রোববার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
২০ আশ্বিন ১৪৩২

ঝিনাইদহে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:২৫

‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরাসহ শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন।
সেসময় বক্তারা বলেন, শিক্ষকদের হাতেই গড়ে ওঠে জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তাদের মর্যাদা রক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তারা আরও বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর যুগে শিক্ষকদের দায়িত্ব আরও বেড়েছে—শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মানবিকতায় গড়ে তোলাই এখন মূল লক্ষ্য। তাই শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিকতায় গড়ে তুলতে প্রতিটি শিক্ষককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


পাকিস্তানের নাঙ্গা পর্বত আরোহণ করতে চান এভারেস্টজয়ী বাবর আলী

নেপালের মানাসলু জয়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

এবার পাকিস্তানের আট হাজার মিটার উচ্চতার নাঙ্গা পর্বত আরোহণ করতে চান বলে জানিয়েছেন এভারেস্টজয়ী বাবর আলী। নেপালের মানাসলু জয়ের পর দেশে ফিরে গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মানাসলু অভিযানের সঙ্গী তানভীর আহমেদ।
বাবর আলী বলেন, এ বছরে দুইটা আট হাজারি পর্বত হয়ে গেছে। সামনে পরিকল্পনা হচ্ছে ধীরে ধীরে বাকি যে ১০টা আট হাজার মিটার বাকি রয়ে গেছে। আই লাইক টু মুভ টু পাকিস্তান। পাকিস্তানে পাঁচটা আট হাজার মিটার পর্বত আছে। এর মধ্যে আমার স্বপ্নের একটা হলো নাঙ্গা পর্বত। সামনে আমি নাঙ্গা পর্বতের দিকে যেতে চাই।
মানাসলু অভিযানে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বাবর বলেন, আমরা পুরো যাত্রাটা উপভোগ করেছি। এটা আমি সবাইকে বলি, পর্বতে অনেকে যেতে চায়। সঠিক প্রস্তুতিত নিয়ে গেলে আপনি উপভোগ করবেন।

তিনি বলেন, মানাসলুতে একটা সুবিধা হয়েছে, আমাকে অক্সিজেন সিলিন্ডার বহন করতে হয়নি। ৪-৫ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডারটা অতিরিক্ত বহন করতে হচ্ছে না, এটা একটা সুবিধা; কিন্তু প্রত্যেকটা স্টেপ মেকস ইউ ব্রেথলেস। বাতাসের জন্য হাহাকার। সেটা ফিল করেছি।
কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া মানাসলু আরোহণের কারণ জানতে চাইলে বাবর আলী বলেন, সব সময় দেখে এসেছি পশ্চিমারা সচরাচর এসব পাগলামিগুলো করে থাকে। বাঙালি ঘরকুণো ছিল বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা ট্যাগ লাগানো থাকে। তিনি বলেন, যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং ওই মানসিক শক্তি থাকলে এটা সম্ভব। পরের জেনারেশন বা পরের পর্বতারোহীরা আশা করি এই ব্যাপারটা এগিয়ে নিবে। ইতিবাচক মানসিকতার সাথে আমাকে সহযোগিতা করেছে নিয়মানুবর্তিতা।
মানাসলু আরোহণকারী তানভীর আহমেদ বলেন, সবচেয়ে কঠিন হলো উচ্চতা। একটা নির্দিষ্ট উচ্চতার উপরে বিষয়টা ভিন্ন। সেখানকার তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার সাথে শরীরকে অ্যাডজাস্ট করানো এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা। ক্যাম্প ১ থেকে ক্যাম্প ২ এবং ক্যাম্প ৩স থেকে ক্যাম্প ৪ এর রাস্তা কঠিন। অনেক বড় উচ্চতা একদিনে আরোহণ করতে হচ্ছে। এটা বেশ কঠিন।

তিনি বলেন. বারবার পর্বতে যাওয়া এবং সেখানে শরীর কেমন আচরণ করছে। এটার সাথে মানিয়ে নেয়া। কোনো ঘাটতি আছে কি না, সে অনুসারে অনুশীলন করা। একেক জনের শরীর একেক রকম। তাই সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ‘সামুদা’ এর চিফ বিজনেস অফিসার বিকাশ কান্তি দাস এবং ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা আশরাফুল আরেফীন আসিফ।
গত ২৬ অক্টোবর ভোরে নেপালের মানাসলু পর্বতে আরোহণ করেন দুই বাংলাদেশি পর্বতারোহী বাবর আলী এবং তানভীর আহমেদ।


গুদামভর্তি আলু, ক্রেতা শূন্যতায় হতাশ কৃষক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় এবার আশানুরূপ হয়েছে আলুর ফলন। গতবার বাজার চড়া থাকায় চাহিদার চেয়ে আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। কিন্ত কাঙ্খিত দাম না পেয়ে অনেকটাই হতাশ আলু চাষীরা। দাম না বাড়লে বড় ধরনের লোকশানের আশংকা করছেন তারা। বিশেষ করে উপজেলার ব্রাক,সিদ্দিক ও হিমালয় (কোল্ডস্টোর) আলুর হিমাগারে রয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ। কৃষকরা জানান উৎপাদন খরচ উঠাতেই তারা উৎকণ্ঠিত। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস জানায়,এবার আলুর উৎপাদন বেশি থাকায় দাম অনেকটাই কম।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন।

উপজেলার নতুন ফেরিঘাট এলাকায় অবস্থিত ব্র্যাক, হিমালয় ও সিদ্দিক এই তিনটি কোল্ডস্টোরে (হিমাগারে) বর্তমানে ১৮ হাজার ৪১৫ মেট্রিক টন খাবার ও বীজ আলু মজুত আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তিনটি হিমাগারের মোট ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি হিমাগারের শেডের মেঝেতে বিছানো শত শত মণ আলু। ভিতরে বস্তায় বস্তায় আলু সংরক্ষিত আছে। নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা পচে যাওয়া আলু আলাদা করে ফেলে দিচ্ছেন। নামমাত্র বিক্রি থাকায় হিমাগার থেকে খুচরা বাজারে আলু যাচ্ছে খুবই কম বলছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

শ্রীরায়ের চর গ্রামের কৃষক সন্তোষ সরকার জানান,প্রতিবছর ভুট্টা চাষে ভালো লাভ হতো। এবার আলু চাষ করে বিপদ ডেকে এনেছি। উৎপাদনের খরচই তুলতে পারছি না। ফলন ভালো হলেও বিক্রি করতে গেলে মাথায় হাত।

চর চাষি গ্রামের আলু ব্যবসায়ী জামসেদ আলী হতাশা প্রকাশ করে বলেন,খুচরা বাজারে দাম কিছুটা ভালো হলেও হিমাগারে ন্যায্যমূল্য মিলছে না। প্রতি কেজি আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণে খরচ ২৫–৩০ টাকা, অথচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১২–১৩ টাকায়। এতে কেজিপ্রতি ১২–১৫ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

দৌলতপুর ইউনিয়নের কৃষক আবু হাসান বলেন,আগস্টে কৃষি মন্ত্রণালয় হিমাগার থেকে প্রতি কেজি ২২ টাকায় আলু বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিল এবং সরকার ৫০ হাজার টন আলু কেনার সিদ্ধান্তও নেয়। কিন্তু বাস্তবে সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না। হিমাগারে রাখা ৪ হাজার বস্তার মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৫০ বস্তা তাও তিনগুণ লোকসানে।

ব্র্যাক কোল্ডস্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর তারেক মাসুদ বলেন,বীজ আলু ছাড়া এখন সব আলু বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে পারছেন না। তাদের লোকসানের কথা ভেবে আমরা কোল্ডস্টোর ভাড়া কমিয়ে দিয়েছি, তবুও ক্ষতি এড়ানো কঠিন।

দাউদকান্দি উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এ বছর আলুর উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। তবে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার শিগগিরই সরকারি ক্রয় ও সংরক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে। আশা করছি, কৃষকরা লোকসান থেকে কিছুটা হলেও বাঁচতে পারবেন।


শিগগিরই সরকারকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে ঐকমত্য কমিশন

আপডেটেড ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক

খুব শিগগিরই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রোববার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ কথা জানান তিনি।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে জুলাই সনদের বিষয়বস্তু ও এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাব ও এবিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান সম্পর্কে সভাকে অবহিত করা হয়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশন সকল রাজনৈতিক দল থেকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা পেয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যমগুলো ঐকমত্য কমিশনকে অকল্পনীয় সমর্থন দিয়েছে।

কমিশন সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস কমিশনের সকল সদস্যদের ধন্যবাদ ও শুভ কামনা জানিয়েছেন। কমিশনের কাজের চুড়ান্ত অগ্রগতি সম্পর্কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

আজকের বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, কমিশন সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

পাশাপাশি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আসিফ নজরুল ও আদিলুর রহমান খান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


কর্ণফুলী টানেলে দুর্ঘটনায় ১ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলে বাস উল্টে দুর্ঘটনায় মো. ফয়সাল (৪৭) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (০৫ অক্টোবর) রাত ২টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এঘটনায় নিহত ফয়সালের স্ত্রী রাণী আকতার (৩১) সহ আরও ৪জন গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন আছে।

এর আগে, শনিবার ৪ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে টানেলের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্তে যাওয়ার সময় বরযাত্রীবাহী বাসটি অতিরিক্ত গতির কারণে এ দূর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।

নিহত ফয়সাল নগরীর পতেঙ্গা থানার নিজাম মার্কেট এলাকার হোসেন আহমেদের ছেলে। তার দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে।

নিহত ফয়সালের ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুরে একটি বিবাব অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বাস চালক দ্রুত গতিতে বাস চালানো কারণে টানেলের মাঝে পথে বাসটি উল্টে যায়। এসময় বাসে থাকা ৩০ যাত্রীর মধ্যে ১২ জন আহত হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে তাদের নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে বড় ভাই ফয়সালের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও জানান, এঘটনায় বড় ভাই ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও ৪জন গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। বাস চালকের অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে আমরা এরকম দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি।

আনোয়ারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, টানেলে দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ৬ জনকে আনা হয়। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি তাদের মধ্যে ফয়সাল নামের একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।


মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় প্রাণ গেল যুবকের 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল ২১ বছর বয়সী যুবক রামেলের। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে স্তব্ধ এলাকাবাসী। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো গ্রামে। বাবা-মায়ের আহাজারি যেন থামছেই না। নিহত মো. রামেলের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জিনারি গ্রামে।

জিনারি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনসুর আহমেদ জানান, কিছুদিন পূর্বে রামেলের বাড়ির পাশে বসে মাদক সেবন করছিলেন পাশ্ববর্তী তেতুলিয়া গ্রামের নাঈমসহ (২২) কয়েক যুবক। এ সময় প্রতিবাদ করেন রামেল ও তার চাচাতো ভাই মো. রিফাত। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয় বিরোধ। ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে বেলতৈল স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে রামেল ও রিফাতের গতিরোধ হামলা চালায় নাঈম, তারেক, সাগর, রায়হানসহ বেশ কয়েকজন। এক পর্যায়ে রামেলকে করা হয় ছুরিকাঘাত। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত রামেলকে প্রথমে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩ টায় তার মৃত্যু হয়।

জিনারি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ বুলবুল জানান, এ ঘটনায় ৩ অক্টোবর নিহত রামেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে নাঈমসহ ৭ জনের নামোউল্লেখ করে হোসেনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারিনি পুলিশ।

রামেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে খুব একটা পড়াশোনা করতে পারেননি রামেল। সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় গিয়ে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। পরিবারে তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিই ছিলেন রামেল। শুধুমাত্র মাদকের প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। রামেলের হত্যকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

রামেলের মা যমুনা বেগম জানান, রামেলের স্বপ্ন ছিল কুয়েতে গিয়ে উপার্জন করে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাবেন। সে অনুযায়ী ঋণ করে ৫ লাখ টাকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়া ছিল একটা এজেন্সিতে। আর কদিন পরেই প্রবাসে পাড়ি জমানোর কথা ছিল রামেলের। তার আগেই চলে গেল পরপারে।

রামেলের চাচী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রামেলের মতো এত নম্র-ভদ্র ছেলেই হয় না। খুব অল্প বয়সেই পরিবারের হাল ধরেছিল ছেলেটি।

রামেল হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার বিকেলে জিনারি গ্রামে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন এলাকাবাসী। পুলিশ রামেলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করে আশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন বলেন "ঘটনার পর থেকেই আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। খুব দ্রুতই আমরা তাদের ধরতে পারব।”


একদিন ব‍্যাবধানে ঝাঁজ কমেছে কাঁচা মরিচের,দাম নেমে এসেছে অর্ধেকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর, গাংনী প্রতিনিধি

পূজার ছুটিতে স্থলবন্দর বন্ধ থাকার অযুহাতে কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুন হয়ে গিয়েছিলো। আর এক ছুটি শেষে কাঁচা মরিচ আমদানির খবরে দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে।

দাম কমে যাওয়াতে ক্রেতাদারের মাঝে স্বশ্তি ফিরলেও চাষিদের মাঝে অস্বস্তি কাজ করছে। কৃষকদের দাবি দাম কমে যাওয়ায় তাদের লাভের চেয়ে লোকশানের পাল্লা ভারি হতে চলেছে।

জেলার কাঁচা মরিচ বাজার ঘুরে দেখা যায়, গেল চারদিন আগেও মেহেরপুর জেলায় পাইকারী বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর খুচরো বাজারে তা বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে।

পূজার ছুটির কারনে আমদানির বন্ধের অযুহাতে সেই কাঁচা মরিচ গত দুইদিন আগে পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা, আর খুচরো বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৭০ টাকা থেকে ৩৯০ টাকা পযর্ন্ত।

কাঁচা মরিচ আমদানির কথা শুনে সেই মরিচ আজ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা ১৬০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারেও পড়েছে এর প্রভাব। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পযর্ন্ত।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুইদিন আগে দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা পক্ক কিংবা অপরিপক্ক সব ধরনের কাঁচা মরিচ তুলে বাজারে নিয়ে আসছিল। আমদানিও ভালো ছিলো। আজ দাম কমে যাওয়ার কথা শুনে হাটে কাঁচা মরিচ আমদানি ও কমে গেছে। আমদানি কমে গেলে বিপরীতে আবার দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।

চাষিরা বলছেন,অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় মরিচ গাছ এমনিতেই মরে গেছে। যাতে করে আমাদের লোকশানে পড়তে হবে। হঠাৎ দাম বাড়াই লোকশান পুশিয়ে নেয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমদানির কারনে চাষিরা লোকশানে পড়তে পারে। যার ফলে কাঁচা মরিচ চাষে আগ্রহ হারাবে।

মরিচ চাষি মজি বলেন, আমাদের মাঠ সব পানিতে ডুবে গেছে। এই পানি মাঠ থেকে নামতে একমাস সময় লাগবে। জলাবদ্ধতার কারনে মাঠে মরিচ গাছ অর্ধেক মরে গেছে। যার ফলে আমাদের এবার লোকশানে পড়তে হবে। গত দুদিন আগে মরিচের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় ভেবে ছিলাম। এবার মরিচ উৎপাদন কম হলেও দামে পুশিয়ে যেতো। আবার আজ থেকে আগের দামে চলে এসেছে,এতে করে আমাদের লাভের চেয়ে লোকশানের পাল্লা ভারি হয়ে যাবে।

আরেক মরিচ চাষি বেল্টু বলেন, মাঠে এমনিতেই গাছের সংখ্যা কমে গেছে। আবার একজন লেবারে সারাদিনে বিশ কেজি মরিচ তুলতে পারবে। আর তার মুজুরি খরচ ৪"শ টাকা। দাম কমে যাওয়ায় খরচ খরচা বাদ দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।

কাঁচা মরিচ ব‍্যাবসায়ী আকাশ বলেন, তিনদিন আগে এই মরিচ কিনেছি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা করে। আর আজ পাইকারি কিনছি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা করে। আবার বাজার কাঁচা মরিচ আমদানি কমে গেছে। ডিজিটাল যুগে চাষিরা আমদানি রপ্তানির খোঁজ এক মিনিটের মধ‍্যে পেয়ে যাচ্ছে।

কাঁচা মরিচ হাট ইজারাদার তারিক আহমেদ বলেন, আমরা মরিচের হাট সরকারি ভাবে নিলামের মাধ‍্যমে বছর চুক্তিতে নিয়ে থাকি। বাজারে যতবেশি চাষি ও ব‍্যাবসায়ী আসবে আমাদের ততো লাভ। অথচ আজ মরিচ আমদানির কথা শুনে কাঁচা মরিচ চাষি অর্ধেকের কম এসেছে। আমাদের বাজারে যতো আমদানি হবে ততো বেশি খাজনা আদায় হবে।


ট্রাম্পের নির্দেশ উপেক্ষা করে গাজায় ইসরাইলি হামলা, নিহত আরও ৪৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশ উপেক্ষা করে ইসরাইল ফের হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় আরও ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দখলদার বাহিনী এই হামলা চালায়।

এর আগে শুক্রবার রাতে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধে ইসরাইলকে নির্দেশ দেন।

কিন্তু তার এ নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শনিবার আরও ৪৬ জনকে হত্যা করেছে দখলদাররা। এরমধ্যে সর্বশেষ গাজা সিটির তুফ্ফাহ এলাকার একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে একসঙ্গে ১৭ জনকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী।

যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে তিনজন ত্রাণ প্রত্যাশী ছিলেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

অপরদিকে তুফ্ফার এক বাড়িতেই হামলা চালিয়ে যে ১৭ জনকে ইসরাইলিরা হত্যা করেছে তাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে কম বয়সি শিশুটির বয়স মাত্র ৮ মাস।

শনিবার মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৭৪ জনে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গত এক দিনে তাদের হামলা বা অভিযানের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫৯ জনে। এর মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।

সূত্র: আলজাজিরা


এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের পেছনে আরেক বাসের ধাক্কা, নিহত হেলপার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসের পেছনে আরেক বাসের ধাকায় এক যুবক (৩৫) নিহত হয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সিরাজদীখান উপজেলার চালতিপাড়া নামক এলাকায় মাওয়াগামী লেনে এ দুর্ঘটনায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। তবে তিনি দুর্ঘটনাগ্রস্ত ইমাদ পরিবহনের হেলপার ছিলেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, এক্সপ্রেসওয়ের মাওয়ামুখী চালতি পাড়া নামক এলাকায় হানিফ পরিবহনের দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসের পেছনে মাওয়াগামী ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ইমাদ পরিবহনের বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই বাসটির হেলপার মারা যায়। এতে ইমাদ পরিবহনের চালকসহ আহত হয় অন্তত আটজন। আহতেদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসাড়া হাইওয়ে থানার এসআই নুর মোহাম্মদ বলেন, হানিফ পরিবহনের বাসটি নষ্ট হওয়ার কারণে বাসটি রাস্তায় থামানো ছিল। কিন্ত ইমাদ পরিবহনের দ্রুতগামী বাস হানিফ পরিবহনের পেছনে ধাক্কা দিলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই ইমাদ পরিবহনের হেলপার মারা যায়। চালকসহ কয়েকজন আহত আছে তাদের শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

দুর্ঘটনার ফলে এক্সপ্রেসওয়েতে মাওয়ামুখী লেনে ৪০ মিনিটের মতো যান চলাচল বিঘ্নিত হয় এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে হাসাড়া হাইওয়ে থানার এসআই নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘সড়ক এখন স্বাভাবিক আছে।’


আবুধাবিতে লটারিতে ৬৬ কোটি টাকা জিতলেন বাংলাদেশি প্রবাসী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আবুধাবির জনপ্রিয় বিগ টিকিট লটারিতে ২০ মিলিয়ন দিরহাম (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা) জিতেছেন শারজাহপ্রবাসী বাংলাদেশি হারুন সরদার নূর নবী সরদার। গত শুক্রবার লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর এই টিকিট কেনেন হারুন।

৪৪ বছর বয়সি ট্যাক্সিচালক হারুন ২০০৯ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। শারজাহতে ট্যাক্সি চালান তিনি। গত ১৫ বছর ধরে আবুধাবিকেই নিজের ঘর মনে করেন হারুন। তার পরিবার বাংলাদেশে থাকে।

হারুন জানান, জয়ের স্বপ্ন নিয়ে প্রতি মাসেই নিয়মিতভাবে বিগ টিকিট কিনতেন তিনি। কখনো হাল ছাড়েননি।

শো সঞ্চালক রিচার্ড ও বুশরার সঙ্গে ‘গোল্ডেন ফোনে’ কথা বলার সময় লটারি জেতার কথা শুনে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েন হারুন। তিনি বলতে থাকেন, ‘ওকে, ওকে। আমি বাংলাদেশি। শারজাহতে আছি। আমি একজন প্রাইভেট ট্যাক্সি (ড্রাইভার)। ওকে, থ্যাঙ্ক ইউ। আমি এই পুরস্কার ১০ জনের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি।’

পুরস্কারের অর্থ নিয়ে কী করবেন, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত না হলেও, তিনি টিকিট কেনা চালিয়ে যেতে এবং বিগ টিকিটের সঙ্গে যুক্ত থাকতে খুবই আগ্রহী বলে জানান। হারুন বলেন, ‘আমি অন্যদেরও স্বপ্ন না ছাড়তে উৎসাহিত করি, কারণ বিগ টিকিটে কোনো স্বপ্নই দূরে নয়।’

হারুনের লটারি জয়ের পাশাপাশি আরও চারজনের প্রত্যেকে ৫০ হাজার দিরহাম করে জিতেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতে বসবাসকারী শিহাব উমাইর এবং দুবাইতে বসবাসকারী ভারতীয় প্রবাসী সিদ্দিক পাম্বলাথ। এছাড়াও ভাগ্য খুলেছে আরও দুই প্রবাসী আবুধাবিতে বসবাসকারী বাংলাদেশি আলী হুসেন আলী এবং দুবাই ও শারজাহতে বসবাসকারী পাকিস্তানি আদেল মোহাম্মদের।

অন্যদিকে, বিগ উইন কন্টেস্ট স্পিন দ্য হুইল-এ দেড় লাখ দিরহাম পুরস্কার জেতার জন্য ভাগ্য পরীক্ষা করতে নাম লিখিয়েছিলেন চার প্রবাসী।

কাতারপ্রবাসী রিয়াসকে প্রতিযোগিতায় (বিগ উইন কন্টেস্ট) তার ভাগ্য পরীক্ষার জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তিনি আবুধাবিতে যেতে না পারায় ‘স্পিন দ্য হুইল’ প্রতিযোগিতায় নিজের হয়ে অংশ নেওয়ার জন্য বন্ধু আশিক মোট্টামকে মনোনীত করেন। রিয়াস ও আশিক মিলে আরও ২০ জনের সঙ্গে টিকিট কিনেছিলেন। স্পিন শুরুর আগে রিয়াস এক বার্তায় বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, সে ১ লাখ ৫০ হাজার দিরহাম জিতবে।’ অবশেষে বন্ধুর ইচ্ছা পূরণ হয়। আশিক জিতে যান।

ড্রতে একমাত্র নারী হিসেবে বিজয়ী ছিলেন ভারতের কেরালার নাগরিক সুসান রবার্ট। স্পিনের আগে তিনি জানান, জেতা অর্থ ছেলের পড়াশোনা এবং বিদেশ ভ্রমণে ব্যয় করতে চান, বিশেষ করে জাপানে যাওয়ার ইচ্ছা তার। স্পিন শেষে তিনি জিতে নেন ১ লাখ ১০ হাজার দিরহামের পুরস্কার। বিজয়ের পর তিনি সব নারী দর্শকদের অংশ নিতে আহ্বান জানান। সুসান বলেন, ‘বিগ টিকিটে অংশ নিন এবং আরও বেশি টিকিট কিনুন, নারীরা।’

বিগ টিকিটে আবুধাবি প্রবাসী আলিমউদ্দিন সোনজা জিতেছেন ৮৫ হাজার দিরহাম। তিনি এই অর্থ তার সঙ্গে টিকিট কেনা ১০ জনের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন।

’স্পিন দ্য হুইল’ প্রতিযোগিতার চতুর্থ বিজয়ী হন আল আইনে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী জাজরুল ইসলাম ফকির। তিনিও পুরস্কারের অর্থ ১০ জনের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন।

এছাড়া শারজাহ প্রবাসী আরেক বাংলাদেশি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আহমেদ নবী জিতেছেন একটি রেঞ্জ রোভার ভেলার গাড়ি।

বিগ টিকিট সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, অক্টোবর মাসের প্রমোশনে থাকছে ২ কোটি ৫০ লাখ দিরহামের গ্র্যান্ড প্রাইজ। আগামী ৩ নভেম্বরের লাইভ ড্রতে ভাগ্যবান বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হবে এই পুরস্কার।

এছাড়া, প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন বিজয়ী ঘরে তুলতে পারবেন ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের ২৫০ গ্রাম বার।


বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিতে ভারতের শাড়ি ব্যবসায় ধস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মোহাম্মদ আহমদ আনসারি সারা জীবন কাটিয়েছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসির সরু আর ভিড়ভাট্টার অলিগলিতে। এ শহরকে অনেকেই ভারতের আধ্যাত্মিক রাজধানী বলে থাকেন। এখানকার পার্লামেন্টারি আসনও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। ৫৫ বছর বয়সি আনসারি কয়েক দশক ধরে বুনছেন বেনারসি শাড়ি। তাঁতের শব্দ, মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি আর আজানের সুরে মিশে থাকা এ শহরে তিনি ভালোবাসেন নিজের কাজের পরিবেশ।

ধারণা করা হয়, ভারতবর্ষের প্রাচীনতম নগরী হলো বারানসি। খ্রিষ্টপূর্ব ১ হাজার ৮০০ সাল থেকেই এ নগরীর অস্তিত্ব আছে বলে মনে করা হয়। এখানকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির মেলবন্ধন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শাড়ির বিক্রি কমেছে। নানা কারণে এ মন্দা দেখা দিলেও সর্বশেষ ধাক্কা এসেছে ভারত-বাংলাদেশের চলমান টানাপড়েন থেকে।

গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে দিল্লিতে আশ্রয় নেন। এর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে এখন অনেকেই মনে করেন, তাদের সমস্যার পেছনে ভারতেরও ভূমিকা আছে। বিশেষ করে মোদির প্রকাশ্য সমর্থন ছিল হাসিনার প্রতি। তার পতনের পর বাংলাদেশে কিছু জায়গায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। কারণ, তাদের হাসিনার সমর্থক হিসেবে দেখা হতো।

একই সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতীয় ব্যবসাও বয়কট হয়েছে। কোথাও কোথাও হামলার শিকারও হয়েছে ভারতীয় পণ্যের বিক্রেতারা। দেশটি এখন দিল্লির কাছে দাবি তুলেছে—হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে হবে, যাতে তাঁকে দেশে আইনের মুখোমুখি করা যেতে পারে।

চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ ভারত থেকে কিছু পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয়। এর মধ্যে ছিল সুতা আর চাল। পরে ১৭ মে ভারত পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। তারা স্থলসীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাবার আমদানি বন্ধ করে দেয়। যদিও বাংলাদেশ থেকে এখনো শাড়ি ভারতে পাঠানো যায়, তবে সেটা কেবল সমুদ্রপথে, যা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।

বিশ্বজুড়ে পরিচিত বেনারসি শাড়ি। সূক্ষ্ম কারুকাজ, বিলাসবহুল রেশম, ঝলমলে জরি আর সোনার-রুপার তারের কাজের জন্য এগুলো বিখ্যাত। একটি শাড়ি বুনতে কখনো কখনো ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগে। নকশা ও উপকরণের ওপর নির্ভর করে প্রতিটি শাড়ির দাম দাঁড়াতে পারে এক লাখ রুপি (প্রায় ১ হাজার ১৩০ ডলার) বা তারও বেশি।

আনসারি আল-জাজিরাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে উৎসব আর বিয়েতে এসব শাড়ির অনেক চাহিদা থাকে। কিন্তু আমদানি বন্ধের কারণে ব্যবসা এখন অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।’

ভারতের বারাণসীর কিছু ব্যবসায়ী এখনো বাংলাদেশি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা পাওনা। ছবি: আল জাজিরা

ভারতের বারাণসীর কিছু ব্যবসায়ী এখনো বাংলাদেশি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা পাওনা। ছবি: আল জাজিরা

বেনারসি শিল্প এর আগেও একের পর এক ধাক্কা খেয়েছে। নোটবন্দি (ভারতের ১০০০ রুপির নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া), বিদ্যুতের দাম বাড়া, করোনাভাইরাস মহামারি—এসব তো আছেই। পাশাপাশি আধুনিক পাওয়ার লুমে তৈরি সস্তা শাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে বেনারসি। বিশেষ করে গুজরাটের সুরতে তৈরি শাড়ির কারণে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।

এই ধারাবাহিক সংকটে অনেকে পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন। একসময় যেখানে প্রায় চার লাখ তাঁতি ছিলেন, এখন তা নেমে এসেছে অর্ধেকে—প্রায় দুই লাখে। অনেকেই শহর ছেড়ে চলে গেছেন অন্য কাজে। কেউ কেউ আবার রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

৬১ বছর বয়সী এক পাইকারি শাড়ি ব্যবসায়ী পবন যাদব আল-জাজিরাকে বলেন, ‘ঢাকায় সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ব্যবসা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার শাড়ি পাঠাতাম। এখন সব থমকে আছে।’ তিনি জানান, প্রতিবেশী দেশের ক্রেতাদের কাছে তার এখনো ১৫ লাখ রুপি (প্রায় ১৭ হাজার ১৪০ ডলার) পাওনা আছে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সে টাকা ফেরত পাওয়া অসম্ভব মনে হচ্ছে।

ভারতে শাড়ি পরার নথিভুক্ত ১০৮ রকম পদ্ধতি আছে। আর শাড়ি শুধু পোশাক নয়, বরং সূক্ষ্ম নকশা আর রঙের ছটায় একে ধরা হয় চিরন্তন সৌন্দর্য আর ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে।

ভারতের টেক্সটাইল খাত এখন নানা সংকটে থাকলেও কৃষির পর সবচেয়ে বেশি মানুষ এই খাতে কাজ করেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এখানে কাজ করেন সাড়ে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে শাড়ির বাজারের মূল্য প্রায় ৮০ হাজার কোটি রুপি বা ৯ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন ডলার। শুধু রপ্তানি খাতেই আয় হয় প্রায় ৩০ কোটি ডলার।

বারানসির তাঁতি আর ব্যবসায়ীরা টানা তৃতীয়বারের মতো নরেন্দ্র মোদিকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছেন। এখন তাঁরা অপেক্ষা করছেন, বাংলাদেশকে ঘিরে তৈরি হওয়া বাণিজ্যসংকটের একটা সমাধান যেন প্রধানমন্ত্রী করেন। ২০১৫ সালে মোদি সরকার ৭ আগস্টকে জাতীয় হ্যান্ডলুম দিবস ঘোষণা করে। তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, দেশি তাঁতিদের জীবনে পরিবর্তন আনা হবে, দেশীয় পণ্যের প্রচার করা হবে। কিন্তু তাঁতি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এত দিনেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

সেভ দ্য লুম—নামের সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা রমেশ মেনন ‘ভারতের তাত শিল্প অনন্য, এর সঙ্গে অন্য কোনো দেশের তুলনা হয় না। তবু নিয়মিত ব্যবসা বা টেকসই আয় না থাকায় অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এখন নতুন তাঁতি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।’ তার মতে, এখন দরকার তাতের পণ্যকে দারিদ্র্যের প্রতীক না বানিয়ে বিলাসপণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা।

পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীদের স্বস্তি

অন্যদিকে বারানসি থেকে ৬১০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গে চিত্র ভিন্ন। বাংলাদেশ থেকে শাড়ি আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানকার সুতি শাড়ির ব্যবসায়ীরা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন। শান্তিপুরের ব্যবসায়ী তারকনাথ দাস চার দশক ধরে সুতি শাড়ির ব্যবসা করছেন। স্থানীয় তাঁতিদের তৈরি শাড়ি তিনি দেশের নানা শো-রুমে সরবরাহ করেন। কয়েক বছর ধরে ক্ষতির মুখ দেখলেও দুর্গাপূজার আগে হঠাৎই বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় তিনি খুশি।

আল-জাজিরাকে ৬৫ বছরের এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাংলাদেশি শাড়ি আমাদের বাজারের অন্তত ৩০ শতাংশ দখল করে নিয়েছিল। এতে স্থানীয় শিল্প ভুগছিল। এখন আমরা ধীরে ধীরে আগের বাজার ফিরে পাচ্ছি। এবারের দুর্গাপূজায় বিক্রি গত বছরের চেয়ে অন্তত ২৫ শতাংশ বেশি হয়েছে।’

শান্তিপুরে এক লাখের বেশি তাঁতি ও ব্যবসায়ী রয়েছেন। পূর্ব ভারতের শাড়ির ব্যবসার অন্যতম বড় কেন্দ্র এই শহর। নদীয়া জেলার এই অঞ্চল সুতি শাড়ির জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে শান্তিপুর সুতি শাড়ি দেশজুড়ে জনপ্রিয়। পাশের হুগলি ও মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেও সুতি শাড়ি উৎপাদন হয়। এগুলো শুধু দেশের বাজারেই নয়, গ্রিস, তুরস্কসহ নানা দেশে রপ্তানি হয়।

নদীয়া জেলার পাইকারি ব্যবসায়ী সঞ্জয় কর্মকারও খুশি এ পরিস্থিতিতে। তার ভাষায়, ‘বাংলাদেশি শাড়ি আমাদের চেয়ে একটু ভালো কাপড়ে তৈরি হয়। সঙ্গে থাকে আকর্ষণীয় প্যাকেজিং। তাই স্থানীয় নারীরা সেগুলো কিনতে পছন্দ করতেন।’ তিনি জানান, তরুণীরা আবার আধুনিক পোশাক—লেগিংস, টপস বা টিউনিকের দিকে ঝুঁকেছেন। তাতে শাড়ির বাজারে ধাক্কা লেগেছিল।

ফ্যাশন ডিজাইনার শান্তনু গুহঠাকুরতা মনে করেন, বাংলাদেশের শাড়ি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের তাঁতি ও ব্যবসায়ীদের জন্য বড় সুবিধা বয়ে এনেছে। এতে শুধু মূল বাজারই সুরক্ষিত হয়নি, নকল ডিজাইনের সস্তা শাড়িও কমে গেছে। ‘দুর্গাপূজার আগে এ সিদ্ধান্ত আসায় শিল্পকে আরও বেশি সহায়তা করেছে’—তিনি বলেন।


মা ইলিশ রক্ষায় ১৭ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন নৌবাহিনীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ শুরু হয়েছে। ২২ দিনব্যাপী এ অভিযান চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। সরকারের ঘোষিত এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমুদ্র, নদী ও উপকূলীয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজগুলো সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ১৭টি যুদ্ধ জাহাজ ৯টি জেলায় নিয়োজিত রয়েছে। এ অভিযানের অংশ হিসেবে চাঁদপুর এলাকায় বানৌজা ধানসিঁড়ি বা শহীদ ফরিদ ও বিএনডিবি গাংচিল; কক্সবাজার এলাকায় বানৌজা অতন্দ্র, শহীদ মহিবুল্লাহ, দুর্জয়, সাগর ও শহীদ দৌলত; খুলনা এলাকায় বানৌজা মেঘনা, চিত্রা বা তিতাস; বাগেরহাট এলাকায় বানৌজা করতোয়া, আবু বকর বা দুর্গম; পিরোজপুর ও বরগুনা এলাকায় বানৌজা সালাম ও কুশিয়ারা; বরিশাল এলাকায় বানৌজা পদ্মা, চিত্রা বা তিতাস এবং পটুয়াখালী এলাকায় এলসিভিপি-০১৩ বিশেষভাবে টহল দিচ্ছে।

এতে বলা হয়, গভীর সমুদ্রে দেশি-বিদেশি সব প্রকার সৎস্য শিকারীদের অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ এবং অত্যাধুনিক মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফটের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ফ্লিটের জাহাজ, ক্রাফট এবং বোটগুলো ইলিশের প্রধান প্রজনন অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ও মৎস্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে অবৈধ ইলিশ আহরণ ও বিদেশি মাছ ধরার ট্রলারের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করবে। অভিযানকালে ইলিশ আহরণে নিয়োজিত অসাধু ব্যক্তি ও যান্ত্রিক মৎস্য নৌযানগুলোর ওপর কঠোর আইন প্রয়োগ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

এতে আরও জানানো হয়, ইলিশ মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সুরক্ষিত রাখা, অবাধ প্রজননের সুযোগ সৃষ্টি এবং জাতীয় অর্থনৈতিক সম্পদ হিসেবে মা ইলিশের সুষ্ঠু সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে নৌ সদস্যরা সর্বদা নিবেদিত। বাংলাদেশ নৌবাহিনী দেশের সমুদ্রসীমায় ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় মাছ ইলিশের প্রাচুর্য বৃদ্ধি ও মৎস্য সম্পদের সমৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।


গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়াল

গাজা উপত্যকা ছাড়ছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল।

শনিবার মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৭৪ জনে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গত এক দিনে তাদের হামলা বা অভিযানের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫৯ জনে। এর মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।

সম্প্রতি জাতিসংঘের বৈশ্বিক সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের আয়োজিত এ সম্মেলনে প্রথমে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, আন্দোর্রা, মোনাকো। এরপরও থেমে নেই ইসরায়েলের নিষ্ঠুর হামলা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারণ করেছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োযভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।

হার মানছে হামাস?

গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার জবাব দিয়েছে হামাস। গাজার প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে দুই পক্ষের অবস্থান ভিন্ন।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, একটি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে টেকনোক্র্যাট কমিটি গাজা পরিচালনা করবে এবং এ প্রক্রিয়ায় টনি ব্লেয়ারসহ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিরা যুক্ত থাকবেন। হামাস বলেছে, গাজা পরিচালনা করবে একটি ফিলিস্তিনি স্বাধীন টেকনোক্র্যাট কমিটি, যা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত হবে এবং আরব ও ইসলামি সমর্থনে কার্যকর হবে।

গত শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস পরিকল্পনার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও প্রশাসনিক কাঠামো ও নিজেদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে মতভেদ প্রকাশ করেছে।

হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি সেনাদের পূর্ণ প্রত্যাহার, জিম্মি ও বন্দিদের বিনিময় এবং গাজায় মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের বিষয়গুলোতে সম্মত।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রস্তাবিত সূত্র অনুযায়ী জীবিত ও মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত। তবে এ প্রক্রিয়ায় ‌‘ক্ষেত্রীয় শর্ত’ পূরণের কথা উল্লেখ করলেও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়নি।

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাসের জিম্মিদের ফেরত দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েল ২৫০ আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দি এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক ১ হাজার ৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে নারী ও শিশুরাও থাকবে। একইসঙ্গে প্রতি ইসরায়েলি জিম্মির মৃতদেহের বিনিময়ে ১৫ জন ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

সবচেয়ে বড় মতভেদ হামাসের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস গাজার প্রশাসনে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনো ভূমিকা রাখবে না এবং ধাপে ধাপে গাজা নিরস্ত্রীকরণের পথে যাবে।

তবে হামাস নিজেদেরকে ফিলিস্তিনি জাতীয় কাঠামোর অংশ হিসেবে দাবি করেছে এবং নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি।

হামাস জানিয়েছে, গাজার প্রশাসন ও ভবিষ্যৎ কাঠামো নিয়ে আলোচনা একটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী বা হামাসের সদস্যদের নিরাপদে দেশত্যাগের মতো প্রস্তাবগুলো নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সংগঠনটি।

‘যুদ্ধ থামাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে হামাস’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে আশার সুর শোনা যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকদের কণ্ঠে। তাদের মধ্যে অন্যতম তুরস্কের ইস্তাম্বুল জায়িম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম অ্যান্ড গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স সেন্টারের (সিআইজিএ) পরিচালক ও জননীতিবিষয়ক অধ্যাপক সামি আল-আরিয়ান।

তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কার্যকর হতে পারে। তবে সেটি নির্ভর করবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাজা থেকে প্রত্যাহার ও বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ট্রাম্প কীভাবে পদক্ষেপ নেন তার ওপর।

আল-আরিয়ান বলেন, আমার বিশ্বাস হামাস ও অন্যান্যরা এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

তিনি আরও যোগ করেন, যদি ট্রাম্প সত্যিই যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী হন, তাহলে তার প্রস্তাবের মাধ্যমেই সে পথে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এদিকে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, হামাস যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার পরও ইসরায়েল গাজা নগরীতে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। এতে শনিবার ভোর থেকে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন।

সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে বলেন, রাতটি ছিল অত্যন্ত সহিংস। ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরী ও উপত্যকার অন্যান্য এলাকায় বহু বিমান হামলা ও আর্টিলারি গোলাবর্ষণ চালিয়েছে, যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বোমা হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, স্বাগত জানাল জাতিসংঘ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনার আলোকে জীবিত ও মৃত সকল ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। হামাসের এই প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মহাসচিব ‘হামাসের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এতে উৎসাহিত হয়েছেন’।

ডুজারিক বলেন, ‘মহাসচিব সব পক্ষকে গাজায় চলমান সংঘাত শেষ করার সুযোগটি গ্রহণ করার আহ্বান জানান এবং কাতার ও মিসরকে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’


banner close