মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নের আহ্বান

পার্বত্য রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি সফরে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মতবিনিময় করে জাতিসংঘ ও উন্নয়ন অংশীদারদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৭ নভেম্বর, ২০২২ ২০:৫৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ২০:৫৫

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও উন্নয়ন অংশীদারদের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। তারা বলেছেন, পার্বত্য এলাকায় বনাঞ্চল সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে সেখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি সফর করা উচ্চপর্যায়ের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলি, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-স্ভেন্ডসেন, ইউএনডিপির আবাসিক সমন্বয়কারী স্টেফান লিলার, ইউএনএফপি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন ব্লোখুস, এফএও কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট সিম্পসন এবং ইউনিসেফ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেল্ডন ইয়েট।

প্রতিনিধিদলটি ১৩ নভেম্বর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক সপ্তাহ রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে অবস্থান করে। সফরের সময় খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ডেপুটি কমিশনার, মং ও চাকমা সার্কেলপ্রধান, নারীনেত্রী, পরিবেশবাদী এনজিও এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের কথা, তাদের চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশগুলো শুনেছে তারা।

তাদের পরিদর্শন করা জায়গাগুলোর মধ্যে একটি হলো রাঙামাটির জুড়িয়াছড়ি উপজেলায় নির্মিত সৌরবিদ্যুৎভিত্তিক নিরাপদ পানি সরবরাহ কেন্দ্র এবং সংকটে নিরাপদ পানি সরবরাহের উৎস। মিসরে কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনে এই প্রকল্প লোকাল অ্যাডাপশন চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

সফর শেষে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নকাজ ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে। তবে সেবাপ্রাপ্তি পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া এবং প্রত্যন্ত এলাকায় অনেক জনগোষ্ঠীর বসবাস চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষরা বনাঞ্চল ও তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে অসাধারণ কাজ করে চলেছেন। জলবায়ু পরিবর্তন তাদের কাজকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।’

ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলি বলেন, ‘আমরা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মর্যাদা ও সমতা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় তাদের প্রথাগত নেতৃত্ব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গঠন করতে চাই।’

যুক্তরাজ্যের দূত রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো সব সময় আমাদের ভাবায় এবং এখানে টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে সরকার, জাতিসংঘ, উন্নয়ন অংশীদার ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’

বাংলাদেশে এফএও কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. রবার্ট সিম্পসন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কৃষি ও উন্নয়নে এর সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী সিংহভাগ মানুষ জীবনযাপন, খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তার জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এই অঞ্চলে কফি, আম ও আনারসের মতো উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা আয় বৃদ্ধি করবে। তবে সমহারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উন্নয়নকে অবশ্যই ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে।’


নওগাঁর ৭০ শতাংশ সড়কবাতি নষ্ট, বাড়ছে চুরি-ছিনতাই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সবুজ হোসেন, নওগাঁ

বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকার দেশে বিকল্প হিসেবে নওগাঁর বিভিন্ন সড়কে সোলার প্যানেল চালিত ল্যাম্পপোস্ট (সড়ক বাতি) স্থাপন করেছিল। যেখানে সড়ক বাতির আলোয় উপকৃত হতো পথচারীরা। এসব সড়ক বাতি ৫ বছর চলার পর এখন ৭০ শতাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে পথচারীদের প্রতিনিয়ত দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান এলাকাবাসী।

জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত জেলায় ৭ হাজার ৭৪১ টি সোলার সিস্টেম ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়। যেখানে ব্যয় হয় ৪৩ কোটি ৭২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে বর্তমানে ৭০ শতাংশ সড়কবাতি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।

নওগাঁ সদর উপজেলার তালতলি থেকে দুবলহাটি হয়ে কাটখৈইর বাজার পর্যন্ত দুরুত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এ সড়ক দিয়ে সহজেই জেলার মান্দা ও রানীনগর উপজেলার কিছু এলাকা জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। সন্ধ্যার পর চুরি ও ছিনতাইয়ের ভয়ে মানুষ নির্জন এ রাস্তা দিয়ে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া চলাচল করত না। এ সড়কটি আলোকিত করতে গত ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে (১০ বছর আগে) জেলায় টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্প থেকে প্রায় ২০০টি সোলার সিস্টেম ল্যাম্পপোস্ট (সড়ক বাতি) স্থাপন করা হয়। ফলে সন্ধ্যার পর নিজ থেকে জ্বলে উঠে সোলার আলোয় আলোকিত হতো সড়কটি। যেখানে সন্ধ্যার পর ভ্যান, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারিরা নিবিঘ্নে চলাচল করতে পারতো। কিন্তু ৫ বছর পর এ সড়কবাতি গুলো অকেজো হয়ে পড়ে। শুধু এ সড়কই না, জেলার বিভিন্ন সড়ক ও হাট-বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে সোলার প্যানেল চালিত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে কোনটার খুঁটি থাকলেও নেই সোলার প্যানেল ও বাল্ব। আবার সোলার প্যানেল থাকলেও নেই বাল্ব। কোথাও ল্যাম্পপোস্টের খুঁটি ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। আবার সোলার প্যানেল ও বাল্ব থাকলেও ব্যাটারি অকেজো হওয়ায় কোন কাজে আসছে না।

স্থানীয় ও পথচারীরা জানান- সড়ক অন্ধকার থাকায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে আগের মতো আর চলাচল করতে পারছে না। সড়কে চুরি-ছিনতাই ও অপরাধসহ সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েছে। অন্ধকার থাকায় পথচারীদের চলাচলও কমেছে। সড়কবাতিগুলো দ্রুত সংস্কার করার দাবী জানান এলাকাবাসী।
মান্দা উপজেলার স্কুল শিক্ষক রিমন মোরশেদ বলেন- বাড়ি থেকে কাটখৈইর হয়ে তালতলি সড়ক দিয়ে নওগাঁ শহরের আসতে সময় কম লাগে এবং সুবিধা হয়। অনেক সময় কাজ শেষে ফিরে যেতে রাত হয়। সন্ধ্যার পর ল্যাম্পপোস্টের আলোয় সড়ক আলোকিত হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে আবারও সন্ধ্যার পর অন্ধকার হওয়ায় এ সড়কে চলাচল কমে গেছে। পথচারীরা যতদ্রুত সম্ভব শহরে কাজ শেষে দিনের আলোয় বাড়ি চলে যায়।

সদর উপজেলার গোয়ালী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন- ‘বাড়ির পাশ দিয়ে কাটখৈইর সড়ক। এ সড়কে এক সময় অনেকগুলো ল্যাম্পপোস্ট ছিল। দীর্ঘ সময় চলার পর সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন থেকে অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় অনেকটা চুরি হয়ে গেছে। সড়ক অন্ধকার থাকায় অনেক ধরনের অপরাধ বেড়েছে। তবে আবারও যদি সংস্কার করা হয় তাহলে পথচারীদের জন্য সুবিধা হবে।

হাঁসাইগাড়ী গ্রামের অটোরিকশা চালক আহাদ আলী বলেন- গোয়ালী থেকে হাঁসাইগাড়ী গ্রাম পর্যন্ত বিলের মাঝ দিয়ে
৩ কিলোমিটার সড়ক বয়ে গেছে। এরমাঝে কোন বসতবাড়ি নেই। সন্ধ্যার পর সুনশান নিরবতা। চুরি ও ছিনতাইয়ের ভয়ে সন্ধ্যার পর অটোরিকশা নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা হয়না। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যানবাহন নিয়ে কেউ আসতে চায় না।
নওগাঁ জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আশেকুর রহমান বলেন- রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজার আলোকিতকরণ করতে সড়কবাতিগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন মেরামত না করা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ওয়ারেন্টি মেয়াদ শেষ হওয়া সহ নানা কারণে সড়কবাতিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ইতোমধ্যে সড়কবাতিগুলো সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত সংস্কার করা হবে।


শেকর পাবনা ফাউন্ডেশন চারটি দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে সংবাদ সম্মেলন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের উন্নয়নের ঘোষিত ১৬ দফা রূপকল্পের মধ্যে চারটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় পাবনা প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন। সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ঢাকা-পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস চালু, পাবনায় সরকারি মেডিকেল কলেজে পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো ও কার্যক্রম চালু, পাবনা সদর হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা এবং পাবনায় আইটি পার্ক স্থাপনের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের সভাপতি খান হাবিব মোস্তাফা, সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমানসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।

বক্তারা বলেন, ‘পাবনার সার্বিক উন্নয়নের জন্য এসব দাবি বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব বাস্তবায়িত হলে পাবনা স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।’

সম্মেলনে জেলার উন্নয়নে সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।


ফরিদপুরে এনসিপি নেতার বাড়িতে মধ্যরাতে তান্ডব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

ফরিদপুর শহরের আলিপুর এলাকার বাসিন্দা এনসিপি ফরিদপুর জেলা শাখার যুগ্ম সমন্বয়ক এস এম জাহিদ হোসেনের বাড়িতে মধ্যরাতে ঘরের তালা ভেঙ্গে তাণ্ডব চালিয়েছে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। সোমবার (০৭ জুলাই) রাতে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী তার বাসার বাউন্ডারি টপকে দ্বিতীয় তলায় প্রবেশ করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ করেছেন এস এম জাহিদ হোসেন ।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী, হামলাকারীরা বাসার চার থেকে পাঁচটি গেটের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। তারা ধারণা করেছিল, জাহিদ হোসেন ও তার ছেলে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে ঘুমিয়ে আছেন। সেখানে কাউকে না পেয়ে ঘরের বিভিন্ন রুমে ব্যাপক তছনছ চালায়। এমনকি একটি রুমের বাহিরের লক খুলে ভেতরে তল্লাশি চালানোরও চেষ্টা চালায় তারা।

জানা গেছে, দুষ্কৃতিকারীরা জাহিদ হোসেনের রুমের দরজা জোরপূর্বক খোলার চেষ্টা করে, তবে ভেতর থেকে নিরাপদে লক থাকায় সফল হয়নি। তার ছেলের রুমেও সিটকিনি লাগানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, পর্দার ফাঁক দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে তারা জাহিদ হোসেনকে দেখতে পেয়েছিল। তবে ভোরের আজানের ধ্বনি ও আশপাশের মসজিদের মুসল্লিদের চলাচল শুরু হলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসিকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিদর্শন করেন এবং তার টিম প্রাথমিক আলামত সংগ্রহ করেন।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, এটি কোনো সাধারণ চুরির ঘটনা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা না হলেও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


বাঘডোকরা ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের অপেক্ষা শেষ হয়নি ৫৪ বছরেও 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মিজানুর রহমান, পঞ্চগড়

করতোয়া নদীর বাঘডোকরা ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছে এলাকাবাসী। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এস্বপ্ন পূরণ হয়নি এলাকাবাসীর।

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ৩ নং বনগ্রাম বেংহাড়ী ইউনিয়ন ও ৪ নং কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যবর্তী করতোয়া নদী বাঘডোকরা ঘাটে সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই করতোয়া নদী পেরিয়ে দুটি ইউনিয়নের মানুষ প্রতিদিন যাতায়াতে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এরমধ্যে শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। বর্ষাকালে নদীতে পানি বাড়লে নৌকা কিংবা বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে। এতে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় শিশু ও বৃদ্ধদেরও।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বহুবার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনের পর আর খবর রাখেন না কেউ।

এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, করতোয়া নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করানো হয়েছে। তবে প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

তাদের দাবি, এই ব্রিজ নির্মাণ হলে দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আসবে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে হবে নতুন দিগন্তের সূচনা।

স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের এই ন্যায্য দাবি মেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।


কোটালীপাড়া শহরের সড়কে খানাখন্দ, বাড়ছে দূর্ভোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)

গোপালগঞ্জ-পয়সার হাট সড়কের কোটালীপাড়া উপজেলা জিরো পয়েন্টে ভাঙ্গাচোরা আর খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। সড়কের এই বেহাল দশার কারণে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে সড়কটিতে চলাচল করছে ছোট-বড় সকল যানবাহন।

গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট সড়কটি একটি ব্যস্ততম সড়ক। পায়রা বন্দর থেকে মংলা বন্দরে এবং বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদার কোটালীপাড়া উপজেলা। যে কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল এই সড়ক দিয়ে। এই সড়কের কোটালীপাড়া উপজেলার জিরো পয়েন্ট পশ্চিমপাড় এলাকায় বড় বড় খানাখন্দ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই হয়ে পড়ছে জলাবদ্ধতা। যে কারণে চলাচলের সময় প্রায়ই ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহনগুলো এই গর্তে পরে প্রায়ই উল্টে পড়ছে। যার ফলে যাত্রীরা পড়ছে দূর্ঘটনার কবলে। বাস, ট্রাকসহ বড় গাড়িগুলো চলাচলে পানি ছিটকে পথচারীদের কর্দমাক্ত করে দিচ্ছে।

কমলকুঁড়ি বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিসুর রহমান বলেন, চলাচলের সময় চোখের সামনে প্রতিদিন একাধিকবার দূর্ঘটনা ঘটতে দেখছি। উপজেলা সদরের ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে ছোট ছোট যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মাসের পর মাস সড়কটির এই বেহাল দশা হলেও সংস্কার হচ্ছে না।

ভ্যানচালক জামির মোল্লা বলেন, রাস্তাটির যেই অবস্থা তাতে যে কোন সময় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সড়কটি দ্রুত মেরামত করা খুবই জরুরি।

পরিবহন শ্রমিক আলম মিয়া বলেন, পশ্চিমপাড়ে সড়কটির অর্ধেকের বেশি স্থানে খানাখন্দ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। বৃষ্টির সময় এই সমস্যা আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে। ভাঙ্গা অংশটুকু তারাতাড়ি মেরামত দরকার।

কোটালীপাড়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভাঙ্গা অংশটুকু মেরামতে জন্য জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বলা হয়েছে। আশাকরছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


নবীনগরে তালের চারা রোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে উপজেলা কৃষি প্রণোদনা পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক, মহেশ রোড় এবং বড়াইল- কৃষ্ণনগর সড়কে ২০০টি তালের চারা রোপণ করা হয়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন, আরো উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহসানউল্লাহ, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শাহআলম মজুমদার, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র দত্ত, উপসহকারী কৃষি অফিসার নূর নবী, ফারুক আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম, স্থানীয় কৃষকবৃন্দ। এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান-‘তাল গাছ আমাদের পরিবেশের বন্ধু। এর শিকড় মাটির ক্ষয় রোধ করে, আর পাতা ছায়া দেয়। এমনকি বজ্রপাত প্রতিরোধে ও তাল গাছের ভূমিকা রয়েছে। বিজ্ঞান বলে- উঁচু ও একক অবস্থানে থাকা তালগাছ বজ্রপাতের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক’। নবীনগর উপজেলায় ২০০টি তালের চারা এবং তাল গাছ রক্ষার জন্য বেড়া (খাঁচা) একযোগে স্থাপন করা হয়েছে।

আশাকরি সরকারের পাশাপাশি এই বর্ষা মৌসুমে স্থানীয়দের উদ্যোগেও তালের চারা রোপণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রাজীব চৌধুরী জানান-‘তাল গাছ রোপণের পাশাপাশি সরকারের প্রণোদনার আওতায় নবীনগর উপজেলায় ১৭০০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে চারটি করে (নিম, বেল, জাম, কাঁঠাল) চারা বিতরণ করা হবে"। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও ফলের চাহিদা মিটাতে এই উদ্যোগ ভালো ভূমিকা পালন করবে।


টানা বর্ষণে ডুবেছে ফেনী শহর, ভেঙেছে মুহুরীর বাঁধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ফেনীতে সোমবার (৭ ই জুলাই ) দুপুর ১২টা হতে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি মৌসুমের সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

টানা বর্ষণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে গেছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শহরবাসী। বৃষ্টির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দুর্যোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, আগামী ২-৩ দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। শহরের অধিকাংশ বাড়ির নিচতলায় পানি উঠে গেছে। সড়কে কোমর পরিমাণ পানি থাকায় স্কুলে যেতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে পানি ঠেলে হেঁটে ও রিকশায় চড়ে গিয়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, রামপুর শাহীন অ্যাকাডেমি, পাঠান বাড়ি, নাজির রোড, পেট্রো বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের পাশে দোকানগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে পড়ে অনেক গাড়ি। সকাল থেকে সড়কে আটকে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।

পানি উঠে যাওয়ায় আজ সকাল থেকে শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

দুপুর ১২টার দিকে শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় কোমর পানি জমে থাকতে দেখা যায়। বেশ কয়েকটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এ সময় বিকল হয়ে সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে ভারী বৃষ্টিতে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা সদরের শ্রীপুর রোডে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি দোকান ধসে পড়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ কারণে নিলক্ষ্মী-গাবতলা সড়কে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে ভারী বৃষ্টি হলে নদীর পানি বাড়বে। ভাঙনরোধে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’


অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান

আপডেটেড ৮ জুলাই, ২০২৫ ১৫:৪১

তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ০৭ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -রুপগঞ্জ -এর আওতাধীন গোলাকান্দাইল, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৪১৫ বাড়িতে ৯২৫ টি চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, ৩" ডায়া পরিত্যক্ত বিতরন লাইন থেকে মাছরাঙা কয়েল ফেক্টরীর ২'' ডায়া বিশিষ্ট অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ২৩০ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। প্রতিটি বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট থেকে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।

একই দিনে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক রাজস্ব শাখা -ভালুকা ও জোবিঅ -ভালুকা -এর বিশেষ অভিযানে বকেয়ার জন্য ২টি আবাসিকের ০৩টি ডাবল চুলা ও অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনায় গ্যাস ব্যবহার করায় ৬টি আবাসিকের ৮টি ডাবল চুলা সহ মোট ০৮টি আবাসিকের ১১টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এছাড়া, বাইপাস লাইন এর মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করায় মেসার্স আল মদিনা বোর্ড মিল, মুন্সিগঞ্জ এর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ০৭ জুলাই, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ২৬৯টি শিল্প, ২৫৮টি বাণিজ্যিক ও ৪৪,৮৬৪টি আবাসিকসহ মোট ৪৫,৩৯১ টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ৯৮,১৪৭টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ১৮৬ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।


কুষ্টিয়ায় একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যু: ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।

সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।

মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।


সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে ২১ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে ২১ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কক্সবাজারের পেকুয়া থানার তিনটি মামলায় রিমান্ড শেষে আজ মঙ্গলবার সকালে দিকে তাঁকে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবিরের আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতে নিযুক্ত রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) গোলাম সরওয়ার বলেন, জাফর আলমকে গত ১৮ জুন চকরিয়া থানার পাঁচটি মামলায় ১৪ দিন এবং পরে পেকুয়া থানার তিনটি মামলায় ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মোট ২১ দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ আজ জাফর আলমকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

চকরিয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় জাফর আলমকে আদালতে আনা হয়। আদালত তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ২৭ এপ্রিল ডিবি পুলিশ ঢাকার ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করে জাফর আলমকে। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অংশ নিয়ে হেরে যান। জাফর আলম ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন।


ব্রেন স্ট্রোক করে মারা গেছেন ঢাবি শিক্ষার্থী আহসান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুর রহমান (২২) মারা গেছেন।

সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

আহসানের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার লাশ গ্রামের বাড়ি পলাশে নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, রবিবার (৬ জুলাই) রাতে ব্রেন স্ট্রোক করে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে শরীরের বাম অংশ অবশ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আহসান। এরপর আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলেন না তিনি।

শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, আহসানের মৃত্যুতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ আজ (মঙ্গলবার) এক দিনের শোক পালন করবে। এই উপলক্ষে বিভাগের সব ক্লাস বন্ধ থাকবে।

এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমান হলে আজ এশার নামাজের পর দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বুধবার আসরের নামাজের পর ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদেও তার জন্য দোয়া করা হবে।


বিদেশি জাতের আম চাষে নতুন দিগন্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। ধান, চালে বিখ্যাত হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষ করে এ জেলার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার যেদিকে দুচোখ শুধুই আম গাছের সাড়ি। আর থোকায় থোকায় ঝুলছে নানা জাতের আম। তবে দেশীয় নানা জাতের আমের পাশাপাশি আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি জাতের আম চাষ। দেখতে সুন্দর ও আর্কষণীয়, ফলন ভালো এবং স্বাদ ও গুণগত মান ভালো হওয়ায় ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

নওগাঁ জেলার মাটি ও আবহাওয়া বিদেশি জাতের আম চাষ উপযোগী হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। এতে দিন দিন বাগানের পরিমাণও বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোক্তাদের খাবারে আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে এবং কৃষি খাত হয়ে ওঠবে আরও লাভজনক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় এ বছর ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। যা থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার টনের বেশি আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২০ হেক্টর বাগানে বিদেশি বিভিন্ন জাতের আম বাগান রয়েছে। যা থেকে বছরে প্রায় দেড় হাজার টন আম উৎপাদন হয়। ৫ হাজার টাকা মণ হিসেবে যার বাজারমূল্য প্রায় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার আংশিক এলাকা। এসব উপজেলায় প্রধান অর্থকরি ফসল ছিল আমন ধান ও গম। পানি স্বল্পতার কারণে এক সময় এসব এলাকায় বৃষ্টিনির্ভর একটিমাত্র ফসল আমন ধানের ওপর নির্ভর করতে হতো। তবে গত একযুগের ব্যবধানে বরেন্দ্রের মাঠগুলো এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। ধানের আবাদ ছেড়ে চাষিরা এখন আম চাষে ঝুঁকছেন। এসব উপজেলায় সুস্বাদু ও সুমিষ্ট আম্রপালি, গোপালভোগ, ফজলি, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, আশ্বিনা, বারী-৪, গুটি এবং বিদেশি জাতের পালমার, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই ও কিউজাইসহ অন্তত ৩০ জাতের আম চাষ হচ্ছে। এসব আম ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এমনকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

জেলার সীমান্তঘেরা উপজেলা সাপাহারের বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের তরুণ উদ্যোক্তা সোহেল রানা। তার ৭৫ বিঘা জমিতে আম্রপালি, ল্যাংড়া ও বারি-৪ সহ বিদেশি জাতের আম রয়েছে। তবে এর মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে বাণিজ্যিভাবে বিদেশি জাতের ৯ বিঘাতে জমিতে ব্যানান ম্যাংগো ও ২ বিঘাতে রেড পালমার, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই ও কিউজাইসহ ৮ জাতের আম রয়েছে। থোকায় থোকায় ঝুঁলছে বাহারি রঙের আম। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও তেমন সুস্বাদু।

কথা হলে সোহেল রানা প্রতিবেদককে বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে এসব জাতের আমের কাটিং কলম সংগ্রহ করে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুরু থেকেই ব্যানান ম্যাংগো বাগান রয়েছে। এ আম ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়ে থাকে। দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে বাণিজ্যিভাবে বিদেশি জাতের আম বাগান করা হবে বলে জানান এ উদ্যোক্তা।

তার মতো অনেক কৃষক এখন বিদেশি জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকদের মাঝেও দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে- বারোমাসি বা স্বল্পসময়ে ফল দেয় এবং গাছে ফলন ভালো হয়। দেখতে সুন্দর ও আকর্ষণীয় এবং স্বাদ ও গুণগত মান ভালো। এতে ভোক্তাদের মাঝে এসব আমের চাহিদা বেশি। ফলে বাজারমূল্যও তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা কম সময়ে বেশি ফলন পায় এবং অধিক লাভবান হয়। বাজারমূল্য ও লাভের সম্ভাবনার কারণে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই অনেক কৃষক বিদেশি জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলার পাতারি গ্রামের আম চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন- গত ৩ বছর আগে ২৫ কাঠা জমিতে ব্যানানা ম্যাংগোর বাগান করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ায় সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে বাগান করেছি। গত বছর ৫ হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। এবছর ভালো দাম আছে। আরও দাম বাড়বে। ৭-৮ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়।

আরেক আম চাষি মো. রাকিব হোসেন বলেন- ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি ও কিউজাই আমের বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব আমের বাগানও সম্প্রসারণ হচ্ছে। রপ্তানি করে ভালো আয় করা হয়। আগামীতে বিদেশি জাতের আমের চাহিদা বাড়বে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন- ইতোমধ্যে এ জেলা আমের বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এ জেলার মাটিতে দেশি আমের পাশাপাশি বিদেশি জাতের আম চাষ উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ বাড়ছে। অনেক সৌখিন চাষি বিদেশি জাতের আম বাগান করছেন। তারা ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


বরিশাল বিভাগজুড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

হুমকিতে নদীতীরের জনপদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল

বরিশাল বিভাগে দিনে-রাতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অন্তত ৭০টি স্পটে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন হচ্ছে প্রতিদিন। জন্ম দিচ্ছে ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের।

বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ নদ-নদী এখন বালু খেকোদের কবলে। কীর্তনখোলা, মেঘনা, তেঁতুলিয়া, বলেশ্বর, পায়রাসহ প্রধান নদীগুলোতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে দিনের পাশাপাশি রাতেও। বিশেষ করে বরিশাল শহরের পাশঘেঁষা চরমোনাই এলাকায় সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় বালু উত্তোলন। রাতভর চলে এই কার্যক্রম, সকালেই জাহাজ বোঝাই হয়ে যায় বালুতে। শ্রমিকরা নিজেরাই অকপটে স্বীকার করছেন, তাদের কার্যক্রমের কোনো বৈধতা নেই।

বরিশাল হিজলা উপজেলার নয়াভাঙনী নদীর গুয়াবাড়িয়া, হরিনাথপুর এবং মেঘনা নদীর গঙ্গাপুর, বদরপুর, আবুপুর, কোদালপুর, পট্টিসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলছে বালু উত্তোলনের হিড়িক।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি রাতে নদীর বুক চিরে বালু তোলা হয়; অথচ প্রশাসনের তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকেও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙনের ভয়াবহতা। অনেক স্থানে চাষযোগ্য জমি ও ঘরবাড়ি ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত এই বালু সিন্ডিকেটে। প্রশাসনের নাকের ডগায় চললেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।

পটুয়াখালীর আগুনমুখা, পায়রা, তেঁতুলিয়া ও পিরোজপুরের বলেশ্বর, কচা নদীর চরখালীসহ অন্তত ৭০টি স্পটে প্রতিদিন চলে এই অপতৎপরতা। নদীর তীরের মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও হুমকির মুখে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এক হতাশা নিয়ে আল আমিন জানান, নদী ভাঙনে আমার বসতভিটা চলে গেছে। প্রতিবাদ করলে হুমকি আসে। প্রশাসন যদি কঠোর না হয়, আমরা সব হারিয়ে ফেলব।

সুজন সভাপতি মোবাশ্বির উল্যাহ চৌধুরী বলেন, এই অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে না, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও হুমকিতে ফেলছে। স্থানীয় প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া দরকার।

বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা রাতের বালু উত্তোলন নিয়ে তথ্য নিচ্ছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার জানান, নদী সুরক্ষায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না।


banner close