বিরল প্রজাতির পাখি শামুকখোল। গ্রামের একটি পুকুর পাড়ের গাছে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার শামুকখোল পাখি। নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে প্রায় দুই দশক ধরে বছরের নির্দিষ্ট সময় পাখিগুলো এখানে বসবাস করে। সে জন্য গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির গ্রাম হিসেবে। সকালে এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ পাখিগুলোকে দেখতে আসেন। বলছি, জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের কানাইপুকুর গ্রামের কথা। আর এখানে পাখি দেখতে প্রতিবছর ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
জানা যায়, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির পাশে রয়েছে একটি পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে প্রায় ৫ বিঘা জমির ওপর বট, নিম, তেঁতুল, আম, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। এসব গাছে একটা সময় রাতচরা পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর সাদা বকের পর ধীরে ধীরে সেখানে রাজত্ব চলে আসে শামুকখোল পাখির দখলে। প্রায় দুই দশক ধরে শামুকখোল পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে এই স্থানটি।
এই শামুকখোল পাখিগুলো গাছের মগডালে নিজেদের আপন খেয়ালে বাসা বেঁধে আসছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে বক, কানা বক, শঙ্খ চোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল। তবে এর মধ্যে শামুকখোল রয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাখির কিচিরমিচির ডাক সবসময় মুখরিত করে রাখে গ্রামবাসীকে। তাই নিজের সন্তানের মতো লালন করেন তারা পাখিদের। অন্যদিকে গাছে গাছে পাখিরা ডিম থেকে ফুটাচ্ছে বাচ্চাও।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আসাদুজ্জামান রাশেদ। তিনি বলেন, একসঙ্গে এত পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে হাজার হাজার পাখি দেখলাম। দেখে মনটা ভরে গেল।
জয়পুরহাট শহরের পাচুরচক এলাকা থেকে পাখি দেখতে আসা রাতুল হাসান বলেন, ‘একসঙ্গে এত পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে হাজার হাজার পাখি দেখলাম। দেখে মনটা ভরে গেল।’
সদরের পশ্চিম দেবীপুর গ্রামের আশিক হোসেন বলেন, ‘শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে আসছি। কাছ থেকে এত পাখি দেখে খুব ভালো লাগছে। কেউ পাখিদের বিরক্ত করে না। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া।
কালাই উপজেলা থেকে দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আবুল বাশার লাইফ। তিনি বলেন, শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে আসছি। কাছ থেকে এত পাখি দেখে খুব ভালো লাগছে। কেউ পাখিদের বিরক্ত করে না। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া।
কানাইপুকুর গ্রামের শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ তামিম বলেন, ‘পাখিগুলো আমাদের গ্রামকে মুখরিত করে রাখে। কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করি। এপ্রিল মাসের দিকে পাখিগুলো এখানে এসে গাছে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর জুন মাসের দিকে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটায়। সেই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে উড়াল শিখতে শিখতে শীত চলে আসে। তখন তারা এখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। পাখিগুলো চলে গেলে আমাদের অনেক খারাপ লাগে।’
এই পাখি কলোনির পৃষ্ঠপোষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই অতিথি পাখিগুলো এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বাস করে আসছে। এরা সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে অবস্থান করে। পাখিগুলোকে কেউ কখনো বিরক্ত করে না। এ জন্য এরা এখানে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে পারে। আমরা পারিবারিকভাবে এই পাখি কলোনি দেখাশোনা করি। এই পাখিগুলো সাধারণত সব জায়গায় বাসা বাঁধে না। এরা আমাদের এখানে বাসা বেঁধেছে এটা আমাদেরও একটা গর্বের বিষয়। এজন্য আমার ভালো লাগা কাজ করে।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মহসিনা বেগম জানান, শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে প্রজননের উদ্দেশে। বাচ্চা বড় হয়ে উড়তে শিখলে তারা চলে যায় রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের দিকে। এরা সাধারণত কলোনিয়াল ভাবে বাস করে। নিরাপদ আশ্রয় ও পরিমিত খাবার পেলে এরা অনেক দিন থেকে যায়। সরকারের সহযোগিতা পেলে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।’
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমি পাখি কলোনিটি পরিদর্শন করেছি। পাখিগুলো যদি অসুস্থ হয় তাহলে চিকিৎসা বা কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করব।
কেশবপুর উপজেলা মাসিক এনজিও সমন্বয় কমিটির সভা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভা কক্ষে গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার এনজিও কর্মকর্তাদের নিয়ে
এনজিও সমন্বয় পরিষদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন দুস্থ শিশু শিক্ষা উন্নয়ন সংস্থার এনজিও পরিচালক মো. হারুনার রশীদ বুলবুল, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন। অনুষ্ঠানে ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মানব উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক মো. মোসলেম উদ্দিনের উপস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অত্র এলাকার অসহায় দরিদ্র, শিক্ষা বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মানব উন্নয়ন সংস্থা। বর্তমানে ‘মানব উন্নয়ন সংস্থা’ কেশবপুরের পাঁজিয়া ইউনিয়নের গড়ভাঙ্গা অঞ্চলে ১০টি গ্রামে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, কেশবপুর সকল জিও-এনজিও কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে কাজ করলে কেশবপুরের উন্নয়ন সম্ভব। অনুষ্ঠানে (জিইপি) এনজিও কর্মকর্তার মাধ্যমে গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার বিষয় গুরুত্ব দেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, দুস্থ শিশুশিক্ষা উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক মো. হারুনার রশীদ, সমাধান এনজিও সিনিয়র ম্যানেজার মুনছুর আলী, রিইব এনজিও সমন্বয়ক খালেদ হাসান, ভানু রানী, সুবোধ মিত্র মেমোরিয়াল অটিজম ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম, এস আর যুব ও সমাজকল্যাণ সংস্থার পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, মায়া পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. মিলন হোসেন, কামরুজ্জামান রাজু ফিল্ড অফিসার ভাব, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচির বুলবুল ইসলাম, ওই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেশবপুর এনজিও কর্মকর্তারা, সুপিয়া পারভীন, মনিরা খানম, সবুরোন নেছা, মোসলেম উদ্দিন, মো. মোসলেম উদ্দিন মানব উন্নয়ন সংস্থা মনিরা খানম জীবিকা নারী উন্নয়ন সংস্থা, বিপ্লব কুমার পাল এনডিও ম্যানেজার প্রমুখ।
নাটোরের সিংড়ায় সুপ্রিম বীজ এর ব্রিধান-৭৫ রোপা আমন ধান আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০ জন কৃষক। শতাধিক বিঘা জমি আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের পমগ্রামের কৃষকরা। ব্রিধান-৭৫ আবাদ করে এসব কৃষকের মাথায় হাত । খরচের টাকাই উঠছে না এবার কৃষকদের। বিঘাকে বিঘা ধান জমিতেই পড়ে আছে কোনো কোনো কৃষকের। এবার এই গ্রামের এসব কৃষকদের মাঝে আনন্দ নাই। পরিবার পরিজন নিয়ে দু:চিন্তা তাদের। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সিংড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ সরেজমিন পরিদর্শন করলেও এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে তারা এ বিষয়ে তারা সুপ্রিম বীজ কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। তারা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন।
কৃষকরা জানায়, এ বছর জুন মাসে উপজেলা কৃষি বিভাগের প্রাক্তন সহকারী কৃষি অফিসার নিখিল এবং কেউ কেউ নাটোর সুপ্রিম ডিলার পয়েন্ট থেকে বীজ সংগ্রহ করে রোপন করে। ২০২৪ সালে কৃষি বিভাগ থেকে বীজ সংগ্রহ করে বিঘা প্রতি ১৮/২০ মন ধান পেলেও এবার পাওয়া গেছে মাত্র ৪/৫ মন ধান ধান। যারা ধান কেটেছে তারা হতাশায় মাথায় হাত দিয়েছেন। আর যারা ধান কাটতে পারেনি তাদের ধান মাঠেই পড়ে আছে। বিঘা প্রতি ৪/৫ হাজার খরচের টাকা ও উঠছে না কৃষকদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিধান-৭৫ রোপন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ধান জমিতেই পড়ে আছে। একটি গোছে কোনো ধান কাঁচা, কোনোটা পাকা, কোনোটার শীষ ফেটে গেছে।
কৃষক জিয়াউর জানান, আমি ৬ বিঘা জমিতে লীজ নিয়ে এবার ব্রিধান-৭৫ ধান আবাদ করি। কোম্পানি আমাদের অপক্ক বীজ দিয়েছে আমরা ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বিঘা প্রতি ৫/৬ মন ধান হবে। কাটার খরচই উঠবে না। তাই মাঠেই ধান পড়ে আছে।
কৃষক শাহিন আলম জানান, আমি ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আবাদ করেছি ৫ মন করে ধান পেয়েছি। অনেক লোকসানের সম্মুখীন। ৩০ কেজি বীজ ৩ হাজার টাকায় সংগ্রহ করি। আমরা কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত।
কৃষক আতাউর রহমান জানান, ৪ বিঘা জমিতে ৭৫ ধান রোপন করি। ১২ কেজি বীজ আমাকে দেয়। ধান কাটতে পারিনি। খরচের টাকাই উঠবে না। হতাশায় আছি। আমার লিজ নেয়া জমি। পরিবার নিয়ে দু:চিন্তায় আছি।
কৃষক আ. সালাম, শাহীনুর ইসলাম, সুমন, রাশিদুল, আ. মান্নান, আবুল কালাম, আ. সামাদ, আ. হাকিম, শাহিন আলম সহ অনেক কৃষক ব্রিধান-৭৫ আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বিঘা প্রতি ধান কাটা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা খরচ হবে সেখানে ধান কাটলে তারা ঘরে তুলতে পাচ্ছে ৪/৫ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার ফরিদ জানান, আমার কাছে ওই এলাকার কয়েকজন কৃষক আসছিল। সরেজমিনে গিয়ে সত্যটা পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুত বিষয়টি সমাধান হবে।
প্রতি বছর ইরি - বোরো ধান এবং রোপা আমন ধান আবাদ করে চলনবিলের কৃষকরা। কিছু কিছু কোম্পানির নিম্নমানের বীজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা। এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, বাজার, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৫ কোটি টাকার জিও ব্যাগ প্রকল্প। নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে কোলদিয়াড় এলাকায় মানববন্ধন করেছে শত শত এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমার সাথে সাথে কোলদিয়াড় গ্রামের নিচ দিয়ে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়। বর্তমানে কোলদিয়াড় থেকে হাটখোলা পাড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চলমান প্রায় ৫ কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এর ফলে শুধু মরিচা ইউনিয়নই নয়, পাশ্ববর্তী ভেড়ামারা উপজেলার রাইটা পাথরঘাটা থেকে দৌলতপুরের আল্লাহর দর্গা বাজার সংযোগ সড়ক, রাইটা-মহিষকুন্ডী বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ, ভুরকা-বৈরাগীরচর সড়কসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জনজীবন হুমকির মুখে পড়বে।
এ প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, দুই এক দিনের মধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হবে।
এদিকে, ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, অনিয়ম, জনবল ঘাটতি ও দালাল চক্রের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে।
স্বনামধন্য এ হাসপাতালটি শুধু ভেড়ামারা নয়, পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর, মিরপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল। অথচ চিকিৎসকের অপ্রতুলতা আর দুর্নীতির কারণে দীর্ঘদিন যাবত রোগীরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। এ হাসপাতালের ডা. পলাশচন্দ্র দেবনাথের অবৈধভাবে বিদেশযাত্রা, হাসপাতালের ফটকের সামনে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্টাফ কর্তৃক রোগী ও তার স্বজনদের টানাহেঁচড়া, প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম ও দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে সবমিলিয়ে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্তমান অবস্থা চরম বিপর্যস্ত। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সমস্যা আরও তীব্র হবে বলে জানান, রোগী ও তার স্বজনরা।
ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুমোদিত ২৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো-সার্জারি) ও ৩ জন মেডিকেল অফিসার রয়েছেন। ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদ শূন্য রয়েছে জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথিসিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌন)।
এছাড়া আইএমও, এনসথেটষ্ট, এম.ও (এ.এমসির) পদ খালি রয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে একজন করে মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও সবগুলোই পদ শূন্য। শুধু সাতবাড়ীয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিয়োগকৃত মেডিকেল অফিসারকে পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংযুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফলে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা প্রায় অচল।
হাসপাতালে ১ জন মিডওয়াইফ, ১ জন জুনিয়র নার্স, ১ জন অ্যাকাউন্টেন্ট, ১ জন ক্যাশিয়ার, ৩ জন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিন, ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) ২ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১২ জন স্বাস্থ্য সহকারী, একজন কম্পাউন্ডার, অফিস সহায়ক, তিনজন ওয়ার্ড বয়, দুজন আয়া, দুজন কুক, একজন মালি, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, তিনজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুজন অফিস সহায়কের পথ শূন্য রয়েছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে বরাদ্দকৃত সিটের বাইরে রোগী ভর্তি হয়ে থাকেন।
সে কারণে রোগীদের ফ্লোরে অথবা বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। গাইনী ও অ্যানেসথিসিয়া ডাক্তার না থাকায় অপারেশন বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় ৪ শতাধিক রোগী সেবা নিয়ে থাকেন।
তা ছাড়াও হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ ও প্রসূতি সেবাও ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের অদক্ষ অপারেটার ও এক্স-রে মেশিন বিকল, প্রয়োজনীয় ল্যাব টেস্টও করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে রোগীরা বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল বা বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে ছুটে চলেছেন। ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালে সনোগ্রাফি করা বন্ধ রয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. পলাশ চন্দ্র দেবনাথ (কোড নং-১৩১৯০০) ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নেন। কিন্তু ছুটি শেষে আর অফিসে যোগ দেননি। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে চলে গেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রোগীরা জানান, ‘সরকারি বেতন গ্রহণ করে ডাক্তার যদি অবৈধভাবে বিদেশে চলে যান, তাহলে আমাদের চিকিৎসাসেবা কে দেবে।’ ডা. দেবনাথের দীর্ঘদিন অনুপস্থিতি ইতোমধ্যেই হাসপাতালের চিকিৎসা সংকটকে প্রকট করেছে।
হাসপাতালের ভেতরে দালাল চক্র সক্রিয় থেকে রোগীদের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সরকারি বরাদ্দের খাবারও রোগীরা প্রায়ই সঠিকভাবে পান না। ফলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে হাসপাতালটি।
হাসপাতালের ফটকের সামনে রয়েছে তিনটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অভিযোগ রয়েছে, যেকোনো টেস্টের সময় এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা রোগীদের হাত ধরে টানাটানি করে নিজেদের সেন্টারে নিতে চেষ্টা করে। এতে রোগীরা বিব্রত ও ভোগান্তিতে পড়েন।
সম্প্রতি জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নির্দেশে হাসপাতালের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারী বদলি হয়েছেন। এতে স্বাস্থ্য সহকারী, দপ্তরি, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন দৌলতপুর, মিরপুর ও ঈশ্বরদী অঞ্চলের মানুষও। কিন্তু চিকিৎসকের অভাব, পরীক্ষার সীমাবদ্ধতা আর অনিয়মের কারণে তাদের অবস্থাও নাভিশ্বাস। শেষ পর্যন্ত অনেককে বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাসপাতালে যেতে হয়, যা সময়, অর্থ ও বিড়ম্বনা উভয়ই বাড়িয়ে দেয়।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডা. পলাশ চন্দ্র দেবনাথ অনুপস্থিত থাকায় ঊর্ধ্বতন কার্যালয়ে একাধিককার আবেদন করা হয়েছে।’ ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের অনিয়ম ও চিকিৎসক সংকট বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে চিকিৎসক সংকট একটি জাতীয় সমস্যা। হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়েও যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।’
কুমিল্লার চান্দিনায় সুদের টাকা আদায়ের জন্য আলী আকবর (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। খবর পেয়ে মূল হোতা বোরহান উদ্দিন (২৫) কে আটক করেছে পুলিশ। ৬ অক্টোবর সকালের ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১১ টায় বৃদ্ধকে নির্যাতনকারী সুদের কারবারি বোরহানকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) ইমাম হোসেন।
বোরহান উদ্দিন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবুল কালাম এর ছেলে।
চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম জানান- চান্দিনা থানার রসুলপুর গ্রামে সুদের টাকা আদায়ের জন্য এক বৃদ্ধকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনার সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বোরহান দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় সুদে টাকা বিনিয়োগ করেন। আলী আকবর তার ছেলে কে বিদেশে পাঠাতে বোরহানের কাছ থেকে টাকা নেয়। নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার সকালে তাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে রাস্তার পাশের একটি বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
শেষ বয়সে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে চান মোতালেব আকন এমন শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও 'আমরা বিএনপি পরিবার'-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়। অতঃপর তিনি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনকে নির্দেশ দেন দলের এক সময়ের সক্রিয় ও নিবেদিত কর্মী মোতালেব আকনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। এরপরই শুরু হয় ভার্চুয়াল সাক্ষাতের প্রস্তুতি।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পিরোজপুর জেলা বিএনপির প্রবীণ নেতা মোতালেব আকনের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎ করেছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিএনপির প্রবীণ নেতা মোতালেব আকনের সঙ্গে যুক্ত হন তারেক রহমান। উষ্ণ শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে শুরু হয় আবেগঘন এ সাক্ষাৎ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এবং ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী। আমরা বিএনপি পরিবার এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাংবাদিক হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খানসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, পিরোজপুর জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম আহ্বায়ক এলিজা জামান, সদস্য সচিব ও সাবেক ভিপি এস এম সাইদুল ইসলাম কিসমতসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এ সময় তারেক রহমানের সাথে কথোপকথনের সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মোতালেব হোসেন এবং তার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারণা করেন। একপর্যায়ে তারেক রহমান প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের কাছে সারাদেশের নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনার কথা জানতে চাইলে তিনি সারা দেশের নেতাকর্মীদের সৎভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের প্রতি কাজ করার আহবান জানান। আগামী নির্বাচনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার আহ্বান ব্যক্ত করেন।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা-এর নেতৃত্বে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় গত সোমবার বিকেলে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ সময় মোট ২০ মেট্রিক টন চাল এবং দুই লাখ টাকা নগদ ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানবৃন্দ এবং স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। চর শংকরদহ গ্রামের রোকেয়া বেগম জানান, বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। সরকারের দেওয়া চাল ও নগদ সহায়তা যদিও সীমিত, তবুও এটি আমাদের নতুন করে বাঁচার আশা জাগিয়েছে।
নোহালী ইউনিয়নের আব্দুল তালেব বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, সব শেষ হয়ে গেছে। এই সামান্য সহায়তা আমাদের ক্ষতির কিছুটা হলেও প্রতিকার করছে।
খামার মোহনা গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, ফসল ও ঘরবাড়ি সব ধ্বংস হয়ে গেছে। এই সহায়তা শুধুমাত্র কয়েকদিনের খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনের সামগ্রী দিতে পারছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব এবং মানবিক কর্তব্য। ত্রাণসামগ্রী ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা শুধু সহায়তা প্রদানেই থামব না, ধাপে ধাপে সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুনর্বাসনের আওতায় আনার জন্য কাজ চালিয়ে যাব। সমাজের সচেতন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যদি এগিয়ে আসে, তাহলে কেউই অসহায় থাকবে না। আমরা দৃঢ়ভাবে চেষ্টা করব প্রতিটি পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য।
ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন যে, এনজিও এবং সমাজের অন্যান্য সচেতন প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে এসে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবেন।
রূপগঞ্জের গ্রামীণ সড়ক গুলোর অবস্থা ভয়াবহ। যান চলাচল তো দূরের কথা, কোন সুস্থ সবল মানুষ হেঁটে যাওয়াই দূরহ কাজ। বয়স্ক লোকেরা হেঁটে মসজিদে যেতে পারছে না রাস্তার বেহাল দশার কারণে। যোগাযোগ ক্ষেত্রে গ্রামীন অবকাঠামো একেবারে ভেঙে পড়েছে। মানুষের দুঃখ কষ্টের সীমা নেই। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে একেবারেই নিরব। উপজেলার নগর পাড়া বাজারের রাস্তাটি ১০ বছর ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে প্রায়ই গাড়ি পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। খামারপাড়া মসজিদে যেতে পারছে না মুসল্লিরা । নগরপাড়া মসজিদের রাস্তাটিরও বেহাল দশা। গোটা রূপগঞ্জে রাস্তার বেহাল দশা মানুষের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকার রাস্তাটি প্রায় দুই যুগ ধরে সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির সামান্য পানিতেই কাদা ও গর্তে পরিণত হয় এসব রাস্তা। ফলে এলাকাবাসীকে প্রতিদিন পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার সরকারপাড়া সড়কটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এলাকায় বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তায় বড় বড় গর্ত এবং সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা বিথী আক্তার বলেন, এই ভাঙ্গাচুড়া রাস্তা দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় অনেক ব্যাঘাত ঘুটছে। বৃষ্টি হলে এ রাস্তা দিয়ে চলাচলের উপযোগী থাকে না। কোন রোগী অসুস্থ হলে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা জুয়েল সরকার বলেন,আমরা বিগত সরকারের আমলে বহুবার আবেদন করলেও কোন ফল পাইনি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি যাতে আমাদের রাস্তাটি সংস্কার করে দেয়।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা বাদল সরকার বলেন, বিগত সরকারের আমলে বহু রাস্তার উন্নয়ন দেখেছি আমাদের এলাকার এ রাস্তাটি সর্বদা অবহেলিত ভাবে দেখা হয়েছে। বার বার এলাকাবাসী আবেদন করলেও সঠিক সুরাহা হচ্ছে না। রাস্তা ভেংগে খাদে পরে গেছে অনেকাংশ, এতে রাস্তাটি সরু হয়ে মানুষের চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পরেছে।
মুসালিয়া বালিকা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন,মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় অল্প বৃষ্টি হলেই ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে মাদ্রাসায় যেতে পারি না এবং মাদ্রাসার ড্রেস নষ্ট হয়ে যায় কাদায়। আমরা এ পিচ্ছিল রাস্তায় পরে যাই জামা কাপর নস্ট হয়। আমাদের এ রাস্তাটি ঠিক করে আমাদের বাচান।
সরকারপাড়া মসজিদের ইমাম তাজুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে প্রায় দশ বছরের উপরে মসজিদের ইমামতি করে আসতেছি আমি শুনে যাচ্ছি রাস্তার সংস্কার হবে হবে। অনেক বৃদ্ধ লোক রাস্তা খারাপের কারনে মসজিদে আসতে পারে না।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন,আমি এ বিষয়ে জানিনা তবে লোক পাঠিয়ে জানার চেষ্টা করছি।
স্থানীয় প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, বর্ষার বৃষ্টির প্রভাব এখনো রয়েছে। বৃষ্টি কেটে গেলে রাস্তা মেরামত করা হবে। মানুষের দুর্ভোগের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে এ সমস্যা আর বেশিদিন থাকবে না ইনশাল্লাহ।
বিয়ের আট মাস পর লক্ষ্মীপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে মো. রুবেল (২৫) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম চরমনসা গ্রামের মহব্বত আলী মুন্সি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রুবেল ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের আশার বাড়ির বেল্লাল মিয়ার ছেলে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রিয়া আক্তারের সাথে বিয়ে হয় রুবেলের। বিয়ের পর থেকেই নানান বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা চলে আসছিল। ঘটনার দিন রুবেল রাতে নিজের বাড়িতেই অবস্থান করছিল। হঠাৎ শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন আসে। ফোনে রুবেলের সাথে তার স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। পরে রুবেল বাড়ি থেকে বের হয়ে শ্বশুরবাড়ির দিকে যায়। ভোরে বাড়ির লোকজন গাছে তার ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার করে। পরে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তার শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।
নিহতের বোন নয়ন বলেন, বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে বিবাদ চলে আসছে। আমার ভাইকে নাকি তার স্ত্রীর পছন্দ হয়নি। ঘটনার রাত তাকে ফোন করে আমাদের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এটা পরিকল্পিত হত্যা। আমরা এর বিচার চাই।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদরের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
"একদিন এই পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গরবো,সযত্নে তোমায় রাখবো আগলে"
এই স্লোগানকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় পিরোজপুরের আয়োজনে ৩৫ তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর)সকাল দশটায় পিরোজপুর জেলা সার্কিট হাউস এর সামনে থেকে একটি র্যালি বের হয়ে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সামনে এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাইফ মিজান স্মৃতি সভাকক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ ইকবাল কবির এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান,
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি,জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইব্রাহিম খলিল, সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন হাওলাদার,সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মতিউর রহমান প্রমুখ।
বক্তব্য রাখেন, রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) এর আন্তর্জাতিক সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ,প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী খায়রুল আলম, নবীনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গাজী বেনজীর সাইয়্যেদা।
বক্তারা বক্তব্যে প্রবীনদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার ও তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
জেলা প্রশাসক প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবীণদের এই সমাজের গুরুত্ব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেন এবং নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন সব সময় প্রবীণদের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা দিতে।
এছাড়াও তিনি বলেন ইতিমধ্যে জেলায় প্রবীনদের জন্য একটি প্রবীণ পার্ক নির্মান করেছি,ভবিষ্যতে তাদের জন্য সেখানে একটি পাঠাঘারের ব্যবস্থা করা হবে, এছাড়াও যাদের বয়স ৭০ বছরের উর্ধ্বে তাদের প্রত্যেককে একটি করে স্বাস্থ্য কার্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করা হবে যাতে এরা সুন্দরভাবে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে।
উল্লেখ্য উক্ত দিবসটি ছিলো ০১ অক্টোবর কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে ০৭ অক্টোবর পালন করা হয়।
কুমিল্লার চান্দিনায় সুদের টাকা আদায়ের জন্য আলী আকবর (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। খবর পেয়ে মূল হোতা বোরহান উদ্দিন (২৫) কে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল ৬ অক্টোবর সকালের ঘটনা ঘটে।
পরে রাত ১১ টায় বৃদ্ধকে নির্যাতনকারী সুদের কারবারি বোরহানকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) ইমাম হোসেন।
বোরহান উদ্দিন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবুল কালাম এর ছেলে।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম জানান- চান্দিনা থানার রসুলপুর গ্রামে সুদের টাকা আদায়ের জন্য এক বৃদ্ধকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনার সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বোরহান দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় সুদে টাকা বিনিয়োগ করেন। আলী আকবর তার ছেলে কে বিদেশে পাঠাতে বোরহানের কাছ থেকে টাকা নেয়। নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে তাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে রাস্তার পাশের একটি বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
রাঙামাটিতে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৯ শিশু পাবে টাইফয়েড টিকা। সোমবার দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন ডা: নূয়েন খীসা এমন তথ্য জানান।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৪৯টি ইউনিয়নের এক হাজার ২২২টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এক লাখ ১১ হাজার ৯৪১টি বিদ্যালয় এবং ৪২ হাজার ৮০৩টি এলাকার শিশু যারা বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়নি বা লেখা-পড়া করে না এমন শিশুকেও টিকা প্রদান করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন বলেন, চলতি মাসের ১২ অক্টোবর থেকে ১৮ কার্যদিবস পর্যন্ত এ টিকাদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রাক- প্রাথমিক থেকে ৯ ম শ্রেণী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুকে টিকাদানের কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।
এ সময় রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার আল হক, সিনিয়র সহ- সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. প্রতীক সেন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা খোকন চাকমা।