থাইল্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পশুপালন অনুষদের ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থী ও শাহজালাল হলের আবাসিক ছাত্র জাকারিয়া হোসাইন সাঈদ দেশে ফিরে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জানা যায়, ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে তিনি ৫ আগস্ট থেকে থাইল্যান্ডে অবস্থান করছিলেন। গত ১৪ অক্টোবর সেখানে সড়ক দুর্ঘটনায় সাঈদসহ বাকৃবির আরো দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। পরে তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি হলে সাঈদকে দেশে নিয়ে আসা হয়।
দেশে ফেরার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার গভীর রাতে (প্রায় রাত ৩টা ৩০ মিনিটে) নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আজ আসরের নামাজের পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাকৃবির পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমীন বলেন, আমাদের সন্তানতুল্য এক ছেলে কে হারালাম। এই শোকের মুহূর্তে শান্তনা দিয়েও সহ্য করা যাচ্ছে না কারণ যে ক্ষতি হয়েছে টা অপূরণীয়। সাঈদের জানাজার নামাজ আজকে বাদ আসর দিগারকান্দা ফিশারিজ মোড়ে ঈদগায় অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আজকের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রেখেছি যেন সবাই জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।
জাকারিয়া হোসাইন সাঈদের মৃত্যুতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে গভীর শোক নেমে এসেছে। সহপাঠী, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়েছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উপকূল এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের দুর্যোগ মোকাবিলা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সুবিধাবঞ্চিত, অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে এগিয়ে এসেছে। দুঃস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষদের বিভিন্ন সময় মেডিকেল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে কোস্ট গার্ড।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ ২৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা হতে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত কোস্ট গার্ড বেইস ভোলা কর্তৃক ভোলার বোরহান উদ্দিন থানাধীন কোতবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়। উক্ত মেডিকেল ক্যাম্পেইনে ২৮৩ জন অসহায়, গরীব, দুঃস্থ ও শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ সামগ্রী প্রদান করা হয়।
একইসাথে সকাল ১১ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন কালিগঞ্জে অনিবন্ধিত ১০০ জেলেদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় মৎস্যজীবীগণ। মতবিনিময় সভায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ, মা ইলিশ রক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা ও মৎস্যজীবীদের সমস্যা এবং উত্তরণের পদক্ষেপ সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের জনসেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলার মধ্য পুংগলী গ্রামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার মধ্য পুংগলী গ্রামে হাজী গোষ্ঠী ও বাদশাহ গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়া নিয়ে সামনের চেয়ার নিয়ে বসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সেই পুরনো বিরোধের জের ধরে আজ সকালে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয় এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে আহত ২০ জনকে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে ফরিদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ফরিদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিউল আজম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখনো ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কোন পক্ষ থানায় এখনো অভিযোগ দেয়নি।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মো. নাইম হোসেনকে (২০) কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করেছে রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১ ও ১২)।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে র্যাব-১২ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃত নাইম হোসেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চর কামারখন্দ গ্রামের মো. রহমত আলীর ছেলে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় র্যাব-১২ ও র্যাব -১১ এর যৌথ অভিযানিক দল তিতাস থানার জিয়ারকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
র্যাব -১২ এর উপ অধিনায়ক মো. আহসান হাবিব বলেন, কিশোরী ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর থেকে নাইম পলাতক ছিল। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর কুমিল্লার তিতাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব সদস্যরা।
তিনি আরও বলেন, আসামি গ্রেফতারের জন্য আমরা শুরু থেকেই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলাম। শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। নাইমকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, কিশোরী সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানাধীন কর্ণসুতী দাখিল মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ৭ম শ্রেণির একজন ছাত্রী। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সে কর্ণসুতী দাখিল মাদ্রাসায় যায়। বিকালে মাদ্রাসা ছুটি হলেও বাড়িতে ফিরে না আসলে তার পরিবার কর্নসুতী দাখিল মাদ্রাসাসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়ী ও আশেপাশে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। খোঁজাখুজি করার সময় অজ্ঞাত একজন ব্যক্তি পরিবারকে ফোন দিয়ে জানায় যে, মেয়েটি সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সংবাদ পেয়ে পরিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌঁছে আশঙ্কাজনক দেখতে পেয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কিশোরী মেয়েটি মাদ্রাসা হতে কলম কেনার জন্য রাস্তা দিয়ে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় সিএনজি নিয়ে পূর্ব থেকে লুকিয়া থাকা কয়েকজন তার সামনে এসে দাঁড়ায় এবং মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক তাকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে দ্রুত গতিতে জামতৈল রেলগেটের দিকে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে উপজেলা সেন্ট্রাল পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে ডেরা ফাস্ট ফুড এ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে নিয়ে রেস্টুরেন্টের পূর্ব সাইডে ডান পার্শ্বের কেবিনে বসার লম্বা সোফার উপর মুখ চেপে ধরে মো. নাইম হোসেন জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন। ওই সময় তার সহযোগী বন্ধুরা রেস্টুরেন্টের ভিতরের গেটে পাহারা দেয় এবং কান্নাকাটি বাহির থেকে কেউ যেন শুনতে না পারে সে জন্য উচ্চস্বরে গান বাজায়।
খুলনায় ছুরিকাঘাতে ডলি বেগমকে (৪৫) হত্যার দায়ে তার স্বামী মো. নাজমুল হাসান মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে মহানগরীর লবণচরার ৪নং কাশেম সড়ক সবুজপল্লী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নাজমুল হাসান মোল্লা স্থানীয় রাজ্জাক মোল্লার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে স্বামী নাজমুল হাসান মোল্লা তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে ডলি বেগমকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। ডলি বেগমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে দেখেন তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে আছেন। তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ডলি বেগমের স্বামীকে প্রতিবেশীরা আটকে রেখে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
লবনচরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নাজমুল হাসান ছুরি দিয়ে তার স্ত্রী ডলি বেগমকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় নাজমুলকে এলাকাবাসী আটকে রেখে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। তাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিহতের মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
উদ্বেগজনক হারে সিরাজগঞ্জে বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা। জেলায় ২৫৫ জন পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। পরীক্ষার পর থেকে এ রোগে এপর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শঙ্কিত জেলার চিকিৎসকসহ সুশীল সমাজ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি সেন্টার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সিরাজগঞ্জে এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। তবে এবার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ৭৩ শতাংশই মাদকসেবী। ২০২০ সালে চারজন, ২০২১ সালে আটজন ২০২২ সালে এই রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৮১। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তুলনামূলক স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকলেও এবার তা বেড়েছে কয়েকগুণ।
হাসপাতালের এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সেলিং সেন্টারের কাউন্সেলর মাসুদ রানা জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা নিষিদ্ধ নেশা জাতীয় ইনজেকশনের মাধ্যমে এই রোগ বেশি ছাড়াচ্ছে। আক্রন্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের পাশাপাশি কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। জেলায় ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১৮৭ জন মাদকসেবী, সাধারণ ৩৫ জন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ২৯ জন এবং চারজন যৌনকর্মী। একবার টেস্টের পর যদি ফলাফল পজিটিভ হয়, তখন আমরা তাদেরকে এখানে আসতে বলি, কাউন্সেলিং করা হয়। এখানে মূলত আমরা আগের রিপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য রি-টেস্ট করে থাকি। সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা নিয়মিত বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা পেয়ে অনেকটাই ভালো রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার বলেন, সমাজের নিম্নআয়ের মানুষরাই বেশি ইনজেকটিভ ড্রাগ শেয়ারিং করে ব্যবহার করছেন। একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদকসেবন করায় রক্তের মাধ্যমে এটা ব্যাপকভাবে শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে শনাক্তের সিংহভাগই মাদকসেবী। আমরা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি মনোবল বাড়াতে কাউন্সেলিং করছি। তবে ইনজেকশনে ড্রাগ ব্যবহার কমাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অবৈধ নেশা জাতীয় ইনজেকশন বেচাকেনায় জড়িতদের আটকে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ২ বছরে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৯০০ অ্যাম্পুল ইনজেকশন ড্রাগ জব্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ময়মনসিংহে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ২০ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ১৯ বছরের আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনা ঘটেছে ২০ অক্টোবর দুপুরে। আবু সাঈদ হালুয়াঘাট উপজেলার খন্দকপাড়া গ্রামের মো. জয়নাল আবেদীনের ছেলে এবং হালুয়াঘাট থানায় লাশবাহক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ১৯ অক্টোবর, যখন ওই তরুণী হালুয়াঘাট উপজেলার ঘোষবেড় এলাকায় আত্মহত্যা করেন। পুলিশ তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। সেখানে মৃতের স্বজনরা অনুপস্থিত থাকায় লাশবাহক আবু সাঈদ ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।
ময়নাতদন্তে যৌনাঙ্গে তাজা বীর্য পাওয়া গেছে, যা ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক মো. জামাল মিয়া সূত্রের মাধ্যমে সত্যতা নিশ্চিত করে সোমবার আবু সাঈদকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শিবিরুল ইসলাম জানান, হালুয়াঘাট থানার এসআই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন। আদালতে আসামি অভিযোগ স্বীকার করে জবাবনবন্দি দিয়েছেন।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মাদরাসাছাত্র মো. আমির হামজা ওরফে হানজালাকে হত্যার দায়ে আরেক মাদরাসার ছাত্রকে (১৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ছাত্রের ব্যবহৃত একটি কাঁথার সূত্র ধরে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
ধারের ৫০ টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. আজম খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
হত্যাকাণ্ডে নিহত আমির হামজা আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। সে গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া নূরানী তালিমুল কুরআন মাদরাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল। গ্রেপ্তারকৃত কিশোরও (১৬) একই মাদরাসার ছাত্র।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আজম খান বলেন, ওই কিশোর প্রায়ই আমির হামজার কাছ থেকে টাকা ধার নিত। সর্বশেষ ৫০ টাকা ধার নেওয়ার পর অনেক দিন ধরে তা ফেরত দেয়নি। এদিকে আমির হামজা বারবার টাকা ফেরত চাইতে থাকে। এতে অভিযুক্ত কিশোর বিরক্ত হয়ে গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে হামজাকে বলে, সে বাড়ি থেকে টাকা এনে দেবে। এরপর একটি সাইকেলে করে আমির হামজাকে সঙ্গে নিয়ে যায়।
এএসপি আজম খান বলেন, ওই মাদরাসার পাশে একটি বাগান আছে। সে বাগান থেকে ওই কিশোরের বাড়ি প্রায় ৫০০ গজ দূরে। ওই বাগানে টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে দুই কিশোরের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হামজার গলা টিপে ধরে ওই কিশোর। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হামজা।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর সন্ধ্যা হয়ে গেলে ওই কিশোর মরদেহ বাগানে ফেলে রেখে মাদরাসায় ফিরে আসে। সন্ধ্যার হাজিরা দিয়ে মাদরাসা থেকে একটি কাঁথা নিয়ে আবার বাগানে যায় সে। এরপর নিজের বাড়ি থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তা এনে হামজার মরদেহ বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে সঙ্গে পাঁচটি ইট ভরে বাগানের পাশের পুকুরে ফেলে দেয়, যাতে সেটি পানিতে না ভাসে।
গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর ওই পুকুরে বস্তাটি ভেসে ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
এএসপি আজম খান বলেন, এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ছিল। এ হত্যা রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য পুলিশ চারটি আলাদা টিম গঠন করে। তদন্তে জানা যায়, আমির হামজা বিকেলে কারও সঙ্গে সাইকেলে উঠেছিল। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা কাঁথা ও ওই মাদরাসার কিশোরের ব্যবহৃত কাঁথা মিলে গেলে হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তবে এ হত্যার পেছনে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জালাল আলম বলেন, এ হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস বাদী হয়ে বুধবার আলফাডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বর্তমানে সে আলফাডাঙ্গা থানা হেফাজতে রয়েছে। ওই কিশোরকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জেলা সদরে স্থাপনের দাবিতে রাঙামাটিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার রাঙামাটি ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ও আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙামাটি ক্লাব অ্যাসোসিশনের আহ্বায়ক মাহাবুবুল বাসেত অপুর সভাপতিত্বে ও রফিক স্মৃতি ক্লাবের সভাপতি বেলাল হোসেন সাকুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপেন তালুকদার দিপু, প্রতিভাষ ক্লাবের সাধারণ সাইফুল ইসলাম শাকিল, ছদক ক্লাবের সভাপতি প্রীতিময় চাকমা, ব্রাদাস ক্লাবের আহ্বায়ক সদানন্দ চাকমাসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
ফুটবলে মারি চৌধুরী, আনুচিং মগিনি, বরুণ বিকাশ দেওয়ান, মনিকা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, রূপনা চাকমা এবং বক্সিংয়ে সুর কৃষ্ণ চাকমাসহ অনেকের সাফল্য প্রমাণ করে এই অঞ্চল সুপ্ত প্রতিভার ভাণ্ডার। তবে দুঃখজনকভাবে পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও পেশাদার প্রশিক্ষণের অভাবে অসংখ্য প্রতিভা বিকশিত হওয়ার আগেই হারিয়ে যাচ্ছে। রাঙামাটি সদরে বিকেএসপির আঞ্চলিক কেন্দ্র হলে তা জেলার ক্রীড়া ঐতিহ্যকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে বিকেএসপির আঞ্চলিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে, একটি কুচক্রী মহল তা বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। রাঙামাটি সদরের পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থে কোনো উপজেলায় এটি স্থাপন করা হলে এর মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তাই মানববন্ধনে বক্তারা বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জেলা সদরে স্থাপনের জোড় দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বিকেএসপি মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়।
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর কার্যক্রম, সক্ষমতা ও সমন্বয় প্রক্রিয়া অনুধাবন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে কুড়িগ্রামে। বুধবার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসকের স্বপ্নকুড়ি সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি সংস্থা ইএসডিও এবং হেলভেটাসের যৌথ উদ্যোগে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন ও যাচাইয়ের জন্য আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসাদুজ্জামান। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক তানভীর আহমেদ সরকার, জেলা তথ্য কর্মকর্তা শাহজাহান আলী, জেলা সমবায় কর্মকর্তা আতিউর রহমান, হেলভেটাসের মাহমুদুল হাসান ও আয়াতুল্লাহ আল মামুন এবং ইএসডিওর মশিউর রহমান ও আবু জাফর।
দিনব্যাপী সেমিনারে কুড়িগ্রাম জেলায় ঘন ঘন ও তীব্র দুর্যোগ বিশেষ করে বন্যা ও নদীভাঙনের- মুখোমুখি হয়ে জীবিকা হারাচ্ছে, ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ও গুরুতর সামাজিক-অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো দুর্যোগ প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালে হেলভেটাস বাংলাদেশের সহায়তায় একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। যার লক্ষ্য ছিল ডিএমসিগুলোর কার্যকারিতা মূল্যায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কৌশল নির্ধারণ করা।
সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা ফলাফলে কমিটিগুলোর বিদ্যমান শক্তি ও সীমাবদ্ধতা উভয়ই তুলে ধরা হয়।
এছাড়া বিদ্যমান জাতীয় দুর্যোগ তহবিল ও বরাদ্দ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, অঞ্চলভিত্তিকভাবে জরুরি তহবিল ব্যবহার করে সম্পদ সরবরাহ, ঘন ঘন ঘটিত দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ যা জীবিকায়নের অগ্রগতিকে বারবার বাধাগ্রস্ত করে- এবং সরকার ও এনজিওগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সেমিনারে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিসহ মিডিয়াকর্মীরা অংশ গ্রহণ করেন।
পটুয়াখালীর দুমকীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে কলেজশিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন কিশোরকে পৃথক আইনে সাজা দিয়েছেন আদালত। এদের মধ্যে দুই কিশোরকে ১৩ বছর করে, অন্যজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন এ রায় দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আল নোমান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত শিশু সংশোধনাগারে থাকবে। এরপর প্রচলিত আইনে তারা অন্য আসামিদের মতো কারাগারে সাজা ভোগ করবে।
ঘটনার প্রায় সাত মাসের মধ্যে এ রায় দিয়েছেন আদালত। গত ২৮ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এ মামলায় মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগে ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া উভয়কে পর্নোগ্রাফি আইনে আরও তিন বছর করে সাজা দেন আদালত। অন্যদিকে পুলিশের অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত হওয়া আরেক কিশোর আসামিকে ধর্ষণের অভিযোগে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাকে দুমকী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই কলেজশিক্ষার্থী। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তার মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ দুপুরে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ২৬ এপ্রিল রাতে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ২৭ এপ্রিল বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, সাত মাস পাঁচ দিনের মাথায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রায় দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। আসামিরা যেহেতু কিশোর বয়সের। তাই প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের শিশু সংশোধনাগারে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
বরিশাল শহরকে বলা হয় রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের শহর। এই আধা গ্রামীণ, আধা শহুরে পরিবেশে কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের অনেকটা সময় কেটেছে। ১৯৪৬ সালে কলকাতা যাওয়ার আগে বরিশালে তার স্থায়ী ঠিকানা ছিল বগুড়া রোডের সর্বানন্দ ভবন, যা তার স্বপ্নের বাড়ি হিসেবে পরিচিত।
বগুড়া সড়ক ধরে শীতলাখোলা পেরিয়ে ব্রজমোহন কলেজ পর্যন্ত যে পথ, সেই সড়ক ধরেই ছিল জীবনানন্দের পৈতৃক নিবাস। বাড়ির নাম এসেছে তার ঠাকুরদা সর্বানন্দ দাশের নামানুসারে। সর্বানন্দ দাশ বরিশাল কালেক্টরেটের কর্মচারী ছিলেন। বর্তমানে সেই বগুড়া সড়ক কাগজে জীবনানন্দ সড়ক নামে পরিচিত।
জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের বাড়ি ছিল গাছগাছালিতে ঢাকা, ফলদ বৃক্ষের সমাহারে ঘেরা। বাড়ির পেছনে ছিল মাঝারি পুকুর এবং নারকেল, সুপারি, আম, কাঁঠাল, জাম ও আনারসের বাগান। তবে বর্তমানে সর্বানন্দ ভবন তিন ভাগে বিভক্ত। বাম পাশে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের গভীর নলকূপ, ডান দিকে দপ্তরের গুদাম ও কলোনি, আর মাঝখানে একটি আবাসিক ভবন। মূল বাড়ির স্থানে দাঁড়িয়ে আছে ধানসিড়ি’নামের একটি বাড়ি। জীবনানন্দের ছোট্ট সমাধিক্ষেত্রও ছিল এই বাড়ির একাংশে, যেখানে একসময় ফুলের বাগান ও স্মৃতির মাঠ ছিল। কবি জীবদ্দশায় এই বাড়িতেই কাটাতেন নিভৃত সময়ে, তার ঘরে ছিল শোয়ার ঘর, গোসলখানা এবং বারান্দা। বড় বারান্দায় কবির হাঁটাচলা ও ভাবনার সময় যাপন হতো।
১৯৪৬ সালের জুলাইয়ে বিএম কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে জীবনানন্দ কলকাতায় যান এবং এরপর আর দেশে ফেরেননি। দেশভাগের পর তার পরিবারও কলকাতায় চলে যায়। ১৯৫৫ সালে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলের মাধ্যমে মূল বাড়ি বিক্রি হয়। পরবর্তীতে এখানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের কলোনি, গুদাম ও পানির পাম্প বসানো হয়।
বরিশালের সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে কবির বসতবাড়ি সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নিয়ে চলেছেন। আন্দোলন, মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশের পর কিছুটা উদ্যোগে কবির নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জীবনানন্দ দাশ পাঠাগার ও মিলনায়তন। তবে পাঠাগার ও মিলনায়তন বর্তমানে তালাবদ্ধ এবং ধুলো জমে আছে। কবি জীবনানন্দ দাশ বরিশাল ব্রজমোহন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, বিএম কলেজ থেকে আইএ, এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ ও এমএ পাস করেছেন। আইন কলেজে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দেননি। ১৯৫৪ সালে কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর ২২ অক্টোবর তিনি প্রয়াণ বরণ করেন। জীবনানন্দ দাশের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ঝরাপালক, ধূসর পাণ্ডুলিপি, বনলতা সেন, জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, রূপসী বাংলা। তার অধিকাংশ কবিতার প্রেক্ষাপট বরিশাল।
বুধবার ছিল রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ৭১তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই উপলক্ষে বরিশালে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় কবিকে স্মরণ করছেন। বরিশালের জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি মিলনায়তনে কবির ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কবিপ্রেমীরা। সকাল সাড়ে ৯টায় কবির পৈত্রিক ভিটায় নির্মিত স্মৃতি মিলনায়তনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর বরিশাল কবিতা পরিষদ ও প্রগতী লেখক সংঘের উদ্যোগে কবি আড্ডা ও সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আগুনমুখা প্রকাশনীর আয়োজনে দিনব্যাপী কবি আড্ডা ও ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরণ, সংস্কৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন দিনভর নানা কর্মসূচি পরিচালনা করেছে।
আয়োজকদের মতে, কবি জীবনানন্দ দাশের চিন্তা ও চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ আয়োজন করা হয়েছে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামে এক যুবদল নেতার পরকীয়ার বিচার করতে গিয়ে নারীকে নির্যাতন করেন ইউপি সদস্য। গত ১৬ অক্টোবরের ঘটনা হলেও গত মঙ্গলবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পরকীয়া করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক ওই যুবদল নেতা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি বিল্লাল হোসেন। আর নারীকে নির্যাতন করা ওই ইউপি মেম্বার শ্রীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড গোপালনগর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. বজলুর রহমান।
ভাইরাল হওয়ার ২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইউপি মেম্বার বজলুর রহমান ওই নারীকে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছেন। এ সময় ওই নারী বাচারা আকুতি করছেন। পাশেই বসে আছেন পরকীয়া করতে এসে আটক হওয়া যুবদল নেতা বিল্লাল হোসেন।
এই ঘটনার পর ইউপি সদস্যের নম্বরে ফোন দিলে ভুল নম্বর বলে কল কেটে দেন তিনি।
এ ঘটনার ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে যায় পুলিশ। এ কথা জানিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি গত বৃহস্পতর বা তার আগের। তবে মঙ্গলবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আমরা বিষয়টি জানতে পেরে ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে পুলিশ পাঠাই। কিন্তু ততক্ষণে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান ওই ইউপি সদস্য। আমরা জানতে পেরেছি ঘটনার পরেই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের পরিবার। পুলিশ ও ইউপি সদস্যের বাড়িতে আছে। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।