নওগাঁর পোরশায় নিজ বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের শীতলি ফকিরপাড়া গ্রাম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, শীতলী ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে হাই বাবু (৪৭) এবং তার স্ত্রী মোমেনা বেগম (৩৫)।
স্থানীয় এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই স্বামী-স্ত্রী এবং তার ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তারা। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তার মেয়ে দেখেন তার মা বিছানায় পড়ে রয়েছেন এবং তার বাবা গলায় রশি দিয়ে তীরের সঙ্গে ঝুলছেন। ঘরের দরজা খুলে তার ছোট মেয়ে আশেপাশের প্রতিবেশীদেরকে বিষয়টি জানায়। প্রতিবেশীরা ঘরে এসে তাদের দুজনকেই মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ গুলোকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, স্থানীয়রা খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ গুলোকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে চীনের দূতাবাস এক নতুন চালান কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট উপহার দিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে দেওয়া এই সহায়তার লক্ষ্য দেশের কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও চিকিৎসায় নিয়োজিত স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ কমানো। আজ (মঙ্গলবার) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস।
রাজধানীতে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত হস্তান্তর অনুষ্ঠানে চীনা দূতাবাসের কাউন্সেলর লি শাওপেং এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর মো. হালিমুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাউন্সেলর লি শাওপেং বলেন, এই জরুরি সহায়তা দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতিফলন।
তিনি বলেন, ‘সব মানুষের জন্য একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীন বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে উভয় দেশের জনগণ এই যৌথ উদ্যোগের সুফল পায়।’
কোভিড-১৯ মহামারির সূচনালগ্ন থেকেই চীনের দূতাবাস বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে, যার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জাম, টিকা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)'র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, "কুমিল্লা হবে এনসিপির ক্যান্টনমেন্ট,বিএনপি জামাতে আপত্তি নেই আ.লীগের সাথে সখ্যতা মানবো না।
বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউন হল মাঠে জেলা ও মহানগর এনসিপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন। এটি ছিল জুলাই পদযাত্রার ২৩তম দিনের কর্মসূচি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "হাসিনা একসময় বলেছিলেন—‘কুমিল্লার নামের আগে কু রয়েছে, তাই এ নামে বিভাগ হবে না’। আমরা এখন তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছি। কুমিল্লা নামেই বিভাগ হবে।"
তিনি অভিযোগ করে বলেন, "রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার হয়েছে কুমিল্লা। এখানকার মানুষ আত্মনির্ভরশীল, রেমিটেন্স নির্ভর। কুমিল্লায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তা কুমিল্লাবাসীর টাকায়। কিন্তু এই অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়ন এখনো পিছিয়ে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে সিলেট সড়কে দুইটি বাস একসঙ্গে চলতে পারে না, অথচ এটিকে বলা হয় মহাসড়ক!"
উত্তরবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, "আমরা আগে ভাবতাম, শুধু উত্তরবঙ্গই বঞ্চিত। কিন্তু কুমিল্লায় এসে দেখি, এখানেও টানা দুই কিলোমিটার ভালো রাস্তা নেই। সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা নিজেরা টাকা তুলে রাস্তাঘাট ঠিক করবো।"
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, "কুমিল্লায় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের নির্যাতিত হতে হয়েছে। এখনো আমাদের লড়াই শেষ হয়নি। কুমিল্লাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ আবার ফিরে এলে চার কোটি সন্তানের নিরাপত্তা থাকবে না।"
তিনি আরো বলেন, "আপনি বিএনপি করেন, জামায়াত করেন তাতে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতা আমরা কখনো মেনে নেব না।"
এসময় সভাপতিত্ব করেন এনসিপির উত্তরবঙ্গের মুখ্য সমন্বয়ক সার্জিস আলম। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিপা, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, জয়নাল আবেদীন শিশির, জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক এডভোকেট তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাভিদ নওরোজ, কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাফসা জাহান, কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন জামিল সৌরভ এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম।
সমাবেশের শুরুতে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং সভাটি শোকসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এর আগে বিকেল ৫টায় কুমিল্লার পদুয়ারবাজার বিশ্বরোড থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন হল মাঠে এসে শেষ হয়। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এনসিপি-সমর্থক শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে অংশ নেয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ১৮তম দিনের আলোচনায় নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দিনব্যাপী আলোচনা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারের নিয়োগের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধানের ১১৮ (১) সংশোধন করে নতুন সংশোধিত প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আইনে নির্ধারিত সংখ্যক নির্বাচন কমিশনার সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটি বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের প্রধান এবং অন্যান্য কমিশনারগণের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পূর্বে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারগণকে নিয়োগ করার উদ্দেশ্যে সংসদে প্রণীত আইনের দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ‘ইচ্ছাপত্র’ ও প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি আহ্বান করাসহ নিজস্ব উদ্যোগে উপযুক্ত প্রার্থী অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে বাছাই কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হবেন বিরোধী দলীয় ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা ও প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপীল বিভাগের একজন বিচারপতি।
তিনি জানান, এই কমিটি আইনের দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের জীবনবৃত্তান্তসমূহ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করে, সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্ধারিত প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণ করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাদেরকে কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য নিয়োগ দান করবেন।
এ সময় তিনি আরও জানান যে, স্পিকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংসদ সচিবালয় এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। বিদায়ী কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে অথবা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে পরবর্তী দিন হতে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারগণ দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এ ছাড়া, আজকের আলোচনার পর জাতীয় সংসদ কর্তৃক নির্বাচন কমিশনের ওপর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পৃথক আইন ও আচরণ বিধি প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা সংযুক্ত করা হয়েছে।
তবে, বিদ্যমান সংবিধানের উপানুচ্ছেদ ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ অপরিবর্তিত থাকবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত জুলাই সনদ প্রণয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত সকল বিষয়ে ঐকমত্য গড়তে আগামী কিছুদিন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা চলমান থাকবে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে একটি বিশেষায়িত মেডিকেল টিম ঢাকায় এনে গুরুতর দগ্ধ ও আহত রোগীদের উন্নত আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আজ বুধবার রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ চিকিৎসাধীন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে গিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেন।
আহতদের মধ্যে স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উপদেষ্টা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসকদেরকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
এ সময় তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আহত চিকিৎসাধীন ছাত্রদের শারীরিক অবস্থারও খোঁজখবর নেন।
উত্তরায় সংঘটিত এ বিমান দুর্ঘটনাকে সমগ্র জাতির জন্যই অত্যন্ত বেদনাদায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
তিনি নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
উপদেষ্টা নিহত ও আহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি দুর্ঘটনায় দগ্ধ সকল রোগীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন উপদেষ্টা।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সরকারের পক্ষ থেকে করণীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে নৌপরিবহন উপদেষ্টা জানান।
পরিদর্শনকালে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গোয়ালঘর থেকে চুরি হওয়া চারটি গরু ও একটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোরে উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের উত্তর হিঙ্গাজিয়া এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গরুর মালিক আলমাস মিয়া ওইরাতে তার গোয়ালঘর তালাবদ্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখতে পান গোয়ালঘরের তালা ভাঙা এবং গরুগুলো চুরি হয়ে গেছে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, ভোরের দিকে উত্তর হিঙ্গাজিয়া এলাকায় রাস্তার পাশে একটি পিকআপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সন্দেহ হলে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে গাড়িতে থাকা লোকজন পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পিকআপ ভ্যান, চুরি যাওয়া চারটি গরু ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। চোরচক্রকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বোন নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম (১৩) মৃত্যুর ১দিন পর মৃত্যু হয়েছে তার ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফির (৯)। সে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। বোনের মৃত্যুর ১দিন পরে ভাই চলে গেলো না ফেরার দেশে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৃত্যু হয় নাজিয়ার ছোট ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফির। এরআগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মৃত্যু হয় নাফির বড় বোন নাজিয়ার। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে নিঝুমের জানাজা নামাজ শেষে উত্তরার একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নাজিয়া ও নাফি ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম নিরবের কন্যা ও পুত্র। দুই সন্তানের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা-মা ও পরিবারের স্বজনরা।
নাজিয়া ও নাফি বাবা-মায়ের সঙ্গে উত্তরার কামারপাড়ায় থাকত। নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও তার ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফি ওই প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন।
তাদের স্বজনরা জানান, সোমবার দুপুরে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন লাগার সময় স্কুল চত্বরেই ছিল নাজিয়া ও নাফি। আগুনে তারা গুরুতর দগ্ধ হওয়ার পর তাদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়। নাজিয়ার শরীরের ৯০ শতাংশ ছোট ভাই নাফির শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাদের হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সোমবার রাত ৩টার দিকে নাজিয়া চলে যায় আর মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাফি চলে যান না ফেরার দেশে।
তারা আরো জানান, নাজিয়া মারা যাওয়ার পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি ভোলায় নেওয়ার কথা থাকলেও তার ভাই চিকিৎসাধীন থাকায় লাশ ভোলায় আনা হয়নি। জানাযা শেষে উত্তরায় দাফন করা হয়েছে।
এদিকে নাজিয়া ও নাফির মৃত্যুর খবরে ভোলায় তাদের গ্রামের বাড়িতে স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে চলছে শোকের মাতম কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস। নাতি নাতনীর শোকে গ্রামের বাড়িতে কান্নায় বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তাদের দাদা। বিলাপ করে কাদঁছেন খেলার সাথী চাচাতো ভাই বোনগুলো। একটি সুন্দর পরিবারে হঠাৎ ঝড়ের মতো নেমে আসা এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। দুই শিশু সন্তান হারিয়ে এক মুহূর্তেই যেন থেমে গেছে বাবা- মায়ের হাজারো স্বপ্ন ও সংসারের সমস্ত চলার গতি।
নাজিয়ার চাচা হাসান জানান, সন্তানদের ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানানোর জন্য ভালো স্কুলে পড়ালেখা করাবেন বলে ১৫-১৬ বছর আগে ভোলা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান নিরব। বাসা ভাড়া নেন উত্তরার কামারপাড়া এলাকায়। ছেলেমেয়েকে ভর্তি করেছিল উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তাদের বাবার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। শেষ হয়ে গেলো একটি সুন্দর সংসার।
নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম ও তার ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফি সর্বশেষ ২০২২ সালে বাবা মায়ের সঙ্গে ভোলায় দাদার বেড়াতে এসেছিলেন।
নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের সকলেই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সিরামপুর আইড়মারী ব্রিজ এলাকায় বনপাড়া- হাটিকুমরুল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে ৫ জন নারী এবং একজন পুরুষ। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে বরাইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, নাটোর থেকে ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হন।
এ ছাড়া চালকসহ আহত ২ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখানে আরও একজনের মৃত্যু হয়। আহত চালকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ওসি গোলাম সারোয়ার।
মৌলভী বাজার জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ৭ মামলার আসামি আব্দুস সামাদ আজাদ ভারত যাওয়ার সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আটক। বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি ভারতের যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট ভিসায় বেনাপোল ইমিগ্র্রেশনে আসে। ইমিগ্রেশন পুলিশ ডাটাবেজ যাচাইয়ের পর একাধিক মামলা পাওয়ায় তাকে আটক করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করেন।
আটককৃত আব্দুস সামাদ (পাসপোর্ট নং এ-১৩৯৫৯১৯২) মৌলভীবাজার সদর জেলার ৪নং ওয়ার্ড এর মোস্তফাপুর গ্রামের মো: আকিব আলীর ছেলে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানায় তার নামে মৌলভীবাজার সদর থানায় মামলা একাধিক মামলা রয়েছে । তার সবগুলো মামলা মৌলভী বাজার সদর থানার।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইলিয়াছ হোসাইন মুস্নী বলেন, ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট নিয়ে যাচাই বাছাইয়ের পর জানা যায় তার নামে মামলা আছে। সাথে সাথে মৌলভী বাজার জেলা ডিআইও -১ এবং মৌলভীবাজার সদর থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করলে উল্লেখিত ব্যাক্তির নামে ৭ টি মামলা আছে। তাকে পুলিশ গ্রেফতারের জন্য খুজছে। সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
বেনাপোল পোর্ট থানা ওসি মো: রাসেল মিয়া বলেন, ৭ মামলার আসামি আব্দুস সামাদ আজাদকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মৌলভীবাজার থানায় তার নামে মামলা থাকায় তাকে ওই থানায় হস্তান্তর করা হবে।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১০টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্থানে এই কর্মসূচি পরিচালনা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সাহা। তিনি নিজেই গ্লাভস পরে ঝাড়ু হাতে পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেন। এতে অংশ নেন অন্যান্য চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মচারীরাও।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই অভিযানে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ, জরুরি বিভাগ, মাঠ ও চলাচলের রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ময়লা-আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কার করা হয়। এছাড়াও ব্লিচিং পাউডার ও পানি দিয়ে মেঝে ও দেয়াল ধুয়ে ফেলা হয়। অভিযান শেষে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে গাছের চারা রোপণ করা হয়।
এমন উদ্যোগে খুশি রোগী ও তাদের স্বজনরা। তবে তারা দীর্ঘদিন ধরে চলা চিকিৎসক সংকট নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’র সদস্য মো. সাদ্দাম বলেন, “আজ নিজ হাতে হাসপাতালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এটি খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে চিকিৎসক সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। এটি দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।”
ডা. রাজীব সাহা বলেন, “নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করেছি। এর মূল লক্ষ্য মানুষকে সচেতন করা—যাতে ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকে। হাসপাতালের জনবল সংকটসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসক স্বল্পতা ও অন্যান্য সংকটের কারণে রোগীরা অনেকসময় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এলাকাবাসীর দাবি, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
চিত্রা নদীর নড়াইলের অংশ দীর্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ভরে আছে। প্রায় চার দশক এ নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ। কচুরিপানার যঞ্জালে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে মারা যাচ্ছে নদীটি। হুমকীতে পড়েছে জলজ জীববৈচিত্র্য। মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় জেলেদের জীবন-জীবিকাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী বলছেন, স্রোত কমে যাওয়ায় নদীটির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নাব্যতা-সংকট। জেগেছে ছোট-বড় চর। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদীটি মরা খালে পরিণত হবে বলে তাদের শঙ্কা।
পাউবোর ভাষ্য, কচুরিপানার জটে নদীতে পানির স্রোত কমে গেছে। এতে কমলাপুর ও গর্ন্ধব্যখালী এলাকার দুটি পাম্পহাউস থেকে পানি নিষ্কাশনও বন্ধ হয়ে গেছে। বেড়িবাঁধের ভেতরেও কচুরিপানায় ভরে আছে। পাম্প হাউস দুটি বিকল থাকায় কৃষিজমিতে সেচ কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা ভূমি কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে চিত্রা নদীর দূরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। সদর উপজেলার রতডাঙ্গা ত্রিমোহনী থেকে কালিয়া উপজেলার পেড়লী বাজার ত্রিমোহনী গিয়ে নবগঙ্গা নদীর সঙ্গে মিশেছে।
সরেজমিনে নদীটির রতডাঙ্গা, সাবেক শেখ রাসেল সেতু, আউড়িয়া এস এম সুলতান সেতু, গোবরা বাজার, শিঙ্গাশোলপুর বাজার, চুনখোলা সেতুর অংশ ঘুরে দেখা গেছে নদীতে ঘন কচুরিপানা। সেখানে পানি আছে কি না, তাও বোঝা যাচ্ছে না। কোনো নৌযান চোখে পড়েনি। নদীর কিছু এলাকায় কচুরিপানায় আটকা পড়ে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পাড়ে দাড়ানো কঠিন। মশা-মাছি ভনভন করছে। নদীটির পেড়লী এলাকায় মাত্র তিন-চার কিলোমিটার জুড়ে কচুনিপানা নেই। বাকি প্রায় সব অংশ কচুরিপানায় ভর্তি।
কমলাপুর গ্রামের প্রবীণ কৃষক নিরাপদ বিশ্বাস, ইউনুস শেখ, গোলাম মোস্তফা বলেন, এক সময় এ নদীতে অনেক স্রোত ছিল। স্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, নৌকা, ট্রলারসহ বিভিন্ন নৌযান চলাচল করত। লোকজন এখান দিয়ে লঞ্চে উত্তরে মাগুরা, দক্ষিণে খুলনা, বড়দিয়া, গোপালগঞ্জ, বরিশাল,ও ঢাকায় যাতায়াত করত। ফসল ও মালপত্র আনা-নেওয়া করা হতো। সেসব কথা আজ রূপকথার মতো শোনায়।
নদীরতীরবর্তী পূর্ব সীমাখালী গ্রামের বাসিন্দা কাকলি বিশ্বাস বলেন, এলাকার প্রতিটি পরিবার গোসল, থালাবাসন ধোয়সহ সব কাজই করতে হয় নদীতে। কচুরিপানায় ভরে থাকায় কিছুই করা যাচ্ছে না।
নদীর এই পরিণতি সম্পর্কে গোবরা এলাকার স্কুল শিক্ষক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ১৮৮৬ সালে মাগুরা শহরে নদীর ওপর তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী (এম মাজেদুল হক) স্লুইসগেট নির্মাণ করার পর থেকে নদীর নাব্যতা কমতে থাকে। এ ছাড়া নদীর ওপর ঘন ঘন সেতু নির্মাণ করার কারণেও পলি জমে নাব্যতা কমেছে। তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার গড়াই নদ ও খুলনার আত্রাই নদীর সঙ্গে এই নদীর সংযোগ ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে নদীতে নৌকা চলাচল করলেও আশি দশক থেকে নদীতে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন নদীতে স্রোত কমে গেছে। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নাব্যতা-সংকট। জেগে ওঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদীটি সরু খালে পরিণত হবে ।
শহরের রূপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, নদীতে যখন নৌকা অথবা লঞ্চ চলেছে তখন কম খরচে সব ব্যবসায়ী লঞ্চে করে খুলনা থেকে মালপত্র আনা-নেওয়া করতেন। এখন কচুরিপানা ও নাব্যতা-সংকটের কারণে সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
যোগাযোগ করলে পাউবোর (পানি উন্নয়ন বোর্ড) নড়াইল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল কুমার সেন বলেন, চিত্রা, ভৈরব, আফরা নদ-নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নদী খননসহ দুটি পাম্প হাউস সংস্কার করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে নদীসহ অন্যান্য কাজ শুরু করা যাবে।
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে আকস্মিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে এ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজা পড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান।
আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নাছির উদ্দিন মিঝি বলেন,"উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে বিমান দূর্ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম হৃদয়বিদারক ঘটনা। যারা শহিদ হয়েছে তাদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে তাদের সুস্থতা কামনা করছি। কোনো দূর্ঘটনার কারণ খোঁজার আগে আমাদের উচিত তাদের জন্য দোয়া করা। জাতীয় সংহতি বিনষ্টকারী যেকোনো পন্থা আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে।"
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন,"এক বছর হতে না হতেই ঢাকাতে যারা বিশৃঙ্খলতা তৈরি করেছে তারা বিগত সরকারের দোসর। সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আমাদের ছোট ভাই সাজিদ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য সামগ্রিক আন্দোলন করা হচ্ছে। কিন্তু যারা আন্দোলনকারীদের পিছন থেকে কারা কলকাটি নাড়ছে সেদিকে খেয়াল রাখত হবে। সাজিদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কেউ যেন রাজনৈতিক ফাইদা নিতে না পারে, ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সাজিদ হত্যার বিচার না হলে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী অনিরাপদ হয়ে পড়বে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।"
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার কিছু পর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ভবনে আগুন ধরে যায়। এঘটনায় এখন অবধি নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে সহায়তা দিতে সশস্ত্র বাহিনীসহ সকল খাতে সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, চীন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের সকল জনগণের প্রতি ভালো প্রতিবেশীর মতো বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি অনুসরণ করে আসছে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের ধারাকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজধানীর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে (এনডিসি) এক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে এনডিসির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট রিয়ার অ্যাডমিরাল একেএম জাকির হোসেনসহ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একশ’রও বেশি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের সামরিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং এমন একটি নিরাপত্তা ধারণার পক্ষে, যা অভিন্ন, সমন্বিত, সহযোগিতামূলক ও টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
তিনি বলেন, আধিপত্য, সম্প্রসারণবাদ বা প্রভাব বিস্তারের চিন্তাভাবনার কোনো স্থান চীনের অভিধানে নেই।
ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন একটি সমান মর্যাদা ও সুশৃঙ্খল বহু-মেরুর বিশ্ব এবং সকলের জন্য উপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের পক্ষে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, চীন গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ-এর মতো উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যতের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও জানান, ২০২৫ সালে চীন ‘জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধ’ এবং ‘বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের’ ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করেছে, যা বিশ্ব শান্তি ও সহযোগিতার প্রতি চীনের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটায়।
বক্তৃতার শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, ব্রিকস সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বাংলাদেশকে এর উন্নয়ন অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সহায়তা করতে চীনের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
চীন ও বাংলাদেশ এই বছর দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন করছে। এ উপলক্ষে উভয় দেশ জনসম্পৃক্ততা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা বিনিময়ের মাধ্যমে কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও গভীর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।