নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) ভারত সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ইয়াবা, বিয়ার ও মোবাইল ফোনসহ একজন মাদক কারবারিকে আটক করেছে।আটককৃত মাদক কারবারি হলেন ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়া গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম উরফে আবুনী (৩০)। নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার চারুয়াপাড়া বিওপির একটি টহল টিম সোমবার দিবাগত রাতে ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়া এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ২৩ পিছ ইয়াবা, ১ পিছ বিয়ার ও ২টি মোবাইল ফোনসহ নজরুল ইসলাম উরফে আবুনীকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিকে আলামতসহ ধোবাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার ২৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, আজ ২৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখ বুধবার সকাল ৭ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন হিজলা ও কালীগঞ্জ কর্তৃক বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন দড়ির চর খাজুরিয়া এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে ১ টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ১ টি চাইনিজ কুড়াল, বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা এবং ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদিসহ দুর্ধর্ষ ডাকাত নাইম (২৯) কে আটক করা হয়।
আটককৃত ডাকাত বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন দড়ির চর খাজুরিয়া এলাকার বাসিন্দা।
আটককৃত ডাকাত ও জব্দকৃত সকল আলামতের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেহেন্দিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
বরগুনার পাথরঘাটায় নুরুল ইসলাম মনি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা ও ছানি অপারেশনের সুযোগ পেয়েছেন এক হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী পাথরঘাটা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। চিকিৎসাসেবা নিতে আসা প্রত্যেককে ডাক্তার দেখানোর পাশাপাশি বিনামূল্যে চশমা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এর উদ্বোধন করেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
চিকিৎসা নিতে আসা সুভাষচন্দ্র, হাসিনা বেগম, ফয়সাল খন্দকার ও শরিফা রাবেয়া বেগম বলেন, গ্রামের অসহায় মানুষ বড় শহরে গিয়ে চোখের ডাক্তার দেখাতে পারেন না। এ ধরনের উদ্যোগের কারণে তারা ঘরে বসেই চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। তারা বলেন, “প্রতিমাসে যদি এমন আয়োজন হতো, তবে গ্রামের অসংখ্য মানুষ উপকৃত হতো।
নুরুল ইসলাম মনি ফাউন্ডেশনের সদস্য যুবরাজ বলেন, আমরা এক হাজার মানুষকে ফ্রিতে চক্ষু চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়েছি। খুব শিগগিরই আরও ২-৩ শত মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্হা করা হচ্ছে।
আগামীতে সমগ্র জেলা জুড়ে এ ধরনের ক্যাম্পের আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। যারা সামর্থ্যের অভাবে ডাক্তার দেখাতে বা ওষুধ কিনতে পারেন না, তাদের পাশে সবসময় নুরুল ইসলাম মনি ফাউন্ডেশন থাকবে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দেওয়া এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নুরুল ইসলাম মনি ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এরকম একটি উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য। আমরা আশা করছি আগামী দিনেও মানবতার সেবায় নিয়োজিত নুরুল ইসলাম মনি ফাউন্ডেশন এই জনপদের মানুষের পাশে থাকবে।
বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা সেবা পেয়ে রোগীরা নূরুল ইসলাম মণি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম মণি সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কুমিল্লা সদর উপজেলার কালীর বাজার ইউনিয়নের ধনুয়াখলা পূর্ব পাড়ার কমলাপুর সড়কের পশ্চিম পাশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন এক মাদ্রাসা-মসজিদের নামে পরিচালিত কথিত রাজারবাগী অনুসারীদের কুফর ও শিরকি আকীদাভিত্তিক আস্তানা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় উপজেলার ধনুয়াখলা বাজারে সর্বস্তরের তাওহীদি জনতার আয়োজনে এক প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, এলাকাবাসীর ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি চরম অবজ্ঞা দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজারবাগী মতাদর্শে পরিচালিত এই ভণ্ড আস্তানা ইসলাম ধর্মের মৌলিক আকীদার পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে।
বক্তারা আরো জানান, কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক ইসলামি শিক্ষা ও চর্চার পরিবর্তে বিভ্রান্তিকর ও ভ্রান্ত আকীদা প্রচার করে মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এই চক্র। এতে নতুন প্রজন্মের ধর্ম থেকে বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।প্রতিবাদ সভায় তাওহীদি জনতার পক্ষে বক্তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন এবং এই ভ্রান্তপথগামী গোষ্ঠীর কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।মুফতি শামসুল ইসলাম জিলানীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা
আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হান, জামাতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, কালীর বাজার ইউপির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম সিআইপি, কুফর শিরক প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হাফেজ আহমদ। এছাড়া স্থানীয় নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের চকরঘুনাথ বালুদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চোরেরা বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষের তালা কেটে আটটি সিলিং ফ্যান ও শিক্ষার্থীদের খেলাধূলার জন্য রাখা ফুটবলও নিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের আলমারির তালা ভেঙে কাগজপত্রও তছনছ করেছে। আজ বুধবার সকালে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। এদিকে সেলিং ফ্যান চুরি হওয়ায় আজ বুধবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড গরমে ভোগান্তির শিকার হন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরি নেই। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যালয়ে এসে দেখি, অফিস কক্ষ ও পাশের শ্রেণিকক্ষের দরজার হ্যাজবল কাটা রয়েছে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখি, দুই ঘরের আটটি ফ্যান খুলে নিয়ে গেছে। অফিস কক্ষের ভেতরে রাখা স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা করার চারটি ফুটবলসহ অন্যান্য জিনিত্রপত্রও চুরি হয়েছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিদ্যালয়ে ফ্যান না থাকায় সবার অনেক কষ্ট হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুন আক্তার বলে, আমাদের শ্রেণিকক্ষের চারটি ফ্যান চুরি হয়েছে। গরমের মধ্য ক্লাসে বসে থাকতে গা ঘেঁমে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মজনু বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে বিদ্যালয়ের চুরির ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। দুটি কক্ষের মোট ৮ টি ফ্যান ও কিছু খেলাধুলার সামগ্রি চুরি হয়েছে। বিদ্যালয়টি নতুন জাতীয়করণ হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ে কোন নৈশপ্রহরি নেই।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নোয়াখালীর হাতিয়ায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের সংকটে একের পর এক রোগীর মৃত্যু ঘটছে। দ্বীপ উপজেলা হওয়ায় মূল ভূখণ্ডে দ্রুত চিকিৎসার জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্সই একমাত্র ভরসা। কিন্তু যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও ড্রাইভার না থাকায় জরুরি সময়ে রোগীরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। ঘাটেই পড়ে আছে দুটি নৌ এম্বুলেন্স।
সম্প্রতি প্রসব জটিলতায় ভোগা এক নারী এবং হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত এক বৃদ্ধ নৌ-অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে বহুবার লিখিত ও মৌখিকভাবে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সচল করার দাবি জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জন শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।
একজন স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “প্রতিবার মৃত্যু ঘটলেই আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান আসে না। দ্বীপে থাকা মানে যেন মৃত্যুকে বরণ করার জন্য অপেক্ষা করা।”
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ৭ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রায় ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। এখানে রয়েছে মাত্র ৫০ শয্যার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স, নেই কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে প্রতিমাসে ৬০ থেকে ৭০ জন গুরুতর রোগীকে নিতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে। আরও শতাধিক মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজের উদ্যোগে সদর হাসপাতালে যান। কিন্তু এই দীর্ঘ যাত্রা হয়ে ওঠে জীবন-মরণ ঝুঁকির আরেক নাম। বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া রয়েছে দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তবে দুটি অ্যাম্বুলেন্সই বিকল হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর।
জানা গেছে, রোগীদের জন্য ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আনা হয়েছিল একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু অল্পদিন চলার পরই সেটি বিকল হয়ে পড়ে আছে নদীর পাড়ে। পরে ২০২২ সালে জাইকার সহায়তায় আসে আরেকটি আধুনিক নৌ অ্যাম্বুলেন্স। প্রথম বছর সেটি মানুষের মনে আশার আলো জাগালেও চালক, জ্বালানি আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটিও এখন দুই বছর ধরে অচল অবস্থায় বাঁধা আছে নদীর তীরে। কোটি টাকার এই দুই নৌ অ্যাম্বুলেন্সে আজ মরিচা ধরছে, অথচ হাতিয়ার অসহায় মানুষগুলো প্রতিদিন কাঠের নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন।
দ্বীপের বাসিন্দা আয়াত খান জুয়েল বলেন, আমাদের পেশা হচ্ছে মাছধরা ও কৃষি। ট্রলারে করে নদী পার হয়ে যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে মাইজদী নেয়া যায় না। অন্যদিকে সময়মতো ট্রলারও পাওয়া যায় না। আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আমরা গরিব মানুষ তাই বাধ্য হয়েই ট্রলারে যাই। সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স আমাদের কাজে আসেনি।
নলচিরা ঘাটের বাসিন্দা আবু সালেহ বলেন, নোয়াখালীর দ্বীপ এলাকার মানুষের জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্স শুধু একটি যান নয়, বরং জীবন বাঁচানোর শেষ ভরসা হতে পারত। কিন্তু সেই ভরসা ভেঙে পড়েছে। অনেক মা ঘাটেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, অনেকে নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে জীবন হারিয়েছেন। যদি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকত, তাহলে হয়তো আজ অনেক প্রাণ আমাদের মাঝে বেঁচে থাকত।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের শুধু নাম আছে, সেবা নেই। অথচ রাতে যখন কোনো রোগী আসে, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাঠের নৌকায় উঠতে হয়। নদীর ঢেউ আর আঁধারের ভেতর সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো যায় না। আর সেই দেরির কারণেই হারিয়ে যায় অসংখ্য জীবন।
তিন বছর নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালানো স্পিডবোট চালক জাকের হোসেন কালু বলেন, আমি দিনে পাঁচ-সাতজন রোগী পার করেছি। কত মা আমার বোটেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, কত মানুষের কান্না দেখেছি আমি। কিন্তু কোনো বেতন-ভাতা না থাকায় সেই কাজটিই ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখনো বুক ভরে আফসোস করি, যদি থাকতে পারতাম? হয়তো অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানসী রানী সরকার বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক যে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স অনেক আগেই বিকল হয়ে গেছে, আরেকটি চালকের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পড়ে আছে। আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে আবারও এই জীবন বাঁচানোর সেবা চালু করা সম্ভব হবে। যা দ্বীপের হাজারো অসহায় মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারে।
নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি দৈনিক বাংলাকে বলেন, হাতিয়ার নৌ এম্বুলেন্স ড্রাইভার না থাকায় বন্ধ থাকে। মাঝমাঝে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলে। আইএসও প্রজেক্ট চালু হলে এটার সুরাহা হবে। তবে কবে নাগাদ এ সেবা সচল হবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা তিনি দিতে পারেননি।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে জনাব নেপাল কান্তি দেব, সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নরসিংদী -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -নরসিংদী, জোবিঅ -নরসিংদী আওতাধীন হাজীপুর বউ বাজার ও হাজীপুর পশ্চিমপাড়া, দত্তপাড়া (পূর্ব ও পশ্চিম), নরসিংদী এলাকার ৫টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ৩টি বেকারীর সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ৩/৪" জি আই পাইপ ৬০ ফুট, ৩/৪'' এম এস পাইপ ৫০ ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এ সময়, সর্বমোট ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা অর্থ দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ লাইন সম্পূর্ণ উচ্ছেদ / অপসারণকরতঃ বিতরণ লাইনের উৎস পয়েন্ট হতে কিল করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব সিমন সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ, জোবিঅ -মুন্সীগঞ্জ আওতাধীন মুক্তারপুর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ সদর, মুন্সীগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, মেসার্স তন্মম ফিশিং নেট ইন্ডা. লি.(গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৫১) ঠিকানা: মুক্তারপুর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ, আলমদিনা বোর্ড মিলস লি., (গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৩৭) মেসার্স বিসমিল্লাহ বোর্ড মিলস লি.(গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৫১) ঠিকানা: মিরেশ্বর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ, মেঘনা ফেব্রিক্স লি.(গ্রাহক সংকেত ৩৮০/৮৭০-০০৩৫) ঠিকানা: সরকারপাড়া, মুন্সীগঞ্জ -এর সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ০১ টি আবাসিক রেগুলেটর, প্লাস্টিক হোজ পাইপ ২৫০ ফুট এবং ৩/৪" এমএস পাইপ ৩ ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ৪,৪০,০০০/- টাকার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ লাইন সম্পূর্ণ উচ্ছেদ / অপসারণকরতঃ বিতরণ লাইনের উৎস পয়েন্ট হতে কিল করা হয়েছে। এছাড়া, স্থায়ী বিচ্ছিন্নকৃত শিল্প গ্রাহক মেসার্স তন্ময় ফিশিং নেট ইন্ডা. লি.; এর গ্রাহক আঙিনা পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে, পার্শ্ববর্তী বাড়ির আবাসিক রাইজার হতে হোজ পাইপের মাধ্যমে ০১ টি বয়লারে গ্যাস ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়। ততপ্রেক্ষিতে, প্রায় ২৫০ ফুট হোজ পাইপ জব্দ করা হয়েছে এবং আবাসিক রাইজারটি কিলিং/ক্যাপিং করা হয়েছে। গ্রাহকের পূর্বে বিচ্ছিন্নকৃত ভাল্পপিট এর চাবিতে ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে ট্যাগিং করে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এছাড়া, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ -এর বিশেষ অভিযানে, জোবিঅ-ভৈরব ও জোবিঅ -নরসিংদী আওতাধীন এলাকার ৮টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, বেলাবো ফিলিং স্টেশন, এমডি জব্বার জুট মিলস গ্রাহকের হাউজ লাইন ভূমির নিচে পরিলক্ষিত হয় যা দৃশ্যমান করার জন্য গ্রাহককে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়। রাজা ফুড প্রোডাক্টস, রাজা সোপ, বাবুল কেমিক্যাল ওয়ার্কস, খাজা বেকারি, ফাইন মুড়ি ফ্যাক্টরি, মেসার্স বাবুল কেমিক্যালস, শিল্পী টেক্সটাইল, সোবহান টেক্সটাইল এন্ড প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিদর্শনকালে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরের সিঁড়ি উন্নয়নের জন্য জেলার এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ বুধবার রেল মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
প্রেস সচিব বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দিরের সিঁড়িটি অনেক পুরনো হয়ে গেছে। এখানে সনাতন ধর্মের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। এজন্য সিঁড়িটির উন্নয়নের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
শফিকুল আলম বলেন, আজ রেল ভবনে তিন উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের আগে মন্দিরের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল সড়ক উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেছে।
তিন উপদেষ্টার সভা থেকেই এলজিআরডি সচিবকে চন্দ্রনাথ মন্দির উন্নয়নের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দিরকে ঘিরে যেন কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি না হয় সেজন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সতর্কতার সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যে কোনো পক্ষই কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোর হাতে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
রেল ভবনে আজকের বৈঠকে যে তিন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ. ফ. ম খালিদ হোসেন।
প্রেস সচিব বলেন, রেল ভবনে আজ তিন উপদেষ্টার উপস্থিতিতে খিলক্ষেতে একটি শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির ও দুটি মসজিদ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে স্থায়ী জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বরাদ্দের দলিল পত্র মন্দির ও মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)-তে আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে।
দিনটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানসহ অন্যান্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হন। সেখান থেকে কবির সমাধির উদ্দেশে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়, এরপর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হয়।
পরে কবির সমাধির পাশের খোলা মঞ্চে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান সভাপতিত্ব করেন।
এছাড়া ফজরের নামাজের পর কবির আত্মার মাগফেরাত কামনায় ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ ‘মসজিদুল জামিয়া’-তে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
জয়পুরহাটের কালাইয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ, অনুমোদনহীন, অনিরাপদ খাদ্য ও পণ্য সংরক্ষণ এবং বিক্রির দায়ে ৬ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের পাঁচশিরা ও উপজেলার নুনুজ বাজারে এ জরিমানা করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)মো. ইফতেকার রহমান।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, কালাই পাঁচশিরায় একটি বেকারির প্রতিষ্ঠানে ও নুনুজ বাজারে তিনটি দোকানে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার আইনে মোট ৪টি দোকানে ৯৫০০ টাকা, পেট্রোলিয়াম আইন ২০১৬ অনুযায়ী ১টি দোকানে ১৫০০ ও ধূমপান এবং তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি দোকানে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, বিভিন্ন দোকানে অনেক খাবার আছে যা মানুষের বা শিশুদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এজন্য আমরা এ অভিযান পরিচালনা করেছি। উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নওগাঁর পোরশায় আমন ধানের জমিতে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে বিনষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। রোববার (২৪ আগষ্ট) রাতের কোন এক সময় উপজেলার খরপা গ্রামের মাঠে স্বর্না-৫ জাতের ধানে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। এতে ৭ জন কৃষকের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আবু সাঈদ নামে এক ভুক্তভোগী কৃষক।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী কৃষক সূত্রে জানা যায়, গত ৩ বছর থেকে উপজেলার খরপা গ্রামের জামাল, সায়েম, কালাম, সালাম ও আবু সাঈদ সহ ৭ জন তাদের আত্মীয়স্বজন মিলে মাঠে ১০ বিঘা জমি চাষাবাদ করছেন। এ বছরও ওইসব জমিতে আমন মৌসুমে স্বর্না-৫ জাতের ধান রোপন করেছেন। আর দেড়-দুই মাস পর ওইসব ধান কৃষকদের ঘরে উঠার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই রোববার রাতের আধারে প্রতিপক্ষরা পুরো জমিতে ধানে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করেছে। এতে জমির সব ধানের গাছ শুকিয়ে গেছে। ধানের গাছ মরে যাওয়া হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষীরা। অর্থনৈতিক ভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তবে ঘটনায় স্থানীয় আব্দুল মান্নান চৌধূরী, আব্দুল লতিফ ও ইসমাঈল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক সেকেন্দার বলেন- সোমবার সকালে জমিতে ফসল দেখতে গিয়েছিলাম। দেখা যায় জমিতে ধানের গাছ কোথাও সবুজ আবার কোথাও পাতা শুকিয়ে আছে। বেলা যত বাড়ছে ধানের গাছ ততই শুকিয়ে যাচ্ছে। দিনের মধ্যে প্রায় সব জমির ধান শুকিয়ে মরে গেছে। এখন সবগুলো ধানের গাছ মরা হয়ে আছে।
আরেক কৃষক কালাম বলেন- প্রতি বিঘা জমিতে আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা। আর দেড় মাস পরই এসব ধান ঘরে উঠার কথা ছিল। বিঘাতে ফলন পাওয়া যেতো অন্তত ২০-২২ মন। বর্তমানে ধানের দামও ভাল আছেন ১৪শ থেকে ১৬শ টাকা মন। ধান আর ঘরে উঠবে না।
অভিযোগকারী কৃষক আবু সাঈদ বলেন- আমরা ৩ বছর থেকে ওইসব জমিতে চাষাবাদ করে আসছি। রাতের আধারে প্রতিপক্ষসহ অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন শ্রমিক দিয়ে ধানে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা অর্থনৈতিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এতে আমাদের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক অপরাধিদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের দাবী করছি।
এ ব্যাপারে আব্দুল মান্নান বলেন, ওই জমি চাচাতো ভাইদের। তারা নওগাঁ শহরে বসবাস করে এবং ওই জমি দেখভাল করে। যারা অভিযোগ করছে তারাই জমি দখল করে ধান রোপন করেছে। বর্গাদারদের তারা মারধর করে আহত করেছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। জমি দখল বা ফসল নষ্টের সাথে আমার কোন সম্পৃক্তা নাই।
উপজেলার মর্শিদপুর ইউনিয়নের উপসহকারি কৃষি অফিসার সেলিম রেজা বলেন, জমিতে আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। এতে জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ধানের গাছে বেশি পরিমান পানি দিয়ে স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিঘায় যেখানে ২০-২২ মন ফলন হওয়ার কথা ছিল সেখানে ৫-৭ মন ফলন হতে পারে। মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। কিন্তু ফলস নষ্ট করা মোটেও ঠিক হয়নি।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান বলেন- বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। ঘটনাস্থলে তদন্ত করার জন্য পুলিশ পাঠানো হবে। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৫ লাখ ৪ হাজার ভারতীয় জাল রুপিসহ দুই বাংলাদেশিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহেশপুর সীমান্তের খোসালপুর এলাকা থেকে তাদের দু’জনকে আটক করা হয়।
আটককৃত ওলিয়ার শেখ (৩৭) ও তার শিশু পুত্র আমান শেখ (০৫) কে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি। তাদের মধ্যে ওলিয়ার শেখকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আমান শেখ শিশু হওয়ায় তাকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ওলিয়ার শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার বেশরগাতী গ্রামের শামসুল হকের পুত্র।
আজ বেলা ১১টায় মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সহকারী পরিচালক মুন্সি ইমদাদুর রহমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি জানায়, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খোসালপুর বিওপির নায়েক দীনবন্ধু রায়ের নেতৃত্বে সীমান্ত পিলার-৬০/১০৫ এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি। এসময় ৫ লাখ ৪ হাজার ভারতীয় জাল রুপিসহ ওলিয়ার শেখ নামে এক বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। ওলিয়ার শেখের ৫ বছর বয়সী শিশু সন্তান আমান শেখ এসময় তার সঙ্গে ছিল। পরে দুজনকেই মহেশপুর থানায় সোপর্দ করে বিজিবি।
বিজিবি আরও জানায়, ২০১৪ সাল থেকে ওলিয়ার শেখ ভারতের বিহারে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি দর্জির কাজ করতেন। ২০১৭ সালে বিহারের আরাবিয়া থানার এক নারীকে বিয়ে করেন ওলিয়ার। বিয়ে করার পর ২০২২ সাল থেকে বাগেরহাট সদর উপজেলার মারুফ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়মিত ভারতীয় জাল রুপি সংগ্রহ করতেন ওলিয়ার। ওই জাল রুপি তিনি ভারতে বসবাসকালে নিয়মিত ব্যবহার করতেন।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে মারুফের কাছ থেকে ৫ লাখ ৪ হাজার ভারতীয় জাল রুপি সংগ্রহ করেন ওলিয়ার শেখ। ওই রুপি নিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে তিনি বিজিবির হাতে আটক হন।
মহেশপুর থানার ওসি সাজ্জাদুর রহমান বাসসকে বলেন, ভারতীয় জাল রুপিসহ আটক ওলিয়ার শেখের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। আটক ওলিয়ার শেখের শিশু পুত্র আমানকে মানবিক দিক বিবেচনায় পরিবারের জিম্মায় দেয়া হবে।
গরু চোর চক্রের দুই সদস্য সোহান শেখ (২৩) ও সাগর শেখ (২৫) কে গ্রেপ্তার করেছে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে কোটালীপাড়া থানার এসআই সাদ্দাম হোসেন খান দিপ্তরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোটালীপাড়া ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গরুচোর চক্রের এই দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত গরুচোর মোঃ সোহান শেখ গোপালগঞ্জ জেলা সদরের মানিদাহ গ্রামের মৃত হানিফ শেখের ছেলে, এবং সাগর শেখ কোটালীপাড়া উপজেলার ধোরাল গ্রামের কাজল শেখের ছেলে। মঙ্গলবার তাদেরকে কোটালীপাড়া থানায় দায়েরকৃত গরু চুরির মামলায় আটক দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন খান দিপ্ত জানান, গত ২৮ জুলাই গভীর রাতে উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের পুর্বপাড়া গ্রামের সঞ্জয় মুখার্জীর একটি কালো রঙের গাভী ও কুশলা ইউনিয়নের লাখিরপাড় গ্রামের সুভাষ বিশ্বাসের একটি লাল রঙের বকনা গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুর্বপাড়া গ্রামের লোকদের ধাওয়া খেয়ে চোরেরা গরুসহ গাড়ী রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই পুর্বপাড়া গ্রামের সঞ্জয় মুখার্জি বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, এই মামলার পর গরু চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গরু চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ সোহান শেখকে গোপালগঞ্জ ও সাগর শেখকে কোটালীপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই গরু চুরির সিন্ডিকেট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সোহান গরু চুরির ঘটনায় চোর চক্রদের গাড়ি সরবরাহ করতেন অন্যদিকে সাগর শেখ সরাসরি গরু চুরিতে অংশ নিতো। পুরো গরু চোর চক্রদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।