মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ছুরিকাঘাতে শ্রমিক খুন, সহকর্মী আটক

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড
১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:২৮
প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা)
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা)
প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:১৮

ঢাকার সাভারে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক কারখানা শ্রমিককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার সহকর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের বউবাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত মনির (১৮) বউবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি সেমাই কারখানায় কাজ করত। অভিযুক্ত রাজনও (১৯) ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একই কারখানায় কাজ করত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিদারুল ইসলাম জানান, তিন-চার দিন আগে পূর্ব শত্রুতার জেরে মনির ও রাজনের মধ্যে মারামারির হয়। এর জেরে বৃহস্পতিবার বউবাজার এলাকায় রাস্তায় চাকু নিয়ে অপেক্ষা করছিল রাজন। পরে মনির কারখানা থেকে বের হলে রাজন তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ মনিরকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় রাজনকে আটক করা হয়েছে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।


কোটালীপাড়া শহরের সড়কে খানাখন্দ, বাড়ছে দূর্ভোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)

গোপালগঞ্জ-পয়সার হাট সড়কের কোটালীপাড়া উপজেলা জিরো পয়েন্টে ভাঙ্গাচোরা আর খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। সড়কের এই বেহাল দশার কারণে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে সড়কটিতে চলাচল করছে ছোট-বড় সকল যানবাহন।

গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট সড়কটি একটি ব্যস্ততম সড়ক। পায়রা বন্দর থেকে মংলা বন্দরে এবং বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদার কোটালীপাড়া উপজেলা। যে কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল এই সড়ক দিয়ে। এই সড়কের কোটালীপাড়া উপজেলার জিরো পয়েন্ট পশ্চিমপাড় এলাকায় বড় বড় খানাখন্দ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই হয়ে পড়ছে জলাবদ্ধতা। যে কারণে চলাচলের সময় প্রায়ই ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহনগুলো এই গর্তে পরে প্রায়ই উল্টে পড়ছে। যার ফলে যাত্রীরা পড়ছে দূর্ঘটনার কবলে। বাস, ট্রাকসহ বড় গাড়িগুলো চলাচলে পানি ছিটকে পথচারীদের কর্দমাক্ত করে দিচ্ছে।

কমলকুঁড়ি বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিসুর রহমান বলেন, চলাচলের সময় চোখের সামনে প্রতিদিন একাধিকবার দূর্ঘটনা ঘটতে দেখছি। উপজেলা সদরের ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে ছোট ছোট যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মাসের পর মাস সড়কটির এই বেহাল দশা হলেও সংস্কার হচ্ছে না।

ভ্যানচালক জামির মোল্লা বলেন, রাস্তাটির যেই অবস্থা তাতে যে কোন সময় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সড়কটি দ্রুত মেরামত করা খুবই জরুরি।

পরিবহন শ্রমিক আলম মিয়া বলেন, পশ্চিমপাড়ে সড়কটির অর্ধেকের বেশি স্থানে খানাখন্দ হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। বৃষ্টির সময় এই সমস্যা আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে। ভাঙ্গা অংশটুকু তারাতাড়ি মেরামত দরকার।

কোটালীপাড়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভাঙ্গা অংশটুকু মেরামতে জন্য জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বলা হয়েছে। আশাকরছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


নবীনগরে তালের চারা রোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে উপজেলা কৃষি প্রণোদনা পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিবপুর-রাধিকা আঞ্চলিক মহাসড়ক, মহেশ রোড় এবং বড়াইল- কৃষ্ণনগর সড়কে ২০০টি তালের চারা রোপণ করা হয়। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন, আরো উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহসানউল্লাহ, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শাহআলম মজুমদার, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র দত্ত, উপসহকারী কৃষি অফিসার নূর নবী, ফারুক আহমেদ, জাহিদুল ইসলাম, স্থানীয় কৃষকবৃন্দ। এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান-‘তাল গাছ আমাদের পরিবেশের বন্ধু। এর শিকড় মাটির ক্ষয় রোধ করে, আর পাতা ছায়া দেয়। এমনকি বজ্রপাত প্রতিরোধে ও তাল গাছের ভূমিকা রয়েছে। বিজ্ঞান বলে- উঁচু ও একক অবস্থানে থাকা তালগাছ বজ্রপাতের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক’। নবীনগর উপজেলায় ২০০টি তালের চারা এবং তাল গাছ রক্ষার জন্য বেড়া (খাঁচা) একযোগে স্থাপন করা হয়েছে।

আশাকরি সরকারের পাশাপাশি এই বর্ষা মৌসুমে স্থানীয়দের উদ্যোগেও তালের চারা রোপণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রাজীব চৌধুরী জানান-‘তাল গাছ রোপণের পাশাপাশি সরকারের প্রণোদনার আওতায় নবীনগর উপজেলায় ১৭০০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে চারটি করে (নিম, বেল, জাম, কাঁঠাল) চারা বিতরণ করা হবে"। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও ফলের চাহিদা মিটাতে এই উদ্যোগ ভালো ভূমিকা পালন করবে।


টানা বর্ষণে ডুবেছে ফেনী শহর, ভেঙেছে মুহুরীর বাঁধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ফেনীতে সোমবার (৭ ই জুলাই ) দুপুর ১২টা হতে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি মৌসুমের সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

টানা বর্ষণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে গেছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শহরবাসী। বৃষ্টির এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দুর্যোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, আগামী ২-৩ দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। শহরের অধিকাংশ বাড়ির নিচতলায় পানি উঠে গেছে। সড়কে কোমর পরিমাণ পানি থাকায় স্কুলে যেতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে পানি ঠেলে হেঁটে ও রিকশায় চড়ে গিয়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, রামপুর শাহীন অ্যাকাডেমি, পাঠান বাড়ি, নাজির রোড, পেট্রো বাংলাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের পাশে দোকানগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বিকল হয়ে পড়ে অনেক গাড়ি। সকাল থেকে সড়কে আটকে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।

পানি উঠে যাওয়ায় আজ সকাল থেকে শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

দুপুর ১২টার দিকে শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় কোমর পানি জমে থাকতে দেখা যায়। বেশ কয়েকটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এ সময় বিকল হয়ে সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে ভারী বৃষ্টিতে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা সদরের শ্রীপুর রোডে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি দোকান ধসে পড়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ কারণে নিলক্ষ্মী-গাবতলা সড়কে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে ভারী বৃষ্টি হলে নদীর পানি বাড়বে। ভাঙনরোধে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’


অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদে তিতাস গ্যাস কর্তৃক অভিযান

আপডেটেড ৮ জুলাই, ২০২৫ ১৫:৪১

তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ০৭ জুলাই (সোমবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -রুপগঞ্জ -এর আওতাধীন গোলাকান্দাইল, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৪১৫ বাড়িতে ৯২৫ টি চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, ৩" ডায়া পরিত্যক্ত বিতরন লাইন থেকে মাছরাঙা কয়েল ফেক্টরীর ২'' ডায়া বিশিষ্ট অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন ব্যাসের ২৩০ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। প্রতিটি বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট থেকে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।

একই দিনে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক রাজস্ব শাখা -ভালুকা ও জোবিঅ -ভালুকা -এর বিশেষ অভিযানে বকেয়ার জন্য ২টি আবাসিকের ০৩টি ডাবল চুলা ও অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনায় গ্যাস ব্যবহার করায় ৬টি আবাসিকের ৮টি ডাবল চুলা সহ মোট ০৮টি আবাসিকের ১১টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এছাড়া, বাইপাস লাইন এর মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করায় মেসার্স আল মদিনা বোর্ড মিল, মুন্সিগঞ্জ এর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ০৭ জুলাই, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ২৬৯টি শিল্প, ২৫৮টি বাণিজ্যিক ও ৪৪,৮৬৪টি আবাসিকসহ মোট ৪৫,৩৯১ টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ৯৮,১৪৭টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ১৮৬ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।


কুষ্টিয়ায় একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যু: ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।

সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।

মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।


সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে ২১ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে ২১ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কক্সবাজারের পেকুয়া থানার তিনটি মামলায় রিমান্ড শেষে আজ মঙ্গলবার সকালে দিকে তাঁকে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবিরের আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতে নিযুক্ত রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) গোলাম সরওয়ার বলেন, জাফর আলমকে গত ১৮ জুন চকরিয়া থানার পাঁচটি মামলায় ১৪ দিন এবং পরে পেকুয়া থানার তিনটি মামলায় ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মোট ২১ দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ আজ জাফর আলমকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

চকরিয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় জাফর আলমকে আদালতে আনা হয়। আদালত তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

গত ২৭ এপ্রিল ডিবি পুলিশ ঢাকার ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করে জাফর আলমকে। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন অংশ নিয়ে হেরে যান। জাফর আলম ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন।


ব্রেন স্ট্রোক করে মারা গেছেন ঢাবি শিক্ষার্থী আহসান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুর রহমান (২২) মারা গেছেন।

সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

আহসানের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার লাশ গ্রামের বাড়ি পলাশে নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, রবিবার (৬ জুলাই) রাতে ব্রেন স্ট্রোক করে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে শরীরের বাম অংশ অবশ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আহসান। এরপর আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলেন না তিনি।

শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, আহসানের মৃত্যুতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ আজ (মঙ্গলবার) এক দিনের শোক পালন করবে। এই উপলক্ষে বিভাগের সব ক্লাস বন্ধ থাকবে।

এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমান হলে আজ এশার নামাজের পর দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বুধবার আসরের নামাজের পর ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদেও তার জন্য দোয়া করা হবে।


বিদেশি জাতের আম চাষে নতুন দিগন্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। ধান, চালে বিখ্যাত হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষ করে এ জেলার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার যেদিকে দুচোখ শুধুই আম গাছের সাড়ি। আর থোকায় থোকায় ঝুলছে নানা জাতের আম। তবে দেশীয় নানা জাতের আমের পাশাপাশি আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি জাতের আম চাষ। দেখতে সুন্দর ও আর্কষণীয়, ফলন ভালো এবং স্বাদ ও গুণগত মান ভালো হওয়ায় ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

নওগাঁ জেলার মাটি ও আবহাওয়া বিদেশি জাতের আম চাষ উপযোগী হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। এতে দিন দিন বাগানের পরিমাণও বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোক্তাদের খাবারে আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে এবং কৃষি খাত হয়ে ওঠবে আরও লাভজনক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় এ বছর ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। যা থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার টনের বেশি আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২০ হেক্টর বাগানে বিদেশি বিভিন্ন জাতের আম বাগান রয়েছে। যা থেকে বছরে প্রায় দেড় হাজার টন আম উৎপাদন হয়। ৫ হাজার টাকা মণ হিসেবে যার বাজারমূল্য প্রায় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলার আংশিক এলাকা। এসব উপজেলায় প্রধান অর্থকরি ফসল ছিল আমন ধান ও গম। পানি স্বল্পতার কারণে এক সময় এসব এলাকায় বৃষ্টিনির্ভর একটিমাত্র ফসল আমন ধানের ওপর নির্ভর করতে হতো। তবে গত একযুগের ব্যবধানে বরেন্দ্রের মাঠগুলো এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। ধানের আবাদ ছেড়ে চাষিরা এখন আম চাষে ঝুঁকছেন। এসব উপজেলায় সুস্বাদু ও সুমিষ্ট আম্রপালি, গোপালভোগ, ফজলি, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, আশ্বিনা, বারী-৪, গুটি এবং বিদেশি জাতের পালমার, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই ও কিউজাইসহ অন্তত ৩০ জাতের আম চাষ হচ্ছে। এসব আম ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এমনকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

জেলার সীমান্তঘেরা উপজেলা সাপাহারের বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের তরুণ উদ্যোক্তা সোহেল রানা। তার ৭৫ বিঘা জমিতে আম্রপালি, ল্যাংড়া ও বারি-৪ সহ বিদেশি জাতের আম রয়েছে। তবে এর মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে বাণিজ্যিভাবে বিদেশি জাতের ৯ বিঘাতে জমিতে ব্যানান ম্যাংগো ও ২ বিঘাতে রেড পালমার, মিয়াজাকি, চিয়াংমাই ও কিউজাইসহ ৮ জাতের আম রয়েছে। থোকায় থোকায় ঝুঁলছে বাহারি রঙের আম। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও তেমন সুস্বাদু।

কথা হলে সোহেল রানা প্রতিবেদককে বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে এসব জাতের আমের কাটিং কলম সংগ্রহ করে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুরু থেকেই ব্যানান ম্যাংগো বাগান রয়েছে। এ আম ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়ে থাকে। দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে আরও বেশি জমিতে বাণিজ্যিভাবে বিদেশি জাতের আম বাগান করা হবে বলে জানান এ উদ্যোক্তা।

তার মতো অনেক কৃষক এখন বিদেশি জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন। কৃষকদের মাঝেও দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে- বারোমাসি বা স্বল্পসময়ে ফল দেয় এবং গাছে ফলন ভালো হয়। দেখতে সুন্দর ও আকর্ষণীয় এবং স্বাদ ও গুণগত মান ভালো। এতে ভোক্তাদের মাঝে এসব আমের চাহিদা বেশি। ফলে বাজারমূল্যও তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা কম সময়ে বেশি ফলন পায় এবং অধিক লাভবান হয়। বাজারমূল্য ও লাভের সম্ভাবনার কারণে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই অনেক কৃষক বিদেশি জাতের আম চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলার পাতারি গ্রামের আম চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন- গত ৩ বছর আগে ২৫ কাঠা জমিতে ব্যানানা ম্যাংগোর বাগান করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ায় সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে বাগান করেছি। গত বছর ৫ হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। এবছর ভালো দাম আছে। আরও দাম বাড়বে। ৭-৮ হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়।

আরেক আম চাষি মো. রাকিব হোসেন বলেন- ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি ও কিউজাই আমের বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব আমের বাগানও সম্প্রসারণ হচ্ছে। রপ্তানি করে ভালো আয় করা হয়। আগামীতে বিদেশি জাতের আমের চাহিদা বাড়বে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন- ইতোমধ্যে এ জেলা আমের বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এ জেলার মাটিতে দেশি আমের পাশাপাশি বিদেশি জাতের আম চাষ উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ বাড়ছে। অনেক সৌখিন চাষি বিদেশি জাতের আম বাগান করছেন। তারা ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


বরিশাল বিভাগজুড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

হুমকিতে নদীতীরের জনপদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তুহিন, বরিশাল

বরিশাল বিভাগে দিনে-রাতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অন্তত ৭০টি স্পটে কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন হচ্ছে প্রতিদিন। জন্ম দিচ্ছে ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের।

বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ নদ-নদী এখন বালু খেকোদের কবলে। কীর্তনখোলা, মেঘনা, তেঁতুলিয়া, বলেশ্বর, পায়রাসহ প্রধান নদীগুলোতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে দিনের পাশাপাশি রাতেও। বিশেষ করে বরিশাল শহরের পাশঘেঁষা চরমোনাই এলাকায় সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় বালু উত্তোলন। রাতভর চলে এই কার্যক্রম, সকালেই জাহাজ বোঝাই হয়ে যায় বালুতে। শ্রমিকরা নিজেরাই অকপটে স্বীকার করছেন, তাদের কার্যক্রমের কোনো বৈধতা নেই।

বরিশাল হিজলা উপজেলার নয়াভাঙনী নদীর গুয়াবাড়িয়া, হরিনাথপুর এবং মেঘনা নদীর গঙ্গাপুর, বদরপুর, আবুপুর, কোদালপুর, পট্টিসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলছে বালু উত্তোলনের হিড়িক।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি রাতে নদীর বুক চিরে বালু তোলা হয়; অথচ প্রশাসনের তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকেও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙনের ভয়াবহতা। অনেক স্থানে চাষযোগ্য জমি ও ঘরবাড়ি ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত এই বালু সিন্ডিকেটে। প্রশাসনের নাকের ডগায় চললেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।

পটুয়াখালীর আগুনমুখা, পায়রা, তেঁতুলিয়া ও পিরোজপুরের বলেশ্বর, কচা নদীর চরখালীসহ অন্তত ৭০টি স্পটে প্রতিদিন চলে এই অপতৎপরতা। নদীর তীরের মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও হুমকির মুখে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এক হতাশা নিয়ে আল আমিন জানান, নদী ভাঙনে আমার বসতভিটা চলে গেছে। প্রতিবাদ করলে হুমকি আসে। প্রশাসন যদি কঠোর না হয়, আমরা সব হারিয়ে ফেলব।

সুজন সভাপতি মোবাশ্বির উল্যাহ চৌধুরী বলেন, এই অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে না, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও হুমকিতে ফেলছে। স্থানীয় প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া দরকার।

বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা রাতের বালু উত্তোলন নিয়ে তথ্য নিচ্ছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার জানান, নদী সুরক্ষায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেবে না।


নিলাম ছাড়াই ভবন ভেঙে ইট বিক্রি, তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সামসুজ্জামান সুমন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিলাম ছাড়াই ভবন ভেঙে বিক্রি করার অভিযোগ ওঠেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। এ নিয়ে গোটা উপজেলা জুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠেছে।

স্থানীয় ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন (ওয়াশ ব্লক) কাজের বরাদ্দ পাওয়ায় পুরোনো ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে পুরোনো ভবনের ইট, টিন বিভিন্ন সরঞ্জাম বিদ্যালয়ের মাঠে স্তূপ করে রাখা হয়। সেখান থেকে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ট্রলিতে উঠিয়ে গোপনে রাতের আঁধারে কয়েক হাজার ইট এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনী।

মাঝরাতে বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয়রা ইটসহ দুটি ট্রলি গাড়ি আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে শিক্ষিকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। এ সময়ে তারা গিয়ে গাড়ি থেকে ইট নামিয়ে নেন।

স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেনকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দুটি রুম নিলাম ছাড়াই ভেঙে ফেলে ইট বিক্রি করে প্রধান শিক্ষক। ২০ জুন রাতে ওই রুমের ইট গোপনে ট্রলিতে করে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী সেই ইটসহ ট্রলি আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। গত ২১ জুন সকালে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেন হেলাল ও কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ইট গাড়ি থেকে নেমে রেখে চলে আসেন। ঘটনার পরের দিন এলাকাবাসী ২২ জুন ইট চুরির মূল ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ দেওয়ার পরেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসারকে প্রধান করে ও আর একজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গত রোববার ওই কমিটি স্কুলে তদন্ত করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়লে তদন্ত না করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।

পরে নতুন করে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্য একটি কমিটি গঠন করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার।

এ বিষয়ে বাহাগিলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহজুবা উম্মে লাবনীর মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেন হেলাল মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কোনোভাবেই রেজুলেশন মূল্যে পরিত্যক্ত বিল্ডিং ভাঙতে পারবে না। নিয়ম হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার রেজুলেশন করে নিলামের মাধ্যমে বিল্ডিং ভেঙে ফেলতে পারেন। এ ব্যত্যয় ঘটলে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।


লোহাগাড়ায় হুমকির মুখে সোনাছড়ি সেতু

লোহাগাড়ায় হুমকির মুখে সোনাছড়ি সেতু।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুহাম্মদ হোছাইন, লোহাগাড়া

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে সোনাছড়ি সেতু। উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের মুন্সেফ বাজারের দক্ষিণে শমসু হাজি পাড়া এলাকায় রাতারছড়ার উপর নির্মিত হয়েছে সেতুটি। সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো মতে ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর নিচে পিলারের গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। সেতুর সংযোগ সড়কের দুপাশের মাটি ধ্বসে গেছে। মাঝখানে সামান্য অক্ষত রয়েছে। সেটিও যেকোনো সময় পানির স্রোতে মিশে যাবে। এটি দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন রোসাইঙ্গা ঘোনা, বড়ুয়া পাড়া এবং শমশু হাজি পাড়ার বাসিন্দারা। এ সড়কটি দিয়ে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা, চুনতি সরকারি মহিলা কলেজ, চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়, ফাতেমা বতুল মহিলা মাদ্রাসা, হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক স্কুল, মেহেরুন্নিছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আনসার ভিডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে থাকে।

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি ১৯৯৯ সালে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতুর আশেপাশে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। ফলে ধীরে ধীরে সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরতে শুরু করে। সেতুটি বর্তমানে পাঁচ ফুট নিচে দেবে গেছে। যেকোনো সময় সেতু ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইফরাদ বিন মুনীর বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, জনদুর্ভোগ লাঘবে সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হবে।


জামালপুরে জুলাই শহীদ পরিবারে সঞ্চয়পত্রের চেক বিতরণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের চেক বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার (০৭ জুলাই) বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সঞ্চয়পত্রের চেক তুলে দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম জানান, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের অনুকূলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ১০ লাখ টাকা করে মোট ৮০ লাখ টাকার আটটি চেক বিতরণ করা হয়েছে। জেলার সব শহীদ পরিবার ও আহত পরিবারের সদস্যদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইফতেখার ইউনুস, সাংবাদিক এম এ জলিল, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলে এলাহি মাকাম, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদর উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক আরাফাত হোসেন শাকিল, আহত সদস্য অম্লান সরকারসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জামালপুরে ১৭ জন শহীদ হয়েছেন।


বাংলাদেশের ১৭ কোটি ৫৭ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই কর্মক্ষম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হয়। এর অর্ধেক নারী এবং দুই-তৃতীয়াংশ (১১ কোটি ৫০ লাখ) কর্মক্ষম বয়সী, যাদের বয়স ১৫-৬৪ বছরের মধ্যে। জনসংখ্যার এমন সংখ্যাগত অবস্থা লাভজনক কাজে লাগানোর সুযোগ করে দেয়।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বার্ষিক প্রধান প্রকাশনা—বিশ্ব জনসংখ্যার অবস্থা (এসডব্লিউওপি) ২০২৫-এ এই অনুমান করা হয়েছে।

সোমবার(৭ জুলাই) রাজধানীর গুলশানের জাতিসংঘ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি ক্যাথেরিন ব্রিন কামকং আনুষ্ঠানিকভাবে এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

ক্যাথেরিন কামকং বলেন, ‘২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে বর্তমানে জনসংখ্যা ৮২০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ বলে অনুমান করা হয়। এর মধ্যে অর্ধেক নারী। আর দুই-তৃতীয়াংশ (সাড়ে ১১ কোটি) কর্মক্ষম বয়সী। এটি জনসংখ্যাগত লাভজনক কাজে লাগানোর একটি সুযোগ।’

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে বাংলাদেশের এই জনসংখ্যার ৭ শতাংশ (১ কোটি ২০ লাখ) ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী—যা জনসংখ্যার বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার শুরুর ইঙ্গিত দেয়।

ক্যাথেরিন কামকং বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ কিশোর-কিশোরী (প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ)। যাদের বয়স ১০ থেকে ২৪ বছর। আর বৃহত্তর যুব জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৮ শতাংশ (প্রায় ৫ কোটি)।

এ বছরের প্রকাশনার প্রতিপাদ্য ‘আসল প্রজনন সংকট – পরিবর্তনশীল বিশ্বের প্রজনন অধিকার অর্জনের প্রয়াস’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি ‘অতিরিক্ত জন্ম’ বা ‘কম জন্ম’– এই প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। প্রকৃত সংকট সংখ্যার নয়, এটি প্রজনন অধিকার বা ক্ষমতার সংকট।

ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি বলেন, ‘সারা বিশ্বে এবং বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে নারী এবং তরুণরা পদ্ধতিগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বাধার কারণে তাদের প্রজনন উদ্দেশ্য উপলব্ধি করতে পারছেন না।’

এই প্রতিবেদনটি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) পরিচালিত একটি বৈশ্বিক জরিপের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটির সঙ্গে একাডেমিক গবেষণা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রজনন ক্ষমতা ও প্রজনন অধিকার বিষয়ে একটি সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।

কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের মতো উচ্চ-আয়ের দেশগুলোতে নারীদের প্রজনন ক্ষমতা জনপ্রতি মাত্র ০.৮ সন্তানের মধ্যে নেমে এসেছে— যা বিশ্বব্যাপী সর্বনিম্ন।

অন্যদেকে আফ্রিকার কিছু দেশে উচ্চ প্রজনন হার রয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী নাইজারে সর্বোচ্চ মোট প্রজনন হার (টিএফআর) (প্রতি নারীর ৫.৮ শিশু) রেকর্ড করেছে।

বাংলাদেশও এর মধ্যে রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে দেখানো হয়েছে। যেখানে মোট প্রজনন হার (টিএফআর) ২.১ শতাংশ। বাংলাদেশের কিছু অংশে কিশোর বয়সে জন্মহার উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে— যার কারণ হলো বাল্যবিবাহ, গর্ভনিরোধের সীমিত সুবিধা এবং যৌন শিক্ষার অভাব।

১৪টি দেশের প্রমাণের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি অপূর্ণ প্রজনন আকাঙ্ক্ষার উপর আলোকপাত করেছে।

যদিও বেশিরভাগ মানুষ দুইটি সন্তান চায়, তবে অনেকেই ইচ্ছার চেয়েও কম সন্তান নিতে পারেন—বিশেষত বয়স বেশি হওয়া ব্যক্তিরা। অন্যদিকে, কেউ কেউ পরিকল্পনার চেয়েও বেশি সন্তানের প্রত্যাশা করেন, কিন্তু তারা পরিবার পরিকল্পনা সেবা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান বা সুযোগ-সুবিধা পান না।

ক্যাথেরিন কামকং বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয় অনেক বেশি, যার অর্থ হলো যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই তারা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নাও পেতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সরকার বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ০.৭ শতাংশ এবং সাধারণ বাজেটের ২ শতাংশ বিনিয়োগ করছে। আমরা আশা করি, এটি বাড়িয়ে জিডিপির ৫ শতাংশ এবং সাধারণ বাজেটের ১৫ শতাংশ করা হবে, কারণ দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে স্বাস্থ্য ও কল্যাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ‘এর ফলে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী, বিশেষ করে মিডওয়াইফ বা ধাত্রী নিয়োগ, মোতায়েন এবং টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এটি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং বিভিন্ন ধরণের গর্ভনিরোধক সরবরাহের নিরবচ্ছিন্ন সুযোগ তৈরি করবে, যা নারীদের পছন্দের সুযোগ করে দেবে।


banner close