পঞ্চগড় সীমান্তে চোরাচালানবিরোধী অভিযানে ২৯ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল জব্দ করেছে ৫৬ বিজিবি। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে বোদা উপজেলার হারিভাসা ইউনিয়নের ব্রমতল এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বিজিবি জানায়, বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের তথ্যে অধিনায়ক, নীলফামারী ব্যাটালিয়নের (৫৬ বিজিবি) নির্দেশনায় ঘাগড়া বিওপির একটি বিশেষ টহল দল হাবিলদার আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে সীমান্ত পিলার ৭৫৪/২-এস-সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাচালানকৃত ২৯ বোতল ফেনসিডিল মালিকবিহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ফেনসিডিলের আনুমানিক মূল্য ১১ হাজার ৬০০ টাকা।
৫৬ বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান, নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। মাদকদ্রব্যসহ চোরাচালান রোধে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের ৬ মাসের মাথায় ধসে পড়েছে দুপাশের সংযোগ সড়ক। এতে করে প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এমন চিত্র দেখা যায় উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী ঘোড়ামারা বাজার-সংলগ্ন এলাকায় নবনির্মিত ব্রিজটিতে।
এলাকাবাসীর দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজের দুপাশের সংযোগ সড়কটি সংস্কার করে ঝুঁকিমুক্ত করা হোক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের ঘোড়ামারা বাজার-সংলগ্ন ঝিনাই শাখা নদীর ওপর ৬ মাস আগে নির্মাণ করা হয় ১৪০ মিটার গার্ডার ব্রিজ ও দুপাশে ৩৫০ মিটার সংযোগ সড়ক।
যার কাজ পান জামালপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। ব্রিজটি নির্মাণ করতে খরচ হয় ১১ কোটি ৩৫ লাখ ২২ হাজার ১৩৬ টাকা। এই ব্রিজ দিয়ে উপজেলার আদ্রা, চর রৌহা ও পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু নির্মাণের ৬ মাসের মাথায় ব্রিজটির দুপাশের সংযোগ সড়ক ধসে পড়ে। এতে করে ব্রিজের দুপাশে তৈরি হয় বিশাল গর্ত। সংযোগ সড়কের এ অবস্থার কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় যানবাহন ও স্থানীয়দের। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে নানা যানবাহনের দুর্ঘটনা। তবে ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এমনটি হয়েছে বলে দাবি করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় আলতাফ হোসেন, নাসিম আহাম্মেদ, বৃদ্ধা সমিরন বেওয়া ও শিক্ষার্থী সাকিবসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, নিম্নমানের কাজ করার কারণে যখন ব্রিজটি কাজ করা হয় তখনই এলাকাবাসী বাধা দিয়ে ছিল। তবুও আ. লীগের ঠিকাদার ফারুক চৌধুরীর লোক ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে কাজটি করে যায়। এখন আমরা কাজের বাস্তব প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। ৬ মাস পার না হতেই এখনই সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। ঠিকদার খুবই নিম্নমানের কাজ করছেন। এলাকাবাসী খুব ভয়ের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করে। গর্তের ভেতরে অনেক মানুষ পড়ে গিয়ে আহতও হয়েছে। শুকনো মৌসুমে এমন অবস্থা হলে বন্যার সময় আসলে এই ব্রিজের অবস্থা খুব ভয়াবহ হবে। দ্রুত ব্রিজের সংযোগ সড়ক মেরামত করে মানুষের চলাচলের সু-ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
সরিষাবাড়ী উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া তমাল বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। আমি এসে ব্রিজটির কাজ সম্পূর্ণ পেয়েছি। ব্রিজটি ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত কাজ করে চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। সংযোগ সড়কের ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদেরকে একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা পলাতক থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। আশা করি অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সমাজের নানা অনিয়ম বন্ধের অঙ্গীকার নিয়ে সুনামগঞ্জে দিনব্যাপী হাইকিং ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জেলা স্কাউটস। সচেতন নাগরিকদের প্ল্যাটফর্ম সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগ ও জেলা স্কাউটসের যৌথ আয়োজনে শহরজুড়ে এই ব্যতিক্রমী প্রচারণা চালানো হয়। এতে জেলার ৮টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্কাউট সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
সকাল থেকেই স্কাউট সদস্যরা নির্দিষ্ট পোশাকে সুশৃঙ্খলভাবে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করেন। কর্মসূচিকে কার্যকর করতে অংশগ্রহণকারীদের পাঁচটি পৃথক দলে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি দল শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এবং জনবহুল এলাকাগুলোতে প্রচার অভিযান চালায়। নারী নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন ও ইভ টিজিং প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ বন্ধ এবং শিশুশ্রম নিরসনে জনমত গঠন, শিশু অধিকার সুরক্ষা ও
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং খাদ্য ও স্বাস্থ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয় শহরের বিভিন্ন মোড়ে নির্ধারিত বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্কাউট সদস্যদের এই প্রচারণা সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক কৌতূহল ও প্রশংসার সৃষ্টি করে।
কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন জেলা স্কাউটসের
নেতারা ও জনউদ্যোগের সদস্যরা। বক্তারা বলেন, স্কাউটিং শুধু শখের বিষয় নয়, এটি সমাজ পরিবর্তনের একটি হাতিয়ার। তরুণেরা যদি সচেতন হয়, তবে সমাজ থেকে নারী নির্যাতন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণ ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত, ইভ টিজিং প্রতিরোধ ও যৌন নিপীড়নের মতো ব্যাধি দূর করা সম্ভব।
সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন ও নিরাপদ সুনামগঞ্জ। স্কাউট সদস্যরা তাদের হাইকিংয়ের মাধ্যমে আজ যে বার্তা মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়েছেন, তা ভবিষ্যতে সুন্দর সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।’
জেলা স্কাউটসের কমিশনার কানন বন্ধু রায় বলেন, ‘জনউদ্যোগ ও জেলা স্কাউটসের যৌথ আয়োজনে হাইকিং কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কম্পাস ধরে স্কাউটস সদস্যরা শহরে সচেতনতামূলক প্রচারণা করেছেন। ভবিষ্যতে এ রকম কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কর্মসূচিকে প্রাণবন্ত করে তোলেন সুনামগঞ্জ
জনউদ্যোগের সদস্য বুরহান উদ্দিন, জেলা স্কাউটসের সাধারণ সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ মো. আব্দুস সাত্তার আজাদ, কোর্স লিডার মৃদুল চন্দ্র তালুকদার, প্রশিক্ষক বিপ্লব কেতন চ্যাটার্জি, মো. এমরান আলী, দীলিপ চন্দ্র মজুমদার ও আবুল কাসেম আজাদ, জামালগঞ্জ উপজেলা স্কাউটসের সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তার হোসেন এবং সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের ইউনিট লিডার লিটন রঞ্জন তালুকদার প্রমুখ।
ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি কল্পে নেত্রকোনায় ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলা শুরু হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষি মেলার শুভ উদ্বোধন করেন নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিরুল ইসলাম।
নেত্রকোনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিকের সভাপতিত্বে সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা রাখী পোদ্দারের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেহনুমা নওরীন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মো. মোকসেদুল হক, সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আশরাফুল্লাহ, জেলা প্রেসক্লাবের সম্পাদক মাহবুবুল কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম প্রমুখ।
৩ দিনব্যাপী এই কৃষি মেলায় ১০টি প্রদর্শনী স্টলে বিভিন্ন প্রজাতির ফল, গাছের চারা ও কৃষি উপকরণ প্রদর্শন করা হয়েছে।
যশোরের মনিরামপুরে বাদুরের মাংস খাওয়ার পর একই পরিবারের ৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে খাবার গ্রহণের পর থেকেই তারা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। পরদিন সকালে তাদের অচেতন অবস্থায় ঘরের ভেতরে পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঘটনাটি ঘটে মনিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে। অসুস্থ ৬ জন হলেন সুভাষ দাস (৪০), তার স্ত্রী সখি দাস (৩৫), তাদের দুই ছেলে ইন্দ্রজিত দাস (২০) ও হৃদয় দাস (১৫), তারাপদ দাসের ছেলে রবিন দাস (৬০) এবং দিলীপ দাসের ছেলে অজয় দাস (২০)। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টা ২২ মিনিটে তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থদের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে তারা একসঙ্গে বাদুরের মাংস দিয়ে ভাত খান। রাতের মধ্যেই শরীর খারাপ হতে থাকে এবং একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত রোববার সকালে তাদের প্রথমে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
তবে অসুস্থ পরিবারের সদস্যদের দাবি, তারা বাদুরের মাংস খেয়ে অসুস্থ হননি। তাদের অভিযোগ, খাবারের সঙ্গে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিকর কোন দ্রব্য মিশিয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি তারা আরও অভিযোগ করেন, অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে না থাকার সুযোগে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা নগদ টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. বিচিত্র মল্লিক জানান, বাদুরের মাংস খাওয়ার পর নারীসহ ৬ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে তারা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
আমদানি বাড়ায় সাতক্ষীরা শ্যামনগর বাজারগুলোতে শীতের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। নকিপুর, বংশিপুর, নওয়াবেকী কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
শীতের সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, পেঁয়াজকলি, কাঁচামরিচ ও আলুর। তবে মাছ ও মাংসের দাম এখনো চড়া রয়েছে।
বাজারের ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রতি কেজি বেগুন ৫০–৬০ টাকা, ফুলকপি ২৫–৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫–৩০ টাকা, সিম প্রকারভেদে ৩০–৫০ টাকা, পেঁপে ৩০–৩৫ টাকা, মুলা ৩০–৪০ টাকা, ধুন্দুল ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫–৪০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০–৮০ টাকা, আলু ২০–৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০–৯০ টাকা এবং রসুন ৮০–১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিম, মাছ ও মাংসের দামে তেমন কোন পরিবর্তন নেই। সাদা ডিম প্রতি হালি ৩৬–৪০ টাকা এবং লাল ডিম প্রতি হালি ৪০–৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ইলিশ মাছ আকারভেদে ৮৫০–১৪০০ টাকা, হরিণা, চাকা ও চালি চিংড়ি ৫৫০–৬৫০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৮০০–১২০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৯০০–১২০০ টাকা, দেশি কই মাছ ১০০০–১২০০ টাকা, শিং মাছ ৯০০–১২০০ টাকা, ভেটকি ৫৫০–৭০০ টাকা, রুই ২৫০–৩৫০ টাকা, কাতলা ৩০০–৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০–২০০ টাকা এবং পাঙাশ ২০০–২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৪০–১৫০ টাকা, কক ও সোনালি মুরগি ২৩০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০–৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১০০০–১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মো. ইসমাইল হুসাইন বলেন, শীতের মৌসুমি সবজির দাম কমেছে। কিছুদিন আগেও এসব সবজির দাম অনেক বেশি ছিল। দুই থেকে তিনশ টাকার বাজারে তেমন কিছু পাওয়া যেত না। এখন একই টাকায় ব্যাগ ভরে যায়।
নকিপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা মনির বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। সামনে দাম আরও কমতে পারে।
বাজার করতে আসা নারী উদ্যোক্তা পারভীন. সাবিনা বলেন, অনেক সবজির দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। সারাবছর এমন দাম থাকলে সাধারণ মানুষের জন্য খুবই স্বস্তির হতো।
ব্যাংক কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন বলেন, আগে মাছ-মাংসের মতো সবজি কিনতেও হিসেব করে বাজার করতে হতো। এখন সবজির দাম কমায় সে চাপ নেই। তবে মাছ-মাংসের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। দাম কমলে পুষ্টিকর খাবার আরও নিয়মিত খাওয়া সম্ভব হতো।
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের সিরাজনগর নয়াচর উত্তরপাড়া গ্রামে এক ভাই তার দুই বোনের চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন ১০ ফুট দেওয়াল তুলে। এতে নিজ ঘরে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বাবা-মা হারা দুই বোন। এক বছর ধরে চলছে দুই বোনের বন্দিজীবন।
জানা গেছে, ওই গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে কামরুজ্জামান কামাল তার স্ত্রীর কুপরামর্শে তারই সহোদর ছোট বোন প্রতিবন্ধী কামরুন্নাহার ও তাছলিমা বেগমের বাড়ির পাশে দেওয়াল তুলে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের আয় রোজগারের পথও।
এদিকে, প্রতিবন্ধী কামরুন্নাহারকে চলাফেরা করতে হয় হামাগুরি দিয়ে। কারণ কামরুন্নাহারের জন্মের এক বছর পর পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে তার দুটি পা বিকল হয়ে যায়।
কামরুন্নাহার জানান, তার বাবার মৃত্যুর আগে তার এবং তার বড় বোন তাছলিমা বেগমের নামে দেড় শতাংশ জমি লিখে দিয়ে যায়। এই দেড় শতাংশ জমিই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে কামরুন্নাহার ও তার বোন তাছলিমা বেগমের জীবনে। কামরুন্নাহার প্রতিবন্ধী হওয়ায় কেউ তাকে বিয়ে করতেও আসেনি। তাই একমাত্র জীবন রক্ষার তাগিদে বেছে নেয় সেলাইয়ের কাজ। মানুষের কাপড় সেলাই করে যা কিছু আয় হতো তা দিয়ে দুই বোন কোনোরকমে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু ছোট ভাই কামাল বাবার দেওয়া দেড় শতাংশ জমি লিখে না দেওয়ায় কামরুন্নাহারের বসত-ঘরের পাশে দেওয়াল দিয়ে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এলাকার কেউ তার কাছে কাপড় সেলাই করতে আসে না। এতে রোজগারের পথও বন্ধ।
এদিকে ভাইয়ের এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কামরুন্নাহার রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং রায়পুরা থানা পুলিশকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করার পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক বসলেও কামরুজ্জামান কামাল তা মেনে নেয়নি। এক বছরের মধ্যে কেউ খুলে দিতে পারেনি তাদের যাতায়াতের পথ। তাই নিজ ঘরেই এক বছর বন্দি তাছলিমা বেগম ও কামরুন্নাহার।
তাছলিমা বেগম জানান, তারা এক ভাই পাঁচ বোন, বোনদের মধ্যে কামরুন্নাহার তৃতীয়। তার বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারে এ পরিবারের মধ্যে উপার্জনশীল ব্যক্তি কেউ ছিল না। তাছলিমা তার পরিবারের দিকে চিন্তা করে বিয়ে করেননি। সংসারের বোঝা তাকে একাই টানতে হয়েছে। পরে সংসারের উন্নতির লক্ষ্যে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে ভাই কামালকে বিদেশে পাঠান। কিন্তু সেখানে গিয়ে সে বোনদের কথা ভুলে যায়। ১৪ বছর কামাল বিদেশে অবস্থান করলেও বাড়িতে একটি কানাকড়িও দেয়নি। সে অপরের স্ত্রীর পাল্লায় পরে তাকে সবকিছু দিয়ে দেয়। পরে কামাল বাড়িতে এসে ওই মহিলাকে বিয়ে করে। এরপর থেকেই শুরু হয় সংসারে অশান্তি। সে বাবার দেওয়া দেড় শতাংশ জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য আমাকে এবং আমার বোনকে প্রস্তাব দেয়। আমরা এতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে আমাদের ওপর শারীরিক এবং মানষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে।
তাছলিমা বেগম আরও বলেন, ‘মা-বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই ভাই আমাদের সম্পত্তির দিকে নজর দেয়। সম্পত্তি লিখে না দেওয়ার কারণে প্রায় এক বছর আগে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই ঘরে বন্দিজীবন কাটাচ্ছি। মই বেয়ে বাইরে যাই, কিন্তু ছোট বোন একেবারেই ঘর থেকে বের হতে পারছে না। মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েও সমাধান পাইনি।’
ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক বলে উল্লেখ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য গাজী মাজহারুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘চেয়ারম্যানসহ আমরা কয়েকবার মীমাংসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। তাদের বাড়িতে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। ১০ ফুট উঁচুতে মই ব্যবহার করে তারা যাতায়াত করে। কামাল কাউকে মানে না। একমাত্র প্রশাসনের মাধ্যমেই এ সমস্যা সমাধান সম্ভব।’
তবে বোন তাসলিমার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করেছেন তার ভাই কামরুজ্জামান কামাল। তিনি বলেন, ‘সে আমার জায়গায় বাড়ি নির্মাণ করেছে। তার জায়গা খালি রয়েছে। সে আমার কথা রাখেনি। এছাড়া বিচারকদের রায় না মেনে সে আমার বিরুদ্ধে উল্টো আদালতে মামলা করেছে। প্রতিবন্ধী বোনকে আমি আমার সঙ্গে থাকার প্রস্তাব দিয়েছি। সে বোনের সঙ্গেই থাকবে বলে আমাকে বলেছে। তাহলে আমার কী করার আছে।’
রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘কারও রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার এখতিয়ার কারও নেই। কিন্তু জমি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আদালতে মামলা চলমান। তাই আদালতকে উপেক্ষা করে এই বিষয়ে সিদ্বান্ত দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। তবে এই বিষয়ে তাদের সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছি। তারা কেউই তা মানে না।’
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আগুনে ১৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা হাবিবপুর ঈদগাহ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুনে ১৫টি দোকানের আসবাবপত্রসহ প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকান মালিকরা। সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ঈদগাহ এলাকা মুজিবুর রহমানের ভাঙারি দোকান থেকে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল পৌঁনে চারটার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। একে একে ফার্নিচার দোকান, মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান, খেলনার দোকান, স্টিলের আলমারির দোকানসহ ১৫টি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে।
দোকান মালিকদের দাবি, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে কিছু মালপত্র বের করতে পারলেও সব কিছু বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক মালপত্র পুড়ে যায়। আগুনে তাদের ১৫টি দোকানের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ও এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহন করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে তারা অর্থনৈতিকভাবে বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছেন।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ের মালিক রিয়াদ হোসেন জানান, আগুনের কারণে তার দোকানের সকল মালপত্র পুড়ে যায়। এতে করে তার প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সোনারগাঁও ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন অফিসার ওসমান গণি জানান, একটি ভাঙারি দোকান থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তাদের দুটি ইউনিট প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে নিয়েছেন।
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। ঘণ্টাব্যাপী আগুনে প্রায় ১৫টি দোকান পুড়েছে।
কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণের জন্য জমি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা একাজে সহযোগিতা করছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এবার কেশবপুর উপজেলায় ৬৫৭ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোপুরি ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো আবাদের জন্য সরকারের দেওয়া বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয় ৩ হাজার কৃষককে উন্নত মানের এই বীজ সরবরাহ করেন কৃষি অফিস।
এবার কেশবপুর উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়। এবার অনাবাদি কত হেক্টর জমি থাকতে পারে এখন কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়নি।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকরা খেতে গরুর বদলে মই টানছে মানুষ। আবার কেউ কেউ ইরি বোরো রোপণ ও রোপণের জন্য জমিতে পরিচর্যার কাজ করছে। জানা গেছে এক সময় এ এলাকার কৃষকদের ঘরে ঘরে গরু, জোয়াল এবং লাঙলসহ কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল। কৃষকের জমি চাষের সঙ্গে গরু ও মহিষের সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকে। সাধারণত কৃষিজমিতে গরু দিয়ে টানা লাঙলে জমি চাষ ও মই দিয়ে চাষের জমি সমান করে ফসল লাগানো হয়ে থাকে। আধুনিক যুগে এসে যোগ হয়েছে ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর। গ্রামাঞ্চলে কৃষকের বড় পরিচয় ছিল যার বাড়িতে গরু, লাঙল ও মই আছে।
কথা হয় বোরো খেতে গরুর বদলে মই টানতে থাকা উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জমি চাষাবাদ করে ছয়-আট সদস্য পরিবারের সংসারের সারা বছরের জোগান দিতে হয়। কিন্তু আমাদের এলাকায় ইরি বোরো চাষ ছাড়া অন্য ফসল তেমন না হওয়ায় হালের গরু পালন করা হয় না। আগে আমারও হালের বলদ ছিল। সারা বছর গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয় তা দিয়ে আমাদের মতো কৃষকের গরু পোষা সম্ভব না। এখন বিচালীসহ গো খাদ্যের অনেক দাম। গরু দিয়েই খেতে মই দিতে হয়। বর্তমানে আমার হালের বলদ না থাকাই সকাল থেকে নিজেরায় খেতে মই টানছি।’
কৃষক হাবিবুর রহমান হবির ছেলে আবদুল মাজিদ বলেন, ‘বাগদহা বিলে ৬ বিঘা জমিতে আমরা চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষ করব। সকল জমিতেই গরুর বদলে নিজেদেরই মই টানতে হবে।’ মই টানতে সহযোগিতা করতে আসা কৃষক আবদুল জলিল বলেন, ‘গরুর বদলে মই টানতে তিনজন মানুষের প্রয়োজন। একজন দিয়ে মই টানা অসম্ভব। তাই প্রতিবেশী হিসেবে আরেক কৃষককে সহায়তার জন্য মই টানার কাজে আমি তাদের সাহায্য করতে এসেছি।’ বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, তিনি ওই গ্রামের একজন ভালো কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইরি-বোরো আবাদ করে আসছেন। এবারও তিনি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এলাকায় হালের বলদ না পাওয়ায় নিজেরা খেতের মই দিতে হচ্ছে। ফতেপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘আগে হাল চাষের জন্য প্রত্যেক কৃষকের ঘরে গরু, লাঙল ও মই থাকত। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরু টানা লাঙল ও মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে পড়ে না।’ কেশবপুর থেকে হালের বলদ প্রায় বিলুপ্তির পথে। সে কারণে তিনি নিজে ও ভাইদের সহযোগিতায় চলতি বোরো মৌসুমে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা ৭ বিঘা জমির উঁচু-নিচু অংশসহ চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছেন। কিন্তু গ্রামবাংলার কৃষকের গরু দিয়ে টানা হাল, মইয়ে জমি তৈরিতে সময় লাগত। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরুর টানা লাঙল, মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে না পড়লেও ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমির উঁচু-নিচু অংশ বা চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছে মানুষ। মইয়ে হালকা কিছু ওজন দিয়ে তা দুজন কিংবা একজন টেনে জমির প্রয়োজনীয় অংশ দ্রুত সমান করে ফেলছে। এলাকার কৃষকরা জানান, পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমিতে চাকার দাগ থাকায় তা সমান করতে নিজেরা মই টেনে সমান করেছেন। ওই এলাকার আবুল হোসেন বলেন, ‘তার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চারা রোপণের পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে নেওয়ার পর নিজেরাই মই টেনে জমি সমান করে চারা রোপণ করছেন।’ ব্রহ্মকাটি গ্রামের কৃষক জামাল সরদার, হামিদ সরদার, আনিছুর সরদার, রামচন্দ্রপুর গ্রামের ময়েজউদ্দিন, আব্দুল সরদার, সুজাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুজনসহ আরও অনেক কৃষকরা এ প্রতিনিধিকে জানান, আধুনিক যন্ত্র দিয়ে দ্রুত জমি চাষ হওয়ায় এখন গরুর লাঙল, মই হারিয়ে যাচ্ছে। গরুর বদলে বিকল্প হিসেবে মানুষই মই টেনে জমি সমান করে নিচ্ছে। এমন দৃশ্য উপজেলার প্রায় সব জায়গায়। তারা আরও বলেন, এই উপজেলাজুড়ে কৃষকরা ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এবার কেশবপুর উপজেলায় ৬৫৭ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। গত বছর উপজেলায় ১৩ হাজার ১ শত হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ হয়। এবার ১৩ হাজর হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।’
শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংঠন মুক্তাঞ্চলের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নানা উৎসাহ উদ্দীপনায় সংগঠনের সব সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শোভাযাত্রাটি উপজেলা চত্বর থেকে রৌমারী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়। সংগঠনের পরিচালক প্রভাষক আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভা যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন, জনাব শহীদ রেজাউল কবির সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রৌমারী সরকারি কলেজ, আব্দুর রাজ্জাক উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক ও রৌমারী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মজিবর রহমান বিএসসি (অব.) শিক্ষক, প্রভাষক আবদুল হাই, প্রভাষক আনজুমানারা, রেজাউল ইসলাম রিজু, শিক্ষার্থী, শিল্পী ও সাংবাদিক প্রমুখ।
খুলনার এনসিপি বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পর সম্ভাব্য পলাতক আসামিরা যাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালাতে না পারে, সে লক্ষ্যে বেনাপোল সীমান্তে কড়া নজরদারি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) সূত্র জানায়, ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ মেইন পিলার ১৮/১ এস থেকে ৪৭/৩ এস পর্যন্ত প্রায় ৭০.২৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি ও নজরদারি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে টহল, গোয়েন্দা নজরদারি এবং অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেসব সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেসব এলাকা কার্যত সিলগালা করা হয়েছে।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, মোতালেব শিকদারের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতরা যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত অতিক্রম করে পালাতে না পারে, সে জন্য বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সীমান্তের প্রতিটি পয়েন্টে তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ১নং সদস্য মানিকগঞ্জ-১ ( দৌলতপুর-ঘিওর-শিবালয়) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষের ভোট চাইতে হবে। আমরা সবাই ধানের শীষের লোক। বেদাভেদ ভুলে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হবে। ধানের শীষ বিজয়ী হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার খলসী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির উদোগে বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্বাস্থ্য ও রোগমুক্তি কামনায় দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও নির্বাচনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এস.এ জিন্নাহ কবির এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
খলসী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং দৌলতপুর উপজেলার বিএনপির সহসভাপতি মো. লোকমান হোসেন, জেলা কৃষকদলের সিনিয়র সহসভাপতি মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঘিওর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জামান মানিক, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান আনিস, ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলার বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ নোমানী, ব্যারিস্টার জয়দুল করিম নয়ন, বাঘুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, খলসী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া, ঘিওর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জানে আলম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান কুদরত, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইউসুফ আলী প্রমুখ।
দেশব্যাপী মব সন্ত্রাসে উদীচী-ছায়ানট, প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট, সাংবাদিক নিপীড়ন, পিটিয়ে মানুষ হত্যা, জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে পাবনায় প্রতিবাদী অবস্থান করেছেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সুশীল সমাজের নেতাকর্মীরা। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক প্রেসক্লাবের সামনে সাংস্কৃতিক কর্মী মির্জা রানার আয়োজনে আহ্বান ঘণ্টাব্যাপী এ প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেশের চলমান সহিংসতা মাধ্যমে গুম, খুন, লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও এবং মব সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার প্রতিবাদে হুশিয়ারি দেওয়া হয়। এবং সেইসাথে এসব অরাজকতার বিরুদ্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক কর্মী ভাস্কর চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম হীরা, ফিরোজ খন্দকার, দিবাকর চক্রবর্তী, তিমির হায়দার, আবদুল হাফিজ রতন, বিপ্লব ভৌমিক, সামুন সাব্বির সহ পাবনার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সুশীল সমাজের নেতাকর্মীরা।