বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৭ ভাদ্র ১৪৩২

খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস আজ

নূরুল ইসলাম মনি
আপডেটেড
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১০:৩৩
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১০:২৩

অভিবাদন গণতন্ত্রের মা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ১৮তম কারামুক্তি দিবস আজ। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সেনাসমর্থিত সরকার ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাড়ি থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী-দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সংসদ ভবনের বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকে মুক্তির এ দিনটিকে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখলকারী এক-এগারোর সরকার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করলেও বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও আস্থার কারণে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল কূটকৌশল ব্যর্থ হয়ে যায় এবং তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, এর আগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব) তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোনো পরোয়ানা, মামলা, জিডি, এমনকি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়াই সেদিনের মঈনউদ্দিন-ফখরুউদ্দিনের সরকার জরুরি বিধিমালায় গ্রেপ্তার করে।

মহান স্বাধীনতার ঘোষক, উন্নয়নের রাজনীতির রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর ষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের কেড়ে নেওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে শহীদ জিয়ার আদর্শের রাজনীতিকে সমুন্নত রাখতে রাজনৈতিক মঞ্চে বেগম খালেদা জিয়ার আগমন ঘটে। সেই থেকে তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সফল ব্যক্তিত্ব। সাধারণ গৃহবধূ থেকে হয়ে ওঠেন একজন তুখোড়-প্রাজ্ঞ রাজনীতিক, অন্দর থেকে সদর্পে আসীন হন বিশ্বের রাজনৈতিক মঞ্চে।

স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে তিনি গণতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটি আন্দোলনে সফল হয়েছেন। দীর্ঘ ৯ বছরের সামরিক শাসনবিরোধী নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলনে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে তিনি দেশে সাংবিধানিক গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার সাহসিকতা, দেশপ্রেম, আদর্শিক দৃঢ়তা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে দেশের মানুষ তাকে আপসহীন নেত্রীর অভিধায় অভিষিক্ত করেছে।

গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় অনমনীয় ও দৃঢ়চেতা ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া। কোনো চক্রান্তকারী শক্তি তাকে পরাভূত করতে পারেনি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তার নাম স্বমহিমায় মহিমান্বিত হয়ে আলোর দ্যুতি ছড়াচ্ছে।

এক-এগারোর সেনা-সমর্থিত সরকার ও তার পরবর্তী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু অপশক্তির রোষানলে পড়ে জিয়া পরিবার। ফরখরুদ্দিন-মঈনদ্দিনের সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বারবার দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তাকে রাজি করতে পারেনি। তিনি বিদেশে যাননি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নানাভাবে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন খালেদা জিয়া। শত অমানবিক অত্যাচারের শিকার হয়েও তিনি দেশ ছেড়ে যাননি।

স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বরণের পর নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যদিয়ে ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিতে একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপারসন নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

১৯৮৩ সালে সাত দলীয় ঐক্যজোটের মাধ্যমে এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। একই সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন অপর জোট যৌথভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। ১৯৮৬ সালের এরশাদের পাতানো নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন, ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে কেউ যাবেন না। যারা যাবে তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে চিহ্নিত হবে। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনা গিয়ে জাতির কাছে জাতীয় বেইমান হন। আর সাধারণ নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র-জনতা তাকে আপসহীন নেত্রী উপাধিতে ভূষিত করে।

১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া এরশাদ হটাও এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। ফলে সংসদ ভেঙে দেন জেনারেল এরশাদ। পুনরায় শুরু হয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। অবশেষে দীর্ঘ ৮ বছর একটানা নিরলস ও আপসহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া রাজধানীর ঢাকার দুটি আসনসহ মোট পাঁচটি আসনে অংশ নিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেন।

১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি হলেন বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী। তার সরকার দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার কায়েম করে।

১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। খালেদা জিয়া তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে দলে যোগ দেওয়ার পর থেকে মোট পাঁচবার তিনি গ্রেপ্তার হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর প্রথম গ্রেপ্তার হন। এরপর ১৯৮৪ সালের ৩ মে দ্বিতীয়বার, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো গ্রেপ্তার হন। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখে গ্রেপ্তার হয়ে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তিলাভ করেন।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি আদালত একটি সাজানো মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেয়। ওইদিনই তাকে আদালতের পাশে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিত্যক্ত ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি ছিলেন তিনি। কোনো অপরাধ না করেও শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বছরের পর বছর তাকে কারাবন্দি থাকতে হয়। কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে তার ওপরে চালানো হয় অবর্ণনীয় মানসিক নির্যাতন।

তবে চব্বিশের জুলাই-আগস্টের প্রবল গণআন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন। দেড় দশকের ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটে। এরপর দুই মামলার দণ্ড থেকে গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের বিশ্বাস তার লড়াই-সংগ্রাম আর আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত হবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবসে তার প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা ও অভিবাদন।

কেবল দীর্ঘকাল ধরে কারারুদ্ধ করে রাখাই নয়, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, হত্যার উদ্দেশ্যে হাসিনা সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল। সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য আটক করে রাখা হয়েছিল। অবরুদ্ধ অবস্থায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।

জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এক-এগারোর বিতর্কিত সরকার ও শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার স্বাধীনতার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর ওপরও অত্যাচার নির্যাতনের স্টিমরোলার চালায়।

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারা গ্রেপ্তার হন। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান আরাফাত রহমান কোকো। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই তার জীবনের সমাপ্তি ঘটে। আওয়ামী লীগ সরকারের চোখ রাঙানি সত্ত্বেও ঢাকায় তার জানাজায় পঁচিশ লক্ষাধিক লোক শরিক হয়। এতে প্রমাণিত হয় জিয়া পরিবারের প্রতি মানুষের কী পরিমাণ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

আর ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির বিপুল বিজয়ের পর তারেক রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের টার্গেট হন। তাকে শুধু রাজনৈতিক ময়দান থেকে নয় দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। তাকে নিয়ে চলে গোয়েবলসীয় কায়দার মিথ্যাচার।

এক-এগারোয় সরকারের হাতে গ্রেপ্তারের পর তারেক রহমানের ওপর পুলিশ রিমান্ড ও কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হয়। একটানা ৫৫৪ দিন বা ১৮ মাস কারাবাস করতে হয় তাকে। এরপর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি পিজি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তি পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান।

সুচিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন দেশে আসতে না পারলেও বিদেশে থেকেই তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। দলকে সুসংগঠিত করে স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তার নেতৃত্বে দল আজ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক শক্তিশালী। আগামী নির্বাচনে দেশবাসীর প্রিয় নেতা তারেক রহমানের সফল নেতৃত্বে বিএনপি বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে বলে সকলের প্রত্যাশা।


খাগড়াছড়িতে সেনা প্রধানের উপহার সুপেয় পানির সুবিধা পেলা দূর্গম এলাকার শতাধিক পরিবার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পানি সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের উপহার সুপেয় পানির সুবিধা পাচ্ছে রেজা মনিপাড়া ও কারিগর পাড়ার ২টি গ্রামের মোট ১১৭ টি পরিবার। বৃহস্পতিবার সকালে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ বাস্তবায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাছান মাহমুদ।

এসময় তিনি বলেন, সেনাপ্রধান গত ২৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে খাগড়াছড়ি জোনের আওতাধীন রেজামনিপাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন যেখানে তিনি পূর্বে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিদর্শনকালীন সময়ে এলাকার প্রাক্তন মেম্বার ও কার্বারীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করেন । এ সময় সম্মানিত সেনাপ্রধান উক্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। তার-ই প্রেক্ষিতে আজ রেজামনিপাড়া এবং কারিগরপাড়া এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা এবং আগামীতেও পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এধরণের উন্নয়ন কাজের ধারা অব্যহত থাকবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ, এইচডিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম, পিএসসি, জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েল ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।


সোনাইমুড়ীতে একই পরিবারের ৭ জনকে কুপিয়ে জখম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খোরশেদ আলম, নোয়াখালী 

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বসত বাড়ির যাতায়াতের পথ পাকা করাকে কেন্দ্র করে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে একই পরিবারের মহিলাসহ ৭ জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের রফিক মাস্টারের পুরাতন বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে।

এ নিয়ে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের মৃত লোকমান মিয়ার পুত্র ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম (৬১) বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী তাজুল ইসলামের মালিকানা সম্পত্তির উপর দিয়ে একই বাড়ির আব্দুল কাদেরের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক ঢালাই দিয়ে যাতায়াতের পথ নির্মাণ করছিল।এসময় বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। ১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার গিয়াস উদ্দিন, তার সহযোগী আব্দুল মালেক ও আব্দুল লতিফ বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে তাজুল ইসলামদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাজুল ইসলাম (৬১),তার ছেলে বেলাল হোসেন জিসান( ২৩),তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার (৫১),তার মেয়ে উম্মে হানি নিশি (১৮),ভাতিজা খোরশেদ আলম (৩৬),বড় ভাই মোস্তফা (৭০) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৫) গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, বাড়ির যাতায়াতের পথে ঢালাই দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা হয়েছে। একই পরিবারের সাতজন গুরুতর আহত হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে।হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


নওগাঁয় প্রেম থেকে শুরু, লাশ হয়ে সমাপ্তি 

আপডেটেড ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:৩৪
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ প্রতিনিধি

আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই স্বামীর নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ গেল জুথি খাতুন (২৩) নামের এক তরুণ গৃহবধূর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠাতলী এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

নিহত জুথি সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়া গ্রামের ঝুন্টু প্রামানিকের মেয়ে। প্রেম করে বিয়ে করলেও, ভালোবাসার সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিভীষিকায় শেষ পর্যন্ত প্রাণটাই গেল তরুণীটির।

জুথির বাবা ঝুন্টু প্রামানিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রায় এক বছর আগে প্রেম করে গাজীপুরের তানভীর নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছিল আমার মেয়ে। প্রথম দিকে সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জুথি জানতে পারে, তানভীরের আগে থেকেই আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয় কলহ। মেয়েটা অনেক সহ্য করেছে। শেষে অন্যায় মেনে না নিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।

বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির তারিখ। সকালে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জুথি। কিন্তু তার আর আদালত পর্যন্ত যাওয়া হলো না। কাঠাতলী মোড়ে পৌঁছাতেই ওঁত পেতে থাকা তানভীর আচমকা ছুরি হাতে জুথির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সে। আশপাশের লোকজন দ্রুত জুথিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার বর্ণনায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরাও। সকালের ব্যস্ত সড়ক হঠাৎই থমকে যায় রক্তাক্ত দৃশ্যের সামনে। “মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ এক ছেলেকে দৌড়ে এসে ছুরি চালাতে দেখি। আমাদের চোখের সামনে সব হয়ে গেল বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্ত চলছে। ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ঘটনায় শুধু এক তরুণীর জীবনই নিভে গেল না, প্রশ্ন উঠেছে সমাজব্যবস্থার প্রতিও। যেখানে একজন নারী নিজেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস করে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিল, সেখানেও নিরাপদ থাকলেন না তিনি। মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই কথা, জুথির কী দোষ ছিল? শুধু একজন ভালোবাসা চাওয়া, সম্মান চাওয়া নারী তার জন্যই কি জীবন দিতে হলো।


২০০ কৃষক পেল বিনামূল্যে সার ও মাসকলাই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

২০২৫-২৬ অর্থ বছরের খরিপ-২ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা ও পূনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় মাসকলাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ এবং সার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সুবিধাভোগী প্রতি কৃষকদের মাঝে ৫ কেজি মাসকলাই বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়।

এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান মামুনসহ বিভিন্ন ব্লকের উপসহকারীরা উপস্থিত ছিলেন।


চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় হিজড়াদের ওপর হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বোয়ালখালী দাবিকৃত চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় হিজড়াদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১২ জন হিজড়া আহত হয়েছেন।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন—সিমি (২৮), অপর্না (১৭), তিশা (২৭), নদী (২৯), লতা (৩০), নাদিয়া (৩৮), মেঘলা (২৯), দুষ্টু (৩০), শিখা (৩০), বদ্দুনি (৪২) সহ আরও কয়েকজন।

দক্ষিণ জেলা হিজড়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া হিজড়া বলেন, 'পৌর সদরের মীরপাড়ার বাসিন্দা ফারুক ওরফে অনিক (৩০) আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে মাসোহারা দাবি করে আসছিলো। এজন্য প্রায় সময় ভীতি দেখাতে থাকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তৃষ্ণা হিজড়াকে ফারুক জানায় বাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকা থেকে ভাগ দিতে হবে নয়তো সে দেখে নিবে।'

'এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যার পর বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গাড়ির গতিরোধ করে ফারুকের নেতৃত্বে ২০-২৫ লোক লাঠিসোটা দিয়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়েছে।'

'এসময় আমরা ২৪ জন হিজড়া ছিলাম। ওদের মারধরে বেশ কয়েকজন হিড়জা আহত হয়েছে বলে দাবি করেন এ হিজড়া নেত্রী।'

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ করে হিজড়ারা বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হচ্ছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি কার্কি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হওয়ার জন্য ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের প্রথম পছন্দ।
বৃহস্পতিবার জেন জি’র একজন প্রতিনিধির বরাত দিয়ে কাঠমাণ্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

একজন সামরিক মুখপাত্র বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল বুধবার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন এবং জেন জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন।

তবে তিনি আন্দোলনের এই সংগঠনের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

সেনাবাহিনী ৩ কোটি মানুষের হিমালয়ের এই দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাইছে।

মঙ্গলবারের সহিংসতায় গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত থাকা রক্ষা বাম বলেন ‘এ মুহূর্তে সুশীলা কার্কির নামই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসার জন্য আলোচনায় আছে। আমরা এখন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

তিনি এএফপিকে জানান, আমরা সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছি। আলোচনাটি ছিল কীভাবে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারি— তা নিয়ে।

৭৩ বছর বয়সী নেপালের প্রথম নারী সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি কার্কি এএফপিকে বলেন, সংসদ এখনও বহাল আছে। এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একত্রিত হওয়া দরকার।

তবে আন্দোলনকারীদের এই পছন্দ যে সর্বসম্মত নয়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন অন্যরা। পরস্পরবিরোধী যুক্তি ও বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকোর্ডে অনুষ্ঠিত একটি ভার্চুয়াল সভায় হাজারো তরুণ তাদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং কে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন সে বিষয়ে বিতর্ক করেছেন। এসব আলোচনায় বিভিন্ন যুক্তি ও প্রস্তাবিত নাম উঠে এসেছে।

সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, এখানে বিভাজন আছে। এমন বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থ ও ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দিয়েছে। শহর শান্ত থাকলেও বিভিন্ন স্থানে একাধিক সেনা চৌকি বসানো হয়েছে।

সোমবার কাঠমাণ্ডুতে সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।

কিন্তু তা দ্রুত সারাদেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণে রূপ নেয় এবং সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাণঘাতী দমন অভিযানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয় ।


মহেশখালীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে তিন পুলিশ সদস্য আহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুর্বৃত্ত গুলিতে পুলিশের ৩সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন কোহেলিয়া সেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, মহেশখালী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ সেলিম (৩৬), কনস্টেবল সোহেল (৪৪) ও কনস্টেবল মো. মাসুদ (৩৬)। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে নিয়মিত চোরাই মালামাল বের হয়। এসব মালামাল বহনকারী গাড়ি আটকিয়ে একদল ডাকাত দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। মঙ্গলবার রাতেও ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়।

খবর পেয়ে পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দ্রুত বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন, ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।


ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে বেশ কয়েক স্থানে অতি সম্প্রতিকালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়েজুল্লাপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দুদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাটও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এতে ৭০--৮০ জনের পান চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তাদের ৩০০০ পান বরজের সারি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পাদদেশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জুনিয়াদহ ইউপি'র ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের রায়টা-মহিষকুন্ডি বেরিবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কিছুটা কম।ভাঙ্গনে হুমকিতে রয়েছে উক্ত এলাকার বসতবাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে ভাঙ্গন নিয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।এলাকাবাসীর দাবি, এমনি অবস্হা চলতে থাকলে আরো মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। অন্যদিকে বাহাদুরপুরের মাধবপুরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় রয়েছে কৃষিজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ বিস্তীর্ণ প্রান্তিক চাষিদের পান বরজ।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ৭০-৮০ জন পান চাষির প্রায় ৩০০০ পিলি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সৎকারে ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশান ঘাটটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

আমিরুল নামের এক কৃষক জানান,তার ভাই আরজেত ও তার পুত্রদের ৭/৮ বিঘা জমির প্রায় ৮০০ পিলি পানের বরজ নদীতে বিলীন হয়েছে ।তাদের একমাত্র উৎস পান বরজ হারিয়ে তারা দিশেহারা ও পাগলপ্রায়। উপার্জনের জায়গা হারিয়ে তারা এখন পথের ফকির।

মবির পন্ডিত,রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা,নাসির, আনেজ,আজগর,আবু,শিহাব নামের কৃষক এরা সকলেই ১০০ পিলি করে পানের বরজ হারিয়েছেন।

পানচাষি আবুল আলী জানান, মাধবপুর এলাকায় গত দুই বছর আগে এই সমস্ত বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।এবার তা পদ্মা নদী গ্রাস করলো। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছি।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।অতি শীঘ্রই আমরা সেখানে পরিদর্শনে যাবো। এছাড়া বসতবাড়ি থাকার কারণে জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে নদীর পানি কমে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চলগুলোতেও পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হবে।

ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জেনেছি।ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


জামালপুরে গরুচুরির অপবাদে ট্রাকচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে ট্রাকচালক রিপন মিয়াকে (৪২) গরুচুরির অপবাদে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের পলাশী বাজারে পরিবার ও স্থানীয়রা এই মানববন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করে।

ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে নিহতের ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়া, শাহীন, ফুপু মঞ্জুয়ারা, ভাবী নার্গীসসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, উপজেলার রেহাই পলাশতলা এলাকার মৃত কছর আলীর ছেলে প্রবাসী মওলানা (৩৫) সৌদি আরবে থাকাকালীন চার বছর আগে তার স্ত্রীর সাথে ট্রাকচালক রিপন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে রিপন মিয়া ঢাকায় চলে যায় এবং গত ৬ মাস আগে রিপন মিয়া আবার নিজ এলাকায় ফিরে আসে। এরই মধ্যে মওলনা দেশে আসেন। এরপর তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী মওলনার সাথে রিপন মিয়ার একাধিকবার কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্রোশের জেরে ট্রাকচালক রিপন মিয়া গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার মৃত কছর উদ্দিনের চার ছেলে মওলনা, বুরহান, রাজু, দিলুসহ তাদের লোকজন পরিকল্পিতভাবে রিপন মিয়াকে টেনেহিচড়ে বুরহানের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখে। এ সময় প্রতিবেশীরা ছুটে এলে গরুচুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বাধা অবস্থায় তাকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় রিপন মিয়ার চিৎকারে তার বাবা মোজাম্মেল হক (৬০), ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়াসহ পরিবার ও স্বজনরা তাকে উদ্ধারের জন্য গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তারা মেলান্দহ থানায় গিয়ে রিপন মিয়াকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ গিয়ে রিপন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরের দিন ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন বক্তারা। পরে বিক্ষোভ করে স্থানীয় এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, এই ঘটনায় নিহতের বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জামালপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।


জয়পুরহাটে নষ্ট ডিমের খোসার পাউডারে ভাগ্য বদল বেলাল মোল্লার

আপডেটেড ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:২৯
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট 

জয়পুরহাটে ডিমের নষ্ট ও পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরী করে সাড়া ফেলেছেন এক উদ্যোক্তা। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগি, গরুর খাবারের ক্যালসিয়াম হিসেবে ও জমির জৈব সার হিসেবে। জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি-হ্যাচারি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে এই পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে ভাগ্য বদলেছে উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানা যায়, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী গ্রামের বাসিন্দা বেলাল মোল্লা ১০-১২ বছর থেকে জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করতেন। সেই খোসা তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। এরপর জানতে পারেন সেই খোসা দিয়ে পাউডার তৈরী করে বিক্রি করা হয়। সেই ভাবনা থেকে ২০২৪ সালে স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। এরপর থেকে তাকে আর পেঁছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছোট কারখানায় প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছেন। আর এ পাউডার ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার হিসেবে। এছাড়া গরু, মাছ ও মুরগির জোগান দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের। উপকার পেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমের পাউডার নিতে আসছেন কৃষক ও মৎসচাষীরা। ৫০ কেজির পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার লাভ থাকছে ২০ হাজার টাকা।

উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লা বলেন, আগে বিভিন্ন হ্যাচারি ও পোল্ট্রি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতাম। পাউডারের বিষয়ে জানতে পেরে নিজে কারখানা স্থাপন করেছি। আমার এখানে ৫ জন কাজ করে। এই পাউডারের প্রচুর চাহিদা। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছি। চাহিদা মতো সরবরাহ দিতে পারছিনা।

কারখানার শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ডিসের খোসা পরিস্কার করে মেশিনের ভেতর দেওয়ার পর তা পাউডার হয়ে বের হয়ে আসে। তারপর এখান থেকে বাজারজাত করা হয়। আমরা এখানে ৫ জন কাজ করি। এখান থেকে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল মতো চলে।

সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার হাবিব হাসান বলেন, এতোদিন জানতাম ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। কখনো ভাবিনি যে এটা কোন কাজে লাগতে পারে। এখন দেখছি এখান থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে তা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেউ জমির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

সদর উপজেলার বেতলী গ্রামের বিপ্লব হোসেন বলেন, আমাদের এলাকাতে ডিমের খোসা থেকে যে পাউডার তৈরী হচ্ছে সেটা অনেক ভাল বিষয়। এমন উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে তেমন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

কালাই উপজেলার মাদাই গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, আমি একজন মাছ চাষী। এখান থেকে ডিমের পাউডার কিনে দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে মাছকে খাইয়েছি। এতে দেখছি, মাছ যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল, তার চেয়ে একটু বেশি বেড়েছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, এই ডিমের খোসার পাউডার অনেক কৃষক জমিতে ব্যবহার করছে। ডিমের খোসাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই জাতীয় উপাদানগুলো পাওয়া যায়। যেটা কোন গাছের খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটাকে আমরা যদি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকারে আসবে। বেলাল মোল্লা যে পাউডার উৎপাদন করছেন সেটাতে কি পরিমাণ কোন উপাদান আছে সেটা যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে জমিতে কি পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে তার একটা মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে। এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পোল্ট্রি অধ্যষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার প্রচুর ডিম বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই ডিমের খোসা থেকে বেলাল মোল্লা পাউডার তৈরি করছেন। এই পাউডার মৎস্য, পোল্ট্রি ও কৃষি জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। ডিমের খোসায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাংগানিজ, বোরন, জিংকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই খোসা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের খাদ্যের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। এই উপাদানগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, যখন আমরা এর উৎপাদন বাড়াতে পারবো, তখন আমদানি পরিমাণ কমে আসবে।


১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি, স্বপ্ন পূরণ লিজা ও রাকিবের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা

মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বিলকিস সুলতানার, বাবা-মায়ের আদর–স্নেহ না পেয়ে বেড়ে ওঠা বিলকিস সুলতানা সরকারি চাকরি পেয়ে এবার নিজেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করবেন। একই সাথে নাজমিন নাহার লিজা তার বাবা ইসমাইল কারিগর বহু বছর আগে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে অতি কষ্টে লেখাপড়া করেছেন লিজা। বাবার স্নেহ–ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মায়ের আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। এবারের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেয়েছেন নাজমিন নাহার লিজা (১৮)।

নিজের যোগ্যতায় সরকারি চাকরি হওয়ায় স্বপ্ন পূরণের আনন্দে চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে লিজার। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামের লিজা বলেন, “নানা–নানীর সংসারে থেকে লেখাপড়া করেছি। সেভাবে বাবা-মায়ের আদর পাইনি, তারা থেকেও যেন নেই। আমার চলার পথ সহজ ছিল না। স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বর্তমানে কলেজে পড়ছি। আমি ভাবিনি সরকারি চাকরি হবে। বাড়ি থেকে একাই পুলিশ লাইন্সে এসেছি পরীক্ষা দিতে, আমার সাথে কেউ আসেনি। এখন সবাইকে ফোন করে চাকরির বিষয়টি জানাচ্ছি। মাত্র ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে আমি অনেক খুশি এখন থেকে আমার আনন্দের সময় শুরু।

শুধু লিজা নন, সাতক্ষীরায় এবার মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ২৮ জন চাকরিপ্রার্থী। তাদের মধ্যে ২৬ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে। কোন তদবির বা অনৈতিক লেনদেন ছাড়াই, শুধুমাত্র শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে এসব তরুণ–তরুণীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে জেলার পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃতদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

সাতক্ষীরার রাকিব রায়হান (১৯) পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। তিনি জানান এর আগে আরও দুইবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম। দেখেছি, সবারই নিজ নিজ যোগ্যতায় চাকরি হয়েছে। তাই হাল ছাড়িনি, এবার তৃতীয়বারের মতো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার চাকরি হয়েছে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই—আলহামদুলিল্লাহ। আমি ব্র্যাক স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করে আমার এলাকার হাইস্কুলে পড়েছি। কখনো ভাবিনি ঘুষ ছাড়া চাকরি হবে। কিন্তু টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে সত্যিই আজ আমি আনন্দে আত্মহারা।”

বাবুল, আনোয়ার হোসেন (১৮), তাপসী (২০) ছাড়াও আরও কয়েকজন নিয়োগপ্রাপ্ত বলেন, “এত স্বচ্ছ নিয়োগ হবে জানতাম না। ভাবতাম পুলিশে চাকরি নিতে অনেক তদবির করতে হয়, লাখ লাখ টাকা ঘুষ লাগে। চাকরি হবে কিনা সংশয় ছিলাম, তবুও পুলিশ লাইন্সে এসেছি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে। কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, তদবির ও লেনদেন ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকায় যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি হয়েছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন ২৪ জুলাইয়ের বিপ্লব তথা ৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষ যে জনআকাঙ্ক্ষার পুলিশ চায়, সেই পুলিশ গড়ে তুলতে হলে সবার আগে স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা দরকার। সারাদেশে এভাবেই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুলিশে নিয়োগ হচ্ছে। আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন তাদের সন্তানদের পুলিশে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন।”

ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে এবার প্রায় ১৯ শত জন আবেদন করেন। যাচাই–বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৩৪৪ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে ৫৮ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে মোট ২৮ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। এছাড়া অপেক্ষমান রয়েছেন আরও ৬ জন।


সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির (এসইইউ) ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আইআরটি) এর আয়োজনে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে “দি নিড ফর রিহেবিলেশন অ্যাজ এ মেজর পার্ট অব ডিজেবল কেয়ার” শীর্ষক একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিআরপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক ভ্যালেরি এ. টেইলর, যিনি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী মানুষের যত্ন ও পুনর্বাসনে আজীবন অবদান রেখে অসংখ্য মানুষের জীবন পরিবর্তন করেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণে পুনর্বাসন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে নতুন ও স্বল্প খরচের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করতে সিআরপি অত্যন্ত আগ্রহী।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, যিনি শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার ও সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে আহ্বান জানান।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইআরটি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. হাসনাত এম. আলমগীর। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রযুক্তি ও নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

পুরো আয়োজনটি অংশগ্রহণকারীদের কাছে এক অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন খাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।


জাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রায় ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল সোয়া আটটার দিকে ক্যাম্পাসের পেছনে গেরুয়া এলাকা সংলগ্ন ফটকে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ লেখা ব্যানার ঝোলানো হয়েছে।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (পিপিএম) আনিসুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ঝুঁকি নেই। তবে অন্যান্য ফটকের তুলনায় গেরুয়া ফটক দিয়ে বাইরের লোকজন ঢোকার চেষ্টা করবে। এ কারণে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশি রাখা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি গতকাল রাজধানীতে সাংবাদিকদের জানান, জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, আনসার, বিজিবি– সব বাহিনীই মাঠে থাকবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থায় থাকবে। প্রয়োজনে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দায়িত্ব পালন করবে।

জাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য নেওয়া হয়েছে সব প্রস্তুতি। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশ ফিরবে বলে আশা করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৭৭ ও হল সংসদে ৪৪৫ প্রার্থী আছেন ভোটের এই লড়াইয়ে। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৯ ও জিএস পদে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গঠনতন্ত্র সংস্কার করে ১১টি পদ বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে। এর আগে ছিল ১৪টি পদ।

২৫ পদের মধ্যে ছাত্রীদের জন্য আছে ছয়টি সংরক্ষিত। নেতৃত্বে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এমন উদ্যোগ। ৩৩ বছর পর হচ্ছে জাকসু নির্বাচন। ভোটে অংশ নিচ্ছে ক্যাম্পাসে সক্রিয় সব সংগঠন।

ভোট গণনায় ব্যবহার করা হবে বিশেষ ওএমআর মেশিন। ফলাফল তাৎক্ষণিক সিনেট হলে বসানো বড় স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হবে এবং প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে আপডেট জানানো হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও জনসংযোগ দপ্তরের ফেসবুক পেজে ফলাফল ও নির্দেশনা প্রকাশ করা হবে।


banner close