বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ (বিকপ) এর উদ্যোগে ১৭ জুলাই ২০২৫ জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের বিদ্যালয়সমূহকে বৃত্তি পরীক্ষায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে নরসিংদী জেলা কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নরসিংদী জেলা কিন্ডারগার্টেন ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা: রমজান আলী প্রামাণিক ও সাধারণ সম্পাদক মো: মুজিবুর রহমানসহ নরসিংদী জেলা উপজেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তাগণ বলেন, নরসিংদী জেলায় ৬ শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রায় ১,২৫,০০০ জন শিক্ষার্থী, ৬৫০০ জন শিক্ষক-কর্মচারী, ৩০০০ জন উদ্যোগক্তা বা পরিচালক কর্মরত রয়েছে। এছাড়া সমগ্র বাংলাদেশে প্রায় ৫০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে ১,০০,০০,০০০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে। তাতে ৬৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৫০ হাজার কর্মচারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যা প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবদান নি:সন্দেহে সর্বমহলে প্রশংসার দাবী রাখে।
বক্তাগণ আরো বলেন, শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকার। কোন শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার। বিধায় বর্তমান সরকারের সময়ে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার সেই বৈষম্যের শিকার হোক এটা অপ্রত্যাশিত।
বিগত ১৭.০৭.২৫ইং তারিখে জারিকৃত পরিপত্রটি বাতিল করে ২০২৫ইং এ অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্থি পরীক্ষাসহ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গৃহীত অন্যান্য যে কোনো কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষার অংশীজন হিসেবে কিন্ডারগার্টেন ও বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমঅধিকার যেন অক্ষুন্ন থাকে, তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দানের জোর দাবী জানানো হয়।
জন্ম থেকেই দুটি অঙ্গের অভাব—ডান পা নেই, ডান হাতও নেই কবজি থেকে আঙুল পর্যন্ত। ফলে স্ট্রেচারে ভর দিয়েও হাটতে পারে না। চলতে হয় এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। তবুও ভিক্ষা নয়, এক পা আর এক হাতে জীবনের কঠিন লড়াই লড়ে যাচ্ছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার দক্ষিণ রাংচাপড়া গ্রামের হতদরিদ্র বাছির কুমার(৩৭)। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার জীবন থামাতে পারেনি। সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে তিনি নিজের মতো করে গড়ে তুলেছেন চায়ের ছোট একটি দোকান।
বাছির জানান, পাঁচ বছর বয়সে তার বাবা আব্দুল কুমার মারা যান। রেখে যান শুধু বাড়ি ভিটার জমি টুকু। মা হাজেরা খাতুন অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে আট সন্তানকে লালন-পালন করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট এবং জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। শারীরিক অক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষাবৃত্তিতে না গিয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে বড় ভাইয়ের সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন। পরে নিজেই ভালুকা-গফরগাঁও সড়কের পাশে দক্ষিণ রাংচাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি ছোট চায়ের দোকান দেন। প্রায় ২২ বছর ধরে এক পায়ে লাফিয়ে ও এক হাতে দোকান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
১৪ বছর আগে আকলিমা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন বাছির। তাদের দুই ছেলে তানভীর (১২) ও রানা (১০) বর্তমানে স্কুলে পড়ে। দৈনিক আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে হাতে থাকে তিন থেকে চারশ টাকা। এই টাকায় সংসার চালানো, ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা ও খাওয়া-দাওয়া মেটাতে হিমশিম খেতে হয়।
চায়ের দোকানের ছাউনি জংধরা টিনে ভরা, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি পড়ে দোকানের ভেতর। নিজের মতো করে তা মেরামতের সামর্থ্যও নেই। আরও দুঃসহ তার চলাচল। বাড়ি থেকো দোকান প্রায় দেড় কিলোমিটার। প্রতিদিন দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে হয় এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে।
বাছিরের ইচ্ছা একটি ব্যাটারিচালিত হুইল চেয়ার। সেটি হলে বাম হাতে চালিয়ে তিনি বাড়ি থেকে দোকানে যেতে পারতেন সহজে। কিন্তু সেই চেয়ার কেনার সামর্থ্য তার নেই।
এলাকাবাসী বাছিরের চলাচল সহজ করার জন্য সমাজের বিত্তশালীদের কাছে একটি ব্যাটারি চালিত হুইল চেয়ারের দাবি জানিয়েছেন।
মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে বিভিন্ন আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে। ভোলার চরফ্যাশনের মৎস্যঘাটগুলোতে জেলে ও পাইকারদের হাঁকডাকে কিছুটা সরগরম হলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। যা, সাধারণ মানুষে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী ও সমুদ্রে যেতে না পারায় ইলিশের সরবরাহ কমেছে, এজন্য দাম বেশি। তবে ক্রেতারা জানিয়েছেন, আড়তদাররা কমিশন বাণিজ্যের পাশাপাশি দাম হাঁকিয়ে মাছ বিক্রি করছেন।
চরফ্যাশনের বড় মৎস্যঘাটগুলোর মধ্যে সামরাজ, নতুন স্লুইসগেট, খেজুরগাছিয়া, মাইনউদ্দি ঘাট, ঢালচর, বকসীরঘাট, ঘোষেরহাট, চরকচ্ছপিয়া ও কুকরি মুকরি অন্যতম। কাকডাকা ভোর থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এসব ঘাটে।
চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার জেলে রয়েছে। উপজেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ২৮১জন। অনিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার। এসব জেলেরা নদী ও সাগরে মাছ শিকার করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ জেলে সামরাজ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু।
কয়েকটি মৎস্যঘাট ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ট্রলার থেকে ঝুড়িতে করে মাছ নিয়ে আসছে। কেউ আবার পাইকার ডাকছে, কেউ মাছ ক্রয় করে মোকামে যাচ্ছেন। এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেচাকেনা হয় ইলিশের। এখানে ইলিশের পাশাপাশি কাউয়া, ঢেলা, লইট্টা, পোয়া, জাবা কই, মেইদ, টেংরা, রূপচাঁদাসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়। সাগরের ইলিশের থেকে নদীর ইলিশের দাম তুলনামূলক বেশি। দেড় কেজি ওজনের ইলিশের হালি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। এক কেজি ওজনের ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। পাঁচশ গ্রাম থেকে আটশো গ্রাম ওজনের হালি ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাইনউদ্দি মৎস্যঘাটে ইলিশ কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম মুকুল নামে এক ক্রেতা বলেন, 'ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। আমি এক থেকে সাতশো গ্রাম ওজনের (আকারভেদে) এক হালি ইলিশ মাছ কিনেছি সাত হাজার টাকায়। যা স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুন। নানান অযুহাতে চড়া দামে ইলিশ বিক্রি করছেন আড়তদাররা। তারা তাদের ইচ্ছে মতো দাম হাঁকিয়ে ইলিশ মাছের ডাক তোলেন। এছাড়াও শতকরা সাত টাকা ইলিশে এবং শতকরা পনেরো টাকা অন্যান্য প্রজাতির মাছে কমিশন বাণিজ্য করেন আড়তদাররা। ক্রেতারাতো দাদন গ্রহণ করেননি, তাহলে কমিশন কেন দিবে? তাদের মনগড়া নিয়মে বাধ্য হয়েই ক্রেতারা মাছ কিনেন। তাদের এমন অনিয়মের নিয়ন্ত্রণ নেই কারো হাতে।'
সামরাজ ঘাটের জেলে কাসেম মাঝি (৫৬), কবির মাঝি (৪৫) বলেন, ‘নদীতে আগের তুলনায় ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে প্রতিদিন দুই-তিন হালি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে ধার-দেনা শোধ করার সুযোগ নেই। কারণ দৈনন্দিন খরচ বাদ দিলে বাড়তি টাকা থাকে না।'
নৌকায় বসে ইলিশ জাল সেলাইয়ের কাজ করছিলেন সামরাজ মৎস্যঘাটের দাদনভুক্ত কয়েকজন জেলে। জাল সেলায়ের কাজ সেরে জেলে আবদুল (৩২) বলেন, '৪ দিন আগে ৫ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে নদীতে গিয়েছিলাম। যে পরিমান মাছ পেয়েছিলাম, তাতে ৩৬ হাজার টকার মাছ বিক্রি করে কিছু টাকা মহাজনকে দিয়েছি। কোনমতে সংসার চালাতে হচ্ছে। দেনা করে পরিবারের জন্য চাল-ডাল কিনতে হয়েছে।' জেলে আবদুল এর মতো একই প্রসঙ্গ তুলে কথা বলেছেন সেখানে থাকা রফিক মাঝি (৪২), ইদ্রিস (৩৭), আব্বাস উদ্দিন (২৩) ও রত্তন মাঝি (৪৪)।
সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়তদার হেলাল উদ্দিন টিপু বলেন, 'বৈশাখের মাঝামাঝি মৌসুম শুরু হয় এবং শেষ হয় আশ্বিনের শেষ দিকে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারনে নদীতে কিছুটা ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রত্যেক নৌকায় আশানুরুপ মাছ না পেলেও যে পরিমান পাচ্ছে, তাতে তেলের খরচ তুলতে পারছে। ইলিশের পরিমাণটা বাড়লে জেলেরা ট্রলার মালিক-মহাজনের দাদন পরিশোধ করতে পারবে।'
সামরাজ মৎস্যঘাট জেলে সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, 'অধিক ঝুঁকি জেনেও মাছের ব্যবসা করছি। দীর্ঘ বছর ধরে এ ব্যবসার সাথে আমি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। চরফ্যাশন উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তর মৎস্যঘাট হলো সামরাজ ঘাট। ইলিশের ভরা মৌসুমে এ ঘাটে দৈনিক ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। এ বছরের শুরুর দিকে যে খারাপ অবস্থা ছিলো, তা গত ৯-১০ বছরেও দেখিনি। বৃষ্টি-বাতাসে কারনে নদীর পানি বেড়েছে। একারনে নদীতে ইলিশ ধরা পড়েছে তা-ও আশানুরূপ না। জেলেরা তেলের খরচ উঠাতে পারলেও আড়তদারদের দাদন পরিশোধ করার মতো সুযোগ হয় না। এই মৎস্যঘাটে ৯৮ জন মৎস্য আড়তদার রয়েছে। এসব আড়তদাররা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।'
চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, 'বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীতে লবনাক্ততা কমেছে। এতে নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা নদী ও সমুদ্রে যেতে পারেনি। একারনে ইলিশের সরবরাহ কম। বর্তমানে ইলিশের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। আড়তদারদের কমিশন বাণিজ্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলেদেরকে আড়তদারগণ দাদন দিয়ে থাকেন, হয়তো জেলেদের কাছ থেকে এজন্য কমিশন নেন। তবে ক্রেতাদের থেকেও কমিশন নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। কমিশনের বিষয়ে আড়তদারদের সাথে যোগাযোগ করবো।'
নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে ১০ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস এর নিকট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করলে বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করেন। এদের মধ্যে ২জন পুরুষ এবং ৮জন মহিলা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
আটকরা হলেন, আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।
বিজিবি আরও জানান, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন হতে আনুমানিক ০১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুর নামক স্থান হতে বাংলাদেশী ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে বোম্বাই শহরে ২জন পুরুষ রাজমিস্ত্রী এবং ৮জন মহিলা বাসা বাড়ীতে কাজ করার নিমিত্তে গমণ করে। পরবর্তীতে তাদেরকে ভারতীয় পুলিশ (সিআইডি) কর্তৃক আটক করা হয়। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পের নিকট তাদের হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে বিএসএফ কর্তৃক বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস এর নিকট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করলে বিজিবি টহলদল তাদের আটক করেন। উক্ত আটককৃত বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরি ইউনিয়নের বির্তুল এলাকা বর্তমানে সবজির রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এখানকার উর্বর মাটি ও কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে উৎপাদিত হচ্ছে কাঁকরোল, কাঁচকলা, কচু, বরবটি, কচুর লতি, কাঁঠাল ও লিচুর মতো বৈচিত্র্যময় সবজি। এসব সবজির একাংশ রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে, দেশের জন্য বয়ে আনছে গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রা।
তবে, আধুনিক প্যাকিং হাউসের অভাবে এই সম্ভাবনাময় খাতটি ধীরে ধীরে মুখ থুবড়ে পড়ছে। সবজির মান ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহের উপযোগী করতে হলে অত্যাধুনিক প্যাকেজিং ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার প্রয়োজন। কিন্তু প্যাকিং হাউসের অভাবে কৃষকদের উৎপাদিত সবজি গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
বির্তুল এলাকার সফল কৃষক মোঃ আব্দুল আলিম বলেন, “আমি প্রতিবছর ২০০ কেজির বেশি কাঁকরোল বিদেশে পাঠাই। জমির সেরা ফসলই রপ্তানির জন্য রাখি। কিন্তু প্যাকিংয়ের সুবিধা না থাকায় রপ্তানির পথে অনেক মাল পচে যায় বা মান নষ্ট হয়। এতে লোকসান হয়, দামও কমে যায়।”
একই অভিযোগ করেছেন আরও অনেক কৃষক। তারা বলছেন, যদি সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি আধুনিক প্যাকিং হাউস নির্মিত হতো, তাহলে তারা আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ফসল রপ্তানি করতে পারতেন এবং ন্যায্য মূল্য পেতেন।
এ বিষয়ে কৃষকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও দিয়েছেন। নাগরি ইউনিয়নের উলুখোলা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের পাশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রায় ১২ শতাংশ জমি রয়েছে যা দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। সড়কসংলগ্ন এ জমিটিকে ব্যবহার করে একটি প্যাকিং হাউস নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
একটি আধুনিক প্যাকিং হাউসে সবজি ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ, গ্রেডিং, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিং সুবিধা থাকলে রপ্তানি উপযোগী পণ্য প্রস্তুত সম্ভব হবে। এতে শুধু কৃষকরাই নয়, লাভবান হবে দেশও।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, “এই এলাকার কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কিন্তু আধুনিক প্যাকিং হাউস না থাকায় কৃষক ও দেশ—দুই পক্ষই আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। প্যাকিং হাউস নির্মাণে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, “কৃষকরা আমাদের সম্পদ। তাদের উৎপাদিত ফসল যাতে বিদেশে ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। আমরা ঢাকার ‘কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় প্যাকিং হাউস নির্মাণের চেষ্টা করছি এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেব।”
এখন কালীগঞ্জের কৃষকদের দৃষ্টি সরকার ও প্রশাসনের ওপর। সরকারি জমি ও প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব। প্যাকিং হাউস নির্মিত হলে বদলে যাবে এলাকার কৃষি অর্থনীতি, খুলবে বৈদেশিক রপ্তানির নতুন দ্বার।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অধ্যয়নরত ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন রেমিয়ানস অ্যাসোসিয়েশন অব বাকৃবি-এর ২০২৫-২৬ সালের কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
নবগঠিত এই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী আহসানুল একরাম মুর্তজা এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল আলম সাকিব মনোনীত হয়েছেন।
সংগঠনটিতে উপদেষ্টা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ এবং একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার হাশেম সহ-উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।
তাছাড়া কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মোস্তাক হাসনাত, আবু নোমান মো. সিয়াম, মো. সাব্বির, অনুকূল শর্মা, সৌমিত রায় অর্ক, মনিরুজ্জামান মনির। কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মির্জা জাকিরুল ইসলাম রবিন এবং সাহাম বিন ইয়াকুব, সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে আল নাহিয়ান সাদ, দপ্তর সম্পাদক হিসেবে মো. আরকানুল ইসলাম আকিক, মানব সম্পদ সম্পাদক হিসেবে মো. সাইফ আরমান, ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে মশিউর রহমান ফাহিম, অর্থ সম্পাদক হিসেবে মো. রুহুল খান মুন মনোনীত হয়েছেন।
এছাড়াও এই কমিটিতে বিভিন্ন পদে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের মনোনীত করা হয়েছে।
নবগঠিত এই কমিটি আগামী এক বছরের জন্য রেমিয়ানস অ্যাসোসিয়েশন অব বাকৃবি-এর কার্যক্রম পরিচালনা করবে। নতুন নেতৃত্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অ্যাসোসিয়েশনের লক্ষ্য পূরণে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
ফটিকছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক নয়া দিগন্তের ফটিকছড়ি প্রতিনিধি সাংবাদিক সৈয়দ মো. মাসুদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাত ১০টা ২০ মিনিটের সময় তিনি চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গত কয়েকদিন ধরে তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। আজ সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
সৈয়দ মো. মাসুদ ছিলেন একাধারে একজন নির্ভিক সাংবাদিক, শিক্ষক। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে, তাঁর অকাল মৃত্যুতে ফটিকছড়ি প্রেসক্লাব, স্থানীয় সাংবাদিক মহল ও বিভিন্ন শিক্ষ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় একযোগে ১৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধা পযর্ন্ত এসব আদালত পরিচালনা করেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কুষ্টিয়ার সহায়তায় মোট ১৩ জন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয় এবং ৩৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, দৌলতপুর সদর ইউনিয়নের মানিকদিয়াড় এলাকার রবিউল ইসলাম (রবি) (৪৫), জনি (২৭), বিলপাড়া ও মাঠপাড়া এলাকার জহিরুল ইসলাম (৩৬) ও টালু (৩৫),খলিশাকুন্ডি ইউনিয়নের, জাহিদ হোসেন (২৫), রশিদ (২২) ও শহিদুল ইসলাম (৪২), জনি ইসলাম (২৬), মৌবাড়িয়া এলাকার শিমুল আলী (২৫), হোগলবাড়িয়া এলাকার আশরাফুল (৪৮), কামালপুর এলাকার রাজিবুল ইসলাম শিশির (৩০), গাংনী উপজেলার হাবিবুর রহমান (২৬) ও রব্বান আলী (৪৮)।
এছাড়া উপজেলার প্রাগপুর বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে এক ব্যবসায়ীকে ৩ হাজার টাকা এবং পাটজাত মোড়ক ব্যবহার না করায় আরেক ব্যবসায়ীকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, “মাদক, ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন ও সরকারি আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে এই ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে। মানুষের জান-মাল, স্বাস্থ্য ও ন্যায্য অধিকার রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট। আজকের একযোগে পরিচালিত ১৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে সবজিখেতে গাঁজা চাষের অভিযোগে মো. দুলাল মিয়া (৪৮) নামের এক কৃষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে, গতকাল (বুধবার) মধ্যরাতে দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তিনি উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের বড়াইল পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, অভিযানে একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। দুলাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সবজিখেতের আড়ালে গোপনে গাঁজা চাষ করে আসছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশের অভিযানের আগেই তিনি অতিরিক্ত গাছ সরিয়ে ফেলেছেন।
পরে তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি বক্সে রাখা শুকনা গাঁজা এবং ইয়াবা সেবনের বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আসামিকে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চগড়ের একমাত্র চক্ষু হাসপাতাল যেখানে রোগীরা পাচ্ছে স্বল্প মূল্যে উন্নত সেবা।
পঞ্চগড় শহরের জালাসী মোড়ের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে রাবেয়া চক্ষু হাসপাতালটি ২০২৩ সালের দিকে যাত্রা শুরু করে।
যাত্রা শুরু করার পর থেকেই তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে রোগীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করে ফেলেছে। তারা উন্নত মানের সেবা দিয়ে আসছে রোগীদেরকে।
রাবেয়া চক্ষু হাসপাতালে কম্পিউটারে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা, স্লিট ল্যাম্পে চক্ষু পরীক্ষা, রেটিনা পরীক্ষা, নেত্রনালী পরীক্ষা, চোখের প্রেসার পরীক্ষা করতেছে। স্বল্প টাকায় বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর রিপোর্ট দেখে তারা চিকিৎসা দিচ্ছেন।
বড় ধরনের কোন সমস্যা দেখা দিলে তার জন্য অপারেশন করার পরামর্শ দিচ্ছেন। অল্প টাকায় তারা অপারেশন করাচ্ছেন।
দিনাজপুর গাওসুল আজম বি এন এস বি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন ডাঃ কাকলী চৌধুরী প্রতি শুক্রবার, চক্ষু এম সি এইচ এর সাবেক এম ও ডাঃ বিনু চরন রায় বিনয় শনিবার, রবিবার, মঙ্গলবার, পিজিটি চক্ষু ডাঃ রিয়াদ ইবনে মাহমুদ প্রতি সোমবার, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের পিজিটি চক্ষু ডাঃ আরিফ চৌধুরী প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোগী দেখছেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার দশমাইল এলাকার মহিজান বেগম জানান, চোখের ছানি নিয়ে আমি খুব সমস্যায় ছিলাম। বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছি রাবেয়া চক্ষু হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা দেয়। তাই এখানে এসে চিকিৎসা নিয়েছি। অপারেশন করার পর এখন অনেক ভালো আছি।
সদর উপজেলার জিয়াবাড়ি এলাকার আব্দুল আজিজ জানান, আমার চোখে পাথরের ঝাটা লাগছিল। তারপর থেকে চোখের সমস্যা হয়েছে। এখানে চিকিৎসা করানোর ফলএদ্রুত সময়ের মধ্যে ভালো হয়েছি।
হাসপাতালের প্রোগ্রাম অফিসার সাইফুল ইসলাম সুমন জানান, উন্নত সেবার অংগীকার নিয়ে এলাকার লোকজনের কথা চিন্তা করেই হাসপাতালটি তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিটি এলাকায় বিভিন্ন চিকিৎসক দিয়ে কম্পেইন করেছি। রোগীদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। জটিল রোগীদেরকে উন্নত মানের চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত পরিমানে বেডের ব্যবস্থা করা আছে। অভিঙ্গ চিকিৎসক ও নার্স রয়েছে তারা উন্নত মানের সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
রাবেয়া চক্ষু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউন নবী সরকার জানান, পঞ্চগড়ের চক্ষু রোগীরা আগে ঠাকুরগাঁও, ভুল্লী, দিনাজপুর, রংপুর গিয়ে চোখের চিকিৎসা করতো। এতে তাদের অনেক টাকা খরচ হতো এবং অনেক সময় নষ্ট হতো। তাদের কথা চিন্তা করে আমি পঞ্চগড়ে এই চক্ষু হাসপাতাল স্থাপন করেছি। অল্প খরচে অল্প টাকায় তারা উন্নত মানের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী সোনাইমুড়ী পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পৌরসভার নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতঘরেও ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি।
গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পৌর এলাকার নাওতলা,শিমুলিয়া, ভানুয়াই,কৌশল্যারবাগ,বিজয়নগর, কাঁঠালি, পাপুয়া,বাটরা ও সোনাইমুড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার দশটি ইউনিয়নের বিভিন্ন খালে অবৈধ স্থাপনা থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বুলয়া খালে স্থানীয় ভানুয়াই গ্রামের চিহ্নিত ভূমিদস্যু মনির মিয়া,শিমুলিয়া গ্রামের রফিক উল্লাহ সহ ভূমি দস্যু কয়েকটি সিন্ডিকেট সরকারি এই খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশনে ধীরগতি দেখা দেয়। অনেক বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগামী লোকজনকেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। স্কুলে যাওয়ার পথে একাধিক শিশু জলকাদায় পড়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দোকানপাটও।
সোনাইমুড়ী বিভিন্ন ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে সরজমিনে গেলে দেখা যায়, বজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে পানি, কাশিপুর তহশিল অফিসের সামনে পানি উঠেছে। এতে করে জমির মালিকরা এ অফিসে যেতে পারছে না। আমিশাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় পানি ঢুকে গেছে। জয়াগ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভিতরে পানি ডুবে যাওয়ায় অফিস করা সম্ভব হচ্ছে না।
সোনাইমুড়ী সহকারী কমিশনার ভূমি দ্বীন আল জান্নাত বলেন, দেশের অন্যান্য উপজেলা থেকে সোনাইমুড়ি উপজেলায় সরকারি খাল, নালা বেদখল হয়েছে। নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কিছু কিছু জায়গায় উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার দৈনিক বাংলাকে জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিপূর্বে খাল পরিষ্কার করা হয়েছে। উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মাগুরার আলোচিত নিহত শিশু আছিয়ার পরিবার কে কেন্দ্রীয় জামায়াতে আমির ডা: শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে দুটি গাভী বাছুর সহ একটি গোয়ালঘর উপহার দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার পরিবারে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন উপস্থিত হয়ে গরু প্রদান করেন। এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এমবি বাকের, সাবেক আমির কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিন সহ জামাতের স্থানীয় এবং জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ মাগুরা নিজনান্দুয়ালী বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশু আছিয়া তার বোনের শ্বশুর দ্বারা ধর্ষিত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশে ধর্ষকের ফাঁসি দাবি উঠে। গত ১৭ ই মে ধর্ষক হিটু শেখের ফাঁসির রায় ঘোষণা হয়।
দরিদ্র আছিয়ার পরিবারকে সান্তনা দিতে গত ৫ই মার্চ জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির ডা: শফিকুর রহমান আছিয়ার মাকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
রাজশাহীতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান মূলক সমীক্ষা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর জিরোপয়েন্টে একটি রেস্তোরায় এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে যে গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হয়েছে তাতে দাবি করা হয়, দেশের চারটি এলাকায় নিষিদ্ধ কীটনাশকের ভয়াবহ প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। সেখানে বলা হয়, শুধু রাজশাহীর ৮ জেলায় ১৯ টি গ্রামে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে দেখা গেছে দেশে নিষিদ্ধ বালাইনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতকরা ৯৩.৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারী জানেনা এটি নিষিদ্ধ বিপজ্জনক কীটনাশক। বারসিকের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, যেটি দেখার জন্য সরকারের কোন তদারকি নেই। গবেষণায় বলা হয়, এসব নিষিদ্ধ কিটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারন মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। আয়োজকরা বলেন,কীটনাশকের সহজলভ্য ও অনিয়ন্ত্রিত বিক্রয় শুধু জনস্বাস্থ্য নয় আত্মহত্যার একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দেখা যায় ৩২ জনের মধ্যে তিনজনায় আত্মহত্যা করার জন্য কীটনাশক পান করেছিল। গবেষণা এলাকা রাজশাহী জেলার আটটি উপজেলা থানার সকল ১৯ টি গ্রামে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে গবাদি পশু পাখি যেমন হাঁস মুরগি কবুতর গরু ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার শুধু মানব সাস্থ্য নয় বরং পরিবেশের প্রতি মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে ফুরাডন, প্যারাকয়েট ও ক্লোরোপাইরিফ জাতীয় কীটনাশক মাটি-পানি ও প্রাণী বিচিত্র ধ্বংসের বড় ভূমিকা রাখছে। কীটনাশক প্রয়োগের পরপর পুকুরের মাছ ব্যাঙ ও মৌমাছি বা মৌ পতঙ্গ জাতীয় কমেছে এবং কিছু বিলুপ্ত হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘের ও খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) বিপদজনক কীটনাশক যেমন প্যারাকোয়েট,ফুরাডন, মনোকটোপাস এসব কীটনাশক ত্বক, চোখ ও শ্বাসনালী মাধ্যমে দিয়ে দেহে প্রবেশ করে ক্যান্সার মাথাব্যথা বমি, বুক ধরফরানি কিডনি বিকলতা, এবং অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই উক্ত মালের মাধ্যমে নিষিদ্ধ কীটনাশক বিপণন ও ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করার আহবান জানানো হয়েছে। নিষিদ্ধ কিটনাশকও ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। কিটনাশক আইন ও বিধির প্রয়োগ করতে হবে। কিটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করতে হবে। কিটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরণ তহবিল গঠন করতে হবে। শিঘ্রই এ সকল বিষয় নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান আয়োজকরা।
পটুয়াখালীর লোহালিয়া নদীর বগা ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ফেরির ইজারা বাতিল করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। গত ২৪ জুলাই ফেরিঘাটের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সওজকে বুঝিয়ে দিয়ে ইজারাদার দায়িত্ব ছাড়েন। প্রতিদিন সহস্রাধিক যানবাহন এ ফেরি দিয়ে পারাপার হয়।
সওজ সূত্র জানায়, বাস ও মিনিবাসের জন্য নির্ধারিত ভাড়া ছিল যথাক্রমে ৪৫ ও ২৫ টাকা, যা থেকে নেওয়া হতো ৩০০ ও ২০০ টাকা। ভারী ট্রাকের ১০০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের ১৫ ও ২৫ টাকার জায়গায় ১০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো। মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যানবাহন থেকেও দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠে।
জানা যায়,এনসিপি যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন প্রথমে পটুয়াখালী সড়ক বিভাগে মৌখিক অভিযোগ এবং পরে সওজর উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের পর পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইজারাদারকে তিন দফা নোটিশ ও কারণ দর্শানোর চিঠি দেন। কোনো জবাব না পাওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তর থেকেও আলাদা তদন্ত হয়। দুই দফাতেই অভিযোগের সত্যতা মেলে।
পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল আক্তার লিমন বলেন, ইজারাদারকে সংশোধনের জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তদন্তে প্রমাণ মেলায় চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তরের নির্দেশে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ইজারাদার শিবু লাল দাস বলেন,আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আগের ইজারাদারের মতোই ভাড়া নিয়েছি। সরকার ভুল ভাড়া নির্ধারণ করেছে। আদালতে আছি, আশা করি ফের দায়িত্ব ফিরে পাব।