চার দিনের সফরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নিজ জেলা কিশোরগঞ্জে যাচ্ছেন আগামী সোমবার। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনি সেখানে থাকবেন। এ সময়ে রাষ্ট্রপতি মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করবেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহম্মদ শামীম আলম রাষ্ট্রপতির এ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ডিসি জানান, রাষ্ট্রতির এ সফরকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির সফরসূচি থেকে জানা যায়, আগামী ২২ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে মিঠামইনের উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে পৌঁছানোর পর বেলা পৌনে চারটার দিকে মিঠামইন ডাকবাংলোয় তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সভা শেষে নিজ বাড়ি কামালপুরে যাবেন।
পরদিন ২৩ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করবেন। এরপর বেলা ৩টার দিকে মিঠামইন থেকে সড়কপথে অষ্টগ্রাম উপজেলার উদ্দেশে রওনা হবেন রাষ্ট্রপতি।
২৪ আগস্ট মিঠামইনের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শনের পাশাপাশি মিঠামইন সেনানিবাস পরিদর্শনের কথা রাষ্ট্রপতির। একইদিন বিকেলে যাবেন ইটনা উপজেলায়। ২৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির ঢাকায় ফেরার কথা।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মো. আরাফাত মোল্লা (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে।
নিহত আরাফাত মোল্লা উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কালাম মোল্লার ছেলে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন ব্রিজে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরাফাত রাজবাড়ী জেলা জাকের পার্টি ছাত্রফ্রন্টের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্য ও রক্তদাতা ছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে আরাফাত মোটরসাইকেল যোগে উপজেলার মাখন রায়ের পাড়া এলাকায় নতুন ব্রিজ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেলে তার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে হলে আরাফাতের মাথা ও দেহ নতুন ব্রিজের রেলিং এর সাথে সজোড়ে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরি বিভাগে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে, পরে সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসাপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় তার মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হয়। পরে বিকাল ৩টার দিকে বাড়ির পাশে পূর্ব তেনাপঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাযা নামাজ শেষে কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি তদন্ত মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল দুটি থানায় রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।
এদিকে, আরাফাত মোল্লার মৃত্যুতে জাকের পার্টির জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মী ও গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্যসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে সবাই শোক জানিয়েছে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকায় মারা যায় জয়ন্তী মন্ডল (৩৩) এবং সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জয়ন্তী মন্ডলের মেয়ে প্রতিভা মন্ডল (৩)।
তারা রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামের সমির মন্ডলের স্ত্রী জয়ন্তী মন্ডল ও তার মেয়ে প্রতিভা মন্ডল।
জয়ন্তী মন্ডলের ভাতিজা বিপুল মন্ডল বলেন, সমির মন্ডল স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। সেখান থেকে গত বুধবার জ্বরে আক্রান্ত হয় জয়ন্তী মন্ডল ও তার মেয়ে প্রতিভা মন্ডল। অসুস্থ অবস্থায় তাদের ঢাকার মহাখালি আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হসপিটালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে জয়ন্তী মন্ডল মারা যান। একদিন পর সোমবার সন্ধ্যায় তার কন্যা প্রতিভা মন্ডল মারা যায়।
তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাসুদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি।জয়ন্তী মন্ডল ও তার কন্যা প্রতিভা মন্ডল ঢাকাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ঢাকা উত্তর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন জুয়েল হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের আল্লারদর্গা বাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন।
এ সময় তিনি স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মতবিনিময় করেন এবং তাদের সার্বিক খোঁজখবর নেন। আলোচনার সময় তিনি বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা দাবির গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশের মানুষের হারিয়ে যাওয়া ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আমাদের এই কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থার বিপরীতে এই কর্মসূচি জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
জুয়েল আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমেই এ দেশে একটি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পরিবর্তন সম্ভব। মানুষের সহযোগিতা, সচেতনতা এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক রূপান্তর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির এই সংকটময় মুহূর্তে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একটি মার্কেটে ডাকাতি করতে এসে জনতার হাতে আটক হয়েছে তিন ডাকাত। তাদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটার দিকে গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্রধান প্লাজায় এই ঘটনা ঘটে।
আটকৃকতরা হলোঃ কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার দলাশ গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে জালাল (৩৪), একই জেলার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের বজলু মিয়ার ছেলে রফিক (১৮) ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর গ্রামের সৈকত উদ্দিনের ছেলে রবিন (৩৩)।
বিষয়টি সম্পর্কে মার্কেটের ব্যবস্থাপক সুমন প্রধান বলেন, ' অন্যান্য দিনের মতো আমাদের মার্কেটের নিরাপত্তা কর্মী বিপ্লব সকাল আটটায় গেটের তালা খুলে মার্কেটের পঞ্চম তলায় আমাদের অফিসে প্রবেশ করে। এই সুযোগে কৌশলে ডাকাত চক্রের কয়েকজন মার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করে ৩য় তলার একটি মোবাইলের শো-রুমের তালা ভাঙার চেষ্টা করতে থাকে। এসময় মার্কেটের নিরাপত্তা কর্মী বিপ্লব পঞ্চম তলায় আমাদের অফিস রুমের মনিটরে সিসিটিভির ফুটেজে ডাকাতদের তৎপরতা বিষয়টি লক্ষ্য করেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি আমাকে জানালে আমি-সহ কয়েকজন মার্কেটে প্রবেশ করে তাদের ঘেরাও করে ফেলি। এ সময় ২/৩জন কৌশলে পালিয়ে গেলেও আমরা তিনজনকে আটক করি। তাদের পুলিশের সোপর্দ করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আশরাফুল ইসলাম শুভ বলেন,' আটক তিনজনকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের কারো আঘাতই গুরতর নয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের পুলিশের জিম্মায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে'।
এদিকে জনতার হাতে আটক তিন ডাকাত জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এই মার্কেটে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল তারা। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মার্কেটের মোবাইলের শো-রুম থেকে মোবাইল লুট করা। সেই পরিকল্পনা থেকেই আজকে তারা ডাকাতির চেষ্টা করে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আনোয়ার আলম আজাদ বলেন,' খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উত্তেজিত জনতা আটক তিন ডাকাতকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন'।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চরগোয়াল গ্রামের কামরুজ্জামান লিপুর দোকানের সামনে থেকে দুটি বোমার সদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার(২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয়রা দোকানের সামনে বস্তু দুটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। কামরুজ্জামান লিপু রূপসী বাংলা ক্লাবপাড়া এলাকার মৃত রহিতউল্লার ছেলে।
দোকান মালিক কামরুজ্জামান লিপু জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমি-জায়গা নিয়ে আমার চাচাদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে তাদের কাছ থেকে একাধিকবার হত্যার হুমকিও পেয়েছেন তিনি। তার দাবি, হয়তো ভয় দেখানোর জন্যই তার দোকানের সামনে এসব বোমা সদৃশ্য বস্তু রাখা হয়েছে। তিনি বর্তমানে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলেও জানান। এই যে দুটি ককটেল রাখা হয়েছে এর ওজন প্রায় দেড় কেজি হবে। এটি যদি বিষ্ফোরণ হয় তাহলে আর বাচার উপাই থাকবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা চায়ের দোকানি আইন উদ্দিন, আমাদের গ্রাম যেনো একটা বোমের গ্রাম। তিন মাস ব্যাবধানে এই গ্রামে তিন জায়গাই বোমা উদ্ধার হলো আমরা আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছি। আমার চায়ের দোকানে পাশেই কারা যেনো রাতের আধারে পলিথিনে মোড়ানো দুটি ককটেল বোমা রেখে গেছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানি ইসরাইল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বোমা সদৃশ্য বস্তুগুলো পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে এবং এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে তদন্ত চলছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গাংনী পুলিশের ওসি তদন্ত মামুন বলেন,রাতের আধারে লিপু স্টোরের সামনে কেবা কারা দুটি ককটেল সাদৃশ্য বস্তু রেখে গেছে। আমরা তদন্ত করছি। আমাদের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরাও এসেছেন। তদন্ত শেষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পাবনার সাঁথিয়ায় দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর পক্ষ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা করেছে।
সোমবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে দুর্নীতিবাজ পরিছন্নতাকর্মী তারেকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলা চালায়। তারা উপজেলা ভূমি অফিসের ভেতরে ঢুকলে সেখানেও মারধর করা হয়। এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী সোহেল আহত হন।
জানা যায়, উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পরিছন্নতাকর্মী (ঝাড়ুদার) তারেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অফিসে দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। সোমবার অভিযোগের শুনানি ছিল উপজেলা ভূমি অফিসে। এলাকাবাসী উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে দুর্নীতিবাজ পরিছন্নতাকর্মীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিছন্নতাকর্মী তারেক, নাগডেমরা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক নুরুজ্জামান, সদস্য সচিব ফকরুল ইসলাম তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলার একপর্যায়ে মানববন্ধনকারী সোহেল রানা আত্মরক্ষার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের ভেতরে আশ্রয় নেন। তারা ভূমি অফিসের ভেতরে ঢুকেই সোহেল রানাকে বেদম মারধর করেন। সোহেল রানা ছোট পাথাইলহাট গ্রামের মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে। আহত অবস্থায় সোহেলকে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পরিছন্নতাকর্মী তারেক এবং নাগডেমরা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক নুরুজ্জামান, সদস্য সচিব ফকরুল ইসলাম তাদের নেতাকর্মী নিয়ে ভূমি অফিসের ভেতরে গিয়ে আমার ওপর হামলা করেছে। আপনারা ভূমি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই সব সত্যতা পেয়ে যাবেন।
নাগডেমরার সাধারণ মানুষ বলেন, ‘এই পরিছন্নতাকর্মী তারেক ৫ আগস্ট ২৪ সালের আগে ফ্যাসিস্টের দোসরদের সাথে মিলেমিশে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে ইনকাম করেছে। সে এখন আবার বিএনপি নেতাকর্মীদের কাঁধের ওপর ভর করে অপকর্মগুলো করে যাচ্ছে। এই জন্য বিএনপি নেতাকর্মীরা দুর্নীতিবাজ পরিছন্নতাকর্মী তারেকের পক্ষ নিয়ে মানববন্ধনকারীদের মারধর করেছে।
সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. সাদিয়া সুলতানা বলেন, তাদের আজকে একটা শুনানি ছিল। শুনানির আগেই তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে লাইসেন্স না থাকায় ‘আরিফ এয়ার ট্রাভেলস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে মোবাইল কোর্ট। সোমবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানের খবর পেয়ে বাজারের অন্যান্য ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর মালিকরা দ্রুত দোকানপাট বন্ধ করে অন্যত্র চলে যায়।
বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩, বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০২১ এবং বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২ অনুযায়ী নিবন্ধন সনদ গ্রহণ ছাড়া এবং মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন সনদ নবায়ন ছাড়া ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না। কিন্তু পর্যাপ্ত তদারকি না থাকায় নতুন প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম অমান্য করে অবৈধভাবে এসব ব্যবসা চালাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, অভিযোগ রয়েছে কোম্পানীগঞ্জ বাজারে একাধিক ট্রাভেল এজেন্সি দীর্ঘদিন ধরে সিভিল অ্যাভিয়েশন লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে। সেই প্রেক্ষিতে আরিফ এয়ার ট্রাভেলসকে লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনার দায়ে জরিমানা করা হয়েছে। দ্রুত লাইসেন্স গ্রহণপূর্বক ব্যবসা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ বাজারে অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত ট্রাভেল এজেন্সির কার্যক্রম শুধু সরকারি রাজস্বকে ক্ষতি করছে না, ভ্রমণকারীদের জন্যও ঝুঁকি তৈরি করছে। প্রতারণা, ভিসা জালিয়াতি এবং অকার্যকর সেবা এই ব্যবসার মূল সমস্যা। অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সি নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি এবং ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
উত্তরের জেলা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় অবস্থিত শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিল পাখি ও পল্লী দিন দিন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হচ্ছে। অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই অঞ্চলটি শুধু নওগাঁ নয়, সারাদেশের ভ্রমণপিপাসুদের নজর কাড়ছে।
নওগাঁ সদর থেকে অদূরেই অবস্থিত রাণীনগর উপজেলাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে পর্যটন সম্ভাবনাময় এক নতুন ক্ষেত্র। ইতিহাস, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে রক্তদহ বিল এলাকায়। বিলের বুকে নির্মিত হয়েছে ঝুলন্ত সেতু, বসানো হয়েছে পাখিবান্ধব বৃক্ষ। আর এই বিলে অবস্থিত ‘কোছমুড়ি দরগাহ’ বছরের পর বছর বন্যার পানিতেও অক্ষত থাকে যা এলাকাবাসী ও পর্যটকদের কাছে এক রহস্যজনক আকর্ষণ।
ইতিহাস ও নামকরণের পেছনের গল্প:
রাণীনগর ও বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার মধ্যবর্তী এই রক্তদহ বিলের নামকরণ ইতিহাসভিত্তিক। ব্রিটিশ আমলে এখানে ব্রিটিশ বাহিনী ও ফকির মজনু শাহের অনুসারীদের মধ্যে এক ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের পর বিলে রক্তের প্রবাহ দেখে এলাকাবাসী একে ‘রক্তদহ’ নামে অভিহিত করে, যা আজও বহন করে ইতিহাসের স্মৃতি।
আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় পর্যটন খাত:
পর্যটনবান্ধব রূপে রক্তদহ বিলকে গড়ে তুলতে নানামুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। বিল খনন, পাড়ঘেঁষে চলাচলের রাস্তা নির্মাণ, নৌকা চলাচলের পথ সুগমকরণ, সংযোগ খালগুলো পুনঃখনন, পাখি পল্লীকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণসহ চলছে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান জানান, রাণীনগরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে ভিত্তি করে এই অঞ্চলকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নিরলসভাবে কাজ করছেন। সবার সহযোগিতায় ইতোমধ্যেই অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে, ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ:
পাখি পল্লী ঘিরে ইতোমধ্যে শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সিংড়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় দোকানদার শাহিন ইসলাম বলেন, ‘রক্তদহ বিল ও পাখি পল্লী ঘিরে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার ফলে আমাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার সূচনা হয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়লে এখানকার অর্থনীতি আরও চাঙা হবে।’
পর্যটকদের অভিমত:
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মিডিয়ায় দেখে রক্তদহ বিল ও পাখি পল্লীর কথা জেনেছি। বর্ষার সময়ে বিলের পানির দৃশ্য, নৌকাভ্রমণ, গাছের ফাঁকে পাখির কিচিরমিচির এবং নিরিবিলি পরিবেশ মন ছুঁয়ে গেছে। সামান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটলে এটি জাতীয় পর্যায়ের পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।’
স্থানীয় অভিমত ও প্রশাসনিক উদ্যোগ:
নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও গোনা গ্রামের বাসিন্দা প্রফেসর শরিফুল ইসলাম খান বলেন, ‘রাণীনগরে কোনো ভারী শিল্প-কারখানা না থাকায় পরিবেশ এখনো অনেকটাই অক্ষত। কিন্তু বর্তমানে যে পর্যটনমুখী কার্যক্রমগুলো চলছে, তা রাণীনগরকে পর্যটনের নতুন ঠিকানায় পরিণত করতে পারে। সরকারের সুদৃষ্টি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে এটি একটি জাতীয় সম্পদ হয়ে উঠবে।’
এদিকে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে চলছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। রাণীনগর রেলগেট প্রশস্তকরণ, নওগাঁ-আত্রাই সড়ক প্রশস্তকরণ এবং বিল-সংলগ্ন অবকাঠামো উন্নয়নে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল।
ইতিহাস, প্রকৃতি ও মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় গড়ে উঠছে এক সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে রক্তদহ বিল ও পাখি পল্লী একদিন হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় শারদীয় দূর্গাপূজা-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা ও সরকারি অনুদান প্রদান করা হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম সভাপতিত্ব করেন। সভায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ও জেনারেটর, পানি সরবরাহ, পূজামণ্ডপের নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে টিম গঠন এবং অগ্নিনির্বাপণ, নির্ধারিত সময়ে প্রতিমা বিসর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভার আলোচনায় বক্তারা পূজা উদযাপনে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের মানবতার বন্ধন অটুট রাখার আহ্বান জানান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। এ বছর সরকারি অনুদান হিসেবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৭০টি পূজামণ্ডপে ১৮ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়।
কাপাসিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ চন্দ্র পালের পরিচালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, কাপাসিয়া ও শ্রীপুরের দায়িত্বে নিয়োজিত ক্যাপ্টেন আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাহিদুল হক, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল, গাজীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা শেফাউল হক, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য এফ এম কামাল হোসেন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. আশরাফুল্লাহ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মো. মাসুম বিল্লাহ, সেনাবাহিনীর অফিসার আসম, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, খাদ্য কর্মকর্তা ইকবাল, চিত্ত রঞ্জন সাহা, কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সচিব সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শাহীন, চন্দন রক্ষিত, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি মিল্টন সরকার, ছাত্র প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম রবি প্রমুখ
এছাড়া সভায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সাংবাদিক, পূজা উদযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ও কাপাসিয়ার অন্যান্য বিশিষ্ট সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
হালদা নদী রক্ষায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। শুধু প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষে একা হালদাকে রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।
সোমবার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র ও মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অংশীজনের উদ্বুদ্ধকরণ সেমিনার’-এ এসব মতামত উঠে আসে। এ সেমিনারটি আয়োজন করে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, যার অর্থায়ন করে মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (২য় পর্যায়)।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন।
ইউএনও তিনি তার বক্তব্যে বলেন, হালদায় মাছ নিধনে বিষ প্রয়োগকারীদের তথ্য দিলে পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেন।
বক্তারা বলেন, পাহাড়ি ঢলে যেমন মা মাছ ডিম ছাড়ে, তেমনি উজান থেকে বালু নামায় নদীটির নাব্যতা কমে যাচ্ছে। এজন্য ম্যানুয়ালি বালু অপসারণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ডলফিন বা মা মাছের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে হালদার নিজস্ব ল্যাব স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়। নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে সংলগ্ন সব কারখানাকে ইটিপির আওতায় আনা, শাখা খালগুলোর খনন, প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং স্লুইসগেট যথাসময়ে খোলা-বন্ধ রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
বক্তারা আরও বলেন, বর্শি, ভাসা জাল, ঘেরা জাল ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ নিধন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে টেনারি বর্জ্য, পোল্ট্রি ফার্মসহ যে কোনো বর্জ্য থেকে হালদাকে রক্ষা করাও সময়ের দাবি।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুজন কানুনগো, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ, ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শফিউল আজম, মেখল ইউনিয়ন পরিষদের রাশেদুল আলম, থানার সেকেন্ড অফিসার নাজমুল হাসান, সাংবাদিক কেশব কুমার বড়ুয়া, এইচ এম মনসুর আলী, সাংবাদিক খোরশেদ আলম শিমুল, মো. বোরহান উদ্দিন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর, ডিম সংগ্রহকারী সমিতির সভাপতি মো. শফিউল আলম, শহিদুল হক, আশু বড়ুয়া প্রমুখ।
চারিদিকে চা বাগান আর সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পরিবেশের মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতী চা বাগানে অবস্থিত মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে শুরু হয়েছে দেশের একমাত্র আগাম দুর্গাপূজা। বাদ্যযন্ত্র, উলুধ্বনি, অঞ্জলি ও আরতী প্রদানের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পূজা চলছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও শারদীয় দুর্গাপূজার ছয়দিন আগেই শুরু হয়েছে এই বিশেষ পূজা। সোমবার সকালে দেবী দুর্গার প্রথম রূপ শৈলপুত্রী পূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পৌরাণিক নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে দেবীর ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রী, মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রী রূপের পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
হবিগঞ্জ থেকে পূজা দেখতে আসা অন্নপূর্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘দুর্গাপূজা আমাদের সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব। সাধারণত ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পূজা হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে নয়দিন ধরে দেবীর ভিন্ন ভিন্ন রূপে পূজা হয়। ফলে আনন্দের দিনগুলোও বেড়ে যায়। আমরা এসে বিভিন্ন রূপের পূজা প্রত্যক্ষ করেছি।
খুলনা থেকে আগত বিশ্বজিৎ সাহা জানান, ‘পরিবারের সঙ্গে জীবনে প্রথমবারের মতো নবদুর্গা পূজা দেখতে এসেছি। এখানে মা দুর্গার অনেকগুলো প্রতিমা রয়েছে। এরকম আয়োজন আগে কখনও দেখিনি, সত্যিই অসাধারণ।’
শ্রী মঙ্গলচণ্ডী সেবাশ্রম নবরূপে নবদুর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজন ভট্টাচার্য জানান, প্রায় ৫০০ বছর আগে এখানে দেবী মঙ্গলচণ্ডীর পূজা শুরু হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ১৫ বছর আগে নবদুর্গা পূজার বিশেষ আয়োজন চালু হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলচণ্ডী নবদুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল ভৌমিক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে এটিই একমাত্র আগাম দুর্গাপূজা, যা টানা ১৫ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেবীর ৯টি রূপের পূজা শেষে দশমীতে সম্পন্ন হবে বিসর্জন।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা ও দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন এই পূজা দেখতে। উৎসবমুখর পরিবেশে হাজারো মানুষের সমাগমে পূজামণ্ডপ এলাকা রূপ নিয়েছে এক মহাসমারোহে।’
ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা নেই বরিশালে। সংকটের কারণে চাহিদামতো রপ্তানি করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। এতে ধস নেমেছে ব্যবসায়, আর সাধারণ ক্রেতারা পড়েছেন আকাশছোঁয়া দামের চাপে।
বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার মণ ইলিশ আসত মোকামে। বর্তমানে দিনে ৩০ থেকে ৪০ মণও মিলছে না। ইলিশের এমন টানাপড়েন বাজারে তৈরি করেছে অস্থিরতা। সাধারণ ক্রেতা থেকে খুচরা বিক্রেতা সবাই পড়েছেন বিড়ম্বনায়।
এবার দুর্গাপূজায় ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বরিশালের চারটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়।
গত বছরের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর রপ্তানি শুরুর ৬ দিনে বরিশাল থেকে ভারতে গিয়েছিল প্রায় দেড়শ মণ ইলিশ। কিন্তু এবার একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৮০ মণ।
মোকামে ইলিশের দামও রেকর্ড গড়েছে, ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৬৪ হাজার টাকায়,৯০০ গ্রামের ইলিশ ৮০ হাজারে, এক কেজি ওজনের ইলিশ ৯২ হাজারে, ১২০০ গ্রামের ইলিশের দাম ছাড়িয়েছে ৯৭ হাজার টাকা। ছোট সাইজের ইলিশেও ব্যাপক ওঠানামা দেখা যাচ্ছে। আড়তদারদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় সরবরাহ কয়েকগুণ কমে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
আল আমিন হাওলাদার নামে এক ক্রেতা জানান,আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ বাজারে মাছ কিনতে এলে দাম দেখেই ফিরে যেতে হয়, কেনার সামর্থ্য থাকে না। ইলিশের এমন সংকট যদি চলতে থাকে, ভবিষ্যতে হয়তো এই মাছ একেবারেই হারিয়ে যাবে।
বরিশাল পোর্টরোড মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতি সভাপতি কামাল সিকদার বলেন,গত বছর বরিশাল থেকে ২৪ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল ভারতে। কিন্তু এবার বেশি দাম দিয়েও পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম আকন্দ জানান, নদীতে ইলিশের আগমন এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসদরের আদালতপাড়ায় অবস্থিত বউ সাঁজ বিউটি পার্লার থেকে ১০ লাখ ১৮ হাজার টাকার জাল নোট, একটি বিদেশি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত রোববার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, জব্দ হওয়া সব জাল নোটের সিরিয়াল নম্বর একই- ট ৮৬২৭৩৬৯। অভিযানের সময় পার্লার মালিক বিলকিস বেগমকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থল থেকে পার্লারের তিনজন নারী কর্মচারীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। সোমবার তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে আদালতে চালান করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- শেফালী আক্তার সাথী (৪২), স্বামী আলাউদ্দিন, গ্রাম কিশোরপুর, নবীনগর ; তাশলিমা আক্তার, পিতা: আব্দুল সালাম, করিমশাহ এলাকা, নবীনগর পূর্বপাড়া ; খাদিজা আক্তার, পিতা: মৃত আমিন মিয়া, নবীনগর পূর্বপাড়া ; লাকী বেগম পিতা: সুলতান খন্দকার, গ্রাম: ইব্রাহিমপুর।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সমাজসেবিকা সাবিনা ইয়াসমিন পুতুল বলেন, ‘জনবহুল এলাকায় এ ধরনের ঘটনা সত্যি আতঙ্কের। আমরা চাই সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায়।’
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত ম্যানেজার শেফালী আক্তার সাথীর দাবি, তারা ঘটনার সাথে জড়িত নন। তার ভাষ্য, এক যুবতী হাইড্রা ফেসিয়ালের কথা বলে পার্লারে এসে দরদাম করার পর একটি ব্যাগ রেখে বাইরে যায়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে সেই ব্যাগ থেকেই জাল নোট ও অস্ত্র উদ্ধার করে।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, এক মেয়ে হাতে ব্যাগ নিয়ে পার্লারের সামনে নামছে। তবে সে আসলেই পার্লারে প্রবেশ করেছে কিনা তা ফুটেজে স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, সচেতন এলাকাবাসী ও ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। তারা পার্লারের সুনাম নষ্টের ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার এবং আটক কর্মচারীদের মুক্তির দাবি জানান।
অভিযান পরিচালনাকারী নবীনগর থানার ওসি মো. শাহীনুর ইসলাম জানান, ‘একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই পার্লার থেকে জাল নোট ছাপানো ও সঞ্চয়ের কাজ চালিয়ে আসছিল। তারা আসন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবকে কেন্দ্র করে জাল নোট বাজারজাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।’