বিএনপির ভাইস চেয়াম্যান এবং সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেছেন,' জুলাই বিপ্লবের শহিদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে বাংলাদেশে কেউ রাজনীতি করতে পারবেনা। জুলাই বিপ্লব শুধু ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন ঘটায়নি, বাংলাদেশকে গনতন্ত্রের পথ দেখিয়েছে। বিএনপির এ বর্ষীয়ান নেতা আজ মঙ্গলবার গোপালপুর উপজেলার বিআরডিবি মাঠে 'ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ, ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থান বিজয়ের বর্ষ পূর্তি পালন' উপলক্ষে গনজমায়েতে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাবেক মেয়র অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম রুবেল। বক্তব্য রাখেন উপেজলা বিএনপির সম্পাদক কাজী লিয়াকত, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবু ঈশা মুনিম, সাবেক সহসভাপতি এবং ব্যবসায়ী খোরশেদুজ্জামান মন্টু, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এহসানুল হক ওপেল, শহর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উথান, সম্পাদক চানঁ মিয়া, যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম তালুকদার লেলিন, শহর যুবদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন প্রিন্স, কৃষক দলের সভাপতি অধ্যাপক হাতেম আলী, শ্রমিক দলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, মহিলা দলের সভানেত্রী নাজমা পারভীন, ছাত্র দলের সভাপতি রোমান আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ আমিনুল ইসলাম।
আব্দুস সালাম পিন্টু আরো বলেন,' চাঁদাবাজ, মাদকবাজ এবং সন্ত্রাসীদের দলে ঠাঁই হবেনা। বিএনপিকে পরিশুদ্ধ রাজনৈতিক দলে পরিনত করা হবে। বিগত ১৬ বছরে গোপালপুর- ভূঞাপুরে কোন উন্নমূলক কাজ হয়নি। সামনের নিঅবাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোপালপুর-ভূঞাপুরসহ সারা দেশে সুষম উন্নয়ন করা হবে।
জুলাই আহতের সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। তিনি বিএনপির নেতাকর্মীর দলীয় শৃঙ্খলা এবং শহিদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
একদিকে সিঙাড়া নিয়ে গ্রামের যাওয়ার প্রস্তুতি, অন্যদিকে ছোট্ট দুই শিশুকে স্কুলে পাঠানোর চিন্তা। আবার ছোট বোনের কিনতে হবে ওষুধ। হাতে নিয়ে ঘুরছে ভাতিজার প্রেসক্রিপশন। টাকা না থাকায় কিনতে পারেনি ওষুধ। সব দায়িত্ব যেন তার কাঁধে। জীবনের ভারের চেয়ে দায়িত্বের ভারই এখন তার বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অসহায়ের এই এই করুন গল্পটা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল হিন্দু পাড়া গ্রামের পলাশ চন্দ্র প্রামানিক ও দুই ছোট্ট শিশু ১১ বছরের প্রীতম এবং ৭ বছরের প্রিয়সী'র।
জন্মের পর থেকেই তাদের জীবনের পথে শুধু হারের গল্প। ছোট্ট দুই শিশুর মা পূর্ণিমা চিকিৎসার অভাবে গত ১১ এপ্রিল নিজ বাড়িতে মারা গেছে। বাবা থেকেও নেই। মাকে হারিয়ে পৃথিবীটা যেন একেবারে অন্ধকার হয়ে গেছে তাদের জন্য।
অপরদিকে পলাশের জীবনের গল্প আরও করুন। তার ভাগ্যেও কখনও জোটেনি ভালো কিছু খাবার, হয়নি সামর্থ্য নতুন পোশাক কেনার। পলাশের যে ঘরে রাত কাটে হয়তো সেই ঘর থেকে কারো কারো গবাদি পশুর থাকার ঘরও এর চেয়ে ভালো হয়ে থাকে। তবুও রাত কাটছে তার। একই ঘরের মধ্যে খাওয়া, আছে জঙ্গল।
প্রীতম ও প্রিয়সী কম বুদ্ধিসম্পন্ন ডাবলু প্রামাণিকের সন্তান। আর পলাশ প্রামাণিক শিশু দুটির কাকা (চাচা)।
এদিকে প্রীতম গত দুই দিন থেকে জ্বরে ভুগছে। আধা পাগল বাবা ছেলের চিকিৎসার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছ থেকে করে নিয়েছে প্রেসক্রিপশন। কিন্তু ওষুধ কিনতে না পেরে প্রেসক্রিপশন ধরে দিয়েছে ছোট ভাই পলাশের হাতে। পলাশ হয়তো আজ কিনবে ভাতিজার ওষুধ।
মৃত্যুর একদিন আগেও প্রীতম ও প্রিয়সীর মা'র ইচ্ছে ছিল তার দুই সন্তানকে পড়াশোনা করানোর, তার স্বপ্ন যেন থমকে যেতে বসেছে। এখনই হাত পেতে কিনতে হচ্ছে ছেলের ৭ম শ্রেণির গাইড বই। তবে মৃত বৌদির (ভাবির) স্বপ্ন পূরণের আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেবর পলাশ চন্দ্র প্রামাণিক।
তাইতো সংসারের চিন্তায় কাকা পলাশ সাইকেলে ছুটলেন সিঙাড়া নিয়ে। তা বিক্রি করে যা আয় হবে সেটা দিয়েই চলবে সংসারের খরচ।
বুদ্ধির পর থেকেই সুখ নামক শব্দটি তার কপালে জোটেনি। পড়াশোনার পাশাপাশিই কাঁধ তুলে নিতে হয়েছে ব্যবসার ভাড়।
এদিকে মা হারা হয়েও থামেনি ছোট্ট দুই শিশুর স্বপ্ন। সকালে পুরোনো ব্যাগ কাঁধে তুলে নিয়ে তারা স্কুলে যায়। অন্যদের মতো নতুন পোশাক, দামি খাতা কলম নেই। অনেক সময় না খেয়েই ক্লাস করতে হয়। তবুও স্কুলে গিয়ে পড়তে চায়, বন্ধুদের মতো স্বপ্ন দেখতে চায় প্রিতম-প্রেয়সী। তাদের একমাত্র ভরসা কাকা পলাশ, যিনি গ্রাজুয়েশন শেষ করেও চাকরির পিছনে না ছুটে গ্রামে গ্রামে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালান। নিজের সংসারে চাল-চুল না থাকা সত্ত্বেও ছোট্ট দু’ভাই বোনকে আগলে রেখেছেন মায়ের মতো করে। তাই তাদের চোখে আশা—একদিন মানুষ হবো, পরিবার আর সমাজের মুখ উজ্জ্বল করবো।
কিন্তু এই লড়াইয়ে কাকা পলাশ একা। অভাবের ঘূর্ণিপাকে হয়তো যেকোনো সময় থেমে যেতে পারে প্রীতম আর প্রিয়সীর স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন। সমাজের এগিয়ে আসা ছাড়া হয়তো স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যাবে, ঝরে যাবে নিমিষেই।
হতাশা নিয়ে কাকা পলাশ কণ্ঠ কাঁপিয়ে বলেন, "নিজের সংসারও চলে না ঠিকমতো। তবু ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলি, স্কুলে যেও, মানুষ হইও। ওদের পড়াশোনা থেমে গেলে আমার মন ভেঙে যাবে। কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত ওদের পাশে থাকবো।" আজ দুই দিন থেকে ভাতিজা জ্বরে ভুগছে, বোনও দুই মাস থেকে অসুস্থ। তাই মনটা খারাপ।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় যেকোনো একটা চাকরির সুযোগ পেলে আমার জন্য খুব ভালো হতো। জীবনে নিজের জন্য কখনও পোশাক কিনতে পারিনি। দাদার মাধ্যমে একবার দুই বান্ডিল দিন ও কিছু টাকা পেয়ছিলাম, সেই টিন দিয়ে ঘর ঠিক করেছি। তারপরও স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা, বেঁচে আছি।
ডাবলু প্রামাণিক বলেন, আমি তেমন কাজ কাম করতে পারিনা। একসময় পেডেল আলা ভ্যান চালাতাম, খুব কষ্ট হতো। এখন মাঝে মাঝে গুড় ও মুড়ি নিয়ে গ্রামে গ্রামে যাই। ব্যাট্যা আমার জ্বরে পড়ে আছে। খুব খারাপ লাগছে। ওষুধই কিনতে পারছি না। পড়াশোনা করামু কেমন করে?
ভাই-বোন প্রীতম ও প্রিয়সীর আজ একটাই আকুতি—"আমরা পড়তে চাই… মানুষ হতে চাই। আমাদের স্বপ্ন যেন না মরে যায়।"
প্রীতম প্রামাণিক বলেন, আমরা দুই ভাই বোন পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু কিভাবে করব জানিনা, আমার একটা গাইড কিনতে হয়েছে সাহায্য নিয়ে। আমার মা বেঁচে থাকলে তেমন চিন্তা হতো না।
একই ওয়ার্ডের মেম্বার হাফিজুর রহমান বলেন, ডাবলু প্রামাণিকের স্ত্রী মারা যাওয়ায় তার দুটো সন্তান অসহায় হয়ে পড়েছে। তার স্ত্রী মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতো। আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের একটা লাট্রিন (পায়খানা) দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। আর তার দুই ছোট্ট সন্তানের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ। পাশাপাশি পলাশ খুব ভালো ছেলে। সে পড়াশোনা অবস্থায় একসময় গ্রামে গ্রামে পায়ে হেঁটে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করতো। এখনও কষ্ট করছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, আমি তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিবো। এরপর তাদের জন্য যেভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমি চেষ্টা করবো।
পূর্ণিমার মৃত্যুতে পার্শ্ববর্তীদের হৃদয় কেড়েছে ছোট্ট এই দুই ভাই-বোন। প্রতিবেশীরা জানান, এখন ছোট্ট দুই শিশুর কি হবে? কেমনে চলবে তাদের পড়াশোনা। পূর্ণিমা অন্যের বাড়িতে কাজ করেই সংসার ও দুই সন্তানের পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন।
তাদের এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় বটবৃক্ষ নামক বাবা-মা কাউকে যেন অল্প বয়সে হারাতে না হয়। তাহলে এরকম হাজার হাজার প্রীতম-প্রিয়সীর জীবন অকালে ঝরে যাবে, থেমে যাবে স্বপ্ন। তারপরও তাদের জীবন সুন্দর হোক এই প্রত্যাশা প্রতিবেশীদের।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পিকনিকের লঞ্চে দুবৃর্ত্তদের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী। এসময় প্রায় ৩০ মিনিট মহাসড়কে সকল যান চলাচল বন্ধ ছিলো। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা।
আজ বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাড়কের ভৈরব দুর্জয় মোড়ে ঘন্টাব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, গত ২রা আগস্ট ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকাবাসী ভৈরব বাজার লঞ্চঘাট থেকে একটি লঞ্চযোগে ২শত জন লোক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর এলাকায় পিকনিকের জন্য রওনা দেন। পথিমধ্যে নরসিংদী জেলার রায়পুরার মেঘনা নদী এলাকায় পৌঁচ্ছালে একদল দুবৃর্ত্তকারীর দল স্পিডবোর্ড যোগে এসে পিকনিকের লঞ্চে অস্ত্র নিয়ে হামলায় চালায়। এসময় এলোপাতারিভাবে লঞ্চে থাকা লোকজনের উপর গুলি ছুঁড়েন। পরবর্তীতে হামলাকারীরা লঞ্চে উঠে যাত্রীদের মারধোর করে তাদের কাছ থেকে মুঠোফোন, নগদ টাকাসহ সাউন্ড সিস্টেমের সরঞ্জাম, দুটি সাউন্ডবক্স লুট করে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে কমলপুর এলাকার ব্যবসায়ী শাহারিয়ার জিসান বলেন, আমাদের এলাকাবাসী গত ২রা আগস্ট নবীনগরে পিকনিকে যাবার সময়ে রায়পুরা এলাকায় বালু মহলের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে একদল দুবৃর্ত্তকারীরা হঠাৎ স্পিডবোর্ড যোগে অস্ত্রসহ।হামলা চালায়। এসময় তারা এলোপাতারিভাবে গুলি ছুড়ে লঞ্চে উঠে মারধোর করে মোবাইল ফোনসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার ৭২ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত।ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই রায়পুরা প্রশাসন ও ওসির নিকট দাবি জানান দ্রুত সময়ের মধ্য বালু মহলের সাথে জড়িত ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে গাজীপুরের কালীগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল ১১টায় কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে প্রধান সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমরা এখনো বৈষম্যের শিকার। দেশে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা হলেও কেন আজো কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার বাইরে রাখা হচ্ছে, তা সরকারের কাছে জানতে চাই।”
তারা আরও বলেন, “কোমলমতি এসব শিশুদের মেধা যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা কেন এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না, এটি আমাদের কাছে একটি বড় প্রশ্ন। শিক্ষার সকল স্তরে সমতা ও ন্যায় নিশ্চিত করতেই আমাদের এই আন্দোলন।”
বক্তারা অবিলম্বে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
জাপানের হিরোশিমায় বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৯৪৫ সালের এই দিনে আমেরিকার 'লিটল বয়' নামের পারমাণবিক বোমাটি শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল।
এ দিনটি উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় এ বছর ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধিসহ অন্তত ৫৫ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। ১৯৪৫ সালের মার্কিন বি-২৯ বোমারু বিমান থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ‘লিটল বয়’ নামক বোমাটি ফেলা হয়েছিল। সেকারণে এই দিনের ওই সময়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং শান্তির ঘণ্টা বাজানো হয়।
হিরোশিমার মেয়র তার বক্তব্যে বলেন, "আমরা বিশ্বকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে পারমাণবিক অস্ত্র মানবতার অস্তিত্বের জন্য হুমকি।" এই হামলায় প্রাথমিকভাবে ৭০ হাজার মানুষ নিহত হন এবং পরবর্তীকালে বিকিরণের প্রভাবে আরও ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ
এবারের অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো তাইওয়ান ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া এবং চীন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত রাহম ইমানুয়েল।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, "পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গঠনে জাপান নেতৃত্ব দেবে।" তিনি হিরোশিমা-নাগাসাকির ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বিশ্ববাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন।
এই অনুষ্ঠানে হিরোশিমায় মৃত ব্যক্তিদের স্মরণে শান্তি ঘণ্টা বাজানো হয় এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে সাদা কবুতর উড়িয়ে দেওয়া হয়। শহরজুড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে, যা আগামী এক সপ্তাহ ধরে চলবে।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে রিভিউয়ের রায় আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ঘোষণা করা হবে।
আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ শুনানি শেষে গত ৩০ জুলাই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ রায়ের জন্য ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন। তবে আজ (মঙ্গলবার) সর্বোচ্চ আদালত রায়ের জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন দোলন। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির ও অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার এম. আবদুল কাইয়ূম। এছাড়া ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘রুলস অব বিজনেস’ অনুযায়ী ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে এটি সংশোধন করা হয়। তবে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ ও সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচে রাখা হয়েছে-এ অভিযোগ এনে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের (সংশোধিত) ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সেই রায়ে হাইকোর্টের দেওয়া আট দফা নির্দেশনার কিছুটা সংশোধন করে তিন দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেগুলো হল: যেহেতু সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন, তাই বিরোধপূর্ণ প্রিসিডেন্সে সাংবিধানিক পদধারীরা অগ্রাধিকার পাবেন; জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে জেলা জজ ও সমপদমর্যাদাসম্পন্নরা সরকারের সচিবদের সঙ্গে ১৬ নম্বরে অবস্থান করবেন এবং জেলা জজদের পরেই অতিরিক্ত সচিবরা ১৭ নম্বর ক্রমিকে থাকবেন।
একপর্যায়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। পরবর্তীতে রিভিউ আবেদনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলরাও পক্ষভুক্ত হন।
মোবাইল ফোনে টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় হয় দুই তরুণ-তরুণীর। এর পর সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। তিন মাস পর মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ঠাকুরগাঁও থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় আসেন তরুণ। সেখানে তরুণীর বাড়িতে তিনি বিষপানের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার দুপুরে। সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এদিন রাতে মারা যান ২৪ বছর বয়সী তরুণ গোলাম ফেরদৌস দুর্লভ। তাঁর বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাইরিহাট পাতিলভাসা গ্রামে। তিনি স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে দুর্লভের লাশ বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। এর আগে তাঁর পরিবারের সদস্যরা পুলিশের সহায়তা নিয়ে চৌবাড়ি গিয়ে তরুণী, তাঁর মা এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয় কলেজে অনার্স পড়ুয়া মেয়েটি মা-বাবাসহ ঘটনার পর পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরুণের স্বজনের মুখোমুখি হন। মেয়েটি পুলিশের সামনে বলেন, বাবা-মা তাঁর বিয়ে ঠিক করেছেন।
তাঁর অন্যত্র বিয়ে হচ্ছে জেনেও দুর্লভ বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি। আর নিহত তরুণের খালু সজীব হোসেন ও ভাই ওয়াজেদুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, পরিবারের সবাই শোকাহত। থানায় অভিযোগের বিষয়ে তারা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
ঘটনার পর অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে জানিয়ে সদর থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান জানান, সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তিনিসহ কামারখন্দ থানার ওসি আব্দুর রউফ তরুণের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীর বিরুদ্ধে তরুণের স্বজনরা চাইলে থানায় অভিযোগ দিতে পারেন।
নোয়াখালীতে বেগমগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের আটজন হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাতজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন একজন।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের জগদিশপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের সবাই নারী ও শিশু। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম ও পরিচয় জানানো হয়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লক্ষ্মীপুরের হাজিরপাড়া ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামের ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিন স্বজনদের নিয়ে ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ভোরে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে খালে পড়ে যায়। এ সময় বাহারের স্ত্রী কবিতা ও মেয়ে মিমসহ ৭ জন নিহত হন।
এদিকে, এক বার্তায় ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা মো. তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৬টা ৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
হতাহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ও চৌমুহনী ফায়ার স্টেশনের ১টি ইউনিট উদ্ধার কাজ করেছে।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, জুলাই বিপ্লবীরা রাষ্ট্রীয় নৈরাজ্যকে মোকাবেলা করেছে এবং পরাজিত করেছে। এভাবে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে তারা। বিশ্বের ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন বিপ্লব বলে আমি মনে করি। এই বিপ্লবটি বাংলাদেশের জনগনের ওপরে যে ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল শুধু তাদের বিরুদ্ধে নয় বরং স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব লুন্ঠনকারী ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধেও ছিল।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর দেড় টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লব বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি'র বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই ‘বিপ্লব নাকি অভ্যুত্থান’ এই প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদুর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসক পরিবর্তনের আন্দোলন ছিল না। বরং শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের আন্দোলন ছিল। তাই শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের আন্দোলনকে বিপ্লব বলে অবিহিত করি। বিপ্লব মাত্র ৩৬ দিনে শেষ হয় না বরং একটা পর্যায় অবস্থান করে। রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থা সংশ্লিষ্টসহ অভ্যন্তরীন ও বর্হিবিশ্বের হুমকি থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বিপ্লব চলমান থাকবে।
সভায় জুলাই বিপ্লবের বিপদের আশংকা করে মাহমুদুর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবের জন্য দেশের দুইটি থ্রেট বা বিপদের কথা বলবো যা দুই দিক থেকে আসবে। প্রথমত, অভ্যন্তরীণ বিপদ বলতে আমাদের দেশের সকল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্যে দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের দালাল ও ভারতের আধিপত্য দালালদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। অনুপ্রবেশকারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে চাইবে। এ ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। গতকাল সামরিক বাহিনীর মধ্যে ভারতীয় দালাল 'র' এর এজেন্টদের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল আমরা তাদের নিয়ে পত্রিকায় ক্রমাগতভাবে খবর প্রকাশ করেছি। এমন একটা সময় ছিল সামরিক বাহিনী নিয়ে খবর প্রকাশ করতে দ্বিধাবোধ করত। এই দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার যুগটা পার করে এসেছি। এই ‘র’ কিংবা ভারতের দালালদের মুখোশ উন্মোচন না করলে বিপ্লব দীর্ঘজীবী হবে না।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আরেকটা বিপদ হচ্ছে এক্সটার্নাল থ্রেট— যা আমার দেশের রাষ্ট্রীয় সীমানা নিয়ে। যেহেতু আমাদের দেশের চারপাশে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে হিন্দু বা বৌদ্ধিস্ট রাষ্ট্র। সুতরাং মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে সজাগ থাকতে হবে।
আসন্ন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, অন্যদিকে ভারত আমাদের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী কারণ তাদের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যদি রক্ষা করতে হয় তাহলে তরুণদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বর্হিবিশ্বের হুমকি মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষিত তরুণরাই যথেষ্ট।
সর্বশেষ তিনি জুলাই বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তরুণদের প্রশংসা করে বলেন, জুলাই বিপ্লবীদের সাথে ভালো আচরণ করুন। তাদের সম্মান করতে শিখুন। ভারতীয় এজেন্ডার বিরুদ্ধে ও ইসলামের প্রশ্নে বাংলাদেশের তরুণদের দৃঢ়তা আমাকে মুগ্ধ করে।
উল্লেখ্য, বর্ষপূর্তি উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা। ৩৬ জুলাইয়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আনন্দ র্যালি-সহ জুলাই স্মৃতিকথা মোড়ক উন্মোচন ও জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা উদ্বোধন করা হয়।
জুলাই গণ-অভ্যূত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আহত জুলাই যোদ্ধাদের সম্মাননা, জুলাই শহীদ পরিবারের সম্মিলন ও স্মৃতিচারণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগষ্ট) সকাল সাড়ে নয়টায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসন রাজা মিলনায়তনে এসে অনুষ্ঠানে মিলিত হয়।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্ব আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহাম্মেদ, সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন। স্মৃতিচারণ তুলে ধরেন আহত জুলাই যোদ্ধা জহুর আলী, ফয়সল আহমেদ এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এসময় ছাত্র সংসদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক ওসমান গনি, জুলাই যোদ্ধা আব্দুল বারী, তাসনিয়া হক তাজিন, ইকরাম আলী সায়েম, মাহফুজুর রহমান মেহিত বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারি যোদ্ধাদের সমাগম অনুষ্ঠান, প্রধান উপদেষ্টার আহতদের প্রতি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন, জুলাই যোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, শহীদ পরিবারের সম্মিলন ও স্মৃতিচারণ করা হয়।
পরে ফ্যাসিস্ট পলায়নের ক্ষণ উদযাপন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে গড়ে উঠেছে এক শক্তিশালী অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট, যার জেরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনদের। অভিযোগ উঠেছে, এই সিন্ডিকেট অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করছে এবং রোগী পরিবহনে বাধা দিচ্ছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকার কারণে এই সিন্ডিকেট আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত ৩১শে জুলাই, নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল থেকে রেফার করা ৬৫ বছর বয়সী রোগী অনিল চন্দ্রকে ভাড়া করা একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। যে অ্যাম্বুলেন্সটি তাকে ময়মনসিংহ নিয়ে গিয়েছিল, সেই একই অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু ময়মনসিংহ হাসপাতালের সামনে থাকা অ্যাম্বুলেন্স চালকরা তাতে বাধা দেয়। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মৃতদেহ নিয়ে ফিরতে হলে তাদের ময়মনসিংহ সিন্ডিকেটকে ১৫০০ টাকা ‘সেলামি’ দিতে হবে অথবা তাদের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহ নিয়ে যেতে হবে। এটি তাদের নীরব চাঁদাবাজির একটি কৌশল। তারা জানায়, মৃতদেহ পরিবহনে বাধা দেওয়ার এমন অমানবিক ও বেআইনি নিয়ম তাদের কায়দা করে টাকা আদায়ের লিপ্সা মাত্র। একইভাবে, নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের সামনেও একই ধরনের নিয়ম চালু আছে বলে জানা যায়। বাইরের কোনো অ্যাম্বুলেন্স যদি রোগী নিয়ে নেত্রকোনা আসে, তবে তাদেরও ১৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়। অন্যথায় তারা হাসপাতাল থেকে কোনো রোগী নিতে পারে না। এই ধরনের নীরব চাঁদাবাজির কারণে গরিব ও সাধারণ রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের দাবি, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সংকট এবং সেগুলোর অব্যবস্থার কারণেই এই অসাধু চক্র এমন সুযোগ পাচ্ছে। তারা এই অবৈধ প্রতারক ও অমানুষ অ্যাম্বুলেন্স চালকদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, জরুরি স্বাস্থ্যসেবার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এমন অনৈতিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট–সাজেক সড়কের মাচালং বাজার অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে সাজেক-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সাজেক পর্যটন কেন্দ্র ও মাচালং বাজার এলাকায় ২ শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েছেন।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাঘাইহাট জোনের সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সড়কে পানি ওঠায় সাজেকের সঙ্গে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিকল্প উপায়ে বাঁশের ভেলা ও নৌকার মাধ্যমে পর্যটকদের পারাপার করা হচ্ছে।
এদিকে সাজেক-খাগড়াছড়ি সড়কে চলাচলকারী মাহিন্দ্রচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “ভারী বৃষ্টির কারণে মাচালং এলাকায় সড়কে পানি উঠে গেছে। এই কারণে পুরো সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সাজেকে অন্তত দুই শতাধিক পর্যটক আটকে পড়েছেন। বিকেলে যেসব পর্যটক খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন, তাদের বাঘাইহাট থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।”
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, “সড়কের উপর এখন আনুমানিক ৫ থেকে ৬ ফুট পানি। এই অবস্থায় কোনোভাবেই যান চলাচল সম্ভব নয়।”
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আকতার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অনেক পর্যটক বাঁশের ভেলা ও নৌকার মাধ্যমে ডুবে যাওয়া অংশ পার হচ্ছেন। যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন, তারা আবার সাজেকে ফিরে গেছেন। সড়ক থেকে পানি নামলেই যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আবহাওয়া ও পানির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ জুলাই র্যালি, বৃক্ষরোপন, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ডিএসসিসির মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া উপর্যুক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে জুুলাই র্যালিটি নগর ভবন থেকে আরম্ভ করে বঙ্গবাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে নগর ভবনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে ৩টি কাঠবাদাম গাছের চারা রোপণ করা হয়। আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মাননীয় প্রশাসক বলেন, "৩৬শে জুলাই বিশ্বের অন্য কোনো ক্যালেন্ডারে নেই, কেবল আমাদের আছে; এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে।" তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে নাগরিক সেবা প্রদানের জন্য ডিএসসিসিতে কর্মরত সকলকে আহ্বান জানান।
এ সময় প্রশাসক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদের স্মরণে ডিএসসিসি কর্তৃক প্রকাশিত "অগ্নিঝরা জুলাই, অতঃপর... নাগরিক প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ১ বছর" শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।