বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
৮ পৌষ ১৪৩২

প্রত্যন্তে আলো ছড়াচ্ছে মুজিবুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার

পাঠাগারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন উদ্যোক্তা আলমগীর কবির। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৮:০০

প্রত্যন্ত এলাকার একটি বাজারে গড়ে উঠেছে আধুনিক পাঠাগার। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাঠাগারে টেবিল, শেলফ ও আলমারিতে থরে থরে সাজানো বই। চার হাজার বইয়ের পাশাপাশি পাঠাগারটিতে রয়েছে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে শিক্ষার ব্যবস্থা।

নওগাঁর সীমান্তবর্তী ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের আগ্রাদ্বিগুন বাজারের এই গ্রন্থাগারটির প্রতিষ্ঠা মাত্র দুই বছর আগে। এই দুই বছরের মধ্যেই পাঠাগারটি এলাকাবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বইপ্রেমীরা এখন ভিড় জমাচ্ছেন এই পাঠাগারে।

পাঠাগারটির উদ্যোক্তা স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর কবির। নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে পাঠাগার তৈরির কার্যক্রম শুরু করেন। প্রায় ১ হাজার ২০০ বর্গফুট জায়গার ওপর গড়ে তুলেছেন এই পাঠাগার। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান টানা ১৭ বছর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি মারা যান। বাবার নামেই পাঠাগারের নামকরণ করেছেন তিনি। ‘মুজিবুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার’এখন স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গ্রীন ভয়েস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা পরিবেশবিদ হিসেবেও সুনাম অর্জন করেছেন আলমগীর কবির।

কথা হয় পাঠাগারে বই পড়তে আসা স্থানীয় আগ্রাদ্বিগুন বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র রুবেল হোসেনের সঙ্গে। তার ভাষ্য, ইউনিয়ন পর্যায়ে এত সুন্দর পাঠাগার পাব, তা কখনো কল্পনাও করিনি। অবসর সময়ে আমরা এখানে এসে জ্ঞান অর্জন করে থাকি। অনেক সুন্দর ও চমৎকার একটি পাঠাগার।

মুসফিকা আক্তার নামের শিক্ষার্থীর বক্তব্য, আমি সত্যিই মুগ্ধ এমন একটি পাঠাগার স্থাপন করায়। আমরা প্রতিদিনই কয়েকজন এখানে বই পড়তে আসি। এখানে এসে বই পড়তে আমাদের খুব ভালো লাগে।

স্থানীয় তরুণ জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘ইতিহাস, সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ, খেলাধুলাসহ সব ধরনের বই এই পাঠাগারে রয়েছে। প্রত্যন্ত একটি এলাকায় এমন পাঠাগার পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।’

পাঠাগার গড়ে তোলার উদ্যোগ প্রসঙ্গে আলমগীর কবির দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জ্ঞান চর্চার অভাবে আমাদের সমাজে প্রগতিশীল মানুষের বড়ই অভাব। প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেমেয়েদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে এমন উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের পাঠাগারে প্রায় চার হাজারের মতো বই আছে। আমাদের ইউনিয়নে মোট ৪২টি গ্রাম আছে। প্রতিটি গ্রাম থেকে দুই-তিনজন নিয়ে টিম করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তারা পড়ার জন্য পাঠাগারে আসবে। কবি, সাহিত্যিকদের জীবনী, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে। পাঠাগারটি সবার জন্য উন্মুক্ত।’

আলমগীর কবির জানালেন, বাবা মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর চার ভাই মিলে বাবার নামে একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন। সেই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২০১৫ সাল থেকে অসহায় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের পাশাপাশি নানা ধরনের সামাজিক কাজ করছেন তারা। এবার সেই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকেই তৈরি করা হয়েছে ‘মুজিবুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার। বই, ডেকোরেশনসহ এই পাঠাগার স্থাপনে প্রায় ১৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রাখা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। পাঠাগারে একসঙ্গে ৪০-৫০ জন বসে বই পড়তে পারেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলমগীর কবির বলেন, ‘উপজেলায় ১৩৯টি প্রাথমিক ও ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১৪টি মাদ্রাসা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ২২-২৫ জন ছাত্রছাত্রী বাছাই করে দেবেন, যাদের সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে নিজস্ব পরিবহন দিয়ে লাইব্রেরিতে নিয়ে আসা হবে। তারা পছন্দমতো বই পড়বে।’

এ উদ্যোগের প্রশংসা করে নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক শরিফুল ইসলাম খান দৈনিক বাংলাকে বলেন, একটি পাঠাগারে যে ধরনের পরিবেশ থাকা দরকার তার মোটামুটি সবই সেখানে আছে।

ধামইরহাট উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় এমন একটি পাঠাগার সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে অবশ্যই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে।


নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে গোলাগুলি, নিহত ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নোয়াখালী উত্তর প্রতিনিধি

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় গুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮-১০জন। তাৎক্ষণিক পুলিশ নিহত একজনের নাম ঠিকানা জানাতে পারলেও অপর ৪ জনের নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চর গ্রামে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে, আলাউদ্দিন (৪০) উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়। অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ।

তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে অপর পক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, একটি মরদেহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ময়না তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।


নাশকতার উদ্দেশে সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে আগ্নেয়াস্ত্র  

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে বিজিবি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো একটি পক্ষ দেশে নাশকতার উদ্দেশে এসব অস্ত্র নিয়ে আসছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবির সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা বিওপির রাঘববাটি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান জানান, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল, অতিরিক্ত চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হয়। সীমান্ত থেকে প্রায় ৯০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাঘববাটি এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশি অস্ত্র প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে সকালে রাঘববাটি এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবির একটি টহল দল।

অভিযানকালে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তাকে ধাওয়া করলে তার সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ফেলে দ্রুত সীমান্তের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ব্যাগটি উদ্ধার করা হয়। ব্যাগের ভেতর কালো পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি ম্যাগাজিন ও ৫ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। তিনি আরও জানান, এর আগেও গত ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে পৃথক একটি বিশেষ অভিযানে ৫৩ বিজিবি ৪টি বিদেশি পিস্তল, ৯টি ম্যাগাজিন এবং ২৪ রাউন্ড গুলি জব্দ করেছিল।

বিজিবি অধিনায়ক আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো একটি পক্ষ দেশে নাশকতার উদ্দেশে অস্ত্র নিয়ে আসছে।


ঈশ্বরদীতে ৮ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

* পুলিশ-সেনাবাহিনীর ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

ঈশ্বরদীতে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য স্বতন্ত্র পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ৮ দফা দাবিতে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে পুরো শহরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছিল শহরবাসী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পৌর শহরের আলহাজ মোড়ের প্রধান ফটক ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এতে যানজটে পুরো শহর অচলাবস্থা হলে তাৎক্ষণিক পুলিশ-সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন ও দাবি পূরনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে বলে জানালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনীর ধাওয়াতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিতে বললে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। মূহুর্তের মধ্যে পুরো এলাকা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এতে শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিতি ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমারকে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে দৌড়ে পালানোর সময় সড়কে পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশবাহিনী লাঠিচার্জ করে প্রায় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সেই সঙ্গে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার এবং ঈশ্বরদী কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করছি।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, তারা প্রায় ৩ ঘণ্টা শহরের মূল পয়েন্ট অবরোধ করে তীব্র যানজট সৃষ্টি করে। তাৎক্ষণিক আমরা গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলে কয়েকজন শিক্ষার্থী স্লোগান দিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এ সময় উপস্থিত পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে যানজট নিরসন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও শিক্ষার্থীরা নিজ প্রতিষ্ঠানে ফিরে গেছে।


তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে কুমিল্লায় স্বাগত মিছিল

আপডেটেড ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০০:১৩
কুমিল্লা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি

দেশনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এক বিশাল স্বাগত মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর মো. বিল্লাল মিয়া তার নিজ এলাকা কুমিল্লা নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছোটরা এলাকায় এই স্বাগত মিছিলের আয়োজন করেন।

মিছিলটি ফৌজদারি আমগাছের মোড় থেকে শুরু হয়ে ছোটরা পশ্চিম পাড়া, উত্তর পাড়া ও পূর্ব পাড়া প্রদক্ষিণ করে আদালত চত্বর অতিক্রম করে পুনরায় ফৌজদারি মোড়ে এসে শেষ হয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেন ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাহিদা আক্তার মুন্নী এবং কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বিল্লাল মিয়া।

এ সময় মিছিলে শতশত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে নগরীর পরিবেশ মুখরিত করে তোলেন।

স্বাগত মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এবং এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।


দেবিদ্বারে হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) সংসদীয় আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী ও দলটির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় এনসিপি নেতারা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল ইসলামের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের শহিদ সাব্বিরের মা রিনা আক্তার, এলাহাবাদ গ্রামের শহিদ তন্ময়ের বাবা মো. সফিকুল ইসলাম, এনসিপির উপ‌জেলা ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীম কায়সার, সাইফুল ইসলাম শামীম, রায়হান সিদ্দিকসহ দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শেষে নেতারা বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষে শহিদ পরিবারের সদস্যদের দ্বারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এটি প্রমাণ করে যে তিনি আজ জনগণের আস্থা, ভালোবাসা ও নৈতিক সমর্থনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। শহিদ পরিবারগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তার রাজনীতির প্রতি মানুষের গভীর বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।

তারা আরও বলেন, ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতি, ত্যাগের আদর্শ এবং গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে হাসনাত আব্দুল্লাহর এই মনোনয়ন ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক ও দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা রাখবে। জনগণের পাশে থেকে তিনি দেশ ও সমাজ গঠনে কার্যকর নেতৃত্ব প্রদান করবেন- এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেন নেতারা।


বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে বেনাপোলে গণশুনানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

বেনাপোলে বাংলাদেশ রেলওয়ে যশোর অঞ্চলের সেবা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সেবার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের ইমিগ্রেশন ভবনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ময়েনউদ্দীন সর্দার বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো), হানিফ হোসেন ডিইএন-১ পাকশী, হাসিনা আক্তার ডিটিও পাকশী, শ্রী গৌতম কুমার কুন্ডু ডিসিও পাকশী, রিফাত শাকিল ডিইই পাকশী, বেনাপোল ইমিগ্রেশনের পরিদর্শক মোর্ত্তজা, বেনাপোল সিএন্ডএফ সভাপতি - শামসুর রহমান, সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সহিদ আলী, প্রেসক্লাব বেনাপোলের সাধারণ সম্পাদক বকুল মাহবুবসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেবাগ্রহীতা ও সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানিতে সেবাগ্রহীতা ও ভুক্তভোগী নাগরিকেরা রেলওয়ে সেবা সংক্রান্ত নানা সমস্যা, দুর্ভোগ ও প্রস্তাব তুলে ধরেন। ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখা, স্টেশন এলাকার নিরাপত্তা, প্ল্যাটফর্ম উন্নয়ন সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।

বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ। বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের সমস্যা ও প্রত্যাশা সরাসরি শোনা যায়, এতে দ্রুত সমাধানের পথ খুলে যায়। তিনি আরও জানান, নিয়মিত এ ধরনের উদ্যোগ চালু থাকলে রেলওয়ে আরও জনবান্ধব, কার্যকর ও সেবামুখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

এ সময় অন্যান্য বক্তারা বেনাপোল থেকে চলাচলরত রূপসি বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের আদলে আরও একটি ট্রেন চালুর দাবি করে বলেন, সেবার মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। জনগণের অর্থে পরিচালিত রেলওয়ের প্রতিটি সেবা যেন সরাসরি সেবাগ্রহীতার কাছে পৌঁছে এটা নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

গণশুনানি শেষে সাধারণ মানুষ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আগে অনেক সমস্যার কথা জানানোর সুযোগ ছিল না, এখন সরাসরি কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরতে পারছেন-যা সমস্যা-সমাধানকে দ্রুত ও সহজ করে তুলবে।


আবার দুই ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মাছ শিকারে গিয়ে দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক হওয়া ট্রলার দুটি টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া নৌঘাট এবং পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাটের বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালিয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ।

তিনি বলেন, গভীর সাগরে মাছ শিকার শেষে জেলেরা টেকনাফের দিকে ফিরছিলেন সকালে। এ সময় বঙ্গোপসাগরের মোহনা এলাকা থেকে আরাকান আর্মির একটি দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের একটি খালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আটক জেলেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জেলে পল্লিগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

একটি মাছ ধরার ট্রলারের মালিক আব্দুল জলিল বলেন, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে মাছ ধরে ফেরার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে মাঝিসহ ৭জন জেলেসহ তার ট্রলারটি ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এ ঘটনায় জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অনেকেই সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, দুইটি ট্রলারসহ ১৩ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানায়, গত ১০ মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদী ও সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩৫০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। বিজিবির সহায়তায় তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনো প্রায় ১৫০ জন জেলে তাদের হাতে আটক রয়েছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।


নানা জটিলতায় জামদানি ভিলেজ প্রকল্পের কাজে ধীরগতি

* শঙ্কায় রূপগঞ্জের ব্যবসায়ীরা! * আড়াই বছরে জামদানি ভিলেজের অগ্রগতি ১২%
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

জামদানি ভিলেজ স্থাপনের মাধ্যমে আদর্শ গবেষণা ও নকশা উন্নয়ন কেন্দ্র তৈরি করা হবে-এমনটিই কথা ছিল। একই সঙ্গে থাকবে প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া জামদানি ভিলেজ স্থাপন প্রকল্পটি সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। অথচ কাজ হয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। আর মাত্র সাত মাসে প্রকল্প ঠিক কতটুকু আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে সন্দিহান খোদ কর্মকর্তা ও জামদানি শিল্পীরা।

জামদানি ভিলেজটি স্থাপন করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগন্তের তারাব পৌরসভার শীতলক্ষ্যা নদীর পার ঘেঁষে। বাওয়ানী জুট মিলের সরকারি জায়গা এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। সীমানা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এখন তরুণরা খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন প্রকল্প পরিচালক।

নানা জটিলতায় থমকে গেল জামদানি ভিলেজ প্রকল্প। দুই বছর পার হলেও কাজ শেষ হয়েছে সিকি ভাগ, বাকি কাজ দ্রুত এগোবে তারও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। দেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্পের উন্নায়নে ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভিলেজ স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালে প্রকল্পটির অনুমোদন নিয়েছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশের ঐতিহ্যের বাহক এই জামদানিশিল্পের উন্নয়নে এর আগে ১৯৯২ সালে রূপগঞ্জে জামদানি পল্লী প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছিল তৎকালীন সরকার। জামদানিশিল্প ও তাঁতিদের রক্ষা করাই ছিল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে প্রকল্পের আওতায় ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে প্রতিটি এক হাজার ৫০০ বর্গফুটবিশিষ্ট ৪২০টি ১টি তাতিদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। প্রতি প্লটের এককালীন মূল্য ধার্য করা হয়েছিল এক লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কিন্তু এই বরাদ্দেও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূল তাঁতিরা প্লট থেকে বঞ্চিত হন। প্লট বাগিয়ে নেন ব্যবসায়ীরা।

প্রকল্পের আওতায় ১৯১৮ সালে প্রশাসনিক ভবন, বিপণনকেন্দ্র, হাটবাজারের জন্য তিনটি শেড, পাম্প হাটিস, অভ্যান্তরীণ সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ সাম্পূর্ন করা হয় এবং প্লটগুলোতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা হয়। বিসিক জামদানি তাঁতিদের ২০০০ সালে ৪০৭টি প্লট বরাদ্দ দেয়, কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র পাচটি রেসিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে।

তাঁতিরা বলেন, এই শিল্প বর্তমান বাংলাদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক পরিচয় হিসেবে ইউনেসকোর অপরিমেয় সংস্কৃতিক ঐতিহ্য (২০১৩) এবং ভৌগোলিক নির্দেশক (জিয়াই) পণ্য (২০১৬) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই সাফল্য সত্বেও জামদানিশিল্প এবং এর কারিগররা বর্তমানে টিকে থাকার ঝুঁকিতে রয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলে, ঐ শিল্পকে টেকসই রূপ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের গৃহীত ‘জামদানি ভিলেজ স্থাপন বাস্তবায়ন অগ্রগতি ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত মাত্র ১২ শতাংশ, যা এই শিল্পের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করেছে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং তাঁতবস্ত্রের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

গবেষণা ও নকশা উন্নয়ন কেন্দ্র তৈরি না হওয়ায় কারিগররা ঐতিহ্যবাহী নকশা পুনরুদ্ধারে ডিজাইনারদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র তৈরি না হওয়ায় তারা নকল পণ্যের তল্লাসন থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা অনুপস্থিত থাকছে। এই ধীরগতি প্রমাণ করে, সরকার দীর্ঘমেয়াদি অবকাঠামো প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও কারিগরদের জরুরি আর্থিক নিরাপত্তা উপেক্ষিত হচ্ছে। যদি এই স্থবিরতা কাটানো না যায়, তবে প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই ঐতিহ্যবাহী কারিগর সম্প্রদায় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। 'জামদানি ভিলেজ স্থাপন' প্রকল্পের ব্যস্তবায়নে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, তা অবিলম্বে দূর করা প্রয়োজন। প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং কামিটি গঠন এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা উচিত। জুন ২০২৭-এর মধ্যে প্রদর্শনী বা বিক্রয়কেন্দ্র এবং আদর্শ জামদানি গবেষণা ও নকশা উন্নয়ন কেন্দ্র চালু করা অত্যাবশ্যক।

প্রকল্পের পরিচালক ও প্রধান পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘প্রকল্পটির মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। এটি বাওয়ানী জুট মিলের জায়গা। এটা জামদানি ভিলেজের জন্য কেনা হয়েছে। এ পর্যন্ত এক কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যায় হায়াছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের বাধা ছিল। তরুণরা এটাকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। তবে আশা করি, ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে ঢাবিতে শুভেচ্ছা মিছিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক  

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্বাগত মিছিল করেছে ছাত্রদল। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে মিছিলটি ঢাবির টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের টিএসসিতে এসে শেষ হয়। এরপর ঢাবির রোকেয়া হলের পার্শ্ববর্তী যাত্রী ছাউনিতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

এ সময় ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা ‘মা মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে; তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে; তিস্তা নদী বহমান, তারেক রহমান; তারেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘দেশনায়ক তারেক রহমান বিগত ১৫ বছর বিদেশে বসে এ দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের অধীর আগ্রহের অবসান ঘটিয়ে তিনি অচিরেই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন। আমরা তার এ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে একটি সাম্য, নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমি ছাত্রদলের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আগাকাল ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছেন। আমরা মনে করি তার এ আগমনে এ দেশে গণতন্ত্রের নতুন দ্বার খুলবে। দেশ আবার গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাবে।’


প্যানেলভুক্ত আইনজীবীদের সভায় ডিএসসিসি প্রশাসক

* মামলা দ্রুত সমাধান হলে সুফল পাবে নগরবাসী * ১৩১৯ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্য  
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান বলেছেন, পারস্পরিক নিবিড় সমন্বয় ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে মামলা দ্রুত ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমাধান হলে, এর সুফল নগরবাসী পাবে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ১,৩১৯টি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে প্যানেলভুক্ত আইনজীবীদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে ডিএসসিসি তথা জনস্বার্থ রক্ষায় প্রথম প্যানেলভুক্ত আইনজীবীদের সঙ্গে সমন্বয় সভা হওয়ার কথা জানান তিনি।

জানা গেছে, উচ্চ আদালতে ৯৫৪টি ও নিম্ন আদালতে ৩৬৫টিসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সম্পর্কিত মোট ১,৩১৯টি মামলা রয়েছে।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চলমান মামলায় নিয়োজিত আইনজীবী মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া চলমান মামলাগুলো জনস্বার্থ রক্ষা করে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়। সুষ্ঠুভাবে মামলার তথ্য সংরক্ষণের জন্য ডিজিটাল নথি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়। এ সময় বিভিন্ন মার্কেট নির্মাণ-সংক্রান্ত চলমান মামলাসহ জনগুরত্বপূর্ণ মামলাগুলো আগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, ‘বিদ্যমান মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে ডিএসসিসি তথা জনস্বার্থ রক্ষায় প্রথমবারের মতো বিজ্ঞ প্যানেলভুক্ত আইনজীবীদেরর সঙ্গে সমন্বয় সভা হচ্ছে।

সমন্বয় সভার আয়োজন করায় প্যানেলভুক্ত আইনজীবীরা ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্যানেলভুক্ত আইনজীবী এবং বিভাগীয় প্রধানসহ প্রায় ৫০ জন উপস্থিত ছিলেন।


রোগ তালিকার শীর্ষে উচ্চ রক্তচাপ নিরবিচ্ছিন্ন ওষুধ সরবরাহের আহ্বান

সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘হেলথ অ্যান্ড মরবিডিটি স্ট্যাটাস সার্ভে-২০২৫’–এর তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে শীর্ষ ১০টি রোগের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। ওষুধের উৎপাদন ও সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিএমএ ভবনে ‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: অগ্রগতি, বাধা এবং করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় এই আহ্বান জানানো হয়।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৮ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে অসংক্রামক রোগে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী হলেও, এই খাতে বাজেট বরাদ্দ খুবই সামান্য।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের মোট অর্থায়নের মধ্যে ৫ শতাংশেরও কম ব্যয় হয় অসংক্রামক রোগ-সংক্রান্ত বাজেটে। এই সীমিত বরাদ্দ কার্যকরভাবে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। অন্যদিকে, বরাদ্দকৃত অর্থও যথাযথভাবে ব্যবহার হয় না বলে জানানো হয় কর্মশালায়।

বক্তারা বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ প্রদান নিশ্চিত করা গেলে দেশে উচ্চ রক্তচাপজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। একই সঙ্গে, সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ব্যয়ও হ্রাস পাবে। উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে আহ্বান জানানো হয় কর্মশালায়।

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ডা. গীতা রানী দেবী বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে। পর্যায়ক্রমে আমরা সকল কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পারবে।’

এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. রিয়াদ আরেফিন বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ উৎপাদন ও সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখা আমাদের অন্যতম প্রধান একটি অগ্রাধিকার। আশা করি দ্রুতই আমরা সব কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারবে।’

কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স জহিরুল আলম; জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার প্রোগ্রাম অফিসার সামিহা বিনতে কামাল।


ঢাবিতে দুই দিনব্যাপী ‘ডিকলোনাইজেশন অ্যান্ড মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ডিকলোনাইজেশন অ্যান্ড মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনটির আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (কারাস)।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কারাসের চেয়ারম্যান ও ইমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব ব্রুনাই দারুসসালামের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইফতেখার ইকবাল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নন; তিনি ছিলেন জনতার বিবেক, নৈতিকতার প্রতীক এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দূরদৃষ্টি রাষ্ট্রচিন্তক।

তিনি বলেন, ভাসানীর রাজনীতি কখনোই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না; দরিদ্র কৃষক, শ্রমজীবী ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েই তিনি রাজনীতি করেছেন। ক্ষমতার রাজনীতির চেয়ে জনতার রাজনীতিকেই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, ভাসানী রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক মর্যাদা ও মানবিক সম্মানের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে দেখতেন। এ কারণেই তিনি খুব আগেই পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থার বৈষম্য শনাক্ত করতে পেরেছিলেন এবং ১৯৫৭ সালে তার ঐতিহাসিক ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারণ করেন।

তিনি বলেন, ভাসানীর কাছে শিক্ষার মানে ছিল চেতনার জাগরণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস সৃষ্টি; বাস্তব জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন শিক্ষা মুক্তির পথ হতে পারে না।

সভাপতির বক্তব্যে ইমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন এই দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রামরত একজন সমাজবিপ্লবী ও দূরদর্শী রাষ্ট্রচিন্তক। তিনি নিজেকে প্রথমে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং নদী, কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক মানুষের প্রশ্নকে রাজনীতির কেন্দ্রে এনেছেন। ভাসানীর রাজনীতি ছিল ক্ষমতা বা নির্বাচনের জন্য নয়; বরং সাম্য, সামাজিক মালিকানা ও গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য। আজকের বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে মওলানা ভাসানীর পথই মানবমুক্তি ও প্রকৃত স্বাধীনতার দিশা বলে তিনি উল্লেখ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন ঔপনিবেশিক শাসন, পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এক বিরল সমাজবিপ্লবী নেতা। তিনি কলোনিয়াল বাংলা, আসাম, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চারটি রাজনৈতিক পরিসরে সংগ্রামের অভিজ্ঞতা অর্জন করে উপমহাদেশের কৃষক আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশ ও আসামের কৃষক বিদ্রোহের ইতিহাস পুনর্লিখনে মওলানা ভাসানীর ভূমিকা নতুন করে মূল্যায়ন করা জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে মওলানা ভাসানীর জীবন ও সংগ্রামভিত্তিক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মওলানা ভাসানীর বিশ্বদর্শন, রাজনৈতিক চিন্তা ও বি-উপনিবেশায়ন প্রক্রিয়ায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহসহ বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষাবিদগণ।

এছাড়া কারাস গবেষক দলের উদ্যোগে ‘ফিরে দেখা ফারাক্কা লংমার্চ’ শীর্ষক একটি বিশেষ পর্যালোচনা অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের রাজনৈতিক ও সামাজিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা হবে।


নির্বাচনী প্রস্তুতি, সক্ষমতা উন্নয়ন ও সহযোগিতা সম্প্রসারণে আনসার-ভিডিপি মহাপরিচালক ও ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট–২০২৬কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা প্রস্তুতি, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চপর্যায়ের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার (Michael Miller) এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন ও রাজনৈতিক, প্রেস ও তথ্য বিভাগের প্রধান মিসেস বাইবা জারিন। সৌহার্দ্যপূর্ণ এ বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

সাক্ষাৎকালে মহাপরিচালক মহোদয় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট–২০২৬ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন। বাহিনীর প্রশিক্ষিত জনবল, বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সমন্বিত পরিকল্পনা ও মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতির বিষয়সমূহ উপস্থাপনের পর ইইউ রাষ্ট্রদূত সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আলোচনায় বাহিনীর সদস্যদের সক্ষমতা উন্নয়ন, পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি এবং কল্যাণ নিশ্চিতকরণে গৃহীত বহুমাত্রিক উদ্যোগ তুলে ধরা হয়। এ প্রেক্ষাপটে দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি, সময়োপযোগী ও আধুনিক প্রশিক্ষণ কাঠামো, টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রম এবং বাহিনীর প্রান্তিক সদস্যদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গৃহীত “সঞ্জীবন প্রকল্প” বিশেষ গুরুত্ব পায়।

বাহিনীপ্রধান মাননীয় রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন যে, আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের দক্ষ, আত্মনির্ভরশীল এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বাহিনী ব্যাপক প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এসব উদ্যোগের ফলে প্রশিক্ষিত সদস্যদের জন্য দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্ভাবনাকে আরও ফলপ্রসূভাবে কাজে লাগানো এবং পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়।

এসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বাহিনীর সামগ্রিক কার্যক্রম, পেশাদারিত্ব এবং উন্নয়নমুখী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও সুদৃঢ় ও বিস্তৃত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠানে বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ, অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


banner close