মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
১৯ কার্তিক ১৪৩২

১৪ বছরে মজুরি বেড়েছে ৮৭ টাকা

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে এখনো বিক্ষোভ করছেন চা-শ্রমিকরা। ফাইল ছবি
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০২২ ২২:১৭

চা-শ্রমিকদের চলমান মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন টানা ১৮ দিন ধরে চলছে। দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ১৪ দিন ধরে ধর্মঘট ও তার আগের ৪ দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেছেন শ্রমিকরা। তবে এখন পর্যন্ত আশার বাণী শুনতে পাননি তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০০৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে চা-শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। অথচ এই ১৪ বছরে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে কয়েক গুণ। সে হিসাবে চা-শ্রমিকরা এখনো বঞ্চনার শিকার। মালিকদের ভাষ্য অবশ্য অন্য রকম। তারা বলছেন, চা-শ্রমিকরা সুযোগ-সুবিধা ও ভাতাসহ যে মজুরি পান, তা অন্যান্য শিল্পের শ্রমিকদের মতোই।

চা-শিল্পসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৮ সালে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত একজন চা-শ্রমিকের সর্বোচ্চ মজুরি ছিল ৩২ টাকা ৫০ পয়সা। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে চা-শ্রমিকদের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো গঠিত মজুরি বোর্ড ন্যূনতম দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করে দেয়। তখন এ-ক্লাস বাগানের জন্য মজুরি নির্ধারণ হয় ৪৮ টাকা, বি-ক্লাসের জন্য ৪৬ টাকা এবং সি-ক্লাসের জন্য ৪৫ টাকা।

২০১৪ সালের ১০ আগস্ট গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী পরিষদ। নির্বাচনের পর বাংলাদেশ চা-সংসদের সঙ্গে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের যে চুক্তি হয়, তাতে চা-শ্রমিকের দৈনিক নগদ মজুরি দাঁড়ায় এ-ক্লাস বাগানের জন্য ৮৫ টাকা, বি-ক্লাস বাগানের জন্য ৮৩ টাকা এবং সি-ক্লাস বাগানের জন্য ৮২ টাকা। এ বেতনকাঠামো ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়।

গোপন ব্যালটের মাধ্যমে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের তৃতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৪ জুন। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের বিজয়ী প্যানেলের সঙ্গে বাংলাদেশ চা-সংসদের সর্বশেষ চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয় ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দুই বছরের জন্য কার্যকর চুক্তিপত্র অনুসারে চা-শ্রমিকদের মজুরি এ-ক্লাস বাগানের জন্য ১২০ টাকা, বি-ক্লাস বাগানের জন্য ১১৮ টাকা এবং সি-ক্লাস বাগানের জন্য ১১৭ টাকা।

দৈনিক নগদ মজুরির পাশাপাশি শ্রমিক কলোনিতে একটি ঘর ছাড়াও প্রান্তিক সুবিধা হিসেবে চা-শ্রমিকরা আরও কিছু সুবিধা পান। যেমন ভাতা, হাজিরা উৎসাহ বোনাস, হ্রাসকৃত মূল্যে রেশন, ফসল উৎপাদনের জন্য খেতল্যান্ড ব্যবহারের সুযোগ (যে শ্রমিক এ সুযোগ গ্রহণ করে, তার রেশন আনুপাতিক হারে কেটে নেয়া হয়), চিকিৎসা সুবিধা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ইত্যাদি। দৈনিক মজুরি এবং অন্যান্য সুবিধা যা তারা পান, সেসব যোগ করলে তাদের মোট দৈনিক প্রাপ্তি ২০২০ সালে এসে ২০০ টাকারও কম- এমন দাবি বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও অন্য অনেকের। তবে বাগানমালিকদের দাবি, সব সুবিধা মিলিয়ে চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি এখন ৪০২ টাকা।

২০১৯ সালের শেষার্ধে চা-শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণের জন্য তৃতীয়বারের মতো ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। মজুরি বোর্ডে শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। মজুরি বোর্ডে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি রামভজন কৈরী জানিয়েছেন, ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের কাছে তারা দৈনিক নগদ মজুরি দাবি করছেন ৩০০ টাকা।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিকের পাশাপাশি অন্য কিছু পক্ষও তাদের সুপারিশ পাঠিয়েছে মজুরি বোর্ডের কাছে। তবে মালিকপক্ষ বলছে, চায়ের দাম পড়ে গেছে। কাজেই মজুরি বাড়ানোর সুযোগ নেই। শ্রমিকদের চরমভাবে হতাশ করে মজুরি বোর্ড ২০২১ সালের জুন মাসে শ্রম মন্ত্রণালয়ে যে সুপারিশ পাঠায়, তাতে শ্রমিকদের মজুরি এক টাকাও না বাড়িয়ে ১২০ টাকাই রাখা হয়। বরং শ্রমিকরা এতদিন ধরে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছেন, তা কমানোর সুপারিশ করে বোর্ড। শ্রম মন্ত্রণালয় অবশ্য শ্রম আইন অনুসরণ করে মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবিত মজুরিকাঠামো পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠায়।

এরপরও মজুরি বোর্ড তার সুপারিশে কোনো রকম পরিবর্তন না আনায় ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে চা-শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের ব্যাপারে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, এ সভায় কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মজুরি বোর্ডেকে। এরপরও মজুরি না বাড়ানোর ব্যাপারে শক্ত অবস্থানে থাকা মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ (সিনিয়র জেলা জজ) অবসরে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এ পরিস্থিতি চা-শ্রমিকদের জন্য চরম হতাশাজনক। কারণ তারা বর্তমানে যে মজুরি পাচ্ছেন, তা ২০২০ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তাদের মজুরি বাড়ার কথা। একদিকে মজুরি বোর্ড নিয়ে অচলাবস্থা, অন্যদিকে মালিক-শ্রমিকপক্ষের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বিলম্ব। সাধারণ চা-শ্রমিকরা দ্রুত মজুরি নিয়ে এ অচলাবস্থার অবসান চান।

মজুরি বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের একমাত্র প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাহী উপদেষ্টা রামভজন কৈরী বলেন, ‘মজুরি নিয়ে এসব সমস্যার প্রধান কারণ হলো মজুরি বোর্ড। তারা এত মিটিং-আলোচনার পরও এক টাকাও বাড়াতে চায়নি। মজুরি বোর্ড যদি মালিকদের কথা না শুনে একটা নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত দিত, তাহলে আজকের এই সমস্যা তৈরি হতো না। আমি মজুরি বোর্ডের কাছে যে প্রস্তাব করেছিলাম, সেগুলো তারা উপেক্ষা করেছেন। তাই আমি ওই সব মিটিংয়ে স্বাক্ষর না করেই বেরিয়ে এসেছি।’

বাংলাদেশ চা-কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খাইরুন আক্তার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘১৪ বছরে মজুরি বেড়েছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। এই যে মজুরি বৃদ্ধির হার, সেটা কোনোভাবেই সন্তোষজনক নয়। উপমহাদেশের ১৮৭ বছরের চা-শিল্পের ইতিহাসে যদি এক টাকা করেও প্রতিবছর মজুরি বাড়ত, তাহলেও আমাদের মজুরি ১৮৭ টাকা হতো। মজুরি বোর্ড এবং মালিকপক্ষ মিলেমিশে চক্রান্ত করে আমাদের মজুরি বাড়াতে চায় না।’

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তবে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোহন রবিদাস বলেন, ‘গত দুই চুক্তিতে কম টাকা বাড়ানো হলো। কিন্তু ইউনিয়ন কোনো আন্দোলন করল না। ইউনিয়ন যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত, তাহলে আমাদের বর্তমান মজুরি ৩০০ টাকাই থাকত।’


স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, প্রেমিক যুবককে গলা কেটে হত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মহানগরের পাঁচলাইশ থানাধীন হামজারবাগ এলাকায় স্ত্রীর সঙ্গে পরকিয়ার জেরে মো. হাসিব (২৬) নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যা করেছে এক প্রবাসী। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীর কাছ থেকে তালাকের নোটিশ পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে দেশে ফিরে এক প্রবাসী তার স্ত্রীর প্রেমিক ওই যুবককে খুন করেছেন।

সোমবার আনুমানিক দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. হাসিব নগরীর পাঁচলাইশ থানার জাঙ্গালপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি আগে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও গত দুমাস ধরে বেকার ছিলেন বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশ জানায়, একই এলাকায় প্রতিবেশি এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে হাসিবের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাসখানেক আগে ওই নারী হাসিবের সঙ্গে পালিয়ে যান। তারা এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও বসবাস করতে শুরু করেন। এর মধ্যে ওই নারী তার স্বামীকে বিদেশে তালাকনামা পাঠান। সেটা পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই প্রবাসী গত সপ্তাহে দেশে ফিরে আসেন। এর মধ্যে হাসিব ও তার সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীও নিজেদের বাসায় ফিরে আসেন। কয়েকদিন ধরে বিভিন্নভাবে ওই প্রবাসী তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। হাসিবকেও নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। সোমবার দুপুরে প্রবাসী ব্যক্তি হাসিবের বাসায় গিয়ে তাকে ডেকে স্থানীয় সঙ্গীত আবাসিক এলাকার ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে খুন করে পালিয়ে যায়।’

পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনায় জড়িত প্রবাসী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে প্রবাসী ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওসি সোলাইমান।


নেত্রকোনার ইতিহাসে বিএনপির স্মরণীয় প্রচারণায় বিক্ষোভ মিছিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এ বি চৌধুরী নাদিম, নেত্রকোনা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-২, সদর-বারহাট্রা আসনে ধানের শীষ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষে সোমবার জেলা শহরে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচীতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটির নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানী। মিছিলটি জেলা শহরের কোর্ট স্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চকপাড়া ঈদগাহ মাঠে গিয়ে শেষ করে। পরে লিফলেট বিতরন কর্মসূচী উদ্ধোধনকালে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডক্টর আরিফা জেসমিন নাহীন। সাবেক সহসভাপতি আব্দুল মান্নান তালুকদার, জেলা বিএনপির নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে যাকেই মনোনয়ন দিবেন আমরা তাকেই ঐক্যবদ্ধভাবে বিজয়ী করব। নির্বাচনকে সামনে রেখে পলাতক ফ্যাসিস্টরা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে ঐক্যের বিকল্প নেই বলে ইতোমধ্যে আহ্বান জানিয়েছেন। দল থেকে যাকেই ধানের শীষ মনোনয়ন দিবেন তার জন্য আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাব। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদেরকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ফেব্রুয়ারি মাসেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বে টার্মিনাল অপারেশনে যাবে: বন্দর চেয়ারম্যান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনাল অপারেশনে যাবে জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মুনিরুজ্জামান বলেছেন, এই টার্মিনাল চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানি খাতে এক নতুন যুগের সূচনা হবে।

তিনি বলেন, বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের নকশা ও প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করেছে।

সোমবার সকালে বন্দর অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘জেনারেল মার্কেট এনগেজমেন্ট কনফারেন্স ফর দ্য বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মুনিরুজ্জামান বলেন, বে টার্মিনাল শুধু চট্টগ্রাম নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে। এটি চালু হলে দেশের রপ্তানি সক্ষমতা ও জাহাজ আগমনের সময় নাটকীয়ভাবে কমে আসবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও আসবে আমূল পরিবর্তন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান চাপ কমাতে বে টার্মিনাল প্রকল্পটি সময়ের দাবি। চট্টগ্রাম বন্দরের সব স্টেকহোল্ডার চান, বে টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়িত হোক। প্রকল্পের আওতায় সাগরে ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল নির্মাণের পাশাপাশি টার্মিনাল এলাকায় রেল ও সড়ক সংযোগ, কনটেইনার ইয়ার্ড, জেটি এবং আধুনিক সেবা অবকাঠামো তৈরি করা হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০৩১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে ‘বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি নগরীর উত্তর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় গড়ে তোলা হবে। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের নেতা, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।


কোটালীপাড়ায় মাছের খামারে ৫২ পরিবারে চরম দুর্ভোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মাছের খামারের কারণে ৫২ পরিবারে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বারবার প্রশাসনের কাছে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। খোঁদ উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে যাচ্ছে মাছের খামার কর্তৃপক্ষ।

উপজেলার মাদারবাড়ী মৌজার উত্তরপাড় ও জটিয়ারবাড়ি গ্রামে ২৪০ বিঘা কৃষি জমিতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি জহুর আলী মিয়া কয়েকজন ব্যক্তিদের নিয়ে বর্ষাকালীন ৬ থেকে ৮ মাসের জন্য মাদারবাড়ী-কুঞ্জবন ভাই ভাই মৎস্য খামার পরিচালনা শুরু করেন গত বছর থেকে। মাছের খামারের মাঝে বসবাস করা পরিবারগুলো এখন তাদের বসতবাড়ির অস্তিত্ব হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন।

ভুক্তভোগীদের দাবি প্রভাবশালী এই চক্রের মুখে প্রশাসনও যেন অসহায় হয়ে পড়ছে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুম বিল্লাহ ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ উপস্থিত থেকে পানি অপসারনের জন্য স্লুইচ গেটের বাঁধ কেটে দিলেও রাতের আধাঁরে পুনরায় বাঁধ দেয় খামার কতৃপক্ষ। একই সাথে প্রশাসনের দেওয়া ৯ টি নির্দেশনা মানার জন্য মাছের খামার কতৃপক্ষকে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিলেও ১টি নির্দেশনাও মানেননি। খোঁদ প্রশাসনকে যেন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী এই চক্র।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে পানি আটকিয়ে ৬ থেকে ৭ মাস এই মাছের খামারে মাছচাষ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ গত বছর প্রথম এই মাছের চাষ করার সময় দুর্ভোগের বিষয়টি বুঝতে না পারলেও দুমাস যেতেই দুর্ভোগে পড়েন মাছের খামারের ভেতরে বসত করা ৫২ টি পরিবার। স্লুইস গেটগুলো বন্ধ থাকায় জমির পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় একদিকে পরিবারগুলো হয়ে পড়ে পানি বন্দি। অন্যদিকে মাছে বসত বাড়ি ও পুকুরের পাড়ের মাটি খেয়ে ফেলায় ভেঙে পড়ে পুকুর ও বসত বাড়ির পাড়।

ভুক্তভোগী খোকন শিকদার বলেন, মাছের ঘেরের মধ্যে ৫২টি পরিবারের বসতবাড়ির মাটি ধসে পড়ে বাড়ির আঙিনায় থাকা বনজ ও ফলজ গাছ ভেঙে পড়ছে। মাছে অতিরিক্ত সার, খৈল ও রাসায়নিক ব্যবহার করায় পানি পঁচে দুর্গন্ধ হচ্ছে। বর্ষাকালে এই পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

মাছের খামার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জহুর আলী বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা দিয়ে থাকি। তবে সাম্প্রতিক সময়ের বিষয়গুলো আমার জানা নেই। আমি ওমরা হজে ছিলাম।

মৎস্য খামারের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, গত বছরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবারও দেওয়া হবে। প্রশাসনের নির্দেশনা মানা হবে। তবে সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রশাসনের উদ্যোগে কেটে দেওয়া স্লুইস গেটের বাঁধ পুনরায় আটকে দেওয়াটা ঠিক করা হয়নি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা জানতে পারছি ঘের কতৃপক্ষ প্রশাসনের কেটে দেওয়া বাঁধ আটকিয়ে দিয়েছে এবং একটি শর্তও তারা মানেননি। আমারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক বলেন, আমি মাতৃত্বজনিত কারনে ছুটিতে ছিলাম। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মাছের খামারের কারণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


১২ বছরে ৩ লাখ গাছের চারা রোপণ করেছেন সত্যজিৎ

সড়কের দুই পাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় এসব গাছ লাগিয়েছেন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কার্ত্তিক দাস, নড়াইল

কিছু মানুষ আছেন, যাদের জীবন যেন প্রদীপের শিখার মতো-নিজে জ্বলে অন্যকে আলো দেন। নিজেদের প্রচারের আলোকমালায় সাজান না। বরং নিভৃতচারী থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের যেন অর্জন বা প্রাপ্তি কোনো লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য কেবল মানুষের কল্যাণ। এমন এক মানুষ হলেন প্রকৌশলী সত্যজিৎ রায়।

নড়াইল সদর উপজেলার গোবরা এলাকার রামনগরচর গ্রামে জন্ম নেওয়া এই মানুষটির স্লোগান হলো ‘কথা না লাগিয়ে, গাছ লাগাও’।

এই স্লোগানকে সামনে রেখে তিনি বগুড়াসহ খুলনা বিভাগের ৩টি জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দুইপাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় লাগিয়েছেন ৩ লাখ গাছ। এখনো লাগিয়ে চলেছেন।

বয়স এখন ৭৫ বছর। শরীর আগের মতো বলিষ্ঠ নেই। তবুও চোখেমুখে এখনো সেই দীপ্তি। সত্যজিৎ রায় আজও প্রমাণ করে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন, দেশ গড়ে ওঠে শুধু বক্তৃতায় নয়। গড়ে ওঠে মানুষের প্রতি ভালোবাসা, নিষ্ঠা আর কর্মের সেতুবন্ধনে। এই মানুষটি নিঃশব্দে যে আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে চলেছেন, তা একদিন আরও দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে।

জীর্ণ ঘর থেকে এই ইঞ্জিনিয়ার-মায়ের আর্শীবাদ, এ যেন এক অলৌকিক জয়। টিনের ঘর, ভাঙা দরজা, উঠানে ছাগল-মুরগির খেলা—এই ছিল তার শৈশবের রাজ্য। বাবা শরৎ চন্দ্র বিশ্বাসের মৃত্যুর পর মা ললিতা রায় একাই লড়ে গেছেন জীবনের সাথে। কখনও কষ্ট লুকিয়ে, কখনো ক্ষুধা সহ্য করে। শুধু একটাই স্বপ্ন বুকে বেঁধে রেখেছিলেন ছেলেকে বড় মানুষ বানাবেন। কিন্তু মাও আর বেচে নেই। আজ মা-বাবা হারা সেই ছেলে সত্যজিৎ রায় একজন ইঞ্জিনিয়ার।

৪০ বছর বয়সে হারিয়েছেন বাবাকে, আর ৫৫ বছর বয়সে মারা গেছেন মা। অভাবী কৃষক পরিবারের ছেলে সত্যজিৎ রায়। মায়ের প্রচেষ্ঠায় পরের কৃষি জমিতে কামলা দিয়ে আর স্কুল শিক্ষকদের সহযোগিতায় এস.এস.সি পর্যন্ত নিজের লেখাপড়া চালিয়েছেন। কলেজ জীবনের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন সা-বাবার পাশাপাশি বড় ভাই নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রয়াত অধ্যাপক রনজিৎ রায়।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতায় এস,এস,সিতে ঈর্শ্বণীয় রেজাল্ট করে তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। কলেজ জীবনেও তাই। মেধাবী সেই মানুষটি এখন অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন বিভাগে (বিএডিসি) চাকরি করেন। ২০০৮ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান।

বাবার শেখানো ও বিদেশি এক পরিবেশবিদের বক্তব্য শুনে প্রথমে তালবীজ রোপণ শুরু করেন। বাবা মারা যাবার আগে তাকে বলেছিলেন ‘বজ্রনিরোধক’ তালবীজ রোপণ করার পদ্ধতি। সেই শিক্ষা এখন নিজের জেলা নড়াইল থেকে শুরু করে বগুড়া, যশোর, বেনাপোল, খুলনা জেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সত্যজিৎ রায় চাকরি থেকে অবসর নেবার পর গত ১২ বছরে তালগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করেছেন ৩ লাখ গাছ । এর মধ্যে ৫০ হাজার তালগাছ ছায়া দিচ্ছে ওই অঞ্চলে। ওই সমস্ত এলাকার মানুষ তাকে চেনেন গাছ প্রেমিক সত্যজিৎ রায় হিসেবে। বর্তমানে পরিবারসহ থাকেন তিনি চট্রগ্রামের পাশলাইশ আবাসিক এলাকায়।

১৯৮৪ সালে নড়াইল সদর উপজেলার মুশুড়িয়া গ্রামের সীতানাথ মল্লিকের কন্যা দেশ বরেণ্য ডা. দেবালা মল্লিকের সঙ্গে শুভ পরিণয়ে আবদ্দ হন। দাম্পত্যজীবনে তাদের ঘরে অপারজিতা রায় নামে এক কন্যা সন্তান রয়েছেন। তিনিও মায়ের মতো দেশ বরেণ্য একজন চিকিৎসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

গাছ প্রেমিক সত্যজিৎ রায় জানান, ভাদ্রমাসে তাল পাকে। ভাদ্র ও আশ্বিন এই দুই মাস তিনি তালবীজ রোপণে পুরোটা সময় দিয়ে থাকেন। নিজের জমানো টাকা দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের ৩০টি গ্রাম থেকে তালবীজ কিনে আনেন। এছাড়া প্রতি বছর বর্ষা মওসুমে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বাড়ি এবং আবর্জনার স্তূপ ঘেটেও তালবীজ সংগ্রহ করেন। তিনি বলেন প্রতি বছর ভাদ্র-আশ্বিন দুইমাসে গড়ে প্রায় ২০ হাজার তাল বীজ রোপণ করেন। এ হিসেবে ২০০৮ সাল থেকে ১৭ বছরে দুই লাখ ৮০ হাজার তালবীজ ও ২০ হাজার ১৭৫টি অন্যান ফলজ, বনজ, অসুধি, সুগন্ধি ফুলের গাছ রোপণ করেছেন। এছাড়া নদী, খাল পাড়ে, বিদ্যালয় আঙ্গিনায় রোপণ করলেও তার হিসাব তিনি নিজে রাখতে পারেননি। কিছু গাছ মারা গেছে,সমাজের কিছু দুষ্টু চক্রের মানুষ তার রোপণ করা গাছও নষ্ট করেছেন।

যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার বাকড়ী গ্রামের অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সত্যজিৎ রায় চট্রগ্রাম থেকে এই এলাকায় আসার পর নিজের রোপন করা গাছ পরিচর্যা করতে সাইকেল চালিয়ে ছুটে যান বিভিন্ন গ্রামে। কোথাও কোন সমস্যা হলে তা এলাকার মানুষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সমাধান করেন।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের কৃষক মোল্যা হোসেন আলী বলেন,নিজ তাগিদ থেকে সত্যজিৎ রায় রোপণ করেন তালবীজ। উপজেলার অনেক গ্রামে তিনি তালবীজ ছাড়াও ফলজ, বনজ, অসুধিসহ ফুল গাছ লাগিয়েছেন।

নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতরামপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, প্রকৌশলী সত্যজিৎ রায় একজন খাটি দেশপ্রেমিক, সমাজ সংস্কারক। তিনি নড়াইলের গর্ব। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের (ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের)অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান চিত্রশিল্পী অধ্যাপক বিমানেশ বিশ্বাস বলেন, সত্যজিৎ রায় নড়াইল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চরে তালবীজসহ বিভিন্ন প্রকারের গাছ লাগিয়ে চলেছেন। ওইসব অঞ্চলে তার লাগানো প্রচুর গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে সাক্ষী দিচ্ছে। তার এই উদ্যোগ সাড়া দেশে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।


দিনাজপুর সওজের জায়গায় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মিজানুর রহমান, দিনাজপুর

দিনাজপুর পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ। সোমবার দ্বিতীয় দিনেও দিনব্যাপি অভিযানে অংশ নেয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ও সওজ বিভাগের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত সড়কের দুপাশে শতাধিক দোকান ও ঘরবাড়ি গড়ে ওঠে। এতে সড়কটি সরু হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেও কয়েক দফা সতর্ক করা হলেও দখলদাররা স্থান খালি করেননি। ফলে প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

অভিযান চলাকালীন সওজ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, জনস্বার্থে এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কর্মকর্তারা সবাইকে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত রাখতে ও উন্নয়ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

দিনাজপুরে এই উচ্ছেদ অভিযানে একদিকে যেমন সড়ক প্রশস্তকরণের উদ্যোগে সাধারণ মানুষ আশাবাদী, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে মানবিক সহায়তার প্রত্যাশা করেছেন।

দিনাজপুর সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দিনাজপুর পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকায় সড়কের ৮৫ ফিট প্রশস্ত অংশের ভেতরে থাকা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। ১৯৪২ সালে অধিগ্রহণ করা সরকারি জায়গা দখলমুক্ত রাখতেই এই অভিযান।

তিনি আরও বলেন, দখলমুক্ত হওয়া জায়গায় সড়ক প্রশস্তকরণ, ড্রেনেজব্যবস্থা ও জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।

অভিযানের সময় দেখা যায়, ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে দোকান, টিনের ঘর ও কাঠের স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে এই উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম আর্থিক বিপাকে। অনেকেই জানিয়েছেন, যথাযথ নোটিশ ও সময় না পাওয়ায় তারা দোকানের মালামাল সরিয়ে নিতে পারেননি।


সেতুর কাজে ধীরগতি, দুর্ভোগে ৩২ গ্রামের লাখো মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সদর উত্তর ইউনিয়নের গোমতী নদীর ওপর নির্মাণাধীন কদমতলী-হাসনাবাদ সেতুর কাজ শুরু হয়েছে ২০২০-২১ অর্থ বছরে। ৫৭০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৬৬ কোটি টাকা।

কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএএম হোল্ডিং লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের মে মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। মাঝে ২ বছর করোনা মহামারীর কারণে বন্ধ ছিল নির্মাণ কাজ। পরে সময় বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পাঁচ বছরেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৩৮ শতাংশ। সেতুর কাজে ধীরগতিতে দুর্ভোগে আছে লাখো মানুষ। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয়দের মাঝে।

প্রাশাসনিক নজরদারির ঘাটতি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা। শ্রমিক বেতন বকেয়া। সব মিলিয়ে প্রায়শই থমকে থাকে সেতুর নির্মাণ কাজ। ফলে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়

দাউদকান্দি, তিতাস ও মেঘনা উপজেলার অন্তত ৩২ গ্রামের লাখো মানুষকে। তাদের নিত্যদিন পারাপারের একমাত্র বাহন নৌকা। এতে নষ্ট হচ্ছে সময়। পারাপারে আছে জীবন ঝুঁকি। গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম অবহেলা ও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক না দেওয়ার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। গত চার মাস ধরে প্রকল্প এলাকায় কার্যত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

সাইট সহকারী প্রকৌশলী মো. নাঈমুর রহমান বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, বন্যা ও করোনা মহামারির কারণে প্রায় আড়াই বছর কাজ বন্ধ ছিল। ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে কাজের মেয়াদ। তবে আরও কিছু সময় প্রয়োজন।

অন্য সহকারী প্রকৌশলী অসিত কুমার রায় জানান, শ্রমিকদের বেতন বকেয়া থাকায় অনেকে কাজ ছেড়ে চলে গেছেন। তাই আপাতত কাজ বন্ধ আছে।

দাউদকান্দি উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, গোমতী নদীর ওপর ৬৬ কোটি টাকায় ৫৭০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় দুটি প্রতিষ্ঠান মঈনউদ্দিন বাশী লিমিটেড ও মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজ (জেভি)। নির্ধারিত সময়েও কাজ শেষ হয়নি। প্রতিষ্ঠান সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। প্রয়োজনে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে।


সিরাজগঞ্জে ৪০০ একর জমিতে বিসিক শিল্পপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ

*কাজ না করেই বিল উত্তোলন, বিপাকে উদ্যোক্তারা *সর্বশেষ প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয় ৭১৯ কোটি ২১ লক্ষ টাকা *শিল্প পার্কের ৮২৯টি প্লটে শিল্প স্থাপন হবে ৫৭০টি *গত ৬ মার্চ শিল্প পার্ক পরিদর্শন করেন দুদকের টিম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলের এক প্রভাবশালী ঠিকাদার আরাফাত কনষ্ট্রাকশন। তার সঙ্গে যোগসাজশে বিসিক প্রকৌশল বিভাগের আওয়ামী ঘরোয়া পরিচালক আব্দুল মতিন ও সাবেক প্রকল্প পরিচালক জাফর বায়জিদ সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্প পার্কের কাজ শেষ না করেই গত বছর জুনে শত ভাগ বিল প্রদান করেন। অনিয়মের তথ্যাদি চাইলে, তথ্য না দিয়ে তড়িঘড়ি করে নিরাপত্তা জামানত দেওয়ার তোড়জোড় চেষ্টা করছে এই কর্মকর্তারা। বিষয়টি বিসিক চেয়ারম্যান সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বিষয়টি অবগত নন। এসময় তিনি আরও জানান, বিষয়টি আমি দেখছি। অনিয়ম নিয়ে গত ৬ মার্চ শিল্প পার্ক এলাকা পরিদর্শন করেন দুর্নীতি দমন কমিশন।

দুদকের আঞ্চলিক কর্মকর্তা ইসতিয়াক আহমেদ জানান, সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্প পার্ক এলাকা পরিদর্শন করে আমরা বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছি। আমরা বিসিক থেকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়েছি।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত ১৬ আগষ্ট বন্ধের দিনেই বিসিক শিল্প পার্কের প্রধান পরিচালক আব্দুল মতিন ও বিসিক শিল্প পার্কের একাধিক কর্মকর্তা, প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় তাকে বিসিকের ড্রেন, ড্রেনে ব্যবহৃত মালামাল, রাস্তার পুরুত্ব, রাস্তায় ব্যবহৃত মালামাল ও প্রকল্প এলাকার বালু ব্যবহার করে সাববেজ ও সোলডারের কাজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরিদর্শনে কি দেখলেন প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান, এবিষয়ে পরবর্তীতে পরিদর্শন রিপোর্টে দেখতে পাবেন বলে গাড়িতে উঠে তড়িঘড়ি করে চলে যান। এসময় তিনি রাস্তায় কোথায় কোনো মেজারমেন্ট নেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা জামানত নেওয়ার জন্য বিসিক ঢাকা অফিসে চিঠি দিয়েছে, এজন্য স্যার পরিদর্শন করতে এসেছিলেন।

অথচ জামানত নেওয়ার বিষয়ে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আরাফাত জানান, জামানতের আবেদন দেওয়া হয়েছে কিনা আমি জানিনা। প্রকল্পের বালু ব্যবহারের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের মানুষ বলে একটু বেশি বেশি।

তথ্য জানার জন্য, সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর ব্যবস্থাপক মাহবুবুল বরাবর গত ২৮ জুলাই তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাইলে, তিনি লিখিতভাবে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। গত ১১ আগষ্ট এতে উল্লেখ করেন, আপনি বিসিকের যে ধরনের তথ্য চেয়েছেন, তা ব্যবসায়িক অন্তর্নিহিত গোপনীয়তা বিষয়ক তথ্য। এছাড়া কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। যা তথ্যাধিকার আইনে দেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ করেন।

ড্রেন ও রাস্তা কাজের তথ্যাধিকার আইনে গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্য চাইলে, তথ্য না দিয়ে হয়রানি। উল্টো কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই ছুটির দিনে গোপনীয় পরিদর্শন পূর্বক প্রতিবেদন দিয়ে জামানতের অর্থ তোলায় ব্যস্ত কতিপয় কর্মকর্তারা।

তথ্যানুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ড্রেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আতাউর রহমান খান ও রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স লি. নির্দিষ্ট সময়ে কাজ বাস্তবায়ন না করার কারণে প্রায় ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হলেও আজও আদায় করতে পারেনি বিসিক। প্রকল্প এলাকায় আজও হয়নি ২০ কোটি টাকার বালু ভরাট কাজ। নকসা অনুযায়ী গভীর না করায় লেকে পানি থাকছে না, এজন্য আজও হয়নি ইজারা। কাজ গুলো নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় সরকারের প্রায় ২শ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, গত বছর ২ জুন ও ১৯ জুন এভং ২৬ জুন বিসিক শিল্প পার্ক প্রকল্প নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। যেখানে হেরিংবন্ডে নিম্নমানের অর্ধাংশ ইট ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ, নিম্নমানের ইট দিয়ে খোয়া তৈরিসহ প্রকল্প কাজে নানান অনিয়মের চিত্র উঠে আসে। টেন্ডার শর্ত ভেঙে প্রকল্প কাজে ৫০ মি. লি. সাইজের খোয়া ধরা থাকলেও অধিকাংশ ইটের খোয়া তার চেয়ে বড় সাইজের। এছাড়া কার্পেটিংয়ের কাজ ৭৫ মি.লি. ধরা থাকলেও কোথাও ৬০ মি.লি. থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ মি.লি. করা হয়েছে, গাড়ি চলার আগেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। এ সময় স্থানীয়রা সাব-বেজ মান নিয়ে নানা অভিযোগ করে বলেন, এখানে বড় মাপের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। খোয়ার চেয়ে বালুর ব্যবহার বেশি। প্রকল্প এলাকায় ভরাটকৃত বালু দিয়েই করে সাব-বেজের বালুর কাজ।

যমুনা সেতুর পশ্চিম পাশে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলী, পশ্চিম মোহনপুর, বনবাড়িয়া, বেলটিয়া ও মোরগ্রাম মৌজার অংশ নিয়ে প্রায় ৪০০ একর জমিতে বিসিক শিল্প পার্কটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কয়েক দফায় সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি করতে করতে সর্বশেষ প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয় ৭১৯ কোটি ২১ লক্ষ টাকা। শিল্প পার্কের ৮২৯টি প্লটে কমপক্ষে ৫৭০টি শিল্প স্থাপনের কথা রয়েছে।


সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে দুইটি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে বেবিচকের বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যথাক্রমে "Foundation Training Course No. 12" এবং "Basic Office Management Course No. 40" সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজ ০৩ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার একাডেমির কনফারেন্স রুমে সমাপনী ও সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উক্ত দুইটি কোর্সের কার্যক্রম শেষ হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিভিল এভিয়েশন একাডেমির পরিচালক জনাব প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী (Prasanta Kumar Chakraborty) এবং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর সদস্য (প্রশাসন) জনাব এস. এম. লাবলুর রহমান (S M Lablur Rahman)। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও সাধারণ প্রশিক্ষণ জনাব মোহাম্মদ ইকরাম উল্লাহ (Muhammad Ikram Ullah)।

এই কোর্স দুটি নব নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোর্স দুটিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে নব নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ সিভিল এভিয়েশন এর বিভিন্ন দপ্তরের দাপ্তরিক কাজের বিষয়ে সম্যক ধারণা লাভ করেন।

উল্লেখিত কোর্স দুটিতে মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ প্রশিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনাব এস. এম. লাবলুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন মানবসম্পদ উন্নয়নই হলো টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি। সুশিক্ষিত, দক্ষ ও কর্মনিষ্ঠ জনবলই একটি সংস্থার প্রকৃত সম্পদ। সিভিল এভিয়েশন একাডেমি এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন যে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে সিভিল এভিয়েশনের সেবায় আরও দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন।

সভাপতি জনাব প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্যে বলেন সিভিল এভিয়েশন একাডেমি সর্বদা প্রশিক্ষণার্থীদের পেশাগত জ্ঞান, মনোভাব ও নেতৃত্বগুণ বিকাশে সচেষ্ট।

উক্ত অনুষ্ঠানে ৫০ জন প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।


নোয়াখালীর হাতিয়ায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে বিপুল পরিমাণে চোরাইকৃত কয়লা ও ৪ টি কার্গো বোটসহ ২ জন চোরাকারবারী আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার দুপুরে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ শনিবার দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে কোস্ট গার্ড স্টেশন হাতিয়া ও রামগতি কর্তৃক নোয়াখালীর হাতিয়া থানাধীন টাংকির খাল সংলগ্ন মেঘনা নদীতে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় সন্দেহজনক ৪ টি ইঞ্জিনচালিত কাঠের বোটে তল্লাশিকালীন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ১৪০ টন কয়লা ও ২ জন চোরাকারবারিকে আটক করা হয়।

পরবর্তীতে আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়লাগুলো চট্টগ্রামের বহিঃ নোঙ্গর এলাকার একটি বাণিজ্যিক জাহাজ হতে অসদুপায় অবলম্বন করে ক্রয় করা হয়েছে। জব্দকৃত কয়লা, চোরাই কাজে ব্যবহৃত বোট ও আটককৃত পাচারকারীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উপকূলীয় এলাকায় অপরাধ দমনে ভবিষ্যতেও এধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।


জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে ৫ বছর ধরে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

আনোয়ারায় স্কুল ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ করে পালিয়েছে ঠিকাদার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা (চট্রগ্রাম) প্রতিনিধি

আনোয়ারা উপজেলার দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা তো দূরের কথা, মৌলিক নিরাপদ শ্রেণিকক্ষের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। বিগত পাঁচ বছর ধরে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে চলছে এই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।

৫ বছর আগে পুরোনো সেমিপাকা স্কুলটি ভেঙে নতুন স্কুল ভবন তৈরির কাজ শুরু করে। সেই ভবনের কাজ শুরুর কিছুদিন পরই কাজ বন্ধ করে পালিয়ে যায় ঠিকাদার।

সরেজমিনে ভবন নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিল্ডিং এর স্তম্ভের কয়েকটি জায়গায় পাইলিং শেষ করা হয়েছে। তবে এই লোহাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা হয়েছে। জম ধরেছে ফেলে রাখা এসব লোহাগুলোতে। এছাড়া আর কোনো কাজ করা হয়নি। স্কুলের পাশে জায়গা না থাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে বেড়িবাঁধের পাশে টিন দিয়ে কয়েকটি রুম করে চালানো হচ্ছে স্কুলের কার্যক্রম।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন বলেন, এই এলাকার গণজনবসতিপূর্ণ এলাকা, প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দাদের এই একটিই স্কুল। আশেপাশে আর স্কুল নেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং স্থানীয় সমস্যার কারণে স্কুলের কাজটি সম্পন্ন হয়নি। যার কারণে এই এলাকার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে দিকে মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার শেল্টার প্রজেক্ট (এমডিএসপি) এর আওতায় দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটির বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কাজ শুরু হওয়ার পর সংশ্লিষ্টরা পাইলিং এর কাজ করে যাতে ব্যয় হয় ৯০লাখ টাকা মত। এরপর কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে।

তামান্না আক্তার নামের স্কুলের ৫ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়ে, গ্রীষ্মে টিনের গরমে পড়তে পারিনা। আমাদের আশেপাশের বন্ধুরা সুন্দর সুন্দর স্কুলে পড়ে আমরাও চাই টিনের স্কুলের পরিবর্তে নতুন একটা স্কুল হউক, যাতে আমরা ভালো করে পড়তে পারি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়নাব বেগম বলেন, এই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ২শ শিক্ষার্থী এবং ৬ জন শিক্ষক রয়েছে। ১৯৯৬ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১৩ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। আগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল ২০২১ সালে স্কুল স্থানান্তরের পর থেকে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ এই টিনের শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এসময় তিনি দ্রুত স্কুলের নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি জানান।

এ নিয়ে আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। বি স্ট্রিম প্রকল্পের আওতায় আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা হবে। আপাতত অস্থায়ী স্কুলটি সংস্কার করে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা হবে।


অসময়ের বৃষ্টিতে জয়পুরহাটে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা

*ধান ও আলু চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ *২১টি হিমাগারে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ বস্তা আলু
জয়পুরহাটে অসময়ের বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া ক্ষেত থেকে আলু তুলছেন কৃষক। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

আলু উৎপাদন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাট। গত বছর আলু চাষ করে এখনো জেলার ২১টি হিমাগারে পড়ে রয়েছে লাখ লাখ বস্তা আলু। এতে ব্যাপক লোকসানে মুখে পড়েছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষ শুরু করেন তারা।

কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জেলার পাঁচ উপজেলায় গত বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টিতে ফসলি জমিতে পানি জমে। যেসব জমিতে আগাম আলু রোপণ করা হয়েছে, সেসব জমিতে পানি জমায় আলুর বীজ পচে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যে কারণে আলু চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। এছাড়াও রোপা আমন ধান ও আগাম শীতকালীন শাক-সবজি ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে পাকা ধান কাটা শুরু হবে। এ অসময়ে বৃষ্টি হয়ে এখন কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

জানা যায়, জেলায় আমন ধান চাষ হয়েছে ৭০ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে ১ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে। আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের আলু ৭৭৭ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত জেলার ২১টি হিমাগারে আলু মজুত রয়েছে ৮৪ হাজার ১৬৯ মেট্রিক টন।

ঘুরে দেখা যায়, আলু আবাদের জন্য কোথাও কোথাও প্রস্তুত করা হয়েছিল জমি, কোথায় সদ্য রোপণ করা হয়েছে বীজ। বৃষ্টিতে জমিতেই জমেছে পানি। ফসল বাঁচাতে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন কৃষকরা। শুধু আলু ক্ষেত নয়, আগাম জাতের শীতকালীন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মরিচ, বেগুন, মুলা, চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন শাক-সবজির গাছও মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। যেসব ক্ষেতের সবজি এখনো ভালো রয়েছে, তা রক্ষায় চেষ্টা চালাচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়াও মাঠের আধা-পাকা ধান হেলে পড়েছে, গড়াগড়ি খাচ্ছে পানিতে।

জানা যায়, গেল বছর আলুর ভালো দাম না পাওযায় এবছর লাভের আশায় আগাম আলু চাষ শুরু করেন তারা। তবে কয়েক দিনের বৃষ্টি হওযায় আলুর জমিতে পানি জমে। ফলে বৃষ্টির পানিতে একদিকে রোপণকৃত বীজ পচে গেলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। অনাবাদি জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের পর বীজ রোপণ কবে করা যাবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এতে আরও একমাস আলু রোপণে দেরি হবে।

অন্যদিকে অসময়ের বৃষ্টিতে জমিতে আমন ধানের গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। পানিতে ভাসছে ধানের গাছ। আবার শীতকালীন শাক-সবজির জমিতেও দেখা দিয়েছে শিকড় পচে যাওয়ার আশঙ্কা। পানি দ্রুত না সরলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকরা।

সদর উপজেলার ধারকী গ্রামের কৃষক গোলাপ হোসেন বলেন, গতবছর আলু চাষ করে অনেক লোকসান হয়েছে। এবার আগাম আলু লাগালে ভালো দাম পাওয়া যাবে। সেই আশায় দেড় বিঘা জমিতে আলু বীজ রোপণ করে এক সপ্তাহ হয়নি। এর মধ্যে কয়েকদিন থেকে থেমে থেমে লাগাতার বৃষ্টি। এখন বৃষ্টির পানি জমিতে জমে থাকায় গাছ ঠিক মতো উঠতে পারে নাও পারে। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।

ক্ষেতলাল উপজেলার কুসুমশহর গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, আগাম আলু চাষে কিছুটা ঝুঁকি থাকে। এলাকার কয়েকজন আলু লাগাইতাছে দেখে আমিও দুই বিঘা জমিতে কয়েক দিন আগে লাগালাম।

কালাই উপজেলার পুনট এলাকার কৃষক আজিজার রহমান বলেন, ধান পাকতে শুরু করেছে। কয়েকদিন পরেই ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় আমার আড়াই বিঘা জমির আধা-পাকা ধান হেলে পড়েছে, ধানের গাছ মাটিতে নুয়ে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে পানিতে। এই ধান আর ঘরে আসবে না। এমনিতেই গত বছর আলু চাষ করে ব্যাপক লোকসান হয়েছে।

কালাই উপজেলার ধাপ গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, সার সিন্ডিকেটের কারণে সার পায় না। আবার বস্তাপ্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি দিয়ে সার কিনে যদিও বা ফসল রোপন করি। কিছুদিন পরেই পড়ে সেচ সিন্ডিকেটের পাল্লায়। ঋণ করে সমস্ত টাকা দিয়ে ফসল ফলায় কিন্তু ফসলের ন্যায্য দাম পাই না।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, জেলায় বিভিন্ন উপজেলার প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শাকসবজি ২৭ হেক্টর জমিতে, আমন ধান ৩৩৭ হেক্টর জমিতে ও আগাম জাতের আলু ৮৫ হেক্টর জমিতে কয়েকদিনের অসময়ের বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এখনো ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করা যায়নি। ঝড় বৃষ্টি হলেও ভারী বর্ষণ হয়নি। সবেমাত্র আলু রোপণ শুরু হয়েছে। এছাড়া শীতকালীন সবজি ও আমন ধানের খুব বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।


সেনা সহায়তায় ১৯ বছর পর দেশে ফিরলেন ময়নুল

সুদানের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে ১৯ বছর ধরে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করা বাংলাদেশি নাগরিক মো. ময়নুল হক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশে ফিরেছেন সুদানের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করা বাংলাদেশি নাগরিক মো. ময়নুল হক।

গতকাল রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেই’ (UNISFA)-তে বাংলাদেশের একটি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন রয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন, ব্যানব্যাট-৩ এর একটি টহলদল আবেই বাজার এলাকায় হঠাৎ ময়নুল হকের সন্ধান পায়।

প্রায় ১৯ বছর আগে ঠিকাদারির কাজে সুদানের রাজধানী খার্তুমে পাড়ি জমান তিনি। কিন্তু হঠাৎ শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ তার জীবনকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দেয়। বহুদিন অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকার পর প্রাণ বাঁচাতে তিনি পলায়ন করে চলে আসেন আবেই অঞ্চলে। দুর্ভাগ্যক্রমে এ সময় তিনি হারান পাসপোর্টসহ সমস্ত বৈধ নথিপত্র, যার ফলে দেশে ফেরা তার জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাক্ষাৎ পেয়ে তিনি দেশে ফিরে আসার প্রবল আকুতির কথা জানান।

এ পরিপ্রেক্ষিতে আবেইতে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং তার দেশে ফেরার আবেদন সেনাসদরে পাঠান। পরবর্তীতে আবেদনটি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে গত ১৫ আগস্ট ইথিওপিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস কর্তৃক ময়নুল হককে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য ‘ট্রাভেল পারমিট’ ইস্যু করা হয়।

এছাড়াও তার বর্তমান আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে দূতাবাস বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের বিমান ভাড়া এবং আনুষঙ্গিক আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আবেই থেকে বিমানযোগে জুবা, সাউথ সুদানে আগমন করেন ময়নুল হক। পরে জুবা, সাউথ সুদান থেকে তিনি ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানযোগে রোববার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর সুদানের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন এবং পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে ময়নুল হক খুবই আনন্দিত ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি তার প্রত্যাবর্তনের জন্য সহায়তা প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় আটকে পড়া একজন বাংলাদেশি নাগরিকের দেশে প্রত্যাবর্তনের মতো মানিবক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পেরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা আনন্দিত ও গর্বিত।


banner close