বছরের দ্বিতীয় দিন, সোমবার। বই উৎসবের দ্বিতীয় দিন হিসেবে এদিনও শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার কথা ছিল বই। শিক্ষার্থীদের নতুন শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রমও চলার কথা ছিল। তবে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দেখল, স্কুল বন্ধ। বাধ্য হয়েই ফিরে যেতে হয়েছে তাদের।
অভিযোগ উঠেছে, স্কুলটির প্রধান শিক্ষক পদ থেকে বরখাস্ত মো. শাহজাহান মোল্যা স্কুলের কক্ষগুলোতে তালা দিয়ে ঢাকা চলে গেছেন। এর আগে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে সেশন ফি, ভর্তি ফিসহ ৭০০ টাকা করে নিয়েছেন। যারা টাকা দিতে পারেনি, তাদেরও বই দেয়া হয়নি। তবে শাহজাহান মোল্যা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি তাকে বরখাস্ত করার বিষয়টিও বৈধ নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের অফিসসহ সব কক্ষে ঝুলছে তালা। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বই নিতে এসে শিক্ষকদের খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন। এ সময় স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাহিদ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাইয়ুম মোল্যাকেও স্কুলের মাঠের আশপাশে ঘুরতে দেখা যায়।
স্কুলটিতে বই নিতে ও ভর্তি হতে এসেছিল অষ্টম শ্রেণির জান্নাতুল, সাদিয়া, মিমসহ কয়েকজন। তাদের অভিযোগ, আগের দিন সব বই তাদের দেয়া হয়নি। গতকাল বাকি বই নিতে স্কুলে গিয়ে সব রুমে তালা দেখতে পেয়েছে তারা।
ডহরনগর গ্রামের মোরশেদা বেগম জানালেন, তার যমজ দুই ছেলে রাজু মিয়া ও রবি মিয়া এ বছর নবম শ্রেণিতে উঠেছে। প্রধান শিক্ষক বলেছেন, প্রত্যেকের জন্য ভর্তি ও সেশন ফিসহ ৭০০ টাকা দিতে হবে। টাকা না দিলে ভর্তি করা হবে না।
স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাহিদ বলেন, বই উৎসবের প্রথম দিন (রোববার) সকালে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মোল্যা সকালে স্কুলে এসে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বই দিয়ে স্কুল থেকে চলেন যান। পরে সভাপতি সবাইকে নিয়ে কিছু বই দিয়েছেন। আজ শাহজাহান মোল্যা স্কুলের সব রুম তালা দিয়ে চলে গেছেন।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাইয়ুম মোল্যা বলেন, গত ৩০ অক্টোবর শাহজাহান মোল্যাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কিছুই মানছেন না। বই উৎসবের প্রথম দিন তিনি কিছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে বই দিয়েছেন। জানতে পেরে সব শিক্ষার্থীকে টাকা দিতে নিষেধ করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান মোল্যা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বই দেয়ার কথা বলে কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। তবে যারা পঞ্চম শ্রেণি থেকে আমাদের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে ভর্তি ফি নেয়া হয়েছে। আর আমি অফিসের জরুরি কাজে ঢাকা এসেছি। তবে স্কুলের চাবি আমার কাছে নেই।’
তাকে অবৈধভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে অভিযোগ করে শাহজাহান মোল্যা বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটির ৯ সদস্যই আমার পক্ষে সই দিয়েছেন। কেবল সভাপতিসহ তিনজন ছিলেন আমার বিপক্ষে। ৯ জনের বিপরীতে তিনজন কীভাবে বৈধভাবে আমাকে বরখাস্ত করতে পারেন! আমি সরকারিভাবে (স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে) বৈধ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্কুলটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ রয়েছে। ঢাকা শিক্ষা অফিসও বিষয়টি জানে। আমরা বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করছি।’ অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে মঙ্গলবার স্কুলটিতে যাবেন বলে জানান তিনি।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবক লিখিত অভিযোগ করলে সেটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঢাকা কেরানীগঞ্জে ঘটে গলো এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের কোনো এক সময়ে মাত্র দুই বছর বয়সী শিশু আব্দুর রহমানকে প্রাণ হারাতে হয়েছে তার নিজের মায়ের হাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত আনুমানিক ৪:০০ ঘটিকা থেকে সকাল ৭:০০ ঘটিকার মধ্যে আব্দুর রহমানকে তার মা মোছাম্মৎ আতিয়া শারমিন নিজের বাসায় প্রাণঘাতী আঘাত করেন এবং টুকরো করে খাটের নিচে রেখে দেন। পরে স্থানীয়রা শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জ কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ নিরু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, এবং লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতালে) প্রেরণ করে।
এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল হক ডাবলু বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, শিশুটির মা মানসিক অসুস্থ ছিলেন। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয়রা জানান, শিশুটির মা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন। ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই বলছেন, সন্তানের নিরাপদ আশ্রয় মায়ের কোলে হলেও এ ঘটনা মানবিকতার সীমা ছাপিয়ে গেছে।
নিহত শিশুর বাবা টুটুল সাংবাদিকদের বলেন, আমি কখনো ভাবিনি এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে। আমার ছেলে আর ফিরে পাব না। আশা করি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং ভবিষ্যতে কেউ এভাবে সন্তানকে হারাবে না।
ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন শ্যামলী পরিবহন বাস এর সুপারভাইজার ও হেলপার এবং ড্রাইভার গুরুতর আহত হয়েছেন।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোর বেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোর পাঁচটার দিকে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ফেনীর দিকে আসছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার সামনে দ্রুতগতির শ্যামলী পরিবহনের বাসটি দাড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা দেয়। এতে শ্যামলী পরিবহনের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় । ঘটনাস্থলে বাসের হেলপার নিহত হন এবং দুইজন আহত হন। হতাহতদের ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাসের সুপারভাইজারকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত বাসের সুপারভাইজার পাবনা সাথীয়া উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকার ওয়াজেদ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম বাবু (৩৮)। অপর নিহত হেলপার সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার গরিয়াপুরের শেখ মোঃ শাহাদাতের ছেলে মো: ইয়াহিয়া রাফি (১৮) ।
গুরুতর আহত হন বাসের ড্রাইভার । তিনি যশোর জেলার ঝিকরগাছা চাসরা মোবারকপুর গ্রামের মৃত: আবদুল আলী মোল্লার ছেলে মো: রফিক (৬০)। গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো: আবদুল মজিদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি থেকে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফেনী মহিপাল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি দুটি সরিয়ে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। গাড়ি দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে
রাজশাহী মহানগরীতে ধর্ষণ মামলার মূলহোতাসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫।
আজ রোববার সকাল পৌনে ৬টার দিকে আরএমপির চন্দ্রিমা থানাধীন উজিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চন্দ্রিমা থানাধীন সাজ্জাদ আলীর ছেলে আরিয়ান শাফী ওরফে আরিফ (২৬), ভদ্রা জামালপুর এলাকার আলমের ছেলে শান্ত (২৫), বোয়ালিয়া থানাধীন কাদিরগঞ্জ গ্রেটাররোড এলাকার আসিফ হাসান সোহেলের ছেলে পিয়াম (২৫)।
পরে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ২২ বছর বয়সী এক নারীর সঙ্গে মূলহোতা আরিয়ান শাফীর ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের জেরে গত ৩০ আগস্ট বিকেলে আরিয়ান শাফী দেখা করার কথা বলে ওই নারীকে মতিহার থনাধীন ভদ্রা ব্রিজের উপর ডাকে। ভুক্তভোগী দেখা করতে গেলে আরিয়ান বন্ধুর বৌয়ের জন্মদিনের কেক কাটার কথা বলে তাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। এ সুযোগে আরিয়ান তাকে রিকশা করে কুমারপাড়া আলুপট্টি মোড়ে পদ্মা মন্দিরের সামনে এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি আজোয়াদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান করা আসামি শান্ত ও পিয়ামও ওই নারীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনা কাউকে না জানাতে আসামিরা ভুক্তভোগীকে হুমকি দেয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর আরিয়ান ওই নারীকে আবার দেখা করার কথা বলে। দেখা না করলে তার ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী বোয়ালিয়া মডেল থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। এরপর পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। আসামিদের বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আবাহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা নৌকাবাইচ। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বাংলার অনেক অতীত হারিয়ে গেলেও বর্ণিল নৌকাবাইচ এখনও টিকে আছে। শনিবার শরীয়তপুরের দাদপুর ভাষানচরের কীর্তিনাশা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
দুপুরে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতা ঘিরে নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সের মানুষ নদীর দুই পাড়ে ভিড় করে।
নৌকাবাইচ শুরুর তিন ঘণ্টা আগে থেকেই নদীর তীর মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, বড় নৌকা, গাছ ও ভবনে উঠে মানুষ নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেন শরীয়তপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার অসংখ্য মাঝিদল। বিশাল নৌকায় বৈঠা হাতে তরুণ ও অভিজ্ঞ মাঝিরা সমানতালে ছন্দ মিলিয়ে বৈঠা চালান। এ সময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বৈঠার মন মাতানো শব্দের সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শনার্থীরা। তারা নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।
নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাড়ে বসে অস্থায়ী মেলা। স্থানীয় পিঠা-পুলি, ঝালমুড়ি, ফুচকা ও বিভিন্ন খাবারের দোকানে জমে ওঠে মেলা। শিশু-কিশোরদের জন্য খেলনা ও বেলুন নিয়ে বিক্রেতারাও ভিড় করেন মেলায়।
আয়োজকদের পক্ষে উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুর রব হাওলাদার বলেন, নৌকা বাইচ শুধু বিনোদনের জন্য আয়োজন করা হয়নি, এটি গ্রামীণ ঐতিহ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ঐক্যের প্রতীক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছরই এ আয়োজন করা হয়। আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে এই ঐতিহ্য ধরে রাখা হবে।
দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
শেরপুরে এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে এ প্লাস সংবর্ধনা দিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির শেরপুর জেলা শাখা।
৬ সেপ্টেম্বর শনিবার শেরপুর সরকারি কলেজ অডিটোরিয়ামে চার শতাধিক শিক্ষার্থীদেরকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
ছাত্রশিবির শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি আশরাফুজ্জামান মাসুম এর সভাপতিত্বে ও
সেক্রেটারি মাশহারুল ইসলাম মিল্লাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও শেরপুর সদর আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক শরিফ মাহমুদ, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাফিজুর রহমান, সেক্রেটারি নুরুজ্জামান বাদল, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় বিতর্ক সম্পাদক শেরপুর-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মু. গোলাম কিবরিয়া, জেলা জামায়াতের সাবেক জেলা সেক্রেটারি আব্দুল বাতেন প্রমুখ।
ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ও ভোলা সদর উপজেলা জামে-মসজিদের খতিব আমিনুল হক নোমানীকে (৪৫) নিজ ঘরে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, আমিনুল হক নোমানী এশার নামাজ শেষে বাসায় ফেরেন। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে একদল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত তার বাসায় প্রবেশ করে পেট, বুকে ও গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। এসময় তারা আশেপাশের রোড লাইনও বন্ধ করে দেয়। নিহতের স্ত্রী ও সন্তানরা তখন তজুমদ্দিনে বেড়াতে থাকায় বাসা খালি ছিল।
পরবর্তীতে স্থানীয় হেফজ মাদ্রাসার ছাত্ররা ও মুসল্লিরা হুজুরের বাসা থেকে আওয়াজ পেয়ে সেখানে গিয়ে তাকে রক্তমাখা অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ভোলা থানার ওসি আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ জানিয়েছেন, পুলিশ খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসা থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। নিহতের গলায় ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কারা ও কেন তাকে হত্যা করেছে তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। তবে এ মুহূর্তে পুলিশ নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছে না। ঘটনার তদন্ত অব্যাহত। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।’
এদিকে, নোমানী হুজুরকে হত্যার প্রতিবাদে ভোলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
আমিনুল হক নোমানী ২০০৮ সাল থেকে ভোলা সদর উপজেলা জামে-মসজিদের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ‘আপত্তিকর’ পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এ ছাড়া পোস্ট করা যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আরিয়ান ইব্রাহিম নামে এক যুবক চট্টগ্রামের আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার সামনে দিয়ে মিছিল চলাকালে অবমাননাকর অঙ্গভঙ্গি করে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে মাদরাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
পরে এক ভিডিওবার্তায় ইব্রাহীম নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ মাদরাসা শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম–খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ সময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার ও সড়ক ছেড়ে মাদরাসায় ঢুকে যাওয়ার আহ্বান জানায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এরপরও কয়েক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সরে যান শিক্ষার্থীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মুমিন ইউএনবিকে জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিরেরহাট থেকে এগারোমাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, যা রবিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
ইউএনও আরও বলেন, বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রবিবার বিকেল পর্যন্ত নির্ধারিত এলাকায় যেকোনো ধরনের সমাবেশ, মিছিল বা বিক্ষোভ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বে আজ শনিবার ১২ রবিউল আউয়াল ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মানব জাতির রহমত স্বরূপ প্রেরিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোলে জন্ম নেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব। রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ঠিক একই তারিখে ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।
এক সময় গোটা আরব সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। সমগ্র আরবে বিরাজ করত নানারূপ ধর্মীয় অনাচার, কুসংস্কার ও পাপাচার লিপ্ত। ইসলামের ধারণায় এ সময়কে বলা হয় আইয়ামে জাহেলিয়া বা অন্ধকার যুগ। ‘আইয়াম’ শব্দের অর্থ সময় বা যুগ ও ‘জাহেলিয়া’ শব্দের অর্থ অজ্ঞতা বা তমসা।
সুতরাং আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে ‘তমসা’ বা ‘অজ্ঞতার যুগ’ বুঝায়। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তি ও তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে পৃথিবীতে শেষ নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেন। তাঁর জীবনাদর্শ (সুন্নাহ) ইসলামের ভিত্তি।
মুহাম্মাদ (সা.) এর জন্মের পূর্বেই তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। মাত্র বছর বয়সে তিনি তাঁর মাকে হারানোর পর প্রথমে তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিব ও পরে চাচা আবু তালিবের আশ্রয়ে বড় হন। মহানবী (সা.) অল্প বয়সে হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহ’র ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) খাদিজা (রা.) নামের এক ধনাঢ্য নারীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত প্রাপ্ত হন ও আল্লাহতাআলার নৈকট্য লাভ করেন।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মহফিল।
পবিত্র দিনটি উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানসহ সারা দেশে ব্যাপক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ আ. আউয়াল হাওলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন।
বিশ্বনবীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাদ মাগরিব থেকে শুরু হওয়া ওয়াজ মহফিল আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ১৫ দিনব্যাপী বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব সাহানে এতে বয়ান করবেন দেশবরেণ্য আলেম-ওলামারা।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে জাতীয় মসজিদের পূর্ব ও দক্ষিণ সাহানে মাসব্যাপী ইসলামি বই মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এ মেলা। চলবে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান ও লেবাননের পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাসহ দেশবিদেশের প্রায় ২ শ’টি স্টল স্থান পাবে মেলায়।
আগামী ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আগারগাঁও কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরীর স্কুল, কলেজ, আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসা এবং সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। কিরআত, আযান, হামদ-না’ত, রচনা, কবিতা, উপস্থিত বক্তৃতা ও আরবিতে খুতবা লিখন- এ সাতটি বিষয়ে প্রতিযোগিতা হবে।
জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর বাদ মাগরিব ক্বিরাআত মহফিল, ১৭ সেপ্টেম্বর বাদ মাগরিব হামদ-না’ত ও ১৮ সেপ্টেম্বর বাদ আসর রাসূল (সা.) শানে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর আয়োজন করা হবে। এতে দেশের প্রখ্যাত ক্বারী, কবি ও শিল্পীরা অংশ নিবেন।
এছাড়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সকল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৬টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে- মহানবী (সা) এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত ওয়াজ মহফিল এবং ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন।
সঙ্গে, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সকল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘জশনে জুলুস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম এ জশনে জুলুস (শোভাযাত্রা) ৫৪তম বারের মত আয়োজন করছে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও ১২ রবিউল আউয়াল উপলক্ষ্যে রাজধানীতে জশনে জুলুস শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সুফিবাদী জনতার অংশগ্রহণে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়া।
শনিবার সংগঠনের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বে এ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম গেট থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন ও কদম ফোয়ারা সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার উদ্যানে এসে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়।
এদিকে সকালে জামালপুরে জেলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া মহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ধর্ম সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক। জামালপুর জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম তরিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়াও দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে বিভিন্ন মিশন, দূতাবাস ও হাইকমিশনেও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দঘন এই দিনটি।
মেহেরপুরে বিদেশি পিস্তল, নকল পিস্তল, ম্যাগজিন, তিনটি ওয়াকিটকি সেট, মাদকদ্রব্য ও সরঞ্জামাদিসহ তিন কিশোর গ্যাং গ্রুপের তিন সদস্যকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে বিকাল পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন— মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়পাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে আকাশ ওরফে শাকিল (২৬), বোসপাড়ার জসীম উদ্দীনের ছেলে সজিব (২৭) এবং হালদারপাড়ার হামিদুর শেখের ছেলে রায়হান (৩৬)।
যৌথবাহিনীর সূত্র জানায়, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মেহেরপুর আর্মি ক্যাম্পের নেতৃত্বে একটি সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি আকাশ গ্যাংয়ের প্রধান আকাশ ও তার অপর দুই সদস্য রায়হান ও সজিবকে আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি নকল পিস্তল, তিনটি ওয়াকিটকি সেট ও চার্জার, মাদকদ্রব্য এবং মাদক ব্যবহারের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে আটক ব্যক্তিদের এবং জব্দকৃত মালামাল র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাতক্ষীরা পারিবারিক বিরোধের জেরে মোরসালিন নামের ১১ বছরের এক শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে । এঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমান শাওন ও তার মা নাজমা আক্তারকে থানা হেফাজতে নিয়েছে।এছাড়া মোরসালিনের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। শুক্রবার পৌনে একটার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের জনৈক আব্দুল মাজেদের পুকুরে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোরসালিন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক রাজু আহমেদের ছেলে ও কাশেমপুর সরদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
আর পুলিশ হেফাজতে নেওয়া মাহফুজুর রহমান শাওন একই গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে।
নির্মাণ শ্রমিক রাজু আহমেদ জানান, প্রতিবেশী আবু সাঈদের সাথে তাঁর দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। আবু সাঈদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাকেসহ গ্রামের বহু নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করিয়ে হয়রানি করেছে।আজকের তুচ্ছ একটি ঘটনায় তার ছেলে ও স্ত্রী দুজনে মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। ‘’
অভিযুক্ত শাওনের দাদী আলেমা খাতুন জানান, ‘‘ আমার ছেলে এবং ছেলে বউ আমাদের স্বামী স্ত্রীকে খুব নির্যাতন করে। তাদের থেকে আমরা আলাদা থাকি। শুক্রবার সকালে বাড়ির লেবু গাছ থেকে দুটি লেবু প্রতিবেশী রাজুর স্ত্রী রেহানার কাছে বিক্রয় করি। এতে আমার ছেলের বউ নাজমা এবং পোতাছেলে শাওন ক্ষিপ্ত হয়ে রাজুর ছেলেকে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলে ‘’
হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়ে নিহত মোরসালিনের মা রেহানা খাতুন জানান,‘‘ আমি শাওনের দাদির কাছ থেকে দুটো লেবু কিনেছি। এতে শাওন ও তার মা নাজমা খাতুন আমাকে প্রচুর গালিগালাজ করেছে। এর ঘন্টা দুই পরে আমার ছেলে মোরসালিন পুকুরে গোসল করতে গেলে শাওন ও তার মা তাকে চুবিয়ে মেরে ফেলেছে।’’
স্থানীয় অধিবাসি শহিদুল ইসলাম জানান, ‘‘ শিশুটিকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর ক্ষুদ্র জনতা ঘাতক মাহফুজুর রহমান শাওন ও তার মা নাজমা আক্তারকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে তাদেরকে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।’’
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর হাত থেকে শাওন ও তার মা নাজমা আক্তারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত মোরসালিনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করা হয়েছে শনিবার । এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে থানার সামনে সালিশি দরবারে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মজনু মিয়া (৩০) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে করিমগঞ্জ থানার সামনে একটি চায়ের স্টলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত মজনু মিয়া উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কান্দাইল ক্ষিদিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে। তিনি একজন- মুদি দোকানি।
পুলিশ জানায়,জয়কা এলাকার তোতা মিয়া ও ইসলাম উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় দেনদরবার হয়।
সম্প্রতি ইসলাম উদ্দিনের লোকজন প্রতি পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর করলে এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে করিমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আলীম এলাকার গণ্যমানদের নিয়ে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকেন।
শুক্রবার বিকেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে করিমগঞ্জ থানার সামনে একটি চা-স্টলে উভয় পক্ষের মধ্যে সালিশ দরবার বসে। সালিশ চলাকালে থানার সামনে দুপক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন মজনু মিয়া (৩০)। তাকে প্রথমে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহবুব মুর্শেদ কথা বলতে রাজি হননি।