কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক নার্সারি শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার জিকে ক্যানেলের পাশের একটি জমি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের নাম আবু তৈয়ব (৫৫)। তিনি গাছের কলম তৈরির কাজ করতেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের ঘাড় ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ যেখানে পড়ে ছিল, তার একটু দূরেই একটি ছোট চাকু, টর্চলাইট ও মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। এগুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা ছিল।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, মিরপুরের অঞ্জনগাছি গ্রামে বসবাস করতেন আবু তৈয়ব। তিনি ওই এলাকায় ১১ বছর ধরে বাস করছেন। তার মূল বাড়ি চট্টগ্রামে। তবে কী কারণে কারা তাকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল আলম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার কল্যাণপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে অপর ট্রাকের ধাক্কায় চালক-হেলপার নিহত হয়েছে।
নিহতরা হলেন, কুষ্টিয়া সদরের পারখানা ত্রিমোহনীর মনসুর মোল্লার ছেলে নাজমুল (৩৫) ও পশ্চিম মৌজমপুরের শাহিন মোল্লার ছেলে কাওসার (৩০)।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত ১টার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কল্যাণপুরে ঢাকামুখী সবজিবোঝাই একটি ছোট ট্রাক দাঁড়িয়ে চাকা পরিবর্তন করছিল। এসময় পেছন থেকে আসা চালবোঝাই ট্রাকটি পিকআপকে সজোড়ে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ওই ট্রাকের চালক ও তার সহকারী (হেলপার) নিহত হন। পরে খবর পেয়ে আহলাদীপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম শেখ জানান, দুর্ঘটনা কবলিত দুটি ট্রাক কুষ্টিয়া থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে রাজবাড়ী সদর কল্যাণপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং দুটি ট্রাক করে থানায় রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে কমলগঞ্জ থানা পুলিশের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম-সেবা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, এআই (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হতে পারে, তাই কোনো গুজবে প্রভাবিত না হয়ে পুলিশকে জানাতে হবে। তিনি আরও বলেন, সব ধর্মের মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) আনিসুর রহমান।
এছাড়া পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কমলগঞ্জ শাখার আহবায়ক বাবু পুষ্প কুমার কানু, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণিত রঞ্জন দেবনাথ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বাবু, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাসুক মিয়া, এনসিপি জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শামায়েল রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, উপজেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, স্থানীয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, ও ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট সীমান্তে ১৯জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১০জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছেন।
বুধবার ভোট ৫টার দিকে তাদের ভোলাহাট উপজেলার চামুচা ও চাঁদশিকারী সীমান্ত ফাঁড়ির মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ অভ্যান্তরে ঠেলে পাঠানো হয়। পুশইনের শিকার হওয়াদের বিজিবির টহলদল নিজেদের হেফাজতে নেয় ও পরবর্তী আইনী পদক্ষেপের জন্য ভোলাহাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল গোলাম কিবরিয়া জানান, পুশইনকরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, তারা ২০১৫-২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে ভারতীয় পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়। বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর, তাদেকে ভারতীয় পুলিশ বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে, পরে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে পুশইন করে।
তাদের পরবর্তী আইনী পদক্ষেপের জন্য ভোলাহাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অকেজো স্লুইস গেটের কারনে ৩ বছর ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামবাসী। স্লুইস গেটটির কপাট ভেঙ্গে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জ খাল থেকে একটি শাখা খাল তারাশী বিলে প্রবেশ করেছে। বন্যার পানি নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রায় ২০ বছর পূর্বে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে উত্তর তারাশী জামে মসজিদের পাশে এই খালের উপর একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করে। ৩ বছর আগে স্লুইস গেটের কপাট ভেঙ্গে নিচে পড়ে যাওয়ায় খালের দুইপাশে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পানি চলাচল না থাকায় পানি পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে।
তারাশী উত্তরপাড়া জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা খুব সমস্যায় পড়ছি। খালের পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাছাড়া পানি পচে যাওয়ায় মশা ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারনে এলাকার শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের মাঝে বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের জোর দাবী জানাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিষয়টি গতকাল আমি জেনেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্লুইচ গেটের কপাট ঠিক করে জনদুর্ভোগরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অগ্রণী ব্যাংক (পিএলসি) ঘোষিত ১০০ দিনের বিশেষ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও মাদারীপুর অঞ্চলের সার্বিক ব্যবসায়িক অগ্রগতি পর্যালোচনাকে কেন্দ্র করে মাদারীপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো টাউন হল মিটিং (মিট দ্যা বরোয়ার) ও ব্যবস্থাপক সম্মেলন। গত সোমবার বিকালে অগ্রণী ব্যাংক (পিএলসি) মাদারীপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর সার্কেলের মহাব্যবস্থাপক সুপ্রভা সাঈদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদপুর সার্কেলের উপমহাব্যবস্থাপক সাবিনা সুলতানা এবং সহকারী মহাব্যবস্থাপক অমল চন্দ্র সিকদার। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন মো. আসাদুজ্জামান, এস,পি,ও নিউমার্কেট শাখা, মাদারীপুর। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদারীপুর অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক ও অঞ্চল প্রধান জনাব মনজুর হোসেন। এ সময় বক্তারা অগ্রণী ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসায়িক উন্নয়ন, নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, গ্রাহকসেবা আরও সহজীকরণ করার কৌশল এবং ব্যাংকের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন। উক্ত সম্মেলনে মাদারীপুর অঞ্চলের বিভিন্ন শাখার শাখা ব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন।
অগ্রণী ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম, ব্যবস্থাপনা, খেলাপী ঋণ, কু-ঋণ ও ঋণ আদায়ের হার সম্পর্কে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফরিদপুর অঞ্চল সার্কেলের মহাব্যবস্থাপক সুপ্রভা সাঈদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, মাদারীপুর আঞ্চলিক কার্যালয় অফিসসহ বিভিন্ন শাখার সার্বিক কার্যক্রম অত্যন্ত সন্তোষজনক, ঋণ আদায়ের হার ৯৫%, খেলাপী ঋণ তেমন নেই বললেই চলে। খেলাপী ঋণ আদায়ে আমাদের সহকর্মীরা অত্যন্ত জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছেন, আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যেই অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি মাদারীপুর অঞ্চলের ঋণ আদায় হার ৯৯% এ উন্নীত হবে।
অর্থায়ন বন্ধের ফলে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্পের মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত দুই বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় এই মহাসড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। এতে জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে এই মহাসড়কটি। তীব্র যানজটে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়কে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত কুমিল্লার ৪০ কিলোমিটার অংশে ছয় লেন কাজ শুরু ও সংস্কারের দাবি জানিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদ। মঙ্গলবার কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়ছারের এই স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ১৩টি দাবি তোলে ধরা হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র মতে, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। মূল মহাসড়কটি হবে চার লেনের। ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য দুপাশে থাকবে সার্ভিস লেন। কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ৪০ কিলোমিটার অংশ পড়েছে কুমিল্লা জেলায়।
সড়কটি এখন ১৮ ফুট চওড়া। চার লেন হলে এটি প্রস্থে ৬০ ফুট হবে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল সাত হাজার ১৮৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ২০২২ সালেই প্রকল্পের কাজ শুরু করে আগামী বছরের জুনে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ অর্থায়নের কথা ছিল। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ভারত অর্থায়নের বিষয়ে নীরবতা পালন করে।
ছয় লেন বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার ও মুরাদনগর উপজেলার সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন থেকে অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশার মধ্যদিয়ে যাতায়েত করছে। বর্তমানে এই মহাসড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত দুই বছরে প্রায় এই মহাসড়কে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই সহস্রাধিক। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে মহাসড়কটি সংস্কার করে একটি নিরাপদ মহাসড়ক হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা এই বিষয়ে যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে। তবে হঠাৎ করে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাস্তবায়ন শুরু করা যায়নি। আমরা বিকল্প অর্থায়নের খুঁজে রয়েছি। নতুন বিনিযোগকারী পেলে দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।
পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ৩ নং বনগ্রাম বেংহারী ইউনিয়নের বন্দরপাড়া এলাকার কৃষক সামসুউদ্দীন চুইঝাল গাছ চাষ করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এ চাষাবাদের সাথে যুক্ত থেকে আজ নিজের পরিবারকে স্বচ্ছল জীবনের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন।
চুইঝাল গাছ মূলত সুপারি গাছ ও মেহগনি গাছে ভর করে বেড়ে ওঠে। চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। সামসুউদ্দীন জানান, দুই বছরের একটি চুইঝাল গাছের দাম প্রায় দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর যদি গাছটি পাঁচ বছর পর্যন্ত পরিচর্যা করা যায় তবে প্রতিটি গাছের বাজার মূল্য দাঁড়ায় ১৪ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। এতে কম খরচে ভালো আয় করা সম্ভব হয়।
স্থানীয় বাজারে চুইঝাল গাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে শিকড় বা লতা ছোট ছোট টুকরো করে রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি দিয়ে গরু, খাসি কিংবা মুরগির মাংস রান্না করলে ভিন্ন রকম ঘ্রাণ ও স্বাদ পাওয়া যায়। কাণ্ডের তুলনায় শিকড়ে বেশি ঝাঁঝালো স্বাদ ও কড়া সুবাস থাকায় বাজারে এর চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ানোই নয়, ঐতিহ্যবাহী খাবারের অন্যতম উপাদান হিসেবে চুইঝাল গাছ বর্তমানে গ্রামীণ রান্নাঘরের পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
চাষি সামসুউদ্দীন বলেন, ‘প্রথমে আমি ছোট পরিসরে চুইঝাল গাছ চাষ শুরু করি। এখন নিয়মিত পরিচর্যা ও বিক্রির মাধ্যমে ভালো আয় হচ্ছে। অনেকে আমার কাছ থেকে চাষাবাদের কৌশল শিখতে আসে।’
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, চুইঝাল গাছ চাষে তেমন কোনো বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। বরং কম খরচে কৃষকেরা অল্প সময়ে ভালো আয় করতে পারেন। যদি সরকারিভাবে সহায়তা প্রদান করা হয় তবে পঞ্চগড়ের চুইঝাল গাছ চাষ দেশের অন্যান্য জেলাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
স্থানীয়রা বলছেন, চুইঝাল গাছ শুধু একটি ফসল নয়; এটি পঞ্চগড়ের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঠিক উদ্যোগ ও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এ পণ্য জেলার কৃষকদের আর্থিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
চুইঝাল গাছের পাতা এবং পানপাতা দেখতে একই। পানপাতা খেতে সুস্বাদু কিন্তু চুইঝাল গাছের পাতা তিতা করে। চুইঝাল গাছের মগডাল দুইটি যখন বের তখন একটি মগডাল আলাদা করে রোপণ করা হয়। রোপণ করার সময় জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাস।
বোদা উপজেলা অফিসার (বি,সি,এস,) কৃষি পঞ্চগড়, আহমেদ রাশেদ উন নবী, তিনি জানান সুপারি বাগানে চুইঝাল গাছ রোপণ করে অনেকে সাবলম্বী হয়েছে, একদিকে সুপারি বিক্রি করে, অন্যদিকে চুইঝাল গাছ বিক্রি করেন, একই জায়গায় দুটি আবাদ হচ্ছে, বোদা উপজেলায় কয়েকজন সুপারি বাগান চাষি চুইঝাল গাছ রোপণ করতেছে দীর্ঘদিন থেকে।
মুক্তিপণ দিয়ে জীবন বাঁচানো কিংবা জোরপূর্বক মালয়েশিয়া নৌকায় ওঠা। এই দুয়ের মধ্যে যেকোনো একটিই ছিল তাদের সামনে। কারও মুক্তিপণ না মেটাতে পেরে পরিবারে ফিরেছে লাশ। কারও দেহ ভেসে ওঠেছে সাগরের নীল জলে, আবার কারও মরদেহ মিলেছে পাহাড়ি ঝরনার স্রোতে।
কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড় এখন রীতিমতো মৃত্যুপুরী। সেখানে কত বাঙালি ও রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণী এভাবে প্রতিদিন মৃত্যুর প্রহর গুণছে, তার কোনো সঠিক হিসাব নেই। স্থানীয় প্রশাসনেরও জানা নেই ঠিক কত মানুষ আজও জিম্মিদশায় রয়েছে পাচারকারীদের খপ্পরে।
গত সোমবার রাতে বিজিবি–র্যাবের যৌথ অভিযানে টেকনাফের পাহাড়ি আস্তানা থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৮৪ জন মালয়েশিয়াগামী যুবক। তাদের মধ্যে রয়েছেন মুন্সীগঞ্জের অমিত হাসান, একই জেলার মানিক মিতা ও কুষ্টিয়ার রেজাউল করিমসহ আরও অনেকে।
তাদের কথায় ওঠে এসেছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা, যা শিহরণ জাগায়। পাহাড়ি জঙ্গলের আঁধারে গড়ে ওঠা এসব আস্তানায় মানুষকে গরু-ছাগলের মতো বিক্রি করা হয়, দাম ওঠে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। পরে সেই একই মানুষকে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে পরিবার থেকে ছাড়িয়ে আনতে হয়।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি গ্রামের তরুণ রেজাউল বেড়াতে গিয়েছিলেন সীমান্তঘেঁষা টেকনাফে। সেখানেই কিছু দুষ্কৃতকারী তাকে অপহরণ করে চোখ বেঁধে পাহাড়ি আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় মানবপাচারকারীদের হাতে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয় তাকে।
রেজাউল বলেন, ‘চোখের বাঁধন খুলে দেখি শত শত মানুষবন্দি। পাহাড়ের গভীরে গড়ে ওউঠেছে এক অন্ধকার রাজ্য- যেখানে মানুষের কোনো দাম নেই, দাম আছে শুধু টাকার। আমাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে মুক্তিপণের দাবি করত। আমি ১৫ দিন ওই আস্তানায় বন্দি ছিলাম। পরে আমাকে আবারও ৬০ হাজার টাকায় অন্য এক পাচারকারীর কাছে বিক্রি করা হয়। সেখান থেকে সুযোগ বোঝে পালিয়ে বিজিবির কাছে আশ্রয় নেই।’রেজাউলের তথ্যের ভিত্তিতেই যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আরও ৮৩ জনকে উদ্ধার করে।
পাহাড়ের আস্তানার বর্ণনা দিয়ে রেজাউল করিম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘যখন আস্তানায় নিয়ে চোখ খুলে দেওয়া হলো- তখন দেখলাম চারপাশে দুই শতাধিক মানুষবন্দি। তারা পাহাড়ে গড়েছে অন্ধকার এক রাজ্য। যেখানে মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই, দাম আছে টাকার। সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় আমার ওপর নির্যাতন। ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন চালায় পাচারকারীরা। একইভাবে অন্যদের ওপরও নির্যাতন চালানো হয়
মুন্সীগঞ্জের অমিত হাসানও পড়েছিলেন পাচারকারীদের ফাঁদে। পরিচিতজনের মাধ্যমে বেড়াতে এসে তিনি ও আরেকজন বন্ধু দালালচক্রের হাতে বিক্রি হন।
অমিত জানান, যারা মালয়েশিয়া যেতে অস্বীকার করতেন তাদের পরিবারের কাছে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হতো। আর যারা রাজি হতেন, তাদের থেকে আদায় করা হতো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। পরে তাদের তোলা হতো সমুদ্রযাত্রার নৌকায়।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান বলেন, ‘টেকনাফের বাহারছড়া কচ্ছপিয়ার পাহাড়ি এলাকায় পাচারকারীরা ভুক্তভোগীদের আটক রেখেছিল। প্রথমে আমরা একজন পাচারকারীকে আটক ও চারজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন বৃহৎ যৌথ অভিযান পরিচালনা করি। তিনটি আস্তানা থেকে মোট ৮৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’ তিনজন পাচারকারীকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে দুজনকে পালাতক আসামি করা হয়েছে।
মানবপাচারের এই আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট টেকনাফের পাহাড়ে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। স্থানীয় দালাল থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পাচারকারীরা একে অপরের সঙ্গে জড়িত। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভাগ্য ফেরানোর আশায় তরুণরা এ চক্রের ফাঁদে পা দিচ্ছে। কিন্তু শেষমেশ তাদের বেশির ভাগই আটকা পড়ছে অন্ধকার বন্দিশালায় যেখানে মুক্তির একমাত্র পথ মুক্তিপণ বা মৃত্যুর দোরগোড়া।
১২ ঘণ্টা ধরে পাহাড়ে অভিযান: টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, পাহাড়ের ওই আস্তানায় অভিযান শুরুর পর পাচারকারীরা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়ে। এ সময় কিছু ভুক্তভোগীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পালাতে চেয়েছিল তারা। তবে পুরো পাহাড়টি ঘিরে ফেলে কৌশলে ভুক্তভোগীদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিন জনকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা মূলত মানবপাচারকারী।
এক সপ্তাহে ১৭৭ জনকে উদ্ধার: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে নদী ও পাহাড়ের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করে আটকে রাখা ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ১২ জন মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখনো অভিযান অব্যাহত আছে।
ভারতীয় দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অভূতপূর্ব সাফল্য ও জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী। অনেক ক্ষেত্রেই বলিউডকেও ছাপিয়ে গেছে। তেলেগু, তামিল, কন্নড় ও মালয়ালম-এই চার ভাষার সিনেমা কেবল ঘরোয়া দর্শক নয়, বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে। চিত্রনাট্যের বৈচিত্র্য, দুর্দান্ত সিনেমাটোগ্রাফি আর শক্তিশালী অভিনয়- সব মিলিয়েই এ সাফল্য। আর সেই সাফল্যের ভাগীদার দক্ষিণের অভিনেতারা, যাদের পারিশ্রমিক আজ বলিউড সুপারস্টারদেরও ছাড়িয়ে গেছে।
দক্ষিণীদের পারিশ্রমিকের দিক থেকে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান, ভাইজানখ্যাত অভিনেতা সালমান খান, মিস্টার পারফেকশনিস্টখ্যাত অভিনেতা আমির খান, বিগবি অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকাদের ছাড়িয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের একেকটি ছবি রেকর্ড ভেঙেছে- ‘বাহুবলী’, ‘কেজিএফ’, ‘আরআরআর’, ‘পুষ্পা’ থেকে ‘কান্তারা’।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, ২০২৫ সালে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির তারকা কারা-
১. আল্লু অর্জুন
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্টির (তেলেগু) সুপারস্টার আল্লু অর্জুন ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ দিয়ে ঘরে ঘরে পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন। এর সিক্যুয়েল ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ গত বছর মাত্র ১৩ দিনে বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ৪০০ কোটির বেশি আয় করেছে, যা শুধু ভারতে ৯৫৩ কোটি রুপি। বর্তমানে তার পারিশ্রমিক প্রায় ৩০০ কোটি রুপি, যা কেবল দক্ষিণী নয়, পুরো ভারতে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে ‘গঙ্গোত্রি’ দিয়ে যাত্রা শুরু করা আল্লু অর্জুনের ঝুলিতে আছে ছয়টি ফিল্মফেয়ার, তিনটি নান্দী আর একটি জাতীয় পুরস্কার।
২. বিজয় থালাপতি
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) জনপ্রিয় অভিনেতা বিজয় থালাপতি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা। একেকটি সিনেমার জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ২৭৫ কোটি রুপি। বর্তমানে রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত বিজয়।
প্রসঙ্গত বিজয়ের প্রথম তামিল সিনেমা ছিল ‘ঘিল্লি’ (২০০৪), যা ৫০ কোটির ঘর পেরোয়। ‘থিরুপাচ্চি’, ‘পোক্কিরি’ তাকে শীর্ষনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। সাম্প্রতিক ব্লকবাস্টার ‘লিও’ ও ‘গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ তার ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য।
৩. রজনীকান্ত
দক্ষিণী সিনেমার সর্বকালের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার রজনীকান্ত। সত্তরোর্ধ্ব বয়সেও তিনি মহানায়ক। পারিশ্রমিকের দিক থেকে তিনি তৃতীয়। প্রতিটি সিনেমায় তার পারিশ্রমিক ১২৫ থেকে ২৭০ কোটি রুপি। ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে ১৭০টির বেশি সিনেমা অভিনয় করেছেন রজনীকান্ত। তার সাম্প্রতিক সিনেমা ‘কুলি’ আয় করেছে ৫০০ কোটির বেশি রুপি। প্রসঙ্গত দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, পদ্ম বিভূষণসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন রজনীকান্ত।
৪. প্রভাস
‘বাহুবলী’ ফ্র্যাঞ্চাইজি দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত প্রভাস পারিশ্রমিকপ্রাপ্তদের চতুর্থ। প্রতিটি ছবির জন্য ১০০ থেকে ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন। তার হিট সিনেমার তালিকায় আছে ‘ডার্লিং’, ‘মিস্টার পারফেক্ট’, ‘সালার’ ও ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’। প্রভাসই একমাত্র ভারতীয় অভিনেতা, যার ছয়টি সিনেমা মুক্তির শুরুতেই বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটির বেশি আয় করেছে।
৫. অজিত কুমার
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) অন্যতম সুপারস্টার অজিত কুমার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬১টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। একেকটি সিনেমার জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ১০৫ থেকে ১৬৫ কোটি রুপি।
প্রসঙ্গত ‘ভারালারু’, ‘বিলা’, ‘কিরিদম’, ‘মঙ্কথা’ তার জনপ্রিয় সিনেমা। তিনবার ফিল্মফেয়ার সাউথ ও তিনবার তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন অজিত কুমার।
৬. কমল হাসান
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) কিংবদন্তি অভিনেতা কমল হাসান একাধারে হিন্দি, বাংলা, তেলেগু, কন্নড় ও মালয়ালম- সব ভাষাতেই কাজ করেছেন। প্রতি সিনেমায় তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ১০০ থেকে ১৫০ কোটি রুপি। ২২০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত ‘মুন্দ্রাম পিরাই, ‘সাগর সঙ্গম’, ‘নায়কন’, ‘পুষ্পক বিমানা’, ‘দশাবতারম’, ‘বিশ্বরূপম’, ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’ তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা।
৭. রাম চরণ
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ‘আরআরআর’ দিয়ে বিশ্বজুড়ে পরিচিত রাম চরণ বর্তমানে নিচ্ছেন ১০০ থেকে ১৩০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক। তার ঝুলিতে আছে চারটি ফিল্মফেয়ার ও দুটি নান্দী পুরস্কার।
৮. মহেশ বাবু
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তেলেগু) ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা মহেশ বাবু। এ অভিনেতা এখন পর্যন্ত ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটি সিনেমার জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৮০ থেকে ১০০ কোটি রুপি।
প্রসঙ্গত ওক্কাডু’, ‘অথাডু’, ‘বিজনেসম্যান’, ‘ভরৎ আনে নেনু’ ও ‘সরকারু ভারি পাটা’ তার সুপারহিট সিনেমা। পাঁচবার ফিল্মফেয়ার, ৯ বার নান্দী ও চারবার সাইমা পুরস্কার পেয়েছেন মহেশ বাবু।
৯. সুরিয়া
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) জনপ্রিয় নায়ক সুরিয়া। তিনি একেকটি সিনেমার জন্য পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৩৯ কোটি রুপি। প্রসঙ্গত ‘খাখা খাখা’, ‘গজনি’, ‘আয়ান’—সবই তার সাফল্যের প্রমাণ। দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ছয়টি ফিল্মফেয়ার সাউথ জিতেছেন তিনি।
১০. ধানুশ
দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির (তামিল) আয়ের বিবেচনায় ধানুশ ১০ নম্বর স্থানে আছেন। তামিলের বহুমুখী অভিনেতা ধানুশ প্রতিটি সিনেমায় পাচ্ছেন ৩৫ কোটি রুপি। ৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
প্রসঙ্গত বলিউডে ‘রানাঝানা’ দিয়েও সাড়া ফেলেছেন। তার গাওয়া গান ‘হোয়াই দিস কোলাভেরি ডি’ ইউটিউবে প্রথম ভারতীয় ভিডিও হিসেবে ১০ কোটির বেশি ভিউ পায়। চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আটবার ফিল্মফেয়ার সাউথসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। এখন তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাণ ও প্রযোজনা নিয়েও ব্যস্ত।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার একটি ভাড়াবাসা থেকে মাসহ দুই শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার কবি মহিদুর সড়কের একটি ভাড়া বাসার ভিতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে পুলিশের ধারণা বিষ পানের মাধ্যমে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলেন, হরিরামপুরের আন্দারমানিক এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী শাহীন দেওয়ানের স্ত্রী শেখা আক্তার (২৯), তার ৩ বছরের শিশু কন্যা সাইফা ও ৯ বছরের শিশু পুত্র আলভী।
বাড়ির মালিকের ছোট ভাই মুহতামিম জানান, আমার ভাই ও ভাড়াটিয়াদের মাধ্যমে গত মাসের ১৫ তারিখ মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেয় শাহীন দেওয়ান। এরপর স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সেখানে একদিন থেকে প্রবাসে চলে যান শাহীন দেওয়ান।এর কয়েকদিন পর শাহীন দেওয়ানের স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে যান এবং বেড়ানো শেষ করে বাসায় ফিরে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধু করে দেয়। তারপর থেকে ঘরের দরজা না খোলায় মঙ্গলবার বাড়ির মালিককে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়ির মালিকের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করা হলে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে খাট থেকে শেখা আক্তার ও মেঝে থেকে অবস্থায় শিশু কন্যা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াসমীন খাতুন জানান, খবর পেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খাবারের সাথে বিষ পানের মাধ্যমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুজ্জামান এর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য
রাখেন, আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (অ.দা.), বর্ষালুপাড়া ও গিরাগাঁও বিওপি’র বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ও টিআই, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি, আটোয়ারী সাবজোন অফিসের এজিএম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ইনচার্জ, বিএনপি, জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, পঞ্চগড় জেলা সভাপতি, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র নেতা,উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রমুখ। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন দুর্গামণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দ মতামত প্রদান করেন।
সভায় বক্তারা আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, যানজট নিরসন, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং আইন-শৃঙ্খলা মেনে চলার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুজ্জামান তার বক্তব্যে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা আমাদের সমাজের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। দুর্গাপূজাকে সাফল্যমন্ডিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। পূজামনণ্ডপগুলোতে পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
সভাশেষে উপজেলার ৩০টি সার্বজনীন পূজামণ্ডপের অনুকূলে ৫০০ কেজি করে জি আর চাল এর ডিও বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। এ বছর আটোয়ারী উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ৩০টি পূজা মন্ডপে দুগোর্ৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
ইভটিজিং প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের সংগঠন সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগের আয়োজনে মঙ্গলবার দুপুরে এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পইন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টুর সভাপতিত্বে ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপস শীল, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইনছান মিঞা, সুনামগঞ্জ মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য্য, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।
ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ইভটিজিং বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত কার্ড তুলে ধরেন। এসময় ইভটিজিংমুক্ত সমাজ গঠনে শিক্ষার্থীরা নিজেকে নিয়োজিত রাখার অঙ্গিকার করেন।
ক্যাম্পেইনে বক্তারা বলেন, ইভটিজিংয়ের শিকার নারী হয়রানির কারণে আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। সে নিজেকে অসহায় ও নিরাপত্তাহীন বোধ করে। অনেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন, হতাশায় ভোগেন। মেয়েরা ইভটিজিংয়ের ভয়ে স্কুল, কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে শিক্ষাজীবন চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একজন মেয়ে যদি প্রতিদিন রাস্তাঘাটে কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উত্ত্যক্ত হন, তবে তার পরিবারের উদ্বেগ ও আতঙ্ক বাড়ে। অনেক পরিবার বাধ্য হয় মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে কম বয়সে বিয়ে দেয়। এতে সমাজে নারীশিক্ষার হার কমে যায় এবং বাল্যবিয়ের প্রবণতা বাড়ে। তাই শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং প্রতিরোধে নিজে ও অন্যকে সচেতন করার আহ্বান জানান বক্তারা।
শেষে বিদ্যালয়েল সকল শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং প্রতিরোধে শপথ বাক্য পাঠ করান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপস শীল। এসময় বিদ্যালয়ের প্রায় সাতশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচির সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব সাইদুর রহমান আসাদ।
দৈনিক বাংলায় সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জ খালের ঘাঘর মুখে থাকা বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম বিল্লাহ উপস্থিত থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় খালের এই বাঁধ অপসারণ করেন। এ সময় কোটালীপাড়া থানার ওসি খন্দকার হাফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওলিয়ার রহমান হাওলাদার ও বাঁধ স্থাপনকারী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে পয়সারহাট-গোপালগঞ্জ খাল খনন শুরু হয় গত বছরের ১ আগস্ট থেকে। কাজের সমাপ্তি হবে ২০২৭ সালের ০৫ সেপ্টেম্বর। আতাউর রহমান খান লিমিটেড নামে বগুড়ার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খালটি খননের লক্ষ্যে ঘাঘর নদীর মোহনায় বাঁধ দেয় এক বছর আগে। বর্ষা মৌসুম থাকায় খাল খননের কাজ এখন বন্ধ থাকলেও বাঁধ অপসারণ না করায় খাল দিয়ে যাতায়াত সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায়। খালে বাঁধ থাকায় আসন্ন দুর্গাপূজায় বিজয়াদশমীর দিনে ঘাঘর নদীতে প্রতীমা বির্সজন নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়।
বিষয়টি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দৈনিক বাংলায় `ঘাঘর নদীর মোহনায় বাঁধ অপসারণের দাবি ‘শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম বিল্লাহ বাঁধটি অপসারণের উদ্যোগ নেন।
উপজেলার তারাশী কর্মকার বাড়ি সর্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপের সভাপতি গোশাই কর্মকার বলেন, বাঁধটি অপসারণ করায় প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে আমাদের যে শঙ্কা ছিল তা দূর হয়েছে। এজন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দৈনিক বাংলাকে ধন্যবাদ জানাই।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, খালটিতে বাঁধ থাকার কারনে প্রতীমা বির্সজনে প্রতিবন্ধকতা হতে পারে এই সংবাদ পাওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধ অপসারনের ব্যবস্থা করেছি। আসন্ন দুর্গাপূজা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয় সে লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।