রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
২৭ আশ্বিন ১৪৩২

ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলা থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২৫ ২০:০৭

শ্রমিক গ্রেপ্তার ও বাস বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলা থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। রোববার ভোর থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার সব রুটে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

অনেকে আগেই টিকিট কেটে রাখলেও নির্ধারিত সময়ে বাস না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই ভোরে বাসস্ট্যান্ডে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বিকল্প যানবাহনের খোঁজে ছুটছেন।

জানা যায়, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান গত শুক্রবার রাতে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিকবার দুঃখ প্রকাশ করার পরেও অরুণ ঝন্টু তার প্রতি অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেন। এরপর রাত ৯টা থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।


দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড টিকা দেওয়া শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশে প্রথমবারের মতো রোববার থেকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। রোববার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয় রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা কেন্দ্র থেকে। সরকার প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে এই টিকা দেবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এই টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। মাসব্যাপী এই টিকা কর্মসূচি চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। দেশে টাইফয়েডের টিকার এটাই প্রথম ক্যাম্পেইন। টিকাটি তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সরকার এই টিকা পেয়েছে টিকাবিষয়ক আন্তর্জাতিক মঞ্চ গ্যাভির কাছ থেকে। দেশে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হওয়ার খবর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো;

ফেনী প্রতিনিধি জানান: ফেনীতে টাইফয়েড টিকার ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন রোববার সকালে ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।

ফেনী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম মো. বাতেন বেলুন উড়িয়ে এ টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। জেলায় ৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৩৭ শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, ফেনীতে টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন ৯ মাস হতে ১৫ বছর বয়সি শিশুদের রোববার থেকে প্রতি কর্মদিবসে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ১১০৫টি কেন্দ্রে স্বাস্থ্য বিভাগ ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থার সহযোগিতায় এই টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া টিকা প্রদানের লক্ষ্যে vax epi.gov.bd এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন চলমান আছে।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রুবাইয়াত বিন করিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন, ফেনী পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোস্তাফিজ রহমান চৌধুরী, ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ফেনী নাজমুস সাকিব, ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহী উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা কান্তা, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম, সদর উপজেলা মাধ্যমিক সুপারভাইজার কামরুন নাহার, ফেনী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামছুদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. কৃঞ্চপদ সাহা, ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াছিন আরাফাত।

সাড়ে ৯ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দেবে চসিক: মেয়র।

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান : শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দিবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। পর্যায়ক্রমে এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

রোববার সকালে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। টিকা ক্যাম্পেইন উপলক্ষে নগরীর চন্দনপুরা এলাকার গুল-এজার-বেগম মুসলিম সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ এবং প্রবর্তক মোড়ের আইয়ুব বাচ্চু চত্বরে পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রায় দেড় হাজার টাকার এই টিকা আমরা বিনামূল্যে প্রদান করছি। এটি চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো একটি বৃহৎ জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ। শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করতে হবে।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, টাইফয়েড কেবল স্কুলপড়ুয়া শিশুর জন্য নয়, স্কুলবহির্ভূত শিশুরও হতে পারে। তাই কোনো শিশুকে বাদ দেওয়া যাবে না। আমাদের লক্ষ্য, চট্টগ্রামের প্রতিটি শিশু সুস্থ থাকুক।’

টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, ডা. মনিরুল ইসলাম রুবেল, ইউনিসেফ প্রতিনিধি ডা. সরোয়ার আলম প্রমুখ।

চসিক স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার শিশুকে এই টিকার আওতায় আনা হবে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৩১ হাজার স্কুল শিক্ষার্থী এবং প্রায় ৩ লাখ স্কুলবহির্ভূত শিশু। চসিক এলাকাজুড়ে ১,৫৪৬টি স্কুল ও ৭৮৩টি আউটরিচ সাইটে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। স্কুল পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এবং কমিউনিটি পর্যায়ে আগামী ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।’

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান: যশোরের কেশবপুরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্ধোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার আয়োজনে পৌর শহরের সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার মধ্যেদিয়ে ওই কর্মসূচির উদ্ধোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রেকসোনা খাতুন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আলমগীর হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহম্মেদ, সমাজসেবা অফিসার রোকনুজ্জামান, আর, এম,ও ডা. সমরেশ কুমার দত্ত, ফোকাল পারসন ডা. মো. তরিকুল ইসলাম ও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ইসমত আরা প্রমুখ। ৯ মাসের শিশু থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের টাইফয়েড টিকাদানের আওতায় আনা হয়েছে। এর আওতায় কেশবপুর উপজেলায় ৬৯ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। ১২ আক্টোবর শুরু করে ১৮ কর্মদিবস শিশুদের টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১০ কর্মদিবস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবং ৮ কর্মদিবস কমিউনিটি ক্লিনিকে টিকা দেওয়া হবে।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় টাইফয়েড ঠিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকালে পৌর শহরের রাবেয়া সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে ঠিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন টাইফয়েড রোগ থেকে নিরাময়ের জন্য সরকার শিশুদের সুরক্ষায় মাসব্যাপী টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ টিকার কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। তিনি অভিভাবকদের তাদের শিশুদের বিনামূল্যে এ টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাক্তার জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমি সুপারভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. খোরশেদ আলম, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম প্রমুখ।

মইনুল হক মৃধা, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে জানান: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে টাইফয়েড ভ্যাকসিন (টিসিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে টাইফয়েড টিকার উদ্বোধন করেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মারুফ হাসান।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ড. মো. শরিফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার ড. মো. রুহুল আমিন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. সুলতান উদ্দিন আহমেদ, মো. চানমিয়া, স্বাস্থ্য সহকারী (টিকাদান) মো. সবুজ মোল্লাসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও কেন্দ্রে ৯-১৫ বছরের শিশুদের ৩৭ হাজার ৯৯৫ জনের মাঝে এ টিকা প্রদান করা হবে। আজ (রোববার) উপজেলার দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৫৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে এ টিকা প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. মো. মারুফ হাসান তার বক্তব্যে বলেন, কার্যকর টিকা আবিষ্কারের পরে অনেক রোগ পৃথিবী থেকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। অতীতে টিকাদান কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের ইপিআই কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী সবসময় প্রসংশিত হয়েছে।

রোববার থেকে শুরু হওয়া টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনও সফল করার বিকল্প নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আজকের সুস্থ শিশু মানেই আগামীর সুস্থ প্রজন্ম ও ভবিষ্যতের দক্ষ নাগরিক। শিশুদের লেখাপড়া- খেলাধুলায় সফল হওয়ার জন্য সুস্থতার বিকল্প নেই। যে সকল শিশু ইতোমধ্যে টিকা পেতে রেজিস্ট্রেশন করেছে তাদের সঠিকভাবে টিকা দিতে হবে।

একইসাথে, রেজিস্ট্রেশন না করা শিশুদেরও রেজিস্ট্রেশন করিয়ে টিকার আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। টাইফয়েড টিকার উল্লেখযোগ্য কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই এবং টিকাটি হালাল সনদপ্রাপ্ত।

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান: চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় ইপিআই কর্মসূচির আওতায় টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় বেঙ্গুরা কে.বি.কে.আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান, ডা. নির্গাত জাবীন, ডা. রাজশ্রী, ডা. তোফায়েল আহমদ, ডা. মাসুদুল আলম, ডা. শারমিন আকতার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুমি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই ক্যাম্পেইনে উপজেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি মোট ৭২ হাজার ৬৪৩ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৭৬টি কেন্দ্রে ৫২ হাজার ৩৮৭ জন এবং কমিউনিটির ২১১টি কেন্দ্রে ২০ হাজার ২৫৬ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা কার্যক্রম চলবে ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত, আর কমিউনিটি কেন্দ্রে ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান: সারাদেশের ন্যায় নওগাঁতেও শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের চক এনায়েত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল। অনুষ্ঠানে শিশুকে টিকা প্রদানের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করা হয়।

সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক টিএমএ মমিন, রংপুর মেডিকেল কলেজের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান আলাল, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক গোলাম আজম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আকন্দ, জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাদৎ হোসেন, নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জানানো হয় নওগাঁ জেলায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৭৯৫ জন শিশু ও কিশোরকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্য রয়েছে। এপর্যন্ত অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ১৮২ জন। শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন টিকাকেন্দ্র ও পর্যায়ক্রমে কমিউনিটি পর্যায়ে ১৮ দিন এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান: সারাদেশের মতো গাজীপুরের কালীগঞ্জেও শিশুদের টাইফয়েড রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে মাসব্যাপী জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সকল শিশুকে বিনামূল্যে একটি করে ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। রোববার সকালে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে স্থাপিত টিকাদান কেন্দ্রে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.টি.এম কামরুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও এ.টি.এম কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। টাইফয়েডের মতো মারাত্মক পানিবাহিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে এই টিকাদান কর্মসূচি এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’ তিনি এই মহৎ উদ্যোগ সফল করতে স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। সকল অভিভাবককে নির্ধারিত সময়ে তাদের সন্তানদের টিকাকেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রিজওয়ানা রশীদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। একটি মাত্র ডোজ টিকা শিশুদের এই রোগের গুরুতর প্রভাব থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দিতে পারে। এই টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং কার্যকর।’ তিনি আরও জানান, মাসব্যাপী এই ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। কোনো যোগ্য শিশু যেন এই টিকার আওতার বাইরে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগ বদ্ধপরিকর।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। এই কর্মসূচি কালীগঞ্জের শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং টাইফয়েডজনিত অসুস্থতা ও শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর থেকে জানান: ফরিদপুরে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকালে সিভিল সার্জন অফিসের উদ্যোগে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে এই কর্মসুচির উদ্বোধন করেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা।

পরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের টাইফয়েডের টিকা প্রদান করে টিকাদানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা।

ফরিদপুর সিভিল সার্জন ড. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সুস্মিতা সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিস ইসরাত জাহান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ ঘোষাল, জেলা তথ্য অফিসার মোজাম্মেল হোসেন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, ফরিদপুর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হক, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইকবাল হাসান সেনেটারি ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, ‘শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ও সময়োপযোগী। ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে একটি শিশুও টিকার আওতার বাইরে না থাকে।’

শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা থেকে জানান: মাগুরায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ -এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় মাগুরা পিটিআই স্কুল প্রাঙ্গণে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ড. মো. শামীম কবির।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিবুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আফজাল হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আলমগীর কবীর, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. মো. মহসিন উদ্দিন ফকির, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. সুরভী আক্তার, মাগুরা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল হাই এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

বক্তারা বলেন, টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে জেলার সব শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষার আওতায় আনা হবে।

দেশব্যাপী শুরু হওয়া এই টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। যেখানে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সকল শিশুকে টিকার আওতায় আনা হবে।

এ বছর মাগুরা জেলার চারটি উপজেলায় মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭৬ জন শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ৩টি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হবে।

ক্যাম্পেইন সফল করতে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

রংপুর ব্যুরো জানান: রংপুরে সাড়ে ৮ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। টিকা প্রদান কার্যক্রমের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। রোববার সকালে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহা. আশরাফুল ইসলাম। পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কেএম জালাল উদ্দিন আকবরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা, জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইম, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান ইবনে তাজ। এছাড়া টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এবিএম আবু হানিফ, অতিরিক্ত সচিব হুজুর আলী, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ড. গাওসুল আজম, উপপরিচালক ড. ওয়াজেদ আলী, ইউনিসেফ প্রধান তৌফিক আহমেদ।

উদ্বোধনী দিনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণ করেন। কোনো ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়াই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিনামূল্যে দ্রুততম সময়ে টিকা গ্রহণ করতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান, মেহেজাবিন ইসলাম, মৌমিতা সরকারসহ অন্যরা বলেন, বাসায় অনলাইনে টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছি। আমরা টিকা গ্রহণ নিয়ে প্রথমে অনেক ভয় পেয়েছিলাম। স্কুলে এসে দ্রুত টিকা নিতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। কোনা ধরনের ব্যথা হয় না। এছাড়া কেউ যদি কোনো কারণে অসুস্থ্য হয়ে যায়, সে জন্য রংপুর সিটি করপোরেশনের অ্যাম্বুলেন্সসহ ডাক্তার রয়েছে। যে সকল বন্ধুরা এখনো টিকা গ্রহণ করেনি, আমরা তাদের দ্রুত টিকা নিয়ে সুস্থ্য থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান ইবনে তাজ বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনে দুই লাখের বেশি ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী ও টিকাপ্রদানকারীরা কাজ করছেন। নির্বিঘ্নে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমি আহ্বান জানাব, নিবন্ধনের মাধ্যমে যেন টিকা গ্রহণ করা হয়। তাহলে পরবর্তীতে বিদেশ ভ্রমণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে টাইফয়েড টিকা প্রদানের তথ্য কাজে লাগবে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রমকে উৎসবমুখর করতে বিভিন্ন স্কুলে শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে টিকা নিয়েছে। নির্ধারিত বয়সের সকল শিশু যেন টিকা পায় সে লক্ষ্যে নিবন্ধিত কিংবা অনিবন্ধিত শিশুদেরও টিকা দেওয়া হচ্ছে। নগরীতে মাইকিং, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বড় বড় বেলুন ওড়ানো, ট্রাকের মাধ্যমে গম্ভীরার আয়োজন করে প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি করোনার মতো আমরা টাইফয়েড টিকাতেও সাফল্য অর্জন করব। এদিকে রংপুর সদর উপজেলার ধাপেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ড. শাহীন সুলতানাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় স্কুল পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪০২ জন ও কমিউনিটি পর্যায়ে ২ লাখ ৯ হাজার ৪৫২ জন শিশুকে এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে ২ লাখ ১০ হাজার ৭১৯ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।

নাজমুল হাসান, নাটোর জানান: নাটোরে আনুষ্ঠানিকভাবে টাইফয়েডের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের এই টিকা প্রদানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।

সিভিল সার্জন ড. মুক্তাদির আরেফীন জানান, ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় নিধার্রিত বয়সি শিশুদের মধ্যে এক হাজার ৫৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪১ জন শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হবে। এছাড়া আগামী ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকের এক হাজার ৭৫২টি টিকাদান কেন্দ্রে আরও এক লাখ ৩০ হাজার ৫৪১ জন শিশুকে টিকা প্রদান করা হবে। জেলার মোট চার লাখ ২৯ হাজার ৮৮২ জনের মধ্যে এক লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৭ জন শিশু এই টিকা পাবে।

নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে টাইফয়েড টিকা গ্রহণ কার্যক্রম চালু আছে। ইতোমধ্যে সার্কভুক্ত পাকিস্তান এবং নেপালে সরকারি পর্যায়ে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। তিন হাজার তিনশ টাকা মূল্যমানের এক একটি টিকা পরীক্ষিত এবং নিরাপদ বলে জানান সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক।

রুমা প্রতিনিধি জানান: দেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় শুরু হয়েছে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন–২০২৫’। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রুমা বাজার আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল হাসানের সভাপতিত্বে এতে

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান।

কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন- ইপিআই টেকনোলজিস্ট চচমং মারমা, পরিসংখ্যানবিদ উথোয়াইপ্রু খেয়াং ও রুমা বাজার আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক গর্ডেন ত্রিপুরাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

প্রথম দিনে বিদ্যালয়টিতে ৪৫৬ জন শিক্ষার্থীকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হয়।

এই কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি সকল শিশু ও প্রাক–প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডোজ টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রথম পর্যায়ে ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ১২টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই টাইফয়েদ টিকা একটি করে ডোজ দেওয়া হবে। বিদ্যালয়ে পর্যায়ে ৩৫৬২ জন। আর কমিউনিটি পর্যায়ে এক নভেম্বর থেকে ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর মতে ২১৮৫ জনকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে নিবন্ধিত হয়েছে-৪১৮১জন।

যা বান্দরবান পার্বত্য জেলা ৭টি উপজেলার মধ্যে রুমো উপজেলা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। টিকাদানের অর্জিত নিবন্ধিত ৭২.০৮ বলে পরিসংখ্যানবিদ উথোয়াইপ্রু খেয়াং জানিয়েছেন।


মেঘনায় ছিনতাই হওয়া সারবোঝাই কার্গো জাহাজ নবীনগরে জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

মেঘনা নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা সারসহ ছিনতাই হওয়া একটি বাল্কহেড থেকে সার জব্দ করেছে পুলিশ। গত শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাজার এলাকা থেকে বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করা হয়নি।

নৌপুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ৭ অক্টোবর মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা ডিএপি সার নিয়ে একটি বাল্কহেড সুনামগঞ্জে রওনা করে। এতে সার ডিলারের একজন প্রতিনিধি এবং কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন। ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মানিকনগরে সারবোঝাই বাল্কহেডটি যাত্রাবিরতি করে। পরদিনও ইঞ্জিন সমস্যার কারণে বাল্কহেডটি প্রথমে বন্ধ রাখা হয়।

পরে বাল্কহেডটি রওনা দিলে কিছু দূর যাওয়ার পর একটি ট্রলার এসে বাল্কহেডটিতে দুজন ওঠে। তারপর ডিলারের প্রতিনিধিসহ শ্রমিকদের ট্রলারে উঠিয়ে নেয়। ট্রলারের সঙ্গে বাল্কহেডটি বেঁধে ঘুরতে থাকে। পরদিন ১০ অক্টোবর ডিলারের প্রতিনিধিসহ অন্যান্যের নামিয়ে সারবোঝাই বাল্কহেডটি নিয়ে যায়। বিষয়টি অবগত করলে নৌপুলিশ অভিযান শুরু করে। পরে নবীনগরের কাইতলা এলাকায় গত শনিবার রাতে বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়।

তিনি আরও জানান, রোববার সকাল থেকে সারের বস্তাগুলো গণনা চলছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো আটক করা যায়নি। তাদের আটকে অভিযান চলছে।

নৌপুলিশের তথ্যানুযায়ী, অভিযানে প্রায় ৯১ লাখ টাকার সরকারি ডিএপি সার উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি সার উদ্ধারের পাশাপাশি ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


ইবি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আটক, থানায় সোপর্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবন সংলগ্ন একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাকে ইবি থানায় সোপর্দ করে।

আটকের সময় শিক্ষার্থীরা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা—এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

আটক হওয়া শিক্ষার্থীর নাম হুসাইন তুষার। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহসম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে সহপাঠীদের হয়রানিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নূর উদ্দীন বলেন, স্যারদের কে আমরা জিজ্ঞেস করি কেন তাদের সেল্টার দেওয়া হয় বা কিভাবে সাহস পায়। এসব ঘটনা ঘটার পেছনে কারণ আমাদের ভিসি স্যার। যিনি কয়েকদিন আগে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বলেছিলেন, 'কে ছাত্রলীগ কে ছাত্রদল এসব আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের কথা ছেলেটা মেধাবী কিনা।' এ কথার মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডে যে ছাত্রলীগের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বা ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এজন্য ছাত্রলীগের কর্মীরা একটু সাহস দেখাতে পারছে। আমরা মনে করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দুর্বলতার কারণেই ছাত্রলীগ এ সুযোগটা পাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি, শুধু চিঠি এবং আশ্বাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।

ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ’শিক্ষার্থীরা তুষার নামে এক ছাত্রকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা। আপাততে থানার হেফাজতে আছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান জানান, ‘শিক্ষার্থীরা তুষারকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য বলে স্বীকার করেছে। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’


সাংবাদিকের ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া

সাংবাদিকের ছোট ভাইয়ের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

সাংবাদিক মাহবুব হোসেন সারমাত ও রনী আহম্মেদের ছোট ভাই জুয়েল খানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার কোটালীপাড়া সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কোটালীপাড়া সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কালাম তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন একটি দৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংবাদিক রনী আহম্মেদ, এফ এম মিরাজুল সৈকত, জিয়াদুল ইসলাম, হৃদয় হাওলাদার ও বুলবুল হোসেন প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত সকল সাংবাদিকরা প্রয়াত মাহবুব হোসেন সারমাত ও সাংবাদিক রনী আহম্মেদের ভাই জুয়েল খানের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার পরিবারের পাশে থেকে সকল ধরনের সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

উল্লেখ্য গত ১০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিক মাহবুব হোসেন সারমাত গোপালগঞ্জ শহরে তার নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ১১ অক্টোবর দুপুরে গোপালগঞ্জ আলীয়া মাদ্রাসায় মরহুমের জানাজা শেষে শহরের পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

অন্যদিকে সাংবাদিক রনী আহম্মেদের ভাই জুয়েল খান গত ৯ অক্টোবর রাতে ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ১০ অক্টোবর বেলা ১১টায় কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্বপাড়া গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।


জাতির সেফ এক্সিটের জন্য আমরা কাজ করছি: ফারুক-ই-আজম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল ব্যুরো

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বীর প্রতীক ফারুক-ই-আজম বলেছেন, দেশের বৈষম্য ও অধিকার বঞ্চনার আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সেইফ এক্সিট অত্যন্ত জরুরি। আমরা যুদ্ধ করেছি এই দেশের জন্য এখানেই আমাদের থাকতে হবে এবং বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। আমাদের লড়াই হবে এখানেই, দেশের মাটিতেই। রোববার দুপুরে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উদ্বোধন করা হয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্প। অনুষ্ঠানে ফারুক-ই-আজম বলেন, বৈষম্য ও অধিকার বঞ্চনার আগ্রাসন বন্ধ করতে হলে সবার জন্য সমান ও নিরাপদ সুযোগ থাকা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘দেশের শিশুদের টাইফয়েড থেকে সুরক্ষা দিতে আজ (রোববার) থেকে এক মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সরকার ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে টিকা দেবে। জন্ম সনদহীন শিশুরাও এই টিকার আওতায় থাকবে।

বরিশালে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি জনগণকে রোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

বরিশাল জেলায় টিকাদানের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ১ হাজার ১২৫ জন, বরিশাল মহানগরীতে ৯৭,৫৯০ জন। জেলার ৪,২৭৫টি কেন্দ্র থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ইতোমধ্যেই ১ লাখ ৫২,৭১৫ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন, যার মধ্যে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিশুরাও অন্তর্ভুক্ত।

প্রথম ডোজে ৪ থেকে ৭ বছর বয়সিদের জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এবং আগামী ১ থেকে ১৩ নভেম্বর সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। সরকারের লক্ষ্য, পথশিশুসহ কেউই এই সুযোগ থেকে বাদ যাবে না।


বৃদ্ধ মাকে ফেলে গেলেন সন্তানরা, পাশে দাঁড়ালো মুরাদনগর প্রশাসন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

‘মানুষ মানুষের জন্য’- এই কথার এক জীবন্ত উদাহরণ দেখা গেল কুমিল্লার মুরাদনগরে। সন্তানদের অবহেলায় পরিত্যক্ত এক অসহায় বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন ও এক মানবিক উদ্যোক্তা। গত শনিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কোম্পানীগঞ্জ বাজারে তখন দোকানপাট বন্ধের প্রস্তুতি চলছে। ঠিক সে সময়ই চোখে পড়ে এক উদভ্রান্ত বৃদ্ধা নারী- চোখে হতভম্বতা, কথায় জড়তা। কেউ জানে না তিনি কে, কোথা থেকে এসেছেন।

পরে জানা যায়, ওই নারীর নাম মমতাজ বেগম (৬০)। এলোমেলোভাবে কথা বলছিলেন, নিজের ঠিকানা ঠিকভাবে জানাতে পারছিলেন না।

এ সময় এগিয়ে আসেন কোম্পানীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও মানবিক ব্যক্তি ফেরদৌস রহমান। রাত প্রায় ১০টার দিকে তিনি বৃদ্ধাটিকে নিয়ে যান মুরাদনগর থানায়।

থানার কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে যোগাযোগ করেন উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সঙ্গে। কিন্তু অফিস বন্ধ থাকায় ফেরদৌস রহমান নিজেই ফোন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান-এর কাছে।

ইউএনও তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসারের তত্ত্বাবধানে মমতাজ বেগমকে ভর্তি করানো হয়।

একই সঙ্গে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসপাতালে একটি টিম পাঠান তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য। কিছুটা বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের পর চিকিৎসকের সহায়তায় জানা যায়, তিনি মমতাজ বেগম, স্বামী মৃত আয়াত আলী, বাড়ি বীরতলা গ্রাম, ইলিয়টগঞ্জ, দাউদকান্দি, কুমিল্লা।

পরবর্তীতে ইউএনও আবদুর রহমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খানকে হাসপাতালে পাঠান সার্বিক তদারকির জন্য। পাশাপাশি যোগাযোগ করা হয় দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের সঙ্গে। তার সহযোগিতায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে মমতাজ বেগমের পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়।

তবে সন্তানদের খবর দেওয়া হলেও তারা সেদিন রাতে হাসপাতালে আসেননি। শুধু জানিয়েছিলেন, সকালে আসব। রাত গভীর হয়, হাসপাতালের বিছানায় একা পড়ে থাকেন মমতাজ বেগম। পাশে ছিলেন এক নারী চৌকিদার।

যে মায়ের স্নেহে সন্তানরা মানুষ হয়েছে, আজ সেই মায়েরই পাশে কেউ নেই। তবু একা নন তিনি- কারণ পাশে আছে মানবিক মুরাদনগর প্রশাসন এবং কয়েকজন দয়ালু মানুষ, যারা প্রমাণ করেছেন, মানবতার চেয়ে বড় কিছু নেই।


জয়পুরহাটে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে করলার চাষ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে করলার চাষ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষকদের কাছে করলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ধান আর আলু প্রধান উপজেলার প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে নিজস্ব মেধা আর প্রযুক্তিতে করলা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এলাকার কয়েকশ কৃষক। ফলে ধান ও আলুর স্থান দখল করে নিয়েছে করলা চাষ। বিঘার পর বিঘা মাঠের জমিতে মাচায় ঝুলছে সবুজ করলা।

এ দৃশ্য ক্ষেতলাল উপজেলার হাটশহর, বাখরা, মুনঝাড়সহ কয়েকটি (কলিঙ্গা, ঘুগোইল, কুসুমশহর, আঁটিদাশড়া, কোনিয়াপাড়া) গ্রামের মাঠগুলোতে। এক সময় এখানকার দুই-এক জন কৃষক করলা চাষ করলেও এখন শতভাগ পরিবার কোনো না কোনোভাবে যুক্ত করলা চাষের সঙ্গে। বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মাটি, মানুষ আর প্রকৃতি কথা বলে করলা নিয়ে। মানুষ এই গ্রামগুলোকে চিনে এখন করলা গ্রাম নামে।

কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি, এছাড়া স্বল্প সময়ে এ ফসল উঠানো যায় বলে করলা চাষে দিন দিন ঝুঁকে পরছেন তারা। তা ছাড়া কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় কৃষকদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে বেশি উৎপাদনের পাশাপাশি এলাকায় করলা চাষে আরও সফলতা মিলবে।

সরেজমিনে জানা যায়, অধিকাংশ কৃষক বাণিজ্যিকভাবে করলা চাষ করে বদলে গেছে তাদের ভাগ্য। এখানকার উৎপাদিত করলা যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন এই গ্রামগুলোতে। একদিকে যেমন ফুটেছে কৃষকের মুখে হাসি। অন্যদিকে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার কৃষকদের।

শুধু তাই নয়, জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখানকার করলা গুণগত মানে বেশ ভালো হওয়ায় অন্য জেলায় এর চাহিদা অনেকটায় বেশি। আর এ কারণে ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এসব করলা বাজারজাত করতে স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকটি স্থানে করলার হাট।

উপজেলার হাটশহর গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে অন্য ফসলের চেয়ে করলার ফলন বেশি হয়ে থাকে। এতে সেচ খরচ যেমন কম তেমনি রোগবালাই আর পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।’

উপজেলার মুনঝাড় গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এক সময় অভাবের কারণে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটলেও করলা চাষে সফলতা আসায় এখন তারা অনেকটায় স্বাবলম্বী। বীজ, জৈবসার, বালাইনাশক, করলার মাঁচাসহ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে করলা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত করলা বিক্রি করা যায়।

উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘করলা রোপণের ২ মাসের মধ্যে করলা তোলা শুরু হয়। টানা ৫ মাস করলা তোলা যায়। আর করলার চাহিদা সারা বছরই থাকে।

অন্য ফসলের চেয়ে করলা চাষে লাভ বেশি। আর সে কারণেই করলা চাষে ঝুঁকছি। বর্তমানে প্রতি কেজি করলা প্রকারভেদে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।’

ঘুগইল গ্রামের কৃষক আব্দুল কাফি বলেন, ‘প্রতি বছর ১ থেকে দেড় বিঘা জমিতে করলা চাষ করি, এ বছর ২ বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন কম হলেও দামে খুশি কৃষক।’

আটি গ্রামের কৃষক সিরাজ বলেন, আমি প্রতি বছর ২ থেকে ৩ বিঘা জমিতে করলা চাষ করি কোনো সমস্যা হলে উপজেলা কৃষি অফিসে অবগত করলে কোনো প্রকার পরামর্শ না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করছেন।

কৃষকরা আরও বলছেন সরকারি প্রনোদনা সার বীজ বিতরণেও কৃষি অফিস বৈষম্য করছেন। অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার করলার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় করলা চাষ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে।


হেক্সাগার্ড রোভার উদ্ভাবক জিহাদের পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জহির রায়হান সোহাগ, চুয়াডাঙ্গা

প্রতিরক্ষা কাজে ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ উদ্ভাবন করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয়ী বাংলাদেশের গৌরব চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান জিহাদ। তার সাফল্যের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।

জিহাদের মেধাভিত্তিক উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান। গত শনিবার দুপুরে জিহাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দর্শনার পরানপুরে আসেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উপজেলার সদরের পরানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও নাসিমা খাতুনের ছেলে জাহিদ হাসান জিহাদ।

এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জাহিদ হাসান জিহাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তরুণ উদ্ভাবক জিহাদের প্রতি শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন আতিকুর রহমান রুমন। একই সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তার হাতে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন তিনি। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, ‘আমরা বিএনপি পরিবার-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম ও ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, জাতীয় প্রেসক্লাবের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য মাসুদ রানা লিটন ও মুস্তাকিম বিল্লাহ প্রমুখ।

এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবা ‘-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন বলেন, গণমাধ্যমে জিহাদের কৃতিত্বের খবর প্রচার হয়েছে। খবরের ফটোকার্ডটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসে। মেধাভিত্তিক উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে তার পাশে দাঁড়াতে আমাদের পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টিমকেও সহযোগিতা করেছিলাম। আমরা জিহাদের পাশে আছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও জিহাদের পাশে থাকবেন। আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করব। জিহাদের উপস্থাপনা বিচারকদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে।


কালিয়াকৈরে আরেক মদের আস্তানায় অভিযান, ৮ হাজার লিটার মদ বিনষ্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রোববার আরেকটি মদের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। এ সময় প্রায় ৮ হাজার চোলাই মদ উদ্ধার করে বিনষ্ট করা হয়েছে। এছাড়া একটি দেশীয় অস্ত্রসহ মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে আগেই পালিয়ে গেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। তবে যৌথবাহিনীর এমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গত বুধবার কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া এলাকায় একটি মদের আস্তানায় অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করে এবং পরে জনসম্মুখে সে মদ বিনষ্ট করা হয়। ওই সময় মদের আস্তানায় জড়িত থাকায় ছয়জনকে আটক করে যৌথবাহিনী। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় আটককৃত চারজনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও আটককৃত অপর দুই শিশুকে মোচলেকা নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার চারদিন পর রোববার সকালে ওই এলাকায় আবারো আরেকটি মদের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। ওই এলাকার শ্রীধাম চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে মদের আস্তানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ যৌথ অভিযান চালানো হয়।

এ অভিযান চালিয়ে ওই আস্তানা থেকে প্রায় ৮ হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। পরে জনসম্মুখে সে মদ বিনষ্ট করে যৌথবাহিনী। এছাড়াও একটি দেশীয় অস্ত্রসহ মদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী শ্রীধাম, অনিল ও শ্যামল মিলে দীর্ঘদিন ধরে ওই মদের আস্তানা চালিয়ে আসছিলেন। যৌথবাহিনীর অভিযানের খবর পেয়ে আগেই পালিয়ে গেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করে যৌথবাহিনীর এমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।


তালায় ব্যাতিক্রম উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এক ব্যতিক্রম উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। উপজেলার বালিয়াদহ গ্রামে দারুল আরকাম ফুরকানীয়া নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে এ উচ্ছ্বাস দেখা যায়। গত শনিবার দিনভর তারা বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ৮ নং মাগুরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জি এম শাহীন আলম, সাহাবাজ বিশ্বাস। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শাহিনুর বিশ্বাস, শেখ আশরাফুল ইসলাম, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সোহাগ মোড়ল প্রমুখ।

সকালে মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ লাফ, মোরগ লড়াই, উচ্চ লাফ, হাড়ি ভাঙা, ১০০ মিটার দৌড়, বিস্কুট খেলা, বালিশ খেলাসহ বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে বিকেলে আকাশি দল এবং সবুজ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় ট্রাইব্রেকারে সবুজ দলকে পরাজিত করে আকাশি দল। ইভেন্টে ১২৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ সহ অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। ইভেন্ট এবং প্রীতি ফুটবল খেলা পরিচালনা করেন স্থানীয় রেফারি সাহানাজ বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানটি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন, অর্থ মন্ত্রালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ মনিরুজ্জামানের ছেলে শেখ মাহিমুজ্জামান। শেখ মাহিমুজ্জামান মৃত. প্রফেসর শেখ ছানার উদ্দীনের প্রপৌত্র। তিনি ২০১৪ সালে ২৭শে জানুয়ারি মৃত্যু বরণ করেণ।

দারুল আরকাম ফুরকানীয়া নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নাইম গল্দার, মনিরা খাতুন ও আমেনা খাতুন বলেন, সকালে আমাদেরকে পটেটো চিপস, এবং কেক খেতে দেওয়া হয়। দুপুরের খাবারে ছিল সবজি, চিংড়ি মাছ, মাংস এবং দই। দিনভর খেলা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।

প্রধান শিক্ষক মাসুদুর জামান বলেন, দিনভর আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পেরে তারা উচ্ছ্বসিত। সাধারণত এ ধরনের খেলাধুলায় তারা অংশগ্রহণ করতে পারে না। যারা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানায়। সেই সাথে বিত্তবানদের কাছে এ সকল নিম্নবিত্ত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।


প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে শতভাগ ভাল হবে

কুমিল্লা সিভিল সার্জন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহম্মেদ বলেছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে শতভাগ ভাল হবে। গত শনিবার দুপুরে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের আয়োজনে কুমিল্লা ট্রমা সেন্টার মিলনায়তনে ব্রেস্ট ক্যান্সার অ্যাওয়ারনেস সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিভিল সার্জন এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, এই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী দেরি করলে স্টেজ পার হতে হতে এই হার ২২% চলে আসে। তাই আমাদেরকে সেই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। তাছাড়া স্তন ক্যান্সারের কোনো রোগী যদি টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে না পারে তাহলে তাকে সিভিল সার্জন অফিস থেকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশে দুই দশক ধরে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হলেও প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে স্ক্রিনিংসেবা এখনো যথাযথভাবে গড়ে ওঠেনি। প্রতিবছর কত নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং কতজন মারা যাচ্ছেন এর সঠিক তথ্য সরকারের কাছে নেই। ফলে বাংলাদেশকে এখনও আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিসংখ্যানে নির্ভর করতে হচ্ছে। এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজা মো. সারোয়ার আকবর।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও স্বাগত বক্তব্য দেন ট্রমা সেন্টারের প্রধান উপদেষ্টা মো. জহিরুল ইসলাম। এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রেস্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট ডা. কাজী ইশরাত জাহান, ময়নামতি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. কামরুল ইসলাম মামুন এবং কুমিল্লা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেস এর পরিচালক ডা. এম.এম. আরিফ হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. সফিউল আজম, প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. জয়দীপ দত্ত গুপ্ত, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি কুমিল্লার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন ভূইয়া, মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. সফি উল্লাসহ হসপিটালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।


আমতলীতে বিদ্যালয় ভবনে গরুর খামার!

লেখাপড়ার পরিবেশ বিপর্যয়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাসরিন সিপু, বরগুনা

বরগুনার আমতলীতে বিদ্যালয়ের ভবনের নিচতলায় গোয়াল ঘর তৈরি করে গরু ও মহিষ লালন-পালনের কারণে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরমভাবে দূষিত হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার প্রভাব খাটিয়ে ওই স্থানে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন দুর্গন্ধ ও বর্জ্যের মাঝে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ করে। গত তিন মাস ধরে ভবনের নিচতলায় শাহ আলম হাওলাদার পাঁচটি গরু এবং ফোরকান হাওলাদার তিনটি মহিষ লালন-পালন করছেন। এতে বিদ্যালয়ের চারপাশে বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে এবং স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিকবার নিষেধ করলেও অভিযুক্তরা তা মানছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোছা. নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের ভবনে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। এতে পুরো পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। বারবার বলার পরও তারা গোয়াল ঘর সরাচ্ছেন না। স্থানীয় সুশীল সমাজের সহায়তায় অনুরোধ করেছি, তবুও কোনো ফল হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের নিচে ৫টি গরু ও ৩টি মহিষ বাঁধা আছে। গোবর, খড়কুটা ও ঘাসে চারপাশ একাকার হয়ে আছে। পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীদের নাক চেপে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের মাঠেও বর্জ্যের স্তূপ দেখা গেছে, এতে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিল, সাদিয়া, সাব্বির ও মুসাদ্দিকা বলেন, গোয়াল ঘর থেকে এমন দুর্গন্ধ আসে যে ক্লাসে টেকা দায়। আমাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত গোয়াল ঘর সরানোর দাবি জানাচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত তিন মাস ধরে শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার বিদ্যালয় ভবনের নিচে গরু-মহিষ রাখছেন। এতে পুরো বিদ্যালয় এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গেছে। তারা দ্রুত গোয়াল ঘর অপসারণের দাবি জানান।

অভিযুক্ত শাহ আলম হাওলাদার স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে গোয়াল ঘর করা আমার ভুল হয়েছে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যেই গোয়াল ঘর সরিয়ে নেব।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমি আগে জানতাম না। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদি দ্রুত গোয়াল ঘর সরানো না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


banner close