জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষকদের কাছে করলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ধান আর আলু প্রধান উপজেলার প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে নিজস্ব মেধা আর প্রযুক্তিতে করলা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এলাকার কয়েকশ কৃষক। ফলে ধান ও আলুর স্থান দখল করে নিয়েছে করলা চাষ। বিঘার পর বিঘা মাঠের জমিতে মাচায় ঝুলছে সবুজ করলা।
এ দৃশ্য ক্ষেতলাল উপজেলার হাটশহর, বাখরা, মুনঝাড়সহ কয়েকটি (কলিঙ্গা, ঘুগোইল, কুসুমশহর, আঁটিদাশড়া, কোনিয়াপাড়া) গ্রামের মাঠগুলোতে। এক সময় এখানকার দুই-এক জন কৃষক করলা চাষ করলেও এখন শতভাগ পরিবার কোনো না কোনোভাবে যুক্ত করলা চাষের সঙ্গে। বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মাটি, মানুষ আর প্রকৃতি কথা বলে করলা নিয়ে। মানুষ এই গ্রামগুলোকে চেনে এখন করলা গ্রাম নামে।
কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশী, এছাড়া স্বল্প সময়ে এ ফসল উঠানো যায় বলে করলা চাষে দিন দিন ঝুঁকে পরছেন তারা। তাছাড়া কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগীতায় কৃষকদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে বেশি উৎপাদনের পাশাপাশি এলাকায় করলা চাষে আরো সফলতা মিলবে।
সরেজমিনে জানা যায়, অধিকাংশ কৃষক বাণিজ্যিকভাবে করলা চাষ করে বদলে গেছে তাদের ভাগ্য। এখানকার উৎপাদিত করলা যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন এই গ্রামগুলোতে। একদিকে যেমন ফুটেছে কৃষকের মুখে হাসি। অন্যদিকে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার কৃষকদের।
শুধু তাই নয়, জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখানকার করলা গুনগত মানে বেশ ভাল হওয়ায় অন্য জেলায় এর চাহিদা অনেকটায় বেশী। আর এ কারনে ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এসব করলা বাজারজাত করতে স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকটি স্থানে করলার হাট।
উপজেলার হাটশহর গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তুলনামুলকভাবে অন্য ফসলের চেয়ে করলার ফলন বেশি হয়ে থাকে। এতে সেচ খরচ যেমন কম তেমনি রোগবালাই আর পোকা মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।
উপজেলার মুনঝাড় গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এক সময় অভাবের কারণে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটলেও করলা চাষে সফলতা আসায় এখন তারা অনেকটায় স্বাবলম্বী। বীজ, জৈবসার,বালাইনাশক,করলার মাঁচাসহ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে করলা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত করলা বিক্রি করা যায়।
উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, করলা রোপণের ২ মাসের মধ্যে করলা তোলা শুরু হয়। এক টানা ৫ মাস করলা তোলা যায়। আর করলার চাহিদা সারা বছরই থাকে। অন্য ফসলের চেয়ে করলা চাষে লাভ বেশি। আর সে কারণেই করলা চাষে ঝুঁকছি কৃষকরা। বর্তমানে প্রতি কেজি করলা প্রকারভেদে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার করলার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় করলা চাষ দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, গত ০৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংঘটিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে আনসার সদস্যদের ভূমিকা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ ধরনের প্রচার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর ।
উল্লেখিত তারিখে সকাল আনুমানিক ১০:৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার ভবনে আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবার জন্য আগত সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে আল্ট্রাসনোগ্রামের দৈনিক সীমা পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এসময় দায়িত্বরত রেডক্রিসেন্ট কর্মীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যগণ তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পক্ষকে পৃথক করে পরিস্থিতি শান্ত রাখেন।
পরবর্তীতে কিছু ব্যক্তি হাসপাতালের রেজিস্ট্রার মহোদয়ের কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করে উত্তেজনাপূর্ণ আচরণ করেন এবং মব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুরোধে আনসার সদস্যরা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে মব নিয়ন্ত্রণে আনেন ও চিহ্নিত দুইজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারিত্ব, ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। কোনো সাংবাদিককে বাধা প্রদান বা সংবাদ প্রচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়নি—এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অসত্য।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি স্থাপনা, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থানে আনসার সদস্যরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ভবিষ্যতেও জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।
সুতরাং,বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে এবং সেসব অসত্য সংবাদ প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হচ্ছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত সেপ্টেম্বর-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৭১ কোটি ৬০ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ৬ কেজি ৩৫৬ গ্রাম স্বর্ণ, ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম রূপা, ৯,২৪৮টি শাড়ী, ১৩,৫৫৮টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ১১,৪৬১টি তৈরী পোশাক, ১,২৮৬ মিটার থান কাপড়, ৩,৯১,৭৯৩টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ২,৯৫২ পিস ইমিটেশন গহনা, ১৩,৬১,২৭৬টি আতশবাজি, ৪,২০২ ঘনফুট কাঠ, ২,০৩৫ কেজি চা পাতা, ১১,৩৭৭ কেজি সুপারি, ৮১,৭৮০ কেজি কয়লা, ৭৩৫ ঘনফুট পাথর, ৪,৬৩০ ঘনফুট বালু, ৬,৩৪৯ কেজি সুতা/কারেন্ট/দুয়ারি জাল, ৩৭৯টি মোবাইল, ৩,৪৪৩টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৩৫,০৬২টি চশমা, ১৭,২৬৯ পিস যানবাহনের যন্ত্রাংশ, ৩২,৭৭৮ কেজি জিরা, ১৭,৬৪১ কেজি চিনি, ৯,৪৫১ কেজি পিয়াজ, ১৩০ কেজি রসুন, ১৩,২৭৬ কেজি সার,
৪,১৬৪ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ১,৫৮১ প্যাকেট কীটনাশক, ১৮৯ লিটার ডিজেল, ৪,৩৯,০৩৪ পিস চকোলেট, ৭৩,৫৪০ ভারতীয় রূপি, ৩০ হাজার ইউএস ডলার, ১,৫২৫টি গরু/মহিষ ১৯টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ১২টি পিকআপ/মহেন্দ্র, ১টি ট্রাক্টর, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৬টি ট্রলি, ১৩০টি নৌকা, ৩৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬৬টি মোটরসাইকেল এবং ৬৭টি বাইসাইকেল/ভ্যান।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ২টি দেশী/দেশীয় পিস্তল, ০২টি ম্যাগাজিন, ১০০ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং ৩টি অন্যান্য অস্ত্র।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- ২০,৮৭,১৪৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪ কেজি ৬৬৩ গ্রাম হেরোইন, ৪,৪৯১ বোতল ফেনসিডিল, ১২,১১৩ বোতল বিদেশী মদ, ৩৮৪ লিটার বাংলা মদ, ১,১০৮ ক্যান বিয়ার, ১,২৯৮ কেজি গাঁজা, ২,২৪,৮১১ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ১০ কেজি তামাক পাতা, ৫৭,৭৪৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৪,৩৮৪ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১২,২৪৯টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, এম কফিডিল ৪০টি, এবং ৭,৫৪,২৫৮পিস বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৮ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১১৯৭ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ০৯ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৮০৫ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পুলিশ কনস্টেবল পাপেল হাসানের (বিপি-৯৩১৩১৬৯২৮২) বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, যৌতুক দাবি এবং স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তুলে তৃতীয় স্ত্রী হাফিজা আক্তার আঁখি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বদলগাছীর বিষ্ণুপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে হাফিজা আক্তার বলেন, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর পারিবারিকভাবে পাপেল হাসানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার পরিবারের কাছ থেকে বাড়ি মেরামতের কথা বলে ৭ লাখ টাকা যৌতুক নেওয়া হয়। বিয়ের পর পাপেল কর্মস্থল বগুড়ায় থাকাকালীন তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে ভাড়া বাসা ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, সাত মাস পর পাপেলের নতুন কর্মস্থল বগুড়ার সারিয়াকন্দির চন্দন বাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ওঠার পর সংসার শুরু হলেও সেখানে কোনো খরচ দিতেননা পাপেল। এরপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বিষয়টি জানিয়ে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
হাফিজা আক্তারের দাবি, পরে পাপেল আবারও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। এরপর তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। কিছুদিন পর হাফিজা জানতে পারেন, পাপেল এর আগেও দুটি বিয়ে করেছেন এবং যৌতুকের জন্য তাদেরও তালাক দিয়েছেন। একই কৌশলে তাকে গোপনে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন।
তিনি জানান, এসব ঘটনায় তিনি বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার, পাবনা পুলিশ সুপার, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টারেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষই এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তাকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা করতে করতে বলেছেন।
পাপেলের প্রথম স্ত্রী সোনালী আক্তার বলেন, পাপেলের পরিবারের অবস্থা ভালো ছিল না। পুলিশে চাকরির জন্য তার বাবার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নেওয়ার পর তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু কিছুদিন পরই পাপেল তালাক দিয়ে নতুন জীবন শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, পাপেল একজন অর্থলোভী মানুষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল পাপেল হাসান মুঠোফানে বলেন, আমি সরকারি চাকরি করি, কেন ভরণপোষণ দিব না? আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলবোনা।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজা আক্তারের বাবা রকিব উদ্দিন, চাচা রফিকুল ইসলাম, চাচাতো ভাই জহুরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ব্রিজের নিচের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে বাঁধ অপসারনে স্বস্তি প্রকাশ করেছে দুর্ভোগে থাকা পানিবন্দি অর্ধশতাধিক পরিবার।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে উপজেলা সহকারি কমিশিনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ কান্দি ইউনিয়নের লেবুবাড়ি গ্রামে এক অভিযান চালিয়ে ব্রিজের নিচের এই বাঁধ অপসারণ করেন।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম, কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের নিচে অবৈধভাবে পাকা দেওয়াল দেওয়ায় পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পরে অর্ধশতাধিক পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানিবন্দী একাধিক ভূক্তভোগী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছি প্রভাবশালী ঘের মালিকদের কাছে। ভয়ে আমরা কিছু বলতেও সাহস পাইনি। বাধ্য হয়ে বাঁধ অপসারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন জানাই।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ব্রিজের নিচে পাকা দেয়াল দিয়ে পানি আটকিয়ে বর্ষা মৌসুমে জলাভূমিকে ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। এতে জলাভূমির মাঝে বসত করা প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে। মাছের ঘেরের কারনে এ সকল বাড়ির পাড়গুলো দিন দিন ভেঙে পড়ছিল। বর্ষার পানি কমে গেলেও ব্রিজের নিচে পাকা বাঁধ থাকার কারনে জলাভূমির পানি না কমায় দূর্ভোগে পরে ঘেরের ভিতরে বসবাস করা পরিবারগুলো।
অভিযান পরিচালনাকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভূক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক স্যারের নির্দেশনায় সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ব্রিজের নিচে পানি আটকিয়ে রাখা পাকা ইটের দেওয়াল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। জনদুর্ভোগ রোধে উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই তৎপর রয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের নিয়ে প্রাণবন্ত ‘শিশু সমাবেশ’। শনিবার (১১ অক্টোবর ২০২৫) সকালে বদলগাছী কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিসম)-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর রহমান।সম্মানিত বক্তা ছিলেন ফটোসাংবাদিক মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং সোহানি ইসলাম সমাপ্তি, বিসম অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রতিনিধি। অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা সমাজকল্যাণ সংস্থা-এর প্রকাশনা সম্পাদক আলেয়া বেগম আলো।
ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ বলেন, “শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ— তাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পরিবার ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ত্ব করেন মিস অন্নি ইসলাম, অ্যাক্রেডিটেড মেডিয়েটর ও কিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টারের যুগ্ম সম্পাদক।মডারেটর ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন জনাব এস. এন. ঘোষামী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বিসম-এর চেয়ারম্যান।অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুদের হাতে জাতীয় পতাকা, খাতা ও শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। বক্তারা শিশুদের দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও স্বপ্নমুখী জীবনের গুরুত্ব সম্পর্কে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
রাজবাড়ীর পাংশায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. এবাদত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম. আবু দারদা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন,
“টাইফয়েড জ্বর হলে জীবনের ঝুঁকি থাকে এবং মৃত্যু হারও অনেক বেশি। সেই ঝুঁকি থেকে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতেই এই টিকাদান কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। অনেকের মনে টিকা নিয়ে ভয়ভীতি থাকে— এটি নিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে কি না। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করছি, এই টিকা আন্তর্জাতিকভাবে পরীক্ষিত এবং এতে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ, বালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাঈদা খাতুনসহ অন্যান্য শিক্ষক ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. তৈয়বুর রহমান।
অনির্দিষ্টকালের জন্য ময়মনসিংহের সঙ্গে সারা দেশের দূর পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে জেলা মোটরযান মালিক সমিতি ও জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়ন। বাস বন্ধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
রোববার সকাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ময়মনসিংহ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি। জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হানকে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিকের লাঞ্ছিতের জেরে বাস বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পুলিশ জানায়, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিকবার দুঃখপ্রকাশ করার পরেও অরুণ ঝন্টু তার প্রতি অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেন।
এরপর রাত ৯টা থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে পুলিশ।
এর জেরে শনিবার বেলা ১১টা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের বাইপাসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও জামালপুর থেকে ঢাকাগামী সব বাস সেখানে আটকা পড়ে।
প্রবাদ রয়েছে- ‘চমচম, টমটম, শাড়ি, এই তিনে টাঙ্গাইলের বাড়ি’। জেলার পোড়াবাড়ির চমচমের খ্যাতি রয়েছে দেশে-বিদেশে। বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিনে, পূজাপার্বণসহ সকল উৎসবে রসনাবিলাসীদের তৃপ্তি যোগাতে এই চমচমের উপস্থিতি সর্বত্র। শুধু নামেই নয়, আকৃতি আর স্বাদ-গন্ধেও সেরা পোড়াবাড়ির চমচমকে বলা হয় ‘মিষ্টির রাজা’।
টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়িতে উৎপাদিত সেই বিখ্যাত চমচম বর্তমানে তার জন্মস্থানেই নিরুদ্দেশ হওয়ার পথে। টাঙ্গাইল শহরের পাঁচআনী বাজারের মিষ্টি পট্টিতে টাঙ্গাইলের প্রসিদ্ধ চমচম পাওয়া গেলেও খোদ পোড়াবাড়িতে অস্তিত্ব হারিয়েছে অনেক আগেই। কালের বিবর্তনে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে এখন মাত্র ৮-১০টি বাড়িতে চমচম তৈরি করা হয়। ইতোমধ্যে চমচম তৈরির বিখ্যাত কয়েকটি পরিবার ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারের ভৌগলিক নিদের্শক ইউনিট ভৌগলিক নিদের্শক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন ২০১৩ অনুয়ায়ী টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
সরেজমিনে টাঙ্গাইল শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে পোড়াবাড়িতে পৌঁছি ইজিবাইকে চেপে। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জন্মস্থান সন্তোষ হয়ে দুইপাশের অপরূপ দৃশ্যাবলী দেখতে দেখতে পৌঁছাই পোড়াবাড়িতে।
ধলেশ্বরীর শাখা নদী এ্যালনজানীর বামতীর ঘেঁষে সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি ইউনিয়ন তথা পোড়াবাড়ি গ্রাম। পোড়াবাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার একটি ছোট্ট গ্রাম হলেও ধলেশ্বরী নদীর তীরে গ্রামটি অবস্থিত হওয়ায় এর চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য যে কাউকেই টানবে। তবে পোড়াবাড়ি বাজারে মিষ্টির দোকান টিকে রয়েছে মাত্র ৪টি।
অন্যদিকে বেশি দুধের আশায় বিভিন্ন ধরনের বিদেশি গরু এখন পালন করেন স্থানীয় খামারিরা। ফলে দুধের সেই স্বাদও নেই। তারপরও প্রতিদিন পোড়াবাড়িতে দুধের বাজার বসে। ইতোপূর্বে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ মণ দুধ বিক্রি হলেও এখন তা কমে গিয়ে ১০০ মণে দাঁড়িয়েছে। দাম ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ঘোযরা এ বাজার থেকে গরুর খাঁটি দুধ কিনে নিয়ে যায় মিষ্টি তৈরি করার জন্য কারখানাগুলোতে।
ত্রিশ দশকের শেষের দিকে আসামের রামেন্দ্র ঠাকুর, তীর্থবাসী ঠাকুর টাঙ্গাইল শহরের পাঁচআনী বাজারে মিষ্টি তৈরি ও ব্যবসা শুরু করেন। এরপর থেকেই টাঙ্গাইল শহরের পাঁচআনী বাজার ‘মিষ্টি পট্টী’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পোড়াবাড়ি গ্রামের গোড়াপত্তনের পেছনে মুঘল সুবেদার ইসলাম খাঁ নিয়োজিত শাসক পীর শাহজামানের কৃতিত্ব ছিল। ১৬০৮ থেকে ১৬১৩ সালের মধ্যে ইসলাম খাঁ কাগমারী পরগনার শাসনভার শাহ জামানের ওপর অর্পণ করেছিলেন। সে সময় চারাবাড়ীর গ্রামের দক্ষিণ অংশে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাজার ও বসতবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে ওই এলাকাকে পোড়াবাড়ি বলা হত।
১৯৬০ সালে তৎকালীন টাঙ্গাইল মহকুমার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হলে ঢাকা-টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহসহ দেশের অন্যসব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির ফলে চমচমের সুখ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও জানা যায়, এ দেশের বহু বিখ্যাত ব্যক্তির প্রিয় খাদ্যের তালিকায় ছিল পোড়াবাড়ির চমচম। এদের মধ্যে রয়েছেন- শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, যাদু সম্রাট পিসি সরকার, নবাব আলী চৌধুরী, জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নী, প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ, প্রমথ নাথ চৌধুরী প্রমুখ।
পোড়াবাড়ির মিষ্টি ব্যবসায়ীদের মধ্যে বর্তমানে খোকা ঘোষ ও গোপাল চন্দ্র দাসের নাম উল্লেখযোগ্য। তবে বর্তমানে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টি শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করছে জয় কালী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, গোপাল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ও গৌর ঘোষ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। এছাড়াও পাঁচআনি বাজারে অর্ধশত মিষ্টির দোকান রয়েছে।
আর এ চমচম এশিয়ার মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, চায়না ও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ কানাডা ইত্যাদি দেশে। আর মধ্যপাচে, দুবাই, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে অহরহ।
পোড়াবাড়ির চমচম তৈরির বয়োবৃদ্ধ কারিগররা জানান, তাদের পূর্ব-পুরুষের আমল থেকে এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন। ছোটবেলায় তারা এক হাড়ি দুধের দাম দুপয়সা থেকে ৪ পয়সায় বেচাকেনা করত। চিনি পাওয়া যেত ৩ আনা থেকে ৫ আনা সের দরে। আর চমচম বিক্রি হতো ৬ আনা থেকে ৮ আনা সের দরে। বর্তমানে পোড়াবাড়িতে ৪টি ও চারাবাড়ীতে ৫টি মিষ্টির দোকান রয়েছে।
মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের কিছু আগে ষাটের দশকে পোড়াবাড়ির প্রসিদ্ধ চমচমের দাম ছিল সের প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা। টাঙ্গাইলের প্রসিদ্ধ চমচম তৈরি ও বিক্রির সাথে জড়িতরা এ শিল্পকে ধরে রাখতে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু অতি মুনাফালোভী কতিপয় মিষ্টি ব্যবসায়ীর কারণে টাঙ্গাইলের প্রসিদ্ধ চমচম ঐতিহ্য হারিয়ে অস্তিত্ব হারানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁচেছে।
জেলা হোটেল রেস্তোরাঁ ও মিষ্টির দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও জয় কালী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এর স্বত্বাধিকারী স্বপন ঘোষ জানান, আমার প্রতিষ্ঠান জয় কালী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার দীর্ঘ ৮৫ বছর ধরে মিষ্টির স্বাদ ও গুণগত মান বজায় রেখে সততা ও নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। দেশের বাইরেও চাহিদা বাড়ছে ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের চমচমের।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সিলেটে এসেছেন। তবে তার এই সফর রাজনৈতিক নয় বলে জানিয়েছেন সিলেট বিএনপির নেতারা। তিনি গুমবিষয়ক তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নিতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় সিলেট বিএনপির নেতারা তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হন। বিমানবন্দর থেকে তিনি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল স্থলবন্দরে যান। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমেদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, দলীয় কোনো কর্মসূচিতে নয়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আওয়ামী লীগ আমলে গুম হওয়ার ঘটনায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গুম কমিশনের উদ্যোগে করা তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নিতে এসেছেন। এ সময় তিনি ২০১৫ সালে তার গুম হওয়ার ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন।
আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদকে চোখ বেঁধে কাদামাটি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়া হয়েছিল। একপর্যায়ে তাকে সিঁড়ি বেয়ে কোনো উঁচু জায়গায় উঠিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ইংরেজিতে ও হিন্দি ভাষায় কথা বলেছিলেন। সেই বিষয়গুলো তিনি জানিয়েছেন। এসব স্মৃতিচারণার পাশাপাশি তিনি সিলেটের দলীয় নেতা-কর্মী এবং দলের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এর বাইরে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে তিনি অংশ নেননি। সন্ধ্যায় বিমানযোগে তার ঢাকার উদ্দেশে ফিরে যাওয়ার কথা আছে।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিনকে তুলে নেওয়া হয় বলে তখন অভিযোগ করেছিলেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমদ। অন্যদিকে তখন বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। তখন সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
একই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে সালাহউদ্দিনকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। ভারতীয় পুলিশের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সালাহউদ্দিন শিলংয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করার সময় লোকজনের ফোন পেয়ে তাকে আটক করা হয়। সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন। আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৮ মে সালাহউদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য আসাম রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান। দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট সালাহউদ্দিন দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পান। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন। গত ৩ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আমরা চাই। তবে সেটা সমতার ভিত্তিতে, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে।
গতকাল শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ. স. ম হান্নান শাহের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যারা আমাদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে তারা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারত সবসময় চেষ্টা করেছে কী করে আমাদের বিপদে ফেলা যায়। পানির হিস্যা আমাদের দেয় নাই, তিস্তার হিস্যা পাই নাই, ফারাক্কার ন্যায্য হিস্যা আমরা পাই নাই।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সদস্যদেরকে নির্বাচনি মাঠে নেমে যাওয়ার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, আপনারা মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত হবেন না। চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিএনপিকে কাইত করার জন্য, ঘায়েল করার জন্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, শান্তিতে নোবেল লরিয়েট অধ্যাপক ইউনূস, বিশ্ববাসী যাকে সম্মান করে, তাকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি যাতে একটা নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলী গ্রহণ করে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন। তিনি বলেন, উপদেষ্টামণ্ডলীর কেউ কেউ বিভিন্ন দলের জন্য পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে অভিযোগ আসছে। আমরা এটা শুনতে চাই না, বাংলাদেশের মানুষ এটা শুনতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা চায় এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে হবে না, বিএনপি সংস্কারের জন্ম দেয়। ৩১ দফার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে আশা জাগিয়ে তুলছি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সভা হয়। জেলা কমিটির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুল ও রিয়াজুল হান্নানসহ স্থানীয় নেতারা।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার চাপাতলা গ্রামের খালের পানিতে গোসলের সময় এক সাথে পানিতে ডুবে একই পরিবারের তিন কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এলাকায় শোকের মাতম চলছে।
মারা যাওয়া শিশুরা হলো মহম্মদপুর চাপাতলা গ্রামের তিন সহোদর আনারুলের মেয়ে তারিন (৯), সাজ্জাদের মেয়ে সিনথিয়া (৮) ও মো: তরীকুলের মেয়ে তানহা (৯) বছর।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন জানান, শনিবার দুপুরে গোসলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে শিশু তিনটি বেরিয়ে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে চাপাতলা খালের পানিতে শিশু তিনটি গোসল করতে নামে। খালে প্রচন্ড গভীর ছিল এবং পানিতে প্রচুর স্রোত থাকায় তারা একে একে পানিতে ডুবে যায় । পানিতে পাট ধোয়ার কাজে ব্যাস্ত থাকা কয়েকজন হঠাৎ জানতে পারে একটি বাচ্চা পানিতে ডুবে গেছে । পরে তারা তাকে খুজে পায় এবং আরও জানতে পারে ২টি বাচ্চাকেউ পাওয়া যাচ্ছেনা। এর পর লোকজন পানিতে নেমে ৩টি শিশুকেই উদ্ধার করেন। দ্রুত তাদের মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরএমও ডা. আসাদুর রহমান তিনটি শিশুকেই মৃত ঘোষনা করেন।
স্থানীয় ও শিশুদের প্রতিবেশীরা বলেন, শিশু তিনটি সাতার জানতো তবে পানিতে প্রচন্ড স্রোত থাকায় এবং গভীরতা বেশি হওয়ায় তারা পানিতে ডুবে যায় এবং মারা যায় । ঘটনাটি নিয়ে মুহুর্তেই এলাকায় ও পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি জেনেছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পেছনে কারও কোনো হাত না থাকলে এবং পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের দলাগাঁও গ্রামে এক ভিক্ষুকের মৃত্যুর পর তার ঘর থেকে মিলেছে এক বস্তা ভর্তি টাকা! এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নাসির মিয়া (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৯ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরের দিন তার পরিবারের সদস্যরা ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি বস্তা দেখতে পান। কৌতূহলবশত বস্তাটি খুললে দেখা যায়, ভেতরে গুচ্ছ গুচ্ছ টাকাভর্তি নোট। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের উপস্থিতিতে টাকা গুনে দেখা যায়, মোট ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা রয়েছে বস্তাটিতে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ কেউ মনে করছেন, নাসির মিয়া জীবনের বহু বছর ধরে ভিক্ষা ও মানুষের দেয়া সাহায্যের টাকা অল্প অল্প করে জমিয়ে রেখেছিলেন। আবার কেউ কেউ ধারণা করছেন, তিনি হয়তো কাউকে বিশ্বাস করতে না পেরে সেই টাকাগুলো ঘরেই লুকিয়ে রেখেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নাসির মিয়া ছিলেন অত্যন্ত মিতব্যয়ী ও সৎ মানুষ। কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এত টাকা তিনি ঘরে রেখে গেছেন, অথচ কেউ জানত না!
বহরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘটনাটি সত্যি এবং এটি পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। কেউই বিশ্বাস করতে পারছে না, একজন ভিক্ষুকের ঘরে এত টাকা থাকতে পারে!
ঘটনাটি এখন দলাগাঁও গ্রামসহ পুরো মাধবপুরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।