বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

আগুনে পুড়ে ছাই ৩৭ ব্যবসায়ীর স্বপ্ন

আগুনে দোকানের মামামাল পুড়ে যাওয়ায় আহাজারি করছেন এক দোকানি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:১৬
প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের পোস্ট অফিস সড়কের একটি মার্কেটে শনিবার ভোরে ভয়াবহ আগুন লাগে। এ ঘটনায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৩৭ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর স্বপ্ন। সব দোকানেই ছিল কাপড়। আগুনে একটি ট্রাকও পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আলাউদ্দিন মিয়া একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী। শ্রীমঙ্গল শহরের পোস্ট অফিস সড়কে তার দোকান। প্রতিদিনের মতো তিনি রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়েছিলেন। রাত ৪টার দিকে খবর পান, তার দোকান যে মার্কেটে সেই মার্কেটে আগুন লেগেছে। বাসা থেকে দৌড়ে আসেন দোকানের সামনে। এসে দেখেন চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হচ্ছে তার তিলে তিলে গড়ে তোলা দোকানটি।

আলাউদ্দিন জানান, গত পরশু আড়াই লাখ টাকার নতুন কাপড় এনে দোকানে তুলেছিলেন। মোট পাঁচ লাখ টাকার মতো কাপড় ছিল দোকানে। দোকান তো পুড়ে ছাই হয়েছে, সঙ্গে পুড়ে গেছে তাদের স্বপ্ন।

একই মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী রাশেদ মিয়া জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মোটামুটি একটা পুঁজি হাতে তুলে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। মোটামুটি ভালোই চলছিল দোকানটা। প্রায় ছয় লাখ টাকার মতো মাল ছিল দোকানে, এখন দোকানে একটা সুতাও অবশিষ্ট নেই। পাঁচ সন্তান নিয়ে পুরোপুরি পথে বসে গেলেন। আগুন তার সব কেড়ে নিল।

ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত ৪টার দিকে পোস্ট অফিস রোডের অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মার্কেটের পাশের পেট্রলপাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। আগুনের উত্তাপে আশপাশের বহুতল ভবনের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুনের লেলিহান শিখা থেকে পেট্রলপাম্পকে প্রথমে রক্ষা করে। পরে জেলা সদর মৌলভীবাজার থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও একটি ইউনিট এসে যোগ দেয়। তিনটি ইউনিট আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, আগুনে তাদের দেড় কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি দোকানে কম করে হলেও ৫ লাখ টাকার কাপড় ছিল।

শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন দাবি করেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।

শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস অফিসের ইনচার্জ মো. আবু তাহের বলেন, আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তদন্তের পর জানাতে পারবো। দোকানগুলোতে প্রচুর শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য কাপড় থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ, পৌর মেয়র মো. মহসিন মিয়া ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. কামাল হোসেন।

সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, ‘আগুনে বেশ কিছু দোকানের সব কিছু পুড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলেন।’ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তিনি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।


বেপরোয়া সিএনজি উল্টে কাভার্ড ভ্যানে ধাক্কা, নিহত ২

দুর্ঘটনার পর মরদেহ মর্গে পাঠায় পুলিশ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ২০:৩৬
প্রতিনিধি, নরসিংদী

নরসিংদীতে বেপরোয়া গতির সিএনজি চালিত অটোরিকশা উল্টে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৪জন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পলাশ থানার পাঁচদোনা-টঙ্গি মহাসড়কের টান ঘোড়াশাল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ এ তথ্য জানিয়েছেন।

নিহতরা হলেন—গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার চুয়ারিখোলা গ্রামের সুরেন্দ্র নাথের ছেলে পংকজ নাথ (৪০)। নিহত নারীর পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয়া জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে পাঁচদোনা থেকে শিশুসহ ৬ জন যাত্রী নিয়ে সিএনজিটি ঘোড়াশালের দিকে যাচ্ছিল। পথে পাঁচদোনা-টঙ্গি মহাসড়কের টান ঘোড়াশাল এলাকায় পৌঁছালে সিএনজিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এসময় অপরদিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সিএনজিটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে পংকজ নাথ (৪০) নামে সিএনজির এক যাত্রী নিহত হন। এতে নারীসহ আরও পাঁচ যাত্রী আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে ঘোড়াশাল ও নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে আহত নারীর মৃত্যু হয়। বাকি চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। নিহত দুইজনের মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহত একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, নারীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।


টিনের চালে চোর, নামাল ফায়ার সার্ভিস

উপায়ান্ত না দেখে তাকে নামাতে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ২০:৩৬
প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ

পুলিশের হাতে ধরা পড়া থেকে বাঁচতে আন্ত:জেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের এক সদস্য উঠে গেল বসতঘরের টিনের চালে। সেখানে উঠে নিজের গলায় টিন ধরে দিলো আত্মহত্যার হুমকি। বিপাকে পড়ল পুলিশ। শেষে চোর নামাতে ডাকা হলো ফায়ার সার্ভিস।

গত সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার পৌর-সদরের চালিয়াগোপ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের বাসিন্দা মুর্শিদ উদ্দিনের ছেলে রিটন মিয়ার (৪০) এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও।

পুলিশ জানিয়েছে, রিটনের এদিনের ঘটনা নতুন নয়। তাকে এর আগেও ধরতে গেলে অভিনব সব বাহানা করেছে।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান জানান, রিটন মিয়ার নামে জেলার বিভিন্ন থানায় মোটরসাইকেল চুরির বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে গত ২৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ মডেল থানার একটি মামলায় তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। সে মামলায় তাকে ধরতে সদর থানার পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সদর থানা পুলিশকে সহায়তা করতে পাকুন্দিয়ায় থানা পুলিশও সেখানে উপস্থিত হয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সে বসতঘরের টিনের চালে উঠে বসে। এ সময় পুলিশ তাকে নামতে বললে একটা টিনের টুকরা নিজের গলায় ধরে আত্মহত্যার হুমকি দেন। উপস্থিত স্থানীয় ব্যক্তিরা বিভিন্নভাবে তাকে বুঝিয়েও নামাতে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিসকে। পরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের যৌথ চেষ্টায় তাকে নামিয়ে আনা হয়। সেখান থেকে নামিয়ে তাকে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, “রিটনকে এর আগেও যতবার পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গিয়েছে ততবারই সে নানান অভিনয় করেছে। এর আগে তাকে ধরতে গেলে সে পানির বোতল হাতে নিয়ে বলতে থাকে, ‘এর মধ্যে বিষ মেশানো আছে।’ সে হুমকি দেয়, তাকে ধরতে গেলে ওই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবে। তাকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেছে সে বোতলে আসলে বিষ মেশানো ছিল না।’

পাকুন্দিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মুজিবুর রহমান জানান, পুলিশ খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অভিযান চালিয়ে রিটনকে টিনের চাল থেকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির বিষয়ে জানতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদকে ফোন করা হলে হাসতে হাসতে তিনি বলেন, ‘এই চোরের প্রত্যেকটি কাহিনিই ব্যাপক বিনোদনের। তার নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তার (রিটনের) অভিনয় দেখে পুলিশ সদস্যরাও অনেক হাসাহাসি করেছে। আটকের পর ওই দিন বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

বিষয়:

হত্যা মামলার আসামি, জামিনে বেরিয়ে করল ধর্ষণ

র‌্যাবের হাতে আটক লাদেন
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৪৩
প্রতিনিধি, ফরিদপুর

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় জামিনে বের হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে লাদেন শেখ (২০) নামে এক হত্যা মামলার আসামিকে আটক করেছে র‌্যাব-৮।

বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে ফরিদপুর র‌্যাব-৮। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা থেকে লাদেনকে আটক করা হয়।

লাদেন আলফাডাঙ্গার টগরবন্দ ইউনিয়নের রায়ের পানাইল গ্রামের আফজাল আলী মোল্যার ছেলে। সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী।

ফরিদপুর-৮ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে। আটকের পর তাকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

গত বছরের ৩০ জানুযারি পারিবারিক বিরোধের জেরে লাদেন শেখ, ইব্রাহীম শেখসহ আরও কয়েকজন একই এলাকার সৌদি প্রবাসী শেখ সাদির ছেলে ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহেদ শেখকে দিনদুপুরে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহত শাহেদ শেখের ফুফা লিটন খান বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই রাতে লাদেন ও ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ইব্রাহীম শেখ বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয় লাদেন শেখ।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলার স্বপ্ননগর আবাসন এলাকার একটি বাড়িতে অভিযুক্ত লাদেন শেখ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যায়। এ সময় ওই বাড়ির ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বাড়ির পাশের একটি ঘাসের জমিতে নিয়ে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। ওই ঘটনার একদিন পর ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে লাদেন শেখকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে লাদেন পলাতক ছিল।


সুনামগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৭:২৭
প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট করে হত্যার দায়ে সুনামগঞ্জে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মো. জাকির হোসেন এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই যুবকের নাম মো. রাসেল মিয়া (২৫)। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের মহনমালা বেগম ও মো. রাসেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন রাসেল। এ নিয়ে মহনমালা জামালগঞ্জ আমল গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। পরে রাসেল আর যৌতুক দাবি করবেন না এবং নির্যাতন করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তিনি আবারও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করেন। ২০১৮ সালের ২৯ জুন মহনমালাকে ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার গলায় ও ঠোঁটে জখমের চিহ্ন, নাক-মুখে রক্ত ও ফেনা পাওয়া যায়। খবর পেয়ে মহনমালার মা রেছনা বেগমসহ অন্যান্যরা রাসেলের বাড়িতে গেলে ওই বাড়ির সবাই পালিয়ে যান। পরে রেছনা বেগম বাদী হয়ে ওই বছরের ৮ জুলাই জামালগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় আটক আসামি মো. রাসেল মিয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

দীর্ঘ শুনানি শেষে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত বৃহস্পতিবার মো. রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় রাসেল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা এ পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায় এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নাসিরুল হক আফিন্দি।


জিআই পণ্য হচ্ছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা

নাটোরের কাঁচাগোল্লা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৬:১০
বাসস

ঐতিহ্যবাহী নাটোরের কাঁচাগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে নাটোরের জেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিবন্ধনের আবেদন এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

এফিডেভিটের মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বরাবর নাটোরের কাঁচাগোল্লার আবেদন-প্রক্রিয়া পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে নাটোরের ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।

নাটোরের কাঁচাগোল্লা সৃষ্টির পেছনে আছে মজাদার এক ইতিহাস। অর্ধবঙ্গেশ্বরী খ্যাত নাটোরের রানী ভবানীর প্রিয় খাদ্যের তালিকায় ছিল মিষ্টি। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন শহরের লালবাজারের মিষ্টি-বিক্রেতা মধুসূদন পাল। এক দিন মধুসূদন পালের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সব কর্মচারী অসুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু মিষ্টি তৈরির জন্যে দুই মণ ছানা সংগ্রহ করা ছিল। ছানাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে উনুনে তাপ দেন। কারিগর ছাড়াই এলোমেলো এই আয়োজনে তৈরি হয় নতুন এক মিষ্টি। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় নতুন এই মিষ্টিই পাঠিয়ে দেন রানী ভবানীর রাজবাড়িতে।

রানী ভবানী এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান। মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। এই হচ্ছে কাঁচাগোল্লা সৃষ্টির ইতিহাস। এই গল্প বেঁচে আছে শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে-মুখে। নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়। এর মূল উপাদান ছানা আর চিনির সংমিশ্রণে একপ্রকার সন্দেশ। কাঁচাগোল্লার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নাটোরবাসীর আবেগ ও ভালোবাসা। তাই আজ থেকে ২৫০ বছর আগে কাঁচাগোল্লা আবিষ্কৃত হয়ে আজও সুনাম বজায় রেখেছে। নাটোরের বিয়ে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও অতিথি আপ্যায়নে সরবরাহ করা হয় কাঁচাগোল্লা। শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বেই নাটোরের কাঁচাগোল্লা প্রসিদ্ধ।

জেলা প্রশাসক জানান, নাটোরে সৃষ্টি কাঁচাগোল্লা সারা দেশে প্রসিদ্ধ। ইতিহাস সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে জিআই নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছি আমরা। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে জিআই পণ্যের মর্যাদা লাভ করবে নাটোরের কাঁচাগোল্লা।

জিআই তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি দেশ-বিদেশে কাঁচাগোল্লার ব্র্যান্ডিং ও চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক। বাসস

বিষয়:

ছেলের মৃত্যুর পরদিন আমগাছে মায়ের ঝুলন্ত মরদেহ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৪:৩৭
প্রতিনিধি, মেহেরপুর

মেহেরপুরে ছেলের মৃত্যুর পরদিনই আমগাছ থেকে মায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে জেলার মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামের একটি আমগাছ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মা বছিরন খাতুন আত্মহত্যা করেছেন।

তিন সন্তানের জননী ৫০ বছর বয়সী বছিরন খাতুন ওই এলাকার মাছ ব্যবসায়ী রমজান আলীর স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, বছিরনের ছোট ছেলে রাসেল ১০ দিন আগে বাড়ির কাজ-কর্ম নিয়ে মায়ের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এক পর্যায়ে অভিমানে নিজ বাড়িতে থাকা আগাছানাশক কীটনাশক পান করে। পরে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে তাকে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মেহেরপুর ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পথে বুধবার তার মৃত্যু হয়। পরে রাত ১০টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

ছেলের দাফনের পর বছিরন খাতুন বাড়ির বাইরে চলে আসেন। এরপর রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পরিবারের লোকজন তাকে আর খুঁজে পাননি। পরে স্থানীয়রা বৃহস্পতিবার ভোরে একটি আমগাছে বছিরনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পরিবারের লোকজনকে খবর দেন।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান রাসেল বলেন, মরদেহটি একটি আমগাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে হয়তো বছিরন খাতুন গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।


মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড

আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৪:৩০
সিলেট ব্যুরো

সিলেটে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে আতিক হোসেন খান নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন আহমদ জানান, সব সাক্ষ্যপ্রমাণে আতিকুর রহমান দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। তবে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সকালে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে বাড়ির সামনের গাছ কাটা নিয়ে আতিক হোসেন খানের সঙ্গে ঝগড়া হয় তার বাবা করিম খান ও মা মিনারা বেগমের। বাকবিতণ্ডা হলে একপর্যায়ে আতিক উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা কোদাল ও দা দিয়ে বাবা ও মায়ের ওপর হামলা করে।

তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আতিক পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থলেই করিম খান মারা যান। পরে মা-মিনারা বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনিও মারা যান।

এ ঘটনায় আতিকের ভাই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

বিষয়:

গাজীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৪:৩৩
প্রতিনিধি, গাজীপুর

গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়াপূর্ব খণ্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকচ্ছপিয়া গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে পিয়াস (২০) ও বেলাল সওদাগরের ছেলে পাভেল (২৩) এবং জামালপুরের মনোয়ার (২৫)।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাতে আরেফিন জানান, সকালে কেওয়াপূর্ব খণ্ড এলাকায় স্কাইনিস পাওয়ার কোম্পানি নামের বহুতল ভবনে কাজ করছিল নির্মাণ শ্রমিকরা। এ সময় অসাবধানতাবশত নির্মাণাধীন ভবনের রডের সঙ্গে পাশের বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শ হলে দীর্ঘ সময় আগুন জ্বলতে থাকে। এতে কয়েকজন শ্রমিক তারে আটকে পুড়ে যান। খবর পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।


চট্টগ্রামে ইফতারেও ঐতিহ্যের মেজবান

আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৯:০৬
তাসনীম হাসান, চট্টগ্রাম

পোস্তদানা, মিষ্টি জিরা, নারকেল, বাদামবাটা। সঙ্গে আরও কয়েক পদের মসলায় গরুর মাংস মেখে বড় ডেকচিতে ভরে সরিষার তেলে রান্না। মূল পদ গরুর হলেও অবশ্য রান্নার ধরন একেবারেই আলাদা। রান্নার ডেকচি থেকে চুলা- তাও ভিন্ন। বিশেষভাবে তৈরি এই রান্নাকেই বলে মেজবানি মাংস। সেই মাংসের সঙ্গে ভাত, নলার ঝোল, মাংসের ছাঁটছুট আর ডাল দিয়ে লাউয়ের তরকারি মাটির শানকিতে ভরে খাওয়া- আহ কী স্বাদ!

চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই খাবারের চাহিদা থাকে সারা বছরই। বাইরে থেকে কেউ চট্টগ্রামে এলে একবার মেজবানের স্বাদ নিতে চাইবেনই। সেই খাবার এখন ঢুকে পড়েছে ইফতারেও। দিনভর রোজা শেষে তৃপ্তিভরে খেতে তাই অনেকেই ঢুঁ মারেন মেজবানের মাংস আছে এমন রেস্তোরাঁ আর দোকানে। কেউবা আবার ঘরেও নিয়ে আসেন মেজবানের মাংস।

নগরের চৌমুহনী এলাকার পীরবাড়ি রোডের অস্থায়ী দোকানগুলোর মেজবানি মাংসের সুনাম আছে পুরো চট্টগ্রামেই। বিকেলে সেই রোডে ঢুকলেই এখন নাকে আসে মেজবানি মাংসের সুগন্ধ। রাস্তার দুই পাশেই সারি সারি মেজবানের মাংসের দোকান। সেখানে টেবিলে থরে থরে সাজানো ছোট-বড় বাটি। অন্য পাশে মেজবানের মাংসের বড় বড় ডেকচি। হালকা আঁচে মাংস গরম রাখার ব্যবস্থাও আছে। ক্রেতা এলে হাঁড়ি থেকে গরম মাংস ভরা হয় বাটিতে। সঙ্গে যে কেউ নিতে পারেন ছোলার ডালও।

পীরবাড়ি রোডের মেজবানি মাংস বিক্রির শুরুটা যাদের হাত দিয়ে, তাদের অন্যতম মোহাম্মদ মনজুর বাবুর্চি। তার বাবা আবদুল খায়ের ছিলেন চট্টগ্রামের এক সময়ের বিখ্যাত বাবুর্চি। বাবার কাছ থেকে মেজবানের মাংস রান্নার হাত পাকান মনজুর বাবুর্চি। এখন পুরো দেশেই মেজবানের মাংস রান্নার জন্য ডাক পড়ে তার।

মনজুর বাবুর্চি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘২০০৩ সালে ছোট্ট দোকানে মেজবানের মাংস বিক্রি শুরু করি। ধীরে ধীরে বাড়ে প্রসার। দোকানের পেছনের জায়গায় রান্না করি মেজবানি মাংস। এখন প্রতিদিন ৪০-৫০ কেজি মেজবানের মাংস বিক্রি হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসে মেজবানের মাংস কিনতে।’

মনজুর বাবুর্চির কথার প্রমাণ মেলে একটু পরেই। ৮-৯ কিলোমিটার দূরে নগরের হালিশহর এলাকা থেকে মেজবানের মাংস কিনতে এসেছিলেন শাহাব উদ্দিন। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এখানে মেজবানের পুরোনো স্বাদ পাওয়া যায়। বাসার মানুষরা ইফতারে মেজবানের মাংস খাওয়ার আবদার করেছে। সে জন্য এলাম।’

পীরবাড়ি রোডের মুখেই মেজবানি মাংস বিক্রি করছিলেন আব্দুল খালেক বাবুর্চি। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘২১ বছর ধরে মেজবানি মাংস বিক্রি করছি। আগে নানা অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক মেজবানি মাংস খেত মানুষ। তবে কয়েক বছর ধরে ইফতারেও মানুষ মেজবানি মাংসের স্বাদ নিচ্ছে। চাহিদা তাই আগের চেয়ে বেড়েছে।’

আগে শুধু পীরবাড়ি রোডকেন্দ্রিক মেজবানি মাংসের অস্থায়ী দোকানগুলো থাকলেও এখন নগরের পাঠানটুলী, শেখ মুজিব রোড, বাদামতলী এলাকা পর্যন্ত দোকান দেখা যায়। গত কয়েক বছরে অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোও ইফতারির বিশেষ পদ হিসেবে মেজবানি মাংস বিক্রি করছে। বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপ একাই ‘মেজ্জান হাইলে আইয়ন’ নামে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মেজবানের মাংস বিক্রির কয়েকটি রেস্তোরাঁ খুলেছে। ষোলশহর শপিং কমপ্লেক্সের পেছনে আছে ‘মেজ্জাইন্নাবাড়ি’ নামের আরও একটি মেজবানি মাংসের রেস্তোরাঁ।

জামাল খানের ‘মেজ্জান হাইলে আইয়ন’-এ ইফতার করতে এসেছিল বন্ধুদের একটি দল। সেই দলের একজন শফিক আহমদ বলেন, ‘বাসায় রান্না করা মেজবানি মাংসে আসল স্বাদ মেলে না। বন্ধুদের নিয়ে তাই ইফতারে মেজবানি মাংস খেতে রেস্তোরাঁয় চলে এলাম।’

বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও অস্থায়ী দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরুর মাংসের দাম বাড়ায় তাদেরও এখন বেশি দামে মেজবানি মাংস বিক্রি করতে হচ্ছে। রেস্তোরাঁ ও দোকানভেদে প্রতি কেজি মেজবানি মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ডাল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। আবার চাইলে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়ও নিতে পারছেন মেজবানি মাংস, ভাত ও ডালের প্যাকেজ।


নবীনদের দলে ভেড়ানো নিয়ে শজিমেক ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৫:২৮
প্রতিনিধি, বগুড়া

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থীদের নিজ দলে ভেড়ানো নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আট নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

শজিমেক ছাত্রাবাসে বুধবার রাত ১০টা থেকে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রাবাসের নিচতলার অন্তত পাঁচটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি মেডিকেল কলেজটিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নবাগত ছাত্রদের নিজ গ্রুপে ভেড়ানোকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন শজিমেক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আসিফের অনুসারী ধ্রুব, অনিক, শুভ ও হৃদয়। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন রনির অনুসারী ইমতিয়াজ, রেজা, ফুয়াদ ও অমি। বর্তমানে তারা শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শজিমেক ছাত্রাবাসে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২৩ সালে মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া (৩২ ব্যাচের) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে এসেছে। তাদের নিজ নিজ গ্রুপে ভেড়ানোকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা থেকে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দ্বন্দ্বে জড়ানো সবাই ৩১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের সময় ছাত্রবাসের নিচতলার অন্তত পাঁচটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়৷

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর আসিফ বলেন, ‘জুনিয়ররা ক্যাম্পাসে আসার পর তাদের থাকা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তবে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা আমার কর্মীদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এতে চারজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে তিনজন গুরুতর জখম হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না৷

অন্যদিকে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন রনির ভাষ্য, ‘সভাপতির গ্রুপের নেতা-কর্মীরা প্রথমে তার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। পরে শিক্ষকরা এসে উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা করে দেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের কিছু নেই। জুনিয়রদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি থেকে এর সূত্রপাত হয়েছে। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আমার চার কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন।’

বগুড়া ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছার রহমান জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বুধবার রাতে সংঘর্ষ হয়েছিল। এখন ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত আছে৷ এই ঘটনায় আহতরা শজিমেক হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়:

সুন্দরবনে মাছ ধরতে বাধা, বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা

সুন্দরবনে মাছ ধরতে বাঁধা দেয়ায় বনবিভাগের ৭ জনকে মারধর করে জেলেরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৪:৫৬
প্রতিনিধি, মোংলা (বাগেরহাট)

মোংলার সুন্দরবনের ডলফিন অভয়ারণ্যে মাছ ধরতে বাধা দেয়ায় বন বিভাগের সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারধর করে আহত করেছেন জেলেরা। এ ঘটনায় এক জেলেকে আটক করেছে বন বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) সহকারী বনসংরক্ষক শেখ মাহবুব হাসান জানান, বুধবার বিকেলে তিনিসহ সাতজন স্টাফ স্পিডবোট নিয়ে মোংলার পশুর নদীর নন্দবালা, শ্যালা নদী ও আন্ধারমানিক এলাকায় টহলে যান। সেসময় নিষিদ্ধ ডলফিন অভয়ারণ্যে কারেন্টজাল দিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছিল জেলেরা। বিকেল ৫টার দিকে অভয়ারণ্যে ওই জেলেদের মাছ ধরতে বাধা দিলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে বন বিভাগের অভিযানকারীদের ওপর হামলা চালায়।

জেলেদের নৌকায় থাকা দা, লাঠি ও বৈঠা দিয়ে অভিযানকারীদের ওপর হামলা চালালে তাতে আহত হন চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক শেখ মাহবুব হাসান, স্টেশন অফিসার খলিলুর রহমান, বোটম্যান শেখ মোতালেব হোসেন, মো. তুহিন, সুলতান মাহমুদ টিপু, সেলিম সরদার ও স্পিডবোট ড্রাইভার মনজু রাজা। আহতদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

হামলাকারী জেলেরা হলেন নয়ন খা, শয়ন খা, আমিরুল খা, এনামুল, লিটন, আল মামুন, রিয়াজুল খা, মারুফ খা, তিতুমীর খা ও শহীদ। এ সময় হামলাকারীদের সঙ্গে অজ্ঞাত আরও ২০-২২ জন জেলে ছিলেন। এসব জেলেদের বাড়ি মোংলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি এলাকায়।

হামলাকারীদের নেতৃত্বে থাকা মাসুম বিল্লাহকে রাতেই আটক করেছে বন বিভাগ। বাকিদের আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে বন বিভাগ। এদিকে এ ঘটনায় শনাক্ত হওয়া জেলেসহ অজ্ঞাত আরও ২২ জনকে আসামি করে পিওআর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান সহকারী বনসংরক্ষক মাহবুব হাসান।

বিষয়:

সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

পতনঊষার ইউনিয়নের শহীদনগর বাজার থেকে শরিষতলা সড়কে খানাখন্দ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩০ মার্চ, ২০২৩ ১৫:০১
প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শহীদনগর বাজার থেকে শরিষতলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। দুই-তৃতীয়াংশ সড়কের পিচ উঠে মূল রাস্তার চেয়ে অনেক নিচু হয়ে গেছে। ফলে সড়কে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।

স্থানীয়রা বলছেন, দুই বছর ধরে শহীদনগর বাজার-শরিষতলা সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। এ সড়ক দিয়ে কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সড়ক দিয়ে ট্রাক, পিকআপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ছোট-বড় কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। বৃষ্টির দিনে সড়কের গর্তগুলো পানিতে ঢাকা পড়ায় বেশির ভাগ গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশের পিচঢালাই উঠে চার-পাঁচ ফুট গভীর গর্ত হয়েছে। শুকনা মৌসুমে এসব গর্ত পেরিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়।

এলাকাবাসী জানান, সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলের কারণে পিচঢালাই উঠে মাটি বেরিয়ে কয়েক ফুট গর্ত হয়েছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটে। অথচ সড়কটি মেরামতের জন্য দুই বছর ধরে কেউ কোনো পদক্ষেপ নেননি। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান ও ওলিউর রহমান বলেন, দুই বছর ধরে কষ্ট করে আমরা আসা-যাওয়া করি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শ শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করে। সড়কের অবস্থা এতই বেহাল যে, মানুষ গাড়ি ব্যবহার না করে এখন হেঁটেই চলাচল করে।

এ বিষয়ে পতনঊষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শহীদনগর বাজার থেকে শরিষতলা পর্যন্ত সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা হবে।’


চট্টগ্রামে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার মামলা

সাংবাদিক মাহবুব আলম লাবলু। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৩ ২৩:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

বুধবার সাংবাদিক মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

সম্প্রতি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার অনলাইন ও প্রিন্টে ‘দুবাই ফেরত শাহ আলম সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি রেল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে বাদীকে জড়িয়ে মানহানিকর, বিব্রতকর ও অসত্য তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগ তোলা হয়েছে মামলায়।

মামলার এজাহারে ‍উল্লেখ করা হয়, অভিযোগকারী একজন সহজ-সরল, শান্তিপ্রিয় এবং দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি। তিনি একজন ব্যবসায়ী, সমাজসেবক এবং শিক্ষানুরাগী হন। তিনি চট্টগ্রাম শহরের একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সমাজসেবক। পাশাপাশি বাংলাদেশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ অর্থ সম্পাদকসহ নানা পদে থাকার সময় সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন সমাজ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত ছিলেন। দেশে করোনাকালীন তিনি সর্বপ্রথম করোনা প্রতিরোধক বুথের চালু করেন এবং দেশব্যাপী করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপনপূর্বক বিনামূল্যে মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং অক্সিজেনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী ও বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করে দেশের সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। আসামি বিভিন্ন অজুহাতে টাকা দাবি করে আসছিলেন এবং টাকা না দিলে ভুয়া সংবাদ প্রচার করার অভিযোগও তোলা হয় মামলায়।

মামলার বিষয়ে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি একজন রাজনীতিক হিসেবে মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি। সর্বমহলে আমার সুনাম রয়েছে। আমার সেই সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে চক্রান্ত করে ভুয়া সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। আইনের প্রতি একজন শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি হিসবে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। সঠিক বিচার পাব বলে আমি আশাবাদী।’

তবে অভিযোগের ভিত্তিতেই সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার আসামি সাংবাদিক মাহবুব আলম লাবলু। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিবেদনে লেখা সব তথ্যের প্রমাণ আমার কাছে আছে।’


banner close