ছয় ট্রাক সুপারিকে আচার ঘোষণার পর ছাড়পত্র নিয়ে টেকনাফ বন্দর ছেড়েছিল ট্রাকগুলো। কক্সবাজারও ভালোভাবে পার হয়েছিল। কিন্তু কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পটিয়ায় এসে ধরা পড়ে পুলিশের হাতে।
গত ১৩ নভেম্বর ভোররাতে পটিয়ায় গোয়েন্দা পুলিশের চেকপোস্টে ট্রাকগুলো থামানো হয়। পণ্যের চালানের কাগজপত্র দেখে সন্দেহ করে পুলিশ। ডাক পড়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে তারা বলেন, ‘এ তো পুকুর চুরি!’
মিয়ানমার থেকে আনা পণ্যের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে সরকারের আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকারও বেশি।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সুপারি আমদানিকারক চারজন। তাদের পণ্যগুলো ছয়টি ট্রাকে করে নেয়া হচ্ছিল। আমদানিকারকদের মধ্যে দুজন টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির স্বজন। একজন ছোট বোনের স্বামী ফারুক এবং অন্যজন বদির ছোট ভাই আব্দুল আমিন। আব্দুল আমিন আবার আত্মস্বীকৃত ইয়াবা গডফাদার। বাকি দুজনের একজন রানা নামে এক ব্যবসায়ী, অন্যজনের নাম জানা যায়নি। বদির বোনের স্বামী ফারুকেরই তিনটি ট্রাক, বাকি তিনজনের একটি করে।
চট্টগ্রামের শুল্ক গোয়েন্দা ও কাস্টমসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ গতকাল রোববার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘টেকনাফ বন্দর থেকে আসা ছয়টি ট্রাক আমরা আটক করেছি। তারা সুপারি আমদানি করলেও আচারের শুল্ক দিয়ে পণ্য খালাস করেছে। প্রতি টন সুপারির শুল্ক ১ লাখ ৭০ হাজার হলেও আচারের ২২ হাজার টাকা। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা পণ্যছাড়ের জন্য ভুয়া ছাড়পত্র দিয়ে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকিতে অসাধু ব্যবসায়ীদের সহায়তা করে বিপুল অর্থ নিজেদের পকেটে তুলছেন টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। রাজস্বের তারতম্যের ফাঁকে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করে শত শত কোটি টাকার সম্পদসহ গত বছর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বন্দরের শুল্ক ডেস্কে কাজ করা নুরুল ইসলাম।
আসলেই কি এভাবে রাজস্ব ফাঁকি দেয়া সম্ভব? এ প্রশ্নের উত্তর মিলেছে স্থলবন্দরেরই মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের কাছে। তার সরল স্বীকারোক্তি, কাগজপত্র জালিয়াতি বা পণ্য মিস ডিক্লারেশন (মিথ্যা ঘোষণা) দিলে অবশ্যই সম্ভব। এখানে কেউ চুরি করতে চাইলে এ পথেই করে।
১৩ নভেম্বর পটিয়ায় ছয়টি ট্রাক আটক করে পুলিশ। তাদের কাছে খবর ছিল টেকনাফ বন্দর হয়ে ট্রাকে করে মাদক আসছে। এমন খবরে ট্রাকগুলো তল্লাশি করেন পুলিশ সদস্যরা। সে সময় তাদের ট্রাকে সুপারি থাকলেও কাগজপত্রে আচারের নামে খালাস হয়েছে দেখে সন্দেহ হয়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি নূর আহাম্মদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে আমদানিকারকদের নিজেদের কোনো লোক ছিল না। তবে যারা পণ্য বহন করছিলেন তারা বিষয়টি জানতেন বলে মনে হয়েছিল। যেহেতু বন্দরে কর ফাঁকির বিষয়, তাই আমরা শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে কাগজপত্রসহ ট্রাকগুলো বুঝিয়ে দিই।’
কর ফাঁকির বিষয়টি জানতে আমদানিকারক ফারুকের মোবাইলে ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে আব্দুল আমিন বলেছেন, ‘কাস্টমসকে কাগজপত্র দেখিয়ে মালামাল না পেলে নেব না। এর বাইরে কথা বলতে পারব না।’
আরেক আমদানিকারক রানা দৈনিক বাংলার কাছে দাবি করেন, তার ট্রাকে ২১০ বস্তায় ১৫ হাজার ৬৭৮ কেজি সুপারি আছে। করসহ মোট দাম ৬০ লাখ টাকা। তিনি ৩৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা কর দিয়েছেন বলেও দাবি করেন। তাহলে ট্রাক আটক হলো কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার কাগজপত্র ঠিক আছে। তবে আমি যে ট্রাকের সারিতে চট্টগ্রামে মাল পাঠাচ্ছিলাম তাদের কাগজপত্র ঠিক ছিল না। তাই তাদের সঙ্গে আমার ট্রাকও আটক করেছে।’
যদিও চট্টগ্রামের শুল্ক গোয়েন্দা অফিসে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। সেখানকার কর্মকর্তারা বলছেন, আমদানিকারকরা সবাই লিখিত আবেদন করেছেন। আমরা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেছি সবারই কিছু না কিছু ঝামেলা রয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তবে বন্দর সূত্র বলছে, জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ার পর তড়িঘড়ি করে জাল ডকুমেন্ট বানানোর চেষ্টা চলছে। পরবর্তী সময়ে সেটিই দেখিয়ে সুপারির ট্রাক ফেরত নেয়া হবে। এতে সহযোগিতা করছেন টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ স্থলবন্দরের একজন আমদানিকারক বলেন, ‘এখানে এটি নতুন কিছু না। একটি সিন্ডিকেট নিয়মিত এক পণ্যের আড়ালে অন্য পণ্য খালাস করে। এতে সরকার একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের মতো যারা কর দিয়ে ব্যবসা করে তারা বিপদে আছে।’
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বন্দরে সাবেক এমপি বদি ও তার স্বজনদের অন্য ধরনের ক্ষমতা আছে। বন্দরের কাস্টমসের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে তাদের যৌথ সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা সবাই মিলেই মিয়ানমারের আমদানি-রপ্তানি মালামাল থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা অবৈধ আয় করে। আর তাদের কাজে সহযোগিতা করে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানগুলো।
এর আগে গত ৩০ জুন টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা মালামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে-বিজিবি। এ সময় অবৈধ মালামাল বহনের দায়ে ৫০ লাখ টাকার একটি ট্রাকও জব্দ করা হয়।
টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, টেকনাফ থেকে কক্সবাজারগামী একটি ট্রাক হোয়াইক্যং চেকপোষ্টে এলে নিয়মিত তল্লাশির মুখে পড়ে। ট্রাকটি তল্লাশির সময় চালক (মালামালের মালিক) ও হেলপার এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লোকজনের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন জানা যায়, তারা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মালামাল নিয়ে যাচ্ছিল।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর দৈনিক বাংলাকে বলেন, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি ও দুর্নীতির মাধ্যমে একটি চক্র শত শত কোটি টাকা গায়েব করেছে। এর পেছনে রয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা।
যেসব খাত থেকে টাকা নেয় বন্দরের লোকজন
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্দরে ভুয়া ছাড়পত্রের বাইরেও অবৈধ আয়ের আরও প্রায় ১৪টির বেশি খাত রয়েছে। এই খাতগুলো থেকেও শুল্ক কর্মকর্তারা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা অবৈধ আয় করেন। শুল্ক কার্যালয়ের নামে গাড়িপ্রতি ৪ হাজার টাকা, শুল্ক বিভাগের পিয়নের জন্য ১ হাজার, স্ট্যাম্প ৭০০ টাকা, ফরমালিন পরীক্ষা ৬ হাজার, মেটাল পরীক্ষার চালান ৩ হাজার, বন্দর গেট ১ হাজার, লেবার খরচ প্রতি গাড়ি ৫ হাজার, শুল্ক ৭ হাজার, শুল্ক গোয়েন্দার নামে ২ হাজার, পুলিশের নামে গাড়িপ্রতি ৫০০ টাকা, সিঅ্যান্ডএফ ৬০০ টাকা, কম্পিউটার অপারেটর ১ হাজার। আর রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ট্রলারপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে টাকা হাতিয়ে নেন তারা।
জাফর নামে বন্দরের পুরোনো এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার থেকে মালপত্র আমদানি-রপ্তানি করে যে টাকা আয় করি তার তিন ভাগের এক ভাগ এই সিন্ডিকেটের পকেটে চলে যায়। একজন গ্রেপ্তার হয়েছে কিন্তু সিন্ডিকেট এখন সচল রয়েছে।’ তার দাবি, এদের মাধ্যমেই বড় কর্তারা টাকার ভাগ পান।
বাংলাদেশে শিল্পীদের কদর কোনোদিন ছিল না, এখনো নেই- এমনই মন্তব্য করেছেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, ‘যারা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন তারা যদি গানবাজনার কিছু না বোঝেন, মূল্য না দেন তাহলে তো আমাদের (শিল্পী) করার কিছু নেই। জোর করে কিছু হবে না।’
গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের একটি স্টুডিওতে নতুন গান রেকর্ডিং অনুষ্ঠানে সাবিনা ইয়াসমিন এসব কথা বলেন।
দেশের জনপ্রিয় এই গায়িকা আরো বলেন, ‘লতা মঙ্গেশকরের পা ধরে প্রণাম করেন মোদি (নরেন্দ্র মোদি), কিন্তু এদেশ শিল্পীর কদর করে না। তারা সম্মান জানিয়ে গানকে কোথায় নিয়ে গেছেন বলে বোঝাতে পারব না। কিন্তু আমাদের দেশে সরকারিভাবে সেটা কখনো পেয়েছি? কত বড় বড় শিল্পী ছিলেন আমাদের মাঝে। বিশেষ করে পুরুষ শিল্পীদের তো কেউ নেই।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমাদের এন্ড্রু কিশোর, সুবীর নন্দীর মতো এত ভালো শিল্পী ছিল, তাদের কিছু কিছু গান তো আর্কাইভ করে রাখা যেত। এগুলোর কথা তো কেউ চিন্তা করে না। সবশেষ ফরিদা পারভীন নিভৃতে চলে গেলেন, তার মতো শিল্পী কি আর আসবে? এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’
চলচ্চিত্রের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান এই কিংবদন্তি শিল্পী। ব্যক্তিগত আক্ষেপ না থাকলেও শিল্পীদের গানের রয়্যালিটি প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘অন্যান্য দেশে থাকলেও আমাদের এখানে গানের রয়্যালিটির সুব্যবস্থা নেই। সরকার এদিকে সুদৃষ্টি না দিলে ঠিক হবে না। আবদুল আলীম, রহমান বয়াতি থেকে বহু শিল্পীর পরিবার রয়্যালিটি পেলে অনেক ভালো থাকতেন। যদি এই সিস্টেমটা ঠিক হতো তাহলে শিল্পীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারতো।
কার্গো ট্রাকসহ বিপুল পরিমাণের ভারতীয় শাড়ী, থ্রি পিচ, ওষুধ, মোটর সাইকেলের টায়ার এবং বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স সামগ্রী আটক করেছে বিজিবি। গত সোমবার রাতে এসব পণ্য আটক করা হয়েছে।
বিজিবি জানান, গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক, লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী, এসপিপি, পিএসসি এর সার্বিক দিক নিদের্শনায় ভারতীয় চোরাচালানী পণ্য পাচার রোধে বেনাপোল বিওপি হতে একটি বিশেষ চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। বেনাপোল বাইপাস সড়ক থেকে মাগুরা কার্গো সার্ভিসের একটি কার্গো ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৭৫৬৬) তল্লাশীর জন্য থামানো হয়। পরবর্তীতে ট্রাকটিতে অবৈধ মালামাল বহন করতে পারে মর্মে সন্দেহ হলে ট্রাকটি তল্লাশীর জন্য বেনাপোল বিজিবি ক্যাম্পে আনা হয়। কার্গো ট্রাকটি তল্লাশি করে ট্রাকের ভেতর হতে ভারতীয় শাড়ী ১৪৭৬ টি, থ্রী পিচ ২১৫ টি, মোটর সাইকেলের টায়ার ২টি, বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ১০৬৯৩ টি, কার্গো ট্রাক ১টি এবং ৭৪৪৫৫টি বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স সামগ্রীর বৈধ কাগজপত্র না থাকায় জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক সিজার মূল্য ২ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৩০ টাকা।
আটককৃত চালক ও হেলপার জানান, বেনাপোল নামাজ গ্রামের বিল্লালের সাথে ২০ হাজার টাকা চুক্তির বিনিময়ে উক্ত মালামালগুলো বেনাপোল থেকে ঢাকা, মিপরপুর পাচার করার উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় ট্রাকের সাথে থাকা আ. মালেক ও অন্তর কর্মকার নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
যশোর ৪৯বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী, জানান, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারত হতে কাগজপত্রবিহীন মালামাল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। আটককৃত ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ী, থ্রি পিচ, ওষুধ, বিভিন্ন প্রকার কসমেটিক্স সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
মীরসরাইয়ে ছাত্রদলের ৩ নেতাকে বহিষ্কার করেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত সোমবার রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক নাজিম উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ জানানো হয়। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন, মীরসরাই পৌরসভা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইনজামামুল হক ইমন, নিজামপুর কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শামীম হোসেন এবং উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা নাঈম সরকার।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ছাত্রদলের তিন নেতাকে প্রাথমিক সদস্যসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তকিবুল হাসান চৌধুরী তকি ও সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন রুবেল, ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন। বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবে না। ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে কোনোরূপ বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ওই বিষয়ে কোনোরূপ শৈথিল্য না দেখিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।’
সম্প্রতি বহিষ্কার হওয়া মীরসরাই পৌরসভা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইনজামামুল হক ইমন জানান, এই বহিষ্কার আদেশ ষড়যন্ত্র করে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে নেওয়া হয়েছে। গত রোববার সকালে নিজামপুর কলেজে ২৪ ও ২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনাকে পরবর্তীতে রাজনীতিতে রূপ নেয়। দুপুরে দমদমা এলাকায় এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে আসায় বিকেলে ছাত্রদলের দুগ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এরপর সন্ধ্যায় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় (বাজি) ল্যাঞ্চার দিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুরো বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্রদলের তিন নেতা বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান গ্রুপের রাজনীতি করতে বলে জানা গেছে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের বুড়িচালা গ্রামের আ. গণি মিয়া (৬৭)। ১৮ বছর আগে দুটি চোখই অন্ধ হয়ে যায় তার। হতদরিদ্র্য আ. গণি মিয়া চোখের চিকিৎসা করাতে না পারায় এক পর্যায়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হয় তাকে।
তবে জীবনযুদ্ধে হার মানেননি তিনি। চোখে দেখতে না পেলেও নিপুণ হাতের মননশীলতার ছোঁয়ায় করে চলেছেন বাঁশ ও বেতের কাজ। তৈরি করছেন কুলা, চাটাই, টুকরি, টেপারি,ডালা, চালুনিসহ বাঁশ ও বেতের নানান জিনিস। প্রতিদিন সামান্য আয় দিয়ে তার স্ত্রীকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করেন তিনি।
জীবন সংগ্রামে অদম্য লড়াকু আ. গণি মিয়াকে দেখে অনেকেই হতচকিত হয়ে পড়েন। প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর কঠোর পরিশ্রমে আ. গণি মিয়া হাল ধরেছেন সংসারের। হস্ত ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের এই কাজে তাকে সহযোগিতা করার মতো কেউ নেই। পাশে থাকেন বহু দিন ধরে প্যারালাইজড হওয়া শয্যাশায়ী স্ত্রী হাউসী বেগম (৬২) ।
দৃষ্টিহীন হয়েও গণি মিয়া ভিক্ষা করতে চাননি কখনো। ১৮ বছর আগে হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি। পৃথিবীর আলো দেখা বন্ধ হলেও থেমে নেই তার জীবনযুদ্ধ।
জঙ্গল থেকে বাঁশ কুড়িয়ে আনেন, ইশারায় কেটে চিরে বানান কুলা, টেপারি আর ঝুড়ি। প্রতিদিন আলিশার বাজারে বসে সেগুলো বিক্রি করেন। কাজ করার ফাঁকে গেয়ে ওঠেন ধর্মীয় গজল কিংবা গান- কেউ শোনে, কেউ পাশে বসে থাকে। হয়তো এটুকুই তার বেঁচে থাকার আনন্দ।
দিনশেষে হাতে আসে মাত্র ৭০–৮০ টাকা। সেই টাকায় চলে দুই বুড়ো মানুষের খাবার, ওষুধ আর নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ। সংসারে দুই ছেলে থাকলেও তারা প্রবাসে গিয়ে ভুলে গেছেন বাবা-মায়ের কষ্টের কথা। আর্থিক সহায়তা নেই, খোঁজখবরও নেই নিয়মিত। তবুও অভিমান গোপন করে মেনে নিয়েছেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা।
প্রতিবেশী জাকির হোসেন বলেন, গণি ভাই অনেক পরিশ্রমী মানুষ। চোখে দেখতে পান না, কিন্তু মনের চোখে আলো খুঁজে পান। কখনো কারো কাছে হাত পাতেন না। বাঁশ কেটে কুলা বানিয়ে বাজারে বিক্রি করেই সংসার চালান। তবে স্ত্রী অসুস্থ থাকায় কষ্টটা বেড়েছে অনেক।
এলাকাবাসী মাঝে মাঝে সাহায্যের হাত বাড়ালেও তা যথেষ্ট নয়। সামান্য সরকারি সহযোগিতা কিংবা কোনো বিত্তবান মানুষের সহায়তা পেলেই হয়তো এই দম্পতির জীবনে একটু স্বস্তি ফিরতে পারে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, ‘গণি মিয়াকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। তার মতো দৃষ্টিহীন মানুষ এত কষ্টের মধ্যেও হস্তশিল্প তৈরি করছেন- এটি নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় উদাহরণ।’
নড়াইলে জমে ওঠেছে শারদীয় দুর্গোৎসবের বাজার। নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার থাকায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করছেন ক্রেতা সাধারণ। এবার মেয়েদের কাছে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে পাকিস্তানের তৈরি পোশাক সারারা, লেহেঙ্গা।
দুপুরের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্রেতা সাধারণ প্রতিদিন শহরের রূপগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন বিপনিবিতানগুলোতে কেনাকাটার জন্য ভিড় করছেন। সঙ্গে নিচ্ছেন ছেলে-মেয়েদেরও পোশাক। তাদের পছন্দের পোশাক কেনাকাটা করছেন।
অনেক ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ গত বছরের তুলনায় এবারের পূজার বাজার দর একটু বেশি। দোকানিরা এ কথা স্বীকার করে বলছেন বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেচাকেনা করতে হচ্ছে। তবুও বেচাকেনা বেশ ভালো।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্প্রতি পূজামণ্ডপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় সভা হয়েছে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা, স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। সম্মিলিত সহযোগিতায় এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হবে। ওই সভায় বেশিরভাগ পূজামণ্ডপের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, গত পূজায় মেয়েদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে ছিল ভারতের কিরণমালা এবং বাজিরাও। তারও আগে ছিল পাখি। আর এবার বাজার মাতাচ্ছে সারারা ও লেহেঙ্গা। এছাড়া ক্যাবাচি, শিপন, আফগানি নামের পাকিস্তানি থ্রি-পিসও তরুণীদের নজর কেড়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম তরুণদের বেলায়। তাদের পছন্দ দেশীয় পাঞ্জাবি। এর মধ্যে লিমিট ও আড়ংয়ের পাঞ্জাবিগুলো রয়েছে পছন্দের শীর্ষে। তবে প্যান্টের বাজারে রয়েছে জিন্স, থাই, চায়না ও ফরমালের প্রচুর চাহিদা।
শহরের রূপগঞ্জ বাণিজ্যিক এলাকার গার্মেন্ট মালিক দীপক কুমার জানান, নতুনত্বের ছোঁয়া এসেছে পূজার বাজারে। মেয়েদের জন্য নামীদামি পোশাকের ছড়াছড়ি রয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানি পোশাকগুলো সর্বনিম্ন দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা দামের পোশাক কিনছেন মেয়েরা।
শহরের আলতাপ হোসেন, ভূইয়া শপিংমলসহ শুভেচ্ছা ফ্যাশন, নিউ ফ্যাশন পয়েন্ট, সোনলী বস্ত্রালয়, আল-আমিন বস্ত্রালয়, বাংলাদেশ বস্ত্রালয় ঘুরে দেখা গেছে, পূজার কেনাকাটা করতে প্রচুর ভিড় জমেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন জুতা, জুয়েলারি, কসমেটিক্সের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতাসাধারণ।
জুয়েলারি দোকানগুলোতে ভিড় নেই বললেই চলে। দিলীপ জুয়েলার্সের মালিক দিলীপ কুমার বলেন, ঈদের বাজার মন্দা। তেমন বিক্রি হচ্ছে না। আল-আমিন বস্ত্রালয়ের মালিক আবুল কালাম, সোনালী বস্ত্রালয়ের মালিক অবতার কুমার বলেন, জামদানী ও কাতানের পাশাপাশি দেশি প্রিন্টের শাড়িও চাহিদাও রয়েছে। বেচাকেনা মুটামুটি চলছে।
নড়াইলের নবাগত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়। এটি আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য প্রতীক। তিনি পূজা উদযাপন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান। এ জন্য প্রতিটি থানা এবং পুলিশ ফাঁড়িকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দুর্গোৎসবকে নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সমস্ত জেলাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। প্রতিটি মণ্ডপে আনছার (পুরুষ ও মহিলা) পুলিশ, ব্যাটালিয়ন পুলিশ থাকছে। এর পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে পোস্টাল ব্যালটে (আইটি সাপোর্টেড) ভোটিংয়ের জন্য নিবন্ধন এবং ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল সোমবার ইসির ওয়েবসাইটে এ প্রক্রিয়ার নমুনা প্রকাশ করা হয়। এতে ‘পোস্টাল ভোটিংয়ের (আইটি সাপোর্টেড) তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়া এবং পোস্টাল ভোটিংয়ের (আইটি সাপোর্টেড) ভোটদান প্রক্রিয়া’র বিষয় তুলে ধরা হয়।
পোস্টাল ভোটিংয়ের (আইটি সাপোর্টেড) নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এরই মধ্যে জানিয়েছেন, প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশি ভোটারদের জন্য পোস্টাল ভোটিংয়ের (আইডি সাপোর্টেড) নিবন্ধনের জন্য পোস্টাল ভোট বিডি নামে অ্যাপ চালু করবে।
ভোটের জন্য নিবন্ধন করতে গুগল প্লে-স্টোর অথবা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে মোবাইল অ্যাপ POSTAL VOTE BD ডাউনলোড করা যাবে এবং মোবাইলে ইনস্টল করতে হবে।
এই অ্যাপের মাধ্যমে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অনলাইনের নিবন্ধনে সহজ কয়েকটি ধাপে আবেদন সম্পন্ন করা যাবে। এগুলো হলো প্রথমে Postal Vote BD অ্যাপ চালু করতে হবে; দেশ নির্বাচন বাছাই (বাংলাদেশ ছাড়া) করতে হবে; নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে; মোবাইলে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) যাবে; ওটিপি ইনপুট দিয়ে নম্বর যাচাই করতে হবে; ছবি তুলতে হবে ভোটারের। লাইভ ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে; জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে সেলফি তুলতে হবে; রেজিস্ট্রেশনের জন্য এনআইডির ছবি তুলতে হবে, যা যাচাই হবে; পাসপোর্টের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই হয়ে যাবে; বিদেশে অবস্থানরত ঠিকানা দিতে হবে, যে ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পেপার যাবে; অ্যাকাউন্ট যাচাই করার পর নিবন্ধিত হবে; এরপর পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন ভোটার।
পোস্টাল ভোটিংয়ে (আইটি সাপোর্টেড) ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া
ইসির নির্ধারিত খাম পাওয়ার পর তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভোট দিয়ে ফিরতি খামে পাঠানোসহ কয়েকটি ধাপ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হলো ব্যালট পেপার পৌঁছতে অ্যাপে দেওয়া ঠিকানা তুলে ধরা হবে; ভোট দিতে ইসির নির্দেশনাবলি পাওয়া যাবে; মোবাইল নম্বর নিশ্চিত করতে হবে; নিজের ছবি তুলতে হবে; খামের ওপর কিউআর কোড স্ক্যান করে পর্যায়ক্রমে ধাপগুলো ফলো করতে হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আগামীকাল বুধবার থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৯ দিন সারাদেশের ৩১ হাজার ৫৭৬ পূজামণ্ডপে মোতায়েন থাকবেন ২ লক্ষাধিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই বিশাল নিরাপত্তা কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পূর্বে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ সদরদপ্তর এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য এবং আনসার-ভিডিপি সদস্য-সদস্যাদের যথাযথ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনে সতর্কতা, আন্তরিকতা ও জনগণবান্ধব মনোভাবের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাহিনীর চলমান সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ২ লাখ তরুণকে ইতোমধ্যে গণপ্রতিরক্ষার নতুন ধারায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হিসেবে বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নব সংযোজিত এভিএমআইএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব সদস্যের রেজিস্ট্রেশন ও হালনাগাদ তথ্য যাচাই করে পূজার নিরাপত্তা দায়িত্ব নির্ধারণ করা হচ্ছে। উৎসবকালীন দায়িত্ব পালনে যথাযথতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাহিনীর এসটিডিএম সফটওয়্যার প্রবর্তন করা হয়েছে।
এছাড়া পূজা উৎসবে কুচক্রী মহলের গুজব প্রতিরোধ ও সব অশুভশক্তি মোকাবেলায় ডিউটিরতদের জন্য ঘটনার রিপোর্ট কার্যক্রম চালু করায় নিরাপত্তা পরিধি বৃদ্ধি হয়েছে।
পাশাপাশি, দক্ষ ও যোগ্য সদস্য-সদস্যদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বাহিনী সর্বস্তরে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও দায়বদ্ধতায় যেকোনো প্রভাবক হতে মুক্ত রাখার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে পূজামণ্ডপগুলোকে নিরাপত্তা ঝুঁকির ভিত্তিতে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আটজন, গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে ছয়জন এবং সাধারণ পূজামণ্ডপে ছয়জন করে আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে দেশের ৬৪ জেলায় ৯২টি ব্যাটালিয়ন আনসার স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম মোতায়েন থাকবে।
প্রতিটি টিমে ছয়জন করে সদস্য থাকবেন, যারা নিয়মিত টহল পরিচালনা ছাড়াও যেকোনো আপতকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকবেন।
এবারের নিরাপত্তা কার্যক্রমকে আরো কার্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে মোতায়েনকৃত সদস্যরা তাদের নির্ধারিত দায়িত্বের পাশাপাশি ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপস’-এর মাধ্যমে দুর্ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করবেন। এসব তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সর্বদা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় গৃহীত সুসমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে পূজা উৎসব শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা (বডিক্যাম) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন কর হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরিকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডিক্যাম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইউএনডিপির মাধ্যমে এসব ক্যামেরা কেনা হবে। এর জন্য কত খরচ হবে তা নিদির্ষ্ট করে না বললেও কয়েকশত কোটি টাকা ব্যায় হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে গত ৯ আগষ্ট রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক উচ্চপর্যায়ের সভায় বডি ওর্ন ক্যামেরা কেনা নিয়ে আলোচনা হয়। এর পরের দিন প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে দ্রুত এসব ক্যামেরা কেনার তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ওই সময় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বডিক্যামগুলো দ্রুত ক্রয় ও হাজার হাজার পুলিশ সদস্যের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা (যা সাধারণত বডিক্যাম নামে পরিচিত) সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই ডিভাইসগুলো হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করবে।
জয়পুরহাটে সদর উপজেলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভুয়া পরিচয় দেওয়ায় দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার আমদই ইউনিয়নের মাধাইনগর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের লোগো সম্বলিত একটি সেফটি ভেস্ট ও হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়েছে।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তামবিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটকরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের মাধাইনগর গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মশিউর রহমান (৪০) ও জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের দেওগ্রামের মোজাম্মেল মণ্ডলের ছেলে মজনু মণ্ডল (৩৯)।
পুলিশ ও মাধাইনগর বাজারের লোকজন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার পর মশিউর ও মজনু বাজারে এসে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে লোকজনদের ভয়ভীতি দেখায়। তাদের কাছে পুলিশের লোগো সম্বলিত একটি সেফটি ভেস্ট ও হ্যান্ডকাপ ছিল। তাদের কর্মকাণ্ড সন্দেহ হলে বাজারের লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় দুইজনই এলোমেলো কথাবার্তা বলতে শুরু করেন এবং ডিবি পুলিশের পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে তাদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
দৈনিক বাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জ খালের ঘাঘর মুখে থাকা বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ উপস্থিত থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় খালের এই বাঁধ অপসারণ করেন। এসময় কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওলিয়ার রহমান হাওলাদার ও বাঁধ স্থাপনকারী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
জানাগেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ১৫ কোটি ৪৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে পয়সারহাট-গোপালগঞ্জ খাল খনন শুরু হয় গত বছরের ১ আগস্ট থেকে। কাজের সমাপ্তি হবে ২০২৭ সালের ০৫ সেপ্টেম্বর। আতাউর রহমান খান লিমিটেড নামে বগুড়ার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খালটি খননের লক্ষে ঘাঘর নদীর মোহনায় বাঁধ দেয় এক বছর আগে। বর্ষা মৌসুম থাকায় খাল খননের কাজ এখন বন্ধ থাকলেও বাঁধ অপসারণ না করায় খাল দিয়ে যাতায়াত সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায়। খালে বাঁধ থাকায় আসন্ন দুর্গাপূজায় বিজয়াদশমীর দিনে ঘাঘর নদীতে প্রতীমা বির্সজন নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।
বিষয়টি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দৈনিক বাংলায় `ঘাঘর নদীর মোহনায় বাঁধ অপসারণের দাবি ‘ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ বাঁধটি অপসারনের উদ্যোগ নেন।
উপজেলার তারাশী কর্মকার বাড়ী সর্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপের সভাপতি গোশাই কর্মকার বলেন, বাঁধটি অপসারণ করায় প্রতীমা বিসর্জন নিয়ে আমাদের যে শঙ্কা ছিল তা দূর হয়েছে। এজন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দৈনিক বাংলাকে ধন্যবাদ জানাই।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, খালটিতে বাঁধ থাকার কারনে প্রতীমা বির্সজনে প্রতিবন্ধকতা হতে পারে এই সংবাদ পাওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ অপসারনের ব্যবস্থা করেছি। আসন্ন দুর্গাপূজা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয় সে লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. আরাফাত মোল্লা (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে।
নিহত আরাফাত মোল্লা উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কালাম মোল্লার ছেলে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন ব্রিজে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরাফাত রাজবাড়ী জেলা জাকের পার্টি ছাত্রফ্রন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্য ও রক্তদাতা ছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে আরাফাত মোটরসাইকেল যোগে উপজেলার মাখন রায়ের পাড়া এলাকায় নতুন ব্রিজ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেলে তার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে হলে আরাফাতের মাথা ও দেহ নতুন ব্রিজের রেলিং এর সাথে সজোড়ে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে, পরে সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসাপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় তার মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হয়। পরে বিকাল ৩টার দিকে বাড়ির পাশে পূর্ব তেনাপঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাযা নামাজ শেষে কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি তদন্ত মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল দুটি থানায় রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
এদিকে, আরাফাত মোল্লার মৃত্যুতে জাকের পার্টির জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মী ও গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্যসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে সবাই শোক জানিয়েছে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকায় মারা যায় জয়ন্তী মন্ডল (৩৩) এবং সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জয়ন্তী মন্ডলের মেয়ে প্রতিভা মন্ডল (৩)।
তারা রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামের সমির মন্ডলের স্ত্রী জয়ন্তী মন্ডল ও তার মেয়ে প্রতিভা মন্ডল।
জয়ন্তী মন্ডলের ভাতিজা বিপুল মন্ডল বলেন, সমির মন্ডল স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখান থেকে গত বুধবার জ্বরে আক্রান্ত হয় জয়ন্তী মন্ডল ও তার মেয়ে প্রতিভা মন্ডল। অসুস্থ অবস্থায় তাদের ঢাকার মহাখালি আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে জয়ন্তী মন্ডল মারা যান। একদিন পর সোমবার সন্ধ্যায় তার কন্যা প্রতিভা মন্ডল মারা যায়।
তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাসুদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি।জয়ন্তী মন্ডল ও তার কন্যা প্রতিভা মন্ডল ঢাকাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ঢাকা উত্তর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন জুয়েল হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের আল্লারদর্গা বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন।
এ সময় তিনি স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মতবিনিময় করেন এবং তাদের সার্বিক খোঁজখবর নেন। আলোচনার সময় তিনি বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা দাবির গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশের মানুষের হারিয়ে যাওয়া ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আমাদের এই কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থার বিপরীতে এই কর্মসূচি জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
জুয়েল আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমেই এ দেশে একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব। মানুষের সহযোগিতা, সচেতনতা এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক রূপান্তর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির এই সংকটময় মুহূর্তে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।