শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২০ ভাদ্র ১৪৩২

নয় ঘণ্টার অভিযানে ৬ ডাকাত আটক

কোস্ট গার্ডের অভিযানে ধরা পড়লো ৬ ডাকাত। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিনিধি, কক্সবাজার
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, কক্সবাজার
প্রকাশিত : ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ২০:১৫

কক্সবাজারের টেকনাফে টানা নয় ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ডাকাত দলের ছয় সদস্যকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড।

মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার বিএন আব্দুর রহমান। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার নাফ নদীর মোহনায় একটি বিশেষ অভিযান চালায় কোস্ট গার্ড স্টেশন সেন্ট মার্টিন।

অভিযান টের পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে ডাকাত দল টেকনাফ থানাধীন রঙ্গিখালীর নিকটবর্তী খড়ের দ্বীপে জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে যায়। এরপর কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের দুটি দল দ্বীপটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং ছয়জন সশস্ত্র ডাকাত সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়।

ডাকাত সদস্যদের দেয়া তথ্যমতে, খড়ের দ্বীপের বনের মধ্যে চিরুনি অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তল ২টি, একনলা বন্দুক ৩টি, এলজি ২টি, শটগান ১টি, দেশি পিস্তল ৬টি, ম্যাগাজিন ৪টি, তাজা গোলা ৪৫০ রাউন্ড, ফাঁকা গোলা ৩৬ রাউন্ড, রামদা ৪টি, ইয়াবা ২০ হাজার পিস, বিদেশি মদ ২১ বোতল, বিয়ার ৫৫১ ক্যান, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত পোশাক ৭ সেট, হ্যান্ডকাফ ১টি, ল্যান্ডফোন ১টি, বাটন মোবাইল ৪টি জব্দ করা হয়।

বিএন আব্দুর রহমান আরও জানান, খড়ের দ্বীপটি টেকনাফ থেকে দূরবর্তী বিচ্ছিন্ন এবং জনশূন্য হওয়ায় এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি, মাদকদ্রব্য ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল বলে কোস্ট গার্ডের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল।

আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও কোস্ট গার্ডের ওই কর্মকর্তা জানান।

বিষয়:

দৈনিক বাংলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

দৈনিক বাংলা পত্রিকার ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে কেক কেটে দিনটি উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ আয়োজন করা হয়।

জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রতিষ্ঠানটিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পত্রিকাটি আরও এগিয়ে যাবে সেই কামনা করছি।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও এনটিভির প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন রবিন বলেন, দৈনিক বাংলা প্রতিষ্ঠানটিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে আসছে। আগামীর পথচলা আরও সুদৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা করছি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সাংবাদিক তমিজ উদ্দিন, একাত্তর টেলিভিশনের হাবিবুর রহমান, একুশে টেলিভিশনের রবিউল ইসলাম, বাংলা ট্রিভিউনের আরিফ হোসাইন কনক, দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি সেলিম আহমেদ ডালিম, দৈনিক বাংলার ফটো সাংবাদিক পাপ্পা ভট্টাচার্য, প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক সংবাদের প্রণব কৃষ্ণ রয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি দিদার খন্দকারসহ প্রমুখ।


মাদারীপুরে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা আলম ঢালী ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাউছ উর রহমানের নেতৃত্বে বর্ণিল উৎসবে বিশাল আনন্দ র‍্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার মাদারীপুর সদর উপজেলা কমপ্লেক্সের সম্মুখে এ আলোচনা সভা ও আনন্দ র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা আলম ঢালীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাউছ-উর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়া, সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. ফারুক বেপারী, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান ফুকু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন হাওলাদার প্রমুখ। এতে জেলা কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক লালচান, পৌর বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান কিচলু খানসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত হাজার হাজার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় এদেশের মানুষ বিএনপি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপর আস্থা রেখেছে, তাই তারেক রহমানকেই আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় মানুষ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি নিরপেক্ষ, অবাধ, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে ইনশাআল্লাহ।


নারায়ণগঞ্জে হত্যা মামলায় ১জনের মৃত্যুদণ্ড

১৭ জনের যাবজ্জীবন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নজরুল ইসলাম বাবু হত্যা মামলায় তাওলাদ ওরফে জহিরুল নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই মামলায় আরও ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. মোমিনুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন, তাওলাদ ওরফে জহিরুল। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ জন হলেন, মিজান, মোহাম্মদ আলী, আব্দুল লতিফ, হানিফ, সোহেল, সবুজ, মিলন, সেলিম, গুলজার, লেদা ফারুক, রাসেল, মোমেন, সাদ্দাম, শাহীন, রুহুল আমিন, আবুল, পণ্ডিত।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, ২০১২ সালের ওই হত্যা মামলায় ২৬ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তাওলাদকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া ৬ জন খালাস এবং ২ জন আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন। রায় ঘোষণার সময় একজন আসামি উপস্থিত ছিলেন, বাকি আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২ মে রূপগঞ্জের মাছিমপুর এলাকার নজরুল ইসলাম বাবু (৪৮) মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের বাবা জালালউদ্দিন বাদী হয়ে ভিপি সোহেল ও তার লোকজনদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বিচার কার্যক্রম শেষে আদালত এই রায় দেন।


দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে দুই শতাধিক খাল-বিল

কোটালীপাড়ায় বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)

নিম্নাঞ্চল ও জলাভূমি বেষ্টিত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক খাল-বিলে এক সময় ভরপুর থাকতো শোল, টাকি, কৈ, শিং, মাগুর, পাঙ্গাস, বোয়াল, চিতল, ফলি, পুটি, খলসে, চুচড়া, মলা, ভুষি চিংড়ি, টেংরাসহ শতাধিক রকমের মাছে। দিন দিন এসকল খাল-বিলগুলো দখল ও দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। যার কারণে দেশীয় এই মাছগুলো এখন বিলুপ্তির পথে।

জানাগেছে, উপজেলার অর্ধশত ছোট-বড় বিলের প্রায় দেড় শতাধিক সরকারি খালের উপর বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে খাল দখল করে মাছের ঘের বানিয়েছে প্রভাবশালী মহল। অন্যদিকে ব্রিজ নির্মাণ ও খাল খনন কাজের জন্য প্রায় ৩০টি খাল বছরের পর বছর বাঁধ দিয়ে রাখায় খালজুড়ে জমাট বেঁধে আছে কচুরিপানা। কচুরিপানা জমে থাকায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে খালগুলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুধুমাত্র উপজেলার পিঞ্জুরি ইউনিয়নের কলমুনিয়া খাল, তিতাল বাড়ি খাল, পেত্নীখালী খাল, বাসাখালী খাল, কুমলাবতী খাল, গোদার খাল, পুকুরিয়া খাল, পাথরিয়া খাল, চৌদ্দবুনিয়া খাল, রামমানির খাল, কুইচা মোড়া খাল, চাইর খাল, সিমানার খাল, কাটা খাল, দেওপুরা খালসহ প্রায় ৩০টি খাল বছরের পর বছর দখল করে রেখেছে ১৩ প্রভাবশালী ব্যক্তি। মৎস্য প্রজেক্টের নামে প্রতিটি প্রজেক্টে এদের এক একজনের রয়েছে ৫০ থেকে ১০০টি শেয়ার। সাধারণ মানুষের রয়েছে নামমাত্র শেয়ার। এই খাল দখলে ১৩ ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা, ইউপি মেম্বার, বিএনপি নেতাসহ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।

কোটালীপাড়া উপজেলার রামনগরের বিল, রথিয়ারপাড় বিল, মাছপাড়ার বিল, কুমুরিয়া বিল, বৈকণ্ঠপুর বিল, লখন্ডার বিল, মুশুরিয়ার বিল, পিড়ারবাড়ি বিল, পলোটানা বিল, ধোরাল বিল, চিথলিয়ার বিল, পশ্চিম দীঘলিয়ার বিল, পূর্বপাড়া বিল, চিত্রাপাড়া-শুয়াগ্রাম বিল, সাতুরিয়ার বিল, কান্দি বিল, আশুতিয়ার বিল, পোলশাইর বিল, বর্ষাপাড়া বিল, ছত্রকান্দা বিল, দেওপুরা বিল, সোনাখালি বিল, ফুলবাড়ি বিল, কোনের বাড়ি বিলসহ প্রায় অর্ধশত ছোট বড় বিল রয়েছে। এসবে অধিকাংশেই খাল দখল করে নিয়ে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালী মহল।

খালগুলো আটকিয়ে মাছের ঘের করায় ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীরা খাল-বিল থেকে মাছ ধরতে পারছে না। যে কারনে চরম অভাব অনাটনে কাটছে দরিদ্র মৎস্যজীবীদের সংসার।

অন্যদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া খালটি খননের জন্য ঘাঘর নদীর মোহনায়, কুশলা ব্রিজের নিচে, ধোরালসহ আরো কয়েক জায়গায় জায়গায় প্রায় ১ বছর ধরে বাঁধ দেওয়া হয়। বছর পার হলেও সামান্য কিছু জায়গা খনন করে বন্ধ রয়েছে খনন কাজ। বর্তমানে বাঁধ দেওয়ার কারণে কচুরিপানায় আটকে বন্ধ হয়ে গেছে পানির প্রবাহ।

পুরো খালের পানি পচে যাওয়ায় এই পানি ব্যবহার করতে না পারায় ও মালামাল নিলে খাল দিয়ে চলাচল বন্ধ হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে খালপাড় এলাকার বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা।

কোটালীপাড়া-পয়সারহাট খালের গচাপাড়া এলাকায় ব্রিজ নির্মাণের জন্য এবং ওয়াবদারহাট এলাকায় স্লুইস গেট নির্মাণের জন্য দুই স্থানে বাঁধ দিয়ে খাল আটকে রাখায় এই খালেরও একই অবস্থা দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা গোপালপুর-পিঞ্জুরি খালের। এই খালের পূর্ণবতী ব্রিজ নির্মাণের জন্য ৩ বছর ধরে বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে খালটি। এছাড়া কালিগঞ্জ, লখন্ডা, টিহাটি, মান্দ্রা, কুশলাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ টি খাল ব্রিজ নির্মানের জন্য বছরের পর বছর বাঁধ দিয়ে আটকে রাখায় চরম সমস্যায় হাজার হাজার জনসাধারণ।

মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মৎস্যজীবী ও সাধারণ জনগণ দ্রুত সময়ের মধ্যে দখলকৃত খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়ে গত ১৩ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামানের কাছে গণশুনানিতে অভিযোগ জানিয়েছে কয়েকজন ভুক্তভোগী। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ১৮ আগস্ট খাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে কোটালীপাড়ার ইউএনওকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণশুনানিতে খাল দখলের অভিযোগ জানানো শিক্ষার্থী মাহফুজ শেখ।

এনিয়ে কোটালীপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন খালে বাধঁ দিয়ে মাছচাষ করার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও মৎস‍্য অধিদপ্তরের নজরে এসেছে। এসকল অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছচাষ করার কারণে দেশীয় মাছের প্রজনন ও বিস্তারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দেশীয় মাছের প্রজনন ও উৎপাদন নিশ্চিত করতে এখন থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সিনিয়র উপজেলা মৎস‍্য অফিস ও অন‍্যান‍্য সংশ্লিস্ট দপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

কোটালীপাড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার (অ: দা:) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ উপজেলা একটি নিম্ন জলাভূমি এলাকা। এখানে অধিকাংশ জণসাধারণ কৃষি ও মৎস্য কাজে জড়িত। এই এলাকায় প্রচুর মাছের ঘের রয়েছে। যা মৎস্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। আমরা এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে অভিযান হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।


পার্বত্য চট্টগ্রামে বিলুপ্তপ্রায় গাছ সংরক্ষণে যুগান্তকারী উদ্যোগ

ইতোমধ্যে ৩৬ প্রজাতির দুর্লভ গাছ নিয়ে হয়েছে বাগান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বিজয় ধর, রাঙামাটি

পার্বত্য চট্টগ্রামে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ সংরক্ষণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে রাঙামাটি ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ ২০২৩ সালে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে রাঙামাটির কাউখালি উপজেলার খাসখালী রেঞ্জ এলাকায় ইতোমধ্যে বিলুপ্তপ্রায় ৩৬ প্রজাতির দূর্লভ গাছ নিয়ে একটি বাগান সৃজন করা হয়েছে। পাশাপাশি গড়ে তোলা হচ্ছে এসব গাছের বীজ ভাণ্ডার।

দেশের এক দশমাংশ ভূখণ্ড নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিলো শত শত বছরের দূর্লভ গাছপালার ভাণ্ডার। তবে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও নির্বিচারে বন উজাড়ের কারণে বিপন্ন হয়ে পড়েছে পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য। এই বাস্তবতায় বন বিভাগের এ উদ্যোগকে বিশেষজ্ঞরা যুগান্তকারী বলছেন।

ঝুম নিয়ন্ত্রণ বনবিভাগের খাসখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর খান চৌধুরী বলেন,

‘এই বাগানটিকে যদি সংরক্ষণ করতে পারি, ভবিষ্যতে এটি বন বিভাগের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বিলুপ্তপ্রজাতির চারাগুলো আমরা বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করেছি। এছাড়া বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহিদুর রহমানও বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা এনে বনায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।’

মাত্র ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই বাগানে রয়েছে চিকররাশি, কাঠবাদাম, গুটগুটিয়া, অর্জুন, আমলকী, হরতকী, হিজল, ঢাকিজামসহ ১২ প্রজাতির বনজ গাছ, ১৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ এবং ১০ প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ, যেগুলো শুধু জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেই নয়, পাখিদের খাদ্য যোগানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এর পাশাপাশি বাগানে সংরক্ষিত হয়েছে আরও বেশ কিছু দুর্লভ প্রজাতির গাছ। এর মধ্যে রয়েছে—

লোহাকাঠ, চম্পাফুল, তেলসুর, সোনালু, ঢাকিজাম, রাধাচূড়া, কাঠবাদাম, জগা ডুমুর, বান্দর হোলা, শাল, উদাল, বকফুল, তমাল, খেজুর, বহেরা, সিভিট, ধারমারা, অশোক, কাঞ্চনভাদী, কৃষ্ণচূড়া, পিতরাজ, ছাতিয়ান, বোদ্ধ নারিকেল ও পলাশ।

রাঙামাটি ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা ১০০ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় গাছের তালিকা তৈরি করেছি। এর মধ্যে ৩৬ প্রজাতির গাছ খাসখালী রেঞ্জে রোপণ করা হয়েছে। পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আশা করছি, এই বাগান সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারব।’

এরই মধ্যে বাগান থেকে চারা বিক্রির কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। মাত্র ৭ টাকায় এখান থেকে সাধারণ মানুষ চারা সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক শাওন ফরিদ বলেন, ‘অতীতে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের মাধ্যমে ফরেস্ট অফিসের আশপাশে ও রাঙাপানি এলাকায় প্রচুর চারা উৎপাদন এবং স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ কার্যক্রম দেখা যাচ্ছিল না। বন বিভাগ যদি এখন বিলুপ্তপ্রায় বনজ, ঔষধি ও ফলদ বৃক্ষ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বন বিভাগের এ উদ্যোগ পাহাড়ের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে বন সম্প্রসারণেও এর প্রভাব পড়বে ইতিবাচকভাবে।


চলতি অর্থবছরে ৩৯ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেবে সরকার: কৃষি সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, সরকার এ বছর কৃষি খাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেবে। প্রকৃত উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যাদের সহায়তা প্রয়োজন তাদের খুঁজে বের করে সহায়তার চেষ্টা করা হবে।

সরকার ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)-এর আয়োজনে গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তি, কৃষি রূপান্তরের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব এসব কথা বলেন।

সচিব বলেন, আলু চাষিদের সহায়তার জন্য সরকার এবারই প্রথম হিমাগার গেটে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়া সরকার এবার প্রথমবারের মতো ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ কৃষক যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পায়, তাহলে আমাদের তৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আরো বলেন, এই প্রথম কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫ বছর মেয়াদি একটি কর্মকৌশল প্রণয়নে কাজ করছে। এর লক্ষ্য ২০৫০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা।

বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএআরসির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সদস্য পরিচালক এবং ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচি আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. মোশাররফ উদ্দিন মোল্লা।

সেমিনারে ‘তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তি, কৃষি রূপান্তরের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএআরসি’র কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং এপিসিইউ-বিএআরসি, পার্টনার প্রকল্পের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর (এইচআরডি) ড. মো. আব্দুস সালাম।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, এনজিও প্রতিনিধি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ১১ জন তরুণ উদ্যোক্তা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে ছিলেন—কৃষিবিদ মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ (কফি চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ), শাহীদা বেগম (পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন), আব্দুল হালিম (নিরাপদ সবজি উৎপাদন), কৃষিবিদ মোবারক হোসেন (মধু উৎপাদন), প্রকৌশলী মো. মিলন মিয়া (জৈব সার উৎপাদন), মো. ইসমাইল (নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদন), কৃষিবিদ আল মামুন (রঙিন মাছ উৎপাদন), কৃষিবিদ ডা. মো. তাজাম্মুল হক (প্রযুক্তিনির্ভর সেবা), কৃষিবিদ মো. নাজমুস সাকিব (টেকসই প্রযুক্তি বিস্তার), কাজী কাওসার হোসেন প্রিতম (গবাদিপশুর স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ব্যবস্থাপনা) এবং মো. রেজওয়ানুল ইসলাম (সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা)।


গ্যাস সিলেন্ডার বিষ্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ

শিশুসহ ৩জনের অবস্থা সংকটাপন্ন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি বাড়িতে গ্যাস সিলেন্ডারের লিকেজ থেকে বিষ্ফোরণ হয়ে আগুনে শিশুসহ একই পরিবারের ৫জন দগ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার পৌঁনে ছয়টার দিকে উপজেলার কাঁচপুর পুরান বাজার মধ্যপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধদের মধ্যে শিশুসহ তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানা যায়। দগ্ধরা হলেন মানব চৌধুরী (৪০), তার স্ত্রী বাচা চৌধুরী (৩৮), মেয়ে মুন্নি (১৪), তিন্নি (১২) ও মৌরি (৬)। দগ্ধরা সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। মানব চৌধুরী কাঁচপুর এলাকার ফ্যালকন নামের একটি টেক্সটাইল মিলে কর্মরত ছিলেন। এদিকে ঘরের ভেতর থাকা সিলিন্ডারের লাইনের লিকেজ থেকে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের কারণ বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাঁচপুর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার কাঁচপুর বিসিক শিল্প নগরীর পুরান বাজার মধ্যপাড়া শেখ ফরিদের তিনতলা বাড়ির নিচ তলায় একমাস আগে ভাড়া আসেন মানব চৌধুরী ও তার পরিবার। বৃহস্পতিবার ভোর পৌঁনে ৬ টার দিকে রান্নার জন্য চুলা জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে আগুন নিভিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

প্রতিবেশী সবিনয় চন্দ্র দাস জানান, একটাই ঘর, সেটার ভেতরেই রান্নাঘর ও বাথরুম। ভোরে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণে তারা সবাই পুড়ে যায়। আমি তাড়াতাড়ি গাড়ির ব্যবস্থা কইরা হাসপাতালে আনি। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জরী ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, দগ্ধদের মধ্যে মানব চৌধুরীর ৭০শতাংশ, বাচা চৌধুরীর ৪৫ শতাংশ, মৌরীর ৩৬ শতাংশ, মুন্নির ২৮শতাংশ ও তিন্নির ২২ শতাংশ পুড়েছে। তাদের ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শিশুসহ তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।


ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ট্রেনের নিচে শিক্ষকের আত্মহত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটে ঋণের বোঝা সইতে না পেরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারুক হোসেন নামে এক সহকারী শিক্ষক। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার পুরানাপৈল রেলগেটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জয়পুরহাট সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সান্তাহার রেলওয়ে থানাকে জানায়।

নিহত ফারুক হোসেন (৫০) কালাই উপজেলার হারুঞ্জা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনি উপজেলার হারুঞ্জা পূর্বপাড়া এলাকার মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে।

পরিবার জানায়, ফারুক হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইসিস রোগে ভুগছিলেন। একহাত সম্পূর্ণ অবশ থাকায় স্বাভাবিক চলাফেরা করতেও তার কষ্ট হতো। অসুস্থতার কারণে নিয়মিত চিকিৎসা ও ব্যয়বহুল ওষুধের খরচ চালাতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন এনজিও, সমবায় সমিতি ও স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে একাধিকবার ঋণ গ্রহণ করেন। অভাব-অনটনের কারণে তার মাসিক বেতনের বেশিরভাগ অংশই কিস্তি ও উচ্চ সুদের ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়ে যেত। ফলে সংসার চালাতে গিয়ে তাকে চরম আর্থিক সংকটে পড়তে হয়। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ না দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। গত বুধবার বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে ফিরে পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনি বাইরে বের হয়ে যান। পরে জয়পুরহাট শহর হয়ে পাঁচবিবি যাওয়ার পথে পুরানাপৈল রেলগেটে গিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন।

নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী ঋণের বোঝা আর মানসিক চাপ সইতে না পেরে এই পথ বেছে নিয়েছে। এখন আমি সন্তানদের নিয়ে কিভাবে চলব? ওরা বাবাকে হারাল, আমি স্বামীকে হারালাম।

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা চিলাহাটিগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাপ দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার এবং সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।


আড়িয়াল বিলের পাশে চুল্লি দূষণের হুমকিতে পরিবেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জে) প্রতিনিধি

আড়িয়াল বিলের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালি এলাকায় কৃষি জমির পাশে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা একটি অবৈধ অ্যালুমিনিয়াম গলানোর কারখানা অব্যাহতভাবে পরিবেশ দূষণ করে চলেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, চুরাইন বাড়ৈখালি সেবক সংঘের মাঠের পাশ দিয়ে কিছুটা সামনে আড়িয়াল বিলের কৃষি জমির পাশে একটুকরো উচু জমিতে অ্যালুমিনিয়াম/ ধাতব রিসাইক্লিংয়ের জন্য একটি বাঁশের ঘর বানানো হয়েছে। ঘরটির ভেতরে না যাওয়া গেলেও বাইরে দেখে বোঝা যাচ্ছে এখানে ভারি কোনো ধাতু গলানোর কাজ চলছে। অত্যধিক পরিমাণে জ্বালানি পোড়ানোর কারণে কারখানার উপরের অংশ দিয়ে দিন-রাত কালো ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। এছাড়া অ্যালুমিনিয়াম পাউডারের সাদা অংশ ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের গাছ-সবজি বাগানের উপর। এতে সবুজ গাছের পাতা রুপ নিয়েছে ধূসর রংয়ে। পাশাপাশি কারখানায় অ্যালুমিনিয়াম গলানোর পর যে বর্জ্য নির্গত হচ্ছে সেগুলো সরাসরি ফেলা হচ্ছে পাশের আড়িয়াল বিলের পানিতে। ধীরে ধীরে সেই কেমিকেলযুক্ত আবর্জনা পানিতে মিশে ছড়িয়ে পড়ছে পুরো বিলে।

স্থানীয় কৃষক রিংকু খান বলেন, আড়িয়াল বিলে ৪০০ শতাংশ জমিতে ধানচাষ করে আমার পরিবার। প্রতিবছর আমরা প্রায় ১ হাজার মন ধান উৎপাদন করি। এই কারখানাটি আমাদের জমিগুলো ধ্বংস করছে।

বাড়ৈখালি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইমরান তালুকদার বলেন, কারখানাটি চালানোর জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে ন্যূনতম কোন অনুমতি নেই। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মিটিংয়েও আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে কারখানা মালিক ও জমির মালিককে ১৫দিনের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। দুমাস হয়ে গেলেও কেউই পরিষদে আসেনি।

শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মহিন উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে সম্প্রতি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তারা ব্যবস্থা নিতে চাইলে আমরা সবার সহযোগিতা করবো।

পরিবেশ অধিদপ্তর, মুন্সীগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, বাড়ৈখালি বা আড়িয়াল বিলের পাশে এরকম কোনো কারখানার বিষয়ে আমার জানা নেই। তাছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকেও আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


কালাইয়ে ৪ দিনব্যাপী বইমেলা শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে জয়পুরহাটে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম ৪ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। বইমেলার আয়োজন করায় খুশি স্থানীয়রা। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলার স্টল। গত বুধবার কালাই উপজেলা পরিষদের নতুন হলরুমে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালাই সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইফতেকার রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মো. মনোয়ারুল হক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবিদ আব্দুল্লাহ, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান চৌধুরী, কালাই সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নাজিম উদ্দিন, কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।

বইমেলা দেখতে আসা শিক্ষার্থী এস এম সাদমান সাইফ রাইমান বলে, আমি প্রথমবার বইমেলা দেখলাম। এর আগে আমাদের এখানে কোনো বইমেলা হয়নি। দেখে অনেক ভালো লাগছে।

আরেক শিক্ষার্থী সেজান আহম্মেদ বলে, বইমেলায় অনেক লেখকের বই যা আমাকে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। আমরা চাই আগামীতে স্থানীয়ভাবে দীর্ঘ মেয়াদি বইমেলার আয়োজন করা হোক।

ভ্রাম্যমাণ বইমেলার ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী বলেন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজন ৪দিনব্যাপী বৃহস্পতিবার থেকে কালাইয়ে বইমেলা শুরু হয়েছে। বইমেলা উপলক্ষে থাকছে চিত্র অংকন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। মেলায় ১৫০টি প্রকাশনীর ১০ হাজারের বেশি বই রয়েছে।

কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, আজকের আয়োজিত এ বইমেলা আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। এই বইমেলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ বই পড়া ও ক্রয়ের জন্য উদ্বুদ্ধ হবে। মেলাটিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।


ফটিকছড়িতে ১ বছরে ১৮ খুন

আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

বিগত এক বছরে খুন, অপহরণসহ নানা অপরাধে আতঙ্কের জনপদ হয়ে উঠেছে ফটিকছড়ি ও ভূজপুর থানা। মব সৃষ্টির মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত করা যেন এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। যার ফলে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জনমনে ভর করে এক অজানা ভীতি। বলতে গেলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের পট-পরিবর্তনের পর থেকে দুইটি থানার আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হতে থাকে।

বিগত এক বছর ধরে উপজেলার দুটি থানায় প্রায় প্রতিদিনই সংঘটিত হচ্ছে কোন না কোন অপরাধ। এরমধ্যে খুন অপহরণ, চুরি-ডাকাতি, মারামারি, কাঠ-রাবার পাচার এমনকি টিলা কাটাসহ জায়গা-জমির দখল-বেদখল অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তবে, দুই থানার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করে গেলেও জনসচেতনতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকায় এমনটি ঘটছে বলে অভিমত সচেতন মহলের। দুইটি থানা এলাকায় সংঘটিত অপরাধ কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গেল বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত খুনের ঘটনা ঘটেছে মোট ১৮ টি। তন্মোধ্যে ফটিকছড়িতে ৮ টি। ভূজপুরে ১০ টি। এছাড়া দুই থানায় প্রভাব বিস্তার, মারামারি, অপহরনের ঘটনা ভুড়ি ভুড়ি। তবে একই সময়ে দুই থানা এলাকায় অপরাধ সংঘটিত হলেও তুলনামূলক বিচারে বেশি সংঘটিত হয়েছে ভুজপুর থানায়। সম্প্রতি মব সৃষ্টির মাধ্যমে ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চন নগর ইউনিয়নে পিটিয়ে হত্যা করা হয মাহিন নামে সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রকে। এ ঘটনায় আরো দুই কিশোর গুরুতর আহত হয়। তখন এ ঘটনার বর্বরতার সংবাদ দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও স্থান পায়। এছাড়া গত ৫ জুলাই নাজিরহাট পৌরসভা এলাকায় শাহ আলম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করার তিনদিন পর একই পৌরসভার পূর্ব ফরহাদাবাদ গ্রামে পুকুর থেকে মো. এনাম (৬০) নামে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

অন্যদিকে, গত ২০ জুলাই উপজেলার লেলাং ইউনিয়নে খাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সন্তোষ নাথ (৪০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ঘটনার দুই দিনের মাথায় ২২ জুলাই মাইজভান্ডার দরবার শরীফ এলাকায় টয়লেট থেকে মো. আরমান (২৮) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ৮ আগস্ট ফটিকছড়ি পৌরসভার রাঙ্গামাটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর থেকে মনছুর বৈদ্য নামে এক ব্যক্তির গলাকাট লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

অন্যদিকে, গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর জাফত নগর ইউনিয়নে জায়গার বিরোধ নিয়ে আলমগীর ও জাহাঙ্গীর নামে দুই সহোদরকে মব সৃষ্টি করে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।

ফটিকছড়ি থানার ওসি নূর আহমদ বলেন, অপরাধ যাতে না ঘটে সেদিকে নজরদারী রেখে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। গত এক বছর সংঘটিত সবকটি ঘটনার অধিকাংশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে, বিগত এক বছরে ভূজপুর থানায় আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি ঘটেছে। ১০ টি হত্যাকাণ্ড ছাড়াও বিগত এক মাসের ব্যবধানে দুটি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে এখানে।

ভুজপুর থানার ওসি মো. মাহাবুবুল হক জানান, এলাকার আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তার অধিকাংশ আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।


গাছের শুকনো ডাল-পাতা থেকে তৈরি পশু খাবার রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা

একটা সময় গাছের শুকনো ডাল-পাতা গাছের নিচেই পড়ে পচে নষ্ট হতো। আবার কেউ কেউ গ্রামে মাটির চুলায় এগুলো জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে মাগুরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় এগুলো দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

মানুষ নয় বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখি যেমন- কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, ইঁদুর, গিরগিটি, সাপ ও পাখির জন্য গাছের শুকনো ডাল-পাতা এবং ঘাস রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পশু-পাখির বাসা ও বানানো হচ্ছে খেলনা ও পোশাক। আর এসব তৈরি করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মাগুরার সফল উদ্যোক্তা রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ ।

ছোটবেলা থেকেই পশু-পাখির প্রতি ভালবাসা এবং নিজের মধ্যে শিল্পবোধ পুষে রেখেছিলেন এই উদ্যোক্তা। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দীর্ঘ ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে লেখাপড়া ও ব্যবসা শেষ করে ২০১৮ সালে জাপানিজ স্ত্রী ও কন্যার অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশে নিজ জেলা মাগুরার কেশব মোড়ের বাসিন্দা রহমতুল ইসলাম ফিরে আসেন এবং তৈরি করেন পরিবেশবান্ধব কারখানা। জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব কারখানাটির নামকরণ করা হয় ‘বোল্ড পার্টনারস লিমিটেড’।

মাগুরা-যশোর মহাসড়কের পাশে জাগলা এলাকায় ৪০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন ১০০% পরিবেশবান্ধব এই কারখানা। নিজেদের উৎপাদিত ও সম্পূর্ণ দেশীয় পণ্য দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব এ কারখানায় কাজ করেন ২৫০ জন নারীকর্মী। প্রায় ৩৫০ ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করা হয় এখানে। এছাড়া আশেপাশের গ্রামের আরও প্রায় তিন শতাধিক নারী ও পুরুষ কর্মী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করছেন এখানে। অনেক প্রতিবন্ধীও কাজ করেন এখানে। তারা ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করেন আর কারখানার কর্মীরা সেগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ প্রথমে সবাইকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজ শেখান। বর্তমানে এখান থেকে প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। এসব পণ্য ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।

কয়েক বছর আগেও ফেলে দেওয়া হতো পেঁপে গাছের নল ও পাতা। এখন সেগুলো দিয়ে তৈরি করা হয় প্রায় ৩০ ধরনের পশু ও পাখির বাসা। এইসব পণ্য তৈরি করতে লাগে বাঁশ, পাটের দড়ি, আম ও নিম গাছের শুকনো ডাল-পাতা, ঘাস ইত্যাদি।

এছাড়া পেঁপে পাতা, আনারস ও আখ দিয়ে রোল বানিয়ে পশুর খাবার তৈরি করা হয়। এমনকি নীলকণ্ঠ ফুল দিয়ে তৈরি করা হয় পশু-পাখির পোশাক ও খাবার। কারখানার পাশাপাশি প্রায় ২০ একর জমিতে এসব পণ্য তৈরি করার জন্য যে কাঁচামাল প্রয়োজন সেই গাছগুলো রোপণ করা হয়। পুরোপুরি চাহিদা পূরণ না হওয়ায় পাশের গ্রামগুলো থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়। এসব পণ্য তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে মাগুরা সদর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া, কেচুয়া ডুবি, জাগলা, টিলা, ভাবনহাটি ও বড়সোলই গ্রামের মানুষজন।

কারখানার নারীকর্মী মেরিনা জানান, এখানে পর্যাপ্ত সিকিউরিটির ব্যবস্থা আছে। বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি কুকুর, বিড়াল, পুকুর ভরা মাছ বিভিন্ন জাতের হাঁস, মুরগি, ছাগল ও গরু পালন করা হয়। এই কারখানার মালিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে যথেষ্ট সুসম্পর্ক রয়েছে। বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের যাতায়াতের খরচ প্রতিদিন দিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া কেউ ওভারটাইম করলে তার অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করে দেওয়া হয়।

কারখানার নারীকর্মী মেরিনা জানান, এখানে কাজ করে আমাদের সংসার খুব ভালোভাবেই চলে যায় এতে আমরা অনেক খুশি।

টিলা গ্রামের সাপ্লাইয়ার সৈয়দ আলী ও বিল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, ৮ থেকে ১০ ধরনের প্রোডাক্ট এ কারখানায় সাপ্লাই দেই তা দিয়ে আমাদের আয় ভালোই হচ্ছে।

সফল উদ্যোক্তা রহমতুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, ইঁদুর, সাপ, গিরগিটিসহ বিভিন্ন প্রাণীর খাবার, পোশাক, বাসা ও খেলনা প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক প্রোডাক্ট তৈরি করা হয়। যা ১০০% প্রকৃতি থেকে নেওয়া। পণ্যের গুণগত মান ঠিক থাকায় ৬ বছরে প্রায় একশত কনটেইনার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। বিশ্বে পোষা প্রাণীর খাবার পোশাক ও খেলনার বাজার প্রায় ১৪০ বিলিয়ন ডলারের। তৈরি পোশাকের বাইরে এই খাতে নজর দেওয়া গেলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসবে দেশে দারিদ্র্যতা কমবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দারিদ্র্যকে বিক্রি করি না আমরা স্কিল বিক্রি করি।

কারখানার শ্রমিকরা মালিকের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন ,এমন উদ্যোক্তা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পেলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে তেমনি বৈদেশিক আই ও বৃদ্ধি পাবে।


পাথরঘাটায় বিশুদ্ধ পানির সংকট সমাধানের দাবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি

বরগুনার পাথরঘাটা পৌরবাসী দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানির চরম সংকটে ভুগছেন। এ সংকট নিরসনের দাবিতে বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা পৌরসভা চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সুবিধাবঞ্চিত পৌরবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন, পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বদিউজ্জামান সাহেদ, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান ফাহিম, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বরগুনা জেলা শাখার সহসভাপতি মহিউদ্দিন এসমে, পৌর জামায়াত নেতা মাহাবুব খান, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নজমুল হক সেলিম, সমাজকর্মী মেহেদী শিকদারসহ ভুক্তভোগী পৌরবাসী।

বক্তারা অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর ধরে পাথরঘাটা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানির মারাত্মক সংকট বিরাজ করছে। অনেক জায়গায় টিউবওয়েল ও পৌরসভার সরবরাহকৃত পানির লাইন অচল হয়ে আছে। যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে তা অনেক সময়ই দূষিত ও ব্যবহার অনুপযোগী। ফলে সাধারণ মানুষ পানীয় জলের জন্য হাহাকার করছে। এ অবস্থায় শহরের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

বক্তারা আরও বলেন, পানির সংকট শুধু গ্রীষ্মকালে নয়, সারা বছর ধরেই চলছে। এতে শিক্ষার্থী, নারী ও শিশুদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেক পরিবারকে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে খরচ করে পানি কিনে আনতে হচ্ছে। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে দাবি করেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত সমস্যার সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অচিরেই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।


banner close