ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জ এলাকার সাইনবোর্ড- পাসপোর্ট অফিস-মৌচাক বাসস্ট্যান্ড ও বউ বাজার ব্রীজ-গোদনাইল-এনায়েতনগর-সিদ্ধিরগঞ্জ- নারায়ণগঞ্জ অংশে বিদ্যমান গ্যাস পাইপলাইন স্থানান্তর কাজের জন্য আগামী ০৭ আগস্ট, ২০২৫ তারিখ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ০২.০০ ঘটিকা হতে সন্ধা ০৬:০০ ঘটিকা পর্যন্ত মোট ০৪ (চার) ঘণ্টা সিদ্ধিরগঞ্জ, চিটাগাং রোড, মিজমিজি, চৌধুরী বাড়ী, বাতেন পাড়া, মৌচাক, পাসপোর্ট অফিস, লাকি বাজার, বউ বাজার, হাজিগঞ্জ থেকে ওয়াবদারপুল ও চেয়ারম্যান বাড়ী এলাকায় বিদ্যমান সকল শ্রেণীর গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এছাড়া, এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে।
সম্মানিত গ্রাহকবৃন্দের সাময়িক অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম'র বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সনাতনী ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ফেসবুক পোস্টের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা। তবে বিষয়টি ‘তুলনামূলক বিশ্লেষণধর্মী লেখা’ বলে দাবি করেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থী।
বুধবার (০৬ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে মানববন্ধন শেষে তারা প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত ধর্ম অবমাননার শিকার হই। আমাদেরও অনুভূতি আছে। আমরা এ ঘটনার যোগ্য বিচার চাইতে আজকে এখানে হাজির হয়েছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেয়া হোক এবং যে এই কাজ করেছে আমরা তার বহিষ্কার চাই। যেন দ্বিতীয়বার কেউ এমনটি করতে সাহস না করে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম সনাতনী ধর্মালম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ও আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে যেটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমগ্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং শান্তিপূর্ণ সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সহনশীল পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ধর্মীয় সহাবস্থান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি। এই ধরনের অশোভন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।’
পত্রে আরও লিখেন, ‘অতএব উক্ত ঘটনার দায়ী ব্যক্তি। ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মুহাইমিন বলেন, ‘ এটা ছিল তুলনামূলক বিশ্লেষণধর্মী লেখা। সেখানে রেফারেন্স দিয়ে লেখায় ইনটেনশনালি কোনো ধর্মের অবমাননা করা হয়নি। পোস্ট দেওয়ার পর কারো দৃষ্টিকটু মনে হলে আমাকে বলতে পারত। আক্রমণাত্মক কমেন্ট দেখে অনিরাপত্তায় ভুগছি। পরে ডিলিট দিয়েছি। এর পরেও কেউ কষ্ট পেলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমরা অভিযোগ পত্র হাতে পেয়েছি। উভয়ের পত্র নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি সার্বিক বিষয় দেখে সিদ্ধান্ত নিবে।
ভোলার চরফ্যাসনে জমি বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিতে দুলাল চন্দ্র শীল ও তপন চন্দ্র শীল নামের আপন দুই ভাইকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ আগুনে পুড়িয়ে গুম করার ঘটনায় অভিযুক্ত তিন আসামীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া এই ঘটনায় আরও দুই আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৬ জুলাই) দুপুরে ভোলার চরফ্যাসনের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের সহকারী জজ মো. শওকত হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আসলামপুর ইউনিয়নের মো. বেল্লাল (৩৭), দক্ষিণ আইচা থানার দক্ষিণ চর মানিকার ইউনিয়নের মো. সালাউদ্দিন (৩০) ও একই ইউনিয়নের শরিফুল ইসলাম।
এদের মধ্যে, শরীফুল ইসলাম পুলিশি হেফাজতে আটক আছেন। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ফাঁসির আসামি পলাতক রয়েছেন।
এছাড়াও আবুল কাসেমকে ৫ মাসের ও মো. আবু মাঝিকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত দুই ভাই তপন চন্দ্র শীল ও দুলাল চন্দ্র শীল চরফ্যাশন পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে তাদের পৈতৃক ৫৬ শতাংশ জমি বিক্রি করে ভারত চলে যান। ওই জমি ২০ লাখ টাকায় কিনে নেন আছলামপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মো. বেলাল ও তার শ্বশুর আবু মাঝি। তবে তারা মাত্র তিন লাখ টাকা বায়না দিয়ে দলিল করে নেন। বাকি টাকা নেওয়ার জন্য তপন ও দুলাল ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন। তখন দুই ভাইকে ঘোরাতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন বেলাল।
পরে, ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল রাতে টাকা দেওয়ার কথা বলে চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দরী খাল ব্রিজের কাছে নির্জন বাগানে ডেকে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরে, এ ঘটনায় নিহতদের ছোট ভাই নিপেন চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ে চরফ্যাসন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এবং শরিফুলকে গ্রেপ্তারের পর খুনের রহস্য উদঘাটন হয়।
চরফ্যাসনের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হযরত আলী হিরণ জানান, ভুক্তভোগীর পরিবার ন্যায় বিচার পেয়েছে। তবে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে একজন জেলহাজতে। অপর দু’জন পলাতক।
নুসরাত জাহান রোজা নামের এক শিশুকে হত্যার দায়ে জোবাইদা বেগম(২১) নামের সৎ মাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ, ১০হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম দন্ডাদেশ দিয়েছেন নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার। গতকাল বুধবার দুপুরে এই আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি জোবাইদা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। জোবাইদা বেদম নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী। জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি মো.আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গিলাতলা গ্রামের আবুল খায়ের কাজীর ছেলে সজীব কাজীর সঙ্গে ২০২০ সালে প্রথম স্ত্রী রূপা খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ওই ঘরে ইয়াসিন(৫)ও রোজা নামে দুইটি সন্তান রয়েছে । বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তান দুটি দাদার কাছে থাকে।
পরবর্থীতে সন্তানদের কথা ভেবে সজীব কাজী দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে জোবাইদা বেগমকে বিবাহ করেন। ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে তার ভাই ইয়াসিন বোন রোজাকে মারধর করয় সে কান্না শুরু করে। তখর জোবাইদা বেগম রোজাকেবাড়ীর একটি কক্ষে নিয়ে রাজার কান্না থামানের চেণ্টা করেন। কান্না না থামনোর কারণে সৎ মা জোবাইদা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে রোজার নাক-মুখ চেপে ধরেন। এক পর্যায়ে রোজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শিশুটিকে একটি কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে ঘরের বারান্দার কক্ষের খাটে যেখানে তার শ্বশুর রাতে ঘুমাতেন সেখানে রেখে আসে। দাদা বাড়ী ফিরে নুসরাত ওরফে রোজাকে গোসল করানোর জন্য ডাকাডাকি করেন। তাকে কোথাও খুজে না পেয়ে খায়ের কাজী স্ত্রী পান্না বেগমকে বিষয়টি জানায়। পান্না বেগম পূত্রবধূ জোবাইদার কাছে জানতে চান। জোবাইদা তখন শ্বশুড়িকে বলেন, রোজা বারান্দায় ঘুমাচ্ছে। সেখানে গিয়ে রোজাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশে ঞবর দেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে লোহাগড়া থানায় নিয়ে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। একই দিনে সজীব কাজী ও তার স্ত্রী জোবাইদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে থানায় নিয়ে যান। মৃত্যু ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় সজীব কাজীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরের দিন শিশুর দাদা মো.খায়ের বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় জোবাইদা বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
ঢাকার উপকন্ঠের রূপগঞ্জের তিন লাখ বাসিন্দা উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। আকাশে মেঘ জমলেই কাঞ্চন পৌর এলাকাসহ তারব পৌর এলাকার নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্পের ভেতরে বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এলাকার কোথাও জমেছে হাঁটু সমান পানি। আবার কোথাও কোমর সমান পানি। তারাবো পৌরসভার আভ্যন্তরিণ পানি নিষ্কাশনের খাল সংস্কার করলেই জলাবদ্ধতা নিরসন হবে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন
টানা বর্ষণে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৩০টি এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি। জলাবদ্ধতা এখানে স্থায়ী রূপ নিতে যাচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে সেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখল হয়ে ভরাট হওয়ার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রচ- দুর্ভোগে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তারাবো, বরপা, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল, মধ্যপাড়া, দক্ষিণপাড়া, নাগেরবাগ, বৌবাজার, বাক্সোর্চা, খালপাড়, ইসলামবাগ, আমলাবো, কালী, আমলাবো মুসলিমপাড়া, ডুলুরদিয়া, গোলাকান্দাইল নতুন বাজার, কান্দাপাড়া, বলাইখা, বিজয়নগর, মদিনানগর, তারাবো পৌরসভার তেঁতলাবো, শান্তিনগর, বাগানবাড়ি, পশ্চিম কান্দাপাড়া, উত্তর মাসাবো, যাত্রামুড়া, রূপসী ও ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, সোনাবো, পাঁচাইখা ও ইসলামপুরসহ আশপাশের এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি এসব এলাকার ৫০ হাজার মানুষ। কারো কারো বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমরসমান পরিমাণ। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। বাড়িতে পানি ওঠায় কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আবার কেউ কেউ বাঁশের মাচার ওপর বসবাস করছে। কয়েকটি শিল্পকারখানায়ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। শিল্পকারখানার নির্গত কেমিক্যাল ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে সয়লাব অনেক এলাকা। এতে রোগাক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ।
১৯৮৪ সালে ৯০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়রগঞ্জ-নরসিংদী অগ্রনী সেচ প্রকল্প-১ ও পরে ১৯৯৩ সালে ১শ’ ১ কোটি ব্যয়ে শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ের ৫ হাজার হেক্টর জমি ঘিরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ হওয়ার ক’বছর বাদেই এখানে শুরু হয় জলাবদ্বতা। জনবসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দুর্ভোগও।
৯০ দশকের পর নিয়মবহিভূর্তভাবে অগ্রনীর ভেতরে মিল-কারখানা গড়ে উঠলে অগ্রনী পরিনত হয় আবাসিক ও শিল্প এলাকায়। সেই থেকে দুর্ভোগ চরমে উঠে মানুষের। বসতি আর কারখানার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিবছর বাড়ে জলাবদ্বতাও।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংস্কারকাজের বর্জ্য ফেলে পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে দেওয়ায় তারাবো আল-ফালাহ জামে মসজিদ ও কবরস্থানেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে সমস্যা হচ্ছে। কবরস্থানেও লাশ দাফন করা যাচ্ছে না। তারবো আল-ফালাহ জামে মসজিদেও রাস্তায় হাটু পানি জমে আছে।
গোলাকান্দাইল গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া বলেন, খাল খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বহু আবেদন নিবেদন করেও কোনো ফল হচ্ছে না।
গোলাকান্দাইল মধ্যেপাড়া গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী নাঈম মিয়া বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে নিম্নআয়ের মানুষদের সমস্যা হচ্ছে বেশি। শিল্পকারখানার নির্গত বর্জ্যে পানি নিষ্কাশন খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিল্পকারখানা থেকে নির্গত কেমিক্যালযুক্ত পানি জমে থাকা পানিতে এসে মিশছে। আর কুচকুচে কালো বিষাক্ত এই পানিতে হাঁটাচলা করতে গিয়ে মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কীটপতঙ্গ, মাছ মরে গিয়ে জীববৈচিত্র্য হুমকির ত্রুখে পড়ছে।
দক্ষিণপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী বলেন, আমাদের বাড়িঘরে হাঁটুসমান পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারি না। বিশুদ্ধ পানি নেই। জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির অনেক ভাড়াটিয়া এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। গোলাকান্দাইল এলাকার শিক্ষক রতন লাল বলেন, শিল্পাঞ্চল হওয়ায় রূপগঞ্জে জমির দাম বেশি। তুলনামূলকভাবে নিচু জমির দাম কম। তাই অনেকেই নিচু অঞ্চলে কম দামে জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছেন। আর সে কারণেই নির্মিত ঘরবাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
তারাবো পৌরসভার শান্তিনগর গ্রামের রওশন আলী বলেন, ১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হচ্ছে। বানিয়াদী এলাকায় সুইজগেট থাকলেও সেখানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সময়মতো মেশিন চালু না রাখায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পাম্পের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
মৈকুলি গ্রামের মোহাম্মদ মেহেদী হাছান বলেন বলেন, বছরের পর বছর ধরে একই সমস্যা চললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা হলেও বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে দুর্ভোগকে মেনে নিচ্ছে। অনেকেই বলছেন, জলাবদ্ধতা যেন আমাদের নিয়তি হয়ে গেছে।
বরপা গ্রামের মুনছুর আলী বলেন, বৃষ্টি শুরু হলেই দুশ্চিন্তা শুরু হয়। কোমর পানি পার হয়ে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে হয়। দোকানে পানি, অফিসে পানি জীবনটা যেন থমকে যায়। কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান নেই।
বরপা বাগানবাড়ি গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা প্রায় প্রতি বর্ষায় পানির নিচে ডুবে থাকি। একটু বৃষ্টি হলেই শান্তি নগর শান্তিতে থাকে না। রাস্তা-ঘাট, ঘরের উঠানসহ সব জলে ভরে যায়। স্কুলগামী শিশু, অফিসগামী মানুষ, রোগী সবাই ভোগান্তিতে পড়ে।
রূপসী কাহিনা গ্রামের মাহমুদুল হাসান ইমন বলেন, জলাবদ্ধতার পানি শুধু চলাচলে অসুবিধা নয়। একেকটা রোগের উৎস হয়ে উঠছে, বিশেষ করে চর্মরোগ, এলার্জি, ঘা, চুলকানি লেগেই থাকে।
রূপগঞ্জে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, খাল-বিল ভরাট হওয়া, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ও অচল পাম্পমেশিন এই তিনটি কারণেই মূলত জলাবদ্ধতা হচ্ছে। আপাতত আমরা নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি জলাবদ্ধতা নিরসনে জন্য আশা করি যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করবো।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, রূপগঞ্জের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। আমি গত ১১ মাসে ৮টি খাল পুনরুদ্ধার করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন ও ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক রাকিবুল আলম রাজিব বলেন, রূপগঞ্জে জলাবদ্ধতার মূল কারণ হলো এখানকার অধিকাংশ খাল দখল হয়ে গেছে। বিশেষ করে তারাবো পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের খালগুলো এখন নানা শিল্প গ্রুপের দখলে। ফলে পানি বের হতে পারছে না, আর জলাবদ্ধতা এখন স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা করছে দখল হওয়া খালা উদ্ধার করতে। যাতে স্বাভাবিক পানি নিস্কাশনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যায়।
জাতীয় সংসদের আসন কুমিল্লা -০৯ পুনর্বহাল রেখে নতুন খসড়ায় ঘোষিত সীমানা বাতিলের দাবিতে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী সমর্থকরা।
বুধবার বিকেল চারটার দিকে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি'র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী সমর্থিত কয়েক হাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় অন্তত এক ঘন্টা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়।
গত বুধবার (৩০ জুলাই) কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় সারাদেশে যে ৩৯ টি আসনের পরিবর্তিত খরসা প্রকাশ করা হয়েছে তার মধ্যে ছয়টি কুমিল্লা জেলার। এই খসড়া প্রকাশিত হবার পর থেকেই কুমিল্লা-৯ নির্বাচনী এলাকার সাবেক এমপি বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরী ও তার সমর্থকরা বিক্ষোভ ও নানান প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
ইতিমধ্যে কুমিল্লা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ও স্মারকলি বিদায় তারা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি আখতার হোসেন, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, ছাত্র সমন্বয়ক নূর মোহাম্মদ, সাবেক উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ঈসমাইল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ খোকা, তারিফুল ইসলাম তারিফ, রুবেল হোসেনসহ অন্যান্যরা।
‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ ও ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ উপলক্ষ্যে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের উদ্যোগে ০৬ আগস্ট ২০২৫ তারিখ সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় আইসিবি’র মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ এর নেতৃত্বে মতিঝিল পার্কে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। উক্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থমন্ত্রণালয় এর যুগ্মসচিব মিজ্ ফরিদা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আইসিবি’ র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোঃ নূরুল হুদা, আইসিবি’র সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এবং মহাব্যবস্থাপকগণ উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রশিক্ষিত ফার্মাসিস্ট ছাড়াই উপজেলার প্রতিটি হাটবাজারের অলিতে-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে হবিগঞ্জের প্রায়১২ শত ফার্মেসী। প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে ওষুধ বিক্রির ব্যবসা। এসব ফার্মেসি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, নিষিদ্ধ, নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের বিভিন্ন ওষুধ বিক্রি করছে অবাধে। এতে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেক রোগী ও তাদের পরিবার। এখানকার মানুষ প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। ফলে মাধবপুরের ৬ লাখ বাসিন্দা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। এ ছাড়া ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে- বেশ কিছু ওষুধের দোকানে ওষুধ বিক্রী নয় রোগীদের প্রেপসিকসন ও করা হয়। সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, মাধবপুরে প্রায় দের হাজারের উপরে অননুমোদিত ফার্মেসি আছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত কোনো ফার্মেসিতেই ফার্মাসিস্ট কিংবা কেমিস্ট নেই। এর মধ্যে প্রায় হাজার খানেক দোকান আছে, যেগুলো খুবই নিম্নমানের। স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ওষুধের চাহিদা বাড়ায় এসব দোকানের ব্যবসাও জমজমাট। তদারকি কম থাকায় নকল, মানহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম বিক্রি হচ্ছে এসব দোকানে। তবে এসব ফার্মেসিতে ওষুধ মজুত, প্রদর্শন ও বিক্রয় ১৯৪৬ সালের ড্রাগস রুলস অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আবার লাইসেন্সবিহীন অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের পাশাপাশি আয়ুর্বেদী ওষুধের ফার্মেসি খুলে বসেছেন অনেকে। তবে ফার্মেসি পরিচালনার জন্য যে ন্যূনতম যোগ্যতার প্রয়োজন তাও আবার অনেক ফার্মেসি মালিকদের নেই। উপজেলার কয়েকটি ফার্মেসিতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, তারা ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করার আগে অন্যের ফার্মেসিতে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সেখান থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিজেই শুরু করেছেন ফার্মেসি ব্যবসা। ফার্মেসি চালু করার জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে, ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে ড্রাগ লাইসেন্স নেওয়া এবং প্রত্যেক ফার্মেসিতে একজন সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকা। অথচ বেশির ভাগ ফার্মেসিতেই নেই ড্রাগ লাইসেন্স আর সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন রোগের স্পর্শকাতর ওষুধ বিক্রিরও অভিযোগ আছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাধবপুরে গ্রামপর্যায়ে ছোটখাটো ফার্মেসিগুলোতে ওষুধ ব্যবসার আড়ালে ইন্ডিয়ান স্টেরোয়েট ট্যাবলেট বেঁচাকেনা করা হয়। এ ছাড়া ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে ভালো মানের ওষুধের চেয়ে বেশি কমিশন দেওয়া হচ্ছে। এতে বেশি লাভের আশায় ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রিতে বেশি আগ্রহী হচ্ছে ওষুধ ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষও কোন ওষুধটি আসল কোনটি নকল তা চিহ্নিত করতে অপারগ। এর ফলে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট দ্বারা একটি ফার্মেসি পরিচালনার নিয়ম রয়েছে এবং ড্রাগ লাইসেন্স করার আগে ওষুধ বিক্রয় ও প্রদর্শনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিককে অবশ্যই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ অলিতে-গলিতে ওষুধের দোকানে এ আইন অমান্য করা হচ্ছে। যার কারণে প্রশিক্ষণ ও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকান দিন দিন বেড়েই চলেছে সরেজমিনে একাধিক ফার্মেসি ঘুরে ভিন্ন এক চিত্র দেখা যায়, ডিগ্রিধারী, ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসিস্ট ও ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই পুরো উপজেলায় চলছে হাজার হাজার ফার্মেসি। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এসব ফার্মেসি থেকে বিক্রি হচ্ছে ওষুধ। এরমধ্যে অধিকাংশ ফার্মেসিগুলোতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ছাড়পত্র নেই। এ ছাড়া বড় বড় ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও সেখানে নেই দক্ষ ফার্মাসিস্ট। কোনো ধরনের কেমিস্ট বা ফার্মাসিস্ট না থাকলেও সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সিলেট ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক মো: শামীম হোসেনের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে মাধবপুরে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ফার্মেসি বেশীর ভাগ ফার্মেসিতে নেই ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন
আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন ড্রাগ লাইসেন্স নাই। মাধবপুরে আমরা নিয়মিত কার্যক্রম চালাই।হবিগন্জের মাধবপুরে অন্য উপজেলার তুলনায় অনেক বেশি ড্রাগ লাইসেন্স। মাধবপুরে লাইসেন্স করা ফার্মসী আছে ৩৫০প্লাস। লাইসেন্স বিহীন থাকতে পারে সেটা জানা নাই। যখন ড্রাগ লাইসেন্স দেয়া হয় তখন ফার্মাসিষ্ট এর লিগ্যাল ডকুমেন্ট যাচাই করেই দেওয়া হয়। পরে দেখা যায় ফার্মাসিষ্ট আগে একটায় ছিল পরে অন্যটায় চলে গেছে। আমরা ড্রাগ লাইসেন্জ সহজে দেইনা।মাধবপুর উপজেলা মোট কত টি ফার্মেসি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটাতো আমি তথ্য নিয়ে বসে নেই। কোন তথ্য প্রযোজন হলে আমার অফিসে আইসা তথ্য নিয়ে যাবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেট প্রকাশের অনুষ্ঠান আজ নগর ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
ডিএসসিসি পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়। বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৩২০.৪৩ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৬৩৫.৩৩ কোটি টাকা, ডিএসসিসির নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন ব্যয় ৮৭৬.৬৪ কোটি টাকা এবং মোট ডিএসসিসি, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তায় উন্নয়ন ব্যয় বাবদ ১৪৬৯.২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বাজেটের প্রধান খাতসমূহের মধ্যে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো খাতে ৩৬৫.১১ কোটি, খাল উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসন খাতে ১১৫.০০ কোটি, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ৫৭.২০ কোটি, মশক নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য খাতে ৫৭.৪৪ কোটি, বৃক্ষরোপন ও পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৫.২৬ কোটি এবং কল্যাণমূলক খাতে ১৩.৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় প্রশাসক বলেন, "ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এটি আমাদের কাছে সম্মানিত করদাতাদের আমানত।" উচ্চাভিলাষী বড় অঙ্কের বাজেট প্রণয়ন না করে বাস্তবায়নযোগ্য যৌক্তিক বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন নগরবাসীর অতিরিক্ত করারোপ বা কর হার বৃদ্ধি না করে ক্ষেত্রমত বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচন করা হয়েছে।
বাজেট উপস্থাপন অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঐতিহাসিক ৩৬ জুলাই স্মরণে শহীদ ও আহতদের উৎসর্গ করে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন করেছেন ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী।
ভোরে পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে ম্যারাথনটি শুরু করে ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে আবারো একই স্থানে এসে শেষ করেন তারা।
ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামিম ইসলাম মিরাজ এবং নবম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী সজিব ও মুনতাসির বিল্লা ।
ম্যারাথন শেষে তারা জানান, ৩৬ জুলাই আমাদের কাছে আবেগের। গত বছর ৩৬ জুলাইয়ে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। ৩৬ জুলাইকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা ৩৬ কিলোমিটার ম্যারাথন সম্পন্ন করেছি। দৌড়ের মধ্যে হাঁটুতে কিছুটা পেইন হলেও সবশেষে ঠিকঠাক সম্পন্ন করতে পেরেছি।
পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও সকল আহতদের সুস্থতা কামনা করেন তারা।
বরিশাল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলো আজ দখল ও দূষণের থাবায় অস্তিত্ব সংকটে। নদীর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ, পরিবেশ ও জনজীবনে প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে। একদিকে প্রশাসনের নীরবতা, অন্যদিকে প্রভাবশালী দখলদারদের বেপরোয়া দখল সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হতে চলেছে নদীমাতৃক বাংলার অস্তিত্ব। বরিশালের প্রাণ কীর্তনখোলা নদী আজ চরম হুমকির মুখে। বিশেষ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দপদপিয়া ও চরবাড়িয়া এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের দুই পাশে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। দোকানপাট, স-মিল, ইট-বালুর ডিপো, অফিস, ঘরবাড়ি এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে নদীর বুক দখল করে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৭টি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই নদীদূষণ ও দখলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কালিজিরা, কর্নকাঠী, রসুলপুর ও পলাশপুর এলাকায় নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে ডকইয়ার্ড, গোডাউন ও কারখানা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব দখলের পেছনে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগী এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,এখানে আগে মাছ ধরতাম, এখন শুধু বালু আর কংক্রিট দেখি। আমাদের চলাফেরাও বন্ধ হয়ে গেছে।
একটি তালিকায় দেখা গেছে,কীর্তনখোলায় ২১৪ জন,পটুয়াখালী নদীতে ৩৫৫ জন,ভোলার জাঙ্গালিয়া নদীতে ৩৫জন,পিরোজপুরের বেলুয়া নদীতে ৮৮ জন,বরগুনার পায়রা নদীতে ১১০জন,ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি নদীতে ২৩ জন দখলদার চিহ্নিত করা হয়েছে।
পিরোজপুরের দামোদর নদের ব্রিজ এলাকাও দখলের কবলে। নদীর জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বলেশ্বরসহ অন্যান্য নদীরও একই দশা ব্রিজ ও স্থাপনা নির্মাণে হারিয়েছে নাব্যতা।এলাকাবাসীর দাবি,নদী বাঁচান, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচান। প্রশাসনের উচিত এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলো ছিল এক সময়ের প্রাণ। আজ সেই প্রাণ যাচ্ছে নিভে। নদী রক্ষায় প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা। বিআইডব্লিউটিএ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলমান জরিপ শেষে শুরু হবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের উপ-পরিচালক মো. সেলিম রেজা জানান,আমরা কীর্তনখোলা নদীর ৪ হাজার ৩২০ জন অবৈধ দখলদারের খসড়া তালিকা তৈরি করেছি। জরিপ শেষে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। বরিশাল জেলার ২৩টি নদীর দুই তীর দখলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। শুধু কীর্তনখোলা নয়, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য নদ-নদীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়।
এ বিষয়ে বরিশাল অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আহসান হাবীব জানান,আমরা প্রত্যেকটি নদীর দখলদারদের তালিকা তৈরি করছি। উচ্ছেদের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
ফরিদপুরে তারুণ্যের আইডিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরনে মঞ্চস্থ হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নাটক "অতঃপর একটি জুলাই "।
জেলা পরিষদ ফরিদপুরের আয়োজনে স্থানীয় কবি জসীমউদ্দীন হল মঞ্চে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নাটক "অতঃপর একটি জুলাই "মঞ্চস্থ করা হয়।
জেলা পরিষদ ফরিদপুরের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মো:বাকাহীদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রামানন্দ পাল, সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ শামসুল আজম, যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মো:মউনুল হোসেন,সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জুলাই শহীদদের স্মরনে নাটকটি রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন তরুন নাট্যকার নিরব ইমতিয়াজ শান্ত।
নাটকটিতে ৩০ জন নতুন মুখ অভিনয় করেছেন, যারা ফরিদপুরে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী। নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিরব ইমতিয়াজ শান্ত। এছাড়া নাটকে অভিনয় করেন মোঃ সোহেল রানা, কাজী জেবা তাহসিন,জান্নাতি খানম, চয়ন সাহা, আরিয়ান শাহ, শাহরিয়ার রাফিন, সিনহা আহমেদ সহ আরো এক ঝাক তরুন অভিনেতা।
জুলাই বিপ্লবের পুরো ঘটনাটিকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই নাটকে।স্বৈরাচারী হাসিনার জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের রুখে দাঁড়ানোর ও রক্ত দিয়ে লেখা জুলাই শহীদের নিয়ে নাটক "অতঃপর একটি জুলাই হলভর্তি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
বিদ্যালয়ে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাগ নিয়ে হাজির হলেন ইউএনও। এতে প্রতিটি শিশু শিক্ষার্থীর মুখেই হাসি আর মনে অপার আনন্দ ফুটে উঠলো। ইউএনওর হাত থেকে ব্যাগ উপহার পেয়ে সকলে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন।
আজ বুধবার (৬ আগষ্ট) সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাসুম বিল্লাহ বিদ্যালয়টির ২শত ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন নতুন স্কুল ব্যাগ।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, পল্লী উন্নয়ন অফিসার আবু তাহের হেলাল, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস, বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ।
বিদ্যায়লয়টির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রেষ্ঠা রত্ন বলেন, এতোদিন একই রংয়ের শার্ট-প্যান্ট, জুতা, টাই পড়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এলেও ব্যাগগুলো ছিল আলাদা আলাদা। আবার কারো কারো স্কুল ব্যাগ ছিলো না। শ্রেণি কক্ষে কেমন যেন বৈষম্য মনে হতো। আমরা ভাবতাম ইস যদি সকলের ব্যাগ একই হতো তাহলে খুব মজা হতো। আজ আমাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন ইউএনও স্যার।
নতুন স্কুল ব্যাগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাফি বলেন, ‘আমার পুরনো ব্যাগ ছিঁড়ে গিয়েছিল। আজ নতুন ব্যাগ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।’
এদিকে,অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া ছিল ইতিবাচক। তারা জানান, গ্রামে অনেক পরিবারই দরিদ্র। স্কুল ব্যাগ বা টিফিন বক্স কেনা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ইউএনও’র এই উদ্যোগে তাদের সন্তানরা নতুন উদ্যমে স্কুলে যাচ্ছে। উপস্থিতিও বেড়েছে।
চরকাটিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরব আলী বলেন,’এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি করেছে। আগে কেউ কেউ ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে আসত, অনেকের স্কুল ব্যাগও ছিলোনা। এখন তারা গুছিয়ে স্কুলে আসছে।
সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস বলেন,’ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই উপহার বিতরণ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে। এতে এ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা আরও এগিয়ে যাবে।’
ইউএনও মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে এবং পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়াতে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, কেউ যেন শুধু অভাবে স্কুলছুট না হয়।
তিনি আরও বলেন’ প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্কুল জীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। শিক্ষা উপকরণ বিতরণের এই উদ্যোগ একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আকারে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।