বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

সরকারের একার পক্ষে সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়

রিজওয়ান রাহমান।
আপডেটেড
২৯ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২৭

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ইটিবিএল সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান রাহমান বলেছেন, দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরও বেশ চাপ সৃষ্টি করেছে। বেড়ে গেছে সব ধরনের পণ্যের দাম। সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। দিন যত যাচ্ছে, সংকট তত বাড়ছে। মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। সরকারের একার পক্ষে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সম্মিলিতভাবে সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার দৈনিক বাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিসহ দেশের সব মানুষকে এই অনুরোধ করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক বাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি

দুই বছরের বেশি সময়ের করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে কেমন চলছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য?

প্রতিদিন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ভালো অবস্থায় আছে সেটিও বলা যাবে না; আবার খুব খারাপ আছে সেটিও বালা যাবে না। ব্যবসায়ীরা এই মুহূর্তে খুবই কনফিউজড। গতি কোন দিকে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা বুঝতে পারছেন না। বাংলাদেশে বর্তমানে যে সমস্যাগুলো হচ্ছে, এগুলো কিন্তু শুধু বৈশ্বিক কারণে। এখন এটি কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এ রকম সমস্যা ১০ বছর আগে হলে বাংলাদেশে এত সমস্যা হতো না। কিন্তু এখন বাংলাদেশ একটি গ্লোবাল প্লেয়ার। আজকে যদি বাংলাদেশে কিছু হয়, তাহলে বিশ্ববাজারে পাটের দাম বেড়ে যাবে। বিশ্ববাজারে চায়ের দাম বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের কিছু হলে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের (আরএমজি) দাম বেড়ে যাবে। ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। চামড়ার তৈরি জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। কারণ আমরা এগুলো বিশ্বের কাছে সরবরাহ করি।

সার্বিকভাবে বাংলাদেশ এখন একটু হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের ডলার ক্রাইসিস আছে। এনার্জি ক্রাইসিস আছে, এগুলো মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। এখন আমাদের ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি, পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি আরও স্ট্রং হতে হবে। আমাদের এখন শক্ত হতে হবে। আমাদের এনার্জি ক্রাইসিস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের এলএনজি আমদানি করতে হবে। আমি রাশিয়া থেকে নেব না ব্রুনাই থেকে নেব, না চায়না থেকে নেব সেটি বিষয় নয়। দেশের স্বার্থের জন্য আমাদের এগুলো করতে হবে। এটি ক্রাইসিস মোমেন্ট। সব সিদ্ধান্ত ঠান্ডা মাথায় নিতে হবে।

এই মুহূর্তে সরকারের হাতেও তেমন কোনো কন্ট্রোল নেই। দুটি দেশের যুদ্ধের কারণে এই সমস্যা হয়েছে। সরকারের এখানে কী করার থাকতে পারে। ডলারের দামের অবস্থাটা দেখেন। কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ১২০ টাকাও উঠে গিয়েছিল; কিছুই করার নেই। এখন কেউ এলসি খুলতে পারছে না। আমাকে একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী বললেন, তিনি ২১ হাজার ডলারের এলসি খুলতে পারছেন না। এখানে তো আমাদের বলার কিছু নেই। জ্বালানি নিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক ধরনের কথা হয়েছে। গত বুধবারও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমিও ছিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের সবাইকে একসঙ্গে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। সরকারের একার এখানে কিছু করার নেই। যে সরকারই থাকুক, কিছু করতে পারবে না।

তবে আমরা একটি বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি। আমাদের এত রিজার্ভ দিয়ে কী করব। এর থেকে ২ বিলিয়ন ডলার ছেড়ে দেন। কিছু তেল নিয়ে আসেন। আমাদের এনার্জি কিনে আনা দরকার। আবার আপনি বাংলাদেশে সারের ভর্তুকি কমাতে পারবেন না। আমেরিকার মতো দেশ এখনো সারে ভর্তুকি দেয়। আপনি অন্যান্য ব্যবসা থেকে ভর্তুকি কমিয়ে আনেন। আমাদেরও সেটি করতে হবে, না হলে আমরা খাদ্যে নিরাপত্তা দিতে পারব না। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বলেন, আর অর্থনীতি বলেন, কেমন যাচ্ছে সেটি বিষয় না। কতদিন যাবে সেটি হচ্ছে বিষয়। এই যুদ্ধ কতদিনে থামবে, তা কেউ কিছু বলতে পারছেন না। তাই সবকিছুই এখন অনিশ্চিত। এই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সামনে রেখেই আমাদের চলতে হচ্ছে। কতদিন চলতে হবে জানি না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই আশঙ্কার কথা বলছেন, অনিশ্চয়তার কথা বলছেন। খরচ কমানোর আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করছেন। এতে কি দেশবাসীর মধ্যে ভয়-শঙ্কা আরও বাড়ছে? আপনার কাছে সার্বিক পরিস্থিতি কেমন মনে হচ্ছে? কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের ভালোর জন্যই এসব কথা বলছেন। যাতে মানুষ সতর্ক হয়। আমরা একসময় ভালো অবস্থায় ছিলাম। কয়েক বছর আমাদের গ্রোথ (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) ছিল ৮ শতাংশের ওপর। তারপর যখন আমরা করোনাভাইরাসের মধ্যে হিমশিম খেয়ে গেলাম। তখনও কিন্তু বাংলাদেশে ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে; যা ছিল এই অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আমি এ কথাগুলো নির্দলীয় কথা বলছি। সব সময়ই আমি এই ধরনের কথা বলি। সরকার যেখানে ভুল করছে, সেটি বলি। আবার ঠিক করলেও বলি। করোনার সময় সরকার অনেক ভুল করেছে আমরা সেটি বলেছি তো। আবার বাংলাদেশ সরকার করোনাভাইরাসের সময় ভালো দেশ পরিচালনা করেছে। সরকার বাংলাদেশের মতো ১৭ কোটির জনসংখ্যার দেশে অনেক ভালো অর্থনীতি সামলেছে। সবাই তখন ভালো ভূমিকা পালন করেছেন।

তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে কিন্তু প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। এখন এই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ঘরের সামনে চাষ করুন। এটি তো গুলশানের বাসিন্দাদের বলেননি। এটি নিয়ে ভয় পেয়ে লাভ নেই। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সামনে ডলারের দাম ১৩০ টাকা যাবে না- কোনো বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কি সেই গ্যারান্টি দিতে পারবেন? বর্তমানে জ্বালানির দাম চার গুণ হয়ে গেছে, এটি যে ৪০ গুণ হবে না সেটি কি কেউ বলতে পারবেন? সে জন্য প্রধানমন্ত্রী বলতেই পারেন আপনাকে সাশ্রয়ী হতে। আপনি এখন যেভাবে চলছেন, সেভাবে যদি চলতে থাকেন তাহলে আপনি আর তিন মাস চলতে পারবেন। আপনি যদি সাশ্রয়ী হয়ে চলতে থাকেন, তাহলে তিন বছর চলতে পারবেন।

আশা করা যায় তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধ-টুদ্ধ সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। আমি এটিকে এভাবে দেখি। যারা সরকারবিরোধী, তারা হয়তো অন্যভাবে দেখেন। একেকজন একেকভাবে চিন্তা করেন।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে। তবে বাংলাদেশ যে খারাপ অবস্থায় যাবে না সেটির কোনো গ্যারান্টি নেই। তবে শ্রীলঙ্কা হবে সেটিও ঠিক না। বাংলাদেশের বেসরকারি খাত খুব শক্তিশালী। খুব খারাপ সময়ে এই খাত ৬ থেকে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দিয়েছে।

করোনার মধ্যে সব দেশ যখন খুব খারাপ অবস্থায় ছিল, বাংলাদেশ তখন ভালো ছিল। এখন প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন তুমি সাবধানে থাকো, সেটিকে নেগেটিভ হিসেবে নেয়া যাবে না।

প্রায় এক বছর ধরে ডলারের বাজার অস্থির। নানা পদক্ষেপ নিয়েও বাগে আসছে না। এক মাসের বেশি সময় ধরে বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার পরও ডলারের দাম কমছে না। সমস্যা আসলে কোথায়? কীভাবে সমাধান হবে? ডলারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে?

ডলারের বাজার বলা যাচ্ছে না কোন দিকে যায়। এটি পুঁজিবাজারের মতো হয়ে গেছে। কোন দিকে যায় বলা যায় না। গত বছর আমি আমার আগামী তিন বছরের ফোরকাস্টিংটা করেছিলাম। তখন আমি ডলারের দাম ৮৪-৮৫ টাকা ধরেছিলাম। এখন আমি দেখছি সেই ডলার ১১০, ১১৫ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। সেটি মানিয়ে নেয়া আমাদের জন্য খুব কঠিন। আমরা কোনো ধারণা করতে পারছি না আগে থেকে। যার কারণে আমাদের সব সময় একটি বাফার ধরে রাখতে হয়। এখন কিন্তু রপ্তানিকারকদের জন্য শুধু আমদানি খোলা। আর সবার জন্য আমদানি বন্ধ। শুধু তৈরি পোশাকের কাঁচামালের জন্য এলসিটা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তখন যারা বাধ্যতামূলকভাবে এলসি করবে। ডলারের দাম আরও বেড়ে যাবে।

আমি মনে করি বাংলাদেশ সমস্যা থেকে উতরে যাবে। বাংলাদেশে এখনো ৩৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। তখন তো ডলারের প্রাইজটি সেখানে এফেক্ট করবে। গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে একটি করেছিল। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। সেটি তো আমরা ব্যবসায়ীরা মিলে বিদ্যুৎ প্রস্তাব দিলাম যে আপনি এই ডেভেলপমেন্ট ব্যবহার করেন এখন। আপনি তো এখন গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করছেন না। দরকার হলে আপনি আমাদের বিদ্যুতের দাম বাড়িয় দেন। বিদ্যুতের দাম যদি বাড়াতে হয় আপনাকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে। এটির জন্য যা যা করণীয় আপনি করেন।

আপনি এখন ফার্নিচার কিনবেন নাকি এলএনজি কিনবেন। গ্যাস ডেভেলপমেন্টের বিষয়ে আমরা পরে আসি। কারণ গ্যাস পেতে পেতে তো আমাদের ১০ বছর লাগবে।

তবে আমি এ ক্ষেত্রে সরকারকে বলব আপনারা সব সময় একটি বিপদে একটি শর্ট টার্ম সলিউশনকে লং টার্ম বানিয়ে ফেলেন। এটি আর করেন না। আপনারা এখন শর্ট টার্ম সলিউশন করেন। একই সঙ্গে লং টার্ম ডিসিশনটি নিয়ে নেন। আওয়ামী লীগ সরকার যে ১৩-১৪ বছর ক্ষমতায় ছিল, এতদিনে তো কয়েকটি গ্যাসফিল্ড খুঁড়ে ফেলতে পারত। কিন্তু সেটি করা হয়নি। আমাদের কমপ্লেইন করে লাভ নেই। এখন করব, এই মুহূর্তে করব। ১০ বছর পরে গিয়ে আমরা পাব। এটি কিন্তু পদ্মা সেতুর মতো একটি মাইলফলক থাকবে। আপনি এক্সপেনসিভ ফুয়েলের ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকতে পারবেন না। যেহেতু আপনি আমদানিনির্ভর দেশ। আপনি রপ্তানি কমাতে পারবেন না। আবার বিশ্ববাজারে যদি তাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে আপনার রপ্তানি বাজার তো ধসে পড়বেই। বাংলাদেশের সিঙ্গেল লার্জেস্ট এক্সপোর্ট ডেস্টিনেশন হচ্ছে জার্মানি। বাংলাদেশের টোটাল এক্সপোর্টের ১৫ শতাংশ জার্মানিতে যায়। আমাদের ৮৩-৮৪ শতাংশ রপ্তানি যায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে। সেসব দেশে যদি মূল্যস্ফীতি বাড়তেই থাকে, তাহলে ওই সব দেশের লোক পোশাক কেনা কমিয়ে দেবে- এটিই স্বাভাবিক। তাহলে নিশ্চিতভাবেই আগামী বছর আমার রপ্তানি আয় কমে যাবে।

যুক্তরাজ্যে এখন ১০০ শতাংশের ওপর মূল্যস্ফীতি। সেখানে তো পণ্যের চাহিদা কমে যাবে। লন্ডনে আমার এক্সপোর্ট কমে যাবে। যদি এক্সপোর্ট কমে যায়, তাহলে আমার আয় কমে যাবে। এখানে তো বাংলাদেশের কিছু করার নেই। একসময় বিশ্বে সমস্যা হলে বাংলাদেশের কিছু হতো না। তখন বাংলাদেশ ছিল একটি পুঁটি মাছ। আজকে বাংলাদেশ কিন্তু বোয়াল মাছ। বিশাল ব্যাপার। এ জন্য আমি আবার দৃষ্টি আকর্ষণ করব সরকারের এবং বেসরকারি খাতের। রপ্তানি বাজার এবং পণ্য দুটিকে একসঙ্গে বহুমুখী করা লাগবে। আপনি আমেরিকার ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকবেন সারাক্ষণ। আপনি সারাক্ষণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ওপর ডিপেন্ডেন্ট থাকবেন। আপনি নিজে যে এত বড় একটি মহাদেশে বাস করেন, সেটি কি ভুলে গেছেন। এশিয়ায় আপনার এক্সপোর্ট মাত্র ১১ শতাংশ কেন ভাই? ৮৪ শতাংশ যাচ্ছে ইউরোপ আর আমেরিকায় এবং ৪ শতাংশ যাচ্ছে আফ্রিকায়। তাই আমি বলছি, রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতেই হবে। আমি বলছি না বাড়াতে; আপনাকে আফ্রিকার মার্কেট এক্সপ্লোর করতে হবে, আপনাকে এশিয়ার মার্কেট এক্সপ্লোর করতে হবে। আপনাকে চায়নায় যেতে হবে। চায়না থেকে আমি শুধু মাল কিনব কেন? আমি চায়নায় মাল বেঁচতে পারি না। এটি তো সম্ভব। আপনাকে পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। আপনি গার্মেন্টস করছেন ভালো কথা। সেটি কিন্তু আমরা চামড়াশিল্পের জন্য করতে পারি। আমরা পাটশিল্পের জন্য করতে পারি। সেটি আমরা কৃষি খাতের জন্য করতে পারি। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির জন্য করতে পারি। প্রতিটি খাতের জন্য যদি আমরা করতে পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের পণ্য ডাইভারসিফাই হবে। এই সবকিছুর মধ্যে আপনি যতক্ষণ না আপনার এক্সপোর্ট বাড়াবেন। আপনি ডলারটিকে কন্ট্রোল করতে পারবেন না। আপনি ডলারের প্রাইজ রিভাইস করতে পারবেন না। বিশ্ববাজার যতদিন ঠিক না হবে, ততদিন এই সমস্যা থাকবেই। যখন দুনিয়ার বড় বড় সাহেব মনে করবে যে অস্ত্রের ব্যবসা বন্ধ করে একটি শান্তির ব্যবসা করতে পারতাম। তাহলে হয়তো এই সমস্যার সমাধান হবে।

আপনি রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের পাশাপাশি বাজার বাড়ানোর কথা বলছেন। এরই মধ্যে কিন্তু আমরা পাশের দেশ ভারতে আমাদের রপ্তানি বাড়তে দেখছি। গত অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ভারতে। প্রায় দেড় শ কোটি মানুষের দেশ ভারতের বাজার নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?

ভারতের বাজার আসলে ডিপ্লোমেটিক ইস্যু। এ বিষয়গুলো কূটনৈতিক, এখানে বেসরকারি খাতের করার কিছু নেই। এ বছরের জুলাইয়ে আমরা ৪৯ জনের একটি দল ভারত গিয়েছিলাম, প্রায় ৪০০-৫০০ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললাম। ব্যবসায়ীরা কিন্তু ব্যবসা করার জন্য অস্থির। কিন্তু আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর তাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কী কথা হয়, সেটি তো আমরা বলতে পারব না। তাদের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক আছে, সেটির ওপর দুই দেশের ব্যবসা নির্ভর করে।

আমি তো মনে করি নর্থইস্ট রিজিয়নটিকে দিল্লির সঙ্গে কানেক্ট করার জন্য বাংলাদেশ শুড বি দ্য হাব। ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যান্ড দ্য সেভেন সিস্টারস। এটি তো একটি ডিপ্লোমেটিক ইস্যু। এখানে আমরা কী করতে পারি। আমি নিজে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি আমাকে বললেন আমরা দেখছি। আমি ওনাকে বললাম আপনি তো দেখছেন আমার জন্মের আগে থেকে। আপনি যখন একটি দেশের থেকে আপনার ৬০ শতাংশের বেশি আমদানি করবেন, সেই দেশের প্রতি আপনি অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি ইম্পোজ করতে পারেন। এখন আপনি আমাকে বলেন, গোটা ভারতের ৬০ শতাংশ কি বাংলাদেশ থেকে ইম্পোর্ট হয়? সেটি কোনো দিন সম্ভব না, বাংলাদেশে কোনো পাটই নেই। তার পরও কেন আপনি আমার ওপরে অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি দিচ্ছেন। এগুলো হচ্ছে ডিপ্লোমেটিক ইস্যু। এগুলোকে আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। এ ছাড়া অনেক ঝামেলা আছে, সেগুলো আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এগুলো এক রাতে ঠিক হবে না। এগুলো চালিয়ে যেতে হবে।

বুধবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দেশের নাগরিকের কাছে যথাযথ মূল্যে সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা করছেন, বেশি দামে দেশবাসীর কাছে পণ্য বিক্রি করছেন?

সত্যি কথা বলতে কী বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদেরও খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ডলারের দাম বাড়ার প্রভাবও পড়েছে পণ্যমূল্যে। সবকিছু মিলিয়েই কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। এতে দেশের সাধারণ মানুষ যে খুবই কষ্টে আছে, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এই কঠিন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের কম লাভে পণ্য বিক্রি করে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।

মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারির সময় কিন্তু সরকার আমাদের প্রণোদনা দিয়েছে। এখন যদি আমরা সরকারের পাশে, মানুষের পাশে না দাঁড়াই, তাহলে কিন্তু ঠিক হবে না। এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, কিন্তু ওনার নেতৃবৃন্দ উল্টাটি করছেন। প্রধানমন্ত্রী মোবাইলের মাধ্যমে টাকা দিলেন, আর ওনার এক নেতার কাছে ৩০০ জনের সিম পাওয়া গেল। যা-ই হোক, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সবাইকে ইউনাইটেড হওয়ার জন্য। আমরা যদি সবাই একসঙ্গে উঠে দাঁড়াই, তাহলে তো মনে হয় না আমাদের কোনো সমস্যা হবে। মহামারিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অনেক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু আমরা তো সার্ভাইব করে গেছি। প্রধানমন্ত্রী এখন আমাদের বলছেন, মুনাফা একটু কম করতে। এই মুহূর্তে মুনাফা না করলে ভালোই হয় বলে আমি মনে করি। কিন্তু অনেকে এখন হয়তো চিন্তা করছেন যে আমি তো গত দুই-তিন বছর হিমশিম খেয়ে গেছি। এখন একটু পুষিয়ে নিই।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য একটি জিনিস চাওয়া যেমন ডিফিকাল্ট, একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্য চাওয়া কিন্তু আরও কঠিন। সে কিন্তু চায় না, তার মধ্যে একটি ইগো কাজ করে। মধ্যবিত্তরা সমস্যায় থাকে, কোন দিকে যাব আমরা। তবে সব ব্যবসায়ী খারাপ না। একজনের জন্য সব ব্যবসায়ীকে খারাপ বলা যাবে না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশে যারা খারাপ ব্যবসায়ী তারাই ভালো আছে, যারা ভালো ব্যবসায়ী তারাই বিপদে আছে। যা-ই হোক, সেটি ভিন্ন আলোচনা। আমি বলতে চাই, এই মুহূর্তে মুনাফা করা ঠিক না। এর পরে আবার সময় আসবে, তখন মুনাফা করবেন। এভাবেই তো বাংলাদেশ এগিয়েছে। আগে মানুষ বাংলাদেশকে চিনত না। এখন সবাই সমীহ করে।

নির্বাচন কমিশন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে অর্থনীতির কী হবে? ব্যবসা-বাণিজ্যেরই বা কী হবে?

এটি তো বাংলাদেশের রাজনীতির বিউটি। প্রতি পাঁচ বছরেই হয়। এটি তো ভালো আমাদের বিরোধী দলরা সমাবেশ করছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং হবে সেটিই স্বাভাবিক। তবে অতীতের মতো সংঘাতের রাজনীতি যেন না হয়, সেটি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। এটি যেন ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো বাধা সৃষ্টি না করে, সেটিই মনে রাখতে হবে।

রাজনীতি করা সবার অধিকার। আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু পরিবেশ। সেটি থাকলেই ভালো, সরকারি দল-বিরোধী দল সবাই রাজনীতি করবে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের ওপর, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর একটু চোখ রাখবেন প্লিজ! বাস-টাসগুলো পুড়িয়ে দিয়েন না, আমরা আমাদের ব্যবসা করি, আপনারা আপনাদের রাজনীতি করেন। আসুন, সবাই মিলেমিশে দেশটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।


সোনার অলংকার কিনতে ক্রেতাকে ৬ শতাংশ হারে মজুরি দিতে হবে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বাজারে সোনার দামে অস্থিরতার মধ্যেই নতুন সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। তারা এবার সোনার অলংকারে ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি নির্ধারণ করেছে। একই সঙ্গে সোনার অলংকার পরিবর্তনে ১০ শতাংশ এবং ক্রেতার কাছ থেকে অলংকার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ বাদ দেওয়ার নিয়ম করেছে বাজুস।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাজুস। এতে বলা হয়, সম্প্রতি জুয়েলার্স সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সোনার অলংকার বিক্রির সময় ক্রেতার কাছ থেকে ৬ শতাংশ হারে মজুরি নিতে পরামর্শ দিয়েছে সমিতি। এর পেছনে সমিতির ব্যাখ্যা হচ্ছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সোনার অলংকার বিক্রিতে ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সোনার অলংকার বিক্রিতে ভারতে ১০, শ্রীলঙ্কায় ৮, চীনে ১৫, ইতালিতে ২০, হংকংয়ে ৩০, মালয়েশিয়ায় ৩৫, অস্ট্রেলিয়ায় ২০, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ ও যুক্তরাজ্যে ১৪ শতাংশ মজুরি নেওয়া হয়।

বাজুস ২০২২ সালের আগস্টে প্রতি গ্রামে কমপক্ষে ৩০০ টাকা মজুরি নিতে সদস্যপ্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ দেয়। তাতে প্রতি ভরিতে মজুরি দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। তবে অধিকাংশ জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের ধরে রাখতে মজুরিতে ছাড় দিয়ে আসছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জুয়েলার্স সমিতির একজন সদস্য বলেন, ধরা যাক, বর্তমানে এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ টাকা। তাহলে ৬ হাজার টাকা মজুরি দিতে হবে। আর সোনা ও মজুরির ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। নতুন করে মজুরি পুনর্নির্ধারণের ফলে ব্যবসায়ে নতুন করে অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সোনার অলংকার পরিবর্তন বা বিক্রির ক্ষেত্রে জুয়েলার্স সমিতির নিদের্শনা হলো, পুরোনো অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে এর ওজন থেকে ১৫ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে, যা এত দিন ছিল ১৩ শতাংশ। এ ছাড়া সোনার অলংকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অলংকারের ওজন থেকে ১০ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এত দিন এই হার ছিল ৯ শতাংশ।

কয়েক মাস ধরেই দেশের বাজারে সোনার দামে অস্থিরতা চলছে। সর্বশেষ গত রোববার সোনার দাম ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৩২ টাকা বেড়েছে। তাতে হলমার্ক করা ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮২ টাকা।


মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনে রেকর্ড

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ মে, ২০২৪ ০০:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের মার্চে মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে রেকর্ড ১.৪৮ লাখ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, দেশে এমএফএস চালু হওয়ার পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ মাসিক লেনদেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে- মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার সম্প্রসারণ, রমজান ও ঈদের কেনাকাটার মৌসুমে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে টাকা পাঠানোর কারণে মোবাইলে ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে।

আগের মাস ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে ১৮,১৯৫ কোটি টাকা বেশি বা ১৪ শতাংশ বেশি লেনদেন হয়েছে এই মাধ্যমে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এর আগে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২০২৩ সালের জুনে। সেই সময়ে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১.৩২ লাখ কোটি টাকা। এ ছাড়া এমএফএসের মাধ্যমে সর্বপ্রথম ১ লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ২০২২ সালের এপ্রিলে, সে সময়ে লেনদেন হয়েছে ১.০৭ লাখ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে- দেশে বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শহর কিংবা গ্রামে– এক মুহূর্তে দেশের যেকোনো স্থানে টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। দিন দিন গ্রাহক সংখ্যা যেমন বাড়ছে, লেনদেনের পরিমাণও তেমনি বাড়ছে।

২০২৪ সালের মার্চ শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ২২ কোটি ৪০ লাখের বেশি। এর মধ্যে শহরে গ্রাহক আছে ৯ কোটি ৭৭ লাখ। এ ছাড়া গ্রামে রয়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ। এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে পুরুষ ১৩ কোটি এবং নারী গ্রাহক ৯ কোটি।

এ বিষয়ে বিকাশের করপোরেট কমিউনিকেশনস অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, মার্চে ক্যাশ আউট, ক্যাশ ইন, মার্চেন্ট পেমেন্ট, স্যালারি ডিসবার্সমেন্ট পূর্বের সকল সময়ের তুলনায় বেশি হয়েছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে রোজা ও ঈদ। সাধারণত, আমাদের স্বজনরা অন্য সময় না পাঠালেও ঈদের সময়ে কিছু কিছু পরিমাণে খরচ মেটানোর জন্য টাকা পাঠিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, এই সময়ে অনেক গার্মেন্টস মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্যালারি পাঠিয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ে কেনাকাটায় ব্যাপক লেনদেন হয়েছে।

সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশেষ করে সরকারি সব ধরনের ভাতা, উপবৃত্তি ও প্রণোদনা বিতরণে মোবাইল আর্থিক সেবা খাত ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এ খাতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়িয়েছে, যোগ করেন তিনি।

নগদের একজন কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসে নগদের সেবা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। আমরা গ্রাহকদের চাহিদার আলোকে নতুন নতুন সেবা চালু করছি। এ ছাড়া মানুষজন এখন ব্যাংকে গিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়ে সহজেই এমএফএসের মাধ্যমে তাদের প্রিয়জনদের টাকা পাঠিয়ে দিতে পারছেন। আমরা মনে করি, সামনের সময়ে এটি আরও জনপ্রিয় হবে।

প্রিলে প্রায় প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ডিজিটাল কেনাকাটায় গ্রাহকদের বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়েছিল, ফলে লেনদেনের পরিমাণ আরও বেড়েছে, যোগ করেন তিনি।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্যদিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়।

এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সিংহভাগই বিকাশের দখলে। এরপরে রয়েছে নগদ।


১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

২০২৪-২০২৭ অর্থবছরের নীতিমালার খসড়া নীতিগত অনুমোদন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি নীতিমালা ২০২৪-২৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। একই সঙ্গে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের সময়সীমা ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

আজ বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। করোনায় আক্রান্ত অর্থমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান জানান, টিসিবির মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি বা স্থানীয়ভাবে ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬-এর ৬৮(১) ধারার আওতায় এবং একই আইনের ৩২ ধারায় উল্লেখ করা ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণে পণ্যসামগ্রী সংগ্রহের মেয়াদ চলতি বছরের ২৬ মে শেষ হয়ে যাবে। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ বিষয়ে সচিব জানান, রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এটি পরে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠানো হবে।

রপ্তানি নীতির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তিনি জানান, স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেওয়া, রপ্তানি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক কৌশল- এসব বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করার জন্য আর্থিক প্রণোদনার বিকল্প পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২০২৭ মেয়াদে ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রপ্তানি প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করা বিভিন্ন ধাপ এখানে (রপ্তানি নীতি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া খাতের সম্ভাবনাময় নতুন কিছু পণ্য ও সেবা যেমন- সবজি এবং হস্ত ও কারু পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে স্পিনিং, ফেব্রিক্স, ম্যানুফ্যাকচারিং, ডাইং, প্রিন্টিং অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ওষুধশিল্প ও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্ষ পণ্য হস্তশিল্পকে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সচিব বলেন, রপ্তানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকা এবং শর্তসাপেক্ষে রপ্তানি পণ্য তালিকা হালনাগাদ ও এইচএস কোডের হেডিংসহ উল্লেখ করা হয়েছে। রপ্তানি-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটি ও রপ্তানি-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি গঠন ও কার্যপরিধি সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, রপ্তানি খাতের চাহিদা এবং বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রতি তিন বছর অন্তর রপ্তানি নীতি প্রণয়ন করা হয়। বিদ্যমান রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪-এর মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হবে। এই ধারাবাহিকতায় রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।


সাড়ে ৫ মাস পর হিলি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হিলি প্রতিনিধি

অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে ভারতীয় একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় একটি ট্রাক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসে। হিলি স্থলবন্দরের মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্স এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আহমেদ সরকার বলেন, ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা গত ৪ মে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়; কিন্তু এরপরও ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে আমদানিকারকরা চিন্তিত ছিলেন। তবে নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে ১১ দিন পর মঙ্গলবার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এসব পেঁয়াজ প্রতি মেট্রিক টন ৫৫০ ডলারে আমদানি করা হয়েছে। যদি আমদানি স্বাভাবিক থাকে তাহলে পেঁয়াজের দাম কোরবানি ঈদে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।


দেশে প্রবাসী আয়ে সুবাতাস বইছে

মে মাসের ১০ দিনে রেমিট্যান্স এল ৮১ কোটি ডলার
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রবাসী আয়ে সুতাবাস বইছে। চলতি মে মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ মাসের প্রথম ১০ দিনে এসেছে ৮১ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে এসেছে আট কোটি ১৩ লাখ ডলার, যা আগের তুলনায় বেশি বলে জানা গেছে।

আজ সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে প্রতি দিনে দেশে এসেছিল ৬ কোটি ৮১ লাখ ২ লাখ ডলার। আর আগের বছরের (২০২৩ সাল) মে মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৬ ডলার।

চলতি বছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্সের পালে উচ্চগতির হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। গত জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার ডলার এসেছে।

গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের আশেপাশে রেমিট্যান্স এসেছে। তবে এবার মে মাসের প্রথম ১০ দিনেই এসেছে সবচেয়ে বেশি।

আর বৈদেশিক আয় দেশে আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭১ কোটি ৫১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম ১০ দিনে একক ব্যাংক হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে
ন্যাশনাল ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার, ন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে আট কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ছয় কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের তিন কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এসেছে।


‘দক্ষ নারীকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ নারীকর্মী তৈরির মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় আরও বেশি উদ্যোগী হবে।

প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে আজ সোমবার বিকেলে উইমেন্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতারা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এসব কথা জানান।

এ সময় সার্ক বিজনেস কাউন্সিল এবং ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের নারীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। বিশেষ করে ফ্যাশন ও এসএমই সেক্টরে নারীকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থান এবং জাতীয় বাজেটে নারীবান্ধব নীতিমালার প্রতিফলন ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা হয়। বিজ্ঞপ্তি


বিমায় ভর করে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

তালিকাভুক্ত ৫৮ বিমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টিরই দাম বেড়েছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব চারটি কোম্পানির শেয়ার দাম ততটাই বেড়েছে। আরও ৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে ৮ শতাংশের বেশি দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এ চিত্র দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের। তালিকাভুক্ত ৫৮টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখানোর ফলে সার্বিক শেয়ারবাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে টানা তিন কার্যদিবসের পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও বিমা খাত যতটা দাপট দেখিয়েছে আর কোনো খাত এতটা দাপট দেখাতে পারেনি। বিমা খাতের ৮১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে পৌনে এক শতাংশ।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে এ বাজারটিতেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। মূল্যসূচক বাড়লেও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২টির দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। এর মধ্যে বিমা কোম্পানি রয়েছে ৪টি।

দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানির এমন দাপটের ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৯৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৮৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাভানা ফার্মা। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-গোল্ডেন সন, ফরইস্ট নিটিং, ই-জেনারেশন, মালেক স্পিনিং, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, লাভেলো আইসক্রিম এবং কহিনুর কেমিক্যালস।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা।


বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বিশেষত বস্ত্র ও পোশাক খাতে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বস্ত্র ও পাট খাতে বাংলাদেশে কোরিয়ান বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান তিনি। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক রোববার সচিবালয়ে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব তসলিমা কানিজ নাহিদা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ঢাকার দক্ষিণ কোরিয়ান দূতাবাসের কনসাল জেয়ং কি কিম উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎকারে উভয়পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।

মন্ত্রী বস্ত্র খাতে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান এবং উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোরিয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমরা বস্ত্র ও পাট খাতে বাজারের বৈচিত্র্য বাড়ানো, পণ্য উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ইত্যাদিতে জোর দিচ্ছি। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির জন্য আমরা কোরিয়ান কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করছি। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত তিনটি বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এগুলো হলো- প্রথমত কাঁচামাল আমদানি করতে প্রচুর ট্যারিফ দিতে হয়। তার মধ্যে ৫টি পণ্য বস্ত্র ও পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোর ট্যারিফ কমাতে তিনি মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। দ্বিতীয়ত ভিসাজনিত সমস্যা। বাংলাদেশে যারা কাজ করছে তাদের খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। তিন মাস পরপর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হয়। এ সমস্যা উত্তরণে মন্ত্রীর সহযোগিতা দরকার। তৃতীয়ত কাস্টমস ক্লিয়ারিং এ দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।


‘চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চামড়া ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সহজ শর্তে ঋণ পেতে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। আগামী ৭ থেকে ৮ মাস যেন তারা ব্যবসা করতে পারে এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর চিঠি ইস্যু করা হবে।

মন্ত্রী আজ রোববার রাজধানীর মতিঝিলে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স’-এর ৭ম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ টাস্কফোর্সের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, যেহেতু কোরবানি সামনে, ব্যবসায়ীদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো না। এ ক্ষেত্রে ক্যাপিটাল শর্টফল যাতে না হয় সে বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর চিঠি ইস্যু করব। যাতে আগামী ৭ থেকে ৮ মাসের জন্য অর্থ সহায়তা তারা পান। আর ব্যাংকের চলমান ঋণ থাকবে ব্যাংকের পলিসি অনুযায়ী।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, চামড়া শিল্প খাতের উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে স্বল্পমেয়াদি ও চামড়া শিল্প খাতের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। বিসিক ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নীতিগত সহযোগিতাসহ এসব করণীয় বাস্তবায়নে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের চামড়া শিল্প খাতে সংরক্ষণ সুবিধা বাড়াতে হবে যাতে চামড়া নষ্ট না হয়। চামড়া ব্যবসায়ী/পাইকাররা যাতে পুঁজির সমস্যায় না পড়েন ও সহজশর্তে ঋণ পান, সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, কোরবানির চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো,সংরক্ষণ ও মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগের অবস্থা আর নেই। এ ক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছি।

সভায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের নিমিত্ত বিজ্ঞাপন/টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা, স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ এবং পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী সংরক্ষণাগার নির্মাণ, কোরবানির পশুর চামড়ার পাচার রোধ, চামড়া সংগ্রহ ও পরিবহন কার্যক্রমে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা বা বাধার সৃষ্টি না হয় এবং চামড়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে যেন কোনো গুজব না ছড়ায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিইটিপির পরিশোধন ক্ষমতার মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যে কোরবানির পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে যাতে কোরবানির পশুর চামড়া ঢাকার ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চামড়া শিল্পনগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে রেশনিং পদ্ধতিতে ইফ্লুয়েন্ট ডিসচার্জ করা, সারা দেশে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ এতিমখানাগুলোতে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করতে বিসিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় বিটিএ-এর প্রতিনিধির অনুরোধে চামড়া ব্যবসায়ীদের স্বার্থে চামড়া ব্যবসায়ীকে ব্যাংক কর্তৃক সহজশর্তে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।

বিষয়:

অডিট কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করতে হবে: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অডিট কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করে সরকারের আর্থিক সম্পদের দক্ষ ও ফলপ্রসূ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আজ শনিবার বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) কার্যালয়ের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং দেশব্যাপী তিনদিন (১২, ১৩ ও ১৪ মে) বিশেষ সেবা কার্যক্রম উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নেন্স গঠনের জন্য বাংলাদেশ অডিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক বিষয় ও তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক মানের প্রচলিত কমপ্লায়েন্স ও ফিন্যান্সিয়াল অডিটের পাশাপাশি পারফরমেন্স অডিট, আইটি অডিট এবং পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক অডিট পরিচালনা করছে।

অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় গণতান্ত্রিক সমাজে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী ও সুসংহত কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয়-এর গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি অডিট অ্যান্ড একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের সকল কর্মচারীকে অধিকতর নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তবেই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় অর্থপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘অডিট ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এনে, সময়ের সঙ্গে এর উৎকর্ষতা নিশ্চিত করে যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে। নীরিক্ষক ও নীরিক্ষা অফিসের মধ্যে যোগাযোগের পুরনো ব্যবস্থা বদলে দিয়ে নতুন অনলাইন সিস্টেম চালু করায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। সামগ্রিকভাবে অডিট কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করে সরকারের আর্থিক সম্পদের দক্ষ ও ফলপ্রসূ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

আলোচনা সভায় অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী ভৌত, সামাজিক ও প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনির্মাণের মাধ্যমে স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার এবং সর্বোপরি স্মার্ট অর্থনীতি গঠন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিযাত্রায় সরকারি সম্পদের সুষ্ঠু, কার্যকর ও মিতব্যয়ী ব্যবহার হচ্ছে কি না তার নিশ্চয়তা প্রদানে বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল কার্যালয় স্টেট অডিটর হিসাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে বিনয়, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণকে সেবাদান করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। গুণগত মানসম্পন্ন হিসাব ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়নের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা তথা সুশানের পথ সুগম করার জন্য বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও তা বাস্তবায়নে সদা সচেষ্ট।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১২ থেকে ১৪ মে তিন দিনব্যাপী বিশেষ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। বিশেষ সেবা কার্যক্রমের আওতায় দৈনন্দিন রুটিন সেবা ছাড়াও অডিট অধিদপ্তরসমূহে অডিট বিষয়ক সেবা এবং দেশব্যাপী সকল হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে বেতন-ভাতা, পেনশন, জিপিএফ-সহ অন্যান্য বিশেষ সেবাদান করা হবে।

বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাংসদ হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার।


সিআইপি হচ্ছেন ১৮৪ ব্যবসায়ী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৮৪ ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪০ জনকে সিআইপি (রপ্তানি) এবং ৪৪ ব্যবসায়ী নেতাকে সিআইপি (ট্রেড) সম্মানে ভূষিত করা হবে। ২০২২ সালে রপ্তানিতে অবদানের জন্য তারা এই সম্মাননা পাচ্ছেন। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু দেশের খ্যাতনামা রপ্তানিকারকদের সিআইপি (রপ্তানি ও টেড) কার্ড দেন।

রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য এক বছর মেয়াদে সিআইপি (রপ্তানি) নির্বাচন করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে নির্বাচিত সিআইপিরা পরবর্তী বছরের সিআইপি (রপ্তানি) ঘোষণার আগ পর্যন্ত সিআইপি (রপ্তানি) মর্যাদায় ভূষিত থাকবেন। সিআইপি (রপ্তানি) হিসেবে নির্বাচিত ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাস ও গাড়ির স্টিকারপ্রাপ্তি, জাতীয় অনুষ্ঠান ও মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ, ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, ব্যবসায়িক কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন প্রাপ্তি, নির্বাচিত সিআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন প্রাপ্তির অগ্রাধিকার এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পেয়ে থাকেন। সরকারিভাবে প্রদত্ত সিআইপি কার্ডধারী বিদেশি ক্রেতার কাছে আস্থা ও সুনামের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতে পারেন, যা তার ব্যবসায়িক সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার পাশাপাশি দেশের সার্বিক রপ্তানি প্রসারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

পণ্য বা সেবার খাতওয়ারি মনোনীত সিআইপিদের (রপ্তানি ও ট্রেড) মধ্যে কাঁচাপাট ২, পাটজাত পণ্য ৪, চামড়াজাত দ্রব্য ৬, হিমায়িত খাদ্য ৪, তৈরি পোশাকে (ওভেন) ১৮ জন মনোনীত হয়েছেন। এ ছাড়া কৃষিজাত দ্রব্য ৫, অ্যাগ্রোপ্রসেসিং ৫, হালকা প্রকৌশলী পণ্য ৪, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য ৩, হস্তশিল্পজাত পণ্য ৪, স্পেশালাইজড বা হোমটেক্সটাইল পণ্য ৪, তৈরি পোশাক (নিটওয়্যার) ৩৪, সিরামিক পণ্য ১, প্লাস্টিকজাত পণ্য ৪, টেক্সটাইল (ফেব্রিক্স) ৭, কম্পিউটার সফটওয়্যার ২, আসবাব ১, বিবিধ পণ্য ২৭ ও ইপিজেডভুক্ত সি ক্যাটাগরিতে ৫ জন সিআইপি হয়েছেন। একই সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে সিআইপি (ট্রেড ক্যাটাগরি) মনোনীত হয়েছেন ৪৪ জন। সিআইপি কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।


বিশ্বে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে বাংলাদেশ অষ্টম, অভিবাসী পাঠানোয় ষষ্ঠ

১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে শীর্ষে ভারত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির দিক থেকে ভারতের অবস্থান বিশ্বে প্রথম। তালিকায় বাংলাদেশ অষ্টম ও পাকিস্তান ষষ্ঠ। রেমিট্যান্স প্রবাহে দক্ষিণ এশিয়ার এই তিনটি দেশ আছে শীর্ষ দশে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০২২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে রেমিট্যান্স পাওয়ার দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ দেশ ছিল ভারত, মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন ও ফ্রান্স। আলোচ্য বছরে ১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে ভারত। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ও ১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে ভারত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১১.২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে ভারত। প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ও ১১১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জন করেছে দেশটি।

২০২২ সালে ৬১.১০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো। ২০২১ সালেও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল দেশটি। রেমিট্যান্স গ্রহণে দীর্ঘদিন দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছিল চীন। কিন্তু ২০২১ সালে চীনকে পেছনে ঠেলে দিয়ে দুইয়ে উঠে আসে মেক্সিকো।

প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০১০, ২০১৫ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে ৫৩.৪৮ বিলিয়ন ডলার, ৬৮.৯১ বিলিয়ন ডলার ও ৮৩.১৫ বিলিয়ন ডলার পেয়ে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে প্রথম অবস্থানে ছিল ভারত। ২০২২ সালে রেমিট্যান্স গ্রহণে প্রথম ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে দেশটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করতে যায়। তাদের সুবাদে এ অঞ্চল বৈশ্বিক রেমিট্যান্সের উল্লেখযোগ্য অংশ পেয়ে থাকে।

দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ- ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় রয়েছে।

২০২২ সালে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে যথাক্রমে ষষ্ঠ ও অষ্টম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। এ বছর পাকিস্তান প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার ও বাংলাদেশ ২১.৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে। এর আগে ২০২০ সালেও বাংলাদেশ ২১.৭৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে এ তালিকায় একই অবস্থানে ছিল।

আইওএমের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ১০.৮৫ বিলিয়ন ডলার ও ২০১৫ সালে ১৫.৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছিল। সেই হিসাবে ১২ বছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১০.৬৫ বিলিয়ন ডলার।

২০২২ সালে রেমিট্যান্স গ্রহণে তৃতীয় অবস্থানে থাকা চীন ৫১ বিলিয়ন ডলার, চতুর্থ অবস্থানে থাকা ফিলিপাইন ৩৮.০৫ বিলিয়ন ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ফ্রান্স ৩০.০৪ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে।

এ ছাড়া ২০২২ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা পাকিস্তান ২৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার, সপ্তম অবস্থানে মিসর ২৮.৩৩ বিলিয়ন ডলার, অষ্টম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ২১.৫ বিলিয়ন ডলার, নবম অবস্থানে থাকা নাইজেরিয়া ২০.১৩ বিলিয়ন ডলার এবং দশম অবস্থানে থাকা জার্মানি ১৯.২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।

অন্যদিকে ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর দেশটি ৭৯.১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে বিভিন্ন দেশে। রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সৌদি আরব (৩৯.৩৫ বিলিয়ন ডলার), তৃতীয় অবস্থানে সুইজারল্যান্ড (৩১.৯১ বিলিয়ন ডলার), চতুর্থ অবস্থানে জার্মানি (২৫.৬০ বিলিয়ন ডলার) ও পঞ্চম অবস্থানে আছে চীন (১৮.২৬ বিলিয়ন ডলার)।

রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে অষ্টম অবস্থানে থাকলেও অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ষষ্ঠ। অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে ভারত, মেক্সিকো, রাশিয়া, চীন ও সিরিয়া।

আইওএমের প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিট্যান্স বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বহু মানুষের লাইফলাইন হলেও এসব দেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী কর্মীরা অনেক ঝুঁকির মধ্যে কাজ করেন, আর্থিক শোষণের শিকার হন, অভিবাসন খরচের কারণে অতিরিক্ত আর্থিক দেনায় ডুবে যান। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে নিপীড়নের শিকার হওয়ার পাশাপাশি তারা ‘জেনোফোবিয়া’রও (বিদেশিদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব) শিকার হন।

আইওএমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, উপসাগরীয় দেশগুলো অভিবাসী কর্মীদের বড় গন্তব্য। গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার বড় একটি অংশই অভিবাসী।

অধিকাংশ অভিবাসীই- যাদের বড় একটি অংশ বাংলাদেশ, ভারত, মিসর, ইথিওপিয়া ও কেনিয়া থেকে যান-নির্মাণ, হসপিটালিটি, নিরাপত্তা, গৃহকর্ম ও রিটেইল খাতে কাজ করেন।

প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানোতেও বড় অবদান রাখছে এশিয়ার দেশগুলো। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানোর তালিকায় শীর্ষে আছে চীন, দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। ২০২১ সালে চীন ও ভারত থেকে যথাক্রমে ১০ লাখ ও ৫ লাখ ৮ হাজার শিক্ষার্থী বাইরের দেশে পড়তে গেছেন।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের গন্তব্য হিসবে পছন্দের শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র (৮ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি)। এরপরই আছে যুক্তরাজ্য (প্রায় ৬ লাখ ১ হাজার), অস্ট্রেলিয়া (প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার), জার্মানি (৩ লাখ ৭৬ হজারের বেশি) ও কানাডা (প্রায় ৩ লাখ ১৮ হাজার)।


৬ জুন বাজেট ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ দিন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় বাজেট উত্থাপন করবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, ‘আগামী ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট পেশের দিনক্ষণ ঠিক করে ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।’

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট হবে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার, যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট। এবারের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।


banner close