কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের কংশনগর এলাকায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক বিকল হওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল ৮টার পর দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ছগুরা এলাকা থেকে বুড়িচং উপজেলার দেবপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে সিলেটগামী পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক কংশনগর এলাকায় সড়কের মাঝে বিকল হয়ে যায়।
এতে সড়কের দুই পাশেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কজুড়ে খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। একপর্যায়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাকটির পেছনের দুই চাকা খুলে মেরামতের চেষ্টা করছেন চালক, হেলপার ও স্থানীয় কয়েকজন।
পাশে সড়কের ভাঙা অংশ দিয়ে সীমিত পরিসরে যান চলছে। তবে সড়কের দুই পাশে সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
বিকল ট্রাকের হেলপার সিরাজ আলী বলেন, কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের অধিকাংশ এলাকা ভাঙ্গাচোরা। সকালে তেমনই একটি গর্তে চাকা পড়ে গাড়ি বিকল হয়ে যায়।
চাকা খুলে এখন মেরামত করছি। আরো প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে।
সুগন্ধা পরিবহনের বাস চালক জসিম উদ্দিন বলেন, এই সড়কটি মানুষের জন্য ভোগান্তির আরেক নাম। ভাঙা রাস্তার কারণে যাত্রীদের কষ্ট হয়, সময়মত গন্তব্য পৌঁছাতে পারি না। এটি শুধু নামেই মহাসড়ক, কাজে নয়।
মিরপুর হাইওয়ে থানার ইনচার্জ পারভেজ আলী বলেন, কংশনগর বাজার এলাকায় প্রায় সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এই যানজট কংশনগর ছাড়িয়ে দেবিদ্বার পর্যন্ত চলে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, কংশনগর এলাকায় একটি ট্রাকের চাকা বিকল হওয়ায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে আমাদের একটি টিম কাজ করছে। রাস্তাটি দুই লেনের হওয়ায় কোন গাড়ি বিকল হলেই যানজটের সৃষ্টি হয়। ট্রাকটি মেরামত করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার বিসয়ক সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। তিনি শহরের গোপীনাথ জিউর মন্দির, বৈশাখী সংঘ, আমলাপাড়া সর্বজনীন পূজা মন্দিরসহ একাধিক পূজামণ্ডপে গিয়ে দুর্গাপূজার সার্বিক আয়োজন ঘুরে দেখেন এবং ভক্তদের সঙ্গে পূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ সময় সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া সদর -৩ আসনের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে গিয়ে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি এবং সেই সঙ্গে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার কিন্তু দেশটা সবার। এ সময় তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।’
স্থানীয় সাধারণ মানুষ সাবেক সংসদ সদস্যকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাদের মতে, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছেন এবং সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করেছেন।
এ সময় কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ফুহাদ রেজা ফাহিম, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির রহমান রাব্বি, বিএনপি নেতা আশরাফুল করিম শাওন, জব্বার মিলন, আরাফাত জুবায়ের নয়নসহ জেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝিনাইদহের মহেশপুরে মাত্র ৩ টাকায় মেলে সুস্বাদু রসগোল্লা। শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি। আর এ মিষ্টির স্বাদ একবার নিলে আবারও কিনতে হয়। আকারে ছোট হলেও স্বাদের দিক দিয়ে অনেক বড় দোকানের মিষ্টিকেও হার মানায় এই রসগোল্লা। খাঁটি ছানার তৈরি হওয়ায় মুখে দিলেই গলে যায়। নেই কোনো ভেজাল, কৃত্রিম রঙ বা অতিরিক্ত ঘ্রাণ। শুধুই খাঁটি দুধের মিষ্টতা।
জানা যায়, উপজেলার শিবানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমাল ঘোষ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ হাতে তৈরি করে মিষ্টি বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেলে করে বের হন তিনি। মহেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করেন নিজের বানানো রসগোল্লা।
আগে প্রতি পিস বিক্রি হতো ২ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা করে। তবে দাম সামান্য বাড়লেও ক্রেতার চাহিদা কমেনি, বরং দিন দিন বাড়ছেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পিস রসগোল্লা বিক্রি করেন তিনি। সারাদিন রসগোল্লা বিক্রি করে যে টাকা আয় করেন, সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
স্থানীয় ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বাজার মূল্যে মাত্র ৩ টাকায় এত সুস্বাদু রসগোল্লা পাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা প্রতিদিনই তার কাছ থেকে রসগোল্লা কিনি। দাম কম, স্বাদও অসাধারণ।
আরেক ক্রেতা কলেজ শিক্ষক মতলেবুর রহমান বলেন, বড় দোকানের রসগোল্লার চেয়ে সুমাল ঘোষের বানানো রসগোল্লা অনেক বেশি খাঁটি ও সুস্বাদু। তাই বাজারে যত মিষ্টির দোকানই থাকুক, মানুষ ওনার কাছেই ভিড় জমায়। আর আমি নিয়মিত তার রসগোল্লা খেয়ে থাকি। এমনকি বাসায়ও নিয়ে জায়।
মহেশপুরের বাসিন্দা অনিক হাসান বলেন, উপজেলাজুড়ে সুমাল ঘোষের রসগোল্লা এখন এলাকার একটি জনপ্রিয় নাম। কম দামে মানসম্মত মিষ্টি পাওয়ায় প্রতিদিনই তার ক্রেতা বাড়ছে। আর সারাদিন রসগোল্লা বিক্রি করে যে টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়েই চলে তার সংসার।
এ ব্যাপারে মিষ্টি বিক্রেতা সুমাল ঘোষ বলেন, কম লাভ, বেশি বিক্রিই আমার ব্যবসার নীতি। দিনে এক হাজার পিস বিক্রি করতে পারলেই সংসার চলে যায়। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় মানুষ আমার মিষ্টির স্বাদ পছন্দ করছে, এটিই আমার বড় পাওয়া।
খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় হাজারের বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুইমারা থানায় হত্যা মামলাসহ দুইটি এবং খাগড়ছড়ির সদর থানায় অপর মামলাটি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এ মামলায় ৬০০-৭০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার এ মামলা করেন।
এ দিকে গুইমারা থানার ওসি মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকালে ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে ধানক্ষেত থেকে তিন ব্যক্তি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুই থেকে আড়াই’শ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে গত শনিবার ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা জনতা’র ডাকা অবরোধের সময় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, অগ্নি সংযোগ, দাঙ্গা ও হত্যার ঘটনা ঘটে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সবুজ প্রামানিক (৩৫) নামে এক ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের পৌর এলাকার অরণকোলা হারুখালির মাঠসংলগ্ন বটতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সবুজ প্রামানিক পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়া বড়মাটিয়া গ্রামের খোকন প্রামানিকের ছেলে। আহতরা হলেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার চুকাই গ্রামের নাজমুল হোসেন (৩০), একই উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের বাবু মিয়া (৩০) এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (৩৫)।
সংবাদ পাওয়ার পর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন থেকে তিনটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে উদ্ধার কাজ শুরু হয় এবং প্রায় এক ঘণ্টা চলার পর সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়। উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেন স্টেশনের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর মীর আমিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঈশ্বরদী ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি খালি ট্রাক পাবনাগামী ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ঢাকা থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ট্রাকচালক সবুজ প্রামানিক ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং অন্য ট্রাকের চালক-হেলপারসহ তিনজন আহত হন। আটকে পড়া সকলকে উদ্ধার করে আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় এবং নিহত সবুজের মরদেহ ট্রাকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নূর বলেন, “দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক চালক নিহত হয়েছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে।”
সড়কের এই অংশটি (পাবনা-লালপুর হাইওয়ে) দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ট্রাক চালক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা দুজন একই মালিকের দুটি ট্রাক চালান। ঢাকামুখী দুটি ট্রাকের একটি মহাসড়কের উপর বিকল হয়ে পড়লে অপর ট্রাক সেটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ট্রাকটি সেতুর ওপর ঢাকামুখী লেনের সড়ক বিভাজকে আটকে যায়। ধারণা করা হচ্ছে তখন দুই ট্রাকের চালক সড়কে নেমে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তখনই অজ্ঞাত কোনো গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ভোর ৪টা থেকে পৌনে ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, নিহতদের বয়স ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন ময়মনসিংহের রহমতপুর এলাকার রাকিব, যিনি সচল ট্রাকটির চালক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রাক মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া বাজারে যাত্রীবাহী বাস উল্টে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দাগনভূঞা উপজেলার জায়ালস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ জায়ালস্কর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. শ্রাবণ (২০), একই ইউনিয়নের খুশিপুর গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর স্ত্রী শামীম আরা বেগম (৫০) ও অজ্ঞাত যুবক (৩০) পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুগন্ধা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ফেনী থেকে নোয়াখালীর দিকে যাচ্ছিল। সিলোনিয়া বাজারে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা বাস থেকে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শোয়েব ইমতিয়াজ নিলয় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ জানান, মৃত্যু ও গুরুতর আহতের খবর পেয়েছি, তবে এর সংখ্যা এখনো জানতে পারিনি। আমাদের পুলিশ কাজ করছে। কী কারণে এমন দুর্ঘটনা হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরে যৌথ বাহিনীর মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার ( ০১ অক্টোবর) কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আনিসুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে হেলমেট ও কাগজপত্র বিহীন অবস্থায় মটর সাইকেল চালানোর অপরাধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর আওতায় ১২ টি মামলায় মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ভবিষ্যতে সকল নিয়ম কানুন মেনে রাস্তায় চলাচল করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। মোবাইল কোর্টের অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেন।
কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী। এ সময় পাচারের উদ্দেশে বন্দি নারী ও শিশুসহ ২১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে কোস্ট গার্ডের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সাগর পথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে কয়েকজনকে টেকনাফের বাহারছড়ার করাচিপাড়া ঘাট সংলগ্ন একটি ঘরে আটকে রাখার খবর পাওয়া যায়। পরে সেখানে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে পাচারের উদ্দেশে বন্দি ২১ জনকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক। তিনি বলেন, অভিযানে কোনো পাচারকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের ধরতে যৌথ বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
রাঙামাটির লংগদুতে বাড়ি ফেরার পথে কাপ্তাই হ্রদে আকস্মিক ঝড়ে নৌকা ডুবিতে এক নারী ও দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপী অভিযানে ডুবে যাওয়া এক শিশু ও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুড়ি দল। গত মঙ্গলবার রাতে আকস্মিক ঝড়ো বাতাসের মুখে পড়ে লংগদু উপজেলার গুলশাখালী থেকে মাইনীমুখে ফেরার নৌকা। ফলে নৌকায় থাকা স্থানীয় বাসিন্দা আছর উদ্দিন ও আরজ আলীর পরিবার এ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন আছর উদ্দিনের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪০) ও আরজ আলীর শিশু সন্তান রানা (৭)। পরে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে শিশু মাসুম (৫) কে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দল।
জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে হঠাৎ ঝড় শুরু হলে নৌকায় থাকা ৫ জনের মধ্যে দুই শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ হয়। বাকি দুজন আছর উদ্দিন ও সালমা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এরপর বুধবার সকালে নিখোঁজ নারী শিরিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। পরবর্তীতে নিখোঁজ অপর শিশু মাসুমকে উদ্ধার করছেন ডুবুরি দলের সদস্যরা।
লংগদু ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের ডুবরি দল রাঙামাটি থেকে এসে সকালে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। নিখোঁজ নারী ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, ‘গুলশাখালী এলাকায় নৌকা ডুবে দুই শিশুসহ তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’
এদিকে প্রায়ই একই সময়ে লংগদুর কাট্টলী বিল এলাকায় তিনটি মাছ ধরার নৌকা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার ৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা।
দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি এখন বাঙালির প্রাণের উৎসব সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তাই এ উৎসব উদযাপনে রাষ্ট্র, প্রশাসন ও জনসাধারণ একযোগে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক।
তিনি বলেন, ধর্মমত নির্বিশেষে বহুকাল ধরে আমরা বাঙালিরা দুর্গোৎসব উদযাপন করে আসছি। সে হিসেবে সনাতনীদের জন্য এটি দুর্গাপূজা হলেও, সমাজের জন্য এটি এক আনন্দঘন দুর্গোৎসব। তাই এই উৎসবকে ঘিরে রাষ্ট্র, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং স্থানীয় জনসাধারণ একসঙ্গে কাজ করছে, যেন নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবটি শেষ করা যায়। বুধবার দুপুর ২টায় আনোয়ারা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়কালী বাজার কচিকাঁচা পূজামণ্ডপ এবং রামকৃষ্ণ-সারদা সেবাশ্রম পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেন, ধর্মমত নির্বিশেষে বহুকাল ধরে আমরা বাঙালিরা দুর্গোৎসব উদযাপন করে আসছি। সে হিসেবে সনাতনীদের জন্য এটি দুর্গাপূজা হলেও সমাজের জন্য এটি দুর্গোৎসব। তাই এই দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে রাষ্ট্র, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং স্থানীয় সকল জনসাধারণ একাকার হয়ে আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত আছে যাতে নির্বিচ্ছন্নভাবে এই উৎসব সমাপ্ত হয়। বুধবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়কালী বাজার কচিকাঁচা পূজামণ্ডপ এবং রামকৃষ্ণ-সারদা সেবাশ্রম পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পাঠান মো. সাইদুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো.সাইফুল ইসলাম সানতু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল পালিত, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উমা খান কাফি, আনোয়ারা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাগর মিত্র, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ধর উপস্থিত ছিলেন।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপঁচা ১নং আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭নম্বর শেড আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আগুন লাগলে মুহুর্তের মধ্যে সব পুড়ে যায়। এই শেডের ১০টি কক্ষে ১০টি পরিবার বসবাস করতো। তবে গত মঙ্গলবার রাতে সাতটি পরিবার ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুনের তাপে তাদের ঘুম ভেঙে গেলেও ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেনি।
আগুনের খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি, অন্তত ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। এসব অসহায় দরিদ্র পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, তেনাপঁচা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭নম্বর শেডের সম্পূর্ণ পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ঘরের সকল জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অনেকে ঘরে থাকা পোড়া জিনিসপত্র নেড়ে চেড়ে দেখছেন। কেউ পোড়া জিনিসপত্র সরানোর চেষ্টা করছেন। কেউ নিজের শেষ সম্বল হারিয়ে আহাজারি করছেন। আবার পরিবারের ছোট্ট শিশু শিক্ষার্থী স্তুপ থেকে তার পোড়া বই খুঁজে বের করছেন।
আরেক বাসিন্দা সাহেদা খাতুন আহাজারি করা অবস্থায় বলেন, তার ৯মাস বয়সী একমাত্র সন্তান স্বাধীনকে ফেলে স্বামী ফারুক শেখ ফেলে যান। ছেলেকে বিদেশে পাঠাবেন বলে অনেক কষ্টে রাস্তায়, মানুষের বাড়ি কাজ করে দুই লাখ টাকার বেশি জমিয়েছিলেন।
এদিকে খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারের মাঝে ১ বস্তা করে চাউল, শুকনো খাবার, কাপড় ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ সহায়তার জন্য তালিকা প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আজ বুধবার টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। সফরকালে তিনি পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা প্রস্তুতিতে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পূজা উপলক্ষে গড়ে ওঠা সমন্বিত নিরাপত্তা ধারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক বার্তা বা গ্রিন সিগন্যাল। দুর্গোৎসবে জনগণের ঐক্য ও বাহিনীর সতর্ক ভূমিকার কারণেই সব ধরনের গুজব ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।
প্রথমে মহাপরিচালক টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহা পূজা মণ্ডপে যান। বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে মণ্ডপে পৌঁছান। পরিদর্শনকালে তিনি নিরাপত্তা প্রস্তুতিতে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে কর্তব্যরত আনসার-ভিডিপি এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন।