নওগাঁর মান্দায় মুনছুর আলী (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলার গোয়ালমান্দা এলাকার একটি বাগান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মুনছুর আলী উপজেলার গোয়ালমান্দা ফকিরপাড়া গ্রামের বুদুর ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলাবর রাত ৯টার দিকে কোনো এক ব্যক্তি মুনছুর আলীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও পায়নি। বুধবার সকালে বাড়ির পাশে একটি ইউক্যালিপটাস বাগানে এলাকাবাসী তার মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বেলা ১১টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-এ-আলম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশসহ মুসলিমবিশ্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিবসটি পালনে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মহফিল। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মানবজাতির রহমত স্বরূপ প্রেরিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোলে জন্ম নেন।তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব। রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ঠিক একই তারিখে ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।
পবিত্র দিনটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানসহ সারা দেশে ব্যাপক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ (আ.) আউয়াল হাওলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন।
বিশ্বনবীর জন্মদিন উপলক্ষে গত শুক্রবার বাদ মাগরিব থেকে শুরু হওয়া ওয়াজ মহফিল আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ১৫ দিনব্যাপী বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব সাহানে এতে বয়ান করবেন দেশবরেণ্য আলেম-ওলামারা।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জাতীয় মসজিদের পূর্ব ও দক্ষিণ সাহানে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলারও আয়োজন করা হয়েছে।
১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এ মেলা। চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান ও লেবাননের পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাসহ দেশ-বিদেশের প্রায় ২০০ স্টল স্থান পাবে মেলায়।
এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৬টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত ওয়াজ-মাহফিল এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন।
একই সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। দৈনিক বাংলার জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো নগরী। গত শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় নগরীর ষোলশহর আলমগীর খানকাহ থেকে এই জুলুস শুরু হয়।
জুলুসের নেতৃত্বে ছিলেন সিরিকোট দরবারে আলীয়া কাদেরিয়ার সাজ্জাদনশীন পীর সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ। তাঁর সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন- শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্।
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বেস্টনির মধ্য দিয়ে সাবির শাহকে বহনকারী গাড়ি অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে থাকে নবীপ্রেমীদের মহামিছিল। নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে পুনরায় একই রুটে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া ময়দানে গিয়ে মিলিত হন মুসল্লিরা। এ সময় মাইক ও সাউন্ডবক্সে হামদ, না’ত, গজলসহ নানা ধরনের ইসলামী গানে বন্দরনগরী জুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এল রে দুনিয়ায়, এয়া নবী সালাম আলাইকা, তুমি সৃষ্টির সেরা নবী কামলিওয়ালাসহ নানা গানে মাতোয়ারা হন অংশগ্রহণকারীরা। জুলুসে অন্যান্যবারের মতো এবারও শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম সেট বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ ও খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে, গত শনিবার ভোর থেকে নগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা মুরাদপুর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে আসতে থাকেন। জুলুস শুরুর আগেই লাখ, লাখ মানুষের জমায়েতে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মাদরাসার আশপাশের এলাকা।
মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম ও ওফাত দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে প্রতি বছর এদিনে আয়োজিত হয় জশনে জুলুস, যার আয়োজন করে আঞ্জুমানে আহমদিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। এবারের ৫৪তম আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’।
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে নৌকা যোগে জশনে জুলুছ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় আলা হযরত সুন্নি সংঘের সার্বিক সহযোগিতায় ও তাহিরপুর ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এ জশনে জুলুছের আয়োজন করা হয়। প্রায় ১৫টি নৌকা নিয়ে একতা বাজার থেকে জুলুছ শুরু হয়ে হলহলিয়া, মাটিকাটা, হাফানিয়া, লেদারবন্দ, বিন্দাবন্দ, নতুন বাজার ব্রিজ, কাউকান্দি বাজার, বোরকারা ও চরগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে হলহলিয়া পশ্চিমপাড়া হাফেজ শামসুল হক বোগদাদি সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমাবেশে মিলিত হয়।
আলা হযরত সুন্নি সংঘের কো-অর্ডিনেটর রমজান আলী রবিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তারা হযরত মুহাম্মদ এর আগমনের তাৎপর্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ৩নং বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাছির মিয়া, আবু বকর সিদ্দিক আল ক্বাদেরী, হাফেজ মোশাররফ হোসেন, ক্বারী মাওলানা রাহুল আমিন, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, আলা হযরত সুন্নি সংঘের সভাপতি জলিল আহমেদ তামিম, অর্থ সম্পাদক নূরুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
জামালপুর প্রতিনিধি: ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বলেছেন, মহানবী (সা.) জীবনাদর্শ মানুষের মুক্তির দিশারি। তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনুপম শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন। তার জীবনাদর্শ আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষকে মুক্তির পথ দেখাবে। গত শনিবার সকালে জামালপুরে জেলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামালপুর জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম তরিকুল ইসলাম। মূখ্য আলোচক হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা করেন কামালখান হাট কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আখতারুজ্জামান সিদ্দিকী।
অন্যান্যের মধ্যে সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল হক, জামালপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াহিয়া আল মামুন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ প্রমূখ বক্তৃতা করেন। এ অনুষ্ঠানে ধর্ম সচিবের একান্ত সচিব মো. কামরুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক, জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও আলেম-ওলামারা উপস্থিত ছিলেন।
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে র্যালি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ দোয়া মাহফিল, র্যালী ও অসহায় ও দুস্তদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। শাহবাজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসাইন শাহবাজী'র নির্দেশনায় ও শাহবাজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ র্যালিটিতে উপস্থিত ছিলেন, শাহবাজ ফাউন্ডেশনের রিয়াদ হোসেন , হাসান মীর,ইয়ামিন মিয়া , মো. ফেরদৌস,মারফত আলী, মকবুল হোসেন, মো. কিরনসহ সর্বস্তরের মুসলিম জনতা। নগর পাড়া মাদ্রাসায এ উপলক্ষ্যে বিএনপি নেতা মামুন মিয়ার নেতৃত্বে মুসল্লিদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মার শুভকামনায় মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান দোয়া করেন। গত শনিবার ভোর থেকেই এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা জমায়েত হতে শুরু করেন। পরে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অংশগ্রহণে এক বিশাল র্যালি বের হয়, যা ভূলতার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে ইসলামিক পতাকা, ব্যানার, স্লোগান এবং মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মাহাত্ম্য তুলে ধরা হয়।
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী: জশনে জুলুস পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার আঞ্জমানে-ই-কাদেরীয়া দৌলতদিয়া খানকা শরীফ ও কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফের আয়োজনে পৃথক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে দৌলতদিয়া খানকা শরীফ থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকা প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সকাল ১০টা ১১ মিনিটে কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফ থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে মহাসড়কের পাশ দিয়ে গোয়ালন্দ বাজার প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
দৌলতদিয়া খানকা শরীফের মিছিলে এসময় উপস্থিত ছিলেন, আঞ্জুমান-ই কাদেরীয়া দৌলতদিয়া খানকা শরীফের সভাপতি মুক্তার হোসেন বেপারী, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক ও কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহাবুব, কোষাধ্যক্ষ সুমন মোল্লা সহ বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও মুরিদান মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর: ফরিদপুরে যথাযথ মর্যাদার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী(সা:) পালিত হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উদযাপন কমিটির উদ্যোগ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
জশনে জুলুশে ঈদে মিলাদুন্নবীর শোভাযাত্রা টি জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে আলিপুর গোরস্থান জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয় ।
এর মাঝে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত পথ সভায় বক্তব্য রাখেন তুলাগ্রাম দরবার শরীফের পীর সাহেব শাহ সূফী আলহাজ্ব হযরত কোরবান আলী আল- চিশতী নিজামী, ডোমরাকান্দি সাবেরিয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব সাজ্জাদ হোসেন রনী আল-চিশতী সাবেরী ও ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন মাসুদ।
এসময় ভাটি লক্ষিপুর খানকায়ে চিশতীয়া রশীদিয়া দরবার শরীফের গদীনশীন পীর হযরত খাজা শাহ্ সুফী মো. আব্দুস সামাদ আল চিশতী নিজামী, পীরজাদা মো: সাহিদ মোল্লা আল চিশতী নিজামী, পীরজাদা মো: নুরুল ইসলাম আল চিশতী নিজামীসহ ধর্র্মপ্রাণ মুসলমারা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
মাগুরা প্রতিনিধি: সারা দেশের ন্যায় মাগুরাতেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে ঈদে মিলাদুন্নবী। এ উপলক্ষে বিশাল এক আনন্দ রেলি বের করা হয়। বাংলাদেশের মুসলিমরা প্রতিবছর এই দিনটিকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন । গত শনিবার মাগুরা সদর উপজেলার আবালপুর গ্রামে স্থানীয় গ্রামবাসী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিশাল এক আনন্দ রেলি বের করা হয়। রেলিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে । পরে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ সময় ছোট বড় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। নবীজির উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত শেষে গ্রামবাসীদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, রোগীদের অসন্তুষ্টি দূর করা ও রোগীদের কষ্ট অনুধাবন করার প্রথম দায়িত্ব নার্সদের। অনেক ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে নার্সদের সেবা দিয়ে রোগীদের সন্তুষ্ট করতে হবে।
রোববার গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগের ১৪ম ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্যাপিং সেরিমনির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, সিঙ্গাপুর সার্ভিস দিয়ে উন্নত দেশ হয়েছে। বাংলাদেশ নার্সিং সার্ভিস দিয়ে বিশ্বে পরিচিত হওয়া সুযোগ রয়েছে। নার্সিং এমন একটি মহান পেশা যার গুরুত্ব শুধু সমাজে নয়, ধর্মেও রয়েছে। উন্নত নার্সিং সেবার মাধ্যমেই চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে। তাই চিকিৎসাসেবার উন্নয়নে ও রোগীদের মন জয় করার লক্ষ্যে নার্সদের সেবার মহান পেশা নার্সিং এ সম্পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও ইসলামের ইতিহাসে নার্সিং সেবার গুরুত্ব বিশেষভাবে স্বীকৃত। মানবসেবায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে নার্সিং পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।
উপউপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নার্সিং পেশার গুরুত্ব অনুধাবন করেই নার্সদের গবেষণার জন্য অনুদান দেওয়া শুরু করেছে। চিকিৎসাসেবায় নার্সিং সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নার্সিংসেবা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমি যখন অসুস্থ হয়েছি, যখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলাম তা গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি। বিএমইউ নার্স, নার্সিং শিক্ষার্থীরা মানবসেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপণ করবে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বিএমইউর নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. মনির হোসেন খানের সভাপতিত্বে ক্যাপিং সেরিমনি অনুষ্ঠানে শপথ পরিচালনা করেন গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুপুর ডি কস্তা।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিবহন পুলে শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্ত হয়েছে নতুন চারটি ভাড়াকৃত ডাবল ডেকার বাস। পাবনা বাস ডিপো থেকে ভাড়া করা হয়েছে এসব বাস। তবে এসব বাস ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। তবে ১ মাসের মধ্যে নতুন সংযোজন হবে বলে আশ্বাস দেন পরিবহন প্রশাসক ও বিআরটিসি পাবনা ডিপোর ডিজিএম মনিরুজ্জামান বাবু। রবিবার এসব বাস উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মনজুরুল হক, পরিবহণ প্রশাসন অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ, পাবনা বাস ডিপোর ডেপুটি জেনারের ম্যানেজার (ডিজিএম) মনিরুজ্জামান বাবু সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে সবাই বাসে চড়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। তবে জানা গেছে, এই বাসগুলো ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলেছিলেন। যার ফলে দুর্ঘটনা-সহ বিভিন্ন কারণে বাসগুলোতে ত্রুটি রয়েছে।
জানা গেছে, পরিবহন পুলে মোট বাস রয়েছে ৫৬টি। নতুন ডাবল ডেকার চারটি ভাড়া বাস যুক্ত হয়ে এই সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০টি। তার মধ্যে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ৮টি এসি বাসসহ নিজস্ব বাস ২৪টি এবং ভাড়াকৃত ৩৬টি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ ৬টি বাস। বাকি নিজস্ব বাসগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নিজস্ব ডাবল ডেকার বাস আছে একটি এবং সর্বশেষ সংযোজনসহ ভাড়াকৃত ডাবল ডেকারের সংখ্যা ১৩টি। বাকিসবই ভাড়া বাসে যাতায়াত করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকেশনগত সমস্যার কারণে যানবাহনের উপর নির্ভর করতে হয়। আজকের এই চারটি দ্বিতল বাস শিক্ষার্থীদের জন্য নিবেদিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণমাত্রায় আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা উত্তরোত্তর যানবাহন ব্যবস্থা উন্নত করে যাবো। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা হয়েছে। তারা নতুন সংযোজন আসলে আমাদের বাসগুলো পরিবর্তন করে দিবে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গত তিন দিনে ৫ হাজার ৭১৯ টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৮৬৬টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩২০টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
রোববার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিকশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
শিল্প ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, সকল বাধা অতিক্রম করে, বিচার ও সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এ সরকার আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেসব কাজ শুরু করেছে, জনগণের নির্বাচিত সরকার সেসব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট এলাকায় অবস্থিত আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেড তুরস্কের মালিকানাধীন নির্মিত কার্গো জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। দেশের মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন উদযাপন করার অপেক্ষায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পের ঐতিহ্য রয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পের পর গুরুত্বপূণ শিল্প জাহাঝ শিল্প। আমরা স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ বাংলাদেশের প্রতিক্ষায় ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে দেশে জাহাজ শিল্প আরো উপরের দিকে উঠছে। আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মিত জাহাজ গুলো বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে জাহাজ শিল্পকে আরো এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, তুরস্কের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর বেলাল বেলিয়েট, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নুরুজ্জামান এনডিসি, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড.আব্দুল্লাহ হেল বারি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সৈয়দ মিজানুর রহমান, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ নাজমা নওরজ প্রমুখ।
পরে জাহাজ রপ্তানীমুখী প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের তৈরিকৃত ওয়েজ ওয়্যার নামে ৫৫০০ ডেড ওয়েট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস কার্গো জাহাজটি তুরস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নওপ্যাক শিপিং এন্ড ট্রেডিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ধর্ম নিয়ে প্রতিযোগিতা মানবজাতির ধ্বংস ডেকে আনতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গত শনিবার দিনব্যাপী ‘রিলিজিয়নস ফর পিস বাংলাদেশের (আরএফপি)’ আয়োজনে ‘চট্টগ্রাম পিস সামিটে’ মেয়র এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পৃথিবীতে সকল ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে। তাই প্রতিটি বড় বড় জনগোষ্ঠির চর্চিত ধর্মে শান্তির বাণীই প্রচার করা হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্ত:ধর্মীয় সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিকল্প কোনো পন্থা নেই। তাই ধর্ম নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা হতে পারে না, এতে মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ তৈরি হয়। এই প্রতিযোগিতা মানবজাতির শুধুই ধ্বংসই ডেকে আনতে পারে।
‘এশিয়ান কনফারেন্স অব রিলিজিয়নস ফর পিস’র সহযোগিতায় চিটাগং ক্লাবের তেরেস হলে অনুষ্ঠিত এই পিস সামিট। আরএফপি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পিস সামিটে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আরএফপির নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আরএফপি এশিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল রেভারেন্ট প্রফেসর ড. ইয়োশিনরি সিনোহরা, বিশেষ উপদেষ্টা রেভারেন্ট ড. নবোহিরো নেমতো, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের ডিন প্রফেসর ড. জন ম্যাথিও, আরএফপি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মাছুম আহমেদ, ঢাকার প্রেসিডেন্ট সুকোমল বড়ুয়া এবং সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। সামিটের দ্বিতীয় অধিবেশনে মতামত তুলে ধরেন আমন্ত্রিত বিশিষ্ট জনেরা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান।
রোববার জামায়াত আমীরের বসুন্ধরার কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতে শুরুতে জামায়াত আমীরের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন এবং তার পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।
মতবিনিময় সভায় জামায়াত আমীর ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মত ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং এ সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে, ইনশাআল্লাহ। অতীতে বহুবার ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। দুবছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি বোমা বর্ষণে নারী-শিশুসহ প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, মানবতার দুশমন ইসরায়েল গাজায় খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ইসরায়েল প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেই লক্ষ্যে গাজা থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছে। গাজা দখলের এ নীলনকশা ইসরায়েলি আগ্রাসনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ, যা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও ন্যায়নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসরাইলের এ হিংস্র দখলদারিত্ব শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি। গাজা সিটি দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এ ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে দখলদার ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য জাতিসংঘ, ওআইসি-সহ শান্তিকামী বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এ সময় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, গাজা উপত্যকার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অর্থবহ ভালবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আমি ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সেইসঙ্গে আশা প্রকাশ করছি, ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অর্থবহ সমর্থন, সাহায্য, সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পূজার ঘণ্টাধ্বনি। উৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রীমঙ্গলের মৃৎশিল্পীরা। কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ ফুটিয়ে তুলতে দিন-রাত সমান তালে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এবছর উপজেলার ১৫৭ টি মণ্ডপে পূজিত হবেন দেবী দুর্গা।
নিখুঁত কারুকার্যে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি করছেন শিল্পীরা। রঙ-তুলির আঁচড়ে প্রতিমার সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য বাড়াতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। পূজার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ততই ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছে।
শিল্পীরা বলছেন, প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ তারা খুব একটা দেখছেন না। অপরদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পূজা আয়োজকদের ব্যয়ও বেড়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, শহর থেকে পাড়া-মহল্লার প্রতিটি মন্দিরে শোভা পাচ্ছে ছোট-বড় প্রতিমা। বাঁশ, কাঠ, সুতলি, খড় আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। ইতোমধ্যে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, ময়ূর, প্যাঁচা ও দেবী দুর্গার মূর্তি গড়ার কাজ শেষ হলেও সৌন্দর্য বাড়াতে চলছে শেষ মুহূর্তের রঙতুলি। কেউ প্রতিমার হাত-পা তৈরি করছেন, কেউ মাটি লাগাচ্ছেন, কেউ আবার রঙ করছেন— সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজ।
প্রতিমা শিল্পী হনু পাল বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমার চাহিদা অনেক বেশি। তাই দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাদামাটির কাজ চলছে। এরপর রঙের কাজ হবে। সব কাজ শেষ হলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতিটি মণ্ডপে প্রতিমা পৌঁছে দেওয়া হবে। শুধু শ্রীমঙ্গল নয়, দেশের বিভিন্ন জেলায়ও আমাদের প্রতিমা পাঠানো হয়। আশা করছি এবার লাভও ভালো হবে।’
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সুজিত রায় বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রতি বছরের মতো এবারও এ উৎসব জাঁকজমকভাবে উদ্যাপন করা হবে। শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১৫৭টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শ্রেণি বা উঁচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একত্রিত করে মিলনমেলার রূপ নেয় বলেই এ পূজাকে সার্বজনীন পূজা বলা হয়।;
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে শহরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কারখানা পরিদর্শন করেছি এবং আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলেছি। আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মন্দিরের নিরাপত্তার বিষয়েও ব্যবস্থা থাকবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।’
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও প্রতিটি পূজা মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা দেওয়া হবে। পুলিশ ও আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও টহল দেবে। ঝুঁকিপূর্ণ পূজা মণ্ডপগুলোতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হবে।;
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রশাসনিকভাবে প্রতিটি পূজা মণ্ডপের তালিকা সংগ্রহ, পরিদর্শন এবং রোডম্যাপ প্রস্তুতের কাজ চলছে। উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদ্যাপনের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করবে।
রবিবার ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ৩০ আগস্ট ২০২৫ তারিখ শনিবার মাতারবাড়ি এলাকা হতে ''এফবি ইভা'' নামক ফিশিং বোট ১১ জন জেলেসহ মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে গমন করে। অতঃপর গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বোটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল হয়ে ১১ ঘণ্টা যাবৎ সমুদ্রে ভাসতে থাকে। ফিশিং বোটটি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসার পর, আজ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ রবিবার মধ্যরাত ১ টা ২৫ মিনিটে উক্ত বোটের একজন জেলে কোস্ট গার্ডের জরুরি সেবা নাম্বার ১৬১১১ এ কল করে সাহায্যের জন্য আবেদন করলে বিষয়টি কোস্ট গার্ড অবগত হয়।
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, আজ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ রবিবার সকাল ৯ টায় কোস্ট গার্ড জাহাজ কুতুবদিয়া কর্তৃক উক্ত এলাকায় একটি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ১১ জন জেলেসহ বিকল হওয়া বোটটিকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়।
পরবর্তীতে, উদ্ধারকৃত ১১ জন জেলেসহ ফিশিং বোটটি মালিকপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আর্ত মানবতার সেবায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজারে জমে উঠেছে আমনের চারার (জালার) হাট। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে রোপা আমন ধান রোপণের মৌসুমে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে কৃষকরা এ বাজারে ভিড় করছেন চারা কেনার জন্য।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই হাটে ধানের চারা বেচাকেনা শুরু হয়। কৃষকরা নিজেদের বীজতলা থেকে চারা তুলে আটি বেঁধে হাটে নিয়ে আসছেন। প্রতিটি আটি প্রকারভেদে ৭০ টাকা থেকে শুরু করে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
মুরাদনগর উপজেলার হাটখলা থেকে আসা কৃষক রমজান আলী জানান, “আমাদের এলাকায় পানি সংকট থাকায় রোপা আমনের চারা বপণ করা সম্ভব হয়নি। তাই বাঙ্গরা বাজারে এসেছি। কাঙ্ক্ষিত চারা পেয়েছি, দামও নাগালের মধ্যে। দুই বিঘা জমির জন্য চারা কিনেছি।সাতমোড়া থেকে আসা কৃষক কুদ্দুস মিয়া বলেন, “বিভিন্ন এলাকা থেকে চারা তুলে এখানে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। আমরা তুলনামূলক কম দামে চারা পাই বলেই এখানে আসি।চারা বিক্রেতা রহিম মিয়া জানান“বিআর-২২, ৪৯, ৫০, খাসা, কালিজিরাসহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা বেশি বিক্রি হচ্ছে। ইব্রাহিমপুর ও রতনপুর থেকে পাইকাররাও এসে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।আরেক কৃষক দুলাল মিয়া বলেন,“এবার চারার দাম ভালো। প্রতি বিঘা জমির জন্য খরচ পড়ছে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।”
এ হাটে শুধু নবীনগর নয়, পার্শ্ববর্তী কসবা ও অন্যান্য উপজেলার কৃষকরাও চারা কিনতে আসছেন, ফলে বাজারে সরগরম ভাব বিরাজ করছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা আর্থিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন।
নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, “চলতি মৌসুমে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭৫০ হেক্টর। ইতিমধ্যে ৫৫৭০ হেক্টরে চারা রোপণ শেষ হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই বাকি আবাদ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যথেষ্ট বীজতলা থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই জমজমাট চারা হাট ও কৃষকদের ব্যস্ততা যেন নতুন ফসলের সম্ভাবনায় ভরে উঠেছে।
স্বচ্ছতা বজায় রেখে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা ও নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। বিসিএস পরীক্ষা হলো এন্ট্রি পয়েন্ট।
যারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারাই সরকার চালাবে। কাজেই এন্ট্রি পয়েন্টে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয় তাহলে গোটা সিস্টেমে সেটার প্রভাব থেকে যাবে।’
দায়িত্ব নিয়ে সমস্যা ও সংকটগুলো সমাধান করে ফেলতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে। যারা ভবিষ্যতে সরকার চালাবে তাদের জন্যও এটা প্রয়োজন।’
বৈঠকে সরকারি কর্ম কমিশনের আর্থিক স্বায়ত্তশাসন ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেন কমিশন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম।
তিনি জানান, কমিশন ইতোমধ্যেই পাঁচ বছরের রোডম্যাপ দিয়েছে এবং প্রতিবছর নভেম্বর থেকে পরের বছরের অক্টোবর মধ্যেই পরীক্ষা ও নিয়োগ সম্পন্ন হবে।
কমিশন সদস্যরা জানান, গত ১৫ বছর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বিসিএস পরীক্ষায় নানা ধরনের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটেছে। পিএসসিতে যেন আর কখনো অনিয়ম ফিরে না আসে, এটি যেন সবার আস্থার জায়গা হয় সেটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্রের মান এমনভাবে উন্নীত করা হচ্ছে যাতে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি দিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাতেও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রতিযোগিতা করতে পারেন।
উত্তরবঙ্গের মৎস্য ভাণ্ডার সিরাজগঞ্জের চলনবিল। বর্ষা মৌসুমে থইথই জলে পরিপূর্ণ থাকে এই বিল। বর্তমানে বিলের নদী, খাল ও জলাভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া শামুক কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন নিম্নআয়ের হাজারো মানুষ। তারা জানান, প্রতি বস্তা শামুক ব্যাপারীদের কাছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেন। ফলে মোটামুটি চলছে সংসার।
বর্ষা মৌসুমে বিল এলাকায় কাজ না থাকায় নিম্নআয়ের মানুষ বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে শামুক সংগ্রহকে বেছে নেন। শামুক প্রকৃতি ও কৃষি জমির জন্য উপকারী হলেও সে সম্পর্কে জানেন না তারা।
চলনবিল থেকে শামুক সংগ্রহ শুরু হয় জুলাই থেকে। এ কাজ চলে অক্টোবর পর্যন্ত। বিলের ১৬টি নদী, ৩৯টি বিল ও ২২টি খালসহ বিভিন্ন জলাভূমি থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ মেট্রিক টন শামুক সংগ্রহ করেন স্থানীয়রা। এসব জলাভূমি থেকে একজন নিম্ন আয়ের নারী ও পুরুষ প্রতিদিন দুই বস্তা শামুক সংগ্রহ করতে পারেন। প্রতি বস্তা শামুক ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে কিনে নেন ব্যাপারীরা। এসব শামুক তারা ট্রাকযোগে পাবনা, নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন হাঁস ও মাছের খামারে বস্তা প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করেন।
তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের মাকড়শোন এলাকায় শামুক বেচাকেনার জন্য একটি ভাসমান হাট গড়ে উঠেছে। এই হাটে পাইকারি হিসেবে বেচাকেনা হয় বিভিন্ন ধরনের শামুক। পাবনা, নওগাঁ, রাজশাহী ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এখান থেকে শামুক কিনে হাঁসের খামারিদের কাছে বিক্রি করছেন।
মাকড়শোন এলাকার ভাসমান শামুকের হাটের ব্যবসায়ী শান্ত শেখ বলেন, ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এই হাটে পাইকারি দরে শামুক বেচাকেনা হয়। সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে বস্তা হিসেবে শামুক কেনা হয়। এলাকার দরিদ্র নারী ও পুরুষরা শামুক সংগ্রহ করে এখানে নিয়ে আসেন। তাদের কাছ থেকে কিনে আমরা বিক্রি করি।
মাকড়শোন হাটে শামুক বিক্রি করতে আসা কুন্দইল গ্রামের শামীম বলেন, এক সময় চলনবিলে অনেক মাছ পাওয়া যেত। সেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতাম। বর্তমানে বিলে পর্যাপ্ত মাছ না থাকায় সংসার চলে না। এ কারণে বাধ্য হয়ে শামুক কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ বস্তা শামুক সংগ্রহ করতে পারি। বিক্রি করে আয় করি তাই দিয়ে ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছি।
মাগুড়া বিনোদ গ্রামের জেলে হানিফ, রবিউল শেখ, মামুন হোসেন, সোলাইমান জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে ৬ থেকে ৭ জনের একটি দল নৌকা নিয়ে চলনবিলে যান। নৌকায় করে মই জাল, হেসি জাল ও হাত জাল দিয়ে সারা রাত শামুক সংগ্রহ করেন তারা। সকালে শামুকগুলো প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে হাটে নিয়ে যান। শামুক বেচে টাকা সবাই ভাগ করে নেন।
তাড়াশের মান্নান নগর গ্রামের শফিকুল বলেন, শামুক সংগ্রহের জন্য একটি দল নৌকা ও জাল নিয়ে চলনবিলের নদ-নদীসহ বিভিন্ন খাল-বিলে ছুটে চলি। সারারাত জাল ফেলে শামুক সংগ্রহ করি। সকালে শামুক থেকে ময়লা ফেলে ৩৫ থেকে ৪০টি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকার শামুক বিক্রি হয়। যে টাকা আয় হয়, তা সবাই ভাগাভাগি করে নেই।
শামুক ব্যবসায়ী মমিন তালুকদার বলেন, চলনবিলাঞ্চলে ছোট-বড় সব মিলিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জন ব্যবসায়ী আছেন। বিল থেকে তোলা শামুক ও ঝিনুক স্থানীয় সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে কিনে পাইকারি দরে আড়তে বিক্রি করা হয়। বর্ষার তিন থেকে চার মাস শামুক কেনাবেচা হয়।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কুমার বলেন, অবাধে শামুক নিধনের ফলে মাটির উর্বতা ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, শামুক প্রাকৃতিক সম্পদ। এখান থেকে নিয়ে যাওয়া শামুকের ভেতরের অংশ মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শামুকের অনেক পুষ্টিগুণ আছে। মাছ ও হাঁসের খাদ্য হিসেবে শামুক ব্যবহৃত হয়। শামুকের খোলস ব্যবহার হয় চুন ও সার তৈরিতে।
তিনি বলেন, নির্বিচারে শামুক নিধন এ অঞ্চলের জমির উর্বর শক্তি বৃদ্ধি ও খাদ্যশৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর। নিঃসন্দেহে এ অঞ্চলের জন্য শামুক নিধন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শামুক ও ঝিনুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনো বিশেষ দলের হয়ে কাজ না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমুলক ও উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ১৪, ১৮ ও ২৪-এর নির্বাচন মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন ।
তিনি আজ রোববার রাজধানীর রাজারবাগে নির্বাচনের দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সাথে সম্পাদনের লক্ষে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, ‘ধৈর্য্যের সঙ্গে মাথা ঠাণ্ডা রেখে আইনি প্রক্রিয়ায় সকল বিষয় মোকাবিলা করতে হবে। আমরা কাজ কর্মে যত স্বচ্ছ থাকবো সাধারণ জনগণের কাছে তত আস্থা অর্জন করতে পারব। নিজেদেরকে রাজনৈতিক কর্মী ভাববেন না। দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করবেন। বাংলাদেশ পুলিশ সততা ও নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন শান্তি ও উৎসব মুখর হবে। নির্বাচন শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। একদিকে জনগণ, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি ভালো নির্বাচন হওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, সমাজ থেকে দুর্নীতি ও মাদক কমাতে হবে। আমাদের সময় খুব একটা নেই। গণমাধ্যমের প্রতি অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতা জোরেশোরে তুলে ধরা হয়, কিন্তু সফলতা তুলে ধরা হয় না। অপারেশন ডেভিলহান্ট না থাকলেও কর্মযজ্ঞ এখনও চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের তালিকা প্রত্যেক থানায় রয়েছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর। অনেক অপরাধী জামিনে ছাড়া পেয়ে অপরাধ করছে জানিয়ে তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
তিনি জানান, নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে পুলিশে বদলি ও পোস্টিং দেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার চায় বাংলাদেশ পুলিশ এমন একটি সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ নির্বাচন উপহার দিক যা বিশ্বে নজীর হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, সামনে দুর্গাপূজায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। ফ্যাসিস্টরা সরাসরি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, অনেকে জামিনে বেরিয়ে আবারো এই কাজে জড়াচ্ছে, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
পুলিশের সাম্প্রতিক নিয়োগ স্বচ্ছ হওয়ায় পুলিশের প্রশংসা করেন তিনি। প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেবে। এতে পুলিশের মধ্যে মনোবল, জ্ঞান ও দায়িত্ব বাড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজবাড়ীর ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে, পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহবান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত করার চেষ্টা চলছে। জনগণ নির্বাচন মুখী হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বক্স চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি প্রমুখ।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বক্স চৌধুরী বলেন, জুলাই আগস্টের পর নতুনভাবে যে পুলিশ তৈরি হয়েছে তার চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে জাতীয় নির্বাচন। সামনের চ্যালেঞ্জ যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে হবে। পুলিশকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কর্মকাণ্ড পরিবর্তন করতে হবে।
পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, এবারের নির্বাচন পুলিশের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।