আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ল্যাবএইড গ্রুপ, ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল ও ল্যাবএইড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাহিনীর সদর দপ্তরে আয়োজিত এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ এবং ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম।
এই চুক্তির আওতায় আনসার ব্যাটালিয়ন, অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার, ভিডিপি সদস্য এবং তাঁদের পরিবারবর্গ ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের সারাদেশব্যাপী ৩২টি শাখায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে ডোপ টেস্ট, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইকো, ইটিটি সহ অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। পাশাপাশি, হাসপাতালে ভর্তি ও বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা সেবায় বিশেষ ছাড়ের সুবিধাও ভোগ করবেন তাঁরা।
বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি ইতোমধ্যেই গ্রামীণ ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের সাথে চুক্তির মাধ্যমে সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। ‘সুখী’ অ্যাপের মাধ্যমে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সহজে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের এই প্রক্রিয়া সদস্যদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। ল্যাবএইডের সাথে নতুন এ সহযোগিতা সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেন- “ল্যাবএইডের সাথে এ চুক্তি বাহিনীর চিকিৎসা কার্যক্রমের একটি মাইলফলক। এটি কেবল শুরু, ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা হবে।”
অন্যদিকে ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম বলেন- "শিগগিরই সারাদেশে ল্যাবএইডের প্রতিটি শাখায় আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা হবে।”
উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে যৌথভাবে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসা কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস পাবে, চিকিৎসা গ্রহণ হবে আরও সহজলভ্য এবং বাহিনীর সামগ্রিক কর্মদক্ষতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোঃ সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
জয়পুরহাটে ডিমের নষ্ট ও পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন এক উদ্যোক্তা। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগি, গরুর খাবারের ক্যালসিয়াম হিসেবে ও জমির জৈব সার হিসেবে। জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি-হ্যাচারি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে এই পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে ভাগ্য বদলেছে বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী গ্রামের বাসিন্দা বেলাল মোল্লা ১০-১২ বছর থেকে জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করতেন। সেই খোসা তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। এরপর জানতে পারেন সেই খোসা দিয়ে পাউডার তৈরি করে বিক্রি করা হয়। সেই ভাবনা থেকে ২০২৪ সালে স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছোট কারখানায় প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছেন। আর এ পাউডার ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার হিসেবে। এছাড়া গরু, মাছ ও মুরগির জোগান দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের। উপকার পেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমের পাউডার নিতে আসছেন কৃষক ও মৎসচাষিরা। ৫০ কেজির পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার লাভ থাকছে ২০ হাজার টাকা।
বেলাল মোল্লা বলেন, আগে বিভিন্ন হ্যাচারি ও পোল্ট্রি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতাম। পাউডারের বিষয়ে জানতে পেরে নিজে কারখানা স্থাপন করেছি। আমার এখানে ৫ জন কাজ করে। এই পাউডারের প্রচুর চাহিদা। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছি। চাহিদা মতো সরবরাহ দিতে পারছিনা।
কারখানার শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ডিসের খোসা পরিষ্কার করে মেশিনের ভেতর দেওয়ার পর তা পাউডার হয়ে বের হয়ে আসে। তারপর এখান থেকে বাজারজাত করা হয়। আমরা এখানে ৫ জন কাজ করি। এখান থেকে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল মতো চলে।
সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার হাবিব হাসান বলেন, এতদিন জানতাম ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। কখনো ভাবিনি যে এটা কোন কাজে লাগতে পারে। এখন দেখছি এখান থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে তা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেউ জমির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার বেতলী গ্রামের বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকাতে ডিমের খোসা থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে সেটা অনেক ভালো বিষয়। এমন উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে তেমন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।’
কালাই উপজেলার মাদাই গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, আমি একজন মাছ চাষি। এখান থেকে ডিমের পাউডার কিনে দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে মাছকে খাইয়েছি। এতে দেখছি, মাছ যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল, তার চেয়ে একটু বেশি বেড়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, এই ডিমের খোসার পাউডার অনেক কৃষক জমিতে ব্যবহার করছে। ডিমের খোসাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই জাতীয় উপাদানগুলো পাওয়া যায়। যেটা কোন গাছের খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটাকে আমরা যদি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকারে আসবে। বেলাল মোল্লা যে পাউডার উৎপাদন করছেন সেটাতে কি পরিমাণ কোনো উপাদান আছে সেটা যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে জমিতে কি পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে তার একটা মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে। এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পোল্ট্রি অধ্যষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার প্রচুর ডিম বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই ডিমের খোসা থেকে বেলাল মোল্লা পাউডার তৈরি করছেন। এই পাউডার মৎস্য, পোল্ট্রি ও কৃষি জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। ডিমের খোসায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাংগানিজ, বোরন, জিংকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই খোসা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের খাদ্যের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। এই উপাদানগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, যখন আমরা এর উৎপাদন বাড়াতে পারব, তখন আমদানি পরিমাণ কমে আসবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএফআইডিসি) দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গ্রিনরোডের পানি ভবনে উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘের ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)-এর এশিয়া প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন ডিভিশনের রিজিওনাল ইনভেস্টমেন্ট টিম লিড মারিয়া পেরডোমো বৈঠক করেন।
বিএফআইডিসির আধুনিকায়ন নিয়ে আলোচনাকালে তিনি বলেন, তবে পুরনো যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়ার কারণে আধুনিক আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
উপদেষ্টা আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন, নকশা উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বিএফআইডিসি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম। তবে পুরনো যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়ার কারণে আধুনিক আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন, নকশা উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, কৌশলগত অংশীদারিত্ব, সময়োপযোগী সম্পদ সংগ্রহ ও সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বিএফআইডিসিকে সৃজনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা সম্ভব। রাবার চাষের পাশাপাশি বাঁশ ও বেতের মতো বিকল্প উপকরণে বৈচিত্র্য আনা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করলে বনজ সম্পদের ওপর চাপ কমবে। সরকার জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিএফআইডিসি আধুনিকায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মারিয়া পেরডোমো আর্থিক, কারিগরি ও সক্ষমতা উন্নয়নে ইউএনসিডিএফ-এর সহায়তার আশ্বাস দেন এবং জানান, এ প্রক্রিয়ায় ইউএনডিপি ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীর সম্পৃক্ততাও নিশ্চিত করা যেতে পারে।
সভায় বিএফআইডিসি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসানসহ ইউএনসিডিএফ ও বিএফআইডিসি-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রকল্প সংক্রান্ত নথি ও সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পর্যালোচনার জন্য ভাগাভাগি এবং সম্পদ সংগ্রহ ও উন্নয়ন সহযোগীদের সম্পৃক্ততা জোরদারে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিলুপ্ত সাড়ে ২২ কেজি ওজনের একটি ঢাই মাছ। বৃহস্পতিবার সকালে দৌলতদিয়া মৎস্য আড়তে উন্মুক্ত নিলামে উঠলে মাছটি দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সম্রাট শাহজাহান কিনে নেন। এসময় মাছটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।
তিনি জানান, প্রতিদিনের মতো জেলে জীবন হালদার মধ্যরাতে তার ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও তার সহযোগীদের নিয়ে পদ্মা নদীর উজানে চর কর্ণেশন এলাকায় মাছ ধরতে যায়। ভোররাতে জাল তুলতেই দেখতে পায় বড় একটি ঢাই মাছ ধরা পড়েছে। পরে ২২ কেজি ৬০০ গ্রাম ওজনের ঢাই মাছটি
সকালে দৌলতদিয়া মৎস্য আড়তে আনলে উন্মুক্ত নিলাম উঠলে সম্রাট শাহাজান প্রতি কেজি ৪৬০০'শ টাকা কেজি দরে কিনে নেন নিয়ে ফেরিঘাটে তার আড়তঘরে নিয়ে আসেন।
তিনি আরও বলেন, মাছটি সর্বমোট আমি ১ লক্ষ ৩ হাজার ৯৬০ টাকায় কিনে নেই। মাছটি বিক্রয়ের জন্য আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করছি। আরও বলেন, আমার জীবনে এতো বড় ঢাই মাছ কখনো দেখিনি, আজ মাছটি কিনতে পেরে আমার সবচেয়ে ভালো লাগছে।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের স্থানীয়া মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, পদ্মার এ ধরনের বড় মাছ নিলামে উঠলে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে যায়। দাম যতোই বেশি হোক, মাছটি কেনার চেস্টা করে সবাই। তাছাড়া ঢাই মাছ অনেক সুস্বাদু।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, ঢাই মাছ এখন খুবই কম দেখা যায়, তাছাড়া এটি বিলুপ্তির পথে। মাছগুলো খেতেও অনেক সুস্বাদু। পদ্মার এ ধরনের মাছ আকারে বড় হয়ে থাকে। এই মাছের দামও তুলনামূলক বেশি। এ ধরনের মাছ কিনতে বড় বড় ব্যবসায়ী, প্রবাসীদের চাহিদা থাকে।
দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। কিছুদিন পরেই বাঁজবে দুর্গাপূজার সুর। সারাদেশের মত রাউজানেও চলছে পূজার প্রস্তুতি। শুরু হয়েছে উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা-সমাবেশ। প্রতিমা তৈরির কাজও শেষের দিকে। প্রতীমাকে রংতুলিতে সাঁজাতে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা। এ ব্যস্ততা শুধু প্রতিমা তৈরির নয়; অমল-সুজন-সুশান্তদের এ ব্যস্ততা করোনার ক্ষত সারানোরও। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্নস্থানে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের দম ফেলবার ফুসরত নেই। প্রতিমালয়গুলো ঘুরে দেখা গেছে মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় নবরুপ পাচ্ছেন দেবী দুর্গা। একইসঙ্গে চলছে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমার ফিনিশিং। নানা রঙে দৃষ্টিনন্দন সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিমাগুলোকে। উৎসুক অনেক দর্শনার্থী ভিড় করছেন এসব প্রতিমার তৈরির কারখানায়। মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রতিমার তৈরির কাজ ৯৫ ভাগ প্রায় শেষ। দিন-রাত কাজ চলছে। বাকি পাঁচ ভাগ কাজ তিন-চারদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর অর্ডার অনুযায়ী বুঝিয়ে দেওয়া হবে প্রতিমা। রাউজান উপজেলায় প্রতিবছরের ন্যায় ২৩৩ টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয়া দুর্গাপূজা। রাউজানের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের ২৩৩ টি মন্ডপের স্থানগুলো পরিদর্শন করেছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাকর্মিরা। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কান্তি ও সাধারণ সম্পাদক সুমন দাশ গুপ্ত বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্যে পূজা মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক টিম থাকবে। তদারকি করা হবে সকল কার্যক্রম। আমরা প্রশাসনের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পূজার কর্মকান্ড পরিচালনা করবো। ইতোমধ্যে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, রাউজানের ২৩৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পৌর এলাকায় থাকবে মন্ডপ। সড়কে যাতায়াতের সুবিধার্থে ট্রাফিক পুলিশ থাকবে। পূ
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, পূজারীরা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে পূজা দিতে পারে সেজন্যে পুলিশ তদারকিতে থাকবে। আমরা পূজা কমিটির সাথে বৈঠক করেছি। তাদের জানিয়েছে, কোন অবস্থাতে বিশৃঙ্খলা মেনে নেয়া হবে না। কোন মাদকাসক্ত পূজা মন্ডপে থাকতে পারবে না।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে বেশ কয়েক স্থানে অতি সম্প্রতিকালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়েজুল্লাপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দুদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাটও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এতে ৭০--৮০ জনের পান চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তাদের ৩০০০ পান বরজের সারি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পাদদেশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জুনিয়াদহ ইউপি'র ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের রায়টা-মহিষকুন্ডি বেরিবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কিছুটা কম। উক্ত এলাকার বসতবাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নিয়ে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।
গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ৭০-৮০ জন পান চাষির প্রায় ৩০০০ পিলি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সৎকারে ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশান ঘাটটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মবির পন্ডিত, রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা,নাসির, আনেজ, আজগর, আবু, শিহাব নামের কৃষকরা সকলেই ১০০ পিলি করে পানের বরজ হারিয়েছেন।
পানচাষি আবুল আলী জানান, মাধবপুর এলাকায় গত দুই বছর আগে এই সমস্ত বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।এবার তা পদ্মা নদী গ্রাস করলো। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছি।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। অতি শীঘ্রই আমরা সেখানে পরিদর্শনে যাবো।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জেনেছি।ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা, একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা’ কাশবনে গেলেই কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কবিতাটি মনে পড়ে যায়। শরতের বিকেলের স্নিগ্ধতা যেন বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই কাশবন। কাশফুলের মাঝে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায় তরুণ-তরুণীদের। এলোমেলো বাতাসের সাথে খোলা রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, দুইধারে সাদা মেঘের মতন ফুলের মেলা যেন পাগল করে তোলে এখানে ঘুরতে আসা মানুষের।
শরতের এতো রূপ. এতো রঙধনুর রং, এতো নীল আকাশের নীলা, এতো ছায়াপথের আলোছায়া, এতো সূর্য্যাস্তের রক্তরাগ, এতো ভোরের শিশির, এতো কাঁশ ফুলের হেলা দোলা, আর এই বাংলা মা ছাড়া কোথায় পাবো? চোখ জুড়িয়ে যায়, মন জুড়িয়ে যায়, জীবন জুড়িয়ে যায়, সব পেয়েছি আমার এই দেশের সোনার বাংলায়।
আকাশে নরম তুলার মতো শুভ্র মেঘের ভেসে বেড়ানো আর দিগন্তজোড়া প্রান্তরে কাশফুলের মনোরম দৃশ্য দেখে বুঝতে হবে শরতের আবির্ভাব ঘটেছে। এ সময়ে নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে প্রকৃতিকে দেয় এক অপরূপ ভিন্ন সৌন্দর্য। এভাবেই রূপগঞ্জ উপজেলার বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের কাশফুলের শুভ্রতা নজর কাড়ছে পথচারীদের। সিনথিয়া নামের এক পথচারী জানান, শহর থেকে নদী পথে যাওয়ার সময় হঠাৎ কাশফুলের এমন চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য দেখে না থেমে পারলাম না।
আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। নীল আকাশজুড়ে অলস মেঘের অবাধ বিচরণ। খণ্ড খণ্ড মেঘের নিরুদ্দেশ যাত্রা। রোদের ঝলকানির পাশেই মেঘের ছায়া। মেঘ আর রোদের কানামাছি খেলার মাঝে বৃষ্টিও অংশ নিচ্ছে। এমন দিনে রূপগঞ্জে আপনাকে স্বাগত জানাতে কাশফুল ‘সাদা ডালি’ সাজিয়ে বসে থাকে। ফাঁকা জমিতে শরতের সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসে আছে এ কাশফুল।
সৌন্দর্যে ঐশ্বর্যে প্রকৃতির রূপ লাবণ্যে শরৎরাণীর রূপ বর্ণনায় শ্যামল ছায়া বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট, নদী-নালা ও বিলের পাড়ে বালুচরে নীল আকাশে রূপালী তারায় ভরে উঠেছে সাদা কাশবন। মেঘ মুছে যাওয়া বর্ষণ শেষের আকাশে হাজার হাজার তারা ঝিকিমিকি করে জ্বলছে। রোদে ঝল মল করছে চারিদিক। দেখা যাচ্ছে নীল আকাশ স্বচ্ছ সাদা মেঘ। আর সাদা মেঘের ভেলায় ভাসছে কাশফুলের ছোঁয়া। দৃষ্টিনন্দন এ কাশফুলের স্বর্গ রাজ্য এখন রূপগঞ্জের নদীর তীরে ও পূর্বাচলের বালুময় বিস্তৃর্ণ এলাকা। আর এ কাশফুলের ছোঁয়া নিতে সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসছে দর্শনার্থীরা।
বালুর মধ্যে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুল দেখে মনে হবে, প্রকৃতি আপনার মনের প্রশান্তির জন্য এ রূপে সেজেছে। শেষ প্রান্তের দুদিকে সাজানো কাশফুল দেখে মনে হবে, যেন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কাশফুলের রাজ্যে। যত দূর চোখ যায়, তত দূর কাশ ফুলের শুভ্রতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাশবনে এ সৌন্দর্য দেখতে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলার ভ্রমণ প্রেমীরাও ভিড় করেছে। অনেকে দলবেধে নৌকা বা ট্রলার নিয়েও বেড়াতে যান এ কাশফুলের রাজ্যে। কাঁশফুল কাছে পেলেই ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। কেউ সেলফি তুলছেন আবার কেউবা ভিডিও করছেন। সূর্যাস্তের সময় নদীতে গোধূলির লাল, একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার মতো। যে কেউই এর অপার সৌর্ন্দযে নীরব সাক্ষী হতে চাইবে।
কথা হলো কাশফুল দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। রিতা মিতা বিথী জুয়েল তারা তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘কাশফুলের কাছে এসে খুবই আনন্দ পাচ্ছি। মনকে পরিষ্কারের জন্য আমরা এখানে আসি। কাশফুলের সান্নিধ্য পাওয়াটা একটু বাড়তি বিনোদন। অবসর সময়টা কাটানোর ভিন্ন একটা স্থান কাশফুলে জেগে এ প্রকৃতি। আরেকটা বিষয় আমাদের খুব ভালো লাগে। সেটা হচ্ছে, এই যে নদী তার পাশে কাশফুলের এ রাজ্য। বিষয়টা দেখতেও বেশ রোমাঞ্চকর।
'সেবার ব্রতে চাকরি' এই শ্লোগানে ঝালকাঠিতে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে জুন-২০২৫ এর নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসহ ঝালকাঠি জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১০সেপ্টেম্বর) রাতে পরীকায় উত্তীর্ণদের মাঝে পুলিশ লাইনস্ এর ড্রিল শেডে আনুষ্ঠানিক ভাবে চুরান্ত ফলাফল ঘোষনা করেছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়। ফলাফল ঘোষনার সময় উত্তীর্ণদের ফুল দিয়ে বরণ করে মিষ্টি খাইয়ে দেয়া হয়। এবারের নিয়োগে শুণ্য পদ অনুযায়ী উত্তীর্ণ ৯ জন ও অপেক্ষমান তালিকার ২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়।
এসময় অভিভাবকরা আবেগপ্রবণ হয়ে তাৎক্ষণিক অনুভূতি ব্যক্ত করেন যে, তারা কৃষক, দিনমজুর, অটোচালক বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত। যদি বাংলাদেশ পুলিশ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ না দিতেন তাহলে আজ তাদের সন্তানেরা বাংলাদেশ পুলিশের মত গর্বিত বাহিনীতে চাকরি করার সুযোগ পেত না। মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে তাদের সন্তানদের বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ দেওয়ায় পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিভাবকরা।
পুলিশ সুপার ফলাফল ঘোষনার পর তার বক্তব্যে উত্তীর্ণদের উদ্দেশ্যে বলেন 'কয়েটি ধাপের পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে যারা উত্তীর্ণ হয়েছে প্রত্যেককে অভিনন্দন জানাই। সেইসাথে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দেশসেবার মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কাজ করার আহবান জানাই।'
প্রশিক্ষণকালীন বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সদ্য চাকুরীপ্রাপ্তদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন পুলিশ সুপার।
খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পানি সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের উপহার সুপেয় পানির সুবিধা পাচ্ছে রেজা মনিপাড়া ও কারিগর পাড়ার ২টি গ্রামের মোট ১১৭ টি পরিবার। বৃহস্পতিবার সকালে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ বাস্তবায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাছান মাহমুদ।
এসময় তিনি বলেন, সেনাপ্রধান গত ২৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে খাগড়াছড়ি জোনের আওতাধীন রেজামনিপাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন যেখানে তিনি পূর্বে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিদর্শনকালীন সময়ে এলাকার প্রাক্তন মেম্বার ও কার্বারীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করেন । এ সময় সম্মানিত সেনাপ্রধান উক্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। তার-ই প্রেক্ষিতে আজ রেজামনিপাড়া এবং কারিগরপাড়া এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা এবং আগামীতেও পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এধরণের উন্নয়ন কাজের ধারা অব্যহত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ, এইচডিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম, পিএসসি, জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েল ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বসত বাড়ির যাতায়াতের পথ পাকা করাকে কেন্দ্র করে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে একই পরিবারের মহিলাসহ ৭ জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের রফিক মাস্টারের পুরাতন বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে।
এ নিয়ে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের মৃত লোকমান মিয়ার পুত্র ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম (৬১) বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী তাজুল ইসলামের মালিকানা সম্পত্তির উপর দিয়ে একই বাড়ির আব্দুল কাদেরের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক ঢালাই দিয়ে যাতায়াতের পথ নির্মাণ করছিল।এসময় বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। ১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার গিয়াস উদ্দিন, তার সহযোগী আব্দুল মালেক ও আব্দুল লতিফ বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে তাজুল ইসলামদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাজুল ইসলাম (৬১),তার ছেলে বেলাল হোসেন জিসান( ২৩),তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার (৫১),তার মেয়ে উম্মে হানি নিশি (১৮),ভাতিজা খোরশেদ আলম (৩৬),বড় ভাই মোস্তফা (৭০) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৫) গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, বাড়ির যাতায়াতের পথে ঢালাই দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা হয়েছে। একই পরিবারের সাতজন গুরুতর আহত হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে।হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নওগাঁ প্রতিনিধি
আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই স্বামীর নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ গেল জুথি খাতুন (২৩) নামের এক তরুণ গৃহবধূর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠাতলী এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত জুথি সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়া গ্রামের ঝুন্টু প্রামানিকের মেয়ে। প্রেম করে বিয়ে করলেও, ভালোবাসার সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিভীষিকায় শেষ পর্যন্ত প্রাণটাই গেল তরুণীটির।
জুথির বাবা ঝুন্টু প্রামানিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রায় এক বছর আগে প্রেম করে গাজীপুরের তানভীর নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছিল আমার মেয়ে। প্রথম দিকে সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জুথি জানতে পারে, তানভীরের আগে থেকেই আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয় কলহ। মেয়েটা অনেক সহ্য করেছে। শেষে অন্যায় মেনে না নিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির তারিখ। সকালে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জুথি। কিন্তু তার আর আদালত পর্যন্ত যাওয়া হলো না। কাঠাতলী মোড়ে পৌঁছাতেই ওঁত পেতে থাকা তানভীর আচমকা ছুরি হাতে জুথির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সে। আশপাশের লোকজন দ্রুত জুথিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বর্ণনায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরাও। সকালের ব্যস্ত সড়ক হঠাৎই থমকে যায় রক্তাক্ত দৃশ্যের সামনে। “মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ এক ছেলেকে দৌড়ে এসে ছুরি চালাতে দেখি। আমাদের চোখের সামনে সব হয়ে গেল বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্ত চলছে। ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ঘটনায় শুধু এক তরুণীর জীবনই নিভে গেল না, প্রশ্ন উঠেছে সমাজব্যবস্থার প্রতিও। যেখানে একজন নারী নিজেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস করে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিল, সেখানেও নিরাপদ থাকলেন না তিনি। মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই কথা, জুথির কী দোষ ছিল? শুধু একজন ভালোবাসা চাওয়া, সম্মান চাওয়া নারী তার জন্যই কি জীবন দিতে হলো।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের খরিপ-২ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা ও পূনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় মাসকলাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ এবং সার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সুবিধাভোগী প্রতি কৃষকদের মাঝে ৫ কেজি মাসকলাই বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়।
এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান মামুনসহ বিভিন্ন ব্লকের উপসহকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী দাবিকৃত চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় হিজড়াদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১২ জন হিজড়া আহত হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন—সিমি (২৮), অপর্না (১৭), তিশা (২৭), নদী (২৯), লতা (৩০), নাদিয়া (৩৮), মেঘলা (২৯), দুষ্টু (৩০), শিখা (৩০), বদ্দুনি (৪২) সহ আরও কয়েকজন।
দক্ষিণ জেলা হিজড়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া হিজড়া বলেন, 'পৌর সদরের মীরপাড়ার বাসিন্দা ফারুক ওরফে অনিক (৩০) আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে মাসোহারা দাবি করে আসছিলো। এজন্য প্রায় সময় ভীতি দেখাতে থাকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তৃষ্ণা হিজড়াকে ফারুক জানায় বাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকা থেকে ভাগ দিতে হবে নয়তো সে দেখে নিবে।'
'এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যার পর বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গাড়ির গতিরোধ করে ফারুকের নেতৃত্বে ২০-২৫ লোক লাঠিসোটা দিয়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়েছে।'
'এসময় আমরা ২৪ জন হিজড়া ছিলাম। ওদের মারধরে বেশ কয়েকজন হিড়জা আহত হয়েছে বলে দাবি করেন এ হিজড়া নেত্রী।'
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ করে হিজড়ারা বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।