মাগুরা সহ সারাদেশে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। রান্না বান্নাই আধুনিক জিনিসপত্র তৈরি হওয়াতে এখন আর সচরাচর দেখা যায় না মাটির কলস, হাড়ি, বাসন ইত্যাদি। ফলে পাল বংশের পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। সীমিত কিছু মাটির জিনিসপত্র তৈরি করে সংসার চালানো তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
একটা সময় পাল বংশ স্থাপত্য ও শিল্পকলার জন্য অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আনুমানিক ৭৮১ থেকে ১১৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাল বংশ বাংলায় প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করেছে। পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল। পরবর্তীতে ধর্মপাল ও দেবপাল এসে এই বংশের প্রসার ঘটান। দ্বাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পাল বংশের রাজত্বের অবসান ঘটে। পাল বংশের সেই রাজত্ব এখন আর না থাকলেও তাদের উত্তরশূরিরা এখনো অনেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের হাতের নিপুন কারু কাজের মাধ্যমে তারা বংশের নাম অক্ষুন্ন রেখেছেন।
মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় পাল বংশের বসবাস থাকলেও অভাবের তাড়নায় তারা এ কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন। সদর উপজেলার শ্রীকুন্ডি গ্রামে পাল বংশের হাতের তৈরি মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময় এই গ্রামে ৩০-৪০ ঘর পাল বংশের লোকজন বাস করত। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমিয়েছে। একটা সময় এই গ্রামের পালদের হাতে তৈরি মাটির জিনিসপত্রের খুব কদর ছিল। তাদের বাপ-দাদার আমলের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তারা এখনো এই কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি তাদের ছেলে মেয়ে ও ঘরের বউদেরকেউ এই কাজ শেখানো হয়। তারা মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, হাড়ি, কলস, মাটির ব্যাংক, ফুলের টব, বাসন, ফুলদানি, দইয়ের হাড়ি, ল্যাট্রিন এর চারি ইত্যাদি জিনিসপত্র বানাতো। শুধু তাই নয় এগুলো তৈরি করার পর হাতে সুন্দর করে নকশা কেটে রোদে শুকিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে সেগুলিকে রং করে বাজারে বিক্রি করতো। নিজেদের জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এগুলো তারা বড় বড় শহরে বিক্রি করতো। আগে সবকিছুর দাম কম থাকায় তাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যেত।
আগের দিনে দাদি নানীরা মাটির চুলায় মাটির হাঁড়িতে ভাত রান্না করত মাটির কলসে পানি রাখতো বাসনে ভাত খেত। কিন্তু বর্তমানে শহরের পাশাপাশি অনেক গ্রামেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাই এসব হাড়ি, কলস, বাসন এখন আর কেউ ব্যবহার করে না। এখন শুধুমাত্র মাটির চারি দইয়ের হাড়ি আর ব্যাংক তৈরি করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সবকিছুতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও ছোঁয়া লাগেনি মাটির জিনিসপত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে। সেই মান্ধাতার আমলের মাটির চুল্লি, কাঠের জালানী ও মাটির ছাঁচ দিয়েই কাজ সারতে হয় তাদের।
বর্তমানে জ্বালানি এবং রঙের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই অভাবের তাড়নায় এ কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করছে। বর্তমানে এই গ্রামে ১৪-১৫ ঘর পাল বাস করে।
মাগুরা শ্রীকুন্ডি গ্রামে সরেজমিনে গেলে সঞ্জয় কুমার পাল দৈনিক বাংলাকে জানান, আমাগের বাপ-দাদার আমলের ব্যবসা আমরা ছাড়তে পারবো না। সরকার যদি আমাগের একটু সাহায্য করতেন তাহলে আমরা এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতি পারতাম । আমরা এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোনদিন কোন অনুদান পায়নি।
সঞ্জয় কুমার পালের মত একই এলাকার দিলিপ পাল, সুভাষ পাল, নির্মলপাল, হিমপাল, নিমাই পাল, সোনাপাল এরকম আরো অনেকেই এই একই কথা বলেছেন।
একই এলাকার রানী পাল বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ এখন আমি মাটির জিনিসপত্র বানায়ে সংসার চালাই। কিন্ত খরি আর রঙের দাম অনেক বেশি সেই সাথে এগুলো বাজারে আনানিয়ার খরচও অনেক হওয়ায় আমাগের অনেক কষ্ট হয়ে যায়। তাই সংসার চালাতি কষ্ট হয়। টাকার জন্যি আমরা ঠিক মত ওষুধ কিনতি পারিনি।
সঠিক তদারকির অভাবে একদিন হয়তো পাল বংশের এই ঐতিহ্য ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাবে। গ্রামবাসীরা এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারাট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচন শেষেই তিনি রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। নির্বাচনে যে সরকার গঠিত হবে সেটির কোনো পদেই থাকবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি।
ড. ইউনূস লিখেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করেছি : জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।’
তিনি বলেছেন, ‘আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনাগুলো বলতে পারবে। আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রফেসর ইউনূসের নিবন্ধটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
এক বছর আগে, এই মাসেই বাংলাদেশের হাজার হাজার সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শিক্ষার্থী, যাদের পেছনে ছিল সমাজের সব স্তরের অগণিত মানুষের সমর্থন, আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যা শেষ পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছিল, তার মাধ্যমেই তারা একজন স্বৈরাচারকে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।
এরপর যে ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে ছাত্রনেতারা আমাকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ জানায়। এই সরকারের দায়িত্ব ছিল দেশকে স্থিতিশীল করা এবং গণতন্ত্রের নতুন পথ তৈরি করা। শুরুতে আমি রাজি হইনি। কিন্তু যখন তারা জোর করল, তখন আমি তরুণদের জীবন উৎস্বর্গের কথা ভাবলাম, আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারলাম না। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করি।
এই গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা থেকে। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়েছিল। এই বিপ্লব তরুণদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে, যা দেখায় কীভাবে তারা মানবজাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো—যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং বৈষম্য—মোকাবিলার জন্য এগিয়ে আসতে পারে।
আমরা ভাগ্যবান যে তারা ‘তাদের পালা আসার জন্য’ অপেক্ষা করেনি। যখন সভ্যতা অনেক দিক থেকে ভুল পথে চালিত হচ্ছে, তখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।
স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে আমাদের উত্তরণের একটি স্পষ্ট প্রমাণ ছিল যখন দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা তখন অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং চুরি যাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধারে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে, আমরা তখনো বুঝতে পারিনি বিশ্ব আমাদের এই অগ্রগতিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। ডেসারেট নিউজ আমাদের এই যাত্রার চমৎকার কাভারেজ দিয়েছে, যা আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি।
আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার ছিল গণঅভ্যুত্থানে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছিল—সেই হাজার হাজার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। এরসঙ্গে আমরা বিগত সরকার ও তার সহযোগীদের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে সাবেক স্বৈরাচারী সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে। এই অর্থ পুনরুদ্ধার করার জন্য যুদ্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন অব্যবস্থার মাত্রা দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল। অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছিল।
সরকারি কর্মচারীরা, যারা ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য না দেখানোর কারণে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তারা ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।
ধীরে ধীরে আমরা পুনর্গঠন শুরু করেছি। যেসব রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, তাদের পাশাপাশি নতুন গঠিত দলগুলোও নতুন ধারণা, শক্তি এবং কর্মপ্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। সশস্ত্র বাহিনী, যারা ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা চালাতে দেয়নি, তারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।
আমি এটি স্পষ্ট করে দিয়েছি: আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি এরপরের সরকারের কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকব না।
আমাদের প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকসহ সব যোগ্য নাগরিককে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া একটি বিশাল কাজ। কিন্তু আমরা এটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আমরা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন এনেছি। যেন আমাদের প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক জোরদার করা যায়।
বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির একটি মূল কেন্দ্র হতে পারে এবং হওয়া উচিতও। আমরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ।
রুবিওরে সঙ্গে সম্প্রতি আমার একটি ফলপ্রসূ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, যা আমাদের উভয় দেশের বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক ছিল।
যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘও আমাদের সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমরা এই পথে একা নই।
নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের নিয়ে একটি ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনা। যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়।
বাংলাদেশ যদি শেষ পর্যন্ত এমন একটি দেশে পরিণত হয় যেখানে দেশের সব মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। তবে তা হবে লাখ লাখ বাংলাদেশির দৃঢ়তা, কল্পনা এবং সাহসের ফল।
এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে যারা আছেন তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। তারাই আমাদের সর্বোত্তম আশা—এবং সম্ভবত আমাদের শেষ আশা।
দেশে ‘একাত্তরকে ভুলিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে’ বলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে মতবিনিময় অনুষ্ঠান এই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কথা বারবার স্মরণ করতে চাই। এজন্য চাই যে, ১৯৭১ সাল আমাকে একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছিল, ভূ-খণ্ড দিয়েছিল, আমাকে একটা স্বাধীন সত্ত্বা দিয়েছিল এবং সেজন্য আজকে আমার অস্তিত্ব আছে, আমি টিকে আছি। আমি স্মরণ করতে চাই, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের শহীদদের। কারণ তারা আমাদের একটা গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। এই দুইটা জিনিসই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আজকে একটা প্রচ্ছন্ন প্রচেষ্টা আছে, একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার। এটার বিরুদ্ধে দেশের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ২৪’এর জুলাই-আগস্ট যেভাবে সত্য, ঠিক একইভাবে সত্য কিন্তু একাত্তরের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।’
তিনি বলেন, ‘আজকে নতুন করে একটা কথা উঠছে, ষড়যন্ত্র চলছে যে, আপনার বাংলাদেশে এখানে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এই উগ্রবাদকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। তাহলে আমাদের বাংলাদেশের যে আত্মা সেই অস্তিত্ব আমাদের রক্ষা পাবে না। এই কথাটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে। আমি কথাটা আজকে এজন্য আরও বেশি করে বলছি যে, এইখানে বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি কেউ করবেন না, অতীতে যা হয়েছে হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য, বাংলাদেশকে সামনে নেওয়ার জন্য, বাংলাদেশকে আরও উন্নত করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর যারা আমাদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ভোট নিয়ে দেশ শাসন করেছে তারা ১৫ বছর আমাদের বন্ধু হিসেবে মনে করেননি। তারা মনে করেছেন প্রজা হিসেবে। আমাদের ওপর অত্যাচার করেছেন, নির্যাতন করেছেন, আমাদের দেশের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম যে, এখন ব্যাংককে সবচাইতে যেগুলো অভিজাত এলাকা সেই এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা যে গাড়ি কিনছেন সেই গাড়িগুলো কোনটাই ২ কোটি, ৩ কোটি টাকার কম নয়। এসব টাকা কোত্থেকে গেল? এই দেশের সম্পদকে তারা পাচার করেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, নতুন করে কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক যে কাঠামো সে কাঠামো ভেঙে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এ দেশের সম্পদকে লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। প্রায় ৮৮ লাখ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে। আমাদের সম্পদ বলতে আর কিছু নেই, সব পাচার হয়ে গেছে। আমাকে একজন অর্থনীতিবিদ জিজ্ঞেস করছিলেন, দেখে শুনে তো মনে হচ্ছে যে, এর পর তোমরাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবে। জনগণ তোমাদের ওপরে আস্থা রাখবে। তো তোমরা দেশ চালাবে কোত্থেকে? কারণ টাকা তো সব পাচার হয়ে গেছে অর্থাৎ আমাদের দেশের অর্থনীতির অবস্থা কী করুণ করেছে সেই জিনিসটাই শুধু আমি আপনাদের বললাম।’
বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক, ভৌগোলিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি) পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য উপযোগী নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তারেক রহমান এ কথাগুলো বলেন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত এই সভায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিআর পদ্ধতির সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘কাকে কিংবা কোন ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানো হচ্ছে, অবশ্যই সেটি জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত যে পিআর পদ্ধতি, এই পিআর পদ্ধতিতে কোন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা হচ্ছে, জনগণের সেটি জানার পরিষ্কার কোনো সুযোগ নেই। যে কারণে কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ব্যক্তি জাতীয় সংসদে বা সরকারে প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে অবশ্যই তাদের জনগণের মুখোমুখি হয়ে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে জনগণের রায় অর্জন করা জরুরি।’
পিআর পদ্ধতি এবং আরও দুয়েকটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ভিন্নমত রয়েছে, প্রতিটি বিষয়ই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুন্দরভাবে সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘যারা আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করছেন, এর মাধ্যমে আপনারা হয়তো নিজেদের অজান্তেই গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে তুলছেন। একই সঙ্গে পতিত পরাজিত পলাতক ফ্যাসিস্ট সরকারের পুনর্বাসনের পথও হয়তো সুগম হচ্ছে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বক্তব্য বা নিত্যনতুন শর্ত জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে মানুষ বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিতে পারে, এই ভয়ে পলাতক স্বৈরাচার ‘বিএনপির বিজয় ঠেকাও’– এর মতো অপরাজনীতি চালু করেছিল। স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের রাজপথের সহযোদ্ধা কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর আচরণেও সেই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যারা বিএনপির বিজয় ঠেকানোর জন্য নানা অপকৌশল বা শর্তের বেড়াজালের আশ্রয় নিচ্ছে, তাদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করুন। জনগণের শক্তির ওপর আস্থা রাখুন। বিএনপির বিজয় যদি জনগণ দিয়েই থাকে, সেই বিজয় ঠেকাতে গিয়ে জনগণের রায় প্রদানের পথ রুদ্ধ করবেন না।’
তারেক রহমান বলেন, প্রতিটি বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হতে হবে, এমন নয়। তবে ফ্যাসিবাদ ঠেকানো বা দেশকে তাবেদারমুক্ত রাখার জন্য স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে অবশ্যই ঐকমত্য ও ঐক্যবদ্ধ থাকা অত্যন্ত জরুরি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আমাদের সামনে একটি বিশাল বড় সুযোগ। সারা দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাই ও বোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনে বিএনপি আপনাদের সমর্থন এবং আপনাদের সক্রিয় সহযোগিতা চায়।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব হামলার পেছনে ছিল অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা অবৈধ লোভ। ধর্মীয় কারণে এসব হামলা হয়নি। তিনি বলেন, ‘কোনো কারণেই যেন কারও ওপর হামলা বা অবিচার না হয়, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব।’
বিএনপির আয়োজনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সারাদেশ থেকে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।
রাজধানীর রমনা থানা এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় মির্জা ফখরুলসহ ৬৫ জনকে অব্যাহতি দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি প্রদান করেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ও বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম প্রমুখ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি’র পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর রমনা থানা এলাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলটির নেতাকর্মীরা আসেন। এ সময় তারা যানবাহনে ক্ষতিসাধন ও পুলিশের কাজে বাধা প্রদান করেন।
এ ঘটনায় একই বছরের ৩১ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে রমনা থানার এসআই আউয়াল এই মামলা করেন।
২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মামুন হাসান আদালতে পৃথক দুটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে মির্জা ফখরুলসহ ৬৫ জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। পরবর্তীতে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তাদের অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে বিস্ফোরণ আইনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের ব্যবস্থা (UNFPA,UN Women, ILO, UNDP, UNESCO) আজ একটি ইয়ুথ ভয়েস মেকানিজম (YVM) এর ডিজাইন ফেইজ চালু করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাহবুব-উল-আলমের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য নীতি উন্নয়ন এবং শাসন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের তরুণদের কণ্ঠস্বরকে আরও জোরদার করা, দেশের ভবিষ্যত গঠনে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। উক্ত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ ব্যবস্থার (UNFPA, UN Women, ILO, UNDP, UNESCO) প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম বলেন "ইয়ুথ ভয়েস মেকানিজমকে সফল করার জন্য আমরা জাতিসংঘ ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশের তরুণদের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ" ।"এই উদ্যোগ আমাদের তরুণদের চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষা আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করবে এবং নিশ্চিত করবে যে তাদের কণ্ঠস্বর আমাদের নীতি ও কর্মসূচিতে প্রতিফলিত হয়।"
সচিব বলেন, এই প্রজন্ম আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং গতিশীল একটি শক্তিশালী শক্তি যা আমাদের সমৃদ্ধির দিকে চালিত করে। বাংলাদেশী তরুণরা অসাধারণ স্থিতিস্থাপকতা এবং নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছে। আনুষ্ঠানিক শাসন কাঠামোতে তাদের প্রতিনিধিত্ব সীমিত রয়ে গেছে, বিশেষ করে তরুণী এবং প্রান্তিক, আদিবাসী, গ্রামীণ এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের জন্য। তিনি আরও বলেন, ইয়ুথ ভয়েস মেকানিজমের লক্ষ্য এই পরিবর্তন আনা। জাতিসংঘের সহায়তায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, এটি যুব সম্পৃক্ততার জন্য একটি কাঠামোগত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি জরিপ, কর্মশালা, ফোকাস গ্রুপ এবং একটি যুব-নেতৃত্বাধীন স্টিয়ারিং কমিটির মাধ্যমে তরুণদের দ্বারা সহ-পরিকল্পিত।
“বাংলাদেশ যখন একটি ঐতিহাসিক ক্রান্তিলগ্নে প্রবেশ করছে, তখন যুব কণ্ঠস্বর ব্যবস্থা তরুণদের ন্যায়বিচার, সমতার জন্য তাদের কণ্ঠস্বর উত্থাপনের একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে, যাতে তারা আজ এবং ভবিষ্যতে তাদের প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলিতে তাদের মতামত ভাগ করে নিতে পারে। গত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সময় প্রধান উপদেষ্টা ড। মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে এই ব্যবস্থাটি সাড়া দেয়," বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, "শান্তিপূর্ণ এবং কাঠামোগত উপায়ে অর্থপূর্ণ সম্পৃক্ততার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, আমরা তরুণদের তাদের অনন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে অবদান রাখতে এবং তাদের দেশের জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই ভবিষ্যত গঠনের ক্ষমতায়ন করছি।"
উল্লেখ্য, YVM তরুণদের, বিশেষ করে প্রান্তিক, গ্রামীণ এবং অবহেলিত সম্প্রদায়ের, সরকারি অংশীদারদের সাথে সম্পৃক্ত হতে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অবদান রাখার জন্য একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক চ্যানেল তৈরি করার জন্য ডিজাইন করা হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রতিক্রিয়ায় এই উদ্যোগটি এসেছে এবং বাংলাদেশ জুড়ে অগ্রগতি এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকৃতি দেয়।
নকশা পর্বে একটি মিশ্র-পদ্ধতিগত অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, যার মধ্যে বিভাগীয় কর্মশালা, ফোকাস গ্রুপ আলোচনা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যদাতাদের সাক্ষাৎকার এবং জাতীয় যুব জরিপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে যাতে একটি যুব কণ্ঠস্বর ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করতে পারে তা ডিজাইন করা যায়। এই পদ্ধতিগুলি নিশ্চিত করবে যে এই ব্যবস্থাটি সারা দেশের তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতা, আকাঙ্ক্ষা এবং ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি।
YVM একটি বহুমুখী পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করবে যা ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং অর্থপূর্ণ সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সংলাপ এবং পরামর্শের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম স্থাপন, বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সংগ্রহের জন্য আঞ্চলিক কর্মশালা আয়োজন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে এই কার্যক্রমগুলির সমন্বয় করবে, সহযোগিতা সহজতর করার জন্য এবং YVM-এর ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রতি প্রতিক্রিয়াশীলতা নিশ্চিত করার জন্য যুব সংগঠন, সরকারি সংস্থা এবং জাতিসংঘের অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সরকার প্রদত্ত ভিডব্লিউবি ৩০ কেজি চালের কার্ড বিতরণের সময় প্রকাশ্যে এক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। এ সময় এক মহিলা ইউপি সদস্য উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ করে দুই শতাধিক কার্ড পানিতে ফেলে দেন।
তিনি হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৩, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য নাসরিন পারভীন কবির।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন। তিনি বলেন,
“ঘটনাটি আমার নজরে এসেছে। এখন পর্যন্ত যা জেনেছি, মহিলা ইউপি সদস্য নিজের নামেও কার্ড নিয়েছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগ রয়েছে, হ্নীলা ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন কবির নিজের নামে এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের নামে একাধিক চালের কার্ড বরাদ্দ নিয়েছেন। পরে কার্ড বিতরণের সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রায় দুই শতাধিক কার্ড পানিতে ছুঁড়ে ফেলেন। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং ঘটনাস্থলে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হ্নীলা ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন কবির বলেন,
“আমি নিজের নামে কার্ড করেছি এটা সত্যি। আমার রাগ উঠে গিয়েছিল বলেই কার্ডগুলো পানিতে ফেলে দিয়েছি। কারণ চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেন না। তিনি আমার অনেক কার্ড বাতিলও করে দিয়েছেন। ফেলে দেওয়া কার্ডের সংখ্যা দুই শতাধিকের বেশি হবে। আমার এবং মেয়ের নামে কার্ড করার বিষয়টিও ঠিক আছে। আসলে এসব কার্ড আমি অসহায় মেয়েদের জন্যই করেছি।”
ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় কার্ড বিতরণের সময় ওই ইউপি সদস্য নিজ হাতে সরকারি চালের কার্ড ছিঁড়ে ফেলে পানিতে নিক্ষেপ করছেন। এ দৃশ্য জনমনে ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দেয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, “সরকারের দেওয়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভিডব্লিউবি চালের কার্ড প্রকৃত দরিদ্রদের হাতে না গিয়ে জনপ্রতিনিধির আত্মীয়-স্বজন ও প্রভাবশালীদের দখলে চলে যায়। এবার সেটির নগ্ন প্রমাণ মিলেছে আজকে।”
হ্নীলা ইউনিয়নের মোঃ জুনায়েদ বলেন,
“সরকারের পক্ষ থেকে VWB প্রোগ্রামের আওতায় গরিব ও মেহনতী মানুষের জন্য ৩০ কেজি চালের কার্ড বরাদ্দ থাকে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য নিজেই সেই কার্ড নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, নিজের মেয়ে ও দেবরের স্ত্রীসহ আত্মীয়দের নামেও কার্ড নিয়েছেন। এতে প্রকৃত গরিব মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আজ তিনি শত শত কার্ড ফেলে দিয়ে আসলে গরিব মানুষের পেটে লাঠি মারলেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও তার শাস্তি দাবি করছি।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ তারিখ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ১২ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন মাতারবাড়ী কর্তৃক কক্সবাজারের মহেশখালী থানাধীন ধলঘাটা পানিরছড়া সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকার একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৪ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও ৮ রাউন্ড তাজা কার্তুজসহ ১ জন কুখ্যাত সন্ত্রাসী কে আটক করা হয় ।
জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত আসামীর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ তারিখ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ ঘটিকায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ ২০২৫ শীর্ষক একটি পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO)-এর Annex-17 Standard অনুযায়ী প্রতি দুই বছর অন্তর এ ধরনের মহড়া আয়োজন বাধ্যতামূলক। হাইজ্যাক, বোমা হামলাসহ নানাবিধ ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা যাচাই এবং অংশীজনদের প্রস্তুতি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়।
মহড়ায় অংশগ্রহণ করে বেবিচক, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বাংলাদেশ পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, Air Astra Limited, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা।
মহড়ার দৃশ্যপটে দেখা যায়, সকাল ১১:১৫ মিনিটে XXXXXX ফ্লাইট XX-XXX ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে। নির্ধারিত সময় সকাল ১১:৪৫ মিনিটে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার আগে কন্ট্রোল টাওয়ারে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির ফোন আসে। কলদাতা জানান, উক্ত বিমানে বোমা স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল টাওয়ার তাৎক্ষণিকভাবে এই বিষয়টি বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কে অবহিত করা হয়। পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক পূর্ণ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং Emergency Operations Center সক্রিয় করার নির্দেশ দেন। পরে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে Emergency Responding Activities পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানের চিফ কোর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মোঃ আসিফ ইকবাল, বিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি(পি) (Air Commodore Md Asif Iqbal, BUP, ndc, afwc, psc, GD(P))। উক্ত অনুষ্ঠানের অনসীন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এ.কে.এম বাহাউদ্দিন জাকারিয়া (A.K.M Bahauddin Zakaria)।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতার শুরুতে সকল অংশীজনকে এই মহড়ায় অংশগ্রহণের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এ ধরনের মহড়া কেবল দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করতেই নয়, বরং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্মানিত যাত্রীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মহড়ার সফলতা সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দায়িত্বশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনা দ্রুত ও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। অংশীজনদের প্রস্তুতি ও দক্ষতা প্রত্যক্ষ করে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, আজকের মহড়ায় যুক্ত প্রতিটি সংস্থা প্রশংসনীয় পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। সমাপনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি সকলকে জাতীয় স্বার্থে আরও আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করেছে। রানওয়ে ওভারলে কাজের প্রায় ৭০% সম্পন্ন হয়েছে। নতুন এপ্রোন/ টারমার্ক নির্মাণকাজ সদ্য শেষ হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১২,০০০ ফিট পেরিমিটার রোড সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি প্রায় ৩,০০০ ফিট কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এসবের পাশাপাশি অন্যান্য উন্নয়নমূলক কার্যক্রমও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। এসব উন্নয়ন কার্যক্রম সম্মানিত যাত্রীদের জন্য আরও আরামদায়ক ও মানসম্মত ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে এবং একই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করে তুলবে।
এছাড়া মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর আবু সাঈদ মেহ্বুব খান, বিএসপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি (Air Commodore Abu Sayeed Mehboob Khan, BSP, BUP, ndc, psc)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের কর্মকর্তাবৃন্দ, অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যমের ব্যক্তিবর্গ।
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে পুলিশকে ছুরিকাঘাতকারী যুবক সিজু মিয়ার পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে (সাঘাটা) মামলার আবেদনটি করেন নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম। আদালতের বিচারক পাঁপড়ি বড়ুয়া তা আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। যেখানে আগামী ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আল আসাদ ।
মামলায় সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি-এসআইসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যার মধ্যে নামীয় ১৫ জন এবং অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে ৪ থেকে ৫ জনকে।
নামীয় আসামীরা হলেন, সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম, এএসআই রাকিবুল ইসলাম, এএসআই মশিউর, এএসআই মহসিন আলী সরকার, এএসআই আহসান হাবিব, এএসআই উজ্জল, এএসআই লিটন মিয়া (ডিউটি অফিসার)। এছাড়া পুলিশ সদস্য হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র, ধর্মচন্দ্র বর্মণ এবং স্থানীয় যুবক সাব্বির হোসেন, ইউসুফ আলী ও মমিনুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ জুলাই বিকেলে গাইবান্ধা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস চত্বর থেকে সিজুকে সাঘাটা থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। থানায় নির্যাতনের পর মৃতপ্রায় সিজুকে থানা সংলগ্ন পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। পরে পুকুরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনা ভিন্নভাবে উপস্থাপনের জন্য পরদিন সকালে ওই পুকুর থেকেই সিজুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সিজু মিয়া (২৫) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে। সিজু ডিগ্রী ২য় বর্ষের কলেজ ছাত্র ছিলেন ৷ একই সাথে গিদারি ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বপালন করছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীর মাথা ও হাতে ছুরিকাঘাত করে এই যুবক। একই সাথে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে দৌঁড়ে থানার পেছনে থাকা সাঘাটা হাই স্কুলের পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গভীর রাত পর্যন্ত ওই পুকুর এবং আশাপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কিন্তু পরদিন সকালেই ওই পুকুর থেকেই অজ্ঞাতনামা যুবক হিসেবে সিজুর মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর থেকে আসা ডুবুরী দল।
একই দিন থানা চত্বরে সিজু মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে জানায় পুলিশ। পরে ওই পুকুরে সিজুকে লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সিজুর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি, সেটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর গাইবান্ধা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন সিজুর স্বজন ও স্থানীয়রা। এতে অংশ নেন গাইবান্ধা জেলা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাও।
পরে একই ঘটনায় (২৯ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে রংপুর থেকে ঘটনা তদন্তে আসে রংপুর রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ম্যানেজম্যান্ট) মোছাঃ রুনা লায়না ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শরিফুল ইসলামসহ পুলিশের গঠিত তিন সদস্যের তদন্তদল।
বৃহস্পতিবার (২১আগস্ট), নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমান বন্দরে ‘এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি এক্সারসাইজ’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহড়ায় বেবিচক, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বাংলাদেশ পুলিশ, এপিবিএন, আনসার, এয়ার অ্যাসট্রা লিমিটেড, সৈয়দপুর ১’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ একাধিক সংস্থা অংশগ্রহণ করে।
মহড়ার দৃশ্যপটে দেখানো হয়, সকাল সোয়া এগারটার দিকে একটি ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে অবতরণ করে। নির্ধারিত সময় সকাল পৌনে বারটায় পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার আগে কন্ট্রোল টাওয়ারে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ফোন আসে। কলদাতা জানান, উক্ত বিমানে বোমা স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক ও দায়িত্ব নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়।
পরিস্থিতি মুল্যায়ন করে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক পূর্ণ জরুরী অবস্থা ঘোষনা করেন এবং জরুরী অপারেশন সেন্টার সক্রিয় করার নির্দেশ দেন।
মহড়ায় প্রধান অতিথি থেকে কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডবিøউসি, এসিএসসি, পিএসসি।
অনুষ্ঠানের চিফ কোর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মোঃ আসিফ ইকবাল, বিইউপি, এনডিসি, এএফডবিøউসি, পিএসসি, জিডি(পি)।
এতে অনসীন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দপুর বিমান বন্দর ব্যবস্থাপক এ কে এম বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, এ ধরণের মহড়া কেবল দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করতেই নয়, বরং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্মানীত যাত্রীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, মহড়ার সফলতা সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দায়িত্বশীলতার উজ্জল দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে যেকোন অনভিপ্রেত ঘটনা দ্রুত ও কার্যকর ভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। সৈয়দপুর বিমান বন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম ইতোমধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করেছে। রানওয়ে ওভারলে কাজের প্রায় ৭০ভাগ শেষ হয়েছে। নতুন এপ্রোন নির্মাণ কাজ সদ্য শেষ হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১২হাজার ফিট পেরিমিটার রোড সম্পন্ন হয়েছে এবং ৩হাজার ফিট কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মহড়ায় বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর আবু সাঈদ মেহবুব খান বিএসপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের চিফ কোর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমডোর মোঃ আসিফ ইকবাল বলেন, দুই বছর অন্তর এ ধরণের মহড়া আয়োজন বাধ্যতামুলক। হাইজ্যাক, বোমা হামলাসহ নানাবিধ ঝুঁকি মোকাবেলার সক্ষমতা যাচাই এবং অংশীজনদের প্রস্তুতি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই মহড়া আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ৪০০০ কোটি টাকার হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পের আওতায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ডিজিটাল নেটওয়ার্ক অবকাঠামো স্থাপনে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ব্র্যাকনেট লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
গতকাল বুধবার মহাখালীর ব্র্যাক নেট কার্যালয়ে “সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আধুনিক নেটওয়ার্ক উপকরণ ও ওয়াই-ফাই অবকাঠামো স্থাপন” প্রকল্পের আওতায় সই করা হয়েছে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ প্রাথমিকভাবে মোট ২৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত ডিজিটাল নেটওয়ার্ক অবকাঠামো ও ক্লাউড-ভিত্তিক ওয়াইফাই সুবিধা স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রকল্পের আওতাধীন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।
চুক্তির সময় হিট প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান এবং ব্র্যাকনেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে জেনারেল ম্যানেজার ও হেড অব অপারেশনস মো. মুকাররাম হুসাইন এবং প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাকনেট লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. মুকাররাম হুসাইন জানান, ‘ব্র্যাকনেট বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’সহ একাধিক উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায়, হিট প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিশ্বমানের নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য সম্মানের।নির্দেশনা পেলে যেকোনো সময় কাজ শুরু করে দিব।’
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গবেষণা ও শিক্ষায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের মান সমুন্নত রাখতে সক্ষম হবে। ব্র্যাকনেট কোম্পানি থেকে আমরা কিছু ইকুয়েপমেন্ট নিব। পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।’
কতদিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হতে পারে; জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যুক্ত করে নিব। আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। তবে কম-বেশি হতে পারে।’
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কলেজের শিক্ষক মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ তাজুল ইসলাম এবং মোঃ মোখলেছুর রহমান নিয়মিতভাবে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ করছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এসব কর্মকাণ্ডে কলেজে একটি অস্বাস্থ্যকর ও আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক ধারাকে ব্যাহত করছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও গত সাত কার্যদিবসেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রহসনমূলক ক্লাস রুটিন প্রণয়ন করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
তারা দ্রুত অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের অপসারণ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
মানববন্ধনে কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের দাবির কথা জানান।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তারা সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছেন, কিন্তু কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তাই এবার তারা প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল রানা বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)-কে অবহিত করা হবে।
“এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরায় ৫ দিনব্যাপী জাতীয় বি দাবা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের আয়োজনে এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থা, মাগুরা’র সহযোগিতা বৃহস্পতিবার জেলা ইনডোর স্টেডিয়ামে ৩৬ জুলাই, জাতীয় ‘বি’ দাবা প্রতিযোগিতা ২০২৫ (অঞ্চল-৩: খুলনা ও বরিশাল) আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুজ্জামান আরিফের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শামীম কবির, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব মো. ইলিয়াসুর রহমান, মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক ও ডা: জুলি চৌধুরী। এ সময় বিভিন্ন জেলা থেকে অংশ নিতে আসা দাবাড়ু, ক্রীড়া কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এই প্রতিযোগিতা পাঁচ দিনব্যাপী ২১ থেকে আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এতে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের মোট ১৮ জেলার ৫০ জন দাবাড়ু অংশগ্রহণ করবেন।
প্রতিযোগিতাটি ঘিরে মাগুরায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।