সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১৪ আশ্বিন ১৪৩২

চুরির অভিযোগে গণপিটুনি, গাইবান্ধায় যুবক নিহত

বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে টেনে হিঁচড়ে হাফিজারকে বের করে এনে গণপিটুনি দেয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৫৩
প্রতিনিধি, গাইবান্ধা
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, গাইবান্ধা
প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৫৩

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ এনে একটি ঘরে আটকে রেখে পেটান বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।

নিহত যুবকের নাম হাফিজার রহমান (৩৮)। উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাঙ্গামোড় যুগিপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের দাবি— হাফিজারের সঙ্গে থাকা দুজন পালিয়ে গেছেন।

হাফিজারের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার চকমামরোজপুর গ্রামে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে হাফিজার রহমানসহ তিনজন যুগিপাড়া গ্রামে আসেন। এরপর তারা ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন মালামাল ব্যাগে ভরেন। ঘটনার সময় বাড়ির মালিক রফিকুল ঢাকায় ও তার স্ত্রী চাম্পা বেগম বাবার বাড়িতে ছিলেন।

স্থানীয়রা বলেন, রফিকুলের বাড়িতে চুরির পর পাশের নুরু মিয়ার বাড়ির গোয়ালঘরে ঢুকে তিনটি গরু নিয়ে বের হয় চোররা। তারা গরু নিয়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের ফাঁকা জমিতে যেতেই আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে ধাওয়া করে। গ্রামবাসীর ধাওয়ায় দুজন পিকআপ নিয়ে পালিয়ে গেলেও আটক হন হাফিজার।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে থানা-পুলিশ জানায়, নুরুর বাড়িতে একটি ঘরে হাফিজারকে আটকে রেখে পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খবর দেয়া হয়। ততক্ষণে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে টেনে হিঁচড়ে হাফিজারকে বের করে এনে গণপিটুনি দেয়। এতে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন হাফিজার।

দামোদরপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুই বসতবাড়িতে গরুসহ স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরির ঘটনায় হাতেনাতে আটক ওই যুবককে গণপিটুনি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।

সাদুল্লাপুর থানার ওসি (তদন্ত) এনায়েত হোসেন বলেন, ওই যুবকের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হাফিজার দীর্ঘদিন ধরে চুরি পেশার সঙ্গে জড়িত। মৃত্যুর ঘটনাটি পরিবারের সদস্যদেরও অবগত করা হয়েছে।

বিষয়:

ভৈরবে মালবোঝাই পিকআপ ছিনতাইকালে ৩ যুবক আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব ( কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মালবোঝাই পিকআপ ছিনতাই করার সময় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলেন, মামুন (৩০), সোহান (২৪) ও আকাশ (২৫)। তাঁরা সবাই ভৈরব পৌর শহরের গাছতলাঘাটের বাসিন্দা।

গতকাল রোববার রাতে উপজেলার আগানগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জের একটি রাইস মিল থেকে বস্তা বোঝাই করে গাড়িটি ভৈরবের একটি চিড়ার মিলে যাচ্ছিল। গাড়িটি ভৈরব শহরের গাছতলাঘাট এলাকায় পৌঁছালে ওই তিন ছিনতাইকারী চালককে ভুল পথ দেখিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা ভৈরব উপজেলার আগানগর গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে এবং জোরপূর্বক পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য নিজেই গাড়ি চালিয়ে ভৈরব দুর্জয়মোড় পার হয়ে বেলাব উপজেলার বারৈচা পৌঁছালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।

গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া জানান, ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরপরই চালক দ্রুত ভৈরব থানায় এসে পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান শুরু করে এবং রাত ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা থেকে তিন ছিনতাইকারীকে পিকআপসহ আটক করে।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তালেব জানান, আটককৃত তিন যুবকই চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তিনি বলেন, ‘গাড়ি ছিনতাইয়ের বিষয়ে অবগত হয়ে আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে বারৈচা থেকে গাড়ি উদ্ধারসহ জড়িত তিনজনকে আটক করি। আটকের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এঘটনায় গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতদের আজ সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।


নুরাল পাগলার লাশে খড়ি দেয়া যুবক গ্রেফতার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, গোয়ালন্দ,রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার লাশের উপর খড়ি দেয়ার দায়ে মোঃ রাসেল মন্ডল (২০)নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।

গ্রেফতারকৃত রাসেল মন্ডল গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম সরকার পাড়া আঃ সামাদ মন্ডলের ছেলে।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তাকে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।

তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নজরুল মন্ডল নুরাল পাগলার মরদেহ পোড়ানোর জন্য খড়ি দিচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল মন্ডলকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবারে হামলা চালায়। এ সময় রাসেল মোল্লা নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় জনতার হামলায় গুরুতর আহত হন রাসেল মোল্লা। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। নুরাল পাগলের লাশ পোড়ানো, হত্যাকান্ড, হামলা, ভাঙচুর লুন্ঠনের ঘটনায় রাসেলের বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৩৫'শ হতে ৪ হাজার অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।


পাকিস্তানে অভিযানে নিহত জঙ্গিদের দলে বাংলাদেশি যুবক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৭ টিটিপি সদস্য নিহত হয়। এর মধ্যে ছিল ফয়সাল হোসেন মোড়লও। দর্শখেলের শাহ সেলিম থানার কাছে সেনাবাহিনীর চালানো অভিযানে ওই যুবক নিহত হয়। গতকাল রোববার এ খবর জানাজানি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত বাংলাদেশি তরুণের বাড়ি মাদারীপুরের কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামে। ফয়সাল হোসেন ওই গ্রামের আউয়াল মোড়লের ছেলে। দুই বছর আগে পরিবারের কাছে বায়না ধরে দুবাই যাওয়ার। পরিবার অর্থের জোগান দিতে না পারায় হঠাৎ নিখোঁজ হয়। এর প্রায় ছয় মাস পর ফয়সালের বড় ভাইকে মোবাইল ফোনে জানায়, সে দুবাই অবস্থান করছে। যে কোনোভাবে টাকা সংগ্রহ করে সে দুবাই চলে গেছে। সেখানে ভালো আছে। বিস্তারিত জানার জন্য প্রশ্ন করলে জবাব দিত না সে।

নিহত ফয়সালের ছবি দেখে খবর নিশ্চিত করেন তার চাচা আব্দুল হালিম মোড়ল। তবে ফয়সালের বাবার সঙ্গে যোগযোগ করতে চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফয়সালের বয়স ২১-২২ বছর। পরিবারের সহযোগিতায় দুবাই যেতে চেয়েছিল। পরিবার সম্মত হয়নি। ২০২৪ সালের মার্চে দেশ ছেড়েছে সে। দেশে থাকতে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলা ফয়সাল হাটবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তাসবিহ, টুপি, আতরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সরঞ্জাম বিক্রি করত।

গত ঈদুল আজহার সময় মাদারীপুরের গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা খোঁজখবর নিতে তাদের বাড়ি যান। তখন পরিবার জানতে পারে, ফয়সাল আফগানিস্তান আছে। গতকাল সকালে ফয়সালের পরিবার পাকিস্তানে তার মৃত্যুর খবর জানতে পারে।

ফয়সালের চাচা হালিম মোড়ল বলেন, ‘ভাতিজার বিষয়ে জানতে পারি গত ঈদুল আজহার সময়। গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, সে আফগানিস্তান আছে। ২০২৪-এর মার্চে দেশ ছাড়ার প্রায় ৬ মাস পরে বড় ভাই আরমান মোড়লের কাছে মোবাইল ফোনে কল করে জানায়, দুবাই আছে এবং ভালো আছে। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে জবাব দিত না সে।’

পাকিস্তানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিহত বাংলাদেশির কাছ থেকে পরিচয়পত্র, টাকা এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। অভিযানে ১৭ জঙ্গি নিহত হয়।


গোবরা কমুনিটি ক্লিনিক পানির নীচে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২০ নং ইউনিয়নের গোবরা ১,২,৩ নংওয়ার্ডর গোবরা কমিউনিটি ক্লিনিক বৃষ্টি হোলেই মূল ঘরের ফ্লোর পানির নীচে ডুবে যায় কারন পানি নিষ্কাসনের ব‍্যবস্থা নাই।পানিতে ডুবে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হোচ্ছে।আগতদের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয়না।পূর্বে এ অবস্থা ছিলোনা তখন বৃষ্টিতে জমা পানি নিস্কাসনের ব‍্যবস্থা ছিলো।ঘনলোকবসতি গড়ে ওঠায় জমা পানি নিষ্কাশনের ব‍্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হোলেই জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।নির্ভরযোগ‍্য সূত্রে জানা গেছে ইতোপূর্বে সমস‍্যটি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হোলেও এখনো কোনো ব‍্যবস্থা গৃহিত হয়নি। উক্ত
এলাকাটি গোপালগঞ্জ পৌরসভা ভুক্ত কিন্তু কোনো ড্রেনেজ ব‍্যবস্থা নাই।এমতাবস্থায় উক্ত কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা কর্মীকে অসহায় অবস্থায় দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এলাকার স্বাস্হ‍্যসেবা প্রার্থীদের দাবী গোপালগঞ্জ পৌরসভা অতি দ্রুত ড্রেন নির্মান করে পানি নিষ্কাসনের ব‍্যবস্থায় করে জনসেবা নিশ্চিত করবেন।


ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পাবনার ভাঙ্গুড়া স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত বগি উদ্ধারের পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলে আটকে পড়া সব ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

পাকশী রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পাকশী রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার পর ভাঙ্গুড়া স্টেশনের পাশ্ববর্তী স্টেশনে একতা এক্সপ্রেস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদী-ঢাকা লোকাল-৯৯, পঞ্চগড় এক্সপ্রেসসহ ৬টি ট্রেন আটকা পড়ে।

এর আগে সোমবার ভোর ৪টার দিকে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ও দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভাঙ্গুড়া স্টেশনে দুই পাশে ৬টি ট্রেন আটকা পড়ে। এতে যাত্রীদের চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়।


শ্রমিকদের সুস্থতা পোশাক খাতে উৎপাদনশীলতার চাবিকাঠি

আপডেটেড ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা পোশাক খাতে উৎপাদনশীলতার চাবিকাঠি বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাদের সুস্থতা সরাসরি উৎপাদনশীলতা, প্রতিযোগিতা ও স্থায়িত্বের ওপর প্রভাব ফেলে। যা দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ অবদান রাখে, রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদন করে।

এই খাতে প্রায় ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার মধ্যে ৬৫ শতাংশ নারী।

রোববার (রাজধানীর একটি হোটেলে আয়াত এডুকেশন, ইন্টিগ্রাল গ্লোবাল কনসালটেন্সি (আইজিসি) ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন তারা।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন আয়াত এডুকেশনের চেয়ারপারসন ও আমান গ্রুপ অব কম্পানিজের ভাইস চেয়ারপারসন তাহসিন আমান। তিনি পোশাক খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা উদ্যোগকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য শিল্প মালিক, নীতি-নির্ধারক, ক্রেতা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সংলাপে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানশেয়ার জাহান ভূঁইয়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘কর্মীদের সুস্বাস্থ্যই শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতার মূলভিত্তি। তাই আমরা সব শ্রমিকের তথ্যের জন্য একটি সমন্বিত শ্রম ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছি। যা পরিকল্পনা ও নীতিমালা তৈরিতে সহায়তা করবে।

বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, ‘পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশেষ করে নারীদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।যা লাখ লাখ পরিবারকে সহায়তা করছে। আর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি পোশাক শ্রমিকদের, বিশেষ করে নারীদের সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে সব কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’ বৈশ্বিক পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও দেশের অবস্থান শক্ত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা (বিজিএমইএ, এশিয়া ফাউন্ডেশন, আইএলও, শিল্পনেতা, ক্রেতা এবং কারখানা মালিকরা) সক্রিয় আলোচনায় অংশ নেন। তারা কর্মীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান গ্রহণে নীতি সহায়তা ও বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং কর্মীদের সুস্থতাকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কেন্দ্রে স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।


সারাদেশে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত

আপডেটেড ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:১১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

‘পরিবেশ রক্ষায় ডিজিটাল যুগে তথ্যের অধিকার নিশ্চিতককরণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাদেশে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত হয়েছে। তথ্য অধিকার সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনেস্কো স্বীকৃত এই দিবসটি প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৫-এ ইউনেস্কোর নির্ধারিত থিম ‘দ্য রাইট টু ইনফরমেশন ইন দ্য ডিজিটাল এইজ ফর দ্য প্রটেকশন অব দ্য এনভারমেন্ট’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। দৈনিক বাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, আর্ন্তজাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালনে নড়াইলে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা তথ্য অফিস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।

পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। ‘পরিবেশ রক্ষায় ডিজিটাল যুগে, তথ্যের অধিকার নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেণ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. রোস্তম আলী। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকণ বিশ্বাস, সহকারি কমিশনার এবিএম মনোয়ারুল আলমসহ সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকন বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার এবিএম মনোয়ারুল আলমসহ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ‘পরিবেশের তথ্য ডিজিটাল যুগে হোক সুনিশ্চিত’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন, পটুয়াখালীর আয়োজনে ও সনাক-টিআইবি, পটুয়াখালীর সহযোগিতায় ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৫’ পালিত হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহসিন উদ্দীন এর সভাপতিত্বে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

‘তথ্য অধিকার আইন ২০০৯’ এবং জাতীয় তথ্য বাতায়নের ‘পটুয়াখালী জেলার সরকারি অফিস সমূহের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ২০২৫’ বিষয়ক দুটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন টিআইবির এরিয়া কোঅর্ডিনেটর-সিই মো. মনিরুল ইসলাম। সভায় দিবসের তাৎপর্যের উপর বক্তব্য প্রদান করেন অনিমেষ হালদার, উপপরিচালক, জেলা তথ্য অফিস, অ্যাড. সহিদুর রহমান, সভাপতি, সনাক-পটুয়াখালী, এইচ, এম শামীম অতিরিক্ত উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মো. জাকির হোসেন, আহ্বায়ক, পটুয়াখালী প্রেসক্লাব, কে এম এনায়েত হোসেন, নির্বাহী পরিচালক, এসডিএ, ইয়েস সহদলনেতা আবদুল্লাহ আল ইমন, সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সনাক ও ইয়েস সদস্যরা।

নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক এই স্লোগানকে সামনে রেখে নেত্রকোণায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) শামীমা ইয়াছমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সাকেল) সজল কুমার সরকার, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়েত ইসলামীর আমীর সাদেক মোহাম্মদ হারিছ, জামায়েত ইসলামীর সেক্রেটারী মাহবুবুর রহমান, জামায়েতের পৌর আমীর মো. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির সুজাদুল ইসলাম সুজা, সাংবাদিক হাফিজ উল্লাহ চৌধুরী আলিম, সাংবাদিক পল্লব চক্রবতী, কাজী শফিকুর রহমান চৌধুরী জুয়েল, সমন্বয় প্রীতম সোহাগসহ জেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাসহ আরো অনেকে।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ‘পরিবেশের তথ্য ডিজিটাল যুগে হোক সুনিশ্চিত’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও টিআইবির আয়োজনে রোববার সকালে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে বেলুন উড়িয়ে দিবসটি উদ্বোধন করা হয়। পরে সেখান থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পোস্টঅফিস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন কর্মসূচী। এতে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান, সনাকের সভাপতি এম সাইফুল মাবুদ, সদস্য এনএম শাহজালাল, নাসরিন ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। সেসময় বক্তারা, অবিলম্বে স্বাধীন তথ্য কমিশন গঠন, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ আইন সম্পর্কে সচেতন ও কার্যকর ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহণসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।

বরগুনা প্রতিনিধি জানান, আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে বরগুনায় রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) টিআইবির সহযোগিতায় বরগুনা জেলা প্রশাসকের সুবর্ণজয়ন্তী সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুদ। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অনিমেষ বিশ্বাস।

সভা পরিচালনা করেন সনাকের জেলা সভাপতি মনির হোসেন কামাল।

মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার সেলিম মাহমুদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম, বরগুনা জেলা প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান ও এনজিও ব্যক্তিত্ব সামছুদ্দিন সানু।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উদযাপিত হয়েছে। রোববার দুপুরে দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমদে মাহবুব-উল-ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের, জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী মন্ডল, সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুন্সী আবু সাইফসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কী নোট উপস্থাপন করেন সহকারী কমিশনার আশফাকুর রহমান।

সভায় তথ্য আদান প্রদান বিষয়ে সবাইকে আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীতে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। এ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও টিআইবি সনাকের আয়োজনে রোববার সকাল সারে ১০টার দিকে একটি শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।

সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, তথ্য অধিকার আইনের মূল উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়া। তিনি বলেন, তথ্য জানানোর মাধ্যমে দুর্নীতি কমানো সম্ভব। তথ্যই শক্তি উল্লেখ করে তথ্যের অপব্যবহার যেন, না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। তিনি সনাক-টিআইবির ওয়েব পোর্টাল স্টাডির সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ (পিপিএম-সেবা), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বায়েজীদ হোসেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান, সহকারী কমিশনার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ ইমাম মোশারফ, সহকারী কমিশনার মো. তানজ্বীর ইসলাম, সুমনা পারভীন মিতা ও সনাক সভাপতি মো. আকতারুল আলম, সনাক সদস্য মো. মিজানুর রহমান লিটু, জেলা ব্রাক প্রতিনিধি মো. আকতারুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং সনাক, এসিজি ও ইয়েস সদস্যরা।

অপরদিকে, বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলনকে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নীলফামারী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। সনাক সভাপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলার সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় সনাকের উপজেলা তথ্য বাতায়ন বিষয়ক স্ট্যাডির পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশসমূহ এবং তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

দিনব্যাপী আয়োজিত এসব কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ জনগণ ও অংশীজন প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত হবেন এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।

এছাড়া দিনব্যাপী ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র‌্যালি ও ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে তথ্য অধিকার বিষয়ে সচেতন করে।


গাইবান্ধায় দুই দফায় ধান রোপণ করেও নিঃস্ব কৃষক

আশ্বিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে পচে যাচ্ছে রোপা আমন খেত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

গাইবান্ধায় আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহে টানা তিন দিনের প্রবল বৃষ্টিতে রোপা আমন খেত পানিতে ডুবে যেন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। দুই দফায় আমন ধান রোপণের পরও কৃষকের স্বপ্নের ফসল পানিতে ডুবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

এদিকে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় হালচাষ, সার-বীজ, শ্রমিকের খরচ জোগাড় করে তিনগুণ দামে ধানের চারা কিনে জমি লাগালেও অতিবৃষ্টির স্রোতে সবুজের আশা নিমেষেই ভেসে গেছে। চোখের সামনে সোনার ফসল পচে যেতে দেখে নিঃস্ব কৃষকরা এখন হাহাকার অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।

গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ বছর বড় ধরনের বন্যা না হলেও তিন দফা বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ৩৫৯ হেক্টর জমির আমন খেত আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুই দফায় ৪৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তৃতীয় দফায় ৯৬ হেক্টর জমির ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬১৬ বিঘা জমিতে পুনরায় চাষাবাদ করা সম্ভব হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে শুধু পানি আর পানি। আর ধান খেত পানির নিচে পড়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বরের প্রবল বর্ষণে প্রায় দেড়শ বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে চারা, কোথাও আবার দু-একটি মৃতপ্রায় গাছ দাঁড়িয়ে আছে। আবার কিছু জমিতে কৃষকের সোনার ধান পানির নিচে পচে যাচ্ছে। মরিয়া হয়ে পুনরায় রোপণ করলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি ফসল।

কৃষকের হাহাকার, সংকটের আশঙ্কা:

কৃষকের হাহাকার আজ চারপাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। ধার-দেনা করে, দিনরাতের ঘাম ঝরিয়ে যে ধান চাষ করেছিলেন, বৃষ্টির পানিতে তা একেবারে ভেসে গেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বর্গাচাষীরা। প্রথম দফায় নিজেদের তৈরি চারা দিয়ে বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করে রোপণ করলেও তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পরে দ্বিতীয় দফায় আবার রোপণ করতে গিয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ গুনতে হয়েছে। সময়মতো চারা না পাওয়ায় এক বিঘা জমির জন্য দোগাছি বলানো কিনতে হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের আশঙ্কা, এ ক্ষতির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে, আর সামনে মানুষ ও গবাদিপশুর খাদ্যের ভয়াবহ সংকট দেখা দিতে পারে।

রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের বর্গাচাষী শাহারুল আলম বলেন, ‘দুই বিঘা জমি রোপণে চারা, হাল-সার ও শ্রমিকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুই বিঘা জমিই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে পানি বেশি থাকায় ভাদ্রের শেষ সময়ে রোপণ করেছিলাম তবুও রক্ষা হয়নি। খাদ্য ও গোখাদ্যের সংকটে পড়তে হবে।’

আরেক বর্গাচাষী খোকা মিয়া বলেন, প্রতি বছর সামান্য বৃষ্টি হলেই এ এলাকার ধান খেত পানিতে ডুবে যায়। এবার দুই দফায় চারা রোপণ করেও শেষ রক্ষা হলো না। খরচের টাকা উঠবেনা, উল্টো ঋণের বোঝা বাড়ল।’

এই গ্রামের কলেজ শিক্ষক ও গৃহস্থ চাষি আমিনুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘আমাদের এখানে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে। নালা সংকটের কারণে প্রতি বছরই জমি পানিতে ডুবে যায়। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় কৃষকদের বারবার ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

এদিকে শুধুই ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ নয়, স্থায়ী সমাধান চান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তাদের বিশ্বাস, মাত্র দুই কিলোমিটার জায়গায় নালা খনন করলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।

প্রশাসনের বক্তব্য: গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘তিন দফায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছিল। এর বেশিরভাগ রিকভারি হয়েছে। তবে ১৮ সেপ্টেম্বরের প্রবল বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া ৯৬ হেক্টরের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছি। সঠিক পরিমাণ নিরূপণের পর পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ আল হাসান বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে আমরা জানি। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত নালা খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে।


মীরসরাইয়ে কাভার্ড ভ্যানের পেছনে বাসের ধাক্কা, চালকের সহকারী নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

মীরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানের পেছনে দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় মোহাম্মদ মুরাদ (২৫) নামের বাস চালকের সহকারী ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মুরাদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং মুসলিমপাড়ার জামাল হোসেনের ছেলে। রোববার ভোরে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের একটি এসি বাস ভোরে কাভার্ডভ্যানটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মুরাদ নামে একজন নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে দুজনকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আহতরা হলেন, চট্টগ্রাম শহরের বাকলিয়া থানার চকবাজার এলাকার সাইদুল ইসলাম (২৮), নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কম্বলনগরের আব্দুল মোমেন (৪৮), লক্ষীপুরের নন্দনপুরের নুর আলম (৪৩), পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়ার সোহেল রানা (৩৮), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ ইউনিয়নের আব্দুল কাদের (৩৪) ও মিজানুর রহমান (৫০), দিনাজপুর সদরের সোহেল রানা (৩৫), শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার রিপন মণ্ডল (৩৪) এবং মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার রবিউল হোসেন (৩৬)। তারা সবাই ঢাকায় এসিআই ফুডসে চাকরি করেন।

আহত যাত্রী আব্দুল কাদের বলেন, আমরা ১৯জন মিলে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম। ভোরে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জোরে ধাক্কা লাগে। অনেকে জানালা ভেঙে বের হয়, বাকিদের ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে।

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফাহিম ফেরদৌস বলেন, আহতদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শঙ্কামুক্ত আছেন।

জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘কাভার্ডভ্যানটি দাঁড়িয়ে ছিল। বাস পেছন থেকে এসে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মুরাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


ফরিদপুরে একই মঞ্চে স্বামী স্ত্রীকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান

সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেগঘন পরিবেশন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর

একই সাথে একই মঞ্চে দুই সহকর্মীর বিদায় সংবর্ধনা। তবে এই দুইজনের সম্পর্ক শুধু সহকর্মীর নয়, তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের এই দম্পতি, মোহাম্মাদ নুরুল হুদা এবং তাসফিয়া তাছরীণ, বদলিজনিত কারণে বিদায় নিলেন। তাদের সম্মানে রোববার সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), ফরিদপুর-এর হল রুমে এক আবেগঘন বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মোহাম্মাদ নুরুল হুদা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তার সহধর্মিণী তাসফিয়া তাছরীণ সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা)-এর তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) ছিলেন।

মোহাম্মাদ নুরুল হুদা, যিনি ২০০৭ সালে ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরে কর্মজীবন শুরু করেন, তিনি এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হিসেবে নতুন দায়িত্ব পালন করবেন।

তাসফিয়া তাছরীণ, যিনি ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগদান করেন, তিনি এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র, মিরপুরে যোগদান করবেন। বক্তব্য দিতে গিয়ে দম্পতি উভয়েই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মোহাম্মাদ নুরুল হুদা বলেন, ‘ফরিদপুরের মাটি ও মানুষ আমাদের কর্মজীবনকে অর্থবহ করেছে। এখানকার সহকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা সারাজীবন পাথেয় হয়ে থাকবে। সমাজসেবা পরিবার আমার কাছে শুধু অফিস নয়, একটি প্রকৃত পরিবার ছিল।’

অন্যদিকে, তাসফিয়া তাছরীণ বলেন, ‘সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা)-এর শিশুদের সাথে আমার কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত অমূল্য। তাদের মায়া ছেড়ে যাওয়াটা খুব কঠিন। সকলের সহযোগিতা ও ভালোবাসার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

সমাজসেবা অধিদপ্তর, ফরিদপুরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক, এ এস এম আলী আহসান। সঞ্চালণা করেন সদরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাজী শামীম আহমেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মো. শফিকুল ইসলাম (সহকারি পরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, ফরিদপুর), নব যোগদানকারী মোহাম্মদ আরিফ হোসেন, মো. কাজী নেমেরী (নগরকান্দা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার), কল্লল সাহা (মধুখালী সমাজ সেবা অফিসার), ফজলে রাব্বি নোমান (সালথা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার), এস এম সুজাউদ্দিন রাশেদ (শহর সমাজসেবা অফিসার) এবং সদর সমাজসেবা অফিসার মো. মাহবুবুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।


কেশবপুরে শামুক নিধনে পরিবেশের ভারসাম্য বিপর্যয়ের আশংকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি

যশোরের কেশবপুর ও আশপাশ এলাকা থেকে অবাধে কৃষকের অগোচরে বন্ধুর ভূমিকা পালনকারী প্রাকৃতিক পানি শোধন ফিল্টার নামক প্রাণি শামুক নিধন করা হচ্ছে। এর ফলে মৎস্য ও কৃষি বিভাগও এখন হয়ে পড়েছে চিন্তিত। দাবি উঠেছে এখনি শামুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এলাকা থেকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে পড়বে। ভবদহ অঞ্চলের কেশবপুর উপজেলায় ৫৫ হাজার ৮৬৭ বিঘাতে ৪ হাজার ৬৫৮টি ঘের ও ৫ হাজার ৮৮৭ বিঘায় ৬ হাজার ৯৯৫টি পুকুর ও দিঘী রয়েছে। মনিরামপুর উপজেলায় রয়েছে ৬৮ হাজার ৬১০ বিঘায় ৪ হাজার ৮৮৯টি ঘের ও ৩৪ হাজার ২৩৭ বিঘায় আছে ১১ হাজার ৬৪৩টি পুকুর ও দিঘী এবং অভয়নগর উপজেলায় রয়েছে ৩৪ হাজার ৪২৫ বিঘা জমিতে ১ হাজার ২০৫টি ঘের ও ২৫ হাজার ৮৯০ বিঘায় ৪ হাজার ৮১০টি পুকুর ও দিঘী। এ ছাড়াও তিনটি উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল যা ঘের হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। এলাকার দরিদ্র নারী পুরুষ ও শিশুরা এ সব ঘের, পুকুর, দিঘী ও উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকে। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কের পয়েন্টে পয়েন্টে পাইকাররা ভ্যান, সাইকেল, দাঁড়িপাল্লা নিয়ে বসে থাকে। সকাল থেকেই ওই সব পয়েন্টে গিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুরা শামুক-ঝিনুক বিক্রি করে থাকে। এ সব পাইকারি ব্যবসায়ীরা শামুক-ঝিনুক থেকে মাংস বের করে ঘের মালিকদের কাছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন। আবার শামুক ঝিনুকের খোলা বস্তা প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে চুন তৈরির কারখানায়। মূলত ঘের ও চুন কারখানার মালিকরাই অস্বচ্ছল পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুদের উদ্বুদ্ধ করে শামুক-ঝিনুক ধরতে। চুন কারখানার মালিকরা পাইকারদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখে শামুক-ঝিনুক কেনার জন্য। মনিরামপুরের গোপালপুরে ২টি ও চেচুড়িয়ায় ১টি মোট ৩টি বড় ধরণের চুন তৈরির কারখানা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শামুক মারা গেলে মাংস পঁচে ও খোলায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশ জাতীয় বস্তু মাটিতে তৈরি হয়। এর ফলে যে ক্ষেতে বেশি শামুক থাকে সেখানে ফসল ভালো উৎপাদন হয়। শামুকের কারণে ক্ষেতের উর্বরতা শক্তি বাড়ে।

কেশবপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, শামুকের শরীরে রয়েছে প্রাকৃতিক জল শোধন ব্যবস্থা (ফিল্টার)। এরা ময়লা যুক্ত পানি পান করে ময়লা খাদ্য হিসেবে ভেতরে রেখে যে পানিটা বাইরে ছেড়ে দেয় সেটা বিশুদ্ধ। শামুকের বিশুদ্ধ পানির কারণে বিলে কই, শোল, শিং ও কার্প জাতীয় মাছ শামুক ও শামুকের ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে। জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক কমে গেলে পানি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পানির রং পরিবর্তন হয়ে রোগ জীবাণু বেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে ১০ জুলাই প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে শামুককে বন্য প্রাণি হিসেবে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে অবৈধ ভাবে শামুক ধরা ও বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।


সরিষাবাড়ীর রেলক্রসিং যেন মরণফাঁদ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার, ঘটছে দুর্ঘটনা

উপজেলার সবচেয়ে বড় তারাকান্দি রেলস্টেশন সংলগ্ন অরক্ষিত রেলক্রসিং। এখানে ৪টি ডাবল লাইন থাকলেও নেই গেটম্যান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্থানীয়রা। সম্প্রতি তোলা ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বিভিন্ন স্থানে অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলো যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব অরক্ষিত রেলক্রসিংগুলোতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। হচ্ছে প্রাণহানি। এসব ক্রসিংগুলোতে নেই কোনো গেটম্যান। কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে কোনো কোনো ক্রসিংয়ে নামে মাত্র সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগালেও সেগুলোর লেখা এখন আর চোখে পড়ে না। রেলের লাগানো অধিকাংশ সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও লেখা নষ্ট হয়ে গেছে। অতি দ্রুত এসব জনগুরুত্বপূর্ণ অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলোতে গেট নির্মাণ ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় যমুনা, অগ্নিবিণা ও জামালপুর এক্সপ্রেস নামে ৩টি আন্তনগর ট্রেন ও ধলেশ্বরী এক্সপ্রেস (বর্তমানে সাময়িক বন্ধ), ৩৭ আপ ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস ও চট্রগ্রাম মেইল ৩৮ ডাউন নামে ৩টি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। এ উপজেলার রেলপথে বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় প্রায় ৩৫টির মতো রেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে গেটম্যান রয়েছে মাত্র ৯টিতে। বাকি ছোট-বড় প্রায় ২৬টি রেলক্রসিং অরক্ষিত। এছাড়া ছোট ছোট কতগুলো অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং রয়েছে তার কোনো হিসাব নেই রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। এ সব ক্রসিংয়ে নেই কোনো গেটম্যান। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু। সরেজমিনে উপজেলার তারাকান্দি রেল স্টেশন সংলগ্ন সব চেয়ে বড় ৪টি ডাবল লাইনের রেল ক্রসিংসে দেখা যায়, অনেকে পায়ে হেঁটে ডান-বাম না তাকিয়েই পার হচ্ছে। অনায়াসে অটো-ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, প্রাইভেটকারসহ নানা যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। উপজেলার সব চেয়ে বড় এই রেলক্রসিং থাকলেও কেন এখানে গেটম্যান নেই সেই প্রশ্ন এলাকাবাসীর। এসব অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন স্থানীয়রা। এসব যেন দেখার কেউ নেই। এসব দেখেও না দেখার অজুহাতে প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না রেল কর্তৃপক্ষ।

তারাকান্দি রেলস্টেশন এলাকার মনোহারী দোকান ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, ‘তারাকান্দি রেলস্টেশনের সাথেই একটি প্রাথমিক ও হাইস্কুল আছে। এই রেল লাইন ও স্টেশন দিয়ে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। তারাকান্দি রেলস্টেশন সংলগ্ন এ লেভেল ক্রসিংটি এ উপজেলার সব থেকে বড় অরক্ষিত রেলক্রসিং। এখানে ৪টি ডাবল রেললাইন রয়েছে। এত বড় লেভেল ক্রসিং থাকার পরও এখানে রেলের কোনো গেটম্যান দেওয়া হয়নি। এটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেক সময় রেল লাইনের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন গাড়ি উল্টে যায়। অতি দ্রুত জনগুরুত্বপূর্ণ এই রেলক্রসিংটিতে গেটম্যানের দাবি জানাচ্ছি।’

কান্দারপাড়া বাসস্টেশন এলাকার রেলক্রসিংটির রয়েছে অরক্ষিত। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘এখানে কোনো গেটম্যান না থাকায় নানা দুর্ঘটনা হচ্ছে। এখানে একটি গেটম্যান প্রয়োজন।’

পৌর এলাকার সাতপোয়া জামতলা মোড়ে সম্প্রতি ট্রেনের ধাক্কায় নিজের ৪ বছরের মেয়ে হারানো বাবা ইউনূছ আলী মাস্টার বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনে এই রেলক্রসিংটিতে আগেও একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। দুই পাশে বাড়ি ও গাছ থাকায় দূর থেকে দেখা সম্ভব হয় না। সম্প্রতি আমার ৪ বছরের ছোট মেয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। যদি এখানে গেটম্যান থাকত তাহলে হয়তো আমার মেয়েটা মারা যেত না। আর যাতে কারও বুক খালী না হয় তাই এখানে গেটম্যান দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে তারাকান্দি রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘তারাকান্দি স্টেশন সংলগ্ন অরক্ষিত রেলক্রসিংটিতে গেট নির্মাণ ও গেটম্যান নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তা ছাড়া গেট নির্মাণের বিষয়ে আমাদের স্টেশন মাস্টারদের কোনো হাত নেই। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়টি দেখে থাকেন। এছাড়া রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অরক্ষিত প্রতিটি রেলক্রসিংএ সতর্কতামূলক নির্দেশনা সাইনবোর্ড দেওয়া আছে।


নওগাঁয় বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লাগামহীন ঘুষ, দুর্নীতি ও সরকারি কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে এবং নাগরিক সেবায় হয়রানির বিরুদ্ধে রোববার এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় শহরের কেন্দ্রীয় মুক্তির মোড়ে নওগাঁ পৌরসভার সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে নাগরিক উন্নয়ন ফোরাম।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ভাসানী পরিষদ নওগাঁর আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট শিক্ষক জাহিদ রাব্বানী রশিদ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব দেওয়ান মাহবুব আল হাসান।

এ সময় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদর) জেলা আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল, সুজনের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, নওগাঁ পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাহমুদুন নবী বেলাল, নওগাঁ জেলা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান, এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নওগাঁর প্রতিটি সরকারি অফিসে দুর্নীতি যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাধারণ নাগরিকদের ন্যায্য সেবা পেতে ঘুষ দিতে হচ্ছে, পড়তে হচ্ছে হয়রানির মুখে।

শহরের যানজট নিরসনে দ্রুত ফোরলেন রাস্তা নির্মাণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের উন্নয়ন কেবল কাগজে-কলমে হলে চলবে না। তা যেন বাস্তবেও প্রতিফলিত হয়। দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন ছাড়া জনগণের ভোগান্তি দূর হবে না। সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ ধরনের কর্মসূচি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আয়োজকরা জানান।


banner close