রোববার, ৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২

টাকা থাকলে জেলেও মুক্ত জীবন

আপডেটেড
২৮ নভেম্বর, ২০২২ ১১:৩৭
নুরুজ্জামান লাবু, ঢাকা
প্রকাশিত
নুরুজ্জামান লাবু, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:১৬

মোবাইলে কথোপকথনের প্রায় ১০ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ড। এক প্রান্ত থেকে একজন কার কার বাসায় ডাকাতি করা যাবে সেসব নির্দেশনা দিচ্ছেন। ফিসফিসিয়ে কথা বলছেন তিনি। অন্য প্রান্তে থাকা ব্যক্তি সেসব নির্দেশনা শুনে যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে সম্মতিসূচক আলাপচারিতাও চলছে। এটি আড়িপাতা কোনো অডিও রেকর্ড নয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডাকাত সন্দেহে কয়েক যুবককে গ্রেপ্তারের পর তাদের এক সহযোগীর মোবাইলে এই অডিও রেকর্ড পাওয়া যায়।

ওই ডাকাত দল সাধারণ কেউ নয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য। আর যে দুজন কথা বলেছেন, তার একজন জঙ্গি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম হৃদয়। অন্যজন কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কারাগারে থাকা আরেক জঙ্গি আল-আমিন। পরে আল-আমিনকেও ওই ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে আনা হয়। জেল থেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার ও ডাকাতির নির্দেশনা দেয়ার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন আল-আমিন।

শুধু মোবাইল ফোনই নয়, কারাগারে টাকা দিলে সবই মেলে। উন্নত জীবনযাপনের প্রায় সব ধরনের সুবিধাই পাওয়া যায় সেখানে। মোবাইলে কথোপকথন, ইন্টারনেট ব্যবহার, ভালো খাবার কিংবা মাদক- সবই হাতের নাগালে।

গত বছরের প্রথম দিকে কারাগারে থাকা অবস্থায় হল-মার্কের কর্মকর্তা তুষারের নারীসঙ্গের একটি ঘটনাও ফাঁস হওয়ার পর তোলপাড় হয়েছিল। জেল থেকে আদালতে আনা-নেয়ার মধ্যবর্তী সময়ে নিজ বাসায় স্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সময় কাটানোর তথ্যও রয়েছে। দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ও কাইল্যা পলাশ আদালতে আনা-নেয়ার সময় নিজ বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময় কাটাতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি কারাগার থেকে আদালতে ১২ জঙ্গিকে হাজির করার পর শুনানি শেষে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় কারাগারের ভেতর দুর্নীতি ও বাণিজ্যের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারাগারের ভেতরটি পুরোপুরি দুর্নীতি আর অনিয়মে ভরা। যার টাকা আছে, কারাগারে তার কোনো সমস্যা হয় না। একমাত্র বাইরে মুক্ত বাতাসে ঘোরাঘুরি ছাড়া বাকি সবই পাওয়া যায় টাকার বিনিময়ে। একশ্রেণির অসাধু কারা কর্মকর্তা ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা মিলে একেকটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছে দেশের বিভিন্ন কারাগারের ভেতর। এই সিন্ডিকেটই নিয়ন্ত্রণ করে কারাগারের সবকিছু।

সম্প্রতি আবু জাফর বিপ্লব নামে ডাকাতি মামলার এক আসামির সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। আবু জাফর জানান, কারাগারে তিনি ভাত বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। আদালতে হাজির করার সময় সেই টাকা উকিলকে দিয়ে জামিনে বের হয়ে এসেছেন। কীভাবে এটি সম্ভব- এই প্রশ্নের উত্তরে বিপ্লব জানান, কারাগারে যেসব খাবার দেয়া হয়, সেসব অত্যন্ত নিম্নমানের। নতুন বন্দিদের অনেকই তা খেতে পারে না। কিন্তু যারা কারাগারের পুরোনো বন্দি বা কাজ করে তারা ভালো খাবার খায়। এক কারারক্ষীকে ঘুষ দিয়ে তিনি ভালো চাল রান্না করে ভাত বিক্রি করতেন। এতে সপ্তাহে তার ৪ হাজার টাকা আয় হতো। এর মধ্যে ১ হাজার টাকা সেই কারারক্ষীকে দিতে হতো। এভাবেই তিনি কয়েক মাসে ৩০ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন।

আবু জাফর বিপ্লব বলেন, ‘আদালতে হাজিরার দিন অত বেশি তল্লাশি হয় না। তখন টাকা নিয়ে বের হওয়া যায়। আদালতে শুনানির সময় সেই টাকা উকিলকে দিয়ে জামিনে বের হয়েছি।’

গত কয়েক মাসে বিভিন্ন মামলায় সাময়িক সময়ের জন্য জেল খাটা বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের সবার ভাষ্য, টাকা দিলে সবই পাওয়া যায় কারাগারে। নিজের অভিজ্ঞতার বিশদ বর্ণনা দিয়ে পেশায় ব্যাংক কর্মকর্তা এক যুবক জানান, একটি মামলায় তিনি প্রায় তিন মাস ছিলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। কারাগারে প্রবেশের পর পরই শুরু হয় অবৈধ বাণিজ্য। কোন ওয়ার্ডে থাকবেন তার ওপর ভিত্তি করে টাকা লেনদেন শুরু হয়। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, গভর্নমেন্ট ওয়ার্ড নাকি মক্কেল ওয়ার্ডে থাকবেন। গভর্নমেন্ট ওয়ার্ড হলো সাধারণ যেখানে এক কক্ষে থাকতে হয় ৩০-৪০ জন। আর মক্কেল ওয়ার্ডে তুলনামূলক কম লোকজন থাকে। এ জন্য কারাগারে ঢুকেই তিনি চিফ রাইটারকে ২ হাজার টাকা দেন। সে সময় চিফ রাইটার ছিলেন বিডিআর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি পঞ্চগড়ের বাসিন্দা আরিফ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জেলে ঢোকার পর পরই আমদানি রুমে নেয়ার পরই ওয়ার্ড বাণিজ্য শুরু হয়। মক্কেল ওয়ার্ড বা গভর্নমেন্ট ওয়ার্ডে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই হাসপাতালে থাকতে চান। হাসপাতালে থাকতে হলে প্রথমে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে প্রতি সপ্তাহে দিতে হয় ৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কারাগারেই একটি করে হাসপাতাল আছে। সেখানে থাকতে বন্দিদের খরচ করতে হয় বেশি।

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের এনফোর্সমেন্ট শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, তারা ২০১৯ সালে একবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অভিযান চালিয়েছিলেন। অভিযানের সময় সঙ্গে একজন চিকিৎসকও নিয়ে যান তারা। কোনো ধরনের অসুস্থতা না থাকলেও কারা হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে থাকা অনেককেই তখন চিহ্নিত করেছিলেন তারা।

দুদকের ওই কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, কারাগারের ভেতর দুর্নীতির মহাযজ্ঞ চলে। কিন্তু অভিযান করা যায় না। কারণ ভেতরে অভিযান চালাতে তিন-চারটি গেট পার হতে হয়। গেট থেকে ভেতরে ঢুকতেই সময় লেগে যায় অন্তত আধা ঘণ্টা। এর মধ্যে খবর পেয়ে সবাই সতর্ক হয়ে যায়।

কারা সূত্র জানায়, কারাগারগুলোতে কয়েক দিন পর পরই বন্দিদের ভিন্ন ভিন্ন কারাগারে পাঠানোর একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এই বন্দি স্থানান্তরের নামেও চলে বাণিজ্য। বিশেষ করে কোনো বন্দি একটি কারাগারে থাকায় তার বন্ধু তৈরি হয় বা বিশেষ সুবিধা পাওয়ার জন্য নেপথ্যের ব্যক্তিদের সঙ্গেও পরিচয় হয়। অন্য কারাগারে স্থানান্তর করা হলে সেসবে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে বন্দিরা স্থানান্তরের চালান বাতিল করতে চান। প্রতিটি স্থানান্তরের চালান বাতিল করতে চিফ রাইটারকে দিতে হয় ৩ হাজার টাকা।

খাবারের বাণিজ্য সবচেয়ে বেশি

কারাবন্দী ও কারগারের একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেখানে ভালো থাকার ব্যবস্থা ছাড়াও খাবার নিয়ে বাণিজ্য হয় সবচেয়ে বেশি। জেলকোড অনুযায়ী বন্দিরা সকাল, দুপুর ও রাতে নির্দিষ্ট খাবার পান। সকালে রুটি, পাউরুটি, চিনি, গুড়, ডাল, দুধ, জেলি, ঘি, মাখন, কলা ও চা। দুপুরের খাবারের তালিকায় রয়েছে ভাত কিংবা রুটি, মাছ বা মাংস, শাকসবজি ও ডাল। রাতের খাবারে ভাত কিংবা রুটি, মাছ বা মাংস, শাকসবজি ও ডাল। কিন্তু বাস্তবে সকালে একটি রুটি ও গুড়, দুপুর ও রাতে ভাতের সঙ্গে পাঁচমিশালি সবজি ও ডাল দেয়া হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী মাছ-মাংস দেয়ার কথা থাকলেও তা এত নগণ্য যে বেশির ভাগ সময় তা পাওয়া যায় না। তবে টাকা খরচ করলে উন্নত খাবার পাওয়া সম্ভব।

জানা গেছে, কারাগারের ভেতর এক কেজি গরুর মাংস রান্না করে বিক্রি করা হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকায়। ভালো চালের কেজি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। এক কেজি আলু বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। একটি ফুলকপি ২০০ টাকা। একটি রাজহাঁস ৪ হাজার টাকা। ছোট হাঁস ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। প্রত্যেকটি খাবারের উপকরণের দাম অন্তত ৮ থেকে ১০ গুণ বাড়িয়ে নেয়া হয়। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন কারাগারগুলোর চিফ রাইটাররা। দণ্ডপ্রাপ্ত বা বহুদিন ধরে জেল খাটছেন এমন কয়েদিদের দিয়ে পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেন জেল সুপার বা জেলাররা। কয়েদিকে চিফ রাইটার হওয়ার জন্য ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষও দিতে হয়।

মোবাইল ফোন ব্যবহারই মূল মাথাব্যথা

কারাগারের ভেতর বাটন ফোনের পাশাপাশি স্মার্টফোনের ব্যবহারও চলে হরদম। সর্বশেষ দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়েও কারাগারের ভেতর তাদের মোবাইল ব্যবহারের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।

কারা সূত্র জানায়, কারাগারে সরকারিভাবে মোবাইল ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। একজন বন্দি সপ্তাহে এক দিন ১০ টাকা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট কথা বলতে পারবেন। কিন্তু অবৈধভাবে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রীতিমতো লাইন ধরে মোবাইল ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা রয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিরা এই ব্যবসা করেন।

অবৈধভাবে কারাগারগুলোতে প্রতি ৩ মিনিট কথা বলতে ১০০ টাকা দিতে হয়। সারা রাত মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার করলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। রাজনৈতিক নেতা, শীর্ষ সন্ত্রাসী বা ধনী বন্দিরা নিয়মিত স্মার্টফোন ব্যবহার করেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী বা জঙ্গিদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ওপেন সিক্রেটের মতো। একজন শীর্ষ জঙ্গি ল্যাপটপ ব্যবহার করত বলেও তাদের কাছে তথ্য ছিল।

কারা অভ্যন্তরে যেভাবে যায় মোবাইল ও মাদক

বন্দিদের কেউ কেউ একেবারে ছোট্ট বা আঙুলের মতো দেখায় এ রকম চীনের তৈরি মোবাইল সেট পায়ুপথের মাধ্যমে নিয়ে যায়। এ ছাড়া দিনের বেলা কারাগারের ভেতরের সীমানাপ্রাচীরের দিকে দায়িত্বরত কারারক্ষীদের ম্যানেজ করে বাইরে থেকে স্কচটেপ পেঁচিয়ে ঢিল মেরে মোবাইল ভেতরে ফেলা হয়। একই কায়দায় কারাগারে গাঁজা, ইয়াবা এবং হেরোইনের মতো মাদকও ঢোকে।

টিভি দেখার বিনিময়েও হয় বাণিজ্য

আগে কারাগারে বন্দিদের বিপুল অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে টেলিভিশন দেখার ব্যবস্থা থাকলেও গত বছর কারা কর্তৃপক্ষ বন্দিদের বিনোদনের জন্য সব ওয়ার্ডে টেলিভিশন দেয়ার অনুমোদন দেয়। কারাগারের ভেতরের ক্যান্টিনের লাভের টাকা থেকে টেলিভিশন কেনার জন্য কারা সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু সেই টেলিভিশন নিয়েও চলে বাণিজ্য।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারাগারের ভেতর গভর্নমেন্ট ওয়ার্ড হিসেবে যেগুলো পরিচিত, সেগুলোতে কোনো টেলিভিশন দেয়া হয় না। টিভি লাগানো হয় মক্কেল ওয়ার্ড বলে পরিচিত ওয়ার্ডগুলোতে। আবার সাধারণ টেলিভিশনের পরিবর্তে অর্থের বিনিময়ে স্মার্ট টেলিভিশনের ব্যবস্থাও রয়েছে। এসব টিভিতে পেনড্রাইভের মাধ্যমে বিভিন্ন মুভি বা গান বাজানো হয়। পেনড্রাইভে গান বা মুভি দেয়ার বিনিময়েও নেয়া হয় অর্থ।

মন্তব্য নেই কারা কর্তৃপক্ষের

কারাগারের অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা রকম অবৈধ বাণিজ্যের বিষয়ে মন্তব্য জানতে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ ও খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা স্বীকার করেন, ঢাকা ও কাশিমপুরের চারটি কেন্দ্রীয় কারাগার, সিলেট ও চট্টগ্রাম কারাগারে অনিয়মটা হয়। অন্যান্য জেলা কারাগার থেকে তেমন বড় অভিযোগ আসে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারা অনুবিভাগ) হাবিবুর রহমান নানা অনিয়ম প্রসঙ্গে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো কেবল সুপারিশ করতে পারি। কারা প্রশাসন চালায় আইজি প্রিজন্স। আমরা বিভিন্ন সময়ে কারাগারে শুদ্ধি অভিযানের জন্য সুপারিশগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’

বিষয়:

শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন

আপডেটেড ৬ জুলাই, ২০২৫ ১৩:২৬
জালাল উদ্দিন ভিকু, দৌলতপুর(মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।

শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।

এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।

প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।

স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।


সিলেটে আরো দুইজনের করোনা ও ডেঙ্গু শনাক্ত 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সিলেটে নতুন করে একজনের করোনা ও একজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে চলতি বছর ২৭ জনের করোনা ও ৩৮ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হলো।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। এই বছর ৪৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৭ জনের করোনা ধরা পড়েছে এবং দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সিলেট স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রেরিত ডেঙ্গু সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে জুলাই মাসে পাঁচজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হলো। বর্তমানে ২৫০ শয্যার মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চলতি বছর ৩৮ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১০ জন, সুনামগঞ্জ জেলায় তিনজন, মৌলভীবাজার জেলায় ১১ জন এবং হবিগঞ্জ জেলায় ১৪ জন। তবে, ডেঙ্গুতে সিলেট অঞ্চলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।


ভোলায় কাভার্ড ভ্যানে কোস্টগার্ডের তল্লাশি ৭ কোটি টাকার অবৈধ পন্য জব্দ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা প্রতিনিধি

ভোলা জেলা শহরের কালিনাথ বাজারে ঢাকা থেকে আসা ভোলাগামী এস এ পরিবহনের পন্য বহনকারী একটি কাভার্ড ভ্যানে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধভাবে আনা প্রায় সাত কোটি টাকা মূল্যের ২০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, ৮০ কেজি পলিথিন, ৫ হাজার ৮৮৯ পিস আতশবাজি ও ১৯ হাজার ৬০০ শলাকা বিদেশি সিগারেট জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ভোলা বেইস।

শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে কোস্টগার্ড ভোলা বেইসের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় কোস্টগার্ডের ভোলা বেইসের সদস্যরা শহরের কালিনাথ রায়ের বাজারে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযান চলাকালে ওই এলাকায় ঢাকা থেকে ভোলাগামী এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসের একটি কাভার্ডভ্যান তল্লাশি করে ৭ কোটি ৮ লাখ ২ হাজার ৩৬০ টাকা মূল্যের নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, পলিথিন, আতশবাজি ও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা বিদেশি সিগারেট জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে জব্দকৃত কারেন্ট জাল সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিনষ্ট করা হয়। এ ছাড়া নিষিদ্ধ পলিথিন ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুল্ক ফাকি দিয়ে আনা সিগারেট বরিশাল কাস্টমস ও আতশবাজি ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ২৪ ঘণ্টা টহল জারি রেখেছে। যার মাধ্যমে কোস্টগার্ডের আওতাধীন উপকূলীয় এবং নদী-তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে উন্নত হয়েছে।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ড কতৃক শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা চোরাচালানবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।


শেরপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ গেল আরও একটি বন্যহাতির

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।

খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।

মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।

এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।

এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।

নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’


সিলেটে দুই বাসের সংঘর্ষ, হেলপার নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।

দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।

শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।

তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।


জয়পুরহাটে ‘এক কিডনির গ্রাম’

দালাল চক্রের ফাঁদে নিঃস্ব দরিদ্র মানুষ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বাইগুনি গ্রাম। নিজের অসম্পূর্ণ ইটের বাড়ির সামনে বসে আছেন ৪৫ বছর বয়সি সফিরুদ্দিন। পেটের নিক্সের অংশে ডান পাশটা চাপলে এখনো ব্যথা অনুভব করেন তিনি। পরিবারকে অনটন থেকে মুক্ত করতে এবং তিন সন্তানের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করতে ২০২৪ সালে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করে দেন ভারতের এক ব্যক্তির কাছে। বিনিময়ে তিনি পান সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

কিন্তু সেই টাকা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বাড়ির নির্মাণকাজ থেমে আছে। আর শরীরের এই অসহ্য ব্যথা প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয়—সেই সিদ্ধান্তের মূল্য কতটা চড়া ছিল।

সফিরুদ্দিন এখন একটি হিমাগারে দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া শরীর নিয়ে দিন পার করছেন কষ্টে। নিয়মিত কাজে অংশ নেওয়াটাও হয়ে উঠছে দুঃসাধ্য। তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রী আর সন্তানদের জন্যই সব করেছি।’

শুরুতে ভয় থাকলেও দালালের কথায় পরে রাজি হয়ে যান তিনি। ভিসা, ফ্লাইট, হাসপাতাল সংক্রান্ত সব কাগজপত্রই ঠিক করে দেয় তারা। মেডিকেল ভিসায় ভারতে যাওয়ার সময় পাসপোর্ট ছিল নিজেরই, কিন্তু হাসপাতালের কাগজপত্রে তাকে রোগীর আত্মীয় হিসেবে দেখানো হয়। এমনকি, ভুয়া আইডি, নকল জন্মসনদ বা নোটারি সার্টিফিকেটও বানানো হয়। অথচ যাকে কিডনি দিয়েছেন, তিনি কে—সেটাও জানেন না সফিরুদ্দিন।

ভারতের আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র নিকটাত্মীয়দের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা বৈধ। তবে সরকারি অনুমোদন থাকলে অন্য কেউ দান করতেও পারেন। কিন্তু দালালরা এসব আইন পাশ কাটিয়ে ভুয়া পরিবারিক সম্পর্ক তৈরি করে, এমনকি কখনও কখনও ভুয়া ডিএনএ রিপোর্টও বানিয়ে দেয়।

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অঙ্গসংগঠন ‘অর্গান ট্রান্সপ্লান্টেশন টাস্কফোর্স’-এর সদস্য মনির মোনিরুজ্জামান জানান, ‘প্রতারণার নিয়মটা মোটামুটি একই—নাম বদল, ভুয়া নোটারি সার্টিফিকেট, আত্মীয় প্রমাণের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের জাল কপি ইত্যাদি।’

বাইগুনি গ্রামে সফিরুদ্দিনের অভিজ্ঞতা আলাদা কিছু নয়। প্রায় ছয় হাজার মানুষের এই গ্রামে এত বেশি মানুষ কিডনি বিক্রি করেছেন যে জায়গাটিকে অনেকে বলেন ‘এক কিডনির গ্রাম’। ২০২৩ সালে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল গ্লোবাল হেলথে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কালাই উপজেলায় প্রতি ৩৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন কিডনি বিক্রি করেছেন। বেশিরভাগ বিক্রেতাই ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সি পুরুষ, যারা দারিদ্র্যের কারণে এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কেউবা ঋণের বোঝা, মাদকাসক্তি কিংবা জুয়ার আসক্তি থেকেও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সফিরুদ্দিন জানান, অপারেশনের পর তার পাসপোর্ট, প্রেসক্রিপশন কিছুই ফেরত দেয়নি দালালরা। এমনকি ওষুধটুকুও জোটেনি। অপারেশনের পরে পর্যাপ্ত চিকিৎসা বা পর্যবেক্ষণ ছাড়াই তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এমন অনেক সময় দালালরা কিডনি বিক্রেতাদের কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে কোনো প্রমাণ রাখে না, যাতে তাদের কোনো চিকিৎসা দাবি বা অভিযোগ করাও সম্ভব না হয়।

এই অঙ্গগুলো মূলত বিক্রি হয় ভারতের ধনী রোগীদের কাছে, যারা বৈধ প্রক্রিয়ায় কিডনি প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় থাকতে চান না। ভারতে ২০২৩ সালে মাত্র ১৩,৬০০টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, অথচ বছরে প্রায় ২ লাখ মানুষ শেষ ধাপের কিডনি রোগে আক্রান্ত হন।

ব্র্যাকের অভিবাসন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, ‘কিছু মানুষ জানাশোনা সত্ত্বেও বিক্রি করেন, তবে অনেকেই প্রতারিত হন।’

এমনকি কেউ কেউ কিডনি বিক্রির টাকাও পুরোপুরি পান না। যেমন, মোহাম্মদ সাজল (ছদ্মনাম) ২০২২ সালে দিল্লির ভেঙ্কটেশ্বর হাসপাতালে নিজের কিডনি বিক্রি করেন ১০ লাখ টাকা চুক্তিতে, কিন্তু তিনি পান মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টাকা। প্রতারিত হয়ে পরে তিনিও এই চক্রে যুক্ত হন, বাংলাদেশ থেকে কিডনি বিক্রেতা খুঁজে বের করে ভারতে পাঠাতে থাকেন। টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব হওয়ায় কিছুদিন পর তিনি এ চক্র থেকে বেরিয়ে আসেন। এখন ঢাকায় রাইড শেয়ারিং ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন তিনি, কিন্তু সেই অতীতের ক্ষত তাকে আজও তাড়িয়ে ফেরে।

অন্যদিকে যেসব হাসপাতাল এসব অবৈধ প্রতিস্থাপন করে, তাদের বিরুদ্ধে ভারত বা বাংলাদেশ দুই দেশেরই কোনো সমন্বিত তথ্য বা ব্যবস্থা নেই বলে জানান ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনসুলার বিভাগের মহাপরিচালক শাহ মুহাম্মদ তানভির মনসুর। ভারতের হাসপাতালগুলো মাঝেমধ্যে দায় এড়িয়ে চলে এই বলে যে, কাগজপত্র যাচাই করে তবেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

তবে মনিরুজ্জামান বলেন, অনেক হাসপাতালই জেনে-বুঝেই জাল কাগজ গ্রহণ করে কারণ ‘অধিক কিডনি প্রতিস্থাপন মানে অধিক আয়’। ভারতের হাসপাতালগুলো বছরে কয়েক হাজার বিদেশি রোগীকে চিকিৎসা দেয়, যা দেশটির ৭.৬ বিলিয়ন ডলারের মেডিকেল ট্যুরিজম শিল্পের অংশ।

২০১৯ সালে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিডনি চক্র নিয়ে তদন্তের পর কিছু চিকিৎসক ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। ২০২৪ সালে দিল্লিতে ড. বিজয়া রাজাকুমারিকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৫ জন বাংলাদেশির কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। তবে এই তদন্তগুলো এতটাই বিচ্ছিন্ন যে পুরো ব্যবস্থায় বড় কোনো পরিবর্তন আনা যায়নি।

দালাল মিজানুর রহমান জানান, প্রতিটি কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টে খরচ হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। কিন্তু বিক্রেতারা পান মাত্র ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা। বাকি টাকা দালাল, কাগজপত্র তৈরি করা কর্মকর্তা, চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের পকেটে যায়। কখনও কখনও কাজের প্রলোভন দেখিয়েও মানুষকে কিডনি বিক্রির ফাঁদে ফেলা হয়। অনেকেই কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়ে সেখানে অপারেশনের পর ফেলে রাখা হন।

ভারতের কিডনি ওয়ারিয়ার্স ফাউন্ডেশনের প্রধান বাসুন্ধরা রঘুবংশ বলেন, ‘আইন থাকলেও বাস্তবতা হলো, এটা এক কালোবাজারে পরিণত হয়েছে। যেহেতু চাহিদা থেমে নেই, সেহেতু এ ব্যবসাও চলছেই।’ তিনি মনে করেন, অঙ্গ দান পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব না হলে একটি সুশৃঙ্খল ও মানবিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলাই হতে পারে একমাত্র সমাধান। যেখানে কিডনি বিক্রেতাদের জন্য বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

আর বাইগুনি গ্রামে, সফিরুদ্দিন এখনো অর্ধনির্মিত ঘরের বারান্দায় বসে ভাবেন, কবে শেষ হবে তার স্বপ্নের ঘর। তিনি ভেবেছিলেন, এই পথ হয়তো পরিবারকে একটু স্বস্তি এনে দেবে। কিন্তু এখন তিনি একজন অসুস্থ বাবা, যার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। তার কণ্ঠে শুধু তিক্ততা—‘তারা কিডনি নিলো আর আমাকে ফেলে চলে গেল।’


কাজে আসছে না কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নড়াইল প্রতিনিধি

কোভিড-১৯ এর ধাক্কা এখনো মনে রেখেছেন নড়াইল সদর হাসপাতালের রোগী, সেবিকা, চিকিৎসকসহ আম জনতা । মুমূর্ষু রোগীদের বাচাতে হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে তখন ৮ কোটি টাকা ব্যয় করে স্থাপন করা হয় কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। অভিযোগ রয়েছে শুরু থেকেই তা মানুষের কাজে আসেনি। অক্সিজেন নিয়ে রোগী, সেবিকা আর চিকিৎসকদের ভোগান্তি থেকেই যাচ্ছে।

সরেজমিন হাসপাতালের রোগী, সেবিকা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোভিড-১৯ এর প্রাক্কালে নানা উপসর্গ আর জটিল শ্বাসকষ্ট থেকে পরিত্রান পেতে আমজনতা ছুটে আসেন জেলার একমাত্র আধুনিকায়িত সদর হাসপাতালে। তখন হাসপাতালের বেড, কেবিন, জরুরী বিভাগসহ ১৭৩টি স্থানে অক্সিজেন সরবরাহ পয়েন্ট স্থাপন করা হয় । কিন্তু কোনো পয়েন্ট দিয়েই সে সময় অক্সিজেন নির্গত হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালের কাজ চলছে সিলিন্ডার অক্সিজেন দিয়ে। এ ব্যবস্থার কারণে রোগী ও স্বজনদের রয়েছে ক্ষোভ। জরুরী অক্সিজেনসেবা দিতে নিত্যদিন হিমশিম খেতে হয় সেবিকা আর চিকিৎসকদের। সিলিন্ডার সংকটের পাশাপাশি সিলিন্ডার ভরে রাখা, আর হঠাৎ সিলিন্ডার শেষ হবার আশঙ্কা তো রয়েছেই। এসব সেবা ব্যাহত হওয়ার বিড়ম্বনায় থাকতে হয় সেবিকাসহ চিকিৎসকদের। করোনার প্রকোপ বাড়লে অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে আছে দুশ্চিন্তা। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকতেও তা সময়োপযোগি কাজে আসছে না। বেডেই রোগী মারা যাবার শঙ্কায় থাকেন স্বজনরা। এ নিয়ে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়তে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সেবিকা বলেন, হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার কখন ফুরিয়ে যায় তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সিলিন্ডার টানাহ্যাচড়া করতে অনেক ঝামেলা হয়। মিটার নষ্ট হয়ে যায়। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড ও জরুরী বিভাগে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু থাকা খুবই প্রয়োজন। করোনা আসলে রোগীদের সঙ্গে নানা ধরণের তর্কে জড়িয়ে পড়তে হয়।

হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞা ডা. আলিমুজ্জামান সেতু বলেন, কেন্দ্রীয় অক্সিজেনসেবার ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে শিশু রোগীদের অনেক কষ্ট পেতে হয়। অক্সিজেনের অভাবে অনেক শিশু মারাও যায়। এখানে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ থাকলে এই ভোগান্তি থাকতো না। তিনি বলেন, সামনে কোভিড বেড়ে গেলে জটিলতা আরো বাড়বে।

জানা গেছে, ২০২১ সালের জুন মাসে সদর হাসপাতালে হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ চালু হয়। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০০ লিটারের অক্সিজেন ট্যাঙ্ক নির্মাণ করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। অক্সিজেন সরবরাহ কয়েকমাস চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেটা হাসপাতালের পেছনের দিকে লতাপাতার মধ্যে পড়ে আছে ট্যাঙ্কটি। হাসপাতালের ভিতরের সঞ্চালন লাইনে কোথাও মরিচা ধরেছে সকেটগুলো ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে বিভিন্ন বেডের বিছানার ওপর।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল গাফফার বলেন, এই কর্মস্থলে যোগদানের পর কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ট্যাঙ্কটিতে দুই দফায় অক্সিজেন ঢালা হয়েছে। কিন্তু ব্যবহারের আগেই অক্সিজেন ফুরিয়ে যায়। কোথাও লিকেজ আছে হয়তো । আমি কোম্পানীকে বিষটি জানিয়েছি। তারা ঠিক করেনি। উপায় না পেয়ে আমরা বোতল অক্সিজেন দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ কোম্পানীকেও জানিয়েছি। এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।


ভাঙা হচ্ছে যমুনা সেতুর রেলপথ

কমবে যানজট, হবে না ভোগান্তি
যমুনা নদীর উপর নির্মিত যমুনা সেতু থেকে অপসারণ করা হচ্ছে রেলপথ।
আপডেটেড ৪ জুলাই, ২০২৫ ২১:৩০
ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)

ঢাকার রাজধানীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কমপক্ষে ২৩ থেকে ২৬ টি জেলার একমাত্র প্রবেশপথ টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু। এটি যমুনা নদীর উপর নির্মিত। টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলাকে সংযুক্ত করেছে। চলতি বছরের ১৮ সার্চ যমুনা নদীর উপর নবনির্মিত যমুনা রেল সেতু উদ্বোধনের পর বাণিজ্যিকভাবে চালু হয় রেল চলাচল। ফলে যমুনা সেতুতে থাকা রেললাইন আর ব্যবহার হচ্ছে না, এটি এখন পরিত্যক্ত। তাই সেতুর ওপর থাকা পরিত্যক্ত রেললাইন সরিয়ে ফেলতে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে যমুনা সেতু বিভাগ। যমুনা সেতুর উপর সড়কপথকে আরও প্রশস্ত করতে নেওয়া হয়েছে এমন পদক্ষেপ।

যমুনা সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যমুনা সেতুর প্রতিটি লেনের প্রস্থ ৬ দশমিক ৩ মিটার। যেখানে প্রস্থ হওয়া উচিত ৭ দশমিক ৩ মিটার। রেললাইনটি সরিয়ে ফেললে যে সাড়ে ৩ মিটার অতিরিক্ত জায়গা পাওয়া যাবে, তা দুই লেনে ভাগ করে সড়কপথকে আরও প্রশস্ত করা যাবে। এতে করে ঈদের মতো যানবাহনের চাপে সৃষ্ট দীর্ঘ যানজট অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং যমুনা সেতু বিভাগ পৃথকভাবে রেললাইন অপসারণের জন্য প্রস্তাব দেয়। এরপ্রেক্ষিতে শুরু হয় এই অপসারণ প্রক্রিয়া।

এতে সেতুর উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার করে জায়গা বাড়বে। বর্তমানে সেতুর লেনগুলো প্রশস্ততা রয়েছে ৬ দশমিক ৩ মিটার। এটি সম্প্রসারণ করা হলে প্রশস্ততা বাড়বে। এতে সেতুর ওপরের যানজট ও জনদুর্ভোগ কমবে বলে আশা করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, যমুনা সেতুর পূর্বের সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য কারিগরি স্টাডির মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এটি কার্যকর করতে কিছু সময় লাগবে। অপসারণের কাজ শেষে রেললাইন ও অন্যান্য মালামাল রেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীতে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা সেতু উদ্বোধন করা হয় এবং ওই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে ঢাকার রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দেয়। পরে ট্রেনের গতিসীমা কমিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার করা হয়। এতে প্রতিটি ট্রেনকে সেতু পারাপার হতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগত। এ কারণে সেতুর দুই উভয় পাশে ট্রেনের জটলা বেঁধে যেত। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন পারাপার হতো। এই সমস্যার সমাধানে সরকার ২০২০ সালের যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজের সেতু। এটি ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যানে নির্মিত হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয় করা হয়।প্রথমে নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২ বছর বাড়ানো হলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থয়ান এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে। গত ২৬ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সেতুর পূর্ব প্রান্ত টাঙ্গাইল অংশে রেলপথের নাট-বোল্ট খুলে ফেলার মাধ্যমে অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়। এতে যমুনার সেতুর উপরসহ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক এবং সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা থাকবে না।


রাজবাড়ীতে ধানের খড় বিক্রি করে বছরে কৃষকের আয় তিনশ কোটি টাকা

আপডেটেড ৪ জুলাই, ২০২৫ ২০:৩৯
জহুরুল হক, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীতে এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলন ফলাতে উৎপাদন খরচও হয়েছে বেশি। বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় লোকসানের কথা বলছেন কৃষক। এদিকে চাহিদা বাড়ায় ধানের খড় বিক্রি করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন জেলার কৃষকেরা। আর কৃষি বিভাগ বলছে, রাজবাড়ীতে বছরে উৎপাদিত ধানের খড় বিক্রি হয় প্রায় তিনশ কোটি টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর তথ্যমতে, রাজবাড়ীতে এ বছর ১২ হাজার ৮৯২ হেক্টর জমিতে বোরো, ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে আউশ, ৫৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনসহ মোট ৬৯ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে। এর থেকে ফলন হয়েছে অন্তত ২ লক্ষ্য ৩৫ হাজার ৫২৯ মেট্টিক টন ধান।

রাজবাড়ীর বাজারে বর্তমানে ধান বিক্রি হচ্ছে ১১ শত থেকে ১৭ শত টাকা মন দরে। আর বিঘা প্রতি ধানের খড় বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৫ পাজার টাকা দরে।

আবার রাজবাড়ীতে ধান উৎপাদনের জমির পরিমাণ বিঘায় রূপান্তরিত করলে দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৮ হাজার ৪১৫ বিঘা। এ জমির খড়ের বাজার মূল্য অন্তত ২ শত ৬০ কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে রাজবাড়ীর বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখাযায়, ধান কাটা শেষ। রাজবাড়ীর মাঠে মাঠে এখন চলছে ধানের খড় শুকানো-বিক্রি ও মজুদ করনের কাজ।

গোয়ালন্দ উপজেলা চর কর্নেশনা এলাকার কৃষক আমজাদ মোল্লা বলেন, সার ওষুধ কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় ধান চাষে খরচও হয়েছে বেশি। বাজারে যে মূল্যে ধান বিক্রি হচ্ছে এতে লোকসানে পরব আমরা । তাই ধানের ক্ষেত থেকেই বিক্রি হচ্ছে খড়। বর্তমানে এক বিঘা জমির কাচা খড় ৩ হাজার আর শুকনো খড় বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা দরে। যা কিনে নিয়ে যাচ্ছে জেলার খামারিরা।

শামিম হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, ধান চাষে খরচ বেশি পরায় প্রতি বছরই লোকসানে পরেন তারা। তবে গত দুই বছর যাবত জেলায় খামারের সংখ্যা বেরে যাওয়ায় ধানের খড়েরও চাহিদা বেড়েছে। এ খড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তারা।

কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, এক বিঘা জমির ধান কাটতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার শ্রমিক প্রয়োজন হয়। খড় বিক্রি করে সেই টাকা উঠে আসে। তাই কৃষক ধানের সমান যত্ন খড়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও খড় শুকানোর পর মজুত করে রাখলে বর্ষা মৌসুমে চাহিদা আরো বাড়ে দামও বেশি পাওয়া যায়। তখন একটি স্তূপ (পালা) খড়ের দাম দাঁড়ায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।

এদিকে জেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে কাচা অবস্থায় খড় কিনে ঘোরার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে খামারীরা। খামারি স্বপন দাস বলেন, রাজবাড়ীতে দিন দিন খামারের সংখ্যা বাড়ছে। ধানের খড় কেটে টুকরো করে পানিতে ভিজিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়। আমরা এ মৌসুমে অন্তত ২০ লক্ষ্য টাকার খড় কিনে রাখব যা সারা বছর খামারের গরুগুলোকে খাওয়ানো হবে। আবার সেই গরুগুলোকে সামনে ঈদুল আযহায় বাজারে বিক্রি করা হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম রাসুল বলেন, রাজবাড়ীতে এ বছর ৬৯ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে বছরে ২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্টিক টন ধান আর সম পরিমাণ খড় উৎপাদন হয়ে থাকে। শুধু ধানের খড় বিক্রি করে জেলার কৃষক প্রায় ৩ শত কোটি টাকা আয় করেছে।


সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী

আপডেটেড ৪ জুলাই, ২০২৫ ২০:৩৫
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় সোনারগাঁ ইউনিয়নের চৌরাপাড়া কবরস্থানে এ বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করেন। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বিকেলে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।

বৃক্ষরোপন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল।

বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হাজি পিয়ার হোসেন নয়ন, যুগ্ম আহবায়ক আতিক হাসান লেনিন, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এজাজ ভূঁইয়া, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সানোয়ার হোসেন, যুবদল নেতা রুবেল নিলয়, সোনারগাঁ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ, উপজেলা ছাত্রদল নেতা মাসুদ রানা বাবু, আশিকুর রহমান আশিক, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

বৃক্ষরোপন শেষে সোনারগাঁ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের মাগফেরাত কামনা, দোয়া ও কবর জিয়ারত করেন।


সিকৃবিতে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ‘জুলাই ৩৬ গেইট’র উদ্বোধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি অম্লান রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ‘জুলাই ৩৬ গেইট’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) ফটকটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ.টি.এম মাহবুব-ই-ইলাহী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, হল প্রভোস্ট, রেজিস্ট্রার, দপ্তর প্রধানসহ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

‘জুলাই ৩৬ গেইট’ উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ৩৬ গেইটটি শুধু একটি গেইট নয়, এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ের এক নিরব সাক্ষী। তরুণদের জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণা যেন তারা ভুলে না যায়, কীভাবে অধিকার রক্ষায় মানুষ তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘শহীদদের স্মরণ ও তাদের আত্মত্যাগকে চিরস্থায়ীভাবে গেঁথে রাখার জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হয়েছে এই গেইট উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি আত্মত্যাগ ও একটি স্বপ্নের প্রতীক যে স্বপ্নে ছিল একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ।’

২৪ এর জুলাইয়ের শহীদ ও আহত বীর সন্তানদের প্রতি সম্মান জানিয়ে গেইটটির নাম ‘জুলাই ৩৬’ রাখা হয়েছে। নামটির প্রতিটি অংশে নিহিত আছে স্মৃতি ও প্রতিজ্ঞা। ৩৬ জুলাই কেবল অতীতের একটি দিন নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য এক অনুপ্রেরণা, যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ন্যায়বিচারের জয়কে চিরস্মরণীয় করে রাখবে।

সিকৃবির প্রধান প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন জানান সিকৃবির ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলামের প্রচেষ্টায় ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্থাপনাটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।


বেনাপোলে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যশোরের বেনাপোল বন্দর এলাকা থেকে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ এক ভারতীয় ট্রাক চালককে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাসপোর্ট আইনে মামলা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, পাসপোর্টগুলো দালালের মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে পাসপোর্টগুলোতে গত ২৪ জুন সার্বিয়ার ভিসা লাগানো হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) ভারতীয় ট্রাক চালক বেচারাম পরামানিকের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। ওইদিনই রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেনাপোল বন্দরে দায়িত্বরত আনসারের হাতে পাসপোর্টগুলোসহ ধরা পড়েন বেচারাম পরামানিক।

বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার কমান্ডার হেলালউজ্জামান বলেন, ভারত থেকে অবৈধপন্থায় বেশকিছু বাংলাদেশি পাসপোর্ট বেনাপোলে পাঠানো হচ্ছে- এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে তারা আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাকচালক বেচারাম পরামানিক একটি ব্যাগ হাতে কার্গোভেহিকেল টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তার ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। ওই ব্যাগেই ২০টি পাসপোর্ট ছিল। পরে পাসপোর্টগুলোসহ বেচারাম পরামানিককে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়।

পাসপোর্ট আটকের খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যান। তারা বোঝার চেষ্টা করেন যে এভাবে ভিসা লাগিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ইউরোপের কোন দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কি না।

তবে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল মিয়া বলেন, ইউরোপের অনেক দেশের ভিসা বাংলাদেশ থেকে নেয়া যায় না, ভারত থেকে নিতে হয়। কিন্তু ভারতের ভিসা না পাওয়ায় অনেকেই দালালের মাধ্যমে ভারতে পাসপোর্ট পাঠিয়ে ভিসা করিয়ে আবার দেশে নিয়ে আসছেন।

ওসি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, পাসপোর্টগুলোর মালিকরা শ্রমিক হিসেবে ইউরোপের কোন দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা করিয়েছেন। তিনি বলেন, যে কারণেই হোক না কেন, এভাবে পাসপোর্ট অন্যের মাধ্যমে আরেক দেশে পাঠিয়ে ভিসা করার প্রক্রিয়াটাই বেআইনী। সেকারণে এ ব্যাপারে পাসপোর্ট আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।

আটক হওয়া ২০টি পাসপোর্টের মালিকরা হলেন: ঢাকার দানেশ আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম, গাজীপুরের আব্দুর রশিদের ছেলে আবুল হোসেন, মানিকগঞ্জের আবুল কাশেমের ছেলে শরিফুল ইসলাম, নোয়াখালীর আব্দুল মোতালেবের ছেলে আব্দুল কাদের, আলাউদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ, সাহেব উদ্দীনের ছেলে আব্দুর রহিম, অমল চন্দ্র দাসের ছেলে রুপম চন্দ্র দাস, সাতক্ষীরার রেজাউল ইসলামের ছেলে তানভীর হাসান, নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেনের ছেলে পলাশ হোসেন, নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে জাকারিয়া, ইউনুচের ছেলে আবু সাঈদ, ফেনির মোরশেদ আলমের ছেলে আব্দুল করিম, নরসিংদীর বাতেন মিয়ার ছেলে ফাইম মিয়া, চাঁদপুরের মনোহর গাজীর ছেলে মোজাম্মেল হোসেন, নোয়াখালীর রফিউল্লাহর ছেলে ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জের রিপন মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া, ঢাকার আব্দুল মজিদের ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাজি আব্দুল মান্নানের ছেলে ইসহাক ও সাতক্ষীরার খলিল গাজীর ছেলে হুমায়ুন কবীর।


আফগান সীমান্তে ৩০ জঙ্গিকে হত্যার দাবি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুক্রবার জানিয়েছে, তারা গত তিন দিনে আফগানিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করা ৩০ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। এর আগে গত সপ্তাহে একই সীমান্ত এলাকায় একটি আত্মঘাতী হামলায় ১৬ জন সৈন্য নিহত হয়।

সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সেনাবাহিনী অসাধারণ পেশাদারিত্ব, সতর্কতা ও প্রস্তুতির পরিচয় দিয়েছে এবং একটি বড় বিপর্যয় রোধ করেছে।’

বিবৃতিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে জঙ্গিদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।


banner close