মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) কর্মরত পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুচিকিৎসার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের বহির্বিভাগ উদ্বোধন করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
গতকাল শুক্রবার মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট পুলিশ লাইন্সে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সার্বিক সহযোগিতায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. সরওয়ার-এর তত্ত্বাবধানে পুলিশ সদস্যদের জন্য এই সুবিধা চালু করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে এটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। এর ফলে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে রোগীর চাপ কমার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা একই স্থানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন এবং রোগ নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া অন্যান্য সেবার মধ্যে থাকবে সরকারি বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ, ফিজিওথেরাপি এবং অবজারভেশন সুবিধা।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (ডিআইজি) মো. সায়েদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. জিললুর রহমানসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সারা দেশে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ শুরু হয়েছে। ২২ দিনব্যাপী এ অভিযান চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। এদিকে, ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজগুলো সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ অভিযানের অংশ হিসেবে চাঁদপুর এলাকায় বানৌজা ধানসিঁড়ি বা শহীদ ফরিদ ও বিএনডিবি গাংচিল; কক্সবাজার এলাকায় বানৌজা অতন্দ্র, শহীদ মহিবুল্লাহ, দুর্জয়, সাগর ও শহীদ দৌলত; খুলনা এলাকায় বানৌজা মেঘনা, চিত্রা বা তিতাস; বাগেরহাট এলাকায় বানৌজা করতোয়া, আবু বকর বা দুর্গম; পিরোজপুর ও বরগুনা এলাকায় বানৌজা সালাম ও কুশিয়ারা; বরিশাল এলাকায় বানৌজা পদ্মা, চিত্রা বা তিতাস এবং পটুয়াখালী এলাকায় এলসিভিপি-০১৩ বিশেষভাবে টহল দিচ্ছে।
সারা দেশে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের প্রথমদিনের খবর তুলে ধরা হলো;
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা: ভোলার বোরহানউদ্দিনে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের প্রথম দিনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে বাজারে মা ইলিশ বিক্রির দায়ে অভিযান চালিয়ে ৮৫ কেজি ইলিশ মাছ সহ ৩ জনকে আটক করেছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসন । শনিবার অপরাধ প্রতিরোধ ও জনস্বার্থে পরিচালিত অভিযানে উপজেলার কুঞ্জের হাট বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন , উপজেলা নির্বাহি অফিসার রায়হান-উজ্জামান । পরে জব্দকৃত মাছ ৬ টি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয় এবং বিক্রয়ের সাথে জড়িত ০৩ জনকে মৎস সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ৫ হাজার টাকা করে সর্বমোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ সময় অভিযান পরিচালনা টিমের সদস্য, সিনিয়র উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোাবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, ম্যারিন ফিশারিজ অফিসার, থানা পুলিশ, প্যানেল চেয়ারম্যান কাচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ উপস্থিত ছিলেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ রায়হান-উজ্জামান জানান, জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বরিশাল ব্যুরো: ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমকে সামনে রেখে মা ইলিশ রক্ষায় সারা দেশের মতো বরিশালেও শুরু হয়েছে ২২ দিনের বিশেষ অভিযান। শনিবার সকালে নগরীর ডিসি ঘাট থেকে নৌ র্যালির মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত মীর মোহাম্মদ আসলাম, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নৌ-র্যালীতে অংশ নেন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, মৎস্য ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
জেলা প্রশাসক জানান, এ সময়ে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। কেউ আইন ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। মা ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করতে এবার নদীতে টহলের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো আকাশে ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এতে নদী তীরবর্তী এলাকায় অনিয়ম ঠেকানো সহজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অভিযান চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময়ে নদীতে না নামতে জেলার প্রায় ৬৬ হাজার জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। বরিশালসহ উপকূলীয় অঞ্চলের হাজারো জেলেকে এ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। প্রতিবছরের মতো এবারও মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল হলে দেশে ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়বে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ইলিশের স্থায়ী প্রজনন ক্ষেত্র নিশ্চিত হবে।
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী: মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে সকালেই অভিযান পরিচালনা করেছে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা। শনিবার সকাল ১০ টায় থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কিত উপজেলা ট্রাস্কফোর্স গোয়ালন্দের আয়োজনে দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরিঘাট থেকে শুরু করে, চর কর্ণেশন, চর মজলিসপুর, ধোলাইয়ের চর, কলা বাগান চ্যানেলসহ পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সরজমিনে অভিযানে থেকে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে পদ্মা নদীতে কোনো জেলে দেখা যায়নি। তবে নদী পাড়ে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে অসাধু কিছু জেলে জাল রেখেছিল। প্রশাসনের ট্রলার দেখে তার নদীর সরু গলিতে তাদের মাছ ধরা ট্রলার নিয়ে চলে যায়। এরমধ্যেই একটি মাছ ধরা ট্রলার ফেলে ২-৩ জন জেলে দৌড়ে পালায়। পরে সেই ট্রলার, জাল জব্দ করেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদুর রহমান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট, মা ইলিশ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের দাড়িত্বে থাকা পেটি অফিসার শাহিন আলম, দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মেহেদী হাসান অপূর্ব সহ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের দল।
এ বিষয়ে ইউএনও মোঃ নাহিদুর রহমান বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কঠোর অবস্থানে থেকে অভিযান পরিচালনা চলছে এবং এ অভিযান প্রতিদিনই পরিচালনা করা হবে। এসময় নদীতে থাকা জেলেদের আটকসহ জাল ও অন্যান্য সামগ্রী জব্দ এবং আটকৃতদের মৎস্য আইন অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হবে। সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আজ নদী থেকে আনুমানিক ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল, মাছ শিকারে ব্যবহৃত একটি ট্রলার ও দেড় কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত জাল ফেরিঘাটে এনে পুড়িয়ে ফেলা, মাছগুলো নদীর তীরবর্তী অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং নৌকাটি নৌ পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়।
আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারের অভিযান আরও জোরালো করা হবে। যাতে কেউ পদ্মা নদী থেকে নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ধরতে না পারে। প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন নাগরিকদের সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।
জামাল হোসেন পান্না, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে “মা ইলিশকে ২২ দিন ডিম ছাড়ার সুযোগ দিন, ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করুন” — এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মেঘনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিস ও সলিমগঞ্জ নৌ পুলিশের যৌথ উদ্যোগে ধরাভাঙ্গা, বড়িকান্দি ও মানিকনগর এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
জানা যায়, সরকার ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে নবীনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আক্কাস আলী এবং সলিমগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক হায়দার তালুকদার নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে সলিমগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রায় দেড় লাখ টাকার অবৈধ জাল জব্দ করে নদীর পাড়ে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান : দেশজুড়ে শুরু হয়েছে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি অভিযান। প্রতি বছরের মতো এবারও মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনব্যাপী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ঝালকাঠি জেলায় এ উপলক্ষে জেলা মৎস্য দপ্তরের তৎপরতা দেখা গেলেও বাস্তবে কতটা সফল হবে এ অভিযান তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে প্রশ্ন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে আগামী ২২দিন মা ইলিশ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এজন্য নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড, র্যাব, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে নদীতে টহল জোরদার করা হবে। ঝালকাঠি জেলায় দিনে ও রাতে পৃথকভাবে ৮টি টহল টিম অভিযান পরিচালনা করবে। পাশাপাশি জেলেদের সচেতন করতে আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়েছে।
তবে মাঠপর্যায়ে এসব কার্যক্রম কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, প্রতি বছরই অভিযান চললেও অনেক জায়গায় গোপনে মা ইলিশ ধরা ও বিক্রি অব্যাহত থাকে। তাই শুধুমাত্র হাকডাক নয়, কঠোর নজরদারি ও বাস্তবায়নই পারে এই উদ্যোগকে সফল করতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সঠিক বাস্তবায়ন হলে ইলিশের প্রজনন সুরক্ষিত হবে এবং আগামীতে আরও বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে। এখন দেখার বিষয় কথায় নয়, বাস্তবে কতটা কার্যকর হয় এ অভিযান।
বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি : বরিশাল বাকেরগঞ্জে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার থেকে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান শুরু হয়। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সরকার ঘোষিত। এই ২২ দিনে সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ এবং ক্রয় বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ। সরকার ঘোষিত এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনস্বার্থে দিনভর মাঠে দেখা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ কে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ সকাল আটটায় সরকার ঘোষিত কর্মসূচি মা ইলিশ রক্ষায় অভিযানে নামেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ। এ সময় তার সাথে অভিযানে অংশ নেন বাকেরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম।
উপজেলা মৎস্য দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন । উপস্থিত ছিলেন বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা। সকাল আটটায় অভিযান শুরু করে তুলাতলি, পায়রা, কারখানা নদী সহ বিভিন্ন নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজের নেতৃত্বাধীন দলটি। মা ইলিশ রক্ষায় অভিযানে প্রথম দিনেই বেশকিছু জাল জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ।
মৎস্য দপ্তরের আয়োজিত এই অভিযানে প্রতিটি এলাকায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বলেন উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি জনস্বার্থে তথ্য দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে আহ্বান জানান।
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের উদ্যোগ নিয়েছেন কর্ণফুলী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আলীম। শনিবার বিকাল ৩টায় উপজেলার কলেজ বাজার ও ব্রিজঘাট বাজারে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মা ইলিশ সংরক্ষণে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় কর্ণফুলী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বলেন, “৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলবে এবং নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এটি সরকারি নির্দেশনা। সবাইকে তা মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ২২ দিনের বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে। এই সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় এবং বিনিময় নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।
আইন অমান্যকারীদের শাস্তি কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, অথবা সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে বলে অবহিত করা হয়েছে।
কুমিল্লা নগরীর অন্তত ১৫টি পয়েন্টে প্রতিদিন বেচাকেনা হচ্ছে হাজার হাজার কেজি তরমুজ। ফলে মৌসুমের বাইরে তরমুজের স্বাদ মেলালেও কিছুটা ভোগান্তি বাড়ছে ফুটপাতে যাতায়াতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব তরমুজ এসেছে রাজশাহীর কানসাট এলাকা থেকে। মাচা পদ্ধতিতে অসময়ে বাম্পার ফলন হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে এবং বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। রাজশাহী থেকে কেজি প্রতি ৩০–৪০ টাকায় পাইকারি দরে বিক্রি হলেও কুমিল্লা শহরে তা ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।
প্রতিদিন প্রায় ৪০–৫০ জন খুচরা ব্যবসায়ী এসব তরমুজ বিক্রি করছেন। অপরদিকে নগরবাসীকে পড়তে হচ্ছে কিছুটা ভোগান্তিতে। রাস্তাজুড়ে বেনগাড়ি দখল করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ফলে সাধারণ মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে।
তরমুজের উপকারিতা নিয়ে কৃষিবিদ হোসেন মিয়া বলেন, “তরমুজে ভিটামিন এ, সি, বি-৫, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। শরীর ঠান্ডা রাখা, হজমে সহায়তা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তরমুজ কার্যকর।”
তবে নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এলোমেলোভাবে এসব বেনগাড়ি রাস্তায় বসানোর ফলে শহরের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
পরিবেশবিদ নাসির উদ্দীন বলেন, “ছোট শহরে এমন দখলদারিত্ব অচলাবস্থা তৈরি করছে। সিটি কর্পোরেশনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করা।”
অন্যদিকে মৌসুম ছাড়া তরমুজের স্বাদ পেয়ে আনন্দিত কিছু ক্রেতা, তবে তারই পাশাপাশি যানজট ও হয়ে উঠেছে নতুন দুশ্চিন্তা।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক নিয়মবহির্ভূতভাবে ঝিনাইদহ জেলা কমান্ড অনুমোদনের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা। শনিবার ঝিনাইদহ আইনজীবী সমিতির ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ঝিনাইদহ শহীদ জিয়াউর রহমান ল কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা এস এম মশিয়ুর রহমান। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আলীম, গোলাম মোস্তফা লোটন, রেজাউল ইসলাম, ইসরাইল হোসেন, সিদ্দিকুর রহমান ও লিয়াকত আলীসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা উপিস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, দেশের সরকার পরিবর্তন হলেও ‘দেশকে স্বাধীন করার জন্য জীবন বাজি রাখা মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।
অভিযোগ করা হয়, গত ৫ জুলাই কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভায় স্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়, জেলা কমান্ড গঠন করতে হবে উচ্চতর ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে। যেখানে একাধিক কমিটি থাকবে, সেখানে সমঝোতা অথবা কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়।
এছাড়া বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কিংবা অবৈধ সুবিধাভোগীদের বাদ দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঝিনাইদহ জেলা কমান্ড গঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
অভিযোগে দাবি করা হয়, অনুমোদিত কমিটির ১নং আহ্বায়ক, ২নং যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এই তিনজনের কেউই উচ্চতর ট্রেনিংপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নন। বরং তারা বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং অবৈধ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন।
এছাড়া জেলার পক্ষ থেকে চারটি কমিটি জমা দেওয়া হলেও প্রস্তাবিত তিন কমিটির কাউকে না জানিয়ে গোপনে একটি প্যানেল থেকে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ঘোষিত কমিটির আহ্বায়কের ছেলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়ন্ত্রিত মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব। উপরন্তু ঘোষিত কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে ছয়জনই পদত্যাগ করেছেন, ফলে গঠিত ওই কমিটির কোনো বৈধতাই নেই।
দারিদ্র্যবিমোচন ও মানব উন্নয়নের লক্ষ্যে জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র পবা প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় জাকাত তহবিল হস্তান্তর করা হয়েছে। নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)। শনিবার পবার ভেড়াপাড়ায় নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির মসজিদে এই জাকাত তহবিল হস্তান্তর করা হয়।
সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেট (সিজেডএম) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭১টি জীবিকা উন্নয়ন প্রকল্প-জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র পবা, রাজশাহী প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় দফায় ৩৯৮টি মুস্তাহিক পরিবারের মাঝে মোট ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকার জাকাত তহবিল হস্তান্তর উপলক্ষে এক অনাড়ম্বর তহবিল হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মো. মিজানুর রহমান, সিজেডএমের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এরিয়া ম্যানেজার। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জীবিকা পবা প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আব্দুল ওয়াদুদ।
পরে প্রকল্পের চারজন সদস্য তাদের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সদস্যদের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি শোনার পর জীবিকা পবা প্রকল্পের সামগ্রিক কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য রাখেন সিজেডএমের জীবিকা বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জনাব এনামুল হক।
এ সময় সিজেডএমের জীবিকা প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন সিজেডএমের সম্মানিত হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, কর্নেল (অব.) জাকারিয়া হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজর চেয়ারম্যান জাহান বকস মণ্ডল। তিনি বলেন, আপনাদের জন্য আমরা কাজ করছি। শুধু জাকাত দিয়েই আমরা সহযোগিতা করি না। এর পাশাপাশি মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার ছাত্র, চিকিৎসা, দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিবাহের ব্যবস্থাসহ নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলার জন্য কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করছি আমরা।
সংস্কারের অভাবে উত্তর চট্টগ্রামের ৭নং রাউজান ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ মোহছেন আলী সড়কের বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানিতে ডুবে যায় রাস্তা। পানি দিনের পর দিন জমে থাকায় তিনটি ইউনিয়নের হাজারও মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছে। রাউজান-নোয়াপাড়া সড়ক সেকশন ২-এর উত্তর গুজরা আদ্যপীট মন্দিরের উত্তর প্রাচীরঘেঁষে পূর্বদিকে মোহছেন আলী জামে মসজিদ ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত বিস্তৃত ব্যস্ততম এ সড়কটি রাউজান সদর ইউনিয়নের মঙ্গলখালী গ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত। এটি পূর্বগুজরা, কদলপুর ও রাউজান সদর ইউনিয়নের মানুষের জন্য বিকল্প ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে এ সড়ক দিয়ে। বিকল্প এ সড়ক ব্যবহার করে স্থানীয়রা রাউজান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রমজান আলী হাট, উত্তর গুজরা উচ্চবিদ্যালয়, আর্য্যমৈত্রীয় হাইস্কুল, আদ্যপীঠ মন্দিরসহ নানা স্থানে যাতায়াত করে। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মাসের মধ্যে রাস্তা আবার নষ্ট হয়ে যায়। এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উত্তর গুজরা গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল ও বেলাল হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি আর বন্যার পানিতে পুরোনো ইট-সলিং ওঠে গিয়ে অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। প্রায়ই ট্যাক্সি-মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ঘটে। শিশুদের স্কুলে পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। রোগীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর দাবি, সড়কটি কার্পেটিং করে সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ লাঘব হবে। তারা উপজেলা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।’
রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, ‘রাউজানে সে সমস্ত সড়ক অনুন্নত ও চলাচলের জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেগুলোর তালিকা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি, বরাদ্দ অনুমোদন হলে শীঘ্রই উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।’
বড়াল ব্রিজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ট্রেন থেকে যাত্রীদের ওঠানামা শেষ হয়নি। নির্ধারিত যাত্রাবিরতির পূর্বেই ট্রেনপরিচালকের পতাকার সংকেতে ট্রেনটি তার গন্তব্যের অভিমুখে যাত্রা আরম্ভ করে।
এ সময় ট্রেন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে সুফিয়া বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূ ট্রেনের নিচে পড়ে গিয়ে হাত কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ঘটনার বিলম্বে সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঈশ্বরদী-ঢাকা রেলপথে পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর সদরে অবস্থিত বড়াল ব্রিজ রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় যাত্রী সাধারণ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া ট্রেনযাত্রী সুফিয়া বেগম পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার বেরহলিয়া গ্রামের সেনা সদস্য মাসুদ রানার স্ত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় ৪০ মিনিট বিলম্বে ঢাকা-রাজশাহীগামী ৭৬৯নং আপ আন্তঃনগর ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন বড়াল ব্রিজ স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। ট্রেনটি স্টেশনে ৩-৪ মিনিট যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ঘটনার দিন ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যাত্রাবিরতি না দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা আরম্ভ করেছিল।এ কারণে ট্রেন থেকে যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে নামতে চেষ্টা করে।এ সময় চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে সুফিয়া বেগম ট্রেনের নিচে পড়ে যায়।
তবে সৌভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার হাত কাটা পড়ে ট্রেনের চাকায়। ঘটনার পরপরই স্টেশনের যাত্রীসাধারণ দ্রুত ওই নারীকে উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা তাকে অন্যত্র চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আল মামুনকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে তিনি ঊর্ধ্বতন দপ্তরে বিষয়টি অবহিত করেন।
ট্রেনটি নির্ধারিত যাত্রাবিরতির পূর্বেই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে স্টেশন মাস্টার আল মামুন বলেন, বড়াল ব্রিজ স্টেশনে সিগন্যাল নেই।
এখানে ট্রেন পরিচালক ও ট্টেনচালক নিজ দায়িত্বে যাত্রা বিরতির পর গন্তব্যের দিকে যাত্রা করে থাকে। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার পরে নামতে গিয়ে ওই যাত্রীর হাত কাটা পরেছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। একসময় গ্রামবাংলার খালে, বিলে-ঝিলে, পুকুরের পানিতে, নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মাত শাপলা-শালুক ও ড্যাপ নামের ফুল। নিজেদের সৌন্দর্য মেলে ধরে ফুটে থাকত এ ফুল। কালের বিবর্তনে আর উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে যশোরের কেশবপুরে আজ নিজের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে জাতীয় ফুল শাপলা। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, ফসলি জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ, খাল দখল ও সংস্কারের অভাবে বর্ষাকালে ওই অঞ্চলে এখন আর তেমন পানি হয় না বলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে জাতীয় ফুল শাপলা। ফুলটি পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।
জানা গেছে, শাপলা সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভুক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। হাওর-বিল ও দীঘিতে এটি বেশি ফুটে। শাপলা ফুল রাতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফুটে। এরা দিনের বেলায় কিছুটা সংকুচিত হয়। শাপলা আসলে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এক ধরনের ফুল যার কোনো রকম পরিচর্যা ছাড়াই বিলে-ঝিলে জন্ম নেয়। সাধারণত আবদ্ধ অগভীর জলাশয়, খাল-বিলে জন্মে থাকে ফুলটি। শাপলা ফুল কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যার মধ্যে সাদা ফুলবিশিষ্ট শাপলাটি একসময় গ্রামবাংলায় অনেকেই সবজি হিসেবে ব্যবহার করতেন। বহু ঔষধি গুণও রয়েছে এই শাপলায়। হজমের সমস্যায় এই শাপলা ফুল ব্যবহার করা হয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এই উদ্ভিদ উপকারী। অতিরিক্ত পিপাসা নিবারক ও আমাশা রোধে ব্যবহার করা হয় এই উদ্ভিদ। সাধারণত ওষুধের জন্য এই উদ্ভিদের ফুল ও বীজ ব্যবহার করা হয়। এই উদ্ভিদের বীজ ভেজে খাওয়া হয়। শাপলা ফুলের গোড়ায় পানির নিচে একপ্রকার আলুর মতো কন্দ থাকে, যা রান্না করে খাওয়া যায়। একসময় গ্রামবাংলায় এই ফুল বিভিন্ন জলাশয়ে বর্ষাকালে অহরহ দেখা যেত। আজ তা বিলুপ্তির পথে।
স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একসময় এই জনপদে বর্ষা মৌসুমে শুরুতে সকালে বিভিন্ন স্থানে শাপলার বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। এসব দৃশ্য চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না। অনেকে আবার শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।’
স্কুল শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘বর্তমান সভ্যতার ছোঁয়ায় ফসলি জমি ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মাণ, পুকুর খনন, জলাশয়ে কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ বেড়ে গেছে। যার কারণে শাপলা দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। একসময় বর্ষাকালে এই অঞ্চলের ফসলি মাঠে পানি জমত, আর ওই জমা পানিতে জন্মাতো নানা প্রজাতির শাপলা। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না এ দেশের জাতীয় ফুলটি। এ ফুলের সঙ্গে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্য আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। ফসলি মাঠে, ডোবা, পুকুর ও জলাশয়ে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার ও গ্রামীণ খালের নাব্যতা হারানোর কারণে জাতীয় ফুল শাপলা দিন দিন বিলুপ্ত হতে চলেছে। এ ফুলের অস্তিত্ব ধরে রাখতে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। বিলুপ্ত প্রায় জাতীয় ফুলটি সম্মিলিতভাবে রক্ষা করার দায়িত্ব এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি মানুষের।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা পাঁচ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর শনিবার সকাল থেকে দুদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় দুবন্দরে কর্মচঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস এর কার্গো সুপারিনটেনডেন্ট আবু তাহের ।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজায় ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত পেট্রাপোল - বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে আজ শনিবার সকাল থেকে দুই দেশে মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বান্দর এলাকায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, পূজার ছুটি শেষে আজ সকাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। তবে পেট্রাপোল বন্দরে সিএন্ডএফ অফিসের স্টাফদের উপস্থিতি কম থাকায় আমদানী রপ্তানি বাণিজ্যের গতি অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. শামীম হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে পাঁচ দিন সরকারি ছুটি ছিল । ৫ দিন সরকারি ছুটি থাকার কারণে এ পাঁচ দিন বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে শনিবার সকাল থেকে দুদেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় চালু হয়েছে। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে উভয় বন্দর এলাকায়। তবে বন্ধের এ কয়দিন বেনাপোল কাস্টমস হাউস ও বেনাপোল বন্দর সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালু রেখে শুল্কায়ন কার্যক্রম চালু সহ ও বন্দরে লোড আনলোডের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও এনসিপি'র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম মন্তব্য করেছেন অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার গুলোতে বিএনপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত পোষণ) দিয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযুদ্ধ কসপ্লেক্স ভবনে এনসিপির সাংগঠনিক সমন্বয়ক সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উত্তরে সারজিস আলম বলেন, অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাব ছিলো। তার মধ্যে এই জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলোতে বিএনপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে। মনে করেন ৫০ টি সংস্কারের চেয়ে ৫ টি সংস্কার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি সেখানে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে।
তিনি বলেন, কিন্তু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ মানে এমন না যে ঐক্যমত কমিশন সেগুলো বাদ দিয়ে দিবে। এখন পর্যন্ত আমরা ওগুলোকে পাচ্ছি, দেখছি। যেগুলো ঐক্যমত কমিশনে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে এগুলো তারা জুলাই সনদে দেখতে চায় এবং জুলাই সনদের ড্রাফট(খসড়া) তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করি ওইগুলো যদি আইনগত ভিত্তি দেয়া হয়।
নির্বাচনী প্রতীক শাপলার ব্যপারে সার্জিস আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন কোন একটি রাজনীতিক দলের চাপে পড়েছে। শাপলা প্রতীক হিসেবে দিতে আইনগত কোন বাঁধা নেই। যদি আমাদের শাপলা না দেয়া হয় প্রয়োজনে রাজনীতিক ভাবে আমরা সেটি মোকাবিলা করবো।
জাতীয় পার্টি ইস্যুতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করেছে জাতীয় পার্টি। এখন জাতীয় পার্টি সাধু সাজলে বাংলাদেশের মানুষ সেটি মেনে নেবে না। দলটির রাজনীতিকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপির এ নেতা বলেন, আমরা মনে করি পিআর উচ্চকক্ষে প্রসঙ্গিক। কিন্তু এ মুহূর্তে বাংলাদেশে নিম্নকক্ষে পিআর হওয়ার মতো অবস্থা নেই।
এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক গোলাম মুর্তজা সেলিমসহ দলটির অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা এটিএম মোহাম্মদ মাসুম বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে আর যেন কোনো ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার আসতে না পারে সেজন্য পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, জুলাই সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, খুনি ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করলেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হবে। প্রয়োজনে পিআর বাস্তবায়নের জন্য গণভোট দিন। রায় পিআরের পক্ষে আসে নাকি বিপক্ষে আসে যাচাই করুন। জনগণ যদি পিআর মানে তাহলে আপনাদেরও মানতে হবে। আর জনগণের রায় যদি পিআরের বিপক্ষে যায় তাহলে আমরা জামায়াতে ইসলামী মেনে নেব। গত শুক্রবার বিকালে কুমিল্লা নগরীর আইটি কনভেনশন হলে কুমিল্লা মহানগরী জামায়াত আয়োজিত
পি আর পদ্ধতি ও জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনসহ ৫দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্য সেমিনারে একথা প্রধান অতিথি বক্তব্য তিনি বলেন।
কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ এর সভাপতিত্বে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী মু.মাহবুবর রহমান এর পরিচালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুনসহ অন্যান্যরা।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে অনেক শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে এবং চোখ হারিয়েছে একটি সুন্দর দেশ পাওয়ার জন্য। প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি কালো টাকার দৌরাত্ম্য, পেশিশক্তি এবং ভোট জালিয়াতির সুযোগ করে দেয়, যা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার ও চাঁদাবাজির জন্ম দেয়। তাই এই নির্বাচন পদ্ধতি আর বাংলার জমিনে দেখতে চাই না।
সেমিনার এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগরীর জামায়াতে সহকারী সেক্রেটারী যথাক্রমে মু. কামারুজ্জামান সোহেল,সাবেক কাউন্সিল মোশারফ হোসাইন, নাছির আহম্মেদ মোল্লা, দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, অর্থ সম্পাদক
আমির হোসাইন ফরায়েজী, মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য, অধ্যাপক মজিবুর রহমান, মোহাম্মদ হোসাইন, কাজী নজির আহম্মেদ প্রমুখ।
চট্টগ্রামে দরপত্রের মাধ্যমে রেলস্টেশনের গণশৌচাগার ইজারা দেওয়ার সময় দরপত্র বাক্স খোলা ও যাচাই-বাছাইসহ সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষের পর হঠাৎ মধ্যরাতে দরপত্র প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারেরা অভিযোগ করছেন- নিয়ম মেনে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর হঠাৎ স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তারা মনে করছেন, কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে প্রভাব খাটিয়ে নির্দিষ্ট কোনো পক্ষকে সুবিধা দিতে এই দরপত্র হঠাৎ স্থগিত করেছে। এমন সিদ্ধান্ত রেলওয়ে কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ফসল। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশল-১ এর কার্যালয় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের গণশৌচাগার ইজারা দেওয়ার আহবান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়। ইজারায়- নতুন রেলস্টেশনে থাকা ৬টি টয়লেট, বেসিন, ৩টি ওজুখানা ও ২টি প্রস্রাবখানা ইজারা দেওয়ার আহবান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দরপত্রের শিডিউল ক্রয়ের শেষদিন ও ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় দরপত্র শিডিউল জমা দেওয়ার শেষদিন উল্লেখ করা হয়। একইদিন সাড়ে ১২ টায় দরপত্রে অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে দরপত্র বাক্স খোলার কথা বলা হয়।
রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দরপত্র কেনার শেষ দিন পর্যন্ত ৯টি সিডিউল বিক্রি হয়েছিল। নির্ধারিত তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় সকলের উপস্থিতিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল পাহাড়তলী বিভাগীয় প্রকৌশলী ডিইএন-১ (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহিমের কার্যালয়ে রাখা দরপত্র বাক্সটি খোলা হয়। ওই বাক্সে সাতটি দরপত্র জমা পড়ে।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারেরা জানান, বাক্সে থাকা সাতটি দরপত্র শিডিউল সকলের উপস্থিতিতে খোলা হয়। এ সময় রেলওয়ে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দরপত্রে অংশগ্রহণকারীরা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৫ লক্ষ ৫ হাজার টাকার সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে দেখানো হয় মেসার্স এম আর ইন্টারন্যাশনালকে। পর্যায়ক্রমে সাবির মোটরস সর্বোচ্চ দর আড়াই লক্ষ টাকা ও ব্লু প্রিন্ট ছিল ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু রাত ১০টায় হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই দরপত্র কার্যক্রম স্থগিত করে বিভাগীয় প্রকৌশলী কার্যালয়। স্থগিতের নোটিশে স্বাক্ষর ছিল বিভাগীয় প্রকৌশলী-১- (ভারপ্রাপ্ত) মো. আব্দুর রহিম। চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধতনদের কাছে পাঠানো হয়। তবে ওই চিঠিতে দরপত্র স্থগিতের বিষয়ে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. তানভীরুল ইসলাম বলেন, যিনি দরপত্র কার্যক্রম স্থগিত করেছেন ওনার কাছে বিষয়টি জেনে নেন। বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। এসময় প্রতিবেদককে অফিসে আসতে বলেন।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী মেসার্স এম আর ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, রেলওয়ে শ্রমিক লীগের একজন নেতা এই গণশৌচারগারটি অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসা করে আসছে। নির্ধারিত সময়ে এটার টেন্ডার হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
আমরা ধারণা করছি, এবারও গণশৌচাগারটি ওই ফ্যাসিস্টের দখলে দিতে দরপত্র নিয়ে এমন কারসাজি করেছে রেল কর্মকর্তারা। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরপত্র খোলার পর বৈধ কারণ ছাড়া প্রক্রিয়া স্থগিত করা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুযায়ী স্বচ্ছতার পরিপন্থি।
রেলওয়ের ভেতরের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, রেলওয়ের বিভিন্ন ইজারা ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। এবারও একই কৌশলে দরপত্র স্থগিত করে সুবিধাভোগী পক্ষকে সুযোগ দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সমতল ভূমিতে লেবু জাতীয় ফসল ‘মালটা’ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চা, পান এবং কমলার মতো বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন এখানকার কৃষকেরা। দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টার বাগানও রয়েছে এ জেলায়। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এ জেলার মাটি ও আবহাওয়ার কারণে চা চাষের জন্য তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। শুধু চা নয়, বাণিজ্যিকভাবে নানা রকম ফল ও ফসল চাষ হচ্ছে এ জেলায়। এদিকে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায়ও দেশি মালটা চাষেরও ব্যাপক সাফল্য দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চগড় বোদা উপজেলার ২ নং ময়দানদিঘী ইউনিয়নের ভিমপুকুর এলাকার কৃষক সাদেকুল ইসলাম নিজস্ব দুই বিঘা জমিতে প্রায় ২১৭টি মালটা গাছ রোপণ করেছে। দেশি প্রজাতির প্রতিটি মালটা গাছে ফলন হয় ৫০ থেকে ৮০ কেজি।
কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, মালটা গাছ রোপণ করার দুই বছরের মধ্যে বিক্রি করেছেন প্রায় দুই লক্ষ টাকা। চলতি বছরে তিনি ৪ লক্ষ টাকার মালটা বিক্রি করার আশা করছেন।
ভিমপুকুর এলাকার কৃষক সাদেকুল আরও জানান, গত ২০২২ সালে বোদা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রায় ২১৭টি দেশি মালটা গাছ ফ্রী পান। সেই সাথে মালটা বাগান করতে রাসায়নিক সারসহ পরিচর্যা করার বিষয় নিয়ে একটি ট্রেনিংও করান উপজেলা কৃষি অফিস।
এদিকে, উপজেলার ৩নং বনগ্রাম বেংহাড়ী ইউনিয়নের তেপুখুরিয়া টোকরা পাড়া এলাকার কৃষক শাহিনুর বলেন, ২১ একর জমিতে দেশি মালটার চাষ করি, এবং দেশি মালটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
কৃষক শাহিনুর আরো বলেন, আগামী নভেম্বর মাসে ২৫০০ টাকা দরে মণ বিক্রি যাওয়ার কথা, প্রতি বছর এ মাসে ফলের দাম বেশি থাকে, তাই আমি নভেম্বর মাসে বিক্রি করবো।
কৃষি বোদা উপজেলা কৃষি অফিসার আহমেদ রাশেদ উন-নবী বলেন, মালটা চাষের জন্য এলাকার মাটি ও আবহাওয়া অত্যন্ত উপযোগী। তারা কৃষকদের মালটা ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ফলের চাষে উৎসাহিত করে যাচ্ছেন। এতে কৃষকদের আয় যেমন বাড়ছে, তেমনি স্থানীয় বাজারে দেশি ফলের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। এ বছর ৪৭ হেক্টর মালটা চাষ হচ্ছে বোদা উপজেলায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রচুর ফলন হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে পঞ্চগড়ে। মাল্টা চাষ আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আমরা চাষিদের নানাভাবে সহযোগিতা করছি।
এদিকে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এই জেলায় রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগান। পঞ্চগড়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাল্টা বাগান। খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় পঞ্চগড়ের মাল্টার চাহিদাও বাড়ছে।
সৈয়দ মাহফুজার রহমান সেলিম নামের অপর আরেক কৃষক জানান, ২০১৯ সালের জুন মাসে তিনি ১৫ বছরের জন্য ৬০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বারি ১ মাল্টা চাষ শুরু করেন। এরপর ৯ হাজার গাছ লাগিয়েছেন তিনি।
প্রতিবছর প্রত্যেক গাছ থেকে ২০ কেজি মাল্টা পান। প্রতিবছর তিনি ১ লক্ষ ৮০ হাজার কেজি মাল্টা উৎপাদন করতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, পঞ্চগড়ের স্থানীয় ফল ব্যবসায়িরা বাগান থেকে মাল্টা কিনছেন।
পঞ্চগড়ের আবহাওয়া এবং মাটির গুণাগুণ বিচার করে কৃষি অধিদপ্তর বলছে, এই জেলায় মাল্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাল্টা চাষ। অনেকে চা বাগানে মাল্টা চাষ করছেন। অনেকে আবার মাল্টা বাগানে পেপে, কলাসহ অন্যান্য আবাদ করে বাড়তি আয়ও করছেন। প্রথমদিকে বাড়ির আঙ্গিনা বা খোলা যায়গায় নিতান্ত শখের বসেই মাল্টা চাষ করছিলেন এই জেলার অধিবাসিরা। পরে মাল্টা চাষ বাণিজ্যিক আকারে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
বোদা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক জানান, শখের বসেই ৪০টি মাল্টা গাছ লাগিয়ে শুরু করেছিলাম। ভালো ফল পেয়ে এখন প্রায় ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ করেছি।
ভিটামিন সি এবং ব্যাপক পুষ্টিগুণ থাকার কারণে বাজারে মাল্টার চাহিদাও বাড়ছে দিন দিন। খুব অল্প সময়ে গাছে ফল ধরে। আর ব্যবসায়িরা বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যায় মাল্টা। পঞ্চগড়ের মাল্টা এখন রপ্তানি হচ্ছে সারাদেশে।
অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের রাস্তা ও বাড়ির আঙিনা। ফলে তাদের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির ফলে ওই এলাকার মানুষের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মার্স ফিড নামে একটি কোম্পানির অপরিকল্পিত বালু ভরাট করে চারিদিকে ঘিরে ওই এলাকার পানি নদীতে নামতে না পাড়ায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। এ জলাবদ্ধতায় পানিবন্ধী হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে ওই এলাকার লোকজন। এলাকাবাসী অবিলম্বে এর স্থায়ী নিরসন চায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়া পাড়া গ্রামে পাশে পশু খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘মার্স ফি’ নামের একটি কোম্পানি গড়ে উঠে। এ কোম্পানি গড়ে উঠার পর থেকে এ এলাকার মানুষ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেই বসবাস করে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে এ কোম্পানির পশু খাদ্য তৈরির কাঁচামালের দুগর্ন্ধে এ এলাকায় বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও এ কোম্পানি অপরিকল্পিতভাবে বালু ভরাট করার ফলে এ এলাকার পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। গত কয়েকদিনে অতি বৃষ্টির কারণে পানি জমে রাস্তা ও বাড়িঘর তলিয়ে গিয়ে এলাকার প্রায় ২ শতাধিক মানুষের ঘরে পানি ঢুকে যায়। ফলে পানি বন্দি হয়ে পড়ে মানুষ।
সরেজমিনের গিয়ে দেখা যায়, সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পানি জমে আছে। অনেক ঘরে পানি ঢুকে তাদের আসবাবপত্র, কাপড় চোপড় নষ্ট হয়ে আছে। এমনকি রান্নাঘর ও বসবাসের ঘরেও হাঁটু সমান পানি উঠে গেছে। ওই এলাকার বাসিন্দরাও ঘরে উঠা নষ্ট পানিতে থালা বাটি ধৈত করছেন। ওই এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন। বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে ময়লা ও আবর্জনায় পরিনত হয়েছে ওই এলাকার প্রতিটি ঘরবাড়ির চারপাশ। সকলেই পানি দিয়ে হেঁটে প্রয়োজনীয় কাজে ও গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারনে পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পানির দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ওই এলাকার লোকজন। এলাকাবাসী তাদের কষ্টের পরিত্রাণ চায়।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের আব্দুল কালাম জানান, আমরা এ পানি নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত অনেক কষ্টে আছি। বৃষ্টির সময় আসলে এ গ্রামের মানুষজন জলাবদ্ধতায় শিকার হই। কেউ আমাদের কষ্ট দেখছে না, এলাকায় যেন লোক নেই। চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ দেখে না। ভোটের সময় আসলেই তারা আসে।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের গৃহবধূ পুজা রানী জানান, কোম্পানির বালু ভরাট করায় এ অঞ্চলের বৃষ্টির পানি নদীতে নামতে না পারায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এ পানি ঘরে ঢুকে পড়েছে। ফলে আমাদের ঘরের আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় মালপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে বালু ভরাট করলে এ সমস্যার সৃষ্টি হতো না।
ওই গ্রামের বৃদ্ধ সামসুল ইসলাম জানান, এ কোম্পানি হওয়ার আগে আমাদের জলাবদ্ধতার কোন সমস্যা ছিল না। বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি মেঘনা নদীতে নেমে যেত। বর্তমানে বালু ভরাট করায় আমাদের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমাদের রান্না বান্না, বাথরুমসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের বিসু সরকার, নিপা রানী সরকার জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ঘরে পানি উঠে আমাদের খাবার দাবার, রান্না বান্না করা যাচ্ছে না। আমাদের না খেয়ে শিশুরা অনেক কষ্ট করছে।
মার্স ফিডের জেনারেল ম্যানেজার জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের জায়গা ভরাট করলে যদি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আমাদের কিছুর করার থাকে না। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ড্রেন নির্মান করে দেয়া হবে।
বৈদ্যেরবাজারে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা মটরের মাধ্যমে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশন কাজ শুরু করেছি। দ্রুত এর স্থায়ী নিরসন করা হবে।