নীলফামারীতে পঞ্চাশ বছরের পুরোনো একমাত্র চলাচলের রাস্তা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সেতু নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এতে সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের নগর দাড়োয়ানী টেক্সটাইল কবিরাজ পাড়া গ্রামের ১৫টি পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা বাজার, স্কুল, মসজিদ ও হাসপাতালে যাতায়াত করে আসছিলেন। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় পুরো গ্রাম প্রায় অবরুদ্ধ। বিষয়টি নিয়ে তারা চড়াইখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা নেয় নি তারা।
ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা সুমি বলেন, “আমরা প্রায় ৫০ বছর ধরে এই রাস্তায় চলাচল করছি। এখন সেতু দোকান তুলে পুরো পথ বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে কষ্ট হচ্ছে।”
রুবি বেগম বলেন, “বাড়ি থেকে বাজারে যেতে এখন অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়। বৃদ্ধ মানুষদের জন্য এটা অনেক কষ্টকর।”
শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, “রাস্তায় দোকান উঠায় স্কুলে যেতে অনেক দেরি হয়। ক্লাসও মিস করি।” নয়ন ইসলাম বলেন, “আমরা খেলাধুলা বা পড়াশোনার কাজে বাইরে যেতে পারি না, কারণ রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ।”
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত সেতু বলেন,“তারা এখন পর্যন্ত আমাদের জমিতে বসবাস করতেছে। আমরা তাদের রাস্তা দিয়েছি, থাকার জমি দিয়েছি। তাদের এখন ওই রাস্তা দিয়ে চলতে দূর হয় নাকি। তারা যে অভিযোগ করছে তা সত্য নয়। তাদের চলাচলের রাস্তা রয়েছে।”
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,“বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
মাগুরা জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে উন্নয়ন কর্মকান্ড বিষয় নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে মাগুরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের শিল্প সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান। এ সময় জেলার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারি সকল দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিকল্পনা ও গৃহীত কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
ডামি রাইফেল প্রদর্শন করে মিছিলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী (৪৯) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তুরাগ থানা পুলিশ।
গতকাল বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১২ নং সেক্টরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ডামি রাইফেলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তুরাগ থানা পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৫০ মিনিটে থানার একটি টহল টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে কয়েক জন মিলে তুরাগ থানাধীন খালপাড় পুলিশ বক্সের পাশে পাকা রাস্তায় গণজমায়েত করে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তুরাগ থানা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে স্থানীয়দের মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মিছিলে অস্ত্র প্রদর্শনকারী মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে শনাক্ত করে তুরাগ থানা পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আজ মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের রামাল্লায় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে এক বরকে ধরে নিয়ে গেছে ইসরাইলি সেনারা। গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে, বর তার বাবাসহ একটি গাড়িতে ছিলেন। তারা রামাল্লার রেন্টিস শহরে যাচ্ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, আওন সাফি নামে ওই বরের সঙ্গে একই গাড়িতে যাচ্ছিলেন তার বাবা মাজেন সাফি। তারা রেন্টিস শহরের প্রবেশদ্বারে এলে ইসরাইলি সেনারা গাড়িটি আটকায়। তাদের প্রথমে আটক এবং পরে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া সেনারা গাড়ির চাবিও নিয়ে যায়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, এই যুবকের পুরো পরিবার বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তখন বাবা ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে ইসরাইলি সেনারা। সূত্র : আলজাজিরা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নে অস্ত্র ও মাদকবিরোধী অভিযানে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও হেরোইনসহ জাহিদুল ইসলাম জামিল মালিথা (৪০) নামে চরমপন্থী ৪০ বাহিনীর সদস্য গ্রেপ্তার করেছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)।
গ্রেপ্তারকৃত জামিল মালিথা ফিলিপনগর এলাকার কুখ্যাত চরমপন্থী ৪০ বাহিনীর প্রধান রাখির সহযোগী। এছাড়াও অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি ফিলিপনগর ইউনিয়নের সিরাজনগর মালিথাপাড়া গ্রামের মৃত জালাল মালিথার বড় ছেলে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে ফিলিপনগর ইউনিয়নের আবেদের ঘাট এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড গুলি এবং ০.০৪৮ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান পিএসসি জানান, জামিল দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক আমদানি করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। পদ্মা নদী সংলগ্ন সীমান্ত এলাকা হওয়ায় তিনি স্থানীয় ও সীমান্তপারের একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান পরিচালনা করতেন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, জামিল মালিথা ফিলিপনগর, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নসহ পদ্মা নদীসংলগ্ন চরাঞ্চলজুড়ে মাদক (বিশেষ করে ফেনসিডিল ও হেরোইন) এবং অস্ত্র ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। তিনি চরমপন্থী সংগঠন ‘৪০ বাহিনী’র প্রধান রাখির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবেও পরিচিত। এর আগে অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলায় তার নাম রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ দৈনিক বাংলা কে বলেন, শুক্রবার রাতে বিজিবির অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী জামিল মালিথাকে অস্ত্র ও হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মুকুল দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর ২০২৫) রাত ৮টার দিকে নবীনগর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের পদ্মপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টার দিকে নবীনগর বাজার থেকে রিকশাযোগে নিজ বাড়িতে ফেরেন মফিজুর রহমান মুকুল। বাড়ির গেইটের সামনে রিকশা থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তার পিঠে অস্ত্র ঠেকিয়ে পরপর দুটি গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুলিবিদ্ধ মফিজুরের বড় ভাই মিজানুর রহমান বলেন,“মানুষের চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখি ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম জানান,ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের শনাক্তে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
নবীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মফিজুর রহমানের পিঠের নিচে কোমরের কাছে দুটি গুলি লেগেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার রক্তচাপ অত্যন্ত কম ছিল।
জানা যায়, শুক্রবার রাতে উপজেলার বিটঘর ও শিবপুর ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচি শেষে তিনি নিজ বাড়ি পদ্মপাড়ায় ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে পেছন থেকে দুর্বৃত্তরা গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
বাঙ্গালীর ইলিশের রাজ্য হিসেবে খ্যাত লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরের মেঘনায় জাটকা ও মা-ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আজ (২৫ অক্টোবর) শনিবার রাত ১২ টায়। নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ অঞ্চলের জেলেরা।
গত ৩ অক্টোবর রাত ১২ টা থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২ টা পর্যন্ত মোট ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ শনিবার। এই ২২ দিনে বেশীরভাগ জেলেরা ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকলেও রামগতি উপজেলা মৎস্য অফিসের সহকারী আব্দুজ্জাহের ও বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির নিয়োগকৃত দালাল ও যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ ইসমাইলের সেল্টারে রামগতি মাছঘাট, বয়ারচর ব্রীজঘাট, গাবতলী ঘাট, টাংকিরঘাট সহ মেঘনা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে নৌকা প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা নিয়ে অবাধে মা-ইলিশ নিধন করার অভিযোগ রয়েছে। অভিযানের শেষ দুই দিন জাটকা ও মা-ইলিশ নিধনের প্রতিযোগিতায় নামেন বড়খেরী নৌ-পুলিশ ও মৎস্য অফিস। গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বেশ কিছু নৌকা আটক করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে নৌকা প্রতি ১০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সফিকুর রহমান। এমনটাই জানিয়েছে ২ জন জেলে। এতে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। খোদ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষরাই এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করাই জনমনে ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা গেছে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। নৌকা-ট্রলার ধোয়ামোছার কাজে ব্যস্ত তারা। অনেকেই জাল বুনতে দেখা গেছে।
রামগতি ও কমলনগর উপজেলার কয়েকটি জেলে পল্লীতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে, কেউ জাল ও মাছ ধরার নৌকা মেরামত করে আগেই প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন,আবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে নদী পাড়ের মাছের আড়তগুলো। কয়েক ঘন্টা পর নদীতে নামবেন তারা। তাই এখন দম ফালানো সময় নেই তাদের। অভিযান সফল হওয়ায় আগামীতে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কমলনগরে ১৪ হাজার ৯৮ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। আর রামগতিতে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ৩৬০ জন। দুই উপজেলায় মোট ৩৪ হাজার ৪৫৮ জন জেলে রয়েছে।
আলেকজান্ডার মাছঘাটের জেলে রবিউল মাঝি জানান,অন্যবারের তুলনায় এবারের নিষেধাজ্ঞায় ছিল নড়েবড়ে। এ কারণে প্রচুর জেলে নদীতে মা-ইলিশ শিকার করতে পেরেছে। ফলে আমরা যারা নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে যায়নি,তারা কেউ মহাজন থেকে, কেউ এনজিও থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালিয়েছি।
বিবিরহাট উছখালী ঘাটের জেলে মফিজ মাঝি জানান, এই ২২ দিন অনেক কষ্ট করে সংসার চালিয়েছি। সরকার সামান্য কিছু চাল দেয়, তা দিয়ে তার ৯ জনের সংসার চলেনা। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় বেশ খুশি তিনি।
কমলনগর উপজেলার লুধুয়া মাছঘাটের জেলে নিজাম উদ্দিন বলেন আমার তিনটা ছোট বাচ্চা, স্ত্রী, মা সবাই তাকিয়ে থাকে আমার রোজগারের দিকে। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন একটি এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা সুদের উপর ঋণ নিয়ে চলেছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ এখন নদীতে গিয়ে ওই ঋণ পরিশোধ করতে হবে সংসারও চালাতে হবে।
মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ৩ অক্টোবর রাত ১২ টা থেকে ২৫ অক্টোবর মোট ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এই ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময় ওইসব এলাকায় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুতকরণ নিষিদ্ধ ছিল।
কমলনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুর্য সাহা ও রামগতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সৌরব-উজ জামান বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফলতার সাথে শেষ হয়েছে। মৎস্য বিভাগ, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনতলা ভবন নির্মাণ শেষে হস্তান্তরের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। সেখানে নেই কোন আসবাবপত্র ও বিদ্যুৎ–সংযোগ। পর্যাপ্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী বছর থেকে ম্যাটস চালুর সম্ভাবনা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ে (আরএফএসটি) কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এরপর পূর্ণাঙ্গভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদানের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলীতে ম্যাটসের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
কাজটি সম্পন্ন করে ময়মনসিংহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ শেষে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবনটি তৎকালীন জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি কে এম জোবায়ের গালিবকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে একটি একাডেমিক ভবন, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক বাসভবন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, গ্যারেজ ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতলাল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ভবন ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাটস বুঝিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ম্যাটস হস্তান্তরের পর কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। কেউ না থাকায় রাতের বেলায় কয়েক দফায় ম্যাটসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত চালু করা না গেলে অযত্ন আর অবহেলায় প্রতিষ্ঠানটি নষ্ট হয়ে হবে।
বটতলী এলাকার মিনহাজুল মুকিত বলেন, যদি চালুই করতে না পারে, তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করার কোন প্রয়োজন ছিল না।
ম্যাটসের অধ্যক্ষ কে এম জোবায়ের গালিব বলেন, আমাকে গত জানুয়ারিতে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনো অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আসবাব ও বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর প্রতিষ্ঠানটি চালু হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন আল মামুন বলেন, ম্যাটস নির্মাণের পর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে এখন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানামতে, আপাতত ম্যাটসের কার্যক্রম থাকবে না। রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
নওগাঁর ধামইরহাটে গরুবোঝাই ইঞ্জিন চালিত ভটভটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চালকসহ দুইজন মারা গেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার বিহারীনগর বাইপাস সড়কের তালঝাড়ি ফুটবল মাঠের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও ৪ জন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন ভটভটি চালক আড়ানগর এলাকার বাসিন্দা পাড়ার জয়দুল ইসলামের ছেলে মাসুদুর রহমান মওলা (৩৫) ও আড়ানগর গ্রামের নজিম উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ ভুট্টু (৪০)।
এ ঘটনায় আড়ানগর গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে জিহাদ (২৫), ফতেপুর গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে জাইদুল ইসলাম (৫৫), লক্ষণপাড়া গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন (৭০) ও মোটরসাইকেল চালক দিনাজপুর জেলার জহুরুল ইসলামের ছেলে মো. সেলিম রেজা আহত হয়েছেন। আহত সেলিম ও নাজিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে উপজেলার আড়ানগর এলাকা থেকে একটি ভটভটিযোগে বিহারীনগর-পিড়লডাঙ্গা বাইপাস সড়ক হয়ে জয়পুরহাট জেলার গরুর হাটে যাচ্ছিলেন কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী। পথে বাইপাস সড়কের তালঝাড়ি এলাকার ডবল ব্রিজের কাছে একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভটভটি ও মোটরসাইকেল উল্টে রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ধামইরহাট থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস টিম স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে ধামইরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।
ধামইরহাট থানার ওসি ঈমাম জাফর জানান, নিজ গাড়িতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হিন্দুত্ববাদী চক্র কর্তৃক মুসলিম নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট, গাজীপুরে আশামনি ধর্ষণ, খতিব মুহিবুল্লাহকে অপহরণ, চট্টগ্রামের আলিফ হত্যা সহ ইসকনের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ‘মুসলিম শিক্ষার্থী’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে একই স্থানে সমবেত হন এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এসময় বক্তারা বলেন, ' পাঁচ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসকন নামক এই বিষফোঁড়া, ভারতের দালাল বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। অতিসত্বর এই বাংলাদেশ থেকে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা দেখেছি, ফ্যাসিস্ট আমলে ইসকন এদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে তারা ইসকনদের জায়গা করে নিয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় থেকে একদম রুট-লেভেল পর্যন্ত ইসকন পরিকল্পিতভবে তাদের লোকদের ঢুকিয়েছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে এই বাংলাদেশ থেকে ইসকন'কে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকনকে যদি নিষিদ্ধ করা না হয়, এদেশের তাওহীদি জনতা এবং ছাত্র সমাজ কখনো মেনে নিবে না। 'জেন-জি' যদি একবার ইসকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেঁটে-পড়ে তাহলে এই বাংলায় ইসকনের কবর রচিত হতে বাধ্য।'
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ‘ইসকন এই বিশ্বে ধর্ম প্রচার করছে না বরং তারা ধর্মের ছদ্মবেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদকে প্রচার এবং প্রসার করার জন্য মাঠে নেমেছে। মুসলিম মা বোনদের নিয়ে তামাশা করছে। ইসকনের মত সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। সিঙ্গাপুর আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন দেশে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠন থেকে বলা হয়েছে ইসকন তাদের ধর্ম প্রচারের কোন সংগঠন না। তারা উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রচার-প্রসারের জন্য এখানে আদা জল খেয়ে নেমেছে।’