প্রবীণদের সামাজিক ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার দিকে এখনই বাংলাদেশের নজর দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বয়স্ক ব্যক্তিদের সব ধরনের মানবাধিকার ভোগ সম্পর্কিত জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ক্লাউডিয়া মালার। তার মতে, দেশে এখন পর্যন্ত প্রবীণদের নিরাপত্তায় যে সব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে প্রবীণদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশে ১১ দিনের সফরের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ক্লাউডিয়া মালার।
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, বাংলাদেশের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। জলবায়ু ইস্যু, উন্নয়নশীল অর্থনীতি ও আর্থিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের উচিত প্রবীণ জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দেয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমাজে বয়স্ক আত্মীয়দের সম্মান ও যত্ন নেয়ার ঐতিহ্য থাকলেও তাদের নির্দিষ্ট চাহিদা উপেক্ষা করা হয়। এ ছাড়া বয়স্ক ব্যক্তিরা শ্রমবাজারেও উপেক্ষিত হন।
ক্লাউডিয়া মালার বলেন, আমি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যতজন বয়স্ক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি তাদের সিংহভাগেরই অভিযোগ পরিবারের তাদের বোঝা হিসেবে দেখে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচিত একটি সিদ্ধান্তমূলক সমাধানে আসা।
প্রবীণদের জন্য বাংলাদেশের নেয়া প্রথম জাতীয় নীতিকে প্রশংসনীয় পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানালেও এই নীতি বাস্তবায়নে একটি সময়বদ্ধ কর্মপরিকল্পনার অভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন মালার।
বয়স্ক ভাতা বাড়ানো দরকার উল্লেখ করে ক্লাউডিয়া মালার বলেন, এখানে মাসে ৫০০ টাকা বয়স্ক ভাতা দেয়া হয়। বর্তমান অর্থ ব্যয় মেটানোর জন্য, বিশেষত স্বাস্থ্যসেবার জন্য পর্যাপ্ত নয়। সরকারের উচিত বয়স্কদের মেডিকেল খরচ ও স্বাস্থ্যসেবার দিকে নজর দেয়া।
বয়স্কদের বয়সসীমা জানতে চাইলে পরে সাংবাদিকদের করা এ প্রশ্নে মালার বলেন, এখানে নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। তবে বাংলাদেশের হিসাবে যাদের বয়স ৬০ তাদের বয়স্ক বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পুরুষদের বয়স ৪০ ও মেয়েদের ৫০ হলেই তাদের বয়স্ক বলা যেতে পারে।
গ্রাম ও শহরের প্রবীণদের মধ্যে বৈষম্য সম্পর্কে মালার বলেন, গ্রামে যারা বয়স্ক মানুষ তারা বেশির ভাগই একা থাকেন। এদের পরিবারের বাকি সদস্যরা শহরে চলে আসেন জীবিকার সন্ধানে। এতে করে তারা অসহায় হয়ে পড়েন। শহরে বয়স্ক যারা বস্তি ও জেনেভা ক্যাম্পে থাকেন তাদের অবস্থা শোচনীয়।
কোভিড-১০ মহামারি পরিস্থিতি বাংলাদেশ সফলভাবে সামাল দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সাফল্য ছিল দারুণ। টিকা প্রদানে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্তটিও প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশে যারা বয়স্ক তাদের সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে আরও জোরদার কর্মসূচি নেয়া দরকার। যথাযথ পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভালো করতে পারবেন বলে মনে করেন ক্লাউডিয়া মালার।
১১ দিনের সফরে মালার ২০০ প্রবীণ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মালার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করবেন বলে জানা গেছে।
বরগুনার আমতলী উপজেলায় সরকারি বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) আমন ধানের বীজ নিয়ে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। স্থানীয় ডিলার মধু প্যাদা অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বিশাল পরিমাণ বীজ সংগ্রহ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন বলে দাবি কৃষকদের।
অভিযোগে জানা গেছে, মধু প্যাদা বরিশালের ফরিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে গত ২৫ দিনে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন বিআর-৪৯ ও বিআর-২৩ জাতের ধানের বীজ কিনে তার মহিষকাটা বাজারের তিনটি গোডাউনে মজুত করেন। এরপর তা তালতলী, রাঙ্গাবালি, কলাপাড়া ও আমতলী উপজেলার বিভিন্ন দোকানে ৬৭০ টাকার বীজ ৭৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে কৃষকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি সরকার নির্ধারিত সরবরাহ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ছে।
স্থানীয় কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি বীজ না পেয়ে বাধ্য হয়ে বেশি দামে বীজ কিনতে হচ্ছে। এর পেছনে মধু প্যাদার সিন্ডিকেটই দায়ী।’
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আফজাল হোসেন শরীফ বলেন, ‘১০ কেজি বিআর-৪৯ জাতের বীজ কিনেছি ৭৫০ টাকায়, যা সরকারি দামের চেয়ে অনেক বেশি।’
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার রাসেল মিয়া বলেন, ‘কেউ অতিরিক্ত দামে বীজ বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে একজন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, অনুমোদন ছাড়া ডিলারদের মধ্যে বীজ লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে, মধু প্যাদা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি সরকারি দুটি লাইসেন্সে ৪ মেট্রিকটন বীজ পেয়েছি। চাহিদা থাকায় অতিরিক্ত বীজ ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছি।’ তবে বরিশাল জননী ট্রেডার্সের মালিক ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আমার ব্যবসায়িক স্বার্থে সব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে বরিশাল বিএডিসির উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলেন, ‘ডিলাররা বাহির থেকে বীজ কিনলে সমস্যা কোথায়?’
এদিকে আমতলী উপজেলায় এ বছর ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও, বিএডিসি সরবরাহ করেছে মাত্র ৫৫ মেট্রিক টন বীজ, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফলে অধিকাংশ কৃষক চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছেন।
বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমতলীর ইউএনও মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ‘কোনো ডিলার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক দামে বীজ বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কৃষকদের অভিযোগ ও স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসের মাঝে, এখন প্রশ্ন- কৃষকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বীজের বাজারে এই সিন্ডিকেটের লাগাম টানা যাবে তো?
ভোলায় গত ২দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বৃষ্টির প্রভাবে মনপুরা উপজেলার শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়াও, বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে এবং কৃষিজমিতে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিতে কৃষকের ফসলি জমি, ক্ষেতের সবজিসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
মৎস্য ব্যবসায়ী মো: মাইনুদ্দিন জানান, বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে ৮৫ লাখ টাকা পুজি খাটিয়ে প্রতিবছরের মতো এ বছরও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে তার এগারোটি ঘের তলিয়ে গেছে। তার স্বপ্ন নিমিষেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে ধার দেনা করে মাছ ছাড়লেও সব মাছ বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে।
অপর মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ রাজীব জানান, আমার ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে দুটি মাছের ঘের ছিল এতে লোনের টাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির দেশী বিদেশী মাছের চাষাবাদ করেছিলাম বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে আমার সব মাছ চলে গেছে। আমার পাঁচ লক্ষের অধিচ বেশি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক ও মৎস্য ব্যবসায়ী মো: মিজান বলেন, মনপুরায় প্রতিটি বিল ও ঘের অঞ্চলের মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষকদের একই অবস্থা। কয়েক দফা বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষেতের ফসল, মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এখানকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।
মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলী আহমেদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ঘের ব্যবসায়ীদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করা হবে। বরাদ্দ না পেলে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার কোনো সুযোগ নেই। মৎস্য ব্যবসায়ীরা যাতে আগামীতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন সে জন্য মাঠ পর্যায়ে তাদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন মাঠকর্মীরা।
দীর্ঘায়িত বর্ষা মৌসুমে টানা কয়েকদিন ভারী বর্ষণে উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার মৎস্য চাষি ও প্রান্তিক কৃষকরা। ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
মনপুরা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আহসান তাওহিদ বলেন, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে আমাদের মাঠ কর্মীরা যাচ্ছে । ক্ষতিগ্রস্ত পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো।
সরেজমিনে পানিবন্দি কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ ,দাসেরহাট, উত্তর সাকুচিয়া , রহমানপুর ও জংলারখাল এলাকায় পানি বন্দি হয়ে আছেন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মানিকের চর ও বাংলাবাজার খারিজাথাক এলাকায় যৌথ অভিযানে ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার অবৈধ “চায়না দুয়ারি ও বেহুন্দী” জাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বিজিবি। সোমবার (৭ ও ৮ জুলাই) বিকাল ৫টা থেকে পরের দিন সকাল ১১টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি’র তরফ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিজিবি সূত্র জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবি ও দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন মীমান্তের মানিকের চর ও বাংলাবাজার খারিজাথাক এলাকায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ “চায়না দুয়ারি ও বেহুন্দী” জালের মজুদ থাকায় ওই এলাকায় গত ৭ জুলাই বিকাল ৫টা থেকে ৮ জুলাই সকাল ১১টা পর্যন্ত দুই দফায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে প্রায় ৮৫০০ কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল, ৩৫০০ কেজি বেহুন্দী জাল, ১৫টি বড় সাইজের ড্রাম এবং ৪,০০০ কেজি জাল তৈরীর যন্ত্রাংপাতি জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের মূল্য প্রায় ১,৮৪,৪৫,০০০ হাজার টাকা। এসময় ৩ জন আসামীকে ১৩,০০০ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অংশ নেয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী, উপজেলা মৎস অফিসার হোসেন আহমেদ স্বপন, আনসার সদস্য এবং ৪৭ বিজিবি’র ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোঃ জাকিরুল ইসলাম।
জব্দকৃত অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল, বেহুন্দী জাল, ড্রাম এবং জাল তৈরীর যন্ত্রাংশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আব্দুল হাই সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ধ্বংস করা হয়।
অবৈধ মৎস্য আহরণ ও জালের অপব্যবহার রোধে ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) ভবিষ্যতেও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবেন বলে বিজিবি সূত্রে জানানো হয়।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
রূপগঞ্জে বর্ষাকালীন বিভিন্ন ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে চাপ বেড়েছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও সাধারণ সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভিড় করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্কুলছাত্র রাতুলের (৬) মা প্রিয়া রানী বলেন, "জ্বর সারছিল না বলে চিন্তিত হয়ে হাসপাতালে এসেছি।"
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছেন, জ্বর তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। এসময় বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং মশার বংশবিস্তার রোধে সতর্ক থাকতে বলেছেন তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে জ্বরের রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধে অন্তত ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ভাঙ্গনস্থান গুলোর মধ্যে পরশুরাম উপজেলায় ১০টি ও ফুলগাজী উপজেলায় ০৫টি রয়েছে। এসব ভাঙ্গন দিয়ে লোকালয়ে ঢুকেছে পানি। এতে দুই উপজেলার ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে উজানে ভারী বৃষ্টিপাত হলে পানি আরো বৃদ্ধি পাবে সাথে সাথে ভাঙ্গনও বাড়বে।
পরশুরাম উপজেলায় ভাঙ্গনস্থান গুলো হল: জঙ্গলগোনা-২ টি, উত্তর সালদর-১টি, নোয়াপুর -১ টি, পশ্চিম অলকা-১টি, ডি এম সাহেবনগর-১টি, পশ্চিম গদানগর-১ টি, দক্ষিন বেড়াবাড়ীয়া -১ টি, পূর্ব সাতকুচিয়া-১টিসহ মোট: ১০টি ।
ফুলগাজী উপজেলায় ভাঙ্গনস্থান গুলো হল: দেড়পাড়া-২ টি, শ্রীপুর-১টি, উত্তর দৌলতপুর -১টি, কমুয়া-১ টিসহ মোট: ৫টি ।
ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, জেলায় ০৭ জুলাই সকাল নয়টা হতে ০৯ জুলাই সকাল ৯ টা পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টায় ৫৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানিয়েছেন, বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ৯ টায় মুহুরী কুহুয়া সিলোনিয়া নদীর পানি বিপদ সীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে ।
ফেনী জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় ফুলগাজী উপজেলায় ৯৯টি (মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২টি এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৭টি) এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ সহ সবাই দুর্ভোগে পড়েছেন। টানা বৃষ্টির কারণে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক, রামপুর, শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠান বাড়ি এলাকা, নাজির রোড, পেট্রো বাংলোসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তবে আজ পানি কমতে শুরু করেছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যারা আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা আছে। সার্বক্ষণিক জেলা প্রশাসনের তদারকি রয়েছে। বন্যা পরবর্তী ভাঙ্গনস্থান সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়োগবিধি সংশোধন করে ১৪তম গ্রেড দেওয়াসহ ছয় দাবিতে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দাবি হলো:
১. নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক/সমমান এবং ১৪তম গ্রেড প্রদান।
২. ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ সনদপ্রাপ্তদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান।
৩. পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরণ।
৪. স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা পূর্বের নিয়োগ বিধি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও সবাইকে প্রশিক্ষণবিহীন স্নাতক পাস স্কেলে আত্তীকরণ করতে হবে।
৫. বেতন স্কেল উন্নতি/পুনর্নির্ধারণের পূর্বে স্বাস্থ্য সহকারী/সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক/স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা যতসংখ্যক টাইম স্কেল (১/২/৩টি)/ উচ্চতর স্কেল (১/২টি) পেয়েছেন তা উন্নীত পুনর্নির্ধারিত বেতন স্কেলের সঙ্গে যোগ করতে হবে।
৬. পূর্বে ইন-সার্ভিস ডিপ্লেমা (এসআইটি) কোর্স সম্পন্নকারী স্বাস্থ্য সহকারী/সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক/স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ ডিপ্লেমা সম্পন্নকারী সমমান হিসেবে গণ্য করতে হবে।
সারাদেশ থেকে ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠনো খবরে বিস্তারিত...
জামালুদ্দিন হাওলাদার, চট্টগ্রাম ব্যুরো জানান, নিয়োগবিধি সংশোধন ও ১৪তম গ্রেডে বেতন-ভাতাসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন চেয়ে চট্টগ্রামে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে স্বাস্থ্য সহকারীরা। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল আটটা থেকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ হেল্থ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করে তারা।
এ সময় বক্তারা বলেন, আমাদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগে ‘ভ্যাকসিন হিরো’সহ সকল আন্তর্জাতিক অর্জন হওয়া সত্ত্বেও বিগত সরকার আমাদের শুধু আশার বাণীই দিয়ে গেছেন। কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই আমাদের নিয়োগবিধি সংশোধন করে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (বিজ্ঞান) সংযুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ প্রস্তাবিত ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান তারা।
এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হেল্থ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল হক চৌধুরী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম কুদরাত ই খুদা রকির সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিলা আরা চৌধুরী রশ্মি, অর্থ সম্পাদক মঈনুল আহমদ আলী সাগর, মহিউদ্দিন চৌধুরী, লোকমান হাকিম বাদশাহ, কাজী সাইফুল ইসলাম, হাসিনা বেগম, এস এম মিজানুর রহমান, আবুল কালাম, শামসুল আলম চৌধুরী, লকিয়ত উল্লাহ, করিমুন্নেসা সাদেকা ও আবদুল মোমেন।
তারা আরও বলেন, আমরা এ কমসূচি পালনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি ও আবেদন দিয়ে আমাদের দাবি ও কর্মসূচি বিষয়ে অবগত করেছি। কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যদি আমাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না করেন, তাহলে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইপিআইসহ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন বন্ধ থাকবে। এ সময় তারা সরকারের প্রতি ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে নিবার্হী আদেশে নিয়োগ বিধি সংশোধন শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (বিজ্ঞান) সংযুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা সহ বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে ‘উন্নীতকরণ, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরণ, পূর্বের নিয়োগবিধি অনুযায়ী নিয়োগ পেলেও কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী সব স্বাস্থ্য পরিদর্শক স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্নাতক পাস স্কেলে আত্মীকরণ, বেতন স্কেলে উন্নীতকরণের পূর্বে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক গন যত সংখ্যক টাইম স্কেল অথবা উচ্চতর গ্রেট প্রাপ্ত বা প্রাপ্য হয়েছেন তা পরবর্তী পুনর্নির্ধারিত বেতন স্কেলের সঙ্গে যোগ, পূর্বে ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা এসআইটি কোর্স সম্পূর্ণ কারী স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকদেরকে ডিপ্লোমাধারী সম্পন্ন হিসেবে গণ্য করে সরাসরি ১১ তম গ্রেড দাবি করেন তারা।
কামাল হোসেন বাবুল, গাজীপুর থেকে জানান, বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন গাজীপুর জেলা স্বাস্থ্য সহকারীরা। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টায় গাজীপুর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে হেলথ এসিস্ট্যান্ট এ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানের সঞ্চালনায় এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, বেতন বৈষম্য নিরসনে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আরিফ হোসেন সিকদার, হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন গাজীপুর জেলা উপদেষ্টা মো. শামীম আল রাজি, সহ সব উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
নাসির উদ্দিন শাহ মিলন, নীলফামারী থেকে জানান, ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে নীলফামারীতে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসুচি হয়েছে বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন নীলফামারী জেলা শাখার ব্যানারে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
নেত্রকোণা প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোণায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে জেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা। মঙ্গলবার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা বাংলাদেশ হেল্থ এসিসট্যান্ট এস্যোসিয়েশনের ব্যানারে এ কর্মসূচী পালিত হয়।
এসময় বক্তব্য দেন সংগঠনটির জেলা শাখার সভাপতি মোঃ হাবীবুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক মনসুরুল হক পাবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিনূর ইসলাম প্রমুখ।
কর্মসূচীতে জেলার ১০ উপজেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা অংশ নেন।
বক্তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তাবিত মাঠ পর্যায়ে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগবিধি সংশোধন পূর্বক স্নাতক সমমান সংযুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড প্রদানসহ ৬দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোরতর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান , ৬ দফা দাবি আদায়ে ঝিনাইদহে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে স্বাস্থ্য সহকারীরা। মঙ্গলবার সকালে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সামনে ঝিনাইদহ হেলথ এ্যাসিস্ট্যান্ট এ্যাসোসিয়েশন এ অবস্থান কর্মসূচীর আয়োজন করে।
ঘন্টা ব্যাপী অবস্থান কর্মসূচিতে দাবি সম্বলিত ব্যানার, লিফলেট নিয়ে জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা অংশ নেয়। সেসময় হেলথ এ্যাসিস্ট্যান্ট এ্যাসোসিয়েশন জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম, সমন্বয়ক ফারুক হোসেন, ওলিউর রহমান, সোহেল রানা, মো. ফরহাদ, আক্তার হোসেনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
যশোর প্রতিনিধি জানান, চাকরিতে ১৪তম গ্রেড ও ‘টেকনিক্যাল পদমর্যাদা’সহ ৬ দফা দাবিতে যশোরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় চত্বরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার আট উপজেলা থেকে আসা স্বাস্থ্য সহকারীরা অংশ নেন।
লিটন ঘোষ, মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় ৬ দফা দাবীতে জেলার ৪ উপজেলার ২ শতাধিক স্বাস্থ্য সহকারিরা ৩ ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে । মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত মাগুরা সিভিল সার্জন অফিসের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচী পালন করে বাংলাদেশ হেলথ এ্যাসিটেন্ট এসোসিয়েশন মাগুরা পরিষদ।
এ সময় ৬ দফা দাবী তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মাগুরা হেলথ এ্যাসিটেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: নজরুল ইসলাম,সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন, স্বাস্থ্য সহকারি সঞ্চিতা চক্রবতী ও জামিরুল ইসলাম । অবস্থান কর্মসূচীতে জানানো হয়,প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে স্বাস্থ্য সহকারিরা মাঠ পর্যায়ে আন্ত:ব্যক্তি যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে । কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের পদের কোন পরিবর্তন হয়নি । তাই সরকারের প্রতি ৬ দফা দাবীতে সারাদেশে চলছে অবস্থান কর্মসূচী । স্বাস্থ্য সহকারিদের দাবীর মধ্যে রয়েছে নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক সমমান এবং ১৪ তম গ্রেড প্রদান,ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ সনদ প্রাপ্তদের ১১ তম গ্রেড প্রদানসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান ও স্বাস্থ্য সহকারি,সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক,স্বাস্থ্র পরিদর্শকগণ পূর্বের নিয়োগ বিধি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও সকলকে প্রশিক্ষণ বিহীন স্নাতক পাশ স্কেলে আত্তীকরণ করতে হবে ।
মীর আনোয়ার আলী, রংপুর থেকে জানান, বাংলাদেশ হেল্থ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরে স্বাস্থ্য সহকারীরা ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলছে। দাবি আদায় না হলে ১ সেপ্টম্বর থেকে কমপ্লিট শাটডাউন যাবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। এর আগে বিভিন্ন উপজেলা থেকে সিভিল সার্জন এর কার্যালয় সামনে এসে জড়ো হন তারা। এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হেল্থ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের রংপুর বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক মো. মাসুদার রহমান, রংপুর জেলা সভাপতি শাহ মো. শামিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. আনিস রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মারজান মিয়া। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দও বক্তব্য দেন।
হুঁশিয়ারি দিয়ে রংপুর বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক মো. মাসুদার রহমান বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইপিআইসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে।
রংপুর জেলা সভাপতি শাহ মো. শামিম হোসেন বলেন, জন্মের পর থেকে শিশুদের ১০টি মারাত্মক রোগ থেকে সুরক্ষায় যে টিকা প্রদান করা হয়, তার পুরো কাজটি তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারীরাই করেন। এই কাজ অত্যন্ত টেকনিক্যাল হলেও আমরা এখনো টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করছে না। ফলে আমরা চরম বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
সাধারণ সম্পাদক মো. আনিস রহমান বলেন, স্বাস্থ্যখাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন অর্জনের পেছনে স্বাস্থ্য সহকারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকলেও বিগত সরকারগুলো কেবল আশ্বাস দিয়েছে, বাস্তবায়ন করেনি। তাই আমাদের দাবি বাস্তবায়নে নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক (বিজ্ঞান) শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমার মাধ্যমে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।
স্বাস্থ্য সহকারীরা জানান, ৬ দফা বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা আরও কার্যকর ও টেকসই হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীর ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করে বৈষম্যের অবসান ঘটাবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
খান রুবেল, বরিশাল ব্যুরো জানান, ছয়দফা দাবিতে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের সামনে মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ হেলথ এসিষ্ট্যান্ট এসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে তারা আন্দোলন করে আসছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়ক একেএম মইনুদ্দিন খোকনের সভাপতিতে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন অ্যাসোসিয়েশনের বরিশাল বিভাগের সভাপতি জিয়াউল হাসান কাবুলসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্বাস্থ্য সহকারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সকাল ৮টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই গোপালগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। সেখানে বেলা ১১টা পযর্ন্ত কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি হাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য সহকারী রবিউল ইসলাম, মোর্শেদুল আলম, সুলতানা পারভীন কচি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুন্সীগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. ফরহাদ হোসেন, সাধরণ সম্পাদক মো. মাহবুবার রহমান, কোষাধ্যক্ষ নুরুল আমিন বেপারী, সাংগঠকি সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. আজিজুল হক, বাসু দেব মোল্লা, আমিনুল ইসলাম ও জয়ন্ত ভট্টাচার্যসহ অনেকে।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, ঝালকাঠির সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টি উপেক্ষা করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন ঝালকাঠি শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইদা সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক নাঈম প্রমুখ।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে সকাল ৮টা বেলা ১১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের টাঙ্গাইল শাখার নেতাকর্মীরা। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. নুরুল ইসলাম, সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, উপদেষ্টা মো. সেলিম মিয়া, মো. আলমগীর হোসেন, মো. কামাল হোসেন প্রমুখ। কর্মসূচিতে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার ৩৫০ জন নেতাকর্মী অংশ নেন।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা দুই ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন ভূইয়া, বিভাগীয় আহ্বায়ক এ কে এম শফিউল আজম, ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি আফজাল হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীরসহ অনেকে।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অভয়ারণ্য এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মাছ ও কাঁকড়া শিকার। দিনের পর দিন শত শত জেলে নদী-খালে প্রবেশ করে অবাধে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুন্দরবনের দোবেকী, পুষ্পকাটি, নোটাবেকী, হলদেবুনিয়া, মান্দারবাড়িয়া, কাছিকাটা, আঙরাকেনা, বালিঝাকি, পাকড়াতলী, খোবরাখালীসহ একাধিক নদী ও খাল সরকারিভাবে অভয়ারণ্য এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল ও মৎস্য আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
কিন্তু বাস্তবচিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতিদিনই অসংখ্য বাইনজাল, পাটাজাল, নেটজাল, ফাঁসজাল, দোন ও বড়শি ব্যবহার করে অভয়ারণ্যে প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া ধরছে।
একাধিক জেলে জানান, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে সাপ্তাহিক বা গোনথ (১৫ দিন) ভিত্তিক চুক্তির মাধ্যমে তারা অভয়ারণ্যে প্রবেশ করেন। প্রতি গোনে ফাঁড়ি ও স্টেশন ভেদে দিতে হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এতে কোনো বাঁধা ছাড়াই নির্বিঘ্নে শিকার চালাতে পারছেন তারা।
জেলেরা আরও জানান, আমরা জানি এটি আইনবিরুদ্ধ, কিন্তু পেটের দায়ে করতে হয়। যারা চুক্তি করে না, তাদের নৌকা অভয়ারণ্যে ঢুকতেই দেওয়া হয় না।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অভয়ারণ্যে জেলেদের অবৈধ প্রবেশ ও শিকারের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। তার প্রত্যক্ষ মদদেই নটাবেকী, হলদেবুনিয়া, দোবেকী, কাছিকাটা, বালিঝাকি, ডিঙ্গিমারী, কাকাদোবেকী, আঙরাকোনা, পাকড়াতলীসহ বিভিন্ন স্থানে শত শত নৌকা প্রতিনিয়ত মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে।
চাইলে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষক ফজলুল হক বলেন, অভয়ারণ্যে কোনো নৌকা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। তবে বাস্তবতার সঙ্গে এই বক্তব্যের কোনো মিল পাওয়া যায় না।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগমের বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুটপাট ও ভুক্তভোগীর থেকে ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া ৩ কর্মকর্তা হলেন- জেলা পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান এবং জিয়াউর রহমান। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল হোসেন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (০৭ জুলাই) রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করা হয়। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, ১৮ জুন সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তার বাড়িতে অভিযান চালান। কোনো মাদকদ্রব্য না পেয়ে তারা গাড়ির তেলের খরচের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি ১০ হাজার টাকা দেন। বাকি ১০ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠাতে বলেও চলে যান। কিছুক্ষণ পর তারা আবার এসে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করতে থাকেন। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা বলা হয়।
এছাড়া তার আলমারি থেকে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং ছেলের ঘরের আলমারি থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। এরপর ছালেহা বেগমের বাড়ি থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই ৩ কর্মকর্তাকে প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্তপূর্বক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ক্ষেত থেকে আলু তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণিরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার পাশাপাশি বাজার দর ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলার ধারাবর্ষা, বড়বাড়ীয়া, কৈজুরী, কান্দারপাড়া, সৈয়দপুর, বয়সিংহ, ভাটারা, মোহনগঞ্জ, কাশারীপাড়া, পাখাডুবী, ফুলবাড়িয়া, পারপাড়া, গোপীনাথপুর, কৃষ্ণপুর, চর হরিপুর, আওনা, পোগলদিঘাসহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি আলুর চাষ করে কৃষকরা। খরচ কম ও লাভবান হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে ঝুকছে চরাঞ্চলের কৃষকরা।
উপজেলার কামরাবাদ ও ভাটারা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সবুজ পাতায় ছেয়ে আছে ফসলের মাঠ। কৃষকরা কোদাল দিয়ে কুপিয়ে আগলা করছে মাটি। আর নারী ও শিশুরা আলু কুড়িয়ে এক জায়গায় রাখছে। পরে জমানো মিষ্টি আলু ক্ষেতে বসেই ওজন করে বস্তাবন্দি করছে কৃষকরা। কেউ আবার মিষ্টি আলুর লতা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি করে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল হাই, সাদেক আলী, রাশেদুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, চারা রোপণের কয়েকমাস পর থেকে মিষ্টি আলু মাটির নিচে পরিপক্ব হয়ে ওঠে এবং উপশী হাইব্রিড জাতের মিষ্টি আলু ৯০ দিনেই তোলা যায়। এবার আলু চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। মিষ্টি আলুর চাহিদা ঢাকায় অনেক বেশি। তাই এলাকা থেকে ১ হাজার হতে ১২০০ টাকা মণ কিনে বেশি দামে বিক্রি করেন পাইকাররা। এসব মিষ্টি আলু চরাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে কেনেন পাইকার, অনেক সময় অনেক পাইকারি ক্রেতা মাঠ থেকেই আলু কিনে নেন। পরে এসব মিষ্টি আলু ট্রাকে করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যান।
মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল মোতালেব বলেন, এই মৌসুমে চরাঞ্চল অনেক পতিত জমিতে বিশেষ করে নদীর ধারের প্রায় ১ একর জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করেছি। প্রতি শতাংশে দুই মণের বেশি মিষ্টি আলুর ফলন হয়েছে। ১ বিঘা জমিতে মিষ্টি আলু পেয়েছি ১০০ মণের ওপরে। প্রতি মণ মিষ্টি আলু পাইকারি বিক্রি করছি ১৪/১৩/১২ শত টাকা দরে। চাহিদা ও ফলন হিসেবে দাম কিছুটা ওঠানামা করে। ১ বিঘা জমি চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে অনেক লাভ হয়েছে। অন্য কোনো ফসল করে এত লাভ করা সম্ভব না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ বলেন, এ উপজেলায় এই বছরের মিষ্টি আলু ৫৮০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু চাষ হয়েছে ৬৭৫ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৯৫ হেক্টর বেশি। ফলনে খরচ কম হওয়ায় ও অধিক লাভজনক হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে ঝুকছে চরাঞ্চলের কৃষকরা।
বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকার দেশে বিকল্প হিসেবে নওগাঁর বিভিন্ন সড়কে সোলার প্যানেল চালিত ল্যাম্পপোস্ট (সড়ক বাতি) স্থাপন করেছিল। যেখানে সড়ক বাতির আলোয় উপকৃত হতো পথচারীরা। এসব সড়ক বাতি ৫ বছর চলার পর এখন ৭০ শতাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে পথচারীদের প্রতিনিয়ত দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান এলাকাবাসী।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত জেলায় ৭ হাজার ৭৪১ টি সোলার সিস্টেম ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়। যেখানে ব্যয় হয় ৪৩ কোটি ৭২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে বর্তমানে ৭০ শতাংশ সড়কবাতি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার তালতলি থেকে দুবলহাটি হয়ে কাটখৈইর বাজার পর্যন্ত দুরুত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এ সড়ক দিয়ে সহজেই জেলার মান্দা ও রানীনগর উপজেলার কিছু এলাকা জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। সন্ধ্যার পর চুরি ও ছিনতাইয়ের ভয়ে মানুষ নির্জন এ রাস্তা দিয়ে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া চলাচল করত না। এ সড়কটি আলোকিত করতে গত ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে (১০ বছর আগে) জেলায় টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্প থেকে প্রায় ২০০টি সোলার সিস্টেম ল্যাম্পপোস্ট (সড়ক বাতি) স্থাপন করা হয়। ফলে সন্ধ্যার পর নিজ থেকে জ্বলে উঠে সোলার আলোয় আলোকিত হতো সড়কটি। যেখানে সন্ধ্যার পর ভ্যান, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারিরা নিবিঘ্নে চলাচল করতে পারতো। কিন্তু ৫ বছর পর এ সড়কবাতি গুলো অকেজো হয়ে পড়ে। শুধু এ সড়কই না, জেলার বিভিন্ন সড়ক ও হাট-বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে সোলার প্যানেল চালিত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমানে কোনটার খুঁটি থাকলেও নেই সোলার প্যানেল ও বাল্ব। আবার সোলার প্যানেল থাকলেও নেই বাল্ব। কোথাও ল্যাম্পপোস্টের খুঁটি ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। আবার সোলার প্যানেল ও বাল্ব থাকলেও ব্যাটারি অকেজো হওয়ায় কোন কাজে আসছে না।
স্থানীয় ও পথচারীরা জানান- সড়ক অন্ধকার থাকায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে আগের মতো আর চলাচল করতে পারছে না। সড়কে চুরি-ছিনতাই ও অপরাধসহ সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েছে। অন্ধকার থাকায় পথচারীদের চলাচলও কমেছে। সড়কবাতিগুলো দ্রুত সংস্কার করার দাবী জানান এলাকাবাসী।
মান্দা উপজেলার স্কুল শিক্ষক রিমন মোরশেদ বলেন- বাড়ি থেকে কাটখৈইর হয়ে তালতলি সড়ক দিয়ে নওগাঁ শহরের আসতে সময় কম লাগে এবং সুবিধা হয়। অনেক সময় কাজ শেষে ফিরে যেতে রাত হয়। সন্ধ্যার পর ল্যাম্পপোস্টের আলোয় সড়ক আলোকিত হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে আবারও সন্ধ্যার পর অন্ধকার হওয়ায় এ সড়কে চলাচল কমে গেছে। পথচারীরা যতদ্রুত সম্ভব শহরে কাজ শেষে দিনের আলোয় বাড়ি চলে যায়।
সদর উপজেলার গোয়ালী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন- ‘বাড়ির পাশ দিয়ে কাটখৈইর সড়ক। এ সড়কে এক সময় অনেকগুলো ল্যাম্পপোস্ট ছিল। দীর্ঘ সময় চলার পর সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন থেকে অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় অনেকটা চুরি হয়ে গেছে। সড়ক অন্ধকার থাকায় অনেক ধরনের অপরাধ বেড়েছে। তবে আবারও যদি সংস্কার করা হয় তাহলে পথচারীদের জন্য সুবিধা হবে।
হাঁসাইগাড়ী গ্রামের অটোরিকশা চালক আহাদ আলী বলেন- গোয়ালী থেকে হাঁসাইগাড়ী গ্রাম পর্যন্ত বিলের মাঝ দিয়ে
৩ কিলোমিটার সড়ক বয়ে গেছে। এরমাঝে কোন বসতবাড়ি নেই। সন্ধ্যার পর সুনশান নিরবতা। চুরি ও ছিনতাইয়ের ভয়ে সন্ধ্যার পর অটোরিকশা নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা হয়না। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যানবাহন নিয়ে কেউ আসতে চায় না।
নওগাঁ জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা আশেকুর রহমান বলেন- রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজার আলোকিতকরণ করতে সড়কবাতিগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন মেরামত না করা, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ওয়ারেন্টি মেয়াদ শেষ হওয়া সহ নানা কারণে সড়কবাতিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ইতোমধ্যে সড়কবাতিগুলো সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত সংস্কার করা হবে।