বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ফেনীতে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে ফের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২২ জুলাই, ২০২৫ ১১:৫০

ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি ফের বাড়ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে পরশুরাম উপজেলার অলকা গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) স্থানীয়রা জানান, বিগত কয়েক ৩/৪ দিন ফেনীতে বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের ত্রিপুরায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে ভারতের উজানের পানিতে এখানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গত ৮ জুলাই থেকে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪১টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। তারমধ্যে ৬টি ভাঙ্গন স্থানে মেরামত কাজ শেষ হয়েছে। ২৮টি স্থানে কাজ চলমান রয়েছে। বাকি ৭টি ভাঙ্গন স্থান বড় হওয়ায় সেগুলোর কাজ শুরু করা যায়নি।

ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রোববার রাত থেকে নদীর পানি আবারও দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করে। এতে ভাঙ্গন স্থানগুলো দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, গেল বছরের (২০২৪ সালের) ভয়াবহ বন্যায়ও ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০৪টি স্থানে ভেঙ্গেছিল। পরে ২০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে বাঁধগুলো মেরামত করা হলেও বছর না পেরোতে আবারও ভেঙ্গেছে। এসব ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে সোমবার সকাল থেকে পরশুরামের পশ্চিম অলকা, পূর্ব অলকা, নোয়াপুর, চিথলিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ও ফুলগাজীর কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পাউবোর যথাযথ তদারকি ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে প্রতিবছর এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় বলছেন তারা।

পরশুরামের পশ্চিম অলকার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, আমরা শুনেছি এখানে তেমন বৃষ্টি না হলেও ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এজন্য গত কয়েকদিন আগে বাঁধের যেসব স্থান ভেঙ্গেছে তা দিয়ে নতুন করে পানি ঢুকে ফের আমরা পানিতে ডুবছি। আমাদের এ দুর্ভোগ কখনো শেষ হবে না।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে মুহুরী নদীর পানি ৯.৬৪ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ২.৮৬ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বের ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার পর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ছোট ছোট বাঁধগুলো মেরামত করলেও বড়গুলো করা যায়নি।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানে বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বের ভাঙ্গনস্থান দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বন্যার পর তিনটি নদীর ছোট বাঁধগুলো মেরামত করলেও বড়গুলো করা যায়নি।


কচুরিপানায় যায় যায় নড়াইলের চিত্রা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কার্ত্তিক দাস, নড়াইল

চিত্রা নদীর নড়াইলের অংশ দীর্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ভরে আছে। প্রায় চার দশক এ নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ। কচুরিপানার যঞ্জালে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে মারা যাচ্ছে নদীটি। হুমকীতে পড়েছে জলজ জীববৈচিত্র্য। মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় জেলেদের জীবন-জীবিকাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী বলছেন, স্রোত কমে যাওয়ায় নদীটির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নাব্যতা-সংকট। জেগেছে ছোট-বড় চর। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদীটি মরা খালে পরিণত হবে বলে তাদের শঙ্কা।

পাউবোর ভাষ্য, কচুরিপানার জটে নদীতে পানির স্রোত কমে গেছে। এতে কমলাপুর ও গর্ন্ধব্যখালী এলাকার দুটি পাম্পহাউস থেকে পানি নিষ্কাশনও বন্ধ হয়ে গেছে। বেড়িবাঁধের ভেতরেও কচুরিপানায় ভরে আছে। পাম্প হাউস দুটি বিকল থাকায় কৃষিজমিতে সেচ কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা ভূমি কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে চিত্রা নদীর দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। সদর উপজেলার রতডাঙ্গা ত্রিমোহনী থেকে কালিয়া উপজেলার পেড়লী বাজার ত্রিমোহনী গিয়ে নবগঙ্গা নদীর সঙ্গে মিশেছে।

সরেজমিনে নদীটির রতডাঙ্গা, সাবেক শেখ রাসেল সেতু, আউড়িয়া এস এম সুলতান সেতু, গোবরা বাজার, শিঙ্গাশোলপুর বাজার, চুনখোলা সেতুর অংশ ঘুরে দেখা গেছে নদীতে ঘন কচুরিপানা। সেখানে পানি আছে কি না, তাও বোঝা যাচ্ছে না। কোনো নৌযান চোখে পড়েনি। নদীর কিছু এলাকায় কচুরিপানায় আটকা পড়ে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পাড়ে দাড়ানো কঠিন। মশা-মাছি ভনভন করছে। নদীটির পেড়লী এলাকায় মাত্র তিন-চার কিলোমিটার জুড়ে কচুনিপানা নেই। বাকি প্রায় সব অংশ কচুরিপানায় ভর্তি।

কমলাপুর গ্রামের প্রবীণ কৃষক নিরাপদ বিশ্বাস, ইউনুস শেখ, গোলাম মোস্তফা বলেন, এক সময় এ নদীতে অনেক স্রোত ছিল। স্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, নৌকা, ট্রলারসহ বিভিন্ন নৌযান চলাচল করত। লোকজন এখান দিয়ে লঞ্চে উত্তরে মাগুরা, দক্ষিণে খুলনা, বড়দিয়া, গোপালগঞ্জ, বরিশাল,ও ঢাকায় যাতায়াত করত। ফসল ও মালপত্র আনা-নেওয়া করা হতো। সেসব কথা আজ রূপকথার মতো শোনায়।

নদীরতীরবর্তী পূর্ব সীমাখালী গ্রামের বাসিন্দা কাকলি বিশ্বাস বলেন, এলাকার প্রতিটি পরিবার গোসল, থালাবাসন ধোয়সহ সব কাজই করতে হয় নদীতে। কচুরিপানায় ভরে থাকায় কিছুই করা যাচ্ছে না।

নদীর এই পরিণতি সম্পর্কে গোবরা এলাকার স্কুল শিক্ষক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ১৮৮৬ সালে মাগুরা শহরে নদীর ওপর তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী (এম মাজেদুল হক) স্লুইসগেট নির্মাণ করার পর থেকে নদীর নাব্যতা কমতে থাকে। এ ছাড়া নদীর ওপর ঘন ঘন সেতু নির্মাণ করার কারণেও পলি জমে নাব্যতা কমেছে। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার গড়াই নদ ও খুলনার আত্রাই নদীর সঙ্গে এই নদীর সংযোগ ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে নদীতে নৌকা চলাচল করলেও আশি দশক থেকে নদীতে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন নদীতে স্রোত কমে গেছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নাব্যতা-সংকট। জেগে ওঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদীটি সরু খালে পরিণত হবে ।

শহরের রূপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, নদীতে যখন নৌকা অথবা লঞ্চ চলেছে তখন কম খরচে সব ব্যবসায়ী লঞ্চে করে খুলনা থেকে মালপত্র আনা-নেওয়া করতেন। এখন কচুরিপানা ও নাব্যতা-সংকটের কারণে সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।

যোগাযোগ করলে পাউবোর (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নড়াইল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল কুমার সেন বলেন, চিত্রা, ভৈরব, আফরা নদ-নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদী খননসহ দুটি পাম্প হাউস সংস্কার করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে নদীসহ অন্যান্য কাজ শুরু করা যাবে।


মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির ঘটনায় ইবিতে গায়েবানা জানাজা 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. সাকিব আসলাম, ইবি (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে আকস্মিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে এ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজা পড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান।

আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নাছির উদ্দিন মিঝি বলেন,"উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে বিমান দূর্ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম হৃদয়বিদারক ঘটনা। যারা শহিদ হয়েছে তাদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে তাদের সুস্থতা কামনা করছি। কোনো দূর্ঘটনার কারণ খোঁজার আগে আমাদের উচিত তাদের জন্য দোয়া করা। জাতীয় সংহতি বিনষ্টকারী যেকোনো পন্থা আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে।"

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন,"এক বছর হতে না হতেই ঢাকাতে যারা বিশৃঙ্খলতা তৈরি করেছে তারা বিগত সরকারের দোসর। সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আমাদের ছোট ভাই সাজিদ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য সামগ্রিক আন্দোলন করা হচ্ছে। কিন্তু যারা আন্দোলনকারীদের পিছন থেকে কারা কলকাটি নাড়ছে সেদিকে খেয়াল রাখত হবে। সাজিদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কেউ যেন রাজনৈতিক ফাইদা নিতে না পারে, ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সাজিদ হত্যার বিচার না হলে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী অনিরাপদ হয়ে পড়বে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।"

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার কিছু পর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ভবনে আগুন ধরে যায়। এঘটনায় এখন অবধি নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে।


সামরিকসহ সকল খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী চীন : রাষ্ট্রদূত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে সহায়তা দিতে সশস্ত্র বাহিনীসহ সকল খাতে সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, চীন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের সকল জনগণের প্রতি ভালো প্রতিবেশীর মতো বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি অনুসরণ করে আসছে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের ধারাকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে (এনডিসি) এক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে এনডিসির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট রিয়ার অ্যাডমিরাল একেএম জাকির হোসেনসহ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একশ’রও বেশি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের সামরিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং এমন একটি নিরাপত্তা ধারণার পক্ষে, যা অভিন্ন, সমন্বিত, সহযোগিতামূলক ও টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে গঠিত।

তিনি বলেন, আধিপত্য, সম্প্রসারণবাদ বা প্রভাব বিস্তারের চিন্তাভাবনার কোনো স্থান চীনের অভিধানে নেই।

ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন একটি সমান মর্যাদা ও সুশৃঙ্খল বহু-মেরুর বিশ্ব এবং সকলের জন্য উপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের পক্ষে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, চীন গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ-এর মতো উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যতের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও জানান, ২০২৫ সালে চীন ‘জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধ’ এবং ‘বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের’ ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করেছে, যা বিশ্ব শান্তি ও সহযোগিতার প্রতি চীনের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটায়।

বক্তৃতার শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, ব্রিকস সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বাংলাদেশকে এর উন্নয়ন অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সহায়তা করতে চীনের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

চীন ও বাংলাদেশ এই বছর দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদ্‌যাপন করছে। এ উপলক্ষে উভয় দেশ জনসম্পৃক্ততা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা বিনিময়ের মাধ্যমে কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও গভীর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।


বাবার চোখের সামনেই ঝরে গেল বরিশালের সামিউলের প্রাণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তারিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল প্রতিনিধি

ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারানো সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিউল করিমকে (১১) ঘিরে এখন বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে চলছে শোকের মাতম। ছোট ছেলেটি বাবা-মায়ের চোখের সামনে জীবন হারায়, আর এ শোক কখনো ভুলে থাকার নয় বলছেন স্বজনরা।

ঘটনার দিন ছিল সোমবার। সামিউল সেদিন স্কুলে যেতে চাইছিল না। মায়ের কাছে আবদার করে বলেছিল, সে বাসায় থেকে খেলনা উড়োজাহাজ নিয়ে খেলবে। কিন্তু মা বুঝিয়ে স্কুলে পাঠান। কে জানত, সেটাই হবে সামিউলের জীবনের শেষ স্কুলযাত্রা।

পরে জানা যায়, স্কুল শেষে সামিউল যখন বাবার দিকে এগিয়ে আসছিল, তখনই তার পিঠে এসে পড়ে বিধ্বস্ত বিমানের একটি জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষ। বাবা রেজাউল করিম তখন মাত্র পাঁচ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছেলেকে আগুনে ঝলসে যেতে দেখে মুহ্যমান হয়ে পড়েন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরেন, আমার ছেলেকে বাঁচান, হেল্প, হেল্প। এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন তিনি।

ঘটনার পরপরই সামরিক বাহিনীর এক সদস্য পোশাক খুলে শিশুটিকে জড়াতে সাহায্য করেন। সামরিক হেলিকপ্টারে সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকেরা জানান, তাঁরা কিছুই করতে পারেননি।

সামিউলের পরিবার বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার খারকি এলাকার বাসিন্দা। বাবা রেজাউল করিম পেশায় একজন বায়িং হাউসের মালিক। পরিবারের দুই সন্তানের মধ্যে সামিউল ছিল ছোট। তার বড় বোন সদ্য এসএসসি পাস করেছে জিপিএ-৫ পেয়ে।

চার দিন আগে দাদাবাড়ি থেকে ঢাকায় ফিরেছিল সামিউল। মাত্র দুই দিন পরই জীবনের ইতি ঘটে। পরিবারের সদস্যরা জানান, সামিউল তার দাদির খুব আদরের ছিল। গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পর দাদি নাতির জন্য ১০-১২ রকমের পিঠা বানিয়েছিলেন। কেউই ভাবেনি এটাই হবে সামিউলের শেষ গ্রামে আসা।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টায় বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জানাজা শেষে খন্তাখালী গ্রামে তার নানা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামালের কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় অংশ নিতে ভিড় করেন গ্রামের হাজারো মানুষ। পুরো গ্রাম তখন কান্নার সুরে ভারী।

এদিকে, সামিউলের মামা সৈয়দ মনির হোসেন বলেন, ও জানলে, ওকে আমরা কখনই স্কুলে পাঠাতাম না। মামা সাইফুল ইসলাম প্রশ্ন তোলেন, সরকার কি কেবল পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেবে আমাদের ভাগনে কেন কবরে সামিউলের পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, বিমান বাহিনী কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা বা সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার খরচটুকুও বহন করেনি কেউ।

সামিউলের মা রেশমা করিম, একজন স্কুল শিক্ষিকা, এখন শোকে নির্বাক। ছেলেকে হারিয়ে তিনি খাবার পর্যন্ত মুখে তুলতে পারছেন না। বাবা রেজাউল করিম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিবার সেই মর্মান্তিক দৃশ্য মনে পড়লেই ভেঙে পড়েন কান্নায়, আমার ছেলেটা জ্বলছিল, আমি কিছুই করতে পারিনি।


ফেনী সীমান্তে এক কোটি ৮০ লাখ টাকার মাদক ও চোরাচালানকৃত মালামাল জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া, ফেনী প্রতিনিধি

ফেনী সীমান্তে এক কোটি ৮০ লাখ টাকার মাদক ও চোরাচালানের মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোর রাতে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এগুলো জব্দ করা হয়েছে।

বিজিবি জানায়, ফেনী ব্যাটালিয়নের টহল দল ছাগলনাইয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। এসময় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গাঁজা, টি শার্ট, চশমা ও জুতা আটক করা হয়। এগুলোর আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। জব্দকৃত মালামাল স্থানীয় থানা ও কাস্টমস্ এ জমা দেওয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির আভিযানিক কর্মকান্ড ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া চোরাচালানের বিরুদ্ধে বিজিবির কঠোর নীতি অব্যাহত থাকবে।


বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
করপোরেট ডেস্ক

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত কোমলমতি শিশু ও শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের সুস্থতা কামনায় অগ্রণী ব্যাংকে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বাদ জোহর ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কেন্দ্রীয় নামাজ ঘরে অনুষ্ঠিত এ দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় নিহতদের বিদ্রেহী আত্মার মাগফিরাতে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। দোয়া অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।


ভোলায় ভরা মৌসুমেও মিলছে না ইলিশ, হতাশায় জেলেরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা প্রতিনিধি

দ্বীপ জেলা ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে গেলো দুই মাস ধরে ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশায় দিন পার করছেন নদী তীরবর্তী জেলেরা। ইলিশের আশায় প্রতিদিন নদীতে জাল ফেললেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের।

তবে, মৎস্য বিভাগ বলছে উজানের পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে নদীতে ইলিশ বাড়বে।

ভোলার কয়েকটি মৎস্য ঘাট ঘুরে দেখা যায়, চরম হতাশা আর দূদর্শা নিয়ে দিন কাটছে জেলেদের। এমন ভরা মৌসুমেও ইলিশ না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পরেছেন বিপাকে জেলে পরিবারগুলো। ধার দেনায় পড়ে পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন প্রায় ৩৫ শতাংশ জেলে। তবে নদীতে ইলিশের দেখা মিললে আবারও তারা এ পেশায় যুক্ত হবেন। বাকীরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে হতাশা কাটিয়ে উঠার দিন গুনছেন।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের দাবী, সাগর মোহনা থেকে নদীতে মাছ উঠে আসার চ্যানেল গুলো পলি মাটিতে ভরে গিয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। যার কারনে পর্যাপ্ত গভীরতা না পেয়ে সাগর থেকে ইলিশ নদী মোহনায় আসতে পারছে না। এছাড়াও প্রতিটি চ্যানেল গুলোতে লঞ্চ, মালবাহী জাহাজ চলাচল করার কারনে প্রচুর শব্দ দূষণ হচ্ছে। এতেও ইলিশের মাইগ্রেশন ব্যাহত হচ্ছে। তবে নদীর গভীরতা আর

উজানের পানির চাপ ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে নদীতে ইলিশের পরিমান বাড়বে বলে ধারণা করছেন মৎস্য বিভাগ।

তবে, সচেতন মহল দাবী করছেন, মা ইলিশের মাইগ্রেশনের সময় অথাৎ মা ইলিশ ডিম ছাড়ার পর সেগুলো যথাযথ বড় হওয়ার আগেই একটি কুচক্র মহল খুটা জাল, চরঘেরা জাল, মশারী জাল ব্যবহার করে জাটকা নিধন করে। যার ফলে ভরা মৌসুমেও ইলিশের এমন ভরাডুবি। নিষেধাজ্ঞা সময় যথাযথ আইন প্রয়োগ করে জাটকা ইলিশ নিধন ঠেকানোর পাশাপাশি অবৈধ জালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে সেগুলোকে নদীতে ব্যবহার মুক্ত করতে পারলেই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

জেলেরা জানান, চলতি মৌসুমে ইলিশ বাদেও দেখা নেই অন্যান্য মাছের। নদীতে জাল ফেলে যে মাছ পাওয়া যায়, তাতে উঠে না প্রতিদিনের খরচ। এতে ভারী হচ্ছে দাদনের বোঝা। ইলিশের এমন আকালে লোকসানের মুখে আড়তদার ও ছোট ছোট ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, ইলিশের এমন আকাল তারা কখনোই দেখেননি। মাছ বিক্রি করতে না পেরে আয়- রোজগার বন্ধের পথে। ইলিশের আকাঙ্খায় অলস সময় পার করছেন তারা।

ভোলা সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিনের কয়েকটি এলাকার জেলেরা জানান, গাঙ্গে গিয়া জাল হালাইয়া মাছ পাই না। ডেলি খালি হাতে গাঙ্গ থেকে আই। আমাগো আর দুঃখের কথা কইয়া লাভ কি হইবো। ৫ হাজার টাকার বাজার লইয়া গাঙ্গে যাই। মাছ পাই ২ হাজার টাকার। আমরা আরো দেনার মইধ্যে পইরা যাই।

হান্নান মাঝি নামের আরেক মাঝি জানান, ৭জন মাঝি মাল্লা নিয়ে গতকাল নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ২ টি ছোট ইলিশ মাছ পেয়েছি। এতে তৈলের দোকানে কি দিবো? আর নিজেরা কি নিবো? তাই ভাবছি। আবার এনজিওর কিস্তি আছে, না খেয়ে থাকা গেলেও এনজিওর কিস্তি না দিয়ে থাকা যায় না। গত বছর এই সময়ে আমরা অনেক ইলিশ মাছ পেয়েছি। কিন্তুু এই বছর ইলিশের এমন আকাল পড়বে তা কল্পনাও করিনি।

ঝিলন মাঝি নামের অপর এক জেলে জানান, নদীতে গিয়ে মাছ পাইনা। তাই কিছু দিন রাজমিস্ত্রীর কাজ করছি। প্রতিদিন খোঁজ খবর রাখছি নদীতে ইলিশ মাছ বৃদ্ধি পেলে আবার জাল নৌকা নিয়ে নদীতে নামবো। নদীতে মাছ না পেলে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় এনজিওর কিস্তি নিয়ে। সবকিছু মানাতে পারলেও সমিতির কিস্তির অফিসারকে মানানো যায় না।

জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, জেলায় নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা রয়েছে ১ লক্ষ ৭০ হাজার। অনিবন্ধিত জেলেসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক জেলে রয়েছে। তারা সবাই ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতি বছর এই সময়ে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়। তবে এ বছর তার ব্যতিক্রম হলেও নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলবে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, সাগর থেকে নদী মোহনায় ইলিশ আসতে ৭০ থেকে ৮০ ফিট গভীরতা দরকার। যা পলি মাটি ও ডুবোচরের কারনে এখন ১০ -১৫ ফিট গভীরতা রয়েছে। ইলিশের চলাচলের চ্যানেলগুলো চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় মাছ কমে গেছে। তবে পানির গভীরতা বাড়লে ইলিশের দেখা মিলবে। এছাড়াও অবৈধ জালের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে। খুটা জাল, চর ঘেরা, মশারী ও বেহুন্দি জাল অভিযান চালিয়ে আমরা শতভাগ নদী মুক্ত করেছি।

তিনি আরও জানান, গতবছর ১ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের উৎপাদন লক্ষমাত্রার বিপরীতে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছর ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছেন।


তিন-চতুর্থাংশ দল দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী না রাখার বিষয়ে একমত: অধ্যাপক আলী রীয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একইসাথে দলীয় প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন না মর্মে একমত হয়েছে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ রাজনৈতিক দল ও জোট।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৭তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।

কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার আলোচনাকালে উপস্থিত ছিলেন।

বেশিরভাগ রাজনৈতিক এ বিষয়ে একমত হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কিছু দল ও জোট এ বিষয়ে ভিন্নমত ব্যক্ত করেছে। এই দল ও জোটগুলো জাতীয় সনদে 'নোট অব ডিসেন্ট' দিতে পারবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আজকের আলোচনায় এ বিষয়ে আরো কিছু অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্যে ২০ জুলাই তারিখে রাজনৈতিক দলসমূহের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কমিশন একটি সংশোধিত ও সমন্বিত প্রস্তাব সকল দলের নিকট প্রেরণ করে। উক্ত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে দলসমূহকে মতামত প্রদান করতে বলা হয়। আজ ২২ জুলাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করে তাদের মতামত উপস্থাপন করে।

আজ প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, তবে 'র‌্যাঙ্কড চয়েজ' পদ্ধতির ব্যবহার বিষয়ে এখনো একমত হওয়া যায়নি।

আগামী বৃহস্পতিবার পুনরায় আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

কমিশন জানায়, অমীমাংসিত বিষয়গুলোতে ঐকমত্য গড়তে আগামীকাল সকালে পুনরায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।


বাক, শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য একগুচ্ছ সফটওয়্যার নিয়ে আসছে আইসিটি বিভাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাক, শ্রবণ ও অন্ধ প্রতিবন্ধীদের আধুনিক প্রযুক্তিতে তাল মেলাতে বাংলা ভাষা ভিত্তিক একগুচ্ছ সফটওয়্যার নিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।

বাংলা ভাষায় স্ক্রিন রিডার, ব্রেইল কনভার্টার ও ইশারা ভাষা ডিজিটাইজেশন ভিত্তিক সফটওয়্যার শীঘ্রই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এছাড়াও ইশারা ভাষার একটি ডেটাসেট উন্মুক্ত করা হয়েছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘প্রতিবন্ধিতা অতিক্রমণে প্রযুক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ” প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ফাউন্ডার ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী।

কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ক গবেষক, শিক্ষক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের প্রতিনিধি ও অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।

শীষ হায়দার চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “প্রযুক্তিগত সমতা প্রতিষ্ঠায় অ্যাক্সেসিবিলিটি একটি মৌলিক বিষয়। প্রতিবন্ধিতাকে উপেক্ষা করে নয়, বরং প্রযুক্তির মাধ্যমে তা অতিক্রম করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এই প্রকল্পকে একটি ইন্ডাস্ট্রিতে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ও একাডেমিয়াকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ জন্য উন্নয়নাধীন বাংলা ভাষায় স্ক্রিন রিডার, ব্রেইল কনভার্টার ও ইশারা ভাষা ডিজিটাইজেশন ভিত্তিক সফটওয়্যার খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তিনি প্রযুক্তিকে কেবল ডিজিটাল অ্যাক্সেস নয়, বরং দক্ষতা, অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নের একটি মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মনসুর আহমেদ চৌধুরী বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “আমি সাত বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারাই, তাই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল সংস্করণে অনুষ্ঠান সংক্রান্ত তথ্য প্রদান একটি আবশ্যকতা।” এছাড়া যত দ্রুত সম্ভব নির্মাণাধীন সফটওয়্যারগুলো উন্মুক্ত করার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

কর্মশালার উপস্থাপিত ধারণাপত্রে বলা হয়, মানব-কম্পিউটার যোগাযোগের (হিউম্যান-কম্পিউটার ইন্টারঅ্যাকশন) প্রেক্ষাপটে ব্যবহারকারী কেন্দ্রিক ডিজাইনের গুরুত্ব অপরিসীম। ধারণাপত্রে, বাংলা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ রিকগনিশন সিস্টেম, টেক্সট টু সাইন পাপেট, বাংলা টেক্সট টু ব্রেইল, স্ক্রিন রিডার “আলো” এবং টিটিএস ভিত্তিক অডিও বুক তৈরির সার্বিক অগ্রগতি ও অবস্থান উপস্থাপন করা হয়।

প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব করিম বলেন, “বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সমঅধিকারের সুযোগ তৈরিই এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।

তিনি জানান, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ভাষার ডিজিটাইজেশন, ইশারা ভাষা সফটওয়্যার এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রযুক্তি ব্যবহার ও যোগাযোগ আরও সহজতর করবে।

কর্মশালায় বাংলা ইশারা ভাষার ডেটাসেট এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় যা https://huggingface.co/datasets/banglagov/Ban-Sign-Sent-9K-V1 এই ঠিকানা থেকে উন্মুক্তভাবে ব্যবহারের জন্য পাওয়া যাবে।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও নির্মাণাধীন সফটওয়্যারগুলো সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে ইশারা ভাষার দোভাষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আরাফাত সুলতানা লতা ও আরিফুল ইসলাম।


‘ওদের একা রেখে কেমন করে চলে আসি’: মৃত্যুর আগে স্বামীকে বলেছিলেন মাহেরীন চৌধুরী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাসির উদ্দিন শাহ (মিলন), নীলফামারী প্রতিনিধি

২০ শিক্ষার্থীর জীবন বাচিয়ে নিজে দ্বগ্ধ হওয়া শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর আলী হেলাল দাফনকার্য শেষ করে চোখ ভেজা কান্না জড়িত কণ্ঠে সংবাদকর্মীদের বলেন,“ মৃত্যুর আগে আমি ওকে (মাহেরীনকে) জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না? সে বলেছিল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ আমি আমার সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেছি ওকে বাঁচাতে, কিন্তু পারিনি। আমার দুইটা ছোট ছোট বাচ্চা এতিম হয়ে গেল।”

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচিয়ে চিরবিদায় নেয়া সেই শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

মাহেরীনের স্বামী বলেন, “শেষ রাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। আইসিইউতে শুয়ে শুয়ে ও আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরেছিল। বলেছিল আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। আমি ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি।”

মনসুর হেলাল বলেন, “ও অনেক ভালো মানুষ ছিল। ওর ভেতরে একটা মায়া ছিল সবাইকে ঘিরে। আগুন লাগার পর যখন অন্যরা দৌড়াচ্ছিল, ও তখন বাচ্চাদের বের করে আনছিল। কয়েকজনকে বের করার পর আবার ফিরে গিয়েছিল বাকি বাচ্চাদের জন্য সেই ফেরাটা আর শেষ হয়নি। সেখানেই আটকে পড়ে, সেখানেই পুড়ে যায় আমার মাহেরীন।”

জানা যায়, সোমবার দুপুরে প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন মাহরিন। হঠাৎ করেই প্রশিক্ষণ বিমানটি ভবনে আছড়ে পড়ে, মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দগ্ধ শরীর নিয়েও তিনি ২০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে নেয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

মাহরিন চৌধুরী নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ি চৌধুরীপাড়ার মরহুম মুহিত চৌধুরীর মেয়ে। মাহরিন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা মিডিয়াম শাখার তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির কো-অর্ডিনেটর। সম্প্রতি গ্রামের বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজে উন্নয়নমূলক কাজের স্বপ্ন নিয়ে তিনি সেখানে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন বলে জানান তার স্বামী মনসুর হেলাল।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে বিধ্বস্ত হলে স্কুলের একটি ভবনে আগুন ধরে যায়। এ সময় ওই ভবনে ক্লাস করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে আগুন থেকে উদ্ধার করেন মাহেরীন চৌধুরী। তিনি নিজে আর বের হতে পারেননি।


তিস্তা নদী পরিদর্শনে চীনা প্রতিনিধিদল, দ্রুতই বাস্তবায়ন মহাপরিকল্পনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চীনা প্রতিনিধি দল তিস্তা নদী পরিদর্শন করেছেন। কী উপায়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে তার সম্ভবতা যাচাই করেছেন তারা। পরে প্রতিনিধি দল রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) চীনের প্রতিনিধি দলটি তিস্ত নদী পরিদর্শন করেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন, জং জিং। রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন জাগো বাহে তিস্তা বাছাই আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবিব দুলু।

আজ সকালে রংপুর জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ-উন নবী ডন, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু এবং কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসাসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

মতবিনিময় শেষে প্রতিনিধি দলটি সরেজমিনে জেলার গঙাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর পাড় এবং লক্ষিটারী ইউনিয়নে নদীভাঙন কবলিত এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন। সেখানে চীনা প্রতিনিধি দল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তিস্তাপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি ঘুরে দেখেন এবং মানুষের মুখে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন।

চীনা প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে উপহার সামগ্রীও বিতরণ করেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আশার আলো জাগায়।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু জানান, ‘তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নই একমাত্র টেকসই সমাধান, যা এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ আমরা চাই এই বছরই তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হোক। এই অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের দাবি এই নদী খনন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হউক।

তিস্তাপাড়ের মানুষও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং চীন সরকারের এমন সরাসরি সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানান।

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ডিরেক্টর অব দ্য পলিটিক্যাল সেকশন, জং জিং বলেন, আমরা এর আগেও এসেছি, এবারও তিস্তাপাড়ের মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে গেলাম। আমরা আশা করছি, দ্রুতই তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। তিস্তা নিয়ে চায়না সরকার অত্যন্ত আন্তরিক।


“বিমান দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শোক”

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে ২১/০৭/২০২৫ খ্রি. তারিখে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক, দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পল্লী | বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এই ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য মহান আল্লাহ তায়া'লা এর কাছে বর্ণিত সংস্থা দোয়া প্রার্থনা করছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।


‘চোখের সামনেই মারা গেল আমার বন্ধু’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পরীক্ষা শেষে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফারহান হাসান। এর মধ্যে স্কুলটির একটি ভবনে আছড়ে পড়ে আগুন ধরে যাওয়া বিমানটি। আর এ ঘটনায় ঝরে যায় ২৭টি প্রাণ, যার প্রায় সবাই শিক্ষার্থী।

ফারহান বলে, ‘আগুন ধরা প্লেনটা আমার চোখের সামনেই বিল্ডিংয়ে আঘাত করছে। আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ড, যে পরীক্ষার হলে আমার সঙ্গেই ছিল। আমার চোখের সামনেই ও মারা গেছে।’

এ দুর্ঘটনায় ১৭১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ওই ঘটনার কিছু ভিডিওতেও স্কুলটির একটি দোতলা ভবনের নীচতলায় বিধ্বস্ত বিমাটিতে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সেইসঙ্গে চলতে থাকে উদ্ধার তৎপরতা।

বিবিসিকে প্রত্যক্ষদর্শী ফারহান বলে, ‘স্কুল গেটের ভেতরে অনেকগুলো গার্ডিয়ান দাঁড়ায়ে ছিল, আর ছোটরা বের হচ্ছিল ছুটির টাইমে। তখন গার্ডিয়ানদেরসহ প্লেনটা নিয়ে গেছে।’

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল ছুটি হবে হবে—এমন সময় বিমানটা সরাসরি জুনিয়র সেকশনের বিল্ডিংয়ে আঘাত করে।’

আরেক শিক্ষক মাসুদ তারিক বলেন, ‘আমি বিস্ফোরণের শব্দ শুনে যখন পিছনে ঘুরে তাকালাম, কেবল আগুন আর ধোঁয়া দেখছিলাম… সেখানে অনেক গার্ডিয়ান ও শিশুরা ছিল।

দুর্ঘটনার পর হতাহতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ সেচ্ছাসেবীরা এগিয়ে আসেন।

এক নারী বিবিসিকে বলেন, তার ছেলে স্কুলের ভেতরেই ছিল। তবে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে তিনি আর তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে জানানো হয়েছে, শিশুসহ প্রায় ৫০ জনের বেশি মানুষকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এ সময় হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে স্বজনদের ভিড় দেখা যায়। শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি তার ভাইকে জড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমার ভাইপো এখন মর্গে।’

তার ভাইয়ের আট বছর বয়সী ছেলে তানভীর আহমেদ মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় হতাহতের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, যাদের বয়স ১৪ বছরের মধ্যে।

দুর্ঘটনায় আহতদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ ঢাকার আরও সাতটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রয়েছে।

এর আগে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বিমানের দুর্ঘটনার পর দেওয়া এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি।’

তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য নয়, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মচারী ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্যও একটি অপূরণীয় ক্ষতি। এটি জাতির জন্য গভীর শোকের মুহূর্ত।’

দুর্ঘটনার পর এক বিবৃতিতে আন্তঃবাহিনী সংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান। প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত চীনের তৈরি এই যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উত্তরার ওই স্কুল ভবনে আছড়ে পড়েছিল।

তারা আরও জানিয়েছে, সোমবার (২১ জুলাই) গতকাল দুপুর ১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটি স্কুল ভবনের ওপর এসে বিধ্বস্ত হয়। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে এই খবর পায় বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। ওই ঘটনায় পাইলট লেফটেন্যান্ট তৌকির আহমেদও নিহত হয়েছেন।

ঘটনাটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।


banner close