রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন জজ মিয়া (৩৬), আল আমিন (৩৪) ও মেহেদী হাসান (২৮)। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথচারীদের একজন জহিরউদ্দিন জানান, খিলগাঁও ফ্লাইওভারে ওঠার পর একটি ট্রাক পেছন থেকে তাদের বহনকারী মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনজনই ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন।
ফ্লাইওভার থেকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনজনকেই মৃত বলে জানান চিকিৎসক।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ মাসুদ মিয়া জানান, নিহত তিনজনের কোনো স্বজন মরদেহ শনাক্ত করতে আসেননি। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মো. রিফাতুল হক। মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি নতুন দায়িত্বে যোগদান করেন।
তিনি ৩৭তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ঢাকা জেলার রমনা থানার বড় মগবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. রিফাতুল হক পূর্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তিনি সকালে পাংশা উপজেলা পরিষদে পৌঁছালে উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তাগণ তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
ইউএনও মো. রিফাতুল হক নতুন কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনে পাংশা উপজেলার জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সরকার ঘোষিত চাল আমদানির সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে গত ৩০ নভেম্বর। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে চার মাসের মধ্যে ৫৫ কার্যদিবসে বেনাপোল বন্দরে এসেছে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন চাল। গত ২১ আগস্ট ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চালের প্রথম চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। ২১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৫৫ দিনে প্রায় ১৫৫টি চালানের বিপরীতে ৫৮০টি ট্রাকে করে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন মোটা চাল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
দেশে চালের অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ সরকার দেশের সব বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। অর্থাৎ আগস্ট মাসে ১,২৬০ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে ৫ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন এবং নভেম্বরে ৬ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। পুনরায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে গত ২১ আগস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে। অর্থাৎ ২১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে মধ্যে ৫৫ দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে। এ ধান বাজারে এলে চালের দাম কমে আসবে এবং দেশে চালের ঘাটতি পূরণ হবে।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, চার মাসে ভারত থেকে ১৫৫টি চালানে প্রায় ৫৮০টি ট্রাকে করে ১৮ হাজার ১১ মেট্রিক টন চাল বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর সরকার ঘোষিত শেষদিনে ৬ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।
বিকেল তখন গড়িয়ে গেছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের বড় মাঝিপাড়া গ্রামের বাড়িতে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা। স্বজনদের চাপা কান্নায় ভারী হয়ে আছে পরিবেশ। উঠানে পাশাপাশি রাখা দুটি খাটিয়ার একটিতে নিথর হয়ে শুয়ে আছেন মা সালেহা বেগম (৬২), আর ঠিক হাতছোঁয়া দূরত্বে অন্য খাটিয়ায় শুয়ে আছেন তার মেয়ে বিলকিস বেগম (৪০)।
এই মৃত্যুর দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন। প্রিয়তমা স্ত্রী ও শাশুড়ির মরদেহের পাশে বসে তিনি বাকরুদ্ধ। পাশে চলছে কবর খোঁড়ার কাজ, যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন মা ও মেয়ে। এর আগে গত রোববার রাতে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন (২৬) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মাত্র সাড়ে ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
সালেহা বেগম বড়মাঝিপাড়া গ্রামের মৃত খাজামদ্দিনের স্ত্রী। বিলকিস বেগম জর্ডান প্রবাসী ছিলেন এবং তিন বছর আগে দেশে ফিরেন। আর জয়পুরহাট সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তুহিন দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
গ্রামবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার বিলকিসের শাশুড়ি শেফালী বেগম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। বিলকিস তাকে দেখাশোনা করতে গিয়ে নিজেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং গত রোববার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই বিলকিসের মা সালেহা বেগমও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একই ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসকের দাবি তারা ডায়রিয়ায় নয় শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।
এদিকে সালেহা বেগমের নাতি তুহিন হোসাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান এবং সোমবার সকালে তাকে দাফন করা হয়। এরপর সোমবার দুপুর পৌনে ১টায় সালেহা বেগম হাসপাতালে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর মাত্র ৩৫ মিনিট পর বিলকিস বেগমও মৃত্যুবরণ করেন। বিকেলে মা-মেয়ের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়।
প্রতিবেশী রুবেল হোসেন বলেন, মাত্র ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। এর মধ্যে দুজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত বিলকিসের স্বামী ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমার মা, স্ত্রী ও শাশুড়ি তিনজনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমার মা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু আজ আমার শাশুড়ি ও স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৫ মিনিটের ব্যবধানে মারা গেলেন। এর আগে রোববার রাতে হাসপাতালে আমার স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ছেলে তুহিন মারা গেছেন।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, ‘হাসপাতালে যে দুজন মারা গেছেন, তারা মা ও মেয়ে। তারা ডায়রিয়ায় নয়, শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তারা ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন না।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি এখন প্রতারণার দলিল বলে উল্লেখ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস)-সহ সাধারণ সম্পাদক উ উইন মং জলি। মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান সদরের রাজার মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন।
উ উইন মং জলি বলেন, দীর্ঘ দুই যুগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সমাপ্তি টানতে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে বিএনপি সরকারের সময় ১৬-বার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ৭-বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব আলাপ-আলোচনার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং জেএসএস সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্রীয় বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে এই চুক্তি সম্পন্ন করার ২৮টি বছর পার হলেও আজও এই চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত করা হয়নি। ফলে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি আজ প্রতারণার দলিলে পরিণত হয়েছে।’চুক্তির মূল ধারাগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আস্থা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভূমি কমিশনের কার্যক্রম শুরু করতে গেলেই তথাকথিত বাঙালি সংগঠনগুলো হরতাল ডাকে এবং মিটিং বানচাল করে।
যারা সংবিধানে সম্পৃক্ত হতে চায় তারা কী বিচ্ছিন্নতাবাদী, নাকি যারা সংবিধানে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে চায় না তারাই বিচ্ছিন্নতাবাদী?’
এ সময় জেএসএস বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি সুমন মারমার সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, জেএসএস নেতা থুই মং প্রু মারমা,
হিল উইমেন ফেডারেশনের জেলা সভানেত্রী উলিসিং মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জেলা কমিটির সদস্য সিং ওয়াই মং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম হেডম্যান নেটওয়ার্কের আইন সম্পাদক মংনু মারমা হেডম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মেঞোচিং মারমা প্রমুখ।
কুড়িগ্রামে জলবায়ু অভিবাসন মোকাবিলায় স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে অনুষ্ঠিত হয়েছে জলবায়ু অভিবাসন বিষয়ক আঞ্চলিক যুব সংলাপ। মঙ্গলবার খলিলগঞ্জের অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারে এ সংলাপের আয়োজন করে সুইজারল্যান্ড সরকারের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা হেলভেটাস বাংলাদেশ। সহায়তায় ছিল অ্যাক্সেস প্রকল্প, যা বাস্তবায়ন করছে ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)।
দিনব্যাপী এই সংলাপে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর যুব প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন কার্যক্রম, নদী ভাঙন ও বন্যা মোকাবিলা, আবাসন সংকট, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জলবায়ু অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন। অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সোহেলী পারভীন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবু মো: মনিরুজ্জামান, জেলা তথ্য অফিসার শাহজাহান আলী, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাশেদুল ইসলাম, ইন্সট্রাক্টর তাজউদ্দীন, অতিরিক্ত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আজগর আলী, সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সরকার প্রমুখ।
আয়োজকদের মতে, উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে কুড়িগ্রাম জেলার নদী ভাঙন ও চরম আবহাওয়াজনিত দুর্যোগে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে যুবসমাজকে সচেতন করা এবং সমাধান প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
জলবায়ু অভিবাসন বিষয়ক আঞ্চলিক যুব সংলাপে নাগেশ্বরী, উলিপুর এবং কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের তরুণ-তরুণী অংশ গ্রহণ করে।
অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃষকরা এবার বাজারে সবচেয়ে আগে আগাম আলুর সুখবর নিয়ে এসেছেন। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠে এখন আলু উত্তোলনের ব্যস্ততা, যেন উৎসবের রঙে মুখর নবান্নের হাওয়া। শীতের শুরুতেই বাজারে নতুন আলু ওঠায় ভোক্তাদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন আলুর স্বাদ, কোমলতা ও ঘরোয়া রান্নায় বিশেষ আবেদন চাহিদা ও দামে স্পষ্ট প্রতিফলিত হচ্ছে। গত বছরের মৌসুমে আলুর ব্যাপক উৎপাদন হওয়ায় বাজারদর ধসে পড়ে কৃষকরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং বাড়তি লাভের আশায় গঙ্গাচড়ার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক চাষিরা আশ্বিনের বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে আগাম জাতের সেভেন আলুর বীজবপন করেন। অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো পরিচর্যায় খেতজুড়ে সবুজের ঢেউ তুলে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ এখন বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
বাজারদর ঠিক থাকলে কৃষকরা আগের লোকসান পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন এমনটাই আশা স্থানীয় কৃষকদের। ইতোমধ্যে যেসব জমিতে আগাম বপন করা হয়েছিল, সেসব মাঠের আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। মাঠে প্রতি কেজি নতুন আলু ৫০-৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরাসরি মাঠ থেকে আলু কিনে ট্রাকে লোড করে নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে নোহালী ইউনিয়নের কচুয়া সদ্দারপাড়া গ্রামে দেখা গেছে, কৃষকরা উৎসবমুখর পরিবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেতের আলু তোলা, বাছাই এবং ওজন করে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির ধুম লেগে গেছে।
কচুয়া সদ্দারপাড়ার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, ‘তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছেন। জমি উঁচু থাকায় আশ্বিনের বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতি হয়নি। তিনি বলেন, ৩ বিঘা জমির আলু তুলছি। প্রায় ৫৫ দিনের মাথায় আলু বাজারে তুললাম। খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। দেড়শ বস্তার মতো আলু উঠবে বলে আশা করছি। মাঠে ৫৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে খরচ বাদে ভালো মুনাফা হবে।’
আরেক কৃষক ওমর ফারুক জানান, ‘পাইকাররা মাঠে দাম কম বলায় তিনি ও গ্রামের আরও কয়েকজন কৃষক মিলে আজ বুধবার রাতেই ট্রাকে আলু তুলে ঢাকার কাওরান বাজারে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। সরাসরি ঢাকায় নিলে প্রতি কেজিতে অন্তত তিন-চার টাকা বেশি মিলবে,’ বলেন তিনি।
এদিকে নোহালীর আরেক কৃষক মোহাম্মদ ছাবের আলী জানান, ‘তিনি ৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু তুলেছেন। প্রতি কেজি ৫২ টাকা দরে মাঠেই বিক্রি করেন। আগাম বৃষ্টির কারণে কিছু ক্ষতি হলেও দুই হাজার কেজি আলু উঠেছে। এক লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়েছে, খরচ বাদে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মুনাফা হয়েছে।’
স্থানীয় কৃষকরা জানায়, গত বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে তারা নতুন উদ্যমে ঝুঁকি নিয়ে আগাম আলু চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও ৩০ শতাংশ জমির আলু কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে উঠবে। তখন গঙ্গাচড়ার ১০ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আলু তোলার মহোৎসব শুরু হবে। কৃষকের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।
আলু তোলার পর ওই জমিতে পুনরায় সাথী ফসল হিসেবে নমলা আলু, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচামরিচ ও শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়, যার জন্য বাড়তি সারও প্রয়োজন হয় না।
গঙ্গাচড়া উপজেলার মৌসুমি আলু ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, ‘নতুন আলু বাজারে উঠতেই ক্রেতা বেড়েছে। আগাম হওয়ায় দামও ভালো। প্রতিদিন লেনদেন বাড়ছে। ভোক্তাদের মতে, নতুন আলুর স্বাদ আলাদা। পুরোনো আলুতে সেই স্বাদ নেই, তাই দাম বেশি হলেও নতুন আলু কিনছেন তারা।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আগাম আলুর চাষ হয়েছে। সঠিক সময়ে কৃষি পরামর্শ ও অনুকূল আবহাওয়ায় এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নতুন আলুর চাহিদা বেশি থাকায় বাজারদরে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত বছর ৬ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আর এ বছর ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। যা থেকে উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ টন। জেলায় ৭টি হিমাগারে ধারণক্ষমতা ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত আলু পাশের জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর, মথুরাপুর, পাহাড়পুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খাজনা ও অন্য সেবা ঘিরে চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ। সরকারি নিয়মে খাজনার হার অটোমেটিক সফটওয়্যার অনুযায়ী নির্ধারিত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটি কার্যকর নয় বলে দাবি করেছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। বরং অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে খাজনার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ওই অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অফিসটিতে একটি সক্রিয় দালালচক্রকে ব্যবহার করে নিয়মিত ঘুষ আদায় করা হয়। জমির খারিজ, নামজারি, রেকর্ড সংশোধন, খাজনা প্রদান, যে সেবাই প্রয়োজন হোক না কেন, টাকা ছাড়া নাকি মিলছে না কোনো কাজ। ফলে কর্মব্যস্ত কৃষক থেকে শুরু করে সাধারণ ভূমি মালিক, সবাইকে বারবার অফিসে ঘুরতে হচ্ছে, পোহাতে হচ্ছে অব্যাহত হয়রানি।
স্থানীয় সুজাউল হোসেন জানান, ‘তার শ্বশুরের তিনটি খতিয়ানের ১৫ শতাংশ জমির জন্য প্রথমে ৬৯ হাজার ৪১৪ টাকার খাজনা রশিদ দেন তহশিলদার রাসেল হোসেন। পরে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিলে অনলাইনে সেই একই খতিয়ানের জন্য ৫ হাজার ৮৪২ টাকার রশিদ পাই। সফটওয়্যারে খাজনা কমানো-বাড়ানোর সুযোগ নেই, অথচ ঘুষ দিলে টাকাই কমে যায়, এটা কীভাবে সম্ভব। প্রতিদিন আমাদের মতো কৃষকদের কাছ থেকে লাখ টাকার মতো অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি তার বিচার চান।’
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘চেক তুলতে গেলে প্রথমে ২৮ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। দিতে না পেরে ফিরে আসি। দ্বিতীয়বার গিয়ে ২০ হাজার টাকা দিলে ৫৭১ টাকা চেক তুলে দেয়। পরে বাকি টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলে এটাই কমিয়ে দিয়েছি। আমার সেই টাকা আজও ফেরত পাইনি।’
গত ১৪ জুলাই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহেল রানা এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মিঠাপুর ভূমি অফিস পরিদর্শনে গেলে উপস্থিত মানুষের তোপের মুখে পড়েন অভিযুক্ত কর্মকর্তা রাসেল হোসেন। সেই তদন্তের প্রায় দুই মাস পার হলেও এখনো তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
তৌহিদ হোসেন নামের এক কৃষক জানান, ‘তিনটি খতিয়ানের জন্য প্রথমে ৪ লাখ টাকার রশিদ দেওয়া হয়। পরে এক মহুরীর মাধ্যমে ২ লাখ টাকা ঘুষ দিলে মাত্র ২ হাজার ২০০ টাকার রশিদ হাতে পান।’
আলেপ উদ্দিন, যিনি ৪০ বছর ধরে পাহাড়পুর বাজারে ব্যবসা করছেন। তিনি জানান, ‘দোকানের ডিসিয়ার কাটার জন্য ১ লাখ টাকার চুক্তি করে ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হলেও ছয় মাসেও কাজ হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করা হচ্ছে।’
এনামুল হক অভিযোগ করেন, ‘খারিজ করে দেওয়ার আশ্বাসে ৩ হাজার টাকা নিলেও চার মাসেও তার খারিজ হয়নি বরং আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় ফজলে মওলা বলেন, ‘খাজনার বিষয়ে মৌখিকভাবে এক রকম কথা বলে, পরে চেকে কম টাকার রশিদ দিলেও পুরো টাকা নেয়। প্রশাসন কঠোর নজরদারি দিলে এসব বন্ধ হবে।’
ঘুষের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাংবাদিকরা রাসেল হোসেনের কার্যালয়ে গেলে তিনি উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত মোটরসাইকেলে করে অফিস ত্যাগ করেন। পরে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বদলগাছী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ উদ্দিন বলেন, ‘রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে কিছু মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘অভিযোগগুলো নওগাঁ জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্তাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন থেকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব ) সোহেল রানা বলেন, ‘রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী পরবর্তী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
বুলবুল আহমেদ ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত আছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে দুই-তিন বছর নয়, ১১ বছরের বেশি সময় একই কর্মস্থলে রয়েছেন তিনি। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তিন বছরের বেশি সময় একই কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। সে দীর্ঘ ১১ বছরেও বেশি একই কর্মস্থলে কীভাবে রয়েছেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে জনসাধারণের মুখে। তিনি দীর্ঘদিন থাকায় হাসপাতালটি তার হাতে মুঠো করে নিয়েছেন। বর্তমানে তার হুকুমে হাসপাতালটি চলছে।
একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন ডালপালা মেলেছে। অনেকেই বলছেন, এখানে ক্যাশিয়ার পদে কী এত মধু যে, চেয়ার আঁকড়ে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুলবুল আহমেদ অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৩ সালে ৯ জানুয়ারি। সেখান থেকে তিনি স্বৈরাচার সরকারের আমলে আওয়ামী নেতা ও কর্মকর্তার সঙ্গে আতাত করে ক্যাশিয়ার পদে প্রমোশন নিয়ে পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হন ২০১৮ সালে ১৫ মে। তবে তিনি সেখানে মাত্র ১ বছর কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি ২০১৯ সালে ডিপোটিউশনের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করা অবস্থায় এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে ৪ মে ২০২১ সালে বদলি নিয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই রয়ে যান এবং এখনো রয়েছেন। এতে বোঝা যায় ২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত মোট ১২ বছরের মধ্যে মাত্র ১ বছর দেবিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিলেন। অবশিষ্ট ১১ বছরেও বেশি একই কর্মস্থলে রয়েছেন। যোগদানের পর থেকে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় বুলবুল আহমেদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজস্ব একটি বলয় গড়ে তুলেছেন। অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে হাসপাতালের উন্নয়নকাজসহ যাবতীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় অদৃশ্য শক্তির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে গড়ে তুলেছেন ‘একচেটিয়া রাজত্ব’। তাকে ম্যানেজ করা ছাড়া ঠিকাদারির কাজ পাওয়া অসম্ভব। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার কাছে জিম্মি। তাকে কেউ বদলি করানোর ক্ষমতা রাখে না উল্লেখ করে বুলবুল প্রায়ই দম্ভোক্তি করেন বলে জানিয়েছেন তার একাধিক সহকর্মী। আর এতে করে বুলবুলের অনিয়মগুলো দেখার পরও সহকর্মীরা চুপ থাকেন।
বুলবুলের বিস্তর অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরে কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, সরকারি কর্মচারী হয়েও বুলবুল আহমেদ স্বৈরাচার সরকারের সময় বিভিন্ন ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে হাসপাতালে, রোগীদের খাদ্য ও পথ্যসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এখনো কি সেই স্বৈরাচার সরকারের ক্ষমতা রয়েছে। কেন এখনো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ অতি দ্রুত বদলি চাই।
ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে মোটা অঙ্কের উৎকোচ আদায়, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে কার্যাদেশের অনেক মালামাল সরবরাহ না নিয়ে অর্থ ভাগাভাগি, প্রতিদিনের নগদ টাকা হিসাব করে তা ব্যাংকে জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলে তিনি তা না করে নিজের কাজের জন্য রেখে দেন। পরে তার সময়মতো জমা করেন। এছাড়া হাসপাতালের বাসা বরাদ্দের ফাইল নিজ হাতে রেখে যা ইচ্ছা তাই করছেন। তাকে ম্যানেজ করা না গেলে হাসপাতালের বাসা বরাদ্দ পাওয়াও মুশকিল। একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও হাসপাতালের এমটি ইপিআইয়ের জন্য নির্ধারিত মোটরসাইকেল নিজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে বুলবুলের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, বুলবুল বিভিন্ন ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমএসআর, খাদ্য ও পথ্যসামগ্রী সরবরাহের ব্যবসায় সম্পৃক্ত। কিন্তু ২ বছর আগে টেন্ডারের মাধ্যমে আমি কাজ পেয়ে হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য দিতাম। কিন্তু তার ঠিকাদার না পাওয়ায়, আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতেন। আমার কাছে টাকা চাইতেন। টাকা না দিলে আমাকে নানা ধরনের হয়রানি করেছিল। বাধ্য করে আমার কাছে মাস মাস টাকা নিয়েছে।
ক্যাশিয়ার বুলবুল আহমেদ বিষয়গুলো অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ভুয়া ও মিথ্যা আমাকে হয়রানি করার জন্য এসব অভিযোগ আপনার কাছে করেছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডা. নীল রতন দেব বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর চেয়ে ভালো হয় হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিকট কেউ অভিযোগ করলে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়া ৩ বছরেরও বেশি একই কর্মস্থলে এই বিষয়টি সরকারের বিষয়। সরকার মনে করলে ৩ বছরের আগেও বদলি বা ৩ বছরের পরেও বদলি করতে পারে।
নীলফামারী জেলা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়গুলো জেনে ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন।
শিগগিরই দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন।
দুদক জানায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রশিদ শিকদার সম্পদ বিবরণীতে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩২ টাকা সম্পদের তথ্য দেখান। কিন্তু অনুসন্ধানে তার নামে পাওয়া যায় ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৪২ হাজার ৯০৩ টাকা সম্পদ (স্ত্রীর সম্পদ বাদে)। এ ছাড়া তার পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ৮৯ লাখ ১৫ হাজার ১৩৪ টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট ব্যয়সহ সম্পদ দাঁড়ায় ১০ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭ টাকা। ওই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে বৈধ আয় পাওয়া গেছে মাত্র ৩ কোটি ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩১ টাকা। ফলে রশিদ শিকদারের ৭ কোটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৪০৬ টাকার কোন বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানায়।
জ্ঞাত আয়ের বাইরে এই বিপুল সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪–এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়।
এখনো সেভাবে জেঁকে বসেনি শীত। বাংলা অগ্রহায়ণ মাসের অর্ধেক পার হলেও প্রকৃতিতে এখনো হালকা শীত। সাধারণ ডিসেম্বর মাসে এমন শীতই থাকে। তবে কয়েকদিন পরই শীতের তীব্রতা বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এবারের শীত মৌসুমে তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মোট আটটি শৈত্যপ্রবাহ হবে, এর মধ্যে তীব্র হতে পারে তিনটি।
গতকাল সোমবার এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. নূরুল করিম তিন মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে। এ সময় ৩ থেকে ৮টি মৃদু (৮-১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে এর মধ্যে ২-৩টি তীব্র শৈত্য প্রবাহে (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রূপ নিতে পারে।
এ সময়ের মধ্যে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদ-নদী অববাহিকাসহ দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে কখনো কখনো কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দিন এবং রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে শীতের অনুভূতি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও ১-২ দিন শিলাবৃষ্টিসহ বজ্রঝড় হতে পারে বলেও জানান আবহাওয়াবিদ নূরুল করিম।
এদিকে ডিসেম্বরেই দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে, যার মধ্যে একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।
সীতাকুণ্ডের সিকিউর সিটি শপিংয়ে দোকান বিক্রির উৎসব উপলক্ষে মাসব্যাপী মেলার উদ্বোধন হয়েছে। সোমবার সকালে সীতাকুণ্ডের প্রাণকেন্দ্রে অত্যাধুনিক শপিংমল সিকিউর সিটির মাসব্যাপী দোকান ভাড়া ও বিক্রয় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন হয়।
পৌরসভার সাবেক কমিশনার রায়হান উদ্দিনের সঞ্চালনায় এ সময় বেলুন ও ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন সিকিউর সিটি প্রপার্টি ম্যানেজম্যান্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোরশেদুল হাসান, এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাইস-চেয়ারম্যান আখতার হোসাইন মামুন, পৌরসদর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নাছির উদ্দীন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন রফিক, সীতাকুণ্ড কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওসমান গণি, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী, জামায়াতের সেক্রেটারি মো. তাহের, পৌর বিএনপির সেক্রেটারি সালে আহমেদ সলু, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুলাহ আল কাইয়ুমসহ সিকিউর সিটি ব্যবসায়িক কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সিকিউর সিটি দোকানগুলোর বিক্রি বৃদ্ধি, স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা এবং ক্রেতাদের জন্য একটি নিরাপদ কেনাকাটার পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, মেলার মাধ্যমে একদিকে যেমন ক্রেতারা প্রয়োজনীয় পণ্য স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারবে, অন্যদিকে উদ্যোক্তারা নিজেদের পণ্য ও সেবা আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন ।
মেলায় ইলেকট্রনিক্স, হোম সিকিউরিটি ডিভাইস, নজরদারি ক্যামেরা, গ্যাজেট, স্মার্ট লকসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জামের স্টল স্থান পেয়েছে। ছাড়, বিশেষ অফার, ডেমো প্রদর্শনী, এবং ক্রেতা-সেবা কাউন্টার মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করেছে।
আয়োজক কমিটি জানায়, পুরো মাসজুড়ে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে থাকবে বিশেষ ছাড় ও লটারি ড্রসহ আকর্ষণীয় ইভেন্ট।
উদ্বোধনী দিনেই স্থানীয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ জমে ওঠেছে।
সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)। সোমবার বেলা ১১টায় রাঙামাটির বনরূপায়ি স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি উত্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে, পিসিএনপি কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান বলেন, চুক্তির ২৮ বছর অতিক্রম হলেও পার্বত্য অঞ্চলে প্রত্যাশিত শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং চুক্তির বেশ কিছু ধারা বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক অধিকারের পরিপন্থি। তিনি অভিযোগ করেন, চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে, আঞ্চলিক পরিষদের অনির্বাচিত নেতৃত্ব টিকে আছে, ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈষম্যমূলক বিধান কার্যকর রয়েছে এবং ভোটার তালিকা তৈরিতে অতিরিক্ত শর্তারোপ করা হয়েছে- যা সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সংগঠনটির দাবি, চুক্তির বেশ কিছু ধারায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে স্থানীয় পরিষদের একক সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, নতুন আইন প্রণয়নে পরিষদের মতামত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ভোটার হতে ‘স্থায়ী বাসিন্দা সনদ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে- যা দেশব্যাপী প্রযোজ্য নাগরিক অধিকার কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া চুক্তিকে অভিযোগ করা হয় কেবল নির্দিষ্ট একটি জাতিগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় প্রণীত, যেখানে সমতল বা পার্বত্য এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর দাবি-অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিসিএনপি নিম্নোক্ত চারদফা দাবি উত্থাপন করে: ১. সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।
২. পাহাড়ের সব নাগরিকের সমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা।
৩. সক্রিয় সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪. জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তা ক্যাম্পগুলো পুনঃস্থাপন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব শাব্বির আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর আবু তাহের, রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, সহসভাপতি মাওলানা আবু বক্কর, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মো. লোকমান হোসাইন, স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল, রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য হাবীব আজম, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুর হোসেন প্রমুখ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল হয়েছে। সোমবার বাদ মাগরিব কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে পৌরশাখা কৃষক দলের উদ্যোগে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, কালীগঞ্জ পৌর কৃষক দলের সভাপতি মো. হায়দার আলী শেখ। সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ। এতে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান আলম, খায়রুল আহসান মিন্টু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ইব্রাহীম প্রধান, পৌর বিএনপির সদস্য মনির উদ্দিন পাঠান মিঠু, খুরসেদ আলম কাজল, গাজীপুর জেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, পৌর কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অন্য নেতারা। এছাড়া কৃষক সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া মাহফিলে বক্তারা আবেগাপ্লুত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদান ও দেশের জন্য তার ত্যাগের কথা তুলে ধরেন। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে ও অশ্রুসিক্ত নয়নে তারা বলেন- তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিই নন, তিনি একজন জনমাতা, গণতন্ত্রের প্রতীক এবং বঞ্চিত মানুষের আশার বাতিঘর। দেশবাসীর কাছে তার রোগমুক্তি কামনায় আন্তরিকভাবে দোয়ার আহ্বান জানান তারা।
পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারসহ সকল অসুস্থ নেতা-কর্মীর জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে তবারক বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।