নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় রাব্বি (১৭) নামে এক মোটসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাব্বি উপজেলার পাটিচরা ইউনিয়নের গাহন কবিরাজ পাড়া গ্রামের খাইরুল ইসলামের ছেলে।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশচন্দ্র দেব দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহত রাব্বী মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলার নজিপুর থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় পৌঁছালে উল্টো দিক থেকে আসা বিআরটিসি বাসটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটসাইকেলে থাকা রাব্বী রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাব্বীকে মৃত ঘোষণা করেন।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশচন্দ্র দেব বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় রাব্বীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও তাদের আশ্রয়দাতা কক্সবাজারের স্থানীয়দের জন্য মৌলিক অবকাঠামো এবং জরুরি সেবার জন্য ৫৮.৬ মিলিয়ন ডলারের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এডিএফ) অনুদান এবং ২৮.১ মিলিয়ন ডলারের স্বল্প সুদে একটি ঋণের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এডিবি সবচেয়ে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে এডিএফ অনুদান দিয়ে থাকে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং আজ বাংলাদেশ ও এডিবি’র পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ঢাকায় ইআরডি কার্যালয়ে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এডিবি’রর কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ও তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয়দের স্থিতিশীলতা ও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ জোরদারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। শরণার্থী শিবিরগুলার বাসিন্দা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি করছি।
তিনি আরো বলেন, নতুন এই অনুদান জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে আমাদের পূর্ববর্তী সহায়তা ও এর অতিরিক্ত অর্থায়নের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এডিবি বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও স্থানীয় সম্প্রদায় উভয়ের সুবিধার্থে মোট ১৭১.৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ঋণ প্রদান করেছে।
‘ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস অ্যান্ড লাইভলিহুড ফর ডিসপ্লেসড পিপল ফ্রম মিয়ানমার অ্যান্ড হোস্ট কমিউনিটিজ ইমপ্রুভমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য, সড়ক ও সেতু, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুত এবং দুর্যোগ সহনশীলতা উন্নত ও সম্প্রসারিত করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার ও ভাসান চর অঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা এবং আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগণের জন্য পৃথক পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা হবে।
প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজারে সোলার-পাওয়ারড স্ট্রিটলাইট স্থাপন বা প্রতিস্থাপন, ভাসান চরে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন এবং রান্নার জন্য বায়োগ্যাস উৎপাদনকে সমৃদ্ধ করা হবে।
কক্সবাজার ও ভাসান চরে প্রাকৃতিক সমাধানে ড্রেনেজ খাল পুনঃস্থাপন করা হবে এবং নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সুবিধা বাড়াতে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য হাতিয়ায় বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হবে এবং কক্সবাজারের ৯টি উপজেলায় মিনিপাইপড পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য হাতিয়ায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এবং কক্সবাজারের নয়টি উপজেলাজুড়ে ক্ষুদ্র পাইপযুক্ত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হবে।
টেকনাফের পানি সংকটাপন্ন এলাকায় পরিশোধিত পানি সরবরাহের জন্য পালংখালী ইউনিয়ন ও উখিয়ায় একটি ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে এবং একটি ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। কক্সবাজার ও ভাসান চরে রাস্তার উন্নয়নের ফলে গতিশীলতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে মিয়ানমার থেকে আসা ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ বাস করছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ নারী ও শিশু। নোয়াখালী জেলার ভাসান চরে ৩৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়েছে।
এডিবি হলো একটি শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক, যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিশীল ও টেকসই প্রবৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থার বর্তমানে সদস্য ৬৯টি। এর মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সদস্য ৫০টি।
‘প্রতিটি হৃদয়ের স্পন্দনের যত্ন নিন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ব হৃদরোগ দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এ র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় র্যালীটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে বেশকয়েকটি সড়কটি প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বক্তব্য রাখেন, ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ব্রি. জেনারেল জিএম মনিরুল ইসলাম, ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবুল হাসনাত জাফর, ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক আরিফ মোহাম্মদ সোহানসহ আরো অনেকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমানে অল্প বয়সে মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। একটু সচেতন হলেই হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। পরিমিত পরিমাণ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামসহ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে এ রোগ থেকে সকলে মুক্তি পাবে। আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল, ডায়েবেটিস, ব্লাড সুগার ও ব্লাড প্রেসার কত আছে সবসময় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সহায়তা প্রদান করা হয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রবি মৌসুমে বসতবাড়িতে ও মাঠে চাষযোগ্য শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করেন উপজেলা কৃষিপুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম।
এ সময় সুবিধাভোগী কৃষকদের উপস্থিতিতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আউলিয়া খাতুন।
অন্যান্যের মাঝে অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সৈয়দ শাকিল আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সুরাইয়া আক্তার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মশিউর রহমান, বিআরডিবি কর্মকর্তা দিলারা আক্তার মনি ফকির, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, কৃষি উপসহকারী ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ব্লক সুপারভাইজার) মনজুরুল আলম, আয়নাল হক, সফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মোট ৮৪০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এদের ৩০০ জন কৃষকের মাঝে বসতবাড়িতে চাষযোগ্য শীতকালীন সবজি বেগুন, পালংশাক, লালশাক, মটরশুটি, লাউ, মুলা, বাটিশাকসহ ৭ ধরনের ৫০০ গ্রাম বীজের ৯ প্যাকেট দেওয়া হয়।
মাঠে চাষযোগ্য সবজি প্রণোদনার অংশ হিসেবে ৫৪০ জনের মাঝে প্রত্যেকের ২০ শতাংশ জমির জন্য বিভিন্ন ধরন এবং পরিমাণের লাউ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া ও শশা বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এদের প্রত্যেককে ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে।
‘কোনো দয়ালু মানুষ যদি আমারে একটা ঘর বানাইয়া দিতো আর একটা টিউবওয়েল বসাইয়া দিত, আমি সারাজীবন নামাজ পড়ে তার জন্য দোয়া করতাম। রাতে যদি একটু শান্তিতে নামাজ পড়তে আর ঘুমাতে পারতাম, তবে সব দুঃখ ভুলে যাইতাম।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজা বেগমের বয়স এখন ৭৩ বছর। ২০ বছর আগে বিধবা হওয়া এই নারী এখন একেবারেই নিঃস্ব। ভাঙা মাটির ঘর ছাড়া তার কোনো জমিজমা নেই। চারপাশের মাটির বেড়া হেলে পড়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। মরিচাধরা টিনের চালের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকে পড়ে। ফলে ঝড়-বৃষ্টির দিনে তার দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। রাতে একটি পুরোনো জলচৌকির ওপর বিছানো জায়নামাজে ঘুমাতে হয় তাকে।
অন্যের টিউবওয়েল থেকে পানি আনা ও ল্যাট্রিন ব্যবহার করতেও অপমানজনক কথা শোনতে হয় তাকে। তাই নতুন একটি ঘরের পাশাপাশি নিজস্ব টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন চান তিনি, যাতে অন্তত নিরাপদভাবে জীবনযাপন করতে পারেন।
চোখে ছানি পড়ায় কয়েক বছর আগে অপারেশন করা হলেও এখন চশমার সাহায্যে আবার কোরআন পড়তে পারেন ফিরোজা। কিন্তু প্রতিরাতে আতঙ্কে থাকেন- এই বুঝি ঝড়-বৃষ্টি এলো! বয়সের কারণে চলাফেরার শক্তি কমে গেছে, শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ।
ফিরোজা বেগমের তিন ছেলে থাকলেও তারা সংসারের টানাপোড়েনে মায়ের জন্য কোনো সহায়তা দিতে পারছেন না। ফলে এক ভাঙা ঘরেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে।
প্রতিবেশীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই এ দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ফিরোজা। কোনো সরকারি সহায়তা তিনি এখনো পাননি। স্থানীয়রা মনে করেন, দ্রুত সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে তার জন্য একটি ঘর, টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করা উচিত। পাশাপাশি তাকে বয়স্ক ভাতার আওতায় আনাও জরুরি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি অবগত হয়েছি, শিগগিরই তার জন্য সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, ফিরোজা বেগমকে সরকারি সহযোগিতার আওতায় আনা হবে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু সে দাবি এখনো পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছে জনসাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালপত্র পরিবহন করেত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীদের।
গজারিয়া গ্রামের নাছির উদ্দিন বলেন, এই ব্রিজটা প্রথম অবস্থায় বাঁশের সাঁকো ছিল। পরে আমাদের এলাকাবাসীর উদ্যোগে কাঠের সাঁকোতে রূপ দেওয়া হয়। বর্ষার সময় এই সাঁকো পুরোটা ডুবে যায়। এই ব্রিজটা যদি পাকাকরণ করা হয়, তাহলে আশেপাশের সকল গ্রামের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারব।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রিজটা করে দিত, তাহলে খুব উপকার হতো।
কে.জি.কে উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকোটা পানির নিচে প্রায় ডুবে যায়। তখন ঝুঁকি নিয়েই আমাদের পারাপার হতে হয়। এ জন্য অনেক সময় আমাদের স্কুলে যাওয়া হয় না। এতে আমরা পড়াশোনায় পিছিয়ে যাই। সরকারের কাছে অনুরোধ যেন ব্রিজটা সুন্দর করে দেওয়া হয়, যাতে আমরা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারি।
গজারিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, ব্রিজ না থাকায় আমাদের হাটে-বাজারে যেতে কষ্ট হয়। এমনকি কোনো রোগী হাসপাতালে নেওয়া আরও কষ্ট হয়ে যায়। এই এলাকার কৃষিপণ্য ধান, সবজি, কলা এগুলো বিক্রি করার জন্য ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে যেতে হয়। এই রাস্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে থাকে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারত।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের ওপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোনো প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করব। অনুমোদনসাপেক্ষে এটা পরবর্তীতে উন্নয়ন হবে আশা করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল রনী বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে কাজটি দ্রুত করার চেষ্টা করব।
নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি বাংলাদেশের একটি প্রসিদ্ধ মিষ্টি, সম্প্রতি এ মিষ্টি জি.আই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। মিষ্টিটি আকারে বালিশের মতো বড় না হলেও দেখতে অনেকটা বালিশের মতো এবং এর উপরে ক্ষীরের প্রলেপ থাকাতে একটি আবরণীসমেত বালিশের মতো দেখা যায়। এই মিষ্টি গয়ানাথের বালিশ নামেও পরিচিত। বিয়ে, জন্মদিন, ঈদ, পূজা, নতুন জামাইয়ের শশুর বাড়ি আগমনসহ বিভিন্ন উৎসবে জেলার মানুষ বালিশ মিষ্টি বেশ আগ্রহের সাথে কিনে নিয়ে যান।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেত্রকোণায় ঘুরতে আসা ভ্রমণপিয়াসী মানুষ বালিশ মিষ্টির স্বাদ নিতে আসেন জেলা শহরের বারহাট্টা রোডের গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। জেলার ঐতিহ্যবাহী এ মিষ্টি এখন দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও পরিচিত একটি পণ্য। দেশের বাহিরে যাওয়ার সময় অনেকে ভালোবেসে নিজ জেলার স্মারক হিসেবে নিয়ে যান এ মিষ্টান্ন।
বালিশ মিষ্টি তৈরি হয় দেশীয় গাভির খাঁটি দুধ-ছানা, চিনি ও ময়দা দিয়ে। প্রথমে দুধের ছানার সঙ্গে সামান্য ময়দা মিশিয়ে মন্ড তৈরি করা হয়। এর পরে বানানো হয় বিভিন্ন সাইজের বালিশ। পরে তা ভাজা হয় চিনির গরম রসে। এর পর ঠান্ডা করেও চিনির রসে ডুবিয়ে রাখা হয় অনেকক্ষণ। এক সময় তা রসে টইটম্বুর হয়ে যায়। বিক্রির সময় বালিশের ওপর দেয়া হয় ক্ষীরের প্রলেপ বা দুধের মালাই। এছাড়াও বালিশ বানানোর প্রক্রিয়ায় কিছুটা গোপনীয়তা আছে যা ব্যবসার স্বার্থে প্রকাশ করতে চান না কারিগররা।
পূর্বে দাম কম তুলনামূলক কম থাকলেও বাজারে বালিশ মিষ্টির কাঁচামালের দাম বাড়ায় বেড়েছে এ মিষ্টির দামও। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন আকৃতি ও দামে বিক্রি করা হয় এ মিষ্টি।
এ মিষ্টিটি ৩০, ৫০, ১০০, ৩০০, ৫০০, ১০০০ টাকা দামে বিভিন্ন আকৃতিতে পিস হিসেবে বিক্রি করা হয়। বড় আকৃতির বালিশ মিষ্টি একা খাওয়া সম্ভব হয় না, এক হাজার টাকার বালিশ মিষ্টি ৫/৬ জনে অনায়েসে খাওয়া যায়।
গয়ানাথের অন্যতম স্বত্বাধিকারী বাবুল মোদকসহ কারিগড়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বালিশ মিষ্টির জনক গয়ানাথ ঘোষ। হিন্দুদের মধ্যে ঘোষ পরিবার মিষ্টি তৈরিতে বিখ্যাত।
নেত্রকোনা শহরের বারহাট্টা রোডের ‘গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার'-এর স্বত্বাধিকারী গয়ানাথ ঘোষ শত বছরেরও বেশি সময় আগে বালিশ মিষ্টি উদ্ভাবন করেন। গয়নাথের স্বপ্ন ছিল নতুন ধরনের মিষ্টি আবিষ্কার করা। একদিন তিনি বিশাল সাইজের একটি মিষ্টি তৈরি করলেন এবং ক্রেতাদের খেতে দিলেন এবং ক্রেতারা খুব প্রশংসা করল। তাই ক্রেতাদের পরামর্শে মিষ্টিটির নাম রাখেন বালিশ। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় অল্পদিনেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বালিশের নাম। এর উদ্ভাবক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান গয়ানাথ ঘোষও। তাই এক সময় তার নামটিও জড়িয়ে যায় বালিশের সঙ্গে। লোকমুখে বালিশের নাম হয়ে ওঠে ‘গয়ানাথের বালিশ’।
১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় ঘোষ পরিবারের অনেকেই ভারতে চলে যান। কিন্তু গয়ানাথ ঘোষ যাননি। কিন্তু পরিবারের টানে গয়ানাথ ঘোষ ১৯৬৯ সালে ভারতে চলে যান। এ সময় তিনি প্রতিষ্ঠানটি বালিশ তৈরির প্রধান কারিগর নিখিল মোদকের কাছে তা বিক্রি করেন। নিখিলের মৃত্যুর পর এটি এখন পরিচালনা করছেন, তার তিন ছেলে বাবুল, দিলীপ ও খোকন মোদক।
বড় ছেলে বাবুল মোদক জানান, ‘গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের প্রতিষ্ঠাতা গয়ানাথ ঘোষ, উনি একশত বছর আগে এ দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন। গয়ানাথ ১৯৬৫ সালে আমার বাবা নিখিল চন্দ্র মোদকের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দেন। আমার বাবা তার প্রতিষ্ঠানে মিষ্টি তৈরির প্রধান কারিগর ছিলেন, ১৯৬৫ সালে বাবা এই প্রতিষ্ঠান কেনার পর থেকে আমরা তা পরিচালনা করে আসছি। নেত্রকোনা ব্যাতিত আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোথাও কোন শাখা নেই। আমরা অনলাইনে পার্সেলেও এ মিষ্টি বিক্রি করি না, যদি কেউ বালিশ মিষ্টির স্বাদ নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নেত্রকোনায় এসে গয়নাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকেই নিতে হবে। এটি জি.আই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা নেত্রকোনাবাসী গর্বিত।’
জি.আই পণ্যের স্বীকৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান গণমাধ্যমকে জানান, ‘নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি সারাদেশেই পরিচিত, নেত্রকোনার নাম মুখে নিলেই বালিশ মিষ্টির কথা সবার স্মৃতিপটে ভেসে উঠে, আমরা নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টিকে জি.আই পণ্যে ঘোষণার জন্যে সকল প্রসিডিওর মেইনটেইন করে পত্র লিখেছি এবং যতটুকু শুনতে পেরেছি এটির অনুমোদন হয়ে গেছে। অফিশিয়াল চিঠি পেলেই আমরা এই জি.আই পণ্যের যে সার্টিফিকেট তা গ্রহণ করার জন্যে যাব এবং এটিকে উদযাপন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর পূর্বে আমরা জেলার বিজয়পুরের সাদামাটি জি.আই পণ্যের সার্টিফিকেট আমরা গ্রহণ করেছি, এখন যদি আমরা বালিশ মিষ্টির জি.আই সার্টিফিকেটটি পাই তাহলে অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের আরো একটা ধাপ এগোল। জেলায় এমন আরো কোন পণ্য থেকে থাকলে সেগুলো অনুসন্ধান করে সেগুলো যেন জি.আই পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় সে প্রচেষ্টা আমরা অভ্যাহত রাখব।’
এ অঞ্চলে বালিশ মিষ্টির ঐতিহ্য নিয়ে প্রচলিত বহু ছড়া যুগ যুগ ধরে চলছে আমজনতার মুখে মুখে। বালিশ নিয়ে এমন একটি লোকজ ছড়া হলো-
‘জাম, গোল্লা পেয়ে শ্বশুর করল চটে নালিশ,
কথা ছিল আনবে জামাই নেত্রকোনার বালিশ’
গয়ানাথের বালিশ মিষ্টি এতটাই জনপ্রিয় যে, প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসেও এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে। স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকরা বালিশ মিষ্টিকে নিয়ে ছড়া-কবিতাও লিখে থাকেন।
ছড়াকার সঞ্জয় সরকার লিখেছেন,
‘নগদ টাকায় কাজ হয় না
হয় না তেল মালিশে
বসের মন তুষ্ট করে নেত্রকোনার বালিশে’
জেলা শহরের বারহাট্টা রোডের সেই ছোট্ট গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এখন অনেক বড় হয়েছে। সারাদিন ক্রেতার উপচে পড়া ভীড় লেগেই থাকে।
বারহাট্ট রোডের প্রধান শাখায় বালিশ মিষ্টি তৈরির নিজস্ব কারখানা রয়েছে। জেলা শহরের স্টেশন রোড ও মেছুয়া বাজারে দুটি শাখা রয়েছে, জেলা শহরের বাহিরে তাদের কোথাও কোনো শাখা নেই।
সূত্র: বাসস
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙ্গাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু, সে দাবি এখনও পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণের।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালামাল পরিবহন করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীর।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রীজটা তাড়াতাড়ি করে দিতো, তাহলে খুব উপকার হতো।
কে.জি.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকোটা পানির নিচে ডুবে থাকে। তখন ঝুঁকি নিয়েই আমাদের পারাপার হতে হয়। অনেক সময় আমাদের স্কুলে যাওয়া হয়না। এতে আমরা পড়াশুনায় পিছিয়ে যাই।
গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ব্রীজ না থাকায় আমাদের হাঁটে বাজারে যেতে কষ্ট হয়। এমনকি কোন রোগী হাসপাতালে নেওয়া আরও কষ্ট হয়ে যায়। এই এলাকার কৃষিপণ্য ধান, সবজি, কলা এগুলো বিক্রি করার জন্য ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে যেতে হয়।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারতো।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঘবেড়-গোহালিয়া খালের উপর সাঁকোটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা হবে।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের উপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোন প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করবো। আশা করি অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তীতে উন্নয়ন কাজ সাধিত হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ্ আল রনী বলেন, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগে সোহেল মেম্বার (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া স্ট্যান্ড বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল মেম্বার উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সোহেল মেম্বার অজ্ঞাত তিনজন সহযোগীকে নিয়ে বালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাফেজ সাহেবের ছেলে শরিফের বাড়িতে চাঁদা আদায়ের জন্য যায়। এসময় শরিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সোহেল মেম্বারের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শরিফের পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেল মেম্বারকে আটক করে এবং গ্রামবাসীকে খবর দেয় ।
খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সোহেল মেম্বারকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন সহযোগী পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পরে মরদেহ নারায়ণগঞ্জ সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়।
আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দীন জানান, “ আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি। তবে কি কারণে তাকে মারা হলো বিষয়টা এখনও জানা যায়নি।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
প্রসঙ্গত, সোহেল মেম্বার আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ অন্তত ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে। গত ১৩ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১১ তাকে সহযোগী ফজলুল হক ফজু সহ গ্রেপ্তার করেছিল।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিনামূল্যের টাইফয়েড ভ্যাকসিন নিবন্ধনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী ও শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড ভ্যাকসিনের টিকা দিবে সরকার। টিকা নিতে প্রত্যেক শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এতে গত আগস্ট মাসে প্রধান শিক্ষকদের সভা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন ইউএনও। পহেলা আগস্ট থেকে এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিনামূল্যে এই নিবন্ধন করার নির্দেশ দিলেও রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়ে নিবন্ধন করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রেণি শিক্ষকরা এসব টাকা উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুককের হাতে তুলে দেন।
এদিকে অনলাইনে একজন শিশুর টিকার নিবন্ধন করে প্রিন্ট দিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা খরচ হয়। যা বিদ্যালয়ের বহন করার কথা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০ টাকা করে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক তিনজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর নিবন্ধন করতে ১২ হাজার টাকা আদায় করছেন প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক। তাহলে বিদ্যালয়ে সরকার প্রদত্ত বছরে লাখ টাকা কোথায় যায়। সরকার থেকে টিআর কাবিখা সহ উন্নয়নের নামে নানা প্রকল্প এনে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে।
এদিকে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা সালমা সুলতানা রিমার স্বামী স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় স্কুলে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে রেখেছেন রিমা। স্কুলে অনুপস্থিত থাকা সহ নানান ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে শিশুদের ফেল করার হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। তাই ভয়ে কেউ সরাসরি প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসকে টাকা দিতে হয়। এজন্য আমি ৫০ টাকা করে নিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মু.সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, বিনামূল্যে টিকা দিবে সরকার। এতে কোন টাকা পয়শা নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। আমার নাম বিক্রি করে টাকা নিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি শিথিল করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম এবং খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ কর্মসূচি শিথিল ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মনোতোষ ত্রিপুরা বলেন, ‘এটা সুনির্দিষ্ট দুটি প্রধান সড়কের জন্য। তিনজনের সৎকার শেষে আবারও অবরোধ বহাল হবে।'
অবরোধ শিথিলের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক রোকন চৌধুরী বলেন, ‘এইসিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিবেচনাপ্রসূত। আটকে থাকা যাত্রীদের পরিবহনে কাউন্টারগুলোতে গাড়ি রাখা হয়েছে।’
রোববার গুইমারায় গুলিতে নিহত নিহত তিনজনের মরদেহ হিমাগারে রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলাসদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পী চাকমা। তিনি বলেন, ‘তিন মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন এবং নাম ঠিকানা না পাওয়ায় এখনও পোস্টমর্টেম করা সম্ভব হয়নি।’
খাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে চারদিন ধরে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ‘জুম্ম ছাত্র–জনতা'। এই অবরোধ চলাকালে রোববার খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে তিনজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিন পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয়দের অনেকে আহত হন।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে তিনজনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত করা হলেও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিনজন পাহাড়ি নিহত হয়েছেন।’
চটপটি ও ফুসকা বিক্রেতার দুই ছেলে-মেয়ে পড়ছে দেশের সেরা দুই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানে এবং মেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বিষয়ে প্রথম বর্ষে অধ্যায়ন করছে। দু’সন্তানের অনাগত ভবিষ্যত গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে আত্মবিশ্বাসী এই চটপটি বিক্রেতা ও তার স্ত্রী দিন-রাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন। তারপরও চোখে-মূখে নেই ক্লান্তির ছাপ। রোজগারের একমাত্র অবলম্বন টচপটি বিক্রির উপর চলে তাদের জীবন-জীবিকা।বর্তমানে সংসারের খরচ এবং দুই সন্তানের পড়ালেখার খরচ জোগাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত খরচ জোগানো নিয়ে অজানা শংকা পেয়ে বসছে তাদের।
যশোরের মণিরামপুরের পৌরসভার তাহেরপুর গ্রামের চটপটি বিক্রেতার দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ে জয়ন্তী দাস বড় এবং ছেলে জয় দাস ছোট। প্রখর মেধাবী দুই ভাই-বোন ছোট থেকেই প্রতি শ্রেনিতে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। দু’সন্তানকে লেখা-পড়ার খরচ জোগাতে চটপটি বিক্রেতা দীপক দাস ও তার স্ত্রী শম্পা দাস হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে চলেছেন। যেখানেই কোন অনুষ্ঠান, মেলা কিংবা ওয়াজ মাহফিল হয় সেখানেই স্ত্রী শম্পা দাসকে সাথে নিয়ে চটপটি বিক্রি করতে চলে যান দীপক দাস। অনুষ্ঠানে না গেলে পৌরশহরের রাজগঞ্জ মোড়স্থ নতুন সেতুর পশ্চিম মাথায় দুপুরের পর থেকে নিয়মিত চটপটি বিক্রি করেন। ভাড়া বাড়িতে থেকে শুধু এই চটপটি বিক্রির উপর চলে সংসার এবং জোগাতে হয় দু’সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। বেলা উঠার আগেই বাড়িতে চলে চটপটি রান্নার প্রস্তুতি। দুপুরের পর ভ্যান নিয়ে চলে যান বিক্রি করতে। রাত ৯ টা থেকে ১১টা অবধি চলে এই চটপটি বিক্রি। স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে এবং এনজিও, সমিতি থেকে ধার-দেনা করে দু’সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এখন আরও খরচ টানতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের।
দীপক দাস জানান, তার মন-মনন জুড়ে রয়েছে শুধুই দু’সন্তানের অনাগত সুন্দর ভবিষ্যত নির্মান। তাদের ঘিরেই সব স্বপ্ন। তার ছেলে ও মেয়ে পিঠা-পিঠি (বছর খানেক বয়সের ব্যবধান) হওয়ায় একই শ্রেনিতে ভর্তি করান। মেয়ে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ- ৫ পেয়ে ২০২১ সালে এসএসসি ও ২০২৩ সালে এইচএসসি পাশ করে। ছেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে একই শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ২০২৩-২৪ শিক্ষা বর্ষে ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।
শম্পা দাস তার দুই সন্তানের জন্য আশির্বাদ প্রার্থনা করেন। তারা শুধু পড়ালেখায় নয়; যেন ভাল মানুষ হতে পারে।
দূর্গা পুজার ছুটিতে বাড়ি এসেছেন দুই ভাই-বোন জয়ন্তী দাস ও জয় দাস। তারা জানান, বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখছেন তাদের বাবা-মা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছেন। বাবা-মায়ের আত্মত্যাগ কোনভাবেই শোধ হওয়ার নয়। তবে, ভবিষ্যতে তাদের মূখে হাসি ফোটাবার প্রাণপণ চেষ্টা থাকবে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মালবোঝাই পিকআপ ছিনতাই করার সময় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃত ছিনতাইকারীরা হলেন, মামুন (৩০), সোহান (২৪) ও আকাশ (২৫)। তাঁরা সবাই ভৈরব পৌর শহরের গাছতলাঘাটের বাসিন্দা।
গতকাল রোববার রাতে উপজেলার আগানগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জের একটি রাইস মিল থেকে বস্তা বোঝাই করে গাড়িটি ভৈরবের একটি চিড়ার মিলে যাচ্ছিল। গাড়িটি ভৈরব শহরের গাছতলাঘাট এলাকায় পৌঁছালে ওই তিন ছিনতাইকারী চালককে ভুল পথ দেখিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা ভৈরব উপজেলার আগানগর গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে এবং জোরপূর্বক পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য নিজেই গাড়ি চালিয়ে ভৈরব দুর্জয়মোড় পার হয়ে বেলাব উপজেলার বারৈচা পৌঁছালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া জানান, ছিনতাইকারীরা চালককে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার পরপরই চালক দ্রুত ভৈরব থানায় এসে পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান শুরু করে এবং রাত ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা থেকে তিন ছিনতাইকারীকে পিকআপসহ আটক করে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তালেব জানান, আটককৃত তিন যুবকই চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তিনি বলেন, ‘গাড়ি ছিনতাইয়ের বিষয়ে অবগত হয়ে আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে বারৈচা থেকে গাড়ি উদ্ধারসহ জড়িত তিনজনকে আটক করি। আটকের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এঘটনায় গাড়ির মালিক তৌহিদ মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতদের আজ সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার লাশের উপর খড়ি দেয়ার দায়ে মোঃ রাসেল মন্ডল (২০)নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।
গ্রেফতারকৃত রাসেল মন্ডল গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম সরকার পাড়া আঃ সামাদ মন্ডলের ছেলে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তাকে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নজরুল মন্ডল নুরাল পাগলার মরদেহ পোড়ানোর জন্য খড়ি দিচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল মন্ডলকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবারে হামলা চালায়। এ সময় রাসেল মোল্লা নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় জনতার হামলায় গুরুতর আহত হন রাসেল মোল্লা। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। নুরাল পাগলের লাশ পোড়ানো, হত্যাকান্ড, হামলা, ভাঙচুর লুন্ঠনের ঘটনায় রাসেলের বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৩৫'শ হতে ৪ হাজার অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।