বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সারাদেশে উপজেলা/থানা আনসার কোম্পানি ও ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন সদস্যদের নতুনধারার মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ধানমন্ডির বিসিএসআইআর স্কুল এন্ড কলেজে ঢাকা মেট্রোপলিটন আনসার-দক্ষিণ জোন আয়োজিত প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, এসজিপি, বিএএম, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন—
“উপজেলা/ থানা আনসার কোম্পানি সামাজিক অপরাধ দমন ও আভ্যন্তরীন নিরাপত্তায় বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । সাধারন আনসার সদস্যের যথাযথ প্রশিক্ষণ সম্পৃক্ততা ও ধারাবাহিকতার অনুপস্হিতিতে দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলা আনসার কোম্পানি কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে। চলমান সংস্কারের আওতায় অঙ্গীভূত আনসারদের সুনির্দিষ্টকরনের মাধ্যমে উপজেলা আনসার কোম্পানির প্রশিক্ষন ধারণাকে ঢেলে সাজিয়ে একটি জাতীয় নিরাপত্তা প্লাটফর্মে আনা হয়, যেখানে তারা অন্যান্য বাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গণপ্রতিরক্ষা ও জাতীয় প্রয়োজনে কাজ করতে সক্ষম হয়।”
তিনি আরও বলেন—
“প্রতিটি আনসার সদস্য যদি এই মৌলিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত হন, তবে তারা বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি’র যোগ্য দেশপ্রেমিক প্রতিনিধি হয়ে উঠবে।” আনসার বাহিনী প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে অধিকতর তারুণ্যনির্ভর, নৈতিকতা ও মূল্যবোধসম্পন্ন এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ম-কানুনে শ্রদ্ধাশীল সদস্যদের নিয়ে উপজেলা আনসার কোম্পানি গঠনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এজন্যই শারীরিকভাবে সক্ষম ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী সদস্যদের এই প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ প্রশিক্ষণে আধুনিক নিরাপত্তা ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বিষয়ক ধারনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে যোগ্য সদস্যরা উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন এবং বিভিন্ন প্রকল্পভিত্তিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখতে পারবেন। পাশাপাশি আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক তাদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, দুর্যোগকালীন কার্যক্রম, সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা এবং পূজা ও নির্বাচনসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে উপজেলা আনসার সদস্যরা সরাসরি ভূমিকা পালন করবে। তাদের দায়িত্বপরিধি সুনির্দিষ্ট করা, সামাজিক ও আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা এবং বাহিনীর সংস্কারমূলক কর্মপরিকল্পনার সাথে সমন্বিত করতে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে সারাদেশের মোট ৫২,১৮৩ জন সদস্য এতে অংশ নেবেন। ২৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ ৮ ধাপে সারাদেশে অনুষ্ঠিত হয়ে ১০ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে সমাপ্ত হবে। প্রতিটি ধাপ ১৪ দিনব্যাপী। মহাপরিচালক মহোদয়ের পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আনসারের পরিচালক মো: আসাদুজ্জামান গনী এবং বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তাবৃন্দ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুর নজরুল পরিষদের আয়োজনে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মুসলিম মিশন কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সমাজসেবক অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ।
ফরিদপুর নজরুল পরিষদের সভাপতি প্রফেসর মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে
আলোচনা সভায় দৈনিক ফতেহাবাদ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম সাত্তার, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক সিরাজুল হক, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক সাংবাদিক মফিজ ইমাম মিলন, অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক খালিদুজ্জামান মিঠু সহ অন্যান্যরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফরিদপুর নজরুল পরিষদের সম্পাদক এ্যাডভোকেট আলমগীর ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ ও নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লিয়াকত হোসেন, কবি নীলুফার ইয়াসমিন রুবী, শরীফ মাহমুদ সোহান ও বেলায়েত হোসেন।
অনুষ্টানে বক্তরা বলেন, জাতীয় কবির সৃষ্টিকর্ম থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করে তা জীবন ব্যবস্থায় প্রতিফলিত করতে হবে। নজরুলকে নিয়ে যতটা গবেষণা হওয়া উচিত ছিল, তা এখনো হয়নি। ‘গবেষণা ও সম্প্রসারণ কেন্দ্রের মাধ্যমেও কবি নজরুলের বিভিন্ন বিষয়- বিশেষ করে যেগুলো নিয়ে এখনো গবেষণা হয়নি, সেগুলো নিয়ে গবেষণা করে আমাদের জ্ঞানভাণ্ডরে যোগ করতে হবে।’
অনুষ্ঠান শেষে কবির আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
পটুয়াখালীর বাউফলে প্রেমঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় উর্মী ইসলাম (১৫) নামের এক কিশোরীকে। হত্যার অভিযোগে নিহতের বাবা, মা ও ভগ্নিপতিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে তারা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিহত কিশোরীর মা আমেনা বেগম, বাবা নজরুল বয়াতি ও ভগ্নিপতি কামাল হোসেন ।
বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফ মুহাম্মদ শাকুর বাউফল থানায় প্রেস ব্রিফ করে জানান, নিহত উর্মী ইসলামের (১৫) সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার মা আমেনা বেগম (৪০), বাবা নজরুল বয়াতি (৪৫) ও ভগ্নিপতি কামাল হোসেন (৩২) মিলে গত ২২ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এরপর মরদেহ গোপন করতে তারা উর্মীর লাশ কুম্ভখালী খালে ফেলে দেয়।
পরে ২৩ আগস্ট সকালে কুম্ভখালী খাল থেকে উর্মীর ম’রদে’হ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে বাউফল থানা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে নামে। তদন্তে পরিবারের তিন সদস্যের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসলে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন বাউফল থানার ওসি আকতারুজ্জামান সরকার, বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম ও স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ (ইকসু) গঠন এবং নির্বাচনের গঠনতন্ত্র বা সংবিধি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান ও সদস্য-সচিব হিসেবে আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান দায়িত্ব পেয়েছেন।
কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ হলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান, দা'ওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের
অধ্যাপক ড. শহীদ মুহাম্মদ রেজওয়ান, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. তোজাম্মেল হোসেন, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজিবুল হক, আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফ।
এছাড়া, বহিরাগত সদস্যবৃন্দ হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. একরামুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জাফর উল্লাহ তালুকদার, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র এ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার ইমাম হোসেন সিডনী।
গঠিত কমিটির আহ্বায়ক হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি তবে এখনও চিঠি হাতে পাইনি। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয়ে গেছে, আগামী শনিবারে বসে সবাইকে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
যানজট ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে অবশেষে নওগাঁ শহরের প্রধান সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাবিত প্রকল্প আবারও গতি পাচ্ছে। দীর্ঘদিন নানা জটিলতায় আটকে থাকা এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক স্টেকহোল্ডার সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউওালের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
সভায় জানানো হয়, নওগাঁ শহরের সান্তাহার মোড় থেকে চৌমাসিয়া চত্বর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নওগাঁ শহর যানজটমুক্ত হয়ে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্মসচিব নাজনীন ওয়ারেস, উপসচিব জাহিদুল ইসলাম, নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল হক রাসেল ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দিক। তাঁরা প্রকল্পের বিভিন্ন ধাপ, করণীয় ও সম্ভাব্য সুফল নিয়ে আলোচনা করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘নওগাঁ শহরের প্রধান সড়কটি দ্রুত চার লেনে উন্নীত করা হলে যানজট কমবে, শহর হবে আধুনিক। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
প্রধান অতিথি ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নওগাঁ হবে আধুনিক ও যানজটমুক্ত শহর। তিনি জানান, প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। এজন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন।’
সভায় রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ছাত্রসমাজ, গণমাধ্যমকর্মীসহ সুধীজন উপস্থিত থেকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
সভা শেষে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন কমিটির সদস্যরা। এ সময় নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়কের অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রমও দেখা হয়।
নওগাঁর বদলগাছীতে ওড়না পেচানো ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর।
তরকারির স্বাদ কম হওয়ায় স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করায় অভিমানে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানা যায়।
বুধবার ২৭ আগষ্ট সকালে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের জগদ্বীশপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম ঝর্ণা খাতুন (২৫)। তিনি জগদ্বীশপুর গ্রামের আকাশ হোসেনের স্ত্রী। এঘটনায় স্বামী আকাশ পলাতক রয়েছে। তাদের ঘরে ৪-৫ বছরের দুটি জমজ ছেলে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ২৬ শে আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টার দিকে পরিবারের সবাই একসাথে রাতের খাবার খেতে বসে। কিন্তু তরকারির স্বাদ না হওয়ার কারণে স্বামী আকাশ হোসেন রেগে গিয়ে স্ত্রী ঝর্ণাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে মারধর করে। মারধর সহ্য না করতে পেরে বুধবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে আকাশের স্ত্রী ঝর্ণা বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে আকাশ তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি যেতে না দিলে এক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। আবারো স্ত্রীকে গালিগালাজ ও মারধর করে স্বামী আকাশ। এদিকে মারধর এবং গালাগালাজ সহ্য করতে না পেরে আকাশের স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন এদিন সকাল সাড় ৬টার দিকে রাগ করে নিজ ঘরের ভিতর গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এবং ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগায়।
ফাঁস লাগানোর বিষয়টি স্বামী আকাশ এবং ঝর্ণার শাশুড়ি পেয়ারা বেগম দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে থাকা সাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওড়না কেটে নিচে নামায়। এ সময় ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন চলে আসে। সাথে সাথে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল ৯ টার দিকে জরুরি বিভাগের ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এই কথা শুনে ঝর্ণার স্বামী আকাশ এবং শাশুড়ি পিয়ারা বেগম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বর্তমানে লাশ জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে মর্গে আছে বলে জানা যায়। খবর পেয়ে বদলগাছী থানার ওসি আনিসুর রহমান, তদন্ত ওসি সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এদিন বিকেল ৪ টার দিকে জানতে চাইলে বদলগাছী থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে আছে। এ ঘটনায় নিহতের শ্বাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, "৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কারণেই আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েছি, আর ২৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক ধারা আরও সুদৃঢ় হবে। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছরের দুঃশাসন এক-দুই বছরে দূর করা সম্ভব নয়। আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা একটি নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছি, তাই সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে—নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে। সহিংসতা হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে, গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনই আমাদের মূল লক্ষ্য।"
আজ (২৭.০৮.২৬) বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নাসিরাবাদ গ্রামে নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নদীভাঙন প্রসঙ্গে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, "মেঘনা নদীর ভাঙনে শত শত পরিবার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও জীবিকার সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। মসজিদ, মাদ্রাসা ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।"
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মব জাস্টিস ও সাইবার অপরাধ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "মব জাস্টিসের পেছনে অন্যতম বড় কারণ হলো ভুল তথ্য ছড়ানো—আর এর জন্য মোবাইল এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের অপব্যবহার দায়ী। সাইবার অপরাধ একটি নতুন চ্যালেঞ্জ, এটি সরকার একা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তরুণ সমাজকে আইটি সেক্টরে দক্ষ হতে হবে এবং এই অপরাধ রোধে এগিয়ে আসতে হবে।"
অবৈধ বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "প্রশাসনের একার পক্ষে এটি বন্ধ করা সম্ভব নয়। স্থানীয় জনগণকে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।"
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টার একান্ত সচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (পূর্ব বিভাগ) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান খাঁন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু মোছা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিব চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) পিয়াস বসাক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালেদ বিন মনসুর, নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম এবং নবীনগর প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি।
ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অপরাধে তিন বছর কারাভোগ শেষে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন ১৭ জন বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরি।
বুধবার (২৭ আগষ্ট) সন্ধ্যার দিকে বেনাপোল সীমান্তের চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন তারা। কলকাতায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ও বিএসএফের কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশের শার্শা উপজেলার এসিল্যান্ড, চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন, বিজিবি কর্মকর্তারা এবং তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
যারা দেশে ফিরেছেন তারা হলেন- মঈন খান, অবন্তি দাস, নূর আলম, হৃদয় মন্ডল, ইমরান শেখ, মেহেদী হাসান, নাহিদ মোড়ল ফয়সাল শেখ, রানা হাওলাদার, শামীমা আক্তার, শান্তা আক্তার, ইমু খাতুন মিথিলা রহমান, সাইম জমাদ্দার, কমল সর্দার ও নূরজাহান খাতুন। এরা দেশের পাবনা, গাজিপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নরসিংদী, লক্ষিপুর, খুলনা, নড়াইল, লালমাটিয়া, বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান, দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের মাধ্যমে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে ১৭ জন বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরিকে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। ফেরত আসাদের গত তিন বছর আগে ভারতীয় পুলিশ কলকাতা থেকে গ্রেফতার করে এবং পরে আদালতের নির্দেশে তাদের দেড় থেকে ৩ বছরের সাজা দেয়। সাজা শেষে তারা আজ দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরত আসা সবাই পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন শেল্টারহোমের হেফাজতে ছিল।
“তারুণ্যের উৎসব-২০২৫” উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উইং-এর উদ্যোগে বুধবার সকালে ইনস্টিটিউটের কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বারি উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রদর্শনী ও মতবিনিময় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ, নবীন কৃষি উদ্যোক্তা এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজন অংশগ্রহণ করেন।
বারি’র পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ) ড. মুহাম্মদ আতাউর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ। এসময় বারি’র উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উইং) ড. মো. উবায়দুল্লাহ কায়ছার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন উইং) ড. মো. আব্দুর রশীদ; পরিচালক (উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র) ড. ফারুক আহমেদ এবং পরিচালক (কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র) ড. মো. মতিয়ার রহমান। এছাড়াও বারি’র বিভিন্ন কেন্দ্র/বিভাগ/শাখার বিভাগীয় প্রধানগন ও সিনিয়র বিজ্ঞানীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনীর উদ্ভোধন পরবর্তী একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উইং) ড. সৈয়দা তাসনীম জান্নাত। তারুণ্যের উৎসব” অনুষ্ঠান কো-অর্ডিনেট করেন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উইং) ড. মো. মিজানুর রহমান।
প্রদর্শনী অনুষ্ঠানটি ফিতা কেটে উদ্ভোধন করেন পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ। প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বিএআরআই উদ্ভাবিত বিভিন্ন উন্নত জাত, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি এবং রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্যের প্রদর্শন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা এসব প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হন এবং বিভিন্ন প্রদর্শনী স্টল ঘুরে দেখেন। এই কর্মসূচি তরুণদের মধ্যে কৃষি বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি এবং কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে আয়োজক কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশা জ্ঞাপন করেন।
মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব মাছ চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) মৎস্য পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর গাজীপুর এর আয়োজনে এবং গাকৃবির ফিশারিজ অনুষদের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার নির্ধারিত পুকুরে মৎস্য পোনা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুর্শিদা খান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইসচ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে গাকৃবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও গাজীপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকর্মচারীবৃন্দসহ গাকৃবির ফিশারিজ অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ, রেজিস্ট্রার মোঃ আবদুল্লাহ্ মৃধা, প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম, বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন, পরিচালক, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। পরে ধারাবাহিকভাবে মৎস্যসম্পদের গুরুত্বেও উপর বক্তব্য প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। বক্তব্যে তাঁরা দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা অনুযায়ী মাছ উৎপাদনে গবেষণাভিত্তিক পরিকল্পনা, দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের প্রয়োজনীয়তা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থার
সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ সময় মৎস্য অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গবেষণা ও শিক্ষাকেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে মাছের উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে। অন্যদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্যবলেন, এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের দেশের মৎস্যখাতের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আমরা একটি টেকসই ও আধুনিক মৎস্য ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যেতে পারি। এ সময় উপাচার্য মৎস্য অধিদপ্তরকে গাকৃবির ফিশারিজ অনুষদের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান। সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বাবার বাড়িতে তার অসুস্থ খালাকে দেখতে আসার একদিন পর বাঁশঝাড়ের একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মোছাঃ হালিমা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে উপজেলার বাগবাড়ী এলাকায় তার বাবার পরিত্যক্ত বাড়ির আঙিনার একটি গাছ থেকে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
হালিমা বেগম উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামের মৃত জুয়াদ আলীর মেয়ে এবং জেলার পাশ্ববর্তী ঘাটাইল উপজেলার মনহরা গ্রামের আব্দুল লতিফের স্ত্রী। তিনি সন্তানের মা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হালিমা গত মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট তার অসুস্থ খালাকে দেখতে তার বাবার বাড়িতে আসে। পরদিন বুধবার সকালে স্থানীয়রা তাকে বাড়ির পেছনে বাঁশঝাড়ের একটি গাছে ঝুলে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম বলেন- স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে রহস্য উদঘাটন হবে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে স্বর্ণকারের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় মূল হোতাসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
দেশের বিভিন্ন যায়গা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হচ্ছে মো. সোহাগ মন্ডল, মিন্টু, মোশাররফ, জসিম, আমিনুল, আনোয়ার, ময়নাল।
বুধবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।
দুপুরে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, গেলো ১৮ আগস্ট ভোর রাতে ঘাটাইলের চকপাকুটিয়ার স্বর্ণকার অমল বনিকের বসতবাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত অমল বণিকের মা কৃষ্ণা রাণীদ্বয়কে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, রূপার গহনা, পিতলের প্রতিমা ও মোবাইল সেটসহ ৬ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। ডাকাতির সময় অমল বাঁধা প্রদান করলে ডাকাতরা তার হাতে থাকা ধারালো ছোরা দিয়ে বাদির বাম হাতের কব্জির উপর পোঁচ মেরে রক্তাক্ত কাঁটা জখম করে। ডাকাতির সময় এলাকার লোকজন অমলের ডাক চিৎকারে টের পেলে ডাকাতরা হিন্দু বাড়িতে পটকার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে অমর বনিক বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করলে ২৪ আগস্ট রাতে কালিয়াকৈরের সফিপুর থেকে ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য মো. সোহাগ মন্ডলকে গ্রেফতার করে এবং তার হেফাজত হতে অত্র মামলার ঘটনায় লুন্ঠিত ১টি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করিলে নিজেকে জড়িয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও লুষ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য একাধারে অভিযান পরিচালনা করা হয় । পরবর্তীতে আসামী ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড মিন্টুকে মঙ্গলবার নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। মিন্টুর দেখানো মতে অন্যান্য আসামীদের বিভিন্ন সময়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানা এলাকার বিভিন্ন স্থান হতে গ্রেফতার করা হয় এবং লুণ্ঠিত মালামাল স্বর্ণ ও রুপা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তারা অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন সময়ে সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করে আসছে। তাদের কাছ থেকে একটি মোবাইল, ৫ রতি স্বর্ণ ও ৩৪ ভরি রূপা উদ্ধার করা হয়।
স্কুল জীবন থেকেই শিক্ষার্থীদের স্বাবলম্বী হতে সঞ্চয়ের খাতা খোলার পরামর্শসহ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সমাবেশ ও করছে পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)। এ জন্য ওই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে” করলে সঞ্চয় ২০০ টাকা, সরকার দেবে ৪০০ টাকা” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে।
গতকাল দুপুরে পল্লী উন্নয়ন বোর্ড নড়াইল জেলা শাখা সদর উপজেলার গোবরা পার্ব্বতী বিদ্যাপীঠ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এমন এক প্রশিক্ষণসহ সমাবেশের আয়োজন করে। প্রায় দুই শতাধিক কিশোরী অনুষ্ঠানে অংশ নেয় ।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট শারমিন আক্তার জাহান। সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস । অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিআরডিবির উপ-পরিচালক মো. গোলাম রসুল, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রশীদ ।
জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, ছোট থাকতেই সবার সঞ্চয়ী মনোভাব গড়ে তোলা উচিত। সঞ্চয় হচ্ছে বিপদের বন্ধু। তিনি বলেন, আগে দাদা-দাদীকে দেখেছি মাটির ব্যাংক অথবা বাশের খুটি ছিদ্র করে সেখানে টাকা পয়সা জমা রাখতে। তাদের কাছ থেকেই আমরা সঞ্চয়ী হতে শিখেছি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখন থেকেই তোমাদের সঞ্চয়ী হতে হবে। সেই টাকা দিয়ে তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারবে। বাবা-মায়ের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। নিজে স্বাবলম্বী হও অপরকেও হতে বলো।
বিআরডিবির উপ-পরিচালক মো. গোলাম রসুল বলেন, সমাজের দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত কর্মসংস্থান প্রকল্পের (ইরেসপো) দ্বিতীয় পর্যায়ের অংশ হিসেবে এ কার্যক্রম অনুষ্ঠত হচ্ছে। তিনি বলেন, কিশোরীদের শিক্ষা,দক্ষতা,উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও সমাজ সচেতনতায় এ ধরণের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এতে কিশোরীদের আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠার সাহস যোগায় ।
পরে সঞ্চয়ের টাকা, বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ সামগ্রী স্যানেটারী নাপকিন, খাতা-কলম, স্কুল ব্যাগ বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি বাল্যবিবাহকে না বলুন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এমন শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সজল বিশ্বাস।
নওগাঁয় ভজন দেবনাথ সজল নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদলাতের বিচারক মো. কায়সারুল ইসলাম এ রায় দেন।
রায়ের বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মুনছুর আলী নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নওগাঁ সদর উপজেলার আরজী নওগাঁ মন্ডল পাড়া এলাকার শুকুর আলীর দুই ছেলে মো: জুয়েল এবং জাহের আলী, আরজী নওগাঁ উত্তরপাড়া এলাকার হাসান মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়া, শহরের চকপ্রসাদ এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে রতন মন্ডল, শহরের উত্তরপাড়া পবা মসজিদ এলাকার বেদারুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম এবং বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলার খানপুর এলাকার মৃত শাহজাহানের ছেলে আব্দুর রশিদ।
আসামীদের মধ্যে জহের আলী পলাতক রয়েছেন।
আদালত সুত্রে জানা যায়, ভজন দেবনাথ সজল একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তার নিজস্ব অটোরিকশাটি নিয়ে প্রতিদিনের ন্যায় ভাড়ায় চালানোর জন্য নিজ বাড়ি হতে বাহিরে যায়। তারপর ওই দিন রাতেই সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনা। এরপর স্বজনরা তাকে বিভিন্ন জায়গায় ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধান পায়না। পরের দিন ১৭ নভেম্বর সকালে নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি গোটার বিলে পাকা রাস্তা সংলগ্ন কাঁদা পানিতে কচুরি পানার মধ্য থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় তার পিতা ভূপেনন্দ্রাথ দেবনাত বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন।
মামলায়, আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়েছে। মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনছুর আলী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।