ৫০ পয়সা, বর্তমানে তার দাম ৩ টাকা ৪৮ পয়সা। ডায়াবেটিসের একটি ওষুধের দাম কয়দিন আগেও ছিল ২০ টাকা, এখন ২২ টাকা, একই গ্রুপের আরেকটি ওষুধের দাম ছিল ১৮ টাকা, হয়েছে ২০ টাকা। ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত একটি ওষুধের ৩ পাতার একটি প্যাকেট আগে ছিল ৮০ টাকা, যা এখন ১০০ টাকা। ওষুধটি কারও কারও এক প্যাকেট থেকে দুই প্যাকেট করেও দরকার হয়। আবার যেকোনো ব্যথায় ব্যবহার এমন একটি ওষুধের দাম আগে ছিল ৮০ টাকা, হয়েছে ১০০ টাকা। আরেকটি বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের দাম ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে একটি ওষুধের দোকানি নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘দেশের বহুল ব্যবহৃত ৫০ শতাংশেরও বেশি ওষুধের দাম বেড়েছে। বেশি বেড়েছে ডায়াবেটিস, কিডনিজনিত রোগ, ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের।
ওষুধের দাম জোগাতে সংসার খরচের হিসাব নতুন করে সাজাতে হচ্ছে। অনেকেই অত্যাবশ্যকীয় নয়, এমন খরচ কমিয়ে এনেছেন। তবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের দাবি বিশ্বের অনেকে দেশের চাইতে বাংলাদেশে ওষুধের দাম কম।
দৈনিক বাংলা তিনি বলেন, ‘যারা ওষুধ উৎপাদন করে দেশে, তাদের কোনো ব্যাকআপ ব্যবস্থা নেই। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশেও দাম বাড়বে- এটাই এখন পর্যন্ত দেখা গেছে। সেখানে আমরা চাইলেই আমাদের চাহিদামতো দাম নির্ধারণ করতে পারি না। এরপরও আমাদের দেশে ওষুধের দাম বিশ্বের অনেক দেশের চাইতে কম, এমনকি পাশের দেশ ভারত থেকেও কম।’
এদিকে মোহাম্মদ আলী কিংবা সাঈদ হাসানের তুলনায় অনেক ভালো রয়েছেন লাখীয়া হাবিবা সুলতান। লাখীয়া জানান, ২০০৬ সাল থেকে ডায়াবেটিস আর উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত তার শাশুড়ি ৬২ বছরের লুৎফা বেগম। এর সঙ্গে তার মানসিক কিছু সমস্যা থাকায় ওষুধের পেছনে ব্যয় হতো পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা, ইনসুলিন দরকার হতো না তখন। ২০১০ সালের দিকে ডায়াবেটিস আর উচ্চ রক্তচাপ দুটোই বেড়ে গেল। তখন শুরু হলো ইনসুলিন। খরচ কিছুটা বেড়ে গেল তাতে।
এরপর ডায়াবেটিস আর উচ্চ রক্তচাপের কারণে একসময় লুৎফা বেগমের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। আর তাতে করে তার ওষুধের পেছনে খরচ হচ্ছে এখন ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। লুৎফা বেগমের স্বামী ৭৪ বছরের সিরাজুল ইসলাম। তিনিও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। দুই জনের শুধু ওষুধ কিনতে লাগছে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
লাখীয়া হাবিবা সুলতানা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ওষুধ খুবই ব্যয়বহুল। দিনকে দিন ওষুধের দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু যদি আমাদের নিজেদের বাড়ি না থাকত, নিজেদের ফ্ল্যাটে না থাকতে হতো তাহলে চাকরির পয়সা দিয়ে এই বাজারে সেটা করা যেত না, বিকল্প চিন্তা করতে হতো, সংসার খরচ কীভাবে আরেকটু কমানো যায় সেটা ভাবতে হতো, সংসারের ফাঁকফোকর খুঁজতাম, কীভাবে এই খরচটা কমানো যায়।’ তবে আর কতদিন সেটি করতে পারবেন তা নিয়েও চিন্তিত তিনি।
সমাজ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দাম যেভাবে বাড়ছে সেটা ক্রমান্বয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। আর এতে মানুষ সংসারে ‘প্রয়োজনীয় খরচের মধ্যে কাটছাঁট’ করতে বাধ্য হয়েছেন। যেটি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় ও জীবনরক্ষাকারী ওষুধে কেন ভর্তুকি দেয়া যাবে না প্রশ্ন করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এখন ওষুধ রপ্তানি করা হচ্ছে বিদেশে। তাহলে? প্রশ্ন রাখেন ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, লাভের খাত তো আরও রয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষের এসব ওষুধে লাভ কমিয়ে করলে অথবা না করলে কী এমন হবে?’
পরিসংখ্যান বলছে, স্বাস্থ্য খাতে মোট ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশই যায় ওষুধের পেছনে। আর ৩০ হাজার কোটি টাকার ওষুধের বাজারে সরকার ব্যয় করে মাত্র তিন থেকে পাঁচ শতাংশ, আর বাকি ৯৫ শতাংশই যায় মানুষের পকেট থেকে।
চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টর্স ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ চিকিৎসায় যেসব ওষুধ দরকার হয় সেসব ওষুধের দামও বেড়েছে। আর বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে বেশি খরচ হয় ওষুধ কেনার জন্য। প্রতিবছর ওষুধ কিনতে গিয়ে নতুন করে ৬৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। এটা যদি রোধ না করা যায় তা হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা হুমকির মুখে পড়বে।’
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর এর অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, পয়সার অভাবে যেন কেউ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয়। কিন্তু এখন মানুষের পকেট থেকে খরচ হচ্ছে ৬৭ টাকা। তা হলে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অনুযায়ী যেখানে সাধারণ ওষুধের নাগাল পাওয়ার কথা, ২০৩০ সাল নাগাদ তার উল্টো যাত্রা হবে।’
এই জনস্বাস্থ্যবিদ আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকা অনুযায়ী অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস বা অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা কাটছাঁট হয়ে গেছে। এর মূল কথা ছিল সরকার এসব ওষুধের দাম নির্ধারণ করতে পারবে। কিন্তু এ তালিকা কমে গেছে। অর্থাৎ সিন্ডিকেট বাণিজ্যের জন্য ওষুধের দাম এবং ওষুধের তালিকা মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা দৈনিক বাংলাকে বলেন, “আমাদের দেশ ওষুধের ক্ষেত্রে ভালো করছে বলে জানলেও এসব ওষুধের দাম খুব যে সাধারণ মানুষের আওতার ভেতরে বিষয়টি সেরকম মনে হয় না। এবং যেকোনো কিছুর দাম বাড়লেও বৃদ্ধ, নারী এবং শিশুদের যা কিছু ‘অপ্রয়োজনীয় খরচ’ বলে মনে করা হয় সেগুলো বাদ পড়ে সংসার খরচ থেকে।”
সামিনা লুৎফা বলেন, ‘স্বাস্থ্যের পেছনে যদি মানুষ টাকা খরচ করতে না পারে এবং তার ফলে যদি তিনি কোনো ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত হন তা হলে দিনকে দিন টাকা খরচের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর সেখানেও যদি কেউ ব্যর্থ হয়, তা হলে তার জীবন ছোট হয়ে আসে। আবার কোনো পরিবারে এক বা একাধিক সদস্য যদি বড় ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত হয় তা হলে সে নিম্নবিত্ত হলে আরও নিম্নবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত হলে অবস্থা আরও খারাপ হয়, তাদের বিত্ত-সঞ্চয় সব কমে যায়। আর যদি চিকিৎসা বা ওষুধে খরচ করতে বাধ্য হয় তখন তারা অন্য খরচ কমাতে বা সংসার খরচে কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়।’
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ফরিদপুরে এফ ডি এর উদ্যোগে হতদরিদ্র সনাতন ধর্মাবলাম্বীদের মাঝে শারদীয় উপহার হিসেবে শাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার টেপুরাকান্দী এলাকায় এফডিএর কার্যালয়ে এ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ফরিদপুর ডেভলমমেন্ট এজেন্সি (এফডিএর) নিজস্ব অর্থায়নে শাড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি- সুস্মিতা সাহা। এফডিএর নির্বাহী পরিচালক আবু ছাহের আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট এনজিও ব্যক্তিত্ব এফডিএর প্রতিষ্ঠাতা মো. আজহারুল ইসলাম, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন পিয়াল প্রমুখ। পরে হতদরিদ্র শতাধিক হরিজন সম্প্রদায় ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে শাড়ি বিতরণ করা হয়।
আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে সেন্ট মার্টিন। এ সময় প্রতিদিন ২ হাজার করে পর্যটক সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে চলতি বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পর্যটন মৌসুম।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
তিনি জানান, ১ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিন খোলা থাকবে। তবে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে শুধু দিনের বেলা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করা যাবে। আর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রাতে অবস্থান করতে পারবেন পর্যটকরা।
উপদেষ্টা আরো জানান, প্রতিদিন ২ হাজার করে পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন। পর্যটকদের যাওয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে এই সফটওয়্যার পরিচালিত হবে।
এর আগে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
এতে সিদ্ধান্ত হয়, সেন্ট মার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। যদিও এরপর নয় মাস ভ্রমণের জন্য সেন্টমার্টিনে যাওয়া যাবে না বলে মর্মে সিদ্ধান্ত দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সেসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন, সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতেই ভ্রমণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, সেন্ট মার্টিনকে স্থানীয় জনগণ কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দেয়া হবে। তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাঁচানোর প্রয়াসকে ভিত্তিহীন কথা দিয়ে ভিন্নপথে পরচালিত করার সুযোগ নেই, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাঁচাতে বন্ধ রাখা হচ্ছে। সরকার নতুন কিছু নয় বরং বহু পুরনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে।
এর আগে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মাসের জন্য বন্ধ হয় সেন্ট মার্টিনে পর্যটক ভ্রমণ। যার প্রভাব পড়েছে দ্বীপের পর্যটন খাতে। বন্ধ রয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত বন্ধ হওয়ায় সুনশান নীরবতা জেটিঘাটে। জাহাজে বেকার সময় পার করছেন কর্মচারীরা।
কুমিল্লা-৬ (সদর-সদর দক্ষিণ) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, কুমিল্লা মহানগরীর আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশ সবার। মুসলমানদের মতো অন্য ধর্মের ভাইয়েরাও যেন সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করতে পারে, সে লক্ষ্যেই জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে।
বাংলাদেশের ঐতিহ্য হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। শত শত বছর ধরে ভিন্ন ধর্ম ও ভিন্ন মতাবলম্বীরা এখানে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার- এই চেতনা ধারণ করেই শান্তিপূর্ণ ও উন্নত সমাজ গঠন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরে ধর্মীয় সহনশীলতা, মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলেই সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা ২ নং উত্তর দুর্গাপুর ইউনিয়ন আড়াইওরা নমুসতপাড়া আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় ও উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা মহানগরীর জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক এ. কে. এম. এমদাদুল হক মামুন। ওই সময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সবুজ, যুব বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম পাটোয়ারী, জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবুল কাশেষ শামিম প্রমুখ।
‘ক্লিন নড়াইল-ড্রিম নড়াইল।’ এটি শহরের ময়লা-অবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রকল্পের একটি প্ল্যাটফর্ম। এই প্রকল্পের কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। ফলে ময়লার দুর্গন্ধ পথচারীরা এখন বিরক্ত হয়ে পড়ছে। এই প্রকল্প সম্পন্ন করতে অন্যত্র সরিয়ে নিতে যাওয়ার জন্য এলাকাবাসীরা দাবি জানিয়েছেন। তারা ময়লা-আবর্জনা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে চায়।
নড়াইল পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে স্থাপিত নড়াইল পৌরসভা। ৮০ দশকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নতি হয়েছে। দেরিতে হলেও নড়াইল পৌর এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে গড়ে তোলা হয় ‘ক্লিন নড়াইল, ড্রিম নড়াইল’ নামে একটি বিশেষ প্রকল্প। যার কাজ হলো শহরের প্রতিটি বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা করা। বি আই আর ডি (বোর্ড ফর ইন্টিগ্রেটেড রুলার ডেভেলপমেন্ট) নামে একটি বেসরকারি সংস্থাকে কাজটি করার জন্য দায়িত্ব দেয় নড়াইল পৌরসভা। আর এসব কাজ যৌথভাবে তদারকি করবে জেলা প্রশাসন এবং পৌরসভা।
নাগরিকদের প্রয়োজনের তাগিদে যে কথা সেই কাজ। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকেই কাজ শুরু হয়। কাজের শুরুতে জেলা প্রশাসন নড়াইল-যশোর সড়কের নতুন বাস টার্মিনালের সামনের গর্তে ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। বি আই আর ডি, এ জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়োগ করে। ময়লা-আবর্জনা বহনের জন্য ১৩টি ভ্যানগাড়ি ব্যবহার করা হয়। টার্মিনালের সামনের গর্তে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে আশপাশের বাসিন্দাসহ টার্মিনালে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের রাত যাপনে দুর্বিষহ হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর তদারকিতে শহরের রাস্তা প্রশস্ত করণ কাজ শুরু হলে ওই গর্ত থেকে ময়লা-আবর্জনা অন্যত্র নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জেলা প্রশাসন নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর সেতুর পশ্চিম পাশ বেছে নিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে সেখানেই ময়লা-আবর্জনা ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ময়লার দুর্গন্ধে সীতারামপুর গ্রামের বাসিন্দাদেরও একই অবস্থা শুরু হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর এলাকায় পৌর ভাগাড় বানিয়ে সেখানে শহরের যত ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ সেতুর পশ্চিম পাশে ময়লা-আবর্জনা আর পূর্বপাশে শুকরের মলমূত্রের দুর্গন্ধে কৃষি জমিতে কাজ করা যায় না। মাছের ঘেরে খাবার দিতে অসুবিধা হচ্ছে। কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনসহ খাল-বিলে মাছ মারা ও ধরা যায় না। তাদের দাবি ভাগাড় এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে এলাকার মানুষকে মুক্ত বাতাসে বসবাস করার সুযোগ করে দিন ।
সীতারামপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘যারা এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার অনুমতি দিয়েছেন তারা হয়তো সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখেননি। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কেমন করে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড় বানিয়ে দিলেন বোধগম্য হয় না।’ তিনি দাবি করেন, দ্রুত এখান থেকে ময়লার ভাগাড় অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে এলাকার মানুষকে মুক্ত বাতাসে বসবাস করার সুযোগ করে দেবেন ।
মুলিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য অজিত কবিরাজ বলেন, ‘এখানে ময়লার ভাগাড় করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর গ্রামের মাছের ঘেরসংলগ্ন ভাগাড় বানিয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। যে কারণে এলাকাবাসীর বসবাসে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার কৃষক ও মৎস্যচাষীদের কাজ করতে চরম অসুবিধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে । অন্য কোনো ফাঁকা স্থান বেছে নিয়ে সেখানে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় নির্মাণে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।’
জানতে চাইলে নড়াইল পৌর প্রশাসক জুলিয়া সুকায়না বলেন এ বিষয়ে এলাকাবাসী অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কেউ কোনো আবেদন করেননি। আবেদন পেলে বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পার। তা ছাড়া অর্থ বরাদ্দসাপেক্ষে অন্যত্র ফাঁকা স্থান দেখে ভাগাড় নির্মাণে পরিকল্পনা করা হতে পারে।
মীরসরাইয়ে ওয়ারেন্টভূক্ত ও মাদক মামলার আসামিসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মীরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূর্ব পোল মোগরা এলাকার মৃত অলিউর রহমানের ছেলে রেজাউল করিম (৪৮), মঘাদিয়া ইউনিয়নের সরকারটোলা এলাকার ওয়াহেদুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুক (২১), করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগরের আবুল কালামের ছেলে মো. নাজমুল হামিদ (২১), সীতাকুণ্ড উপজেলার পশ্চিম আমিরাবাদ এলাকার জয়নাল আবেদীনের সাজ্জাদ হোসেন সাকিব (২২), মীরসরাই পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম আমবাড়িয়া এলাকার মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে কায়সার সিদ্দিক ফাহাদ (২২), মীরসরাই সদর ইউনিয়নের উত্তর তালবাড়িয়া এলাকার নুরুল করিমের ছেলে তারেক হোসেন (২০) ও মীরসরাই পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের গোভনীয়া এলাকার শামছুদ্দিনের ছেলে বাবুল (২৭)। বাবুল মীরসরাই থানার ওয়ারেন্টভূক্ত রেজাউল করিমের নামে একজনের নামে মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে।
মীরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, ‘মীরসরাই থানার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার আসামিসহ সাতজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে তাদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। গত বুধবার রাতে জিমখানা লেকপার্ক এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সাজাপ্রাপ্ত ৫ জন হলেন- মো. ফয়সাল (২১), রিফাত (২০), জুবায়ের ভূইয়া রানা (৩৬), মো. মোস্তফা হোসেন (২৬) ও অভিনন্দী (৩০)। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া আটককৃত আরও ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনকে সদর মডেল থানায় যাচাই বাছাইয়ের জন্য নেওয়া হয়েছে। তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া অপর তিনজনের কাছ থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন- আলম চাঁন, পারভীন আক্তার ও আফরিনা ওরফে হাসি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার জিমখানা এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে জিমখানা এলাকার মাদক কারবারী আলম চাঁনকে আটক করা হয়। এছাড়া আলম চাঁন এর নিজ বসতঘর তল্লাশি করে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা, ২৫০ মিলি বিদেশি মদ, ৩টি বড় ছোড়া, ১টি স্টীলের চাপাতি, ১টি টেটা, ২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা করা হবে। এছাড়া আলম চাঁন এর বিরুদ্ধে সদর থানায় ১০টি মাদক মামলা রয়েছে।
এছাড়া পারভীন আক্তার এর কাছ থেকে ২৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও আফরিনা ওরফে হাসি এর কাছ থেকে ৩৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার সহ তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হবে।
এদিকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে গাঁজা রাখা ও সেবনের অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে ৫ জনকে সাজা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি এম রাহসিন কবির। এদের মধ্যে মো. ফয়সাল ও রিফাতকে ১২ দিন, জুবায়ের ভূইয়া রানাকে ২০ দিন, মো. মোস্তফা হোসেনকে ১৪ দিন এবং অভিনন্দীকে ৭ দিন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন পর বেনাপোল চেকপোস্টে ভারত গমনে যাত্রীদের কোলাহল দেখা গেছে। দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতেই হাজার হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। কেউ যাচ্ছে দুর্গাপূজা উৎসব পালন করতে, কেউবা চিকিৎসা করতে, কেউ যাচ্ছে বেড়াতে। গত দুদিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেছেন বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এর পর ভারত সরকার বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা ভিসা, কিছু ইমারজেন্সি ভিসা প্রদান করেন। সে সময়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৭০ থেকে ৮০ জন পাসপোর্ট যাত্রী ভারত যেত। তবে ২৮ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই দুর্গাপূজার কারণে ভারত সরকার বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ভিসা প্রদানে আরো একটু শিথিল করেছেন। এখন প্রতিদিন দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে গমন করছেন। ভারত থেকেও প্রতিদিন আসে ৪ শ থেকে ৫ শত পাসপোর্ট যাত্রী। হঠাৎ করে ভারত গমনে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের কোলাহল দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ যাচ্ছে পূজা উৎসব পালন করতে কেউ চিকিৎসা করতে কেউ আবার পরিবার নিয়ে যাচ্ছে বেড়াতে। যাচাই-বাছাই করেই পাসপোর্ট-যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণের পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুদিনে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গমন করেছেন। পূর্বের ন্যায় ভারত সরকার বাংলাদেশি যাত্রীদের ভিসা প্রধানের ব্যবস্থা করলে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণ অনেক বেড়ে যাবে। যাত্রী পারাপার বেশি হলে সরকারি রাজস্ব আদায় বেশি হবে এখান থেকে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক সেতুর দুই পাশ জুড়ে বাতি থাকলেও প্রায় সবগুলো সড়কবাতিই প্রায় বছর খানেক ধরে অকেজো। অন্ধকার সেতুতে পথচারীদের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা, মাদকসেবী ও বখাটেদের উৎপাত, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার আতঙ্ক বিরজমান। এখন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে চলাচল করছে জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুর দুই পাড়ের পূজা দর্শনার্থীরা।
জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া তুরাগ নদীর বিভক্ত করেছে উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দাদের। এ নদীর উপর পুরোনো বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠলে তার পাশে নতুন করে একটি ঢালাই সেতু নির্মাণ করে সরকার। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৪২ কোটি ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে চাপাইর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। এ সেতুর দক্ষিণ পাশে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় রয়েছে। এছাড়া সব পরিবহন এবং কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কালিয়াকৈর সদর বাজারসহ বিভিন্ন ব্যবসাকেন্দ্রও দক্ষিণ পাশে। অন্যদিকে উত্তর পারে পাশে এ উপজেলা ছাড়াও শ্রীপুর উপজেলাসহ ময়মনসিংহ জেলা রয়েছে। ফলে তুরাগ নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা উপজেলার হাজার হাজার মানুষ যাওয়া-আসা করেন। কিন্তু এ উপজেলার মধ্যে তুরাগ নদীর ওপর আরও দুটি সেতু থাকলেও সবচেয়ে বেশি লোকজন চলাচল করেন এ সেতু দিয়েই। এছাড়া সেতুর দুই পাশে প্রায় অর্ধশত বাতি স্থাপনের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করায় আরও সুন্দর্য্য বর্ধন হলে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীরাও এখানে সময় কাটায়। কিন্তু উদ্বোধনের অল্প দিনের মধ্যেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের স্থাপনকৃত সেতুর দুই পাশের প্রায় সব বাতিই অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে প্রায় বছর খানেক ধরে অন্ধকারে রয়েছে সেতুটি। এখন সন্ধ্যা নামলেই এখন লোকজন এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় পাচ্ছেন। আর অন্ধকারের সুযোগে সড়ক দুর্ঘটনা, ছিনতাই, বখাটে, মাদকসেবীরা সেতুতে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থায় সন্ধ্যার পর থেকে সেতুর ওপর অন্ধকারে আতঙ্কের মধ্যে চলাচল করছেন মানুষ।
আরও জানা যায়, সন্ধ্যার পর সেতুর চারপাশে থাকে অন্ধকার। সেতু দিয়ে কিছু সময় পরপর সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন যাওয়া-আসা করে। এতে পথচারীরা অন্ধকারে কিছুটা আলো পান। তবে যানবাহন চলাচল না করলে পথচারীদের অন্ধকারের মধ্যেই হাঁটতে হচ্ছে। সেতুর দুই পাশে বাতি থাকলেও অকেজো থাকায় সেগুলো জ্বলছে না। এছাড়া আগামী শনিবার থেকে হিন্দু-সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় পূজা শারদীয় দুর্গোৎসব। এরপর আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে পূজা সমাপ্ত হবে। কিন্তু এ সেতুর দুই পাড়েই প্রায় ২৭টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এসব মণ্ডপেই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ হয়ে থাকা এ সেতুর ওপর দিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করবে শত শত পূজা দর্শনার্থী। কিন্তু বাতিগুলো অকেজো থাকায় সেতুতে সুনসান অবস্থা। তারপরও গভীর রাতেও সেতু দিয়ে যাওয়া-আসা করবে পূজা দর্শনার্থীরা। এ সময় অনেকের সঙ্গে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার ছাড়াও দামি মালপত্র থাকবে। ফলে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সেতুতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনাও। তারপরেও বাতিগুলো সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে সেতুর বাতিগুলো অকেজো হয়ে রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে দ্রুত বাতিগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
গাজীপুর পূজা উদযাপন ফন্টের সদস্য সচিব পবণ সাহা বলেন, প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত মানুষ সেতুর ওপর দিয়ে ৪-৫ মিনিট হেঁটে পারাপার হন। কিন্তু প্রায় বছর খানেক ধরে বাতিগুলো অকেজো থাকায় অন্ধকারে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে চলাচল করেন। এখন সেতুটি আরও নিরিবিলি এবং অন্ধকার থাকায় জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে পড়বে পূজা দর্শনার্থীরা।
অকেজো বাতি মেরামতের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে উল্লেখ করে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন খান জানান, অতিদ্রুত সেগুলো মেরামত বা পরিবর্তন করা হবে। এগুলো পুনরায় মেরামত করে সেতুটি আলোকিত রাখতে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহামেদ জানান, পূজা উপলক্ষে সেতুর দুই পাশে তৎপরতা বাড়ানো হবে। এছাড়া সেতুতে বসানো বাতিগুলো অকেজো হওয়ার বিষয়ে সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বসতবাড়ির সামনে তিন কৃষকের ভিন্ন ভিন্ন তিন খণ্ডে বিভক্ত মোট ১ একর জমি, তাও আবার উঁচুনিচু পরিত্যক্ত জায়গা, এগুলোতে প্রথমবারের মতো হাজারী জাতের উচ্চ ফলনশীল লাউ চাষ করে সফল হয়েছেন ফারুক মিয়া , সাইফুল ইসলাম , দুলাল মিয়া নামে তিন কৃষক। প্রান্তিক কৃষকদের সফলতার হাসি যেন তিন পরিবারের মাঝে ছড়িয়েছে। এই সফলতার হাসি যেন দুগ্রামের জনসাধারণের মধ্যে ও ছড়িয়ে পড়ছে এমনটাই কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়। কৃষকদের মধ্যে ফারুকের বাড়ি বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের কালিকাপুর দ. পাড়ায়, পিতা আ. আজিজ মিয়া, বাকিরা পাশের গ্রাম জঙ্গল বাড়ির পূর্ব পাড়াতে। সাইফুল ইসলাম ও দুলাল মিয়া,
৪০ শতকে সাইফুল ইসলাম আর বাকি ৪০ শতকে দুলাল মিয়া লাউ চাষ করেন। এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন কালিকাপুরের দক্ষিণ পাড়াতে ২০ শতক জমিতে ফারুক মিয়া লাউ চাষে সফলতা অর্জন করেছে তার সাথে সাথে একই পদ্ধতিতে পাশের গ্রামের সাইফুল, দুলাল মিয়াও একইভাবে লাউ চাষে সফল হয়েছে।
লাউ চাষে তাদের মোট খরচ হয়েছে মাত্র ৬০-৭০ হাজার টাকা। প্রথম বিক্রিতে হাতে এসেছে ৬৫ হাজার টাকা।
কালিকাপুরের দ. পাড়ার কৃষক ফারুক মিয়া জানান, প্রথম দিনে বিক্রি করেছেন প্রায় ১০ হাজার টাকা। তার জমির পরিমাণ ২০ শতক, তার মোট খরচ ৮-৯ হাজার টাকা। আরও ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করার আশা করছেন তিনি। খরচ বাদে তার সম্ভাব্য লাভের পরিমাণ প্রতি শতাংশে প্রায় ২ হাজার টাকা হতে পারে শেষ পর্যন্ত যদি গাছগুলো বেঁচে থাকে, লাউ গাছে লছ নেই, আগা ডগাও বিক্রি করে আয় করা সম্ভব।
কৃষক ফারুক আরও বলেন, বিষমুক্ত নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব ময়দানের সবজি বাগানের লাউ খেতে যেমন সুস্বাদু, বাজারেও এ সবজির চাহিদা বেশি।
স্থানীয় শরিফুর রহমান বলেন, কৃষি অফিসারদের পরামর্শ নিয়ে ফারুক মিয়া পরিত্যক্ত জমিতে অনেকবার লাউ চাষ করেছে কিন্তু এবার নিজের সিদ্ধান্তেই শুরু করে বেশ সফল হয়েছে। ওজন ভেদে প্রতিটি লাউ খুচরা ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, এলাকার বাজারের চাহিদা মিটিয়ে কুমিল্লা শহরে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা আফরিন আক্তার দৈনিক বাংলাকে বলেন, বর্তমানে আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ কিন্তু নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কৃষকরা পিছিয়ে আছে। আমারা কৃষকদের ওঠান বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করি, কৃষকরা যেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছা. তানজিনা আক্তার দৈনিক বাংলাকে বলেন, হাজারী লাউ একটি উচ্চফলনশীন লাউ জাত। এ জাতের লাউ রোপণের ৫ থেকে ৭ দিনে চারা হয় এবং ৪২ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফুল ও ফল ধরে। এছাড়া ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যেই বাজারজাত করা যায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাগুরা জেলা কার্যালয় কর্তৃক শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল বাজার এলাকায় ফার্মেসি ও মুদিদোকানসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় ‘মেসার্স বিশ্বাস ড্রাগ হাউজ’ নামক ফার্মেসি প্রতিষ্ঠানে তদারকিতে প্রচুর মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ফিজিশিয়ান স্যাম্পল ওষুধ পাওয়া যায়, এছাড়া বিক্রয় নিষিদ্ধ ফিজিশিয়ান স্যাম্পল ওষুধ কমার্শিয়াল প্যাকেটের মধ্যে লুকিয়ে বিক্রয় করা ও একই প্যাকেটে ২০২৭ সালের ভালো ওষুধের মধ্যে ২০২১ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রেখে বিক্রয়ের অপরাধে মালিক মো. দীপক বিশ্বাসকে ৪৫ ও ৫১ ধারায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের আইন অমান্যকারী কার্যকলাপ না করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য পণ্যের প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়। এ সময় সবাইকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মুল্যতালিকা প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বাজারে কেউ যেন অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি না করে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয় এবং সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম ও মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত মঙ্গলবার এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে নদী থেকে পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত ১৩টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা বিনষ্ট করা হয় এবং বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ জব্দ করা হয়। এতে করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নদী ক্ষতিগ্রস্ত করে পাথর উত্তোলনকারীরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। অভিযান পরিচালনা করেন ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরানুজ্জামান এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রওশন কবির। এ সময় সহযোগিতা করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ২৬ সদস্য এবং পুলিশের একটি বিশেষায়িত দল।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে আসছিল স্থানীয় একাধিক চক্র। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছিল এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছিল। পাশাপাশি নদীভাঙনও আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, ‘নদী ও পরিবেশ রক্ষায় অবৈধ পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। কেউ আইনের বাইরে নয়। নদী রক্ষায় শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করা হবে।’
এদিকে প্রশাসনের এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, অবৈধভাবে নদী কেটে পাথর উত্তোলনের কারণে প্রতিবছরই ভাঙনে শত শত পরিবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। তাই এ ধরনের অভিযান নিয়মিত হওয়া দরকার। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবৈধ উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত নজরদারি ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ মানবাধিকার ফোরাম সম্মাননার জন্য মনোনীত হয়েছেন কবি ও নাট্যকার মিয়া ইব্রাহিম। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মানবাধিকার ফোরামের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের অ্যাপিলেট বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমান মিঞা।
বৃহস্পতিবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে এগিয়ে এসেছে। দুঃস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষদের বিভিন্ন সময় মেডিকেল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে কোস্ট গার্ড।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন কর্তৃক বাগেরহাটের শরণখোলা থানাধীন সোলামবাড়িয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকায় “তারুণ্যের উৎসব ২০২৫” শীর্ষক মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়। উক্ত মেডিকেল ক্যাম্পেইনে ২ শতাধিক অসহায়, দুঃস্থ ও শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী প্রদান করা হয়।
এছাড়াও, দেশপ্রেম, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এসময় আলোচনা এবং বাস্তব ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। উক্ত কর্মশালায় নৌ পুলিশ, মৎস্য অধিদপ্তর, বন বিভাগ, স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনসেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।